রবিবারের নামাজের ওয়াক্তনামা এক নজরে

ধর্ম ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ২৩ ১০:৩১:১৭
রবিবারের নামাজের ওয়াক্তনামা এক নজরে
ছবি: সংগৃহীত

ইসলামের পাঁচটি রুকনের একটি হলো নামাজ, যা ইমানের পর মুসলমানের জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত হিসেবে বিবেচিত। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে ৮২ বার সালাতের উল্লেখ করে এর গুরুত্ব বারবার স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। নামাজ শুধু আধ্যাত্মিক শান্তির উৎস নয়, বরং শৃঙ্খলা, সময় সচেতনতা এবং আত্মার পরিশুদ্ধির মাধ্যম। তাই প্রতিদিনের ব্যস্ততার মধ্যেও ওয়াক্তমতো নামাজ আদায় করা একজন মুসলমানের জন্য অত্যন্ত জরুরি। সেই ধারাবাহিকতায় আজ রবিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৫ ঢাকা ও আশপাশের অঞ্চলের পূর্ণাঙ্গ নামাজের সময়সূচি প্রকাশ করা হয়েছে।

আজকের ফজরের নামাজের সময় শুরু হবে ভোর ৫টা ১ মিনিটে এবং শেষ হবে ভোর ৬টা ১৭ মিনিটে। আগামীকাল সোমবার ফজরের সময় এক মিনিট এগিয়ে ভোর ৫টা হবে। জোহরের ওয়াক্ত শুরু হবে দুপুর ১১টা ৪৮ মিনিটে এবং শেষ হবে বিকেল ৩টা ৩৪ মিনিট। এরপর আসরের সময় শুরু হবে বিকেল ৩টা ৩৫ মিনিটে এবং শেষ হবে বিকেল ৪টা ৫৩ মিনিটে। সন্ধ্যাবেলা মাগরিবের ওয়াক্ত শুরু হবে ৫টা ১৪ মিনিটে এবং থাকবে ৬টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত। ইশার সময় শুরু হবে সন্ধ্যা ৬টা ৩১ মিনিটে এবং বজায় থাকবে রাত ৪টা ৫৬ মিনিট পর্যন্ত, যদিও শরিয়তের দৃষ্টিতে মধ্যরাতের আগেই ইশা আদায় করা উত্তম।

ঢাকার নির্ধারিত সময়ের সঙ্গে কিছু বিভাগীয় অঞ্চল সময় যোগ-বিয়োগ করে অনুসরণ করবে। চট্টগ্রাম ও সিলেটে যথাক্রমে পাঁচ ও ছয় মিনিট বিয়োগ করতে হবে। অন্যদিকে খুলনা, রাজশাহী, রংপুর এবং বরিশালের জন্য নির্ধারিত সময়ের সঙ্গে তিন থেকে আট মিনিট পর্যন্ত যোগ করতে হবে। এসব সময় পার্থক্য ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে হয়ে থাকে এবং প্রতিটি এলাকার মুসলমানের জন্য সঠিক ওয়াক্ত অনুযায়ী নামাজ আদায় করা আবশ্যক।

আজকের দিনটি রোজাদারদের জন্যেও গুরুত্বপূর্ণ, কারণ সেহরি ও ইফতারের সময়সূচি উল্লেখ করা হয়েছে। সেহরির শেষ সময় ভোর ৪টা ৫৫ মিনিট এবং ইফতারের সময় সন্ধ্যা ৫টা ১৪ মিনিট। রোজাদারদের জন্য এই সঠিক সময় মানা ইসলামী বিধান অনুসরণে অপরিহার্য।

নফল নামাজ আদায়ের ক্ষেত্রেও আজকের দিনটি বিশেষভাবে চিহ্নিত। ইশরাকের সময় শুরু হবে সকাল ৬টা ৩২ মিনিটে এবং চলবে সকাল ৮টা ২৩ মিনিট পর্যন্ত। চাশতের সময় থাকবে সকাল ৮টা ২৪ মিনিট থেকে ১১টা ৪১ মিনিট পর্যন্ত। আর তাহাজ্জুদের সময় technically ইশার সঙ্গে শুরু হলেও উত্তম সময় হিসেবে ধরা হয় রাত ৯টা ৫৫ মিনিট থেকে সুবহি সাদিক ৪টা ৫৬ মিনিট পর্যন্ত। নফল নামাজ আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের বিশেষ মাধ্যম, এবং অনেক পণ্ডিতের মতে নফল ইবাদত বান্দাকে আত্মিকভাবে আরও পরিশুদ্ধ করে।

ইসলামী শরিয়তে তিনটি সময়ে নামাজ পড়া নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আজকের নিষিদ্ধ সময়গুলো হলো সকাল ৬টা ১৮ মিনিট থেকে ৬টা ৩১ মিনিট পর্যন্ত সূর্যোদয়কালীন সময়। এরপর দুপুর ১১টা ৪২ মিনিট থেকে ১১টা ৪৭ মিনিট পর্যন্ত সূর্য যখন মাথার উপর থাকে সেই সময়। এবং শেষত, বিকেল ৪টা ৫৪ মিনিট থেকে ৫টা ১০ মিনিট পর্যন্ত সূর্যাস্ত-পূর্ব মুহূর্ত। তবে দিনের আসরের নামাজ যদি নির্ধারিত সময়ে আদায় না করা হয়, বিশেষ পরিস্থিতিতে এই নিষিদ্ধ সময়ের মধ্যেও তা আদায় করা যায়।


কোরআনের আলোকে আল্লাহর রহমত পাওয়ার ১০ উপায়

ধর্ম ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ২৩ ১২:৩৮:৪৬
কোরআনের আলোকে আল্লাহর রহমত পাওয়ার ১০ উপায়
ছবি: সংগৃহীত

