ফেব্রুয়ারির শুরুতেই কি ভোট? জার্মান রাষ্ট্রদূতের সামনেই ইঙ্গিত দিলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৮ ১৬:৪১:০২
ফেব্রুয়ারির শুরুতেই কি ভোট? জার্মান রাষ্ট্রদূতের সামনেই ইঙ্গিত দিলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
ছবিঃ সংগৃহীত

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম ভাগের মধ্যেই অনুষ্ঠিত হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, নির্বাচন কমিশন (ইসি) ভোটের যে তারিখই নির্ধারণ করুক না কেন, তা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে।

মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে উপদেষ্টার দপ্তরে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে আসেন ঢাকায় নিযুক্ত জার্মানির রাষ্ট্রদূত রুডিগার লোটজ। এই বৈঠকেই নির্বাচনের সময়সীমা ও প্রস্তুতির বিষয়ে এসব কথা বলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।

বৈঠকটিতে দুই দেশের স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ের পাশাপাশি শেখ হাসিনার রায় পরবর্তী জনমনে প্রতিক্রিয়া, জাতীয় নির্বাচনের তারিখ ও প্রস্তুতি, বন্দি প্রত্যর্পণ, সাইবার অপরাধ এবং দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।

নির্বাচনের তারিখ, সময় এবং সরকারের সার্বিক প্রস্তুতি সম্পর্কে জার্মান রাষ্ট্রদূত জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, আশা করা যাচ্ছে নির্বাচন যথাসময়েই অনুষ্ঠিত হবে। তবে ভোটের নির্দিষ্ট দিন ও তারিখ চূড়ান্ত করার এখতিয়ার একমাত্র নির্বাচন কমিশনের হাতেই রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রায়ের পর দেশের পরিস্থিতি কেমন, এ বিষয়ে রাষ্ট্রদূতের প্রশ্নের জবাবে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানান, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বর্তমানে স্বাভাবিক রয়েছে। তিনি বলেন, দু-একটি ছোটখাটো বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া দেশের পরিস্থিতি শান্ত। তবে তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, কেউ যদি এই রায়কে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোর চেষ্টা করে, তবে তাদের কঠোর হাতে দমন করা হবে।

দেশের অপরাধ পরিস্থিতি সম্পর্কে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা দাবি করেন, অপরাধের মাত্রা বাড়ছে না এবং তা বর্তমানে নিয়ন্ত্রণের মধ্যেই আছে। তিনি মন্তব্য করেন, দেশের মানুষ এখন স্বাধীনভাবে নিজেদের মতামত প্রকাশ করতে পারছে, যা গত ১৫ বছর ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার শাসনামলে তারা করতে পারেনি।

দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিষয়ে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, জার্মানি ও বাংলাদেশ একে অপরের পরীক্ষিত বন্ধু। তিনি আশা প্রকাশ করেন, অদূর ভবিষ্যতে দুই দেশের এই সম্পর্ক আরও জোরদার হবে।


শেখ হাসিনার নামে কত সম্পদ আছে? দেখুন হলফনামার পূর্ণ বিবরণ

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৮ ১৪:৫৭:৫৮
শেখ হাসিনার নামে কত সম্পদ আছে? দেখুন হলফনামার পূর্ণ বিবরণ
ছবিঃ সংগৃহীত

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। একইসঙ্গে আদালত তাদের নামে দেশে থাকা সমস্ত সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে রাষ্ট্রীয় মালিকানায় নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। সোমবার (১৭ নভেম্বর) বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১ এই নির্দেশ দেন। এই রায়ের পরই জনমনে কৌতূহল তৈরি হয়েছে যে, শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামাল আসলে কী পরিমাণ বা কত টাকার সম্পত্তির মালিক।

এই বিষয়ে তথ্য পাওয়া গেছে ২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় নির্বাচন কমিশনে (ইসি) জমা দেওয়া তাদের হলফনামা থেকে। ওই নির্বাচনে শেখ হাসিনা গোপালগঞ্জ-৩ এবং আসাদুজ্জামান খান কামাল ঢাকা-১২ আসন থেকে প্রার্থী হয়েছিলেন। তাদের জমা দেওয়া হলফনামা বিশ্লেষণ করে সম্পত্তির একটি চিত্র পাওয়া গেছে।

নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে স্থাবর ও অস্থাবর মিলিয়ে মোট ৪ কোটি ৩৪ লাখ টাকার সম্পদ দেখানো হয়েছিল। ওই সময় শেখ হাসিনার হাতে নগদ অর্থ ছিল মাত্র সাড়ে ২৮ হাজার টাকা। তবে ব্যাংক ও বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানে তার জমার পরিমাণ ছিল প্রায় ২ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। এছাড়া তিনি ২৫ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র এবং ৫৫ লাখ টাকার স্থায়ী আমানতের (এফডিআর) মালিক ছিলেন। হলফনামায় তিনটি মোটরগাড়ির কথা উল্লেখ করা হয়, যার মধ্যে উপহারে পাওয়া গাড়িও রয়েছে, তবে সেগুলোর কোনো মূল্য দেখানো হয়নি। শেখ হাসিনা তার নামে ১৩ লাখ ২৫ হাজার টাকার স্বর্ণালঙ্কারসহ মূল্যবান ধাতু এবং ৭ লাখ ৪০ হাজার টাকার আসবাবপত্র থাকার তথ্য দিয়েছিলেন। তার নামে স্থাবর সম্পদ হিসেবে ১৫ দশমিক ৩ বিঘা কৃষি জমিও রয়েছে, যার অর্জনকালীন মূল্য ৬ লাখ ৭৮ হাজার টাকা। এই জমিগুলো টুঙ্গিপাড়া, গোপালগঞ্জ সদর, গাজীপুর ও রংপুরে অবস্থিত। এছাড়া ঢাকার পূর্বাচলে তার নামে ৩৪ লাখ ৭৬ হাজার টাকা মূল্যের একটি প্লট রয়েছে। গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় তিনতলা ভবনসহ ৬ দশমিক ১০ শতক (আংশিক) জমির মালিকানাও দেখিয়েছিলেন তিনি, যার অর্জনকালীন মূল্য উল্লেখ করা হয়েছিল ৫ লাখ টাকা।

সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ঢাকা-১২ আসন থেকে সংসদ সদস্য হয়েছিলেন। তার জমা দেওয়া হলফনামায় স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়। তিনি হলফনামায় হাতে নগদ প্রায় ৮৪ লাখ টাকা দেখিয়েছিলেন। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে তার জমার পরিমাণ ছিল প্রায় ৮২ লাখ টাকা। আসাদুজ্জামান খানের নামে বন্ড ও শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ ছিল প্রায় ২৪ লাখ টাকার। এছাড়া তিনি ডাকঘর, সঞ্চয়পত্র বা স্থায়ী আমানত হিসেবে ২ কোটি ১ লাখ টাকা দেখান। তিনি ১ কোটি ৬১ লাখ টাকা মূল্যের দুটি মোটরগাড়ির মালিক ছিলেন। তার বাসায় ইলেকট্রনিক সরঞ্জাম ও আসবাবপত্র ছিল ২ লাখ টাকার। হলফনামায় তিনি ঋণ হিসেবে ব্যবসার মূলধন দেখিয়েছিলেন ২ কোটি ২০ লাখ টাকা। তার কাছে ১০ ভরি সোনা থাকার কথা উল্লেখ থাকলেও সেটির মূল্য দেখানো হয়নি। স্থাবর সম্পদ হিসেবে আসাদুজ্জামান খানের ১৭১ শতাংশ (পাঁচ বিঘার বেশি) কৃষি জমি রয়েছে, যার অর্জনকালীন মূল্য ১ কোটি ৬ লাখ টাকা। অকৃষি জমির পরিমাণ সাড়ে ১৮ শতাংশ, যার মূল্য সাড়ে ৫৮ লাখ টাকা। তিনি বাড়ি ও অ্যাপার্টমেন্টের ঘরে দুটি সম্পদের কথা উল্লেখ করেন। এর মধ্যে একটি গ্রামের বাড়ি, যার অর্জনকালীন মূল্য ৮০ লাখ টাকা এবং অন্য একটির মূল্য দেখানো হয়েছে প্রায় ১৩ লাখ টাকা। সব মিলিয়ে (১০ ভরি সোনার মূল্য বাদে) আসাদুজ্জামান খানের মোট সম্পদের অর্থমূল্য দাঁড়ায় প্রায় ১০ কোটি ২৫ লাখ টাকা।


প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ডিসিদের বৈঠক: নির্বাচন নিয়ে উঠল 'দুটি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব'

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৮ ১৪:৩৮:৩৯
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ডিসিদের বৈঠক: নির্বাচন নিয়ে উঠল 'দুটি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব'
প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে ডিসিদের উদ্দেশে বক্তব্য দেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) এক মতবিনিময় সভায় আসন্ন নির্বাচনকে ঘিরে দুটি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব উঠেছে। ডিসিরা ধর্মীয় ওয়াজ মাহফিলে রাজনৈতিক বক্তব্য দেওয়া সম্পূর্ণ বন্ধ করার এবং এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের নির্বাচনী প্রচারে অংশ নেওয়া ঠেকানোর পরামর্শ দিয়েছেন। সোমবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে ৬৪ জেলার ডিসি এবং আট বিভাগীয় কমিশনার উপস্থিত ছিলেন।

সভায় অন্তত দুজন ডিসি জানান যে, ধর্মীয় ওয়াজ মাহফিলে রাজনৈতিক বক্তব্য দেওয়ার প্রবণতা বাড়ছে, যা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মধ্যে উত্তেজনা ও দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করছে। এই কারণে তারা জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আচরণবিধিতে ওয়াজ মাহফিলে রাজনৈতিক বক্তব্য না দেওয়ার বিধানটি যুক্ত করার পরামর্শ দেন।

এই প্রস্তাবের বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেন, "ডিসিদের প্রস্তাবটি ভালো। নির্বাচন কমিশন এখন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।" তিনি আরও বলেন, "ধর্মীয় ওয়াজের মধ্যে রাজনৈতিক আলোচনা ঢোকালে তো সমস্যা। এ জন্য ওয়াজের অনুমতি দেওয়ার সময়ই রাজনৈতিক আলোচনা করা যাবে না—এমন শর্ত জুড়ে দেওয়া উচিত।"

ডিসিদের পক্ষ থেকে দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ উদ্বেগটি ছিল এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ নিয়ে। বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহী বিভাগের একজন ডিসি সভায় জানান, এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অনেক শিক্ষক-কর্মচারী এরই মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রার্থীর পক্ষে সরাসরি নির্বাচনী প্রচারণায় নেমে পড়েছেন। অথচ এই শিক্ষকরাই জাতীয় নির্বাচনে প্রিসাইডিং, সহকারী প্রিসাইডিং এবং পোলিং অফিসার হিসেবে ভোটকেন্দ্র ও কক্ষ নিয়ন্ত্রণের মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করবেন। ডিসিরা মনে করেন, দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের কোনো রাজনৈতিক দলের পক্ষে এমন প্রকাশ্য অবস্থান নেওয়া সুষ্ঠু ভোট গ্রহণের ক্ষেত্রে বড় ধরনের প্রতিবন্ধকতা তৈরি করতে পারে।

এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা সরকারি সুযোগ-সুবিধা পেয়েও প্রচারে অংশ নিতে পারবেন কি না, এ বিষয়ে ইসি সচিব আখতার আহমেদ বলেন, "এটা আমরা পর্যালোচনা করব। এ বিষয়ে কন্ট্রাক্ট রুলে (চুক্তি বিধি) নিষেধ থাকলে সেটা মনে করিয়ে দেওয়া হবে। আর যদি কন্ট্রাক্ট রুলে না থাকে, তাহলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"

সভায় ডিসিরা উল্লেখ করেন, এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা এখন তাদের মূল বেতনের পুরোটাই সরকার থেকে পান এবং এর সাথে কিছু ভাতাও পান। এর আগেও ঝিনাইদহের তৎকালীন ডিসি মনিরা বেগম এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের জন্য সরকারি কর্মচারীদের মতো একটি পৃথক বিধিমালা করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। সেই প্রস্তাবের পক্ষে যুক্তি ছিল যে, এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের সরাসরি রাজনীতিতে যুক্ত থাকার সুযোগ থাকায় অনেক সময় পাঠদান কার্যক্রমে তাদের দায়সারা মনোভাব দেখা যায়। একটি বিধিমালা থাকলে শিক্ষকতার পাশাপাশি তাদের ঠিকাদারি বা সাংবাদিকতার মতো অন্য পেশায় যুক্ত থাকার প্রবণতা ঠেকানো যাবে এবং পাঠদানে আন্তরিক করা সম্ভব হবে।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব শেখ আব্দুর রশীদের সঞ্চালনায় এই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান এবং আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল। সভায় মন্ত্রিপরিষদ সচিব, জনপ্রশাসন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং নির্বাচন কমিশনের জ্যেষ্ঠ সচিবরা জাতীয় নির্বাচন সংক্রান্ত বিষয়ে ডিসিদের বিভিন্ন দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য দেন।