কোরআন-হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, আল্লাহর রহমত এমন একটি অসীম দান যা একজন মুমিনের জীবনকে পরিশুদ্ধ করে, তার বিপদ দূর করে এবং হৃদয়ে শান্তির আলো জ্বালায়। আল্লাহ নিজেই বলেছেন, তাঁর রহমত সমস্ত কিছুকে ঘিরে রেখেছে। সেই বিশাল রহমত লাভের জন্য ইসলাম বিশেষ কিছু পথনির্দেশ দিয়েছে। এসব নির্দেশনা শুধু ব্যক্তিগত ইবাদত নয়, বরং মানবিক আচরণ, নৈতিকতা, আন্তরিকতা এবং সমাজকল্যাণকে কেন্দ্র করে সাজানো।

প্রথমত, মানবিক দয়া একজন মুসলিমের চরিত্রের মূল ভিত্তি। সৃষ্টির প্রতি দয়া প্রদর্শন আল্লাহর অসীম দয়ার কারণ হয়। পিপাসার্ত কুকুরকে পানি পান করানোর জন্যও ক্ষমা পাওয়ার ঘটনাটি এ মহত্ত্বের বড় প্রমাণ।

দ্বিতীয়ত, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ, রোজা ও জাকাতের মতো ফরজ ইবাদত পালন আল্লাহর আনুগত্যের সবচেয়ে শক্তিশালী প্রকাশ। কোরআনে স্পষ্ট বলা হয়েছে, ফরজ ইবাদত কায়েম করলে আল্লাহর পক্ষ থেকে রহমত বর্ষিত হয়।

তৃতীয়ত, ইহসান অর্থাৎ আন্তরিকভাবে ও নিষ্ঠার সঙ্গে আমল করা। যে আমলে হৃদয়ের পবিত্রতা থাকে, আল্লাহ তার প্রতি বিশেষ অনুগ্রহ বর্ষণ করেন। সৎকর্মপরায়ণতা আল্লাহর নৈকট্য লাভের অন্যতম মাধ্যম।

তাকওয়া চতুর্থ উপায় যা মুমিনকে সব ধরনের গুনাহ থেকে বাঁচায় এবং আল্লাহর ভয় ও সচেতনতা তাকে রহমতের যোগ্য করে তোলে। আল্লাহ বলেন, তাঁর রহমত তাকওয়াবানদের জন্যই লিখে দেওয়া হয়েছে।

পঞ্চমত, কোরআন তেলাওয়াত ও চর্চা। কোরআন শুধু পাঠ নয়, বরং বুঝে তার আলোকে জীবন গঠন করাই রহমত লাভের প্রকৃত পথ। এ ছাড়া মনোযোগ দিয়ে কোরআন শোনার ক্ষেত্রেও আল্লাহ বিশেষ রহমতের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

সপ্তম উপায় হলো দ্বীনি কাজে কষ্ট স্বীকার হিজরত, সংগ্রাম, দ্বীনের পথে ধৈর্য ধারণ করা আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহের কারণ হয়। ইসলামের ইতিহাসে এ উদাহরণ অসংখ্য।

অষ্টমত, সুন্নাহ অনুসরণ। রাসুলুল্লাহ (স.)-এর আদর্শ অনুসরণ করলে রহমতের দ্বার খুলে যায় এ কথা কোরআনে সরাসরি উল্লেখ রয়েছে।

ইস্তেগফার, অর্থাৎ নিয়মিত ক্ষমা প্রার্থনা নবম উপায়। ইস্তেগফার যত বেশি, রহমত তত কাছে। গুনাহ থেকে মুক্তির পাশাপাশি জীবনযাত্রায় বরকতও নেমে আসে।

সবশেষে দোয়া যা রহমত প্রার্থনার সবচেয়ে সরাসরি মাধ্যম। সুরা কাহফের দোয়া "রব্বানা আতিনা মিন লাদুংকা রহমাহ" আল্লাহর রহমত আহ্বানের অন্যতম শক্তিশালী দোয়া হিসেবে পরিচিত।

একজন মুমিনের জীবনে আল্লাহর রহমত শুধু আধ্যাত্মিক মুক্তি নয় বরং দুনিয়াতেও নিরাপত্তা, শান্তি, প্রাচুর্য এবং সফলতার প্রতীক। ইসলাম সেই সব পথই সুস্পষ্টভাবে মানবজাতির সামনে তুলে ধরেছে।


ভূমিকম্পের সময় মহানবী সা. যে বিশেষ আমল ও দোয়া পড়ার শিক্ষা দিয়েছেন

ধর্ম ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ২২ ১৯:১০:৫৮
ভূমিকম্পের সময় মহানবী সা. যে বিশেষ আমল ও দোয়া পড়ার শিক্ষা দিয়েছেন
ছবিঃ সংগৃহীত

ভূমিকম্প এমন একটি মুহূর্ত যখন মানুষ তার দুর্বলতা গভীরভাবে অনুভব করে এবং মহান আল্লাহর কাছে আশ্রয় চায়। বিপদ আপদ ও ভয় ভীতির সময় আল্লাহর জিকির দোয়া ও ইস্তিগফারই ইমানদারের সবচেয়ে বড় শক্তি হিসেবে কাজ করে। রাসুলুল্লাহ সা. শিখিয়েছেন বিপদের মুহূর্তে আল্লাহর দিকে ফিরে যাওয়াই হচ্ছে নিরাপত্তার একমাত্র পথ। তাই ভূমিকম্প বা বড় কোনো ঝাঁকুনির সময় পড়ার জন্য ৪টি ছোট ও কার্যকরী দোয়া নিচে তুলে ধরা হলো।

প্রথম দোয়া اللَّهُمَّ لَا تُؤَاخِذْنَا بِذُنُوبِنَا، وَلَا تُهْلِكْنَا بِغَضَبِكَ দোয়াটির উচ্চারণ হলো আল্লাহুম্মা লা তুআখিজনা বিজুনুবিনা ওয়া লা তুহলিকনা বিগাদাবিকা। এর বাংলা অর্থ হে আল্লাহ আমাদের গুনাহের কারণে আমাদের পাকড়াও করো না এবং তোমার গজবে আমাদের ধ্বংস করো না।

দ্বিতীয় দোয়া حَسْبُنَا اللهُ وَنِعْمَ الْوَكِيلُ দোয়াটির উচ্চারণ হলো হাসবুনাল্লাহু ওয়া নি’মাল ওয়াকিল। অত্যন্ত শক্তিশালী এই বাক্যটির অর্থ আল্লাহই আমাদের জন্য যথেষ্ট তিনি উত্তম কর্মবিধায়ক।

তৃতীয় দোয়া يَا حَيُّ يَا قَيُّومُ، بِرَحْمَتِكَ نَسْتَغِيثُ দোয়াটির উচ্চারণ হলো ইয়া হাইয়্যু ইয়া ক্বাইয়্যুমু বিরাহমাতিকা নাস্তাগীস। এর অর্থ হে চিরঞ্জীব হে পালনকর্তা তোমার রহমতই আমাদের সাহায্য।

চতুর্থ দোয়া أستغفرُ اللهَ العظيم দোয়াটির উচ্চারণ হলো আসতাগফিরুল্লাহাল আজিম। সবসময় পড়ার মতো ছোট এই আমলটির অর্থ আমি মহান আল্লাহর নিকট ক্ষমা চাই।

আলেমদের মতে ভূমিকম্প শুধুই একটি প্রাকৃতিক ঘটনা নয় বরং এটি মানুষের হৃদয়ে আল্লাহর ভয় জাগিয়ে তোলে এবং আল্লাহর মহিমার সামনে বিনয় শেখায়। এ সময় দোয়া ইস্তিগফার ও তওবাই মুমিনের ঢাল হিসেবে কাজ করে। যে আল্লাহ পৃথিবীকে কাঁপান তিনিই আবার তা স্থির করেন। তাই বিপদের মুহূর্তে তাঁরই দিকে ফিরে যাওয়া মানুষের জন্য সর্বোত্তম কাজ।


ভূমিকম্প মুহূর্তে যে দোয়া পড়তেন রাসূল (সা.)

ধর্ম ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ২২ ১৮:২০:০৪
ভূমিকম্প মুহূর্তে যে দোয়া পড়তেন রাসূল (সা.)
ছবি: সংগৃহীত

ইসলামে জীবনের প্রতিটি বিপদ ও দুর্যোগের জন্য শিক্ষা ও দিকনির্দেশনা দিয়েছেন মহান আল্লাহ তাআলা। কুরআন ও হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, ভূমিকম্প, মেঘের গর্জন, ঝড়–তুফান কিংবা আকাশ–জমিনের যেকোনো ভয়াবহতা আল্লাহর শক্তি ও কুদরতের নিদর্শন, যা মানুষের জন্য সতর্কবার্তা ও আত্মসমালোচনার আহ্বান। এমন সংকটময় মুহূর্তে রাসূলুল্লাহ (সা.) তাঁর উম্মতকে নির্ভর করতে বলেছেন আল্লাহর ওপর এবং নিয়মিত দোয়ার মাধ্যমে তাঁর সাহায্য কামনা করতে বলেছেন।

রাসূল (সা.) বিশেষভাবে উল্লেখ করেছেন এমন একটি দোয়া, যা তিনবার পাঠ করলে মানুষ আকাশ ও জমিনের ভয়ংকর দুর্যোগ থেকে নিরাপত্তা পায়। দোয়াটি হলো-

উচ্চারণ: বিসমিল্লাহিল্লাহি লা ইয়াদ্বুররু মা’আসমিহি শাইউন ফিল আরদি ওয়া লা ফিস্সামা’ই, ওয়া হুয়াস সামীয়ুল আলিম।

এই দোয়া মুসলিম সমাজে বহুল পরিচিত এবং বিপদ–আপদে সুরক্ষার অন্যতম আমল হিসেবে সুন্নাহতে প্রতিষ্ঠিত।

ভূমিকম্পের সময় আলাদা একটি দোয়া পাঠ করার কথাও এসেছে বিভিন্ন হাদিসে। রাসূল (সা.) মাটির দিকে তাকিয়ে নিয়মিত পড়তেন-

“আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, লা শারিকালাহু, ফাবি আয়্যি আলা’ই রাব্বিকুমা তুকাজ্জিবান।”

এই তাসবিহ ও প্রশংসাবাক্য আল্লাহর শক্তি ও মহিমা স্মরণ করিয়ে দেয়, এবং মানুষের অন্তরকে স্থিরতা দেয়।

দুর্যোগের মুহূর্তে আরেকটি দোয়া রাসূল (সা.) বিশেষভাবে পড়তে বলেছেন-উচ্চারণ: আন্তা ওলিয়্যুনা ফাগফিরলানা ওয়ারহামনা, ওয়া আন্তা খাইরুল গফিরিন।

অর্থ: “হে আল্লাহ, আপনি আমাদের রক্ষক—অতএব আমাদের ক্ষমা করুন এবং আমাদের প্রতি করুণা বর্ষণ করুন। নিশ্চয়ই আপনি সর্বাধিক ক্ষমাশীল।” (সূরা আরাফ ১৫৫)


জুলকারনাইন: দুই শিং–ওয়ালা বাদশার রহস্য

ধর্ম ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৭ ১২:০৬:৫৪
জুলকারনাইন: দুই শিং–ওয়ালা বাদশার রহস্য
ছবি: সংগৃহীত

ইসলামের ইতিহাসে বাদশা জুলকারনাইন এমন এক ব্যক্তিত্ব যিনি রহস্য, প্রজ্ঞা, নেতৃত্ব ও ন্যায়বিচারের সমন্বিত প্রতীক। পবিত্র কোরআনে সূরা কাহফে তাঁর ইতিহাস বর্ণিত হলেও, তাঁর সুনির্দিষ্ট পরিচয় নিয়ে আলেমদের মধ্যে এখনও মতভেদ রয়েছে। তিনি নবী ছিলেন নাকি একজন ন্যায়পরায়ণ শক্তিশালী শাসক ছিলেন এ প্রশ্নে বিভিন্ন ঐতিহাসিক ও ধর্মীয় ব্যাখ্যা পাওয়া যায়। তবে কোরআনের বর্ণনাগুলোতে তাঁর চরিত্র যে উচ্চ নৈতিক মূল্যবোধ ও আল্লাহর প্রতি আনুগত্যের অনন্য উদাহরণ, এতে কোনো সন্দেহ নেই।