একটি 'হ্যাঁ' বা 'না' ভোটে নির্ধারিত হবে সংবিধানের সংস্কার: ব্যালটে থাকছে যে ৪ প্রস্তাব

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৮ ১৪:৩২:১১
একটি 'হ্যাঁ' বা 'না' ভোটে নির্ধারিত হবে সংবিধানের সংস্কার: ব্যালটে থাকছে যে ৪ প্রস্তাব
ছবিঃ সংগৃহীত

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনেই গণভোট অনুষ্ঠিত হবে। এই গণভোটে জনগণের কাছে কী কী বিষয়ে মতামত চাওয়া হবে, তার একটি খসড়া প্রস্তাব তৈরি করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে প্রধান উপদেষ্টার অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে এক পোস্টের মাধ্যমে এই খসড়া প্রস্তাবটি প্রকাশ করা হয়।

ওই পোস্টে গণভোটের মূল প্রশ্নটি তুলে ধরা হয়েছে। জনগণকে যে প্রশ্নটির মুখোমুখি হতে হবে তা হলো— "আপনি কি জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ, ২০২৫ এবং জুলাই জাতীয় সনদে লিপিবদ্ধ সংবিধান সংস্কার সম্পর্কিত নিম্নলিখিত প্রস্তাবগুলোর প্রতি আপনার সম্মতি জ্ঞাপন করছেন?"

এই মূল প্রশ্নের অধীনে চারটি প্রধান বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে। প্রথমত, নির্বাচনকালীন সময়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার, নির্বাচন কমিশন এবং অন্যান্য সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলো জুলাই সনদে যে প্রক্রিয়ার কথা বলা হয়েছে, সেই প্রক্রিয়া অনুসারেই গঠন করা হবে।

দ্বিতীয় প্রস্তাবে বলা হয়েছে, আগামীতে সংসদ হবে দুই কক্ষবিশিষ্ট। এর মধ্যে একটি হবে উচ্চকক্ষ, যেখানে ১০০ জন সদস্য থাকবেন। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিভিন্ন দল যে পরিমাণ ভোট পাবে, সেই ভোটের আনুপাতিক হারে এই উচ্চকক্ষের সদস্যরা নির্বাচিত হবেন। এই প্রস্তাবে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, ভবিষ্যতে সংবিধান সংশোধন করতে হলে অবশ্যই এই উচ্চকক্ষের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের অনুমোদন প্রয়োজন হবে।

তৃতীয় প্রস্তাবে উল্লেখ করা হয়েছে, সংসদে নারীর প্রতিনিধিত্ব বাড়ানো, বিরোধী দল থেকে ডেপুটি স্পিকার এবং বিভিন্ন সংসদীয় কমিটির সভাপতি নির্বাচন, প্রধানমন্ত্রীর পদের মেয়াদ সীমিত করা, রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা বৃদ্ধি, নাগরিকদের মৌলিক অধিকার সম্প্রসারণ, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা এবং স্থানীয় সরকার শক্তিশালীকরণসহ বিভিন্ন বিষয়ে মোট ৩০টি প্রস্তাবে রাজনৈতিক দলগুলো জুলাই জাতীয় সনদে ঐকমত্যে পৌঁছেছে। আগামী নির্বাচনে বিজয়ী দলগুলোকে অবশ্যই এই প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়ন করতে হবে।

চতুর্থ বা শেষ প্রস্তাবে বলা হয়েছে, জুলাই সনদে বর্ণিত অন্যান্য সংস্কারকাজগুলোও রাজনৈতিক দলগুলোর দেওয়া প্রতিশ্রুতি অনুসারে বাস্তবায়ন করা হবে।

প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, গণভোটের দিন ভোটারদের এই চারটি বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে তৈরি একটিমাত্র প্রশ্নের উত্তরে 'হ্যাঁ' অথবা 'না' ভোট দিয়ে তাদের সুস্পষ্ট মতামত জানাতে হবে।


নির্বাচনের আগে আনসারের জন্য ১৭ হাজার শটগান কিনছে সরকার

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৮ ১৪:২৬:১৯
নির্বাচনের আগে আনসারের জন্য ১৭ হাজার শটগান কিনছে সরকার
ছবিঃ সংগৃহীত

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে আনসার সদস্যদের জন্য ১৭ হাজার নতুন শটগান কেনা হবে বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে এই সংগ্রহের অনুমোদন দেওয়া হয়। তবে, ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তার জন্য ৪০ হাজার বডি অন ক্যামেরা কেনার পূর্ববর্তী সিদ্ধান্ত থেকে সরকার সরে এসেছে।