পরিচিতি ও ‘জুলকারনাইন’ নামের অর্থ

“জুলকারনাইন” শব্দটি আরবি, যার অর্থ “দুই শিং–ওয়ালা” বা “দুই যুগের অধিকারী।” এই নামের ব্যাখ্যায় দুটি প্রধান মত রয়েছে।

একদিকে বলা হয়, তিনি পৃথিবীর পূর্ব এবং পশ্চিম দু’প্রান্ত পর্যন্ত শাসন বিস্তার করেছিলেন। অন্যদিকে কিছু ঐতিহাসিকের মতে, তাঁর মুকুটে দুই শিং–এর প্রতীক ছিল, যা প্রাচীন রাজকীয় শক্তির প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত হতো।

ঐতিহাসিক পরিচয় নিয়ে মতভেদ

জুলকারনাইনের প্রকৃত পরিচয় কী এ নিয়ে ইসলামী ও পাশ্চাত্য গবেষক, উভয় মহলে বহু আলোচনা হয়েছে।

আলেকজান্ডার দ্য গ্রেট- প্রচলিত ঐতিহ্যগত পরিচয়

অনেক মুসলিম ও পাশ্চাত্য ঐতিহাসিক মনে করেন, জুলকারনাইন হচ্ছেন আলেকজান্ডার দ্য গ্রেট। কারণ তাঁর প্রাচীন মুদ্রাগুলোতে তাঁকে ভেড়ার শিং–যুক্ত হিসেবে দেখানো হয়েছে, যা দেবতা আমুন–রার প্রতীক। বহু যুগ ধরে এই মতটিই সবচেয়ে জনপ্রিয় ছিল।

সাইরাস দ্য গ্রেট-আধুনিক গবেষকদের শক্তিশালী মতবাদ

বর্তমান সময়ের আলেম ও গবেষকদের বড় অংশ বিশ্বাস করেন যে, জুলকারনাইন আসলে পারস্যের সম্রাট সাইরাস দ্য গ্রেট। বাইবেলের বর্ণনায় সাইরাসকে “দুই শিংওয়ালা মেষ” হিসেবে চিত্রিত করা হয়েছে। আরও গুরুত্বপূর্ণ হলো সাইরাস ছিলেন ন্যায়পরায়ণ, ঈমানদার ও একত্ববাদী শাসক। কোরআনের বর্ণনার সাথে তাঁর ব্যক্তিত্বের বহু মিল পাওয়া যায়।

অন্যান্য ধারণা

কিছু গবেষক জুলকারনাইনকে আরবের হিমিয়ার রাজ্যের রাজা আফ্রিকিশ আল–হিমিয়ারী বা অন্য কোনো অজ্ঞাত শাসক হিসেবেও বিবেচনা করেন।

তিনি নবী ছিলেন নাকি রাজা?

অধিকাংশ ইসলামি আলেমের মতে, জুলকারনাইন ছিলেন একজন ন্যায়পরায়ণ এবং আল্লাহভীরু রাজা। তাঁর কাছে আল্লাহ অসাধারণ ক্ষমতা, সামরিক শক্তি এবং ভূখণ্ড পরিচালনার দক্ষতা দান করেছিলেন। যদিও কিছু মত অনুযায়ী তিনি নবীও হতে পারেন, তবে কোরআনে তাঁর নবুয়ত সম্পর্কে স্পষ্ট উল্লেখ নেই।

জুলকারনাইনের প্রাচীর, ইয়াজুজ–মাজুজ থেকে রক্ষার মহাগঠন

জুলকারনাইনের নির্মিত প্রাচীরের অবস্থান নিয়েও মতভেদ রয়েছে। কোরআনে বলা হয়েছে, এটি দুই পর্বতের মধ্যবর্তী সরু পথে নির্মিত হয়েছিল, যেখানে বসবাসকারী জনগোষ্ঠী ইয়াজুজ–মাজুজের হামলায় অতিষ্ঠ ছিল।

কাস্পিয়ান সাগর ও ককেশাস অঞ্চল-সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য মত

অনেক ঐতিহাসিক মনে করেন, প্রাচীরটি কাস্পিয়ান সাগর এবং ককেশাস পর্বতমালার মধ্যবর্তী এলাকায় ছিল। রাশিয়ার দারিয়াল এবং দারবেন্ত অঞ্চলে আজও লৌহনির্মিত প্রাচীরের ধ্বংসাবশেষ দেখা যায়, যা জুলকারনাইনের প্রাচীর বলে বিবেচনা করা হয়।

অন্যান্য ব্যাখ্যা

কিছু ব্যাখ্যায় বলা হয় প্রাচীরটি পূর্ব দিকে ছিল। বিখ্যাত ভ্রমণকারী ইবনে বতুতা চীনের মহাপ্রাচীরকে ভুল করে জুলকারনাইনের প্রাচীর ভেবেছিলেন।

আব্বাসীয় খলিফার তদন্ত অভিযান

আব্বাসীয় খলিফা ওয়াসিক বিল্লাহর নির্দেশে একদল বিশেষ দূত প্রাচীরটি প্রত্যক্ষ পরিদর্শনে গিয়েছিল। তাদের পর্যবেক্ষণ পরবর্তীতে ‘আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া’ গ্রন্থে সংরক্ষিত রয়েছে। প্রতিবেদনে উল্লেখ আছে, প্রাচীরটি ছিল লোহা ও তামা দিয়ে নির্মিত এক বিশাল দুর্গসদৃশ কাঠামো।

কোরআনে বর্ণিত জুলকারনাইনের তিন মহাঅভিযান

সূরা কাহফের ৮৩–৯৯ নং আয়াতে জুলকারনাইনের তিনটি বিশাল ভ্রমণ অভিযানের বিস্তারিত উল্লেখ আছে। এ অভিযানের প্রতিটিতেই তাঁর নেতৃত্ব, ন্যায়বিচার এবং আল্লাহর প্রতি আনুগত্য ফুটে ওঠে।

১. পশ্চিমমুখী অভিযান

তিনি পৃথিবীর পশ্চিম প্রান্তে পৌঁছে দেখলেন সূর্য যেন কর্দমাক্ত ঝর্ণায় অস্ত যাচ্ছে। সেখানে তিনি এক জাতির মুখোমুখি হন। আল্লাহ তাকে এই জাতির ওপর ন্যায়বিচার প্রয়োগের ক্ষমতা দেন। তিনি সৎকর্মশীলদের প্রতি দয়া প্রদর্শন করেন এবং অপরাধীদের শাস্তি দেন।

২. পূর্বমুখী অভিযান

তিনি পূর্ব দিকে যাত্রা করে এমন এক জাতির সন্ধান পান যারা সূর্যের আলো থেকে বাঁচার জন্য কোনো প্রাকৃতিক আড়াল পেত না। এখানেও তিনি ন্যায়বিচারের আদেশ প্রতিষ্ঠা করেন।

৩. উত্তরের অভিযান—ইয়াজুজ ও মাজুজের প্রাচীর নির্মাণ

সবশেষে তিনি দুই পাহাড়ের মধ্যবর্তী এলাকায় পৌঁছান, যেখানে লোকেরা ইয়াজুজ–মাজুজ নামক হানাদার জাতির নিপীড়নে ক্লান্ত ছিল। তারা জুলকারনাইনের কাছে সহায়তা চাইলে তিনি কোনো পারিশ্রমিক গ্রহণ না করে আল্লাহর পক্ষ থেকে অনুপ্রাণিত শক্তিতে লোহা ও গলিত তামা দিয়ে বিশাল প্রাচীর নির্মাণ করেন এবং তাদের আক্রমণ থেকে অঞ্চলটিকে সুরক্ষিত করেন।

জুলকারনাইনের জীবনী থেকে শিক্ষা

জুলকারনাইনের চরিত্র ইতিহাস ও ধর্মীয় নৈতিকতার এক অনুপম উদাহরণ। তাঁর জীবন থেকে পাওয়া প্রধান শিক্ষাগুলো হলো:

১. ক্ষমতা ও নেতৃত্ব আল্লাহর দান, এটি অহংকারের জন্য নয়, ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য।২. ভূখণ্ড, সম্পদ ও শক্তি থাকা সত্ত্বেও তিনি বিনয়ী ছিলেন।৩. প্রতি সিদ্ধান্ত ও কাজে তিনি আল্লাহর নির্দেশ অনুসরণ করেছেন।৪. তিনি পৃথিবীজুড়ে ন্যায় ও সৌহার্দ্য প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।৫. ইয়াজুজ–মাজুজের প্রাচীর কেয়ামতের আগ পর্যন্ত স্থায়ী থাকবে এটি ইসলামি বিশ্বাসের অংশ।


ঢাকা ও আশপাশে আজ নামাজের নির্ধারিত সময় জানুন

ধর্ম ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৬ ১০:০৪:০৮
ঢাকা ও আশপাশে আজ নামাজের নির্ধারিত সময় জানুন
ফাইল ছবি

আজ রবিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৫; বাংলা সনের ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ এবং হিজরি ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭। দিনটি শীতের শুরুতে রাজধানী ঢাকায় নতুন ঋতুর আমেজ নিয়ে এসেছে। ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার, বসুন্ধরা, ঢাকার প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, আজ ঢাকা ও আশপাশের এলাকায় নামাজের সময়সূচি নির্ধারণ করা হয়েছে।

আজকের দিনে জোহরের সময় শুরু হবে সকাল ১১টা ৪৭ মিনিটে। দিনের দ্বিতীয়াংশে বিকেল ৩টা ৩৭ মিনিটে আসরের নামাজের সময় প্রবেশ করবে। সন্ধ্যার অন্ধকার নামার আগে মাগরিবের আজান হবে ৫টা ১৬ মিনিটে, তবে আজ ঢাকায় সূর্যাস্ত হবে ৫টা ১২ মিনিটে। রাতের শুরুতে এশার নামাজের সময় নির্ধারণ করা হয়েছে ৬টা ৩২ মিনিট।

আগামীকাল সোমবার ফজরের নামাজের সময় শুরু হবে ভোর ৫টা ০০ মিনিটে, আর নতুন দিনের সূর্যোদয় হবে সকাল ৬টা ১৪ মিনিটে। দৈনন্দিন ইবাদতের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে মু‌স‌ল্লিদের জন্য এ সময়সূচি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা হিসেবে বিবেচিত।

-রাফসান


সন্তানদের প্রতি ইনসাফ: রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর অনুপম শিক্ষা

ধর্ম ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৫ ১১:২৭:৫১
সন্তানদের প্রতি ইনসাফ: রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর অনুপম শিক্ষা
ছবি: সংগৃহীত

ইসলাম পরিবারে ন্যায়, সাম্য এবং দয়ার যে নীতি প্রতিষ্ঠার কথা বলে, তার সর্বোচ্চ প্রতিফলন দেখা যায় সন্তান প্রতিপালনের নির্দেশনায়। পুত্র ও কন্যা উভয়ের ক্ষেত্রে ইসলামে সমান আচরণ, সমঅধিকার এবং সমান স্নেহপ্রদর্শনকে অত্যন্ত গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সন্তানদের মধ্যে সামান্য কোনো পার্থক্যও ইসলাম নিরুৎসাহিত করেছে, কারণ বৈষম্য প্রায়ই পারিবারিক অস্থিরতা, মানসিক ক্ষত এবং প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে ছড়িয়ে পড়া সামাজিক ফিতনার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করেছেন যে তিনি ইনসাফ, দয়া এবং আত্মীয়স্বজনকে তাদের ন্যায্য অধিকার প্রদান করার নির্দেশ দেন। অশ্লীলতা, মন্দ কাজ এবং জুলুম থেকে তিনি কঠোরভাবে নিষেধ করেন। সুরা নাহল-এর ৯০ নম্বর আয়াতের এই শিক্ষাটি শুধু সমাজের জন্য নয়, বরং পরিবার‐পর্যায়ের নৈতিক কাঠামোর জন্যও অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। সন্তানের মাঝে ন্যায়বিচার রক্ষার মাধ্যমে পরিবারের অভ্যন্তরীণ শান্তি এবং মানসিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ইসলামের অপরিহার্য নীতি।