সচিবালয়ে ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটি এবং অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির বৈঠক শেষে ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।

তিনি বলেন, আনসার সদস্যদের কাছে থাকা অস্ত্রগুলো অনেক পুরনো হয়ে গেছে। তাই তাদের আধুনিকায়নের অংশ হিসেবে এই নতুন শটগান কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

বডি ক্যামেরা সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা জানান, আগে সব ভোটকেন্দ্রের জন্য ৪০ হাজার বডি অন ক্যামেরা কেনার যে সিদ্ধান্ত ছিল, তা এখন আর বাস্তবায়ন করা হচ্ছে না। পরিবর্তে, শুধুমাত্র যেসব কেন্দ্রকে 'ঝুঁকিপূর্ণ' হিসেবে চিহ্নিত করা হবে, সেই কেন্দ্রগুলোর নিরাপত্তার জন্য বডি ক্যামেরা কেনা হবে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, এই কেনাকাটা অবশ্যই স্বচ্ছতার সঙ্গে সম্পন্ন করা হবে। কোন কোন কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ বলে বিবেচিত হবে, তা নির্বাচন কমিশন (ইসি) এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পারস্পরিক আলোচনার মাধ্যমে চূড়ান্ত করবে।

বৈঠকে আরও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান ড. সালেহউদ্দিন। তিনি বলেন, দেশে ই-পাসপোর্টের ব্যাপক চাহিদা থাকায় নতুন করে এক কোটি ই-পাসপোর্ট বই কেনার জন্য প্রয়োজনীয় বরাদ্দ অনুমোদন করা হয়েছে। এছাড়া, দেশে টিকার সংকটের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে শিশুদের জন্য ইপিআই (সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি) টিকা কেনার সিদ্ধান্তও গৃহীত হয়েছে।

এ সময় অর্থ উপদেষ্টা আরও জানান, আসন্ন রমজান মাসকে সামনে রেখে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকার চাল ও গম আমদানি করবে। রোজার আগেই এই আমদানি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।


দোহায় কাতার–বাংলাদেশ প্রতিরক্ষা আলোচনা: সম্পর্ক জোরদারে নতুন অগ্রগতি

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৮ ১২:২৫:২৪
দোহায় কাতার–বাংলাদেশ প্রতিরক্ষা আলোচনা: সম্পর্ক জোরদারে নতুন অগ্রগতি
ছবিঃ ডেইলি সান

দ্বিপাক্ষিক প্রতিরক্ষা সহযোগিতা জোরদারে দোহার উল্লেখযোগ্য কূটনৈতিক ব্যস্ততার মধ্যে কাতারের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষা বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী শেখ সাউদ বিন আবদুর রহমান বিন হাসান আল থানি-র সঙ্গে বৈঠক করেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের সামরিক সচিবালয়ের প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল এস এম কামরুল হাসান। বাংলাদেশের উচ্চপর্যায়ের সামরিক প্রতিনিধিদল কাতারের আমন্ত্রণে দোহার এ বৈঠকে অংশ নেয়।

দুই দেশের প্রতিনিধিদের মধ্যে অনুষ্ঠিত সৌহার্দ্যপূর্ণ আলোচনা মূলত দ্বিপাক্ষিক প্রতিরক্ষা, সামরিক প্রশিক্ষণ, নিরাপত্তা সহযোগিতা, সক্ষমতা উন্নয়ন এবং ভবিষ্যৎ কৌশলগত অংশীদারিত্ব—এসব বিষয়ে কেন্দ্রিত ছিল। উভয়পক্ষই বিদ্যমান সহযোগিতাকে আরও বিস্তৃত করার পাশাপাশি উদীয়মান নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে।

কাতার ও বাংলাদেশের মধ্যে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সামরিক ও প্রতিরক্ষা খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধি পেয়েছে। দোহার এই বৈঠককে দুই দেশের সম্পর্ককে আরও একধাপ এগিয়ে নেওয়ার গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হিসেবে দেখা হচ্ছে।

বৈঠকে কাতার ও বাংলাদেশের ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।

-নাজমুল হাসান


ভুয়া ও উসকানিমূলক বক্তব্য প্রচার: ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলোকে এনসিএসএর কঠোর সতর্কতা

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৮ ১২:১৯:৫৭
ভুয়া ও উসকানিমূলক বক্তব্য প্রচার: ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলোকে এনসিএসএর কঠোর সতর্কতা
ছবিঃ বি এস এস