হাদিসে নোমান ইবনে বশির (রা.) বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন সন্তানদের মধ্যে সমান আচরণ করো এবং তাদের প্রতি ইনসাফ করো। এতে বোঝা যায়, সন্তানদের উপহার দেওয়া, আচরণে স্নেহ প্রদর্শন করা কিংবা সাধারণ আচার–আচরণ সবক্ষেত্রেই পুত্র–কন্যার প্রতি সমান আচরণ অপরিহার্য। এই নির্দেশ কেবল একটি নৈতিক শিক্ষা নয়, বরং সমাজে ন্যায় প্রতিষ্ঠার প্রথম ধাপ।

একবার এক সাহাবি তাঁর পুত্রকে কোলে নিয়ে আপন ঊরুর ওপর বসালেন এবং কন্যাকে পাশে বসালেন। তখন নবী করিম (সা.) বিষয়টি লক্ষ্য করে তাঁকে সতর্ক করেন এবং জিজ্ঞেস করেন কেন তুমি উভয়ের সঙ্গে সমান আচরণ করলে না? সাহাবি পরে তাঁর কন্যাকে অন্য ঊরুতেও বসালে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন এখন তুমি ইনসাফ করলে। এতে স্পষ্ট বোঝা যায়, নবী করিম (সা.) চাননি সন্তানদের মনে সামান্যতম বৈষম্যের বোধও তৈরি হোক।

আমাদের সমাজে কন্যাসন্তানকে অনেক সময় অবহেলার দৃষ্টিতে দেখা হয়, যা ইসলামী ন্যায়ের সম্পূর্ণ বিপরীত। অথচ ইসলামে কন্যাসন্তান লালন–পালন, তাদের প্রতি দয়া ও দায়িত্ব পালনকে জান্নাতের নিশ্চয়তার সুসংবাদ দিয়ে সম্মানিত করা হয়েছে। জাবের ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন যার তিনটি কন্যাসন্তান রয়েছে, এবং সে তাদের সুরক্ষা দেয়, ব্যয়ভার বহন করে এবং তাদের সঙ্গে দয়ালু আচরণ করে তার জন্য জান্নাত অবধারিত। কোনো সাহাবি যখন জিজ্ঞেস করেন, কারো যদি দুই কন্যা থাকে? তখন নবী (সা.) বলেন দুই কন্যা হলেও একই প্রতিশ্রুতি।

ইসলাম শুধু কন্যার প্রতি কোমল আচরণ নয়, বরং কঠিন পরিস্থিতিতে কন্যার পাশে দাঁড়ানোকে সর্বোচ্চ সদকা হিসেবে ঘোষণা করেছে। যখন কোনো মেয়ে বিবাহের পর স্বামীর গৃহে সমস্যার কারণে ফিরে আসে, তখন তার বাবা যদি তাকে আশ্রয় দেয়, ব্যয়ভার বহন করে ও যত্ন করে রাসুলুল্লাহ (সা.) এটিকে শ্রেষ্ঠতম দান হিসেবে উল্লেখ করেছেন। সুরাকা ইবনে মালেক (রা.)-কে নবী করিম (সা.) বলেন, স্বামী–পরিত্যক্তা কন্যার দায়িত্ব গ্রহণ করা সবচেয়ে উত্তম দান কারণ তার উপার্জনকারী আর কেউ থাকে না।

সন্তানের লালন–পালনে বৈষম্য, পক্ষপাত অথবা আলাদা আচরণ সমাজে অস্থিরতার বীজ বপন করে। সন্তানেরা মনে করে তারা অবহেলিত বা প্রিয় নয় এই অনুভূতি তাদের ব্যক্তিত্বে দীর্ঘমেয়াদি ক্ষত তৈরি করতে পারে। ইসলামের দৃষ্টিতে পরিবার মানুষের প্রথম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, তাই সেখানে সমান আচরণ নিশ্চিত করা একটি ধর্মীয় ও নৈতিক দায়িত্ব।

এই নির্দেশনাগুলো পরিবারকে আরও মানবিক, ন্যায়ভিত্তিক এবং আদর্শিক সামাজিক কাঠামোতে পৌঁছে দেওয়ার পথ দেখায়। পুত্র–কন্যার প্রতি সমান আচরণ শুধু একটি ধর্মীয় আদর্শ নয়, বরং মানবিকতার সর্বোচ্চ নীতির প্রতিফলন।


ঢাকার আজকের নামাজের সময়সূচি প্রকাশ

ধর্ম ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৫ ১১:০৯:১২
ঢাকার আজকের নামাজের সময়সূচি প্রকাশ
ছবি: সংগৃহীত

আজ শনিবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৫; বাংলা সনের ৩০ কার্তিক ১৪৩২ এবং হিজরি ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭। রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের এলাকার জন্য আজকের নামাজের নির্ধারিত সময়সূচি ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার, বসুন্ধরা, ঢাকার তথ্য অনুযায়ী প্রকাশ করা হলো।

আজকের জুমার নামাজ শুরু হবে সকাল ১১টা ৪৭ মিনিটে। বিকেলের আসরের নামাজের সময় শুরু ৩টা ৩৭ মিনিটে। সন্ধ্যার মাগরিবের আজান হবে ৫টা ১৬ মিনিটে। রাতের ইশা শুরু হবে ৬টা ৩২ মিনিটে। আগামীকাল রবিবার ফজরের সময় শুরু হবে ভোর ৪টা ৫৯ মিনিটে।

এ ছাড়া আজ ঢাকায় সূর্যাস্ত হবে ৫টা ১৫ মিনিটে এবং আগামীকাল সূর্যোদয় হবে সকাল ৬টা ০৯ মিনিটে।


১৪ নভেম্বরের নামাজের পূর্ণ সময়সূচি: জানুন আজকের সব ওয়াক্ত

ধর্ম ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৪ ১০:৪২:২৮
১৪ নভেম্বরের নামাজের পূর্ণ সময়সূচি: জানুন আজকের সব ওয়াক্ত
ছবি: সংগৃহীত

রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের এলাকার আজ শুক্রবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৫-এর দৈনিক নামাজের সময়সূচি প্রকাশ করেছে বসুন্ধরাস্থ ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার। ইসলামিক ক্যালেন্ডার অনুযায়ী আজ ২৯ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ এবং ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭ হিজরি। মুসল্লিদের সুবিধার্থে কেন্দ্রটি দিনের পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের নির্ধারিত সময়সূচি জানিয়েছে।

আজ জুমার নামাজ শুরু হবে সকাল ১১টা ৪৬ মিনিটে। আসরের ওয়াক্ত শুরু হবে বিকেল ৩টা ৩৭ মিনিটে। মাগরিবের সময় নির্ধারিত হয়েছে সন্ধ্যা ৫টা ১৭ মিনিটে। এশার নামাজ শুরু হবে সন্ধ্যা ৬টা ৩৩ মিনিটে। পরবর্তী দিনের প্রথম নামাজ ফজর শুরু হবে ভোর ৪টা ৫৯ মিনিটে।

আবহাওয়ার তথ্য অনুযায়ী, আজ ঢাকায় সূর্যাস্ত হবে সন্ধ্যা ৫টা ১৫ মিনিটে এবং আগামীকাল সূর্যোদয় হবে সকাল ৬টা ০৯ মিনিটে। সময়সূচিটি দৈনিক ধর্মীয় পালন, মসজিদ পরিচালনা, নামাজের প্রস্তুতি ও দৈনন্দিন জীবনযাত্রার সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ বলে জানিয়েছে ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার।


মি‘রাজ রজনীতে নবী (সা.)-এর বাহন বুরাকের বিস্ময়কর কাহিনি

ধর্ম ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১২ ১৮:৫১:২৬
মি‘রাজ রজনীতে নবী (সা.)-এর বাহন বুরাকের বিস্ময়কর কাহিনি
ছবি: সংগৃহীত

বুরাক (আরবি: البُراق) শব্দটি এসেছে আরবি শব্দ “বারক” (برق) থেকে। এর অর্থ বিদ্যুৎ বা বিজলী। বিদ্যুতের মতোই বুরাকের গতি ছিল অতুলনীয় দ্রুত। ইসলামী বিশ্বাস অনুযায়ী, এই স্বর্গীয় প্রাণীটিই ছিল সেই বাহন, যার ওপর আরোহন করেছিলেন প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মি‘রাজের রজনীতে।

এই রাতে নবী (সা.) পৃথিবী থেকে আকাশে যাত্রা করেছিলেন, মক্কা থেকে বায়তুল মুকাদ্দাস (জেরুজালেম), এবং সেখান থেকে ঊর্ধ্বাকাশে আল্লাহর সান্নিধ্যে পৌঁছেছিলেন। এই অলৌকিক যাত্রার বাহন হিসেবেই বুরাকের নাম ইতিহাসে অমর হয়ে আছে।

‘বুরাক’ শব্দের তাৎপর্য ও কুরআনিক ইঙ্গিত

“বারক” শব্দটি আল-কুরআনে পাঁচবার উল্লেখ করা হয়েছে। এই আয়াতগুলো পাওয়া যায় সূরা বাকারাহ (১৯ ও ২০ আয়াত), সূরা রা‘দ (১২ আয়াত), সূরা রূম (২৪ আয়াত) এবং সূরা নূর (৪৩ আয়াতে)। প্রতিটি জায়গায় “বারক” শব্দটি আলোর ঝলক বা বিদ্যুতের গতির প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে।

অনেকে মনে করেন, মহানবী (সা.)-এর নাম “মুহাম্মদ”-এ যেমন পাঁচটি বর্ণ আছে, তেমনি “বারক” শব্দটিও পাঁচবার এসেছে এ যেন এক আধ্যাত্মিক ইঙ্গিত। সূরা ইনশিরাহে আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করেছেন: “আর আমি তোমার যিকিরকে উচ্চ মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করেছি” (সূরা ইনশিরাহ: ৪)।

এ থেকে বোঝা যায়, আল্লাহ তাআলা তাঁর প্রিয় নবীর সম্মানকে এমনভাবে বর্ধিত করেছেন যে, এমনকি বুরাকের নামের সঙ্গেও রয়েছে সেই ঐশ্বরিক সাদৃশ্য।

বুরাকের আকার-আকৃতি ও বৈশিষ্ট্য

হাদীস শরীফে বুরাকের চেহারা ও গঠন সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা পাওয়া যায়। সহিহ বুখারী ও সহিহ মুসলিমে আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত- “আমার নিকট বুরাক নিয়ে আসা হলো। বুরাক এক সাদা চতুষ্পদ প্রাণী, গাধার চেয়ে বড় এবং খচ্চর থেকে ছোট। তার দৃষ্টির শেষ সীমায় সে তার পা রাখে।” এই হাদিস থেকে বোঝা যায়, বুরাকের গতি বিদ্যুতের মতোই দ্রুত। সে যতদূর দেখতে পারে, ততদূর পর্যন্ত এক পদক্ষেপেই পৌঁছে যায়।

বুরাকের গতি ও চলার ধরন

ইসলামী বর্ণনায় বুরাককে বর্ণনা করা হয়েছে এমন এক প্রাণী হিসেবে, যার গতি আলোর গতির কাছাকাছি। অর্থাৎ, তার এক পদক্ষেপ পৃথিবী থেকে আকাশ পর্যন্ত পৌঁছে যায়। এই বর্ণনা আধুনিক কালের আলোচনায়ও প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে, কারণ “বারক” বা বিদ্যুৎ-শব্দটি বুরাকের গতির সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত। বুরাকের নামের মধ্যেই আছে সেই গতি ও শক্তির ধারণা যা আল্লাহর সৃষ্টি ক্ষমতারই প্রকাশ।

বুরাকের সৃষ্টি ও অস্তিত্ব সম্পর্কে আলেমদের মত

অনেক ইসলামি পণ্ডিতের মতে, বুরাক কোনো সাধারণ প্রাণী নয়। এটি এক বিশেষ সৃষ্ট প্রাণী, যাকে শুধুমাত্র মি‘রাজের রাতে সৃষ্টি করা হয়েছিল। এই মত অনুসারে, বুরাকের অস্তিত্ব কেবল সেই অলৌকিক ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কিত, এবং অন্য কোনো নবী বা রাসূলের জীবনে এর কোনো উল্লেখ নেই। অর্থাৎ, এটি নবী (সা.)-এর জন্যই বিশেষভাবে নির্ধারিত এক ঐশ্বরিক বাহন।

ইমাম সুহাইলীর ব্যাখ্যা ও বুরাকের লজ্জা

ইমাম সুহাইলী (রহ.) তাঁর ব্যাখ্যায় উল্লেখ করেছেন, যখন নবী (সা.) বুরাকে আরোহণ করতে চাইলেন, তখন বুরাক লজ্জায় সামান্য ইতস্তত করেছিল। তখন ফেরেশতা জিবরাঈল (আঃ) বুরাককে উদ্দেশ্য করে বলেন, “হে বুরাক, তুমি কি জানো, আজ তোমার পিঠে যিনি আরোহণ করবেন, আল্লাহর কাছে তাঁর চেয়ে মর্যাদাবান আর কেউ নেই?”

এই কথা শুনে বুরাক ঘর্মাক্ত হয়ে শান্ত হয়ে যায়। এতে বোঝা যায়, বুরাক কোনো নির্জীব বস্তু নয় বরং এক অনুভূতিশীল ও বুদ্ধিদীপ্ত সত্তা, যা আল্লাহর নির্দেশে নিয়ন্ত্রিত।

মি‘রাজের যাত্রা ও বুরাকের ভূমিকা

নবী করিম (সা.) বুরাকের পিঠে চড়ে প্রথমে মক্কা থেকে বায়তুল মুকাদ্দাসে যান। সেখানে নবীগণের সঙ্গে নামাজ আদায় করেন, এরপর ঊর্ধ্বলোকে যাত্রা করেন। বায়তুল মুকাদ্দাসে পৌঁছে তিনি বুরাককে সেই খুঁটির সঙ্গে বেঁধেছিলেন, যেখানে পূর্ববর্তী নবীরাও তাঁদের বাহন বেঁধেছিলেন। এটি নবুওতের ঐক্য ও ধারাবাহিকতার প্রতীক হিসেবে ইসলামী ঐতিহ্যে অমর হয়ে আছে।

বুরাকের আধ্যাত্মিক ব্যাখ্যা ও রুহানী প্রতীক

অনেক সুফি ও ইসলামী পণ্ডিত বুরাককে এক ধরনের “আলোর বাহন” হিসেবে ব্যাখ্যা করেছেন। তাদের মতে, বুরাক ছিল সেই নূরের মাধ্যম, যার দ্বারা নবী (সা.)-এর আত্মা ও দেহ উভয়ই আল্লাহর সান্নিধ্যে পৌঁছেছিল। এ ধারণা অনুযায়ী, বুরাক কেবল এক বাস্তব প্রাণী নয় বরং আত্মার ঊর্ধ্বগতির প্রতীক। এটি মানুষের আধ্যাত্মিক উত্থান ও আল্লাহর নিকটে পৌঁছার প্রতীকী বাহন হিসেবেও দেখা হয়।

‘পাঁচ’ সংখ্যার রহস্য ও মি‘রাজের প্রতীকী তাৎপর্য

মি‘রাজ ও বুরাকের ঘটনাবলিতে “পাঁচ” সংখ্যার এক রহস্যময় সাদৃশ্য রয়েছে। “বারক” শব্দটি কুরআনে পাঁচবার এসেছে। নবী (সা.)-এর নাম “মুহাম্মদ”-এ রয়েছে পাঁচটি বর্ণ। “মি‘রাজ” শব্দেও রয়েছে পাঁচটি অক্ষর।

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, এই মি‘রাজের রাতেই মুসলমানদের ওপর ফরজ করা হয় পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ। যেন প্রতিটি নামাজই মানুষের জন্য এক এক মি‘রাজ আল্লাহর সঙ্গে আত্মিক যোগাযোগের এক পবিত্র মাধ্যম।

বুরাক ও মি‘রাজ: নবুওতের মহিমা

মি‘রাজ ছিল এমন এক ঘটনা, যা কোনো নবী বা রাসূলের জীবনে আগে কখনও ঘটেনি। তাই বুরাকের উপস্থিতি নবী (সা.)-এর মর্যাদারই প্রতীক। এই যাত্রা ছিল দেহ ও আত্মা উভয়ের মিলিত উত্থান। বুরাক ছিল সেই মাধ্যম, যা নবীকে দুনিয়ার সীমা ছাড়িয়ে আকাশের সীমানা পর্যন্ত পৌঁছে দিয়েছিল।

বুরাক ইসলামী ইতিহাসে এক অলৌকিক নাম। এটি কেবল এক প্রাণী নয়, বরং বিশ্বাস, আধ্যাত্মিকতা এবং নবুওতের গৌরবের প্রতীক। যেমন বিদ্যুৎ মুহূর্তে আকাশ চিরে আলোর রেখা ফেলে, তেমনি বুরাকও সেই “আলোর বাহন” যা মাটির সীমা ভেঙে আকাশের সীমানা ছুঁয়েছিল।

তাই মুসলমানদের কাছে বুরাক শুধু ইতিহাস নয়, বরং ঈমানের অংশ—যা মনে করিয়ে দেয়, আল্লাহর ইচ্ছা হলে অসম্ভবও সম্ভব।

পাঠকের মতামত:

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

রাষ্ট্রের ধারণাটি একসময় কেবল প্রশাসনিক ক্ষমতা, আইনের শাসন এবং নিরাপত্তা প্রদানের সঙ্গে সম্পর্কিত ছিল। কিন্তু আধুনিক বিশ্বে রাষ্ট্রের ভূমিকা এখন... বিস্তারিত