দেশের বিভিন্ন ডিজিটাল ও ইলেকট্রনিক প্ল্যাটফর্মে পলাতক ও দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর বক্তব্য প্রচারের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ন্যাশনাল সাইবার সিকিউরিটি এজেন্সি (এনসিএসএ)। সংস্থাটি জানিয়েছে—এ ধরনের তথ্যপ্রবাহ গত এক সপ্তাহ ধরে দেশের জাতীয় নিরাপত্তা ও জনশৃঙ্খলা বিনষ্ট করছে এবং পরিস্থিতি আরও অবনতির দিকে যাচ্ছে।

সোমবার রাতে দেওয়া এক বিবৃতিতে এনসিএসএ জানায়, কিছু ডিজিটাল মাধ্যম নিয়মিতভাবে ঘৃণাবিদ্বেষমূলক বক্তব্য, জাতিগত উসকানি এবং সহিংসতার আহ্বান ছড়াচ্ছে। এসব সামগ্রী জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে, সহিংসতা উস্কে দিচ্ছে এবং বিভিন্ন এলাকায় অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করছে।

এনসিএসএ দাবি করে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল সম্প্রতি জুলাই মাসের গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় রায় প্রদান করেছে। ১৭ নভেম্বর ২০২৫ তারিখে দেওয়া ৪৫৩ পৃষ্ঠার রায়ে ট্রাইব্যুনাল সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনকে দুটি অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড দেয়। সংস্থাটি জানায়, দণ্ডিত ও পলাতক ব্যক্তির বক্তব্য সম্প্রচার করা দেশের সামগ্রিক সামাজিক সম্প্রীতি ও নিরাপত্তাকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।

এনসিএসএ আরও উল্লেখ করে, এ ধরনের বক্তব্যে সহিংসতার স্পষ্ট আহ্বান রয়েছে, যা অরাজকতা, নাশকতা, অগ্নিসন্ত্রাস এবং অন্যান্য অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডকে উৎসাহিত করছে। ফলে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে শৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরও নাজুক হয়ে পড়ছে।

বিবৃতিতে সাইবার সিকিউরিটি অর্ডিন্যান্স ২০২৫-এর ২৬(১) ধারা উদ্ধৃত করে জানানো হয়—কেউ যদি নিজের বা অন্যের আইডি অবৈধভাবে ব্যবহার করে ঘৃণাত্মক বক্তব্য প্রচার, সহিংসতা উস্কে দেওয়া বা অপরাধ সংঘটনে নির্দেশনা দেয়, তবে তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। একই অর্ডিন্যান্সের ২৬(২) ধারায় এ ধরনের অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে।

এ পরিস্থিতিতে এনসিএসএ সতর্কবার্তা দিয়ে জানায়, প্রয়োজন হলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সংশ্লিষ্ট বক্তব্য বা তথ্য অপসারণ, ব্লক বা স্থানান্তর করতে পারে। প্রয়োজনে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)-কেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করা যেতে পারে।

-সুত্র বি এস এস


আমরা রায়ে খুশি, তবে...হাসিনাদের দণ্ড নিয়ে যা বলল সাঈদের বাবা

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৭ ১৭:১২:৩৮
আমরা রায়ে খুশি, তবে...হাসিনাদের দণ্ড নিয়ে যা বলল সাঈদের বাবা
ছবিঃ সংগৃহীত

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করেছেন। এই রায়ের পর, ওই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ হওয়া আবু সাঈদের পরিবার সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

সোমবার (১৭ নভেম্বর) রায় ঘোষণার পর শহীদ আবু সাঈদের বড় ভাই রমজান আলী তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘আমরা এ রায়ে খুশি হয়েছি। তবে রায় দ্রুত কার্যকর করা হোক এটাই আমাদের প্রত্যাশা।’

এর আগে আজ দুপুরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এই ঐতিহাসিক রায় ঘোষণা করেন। রায়ে বলা হয়, শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধেই অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে। ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনাকে দুটি অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড দেন। এছাড়া, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকেও একটি অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। মামলার অপর আসামি, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন রাজসাক্ষী হওয়ায় তাকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

রায়ের পর আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেনও দ্রুত দণ্ড কার্যকরের দাবি জানান। তিনি বলেন, ‘শুধু রায় ঘোষণাই যথেষ্ট নয়। দণ্ডপ্রাপ্তদের দেশে ফিরিয়ে এনে দ্রুত রায় কার্যকর করতে হবে।’

শহীদ আবু সাঈদের মা মনোয়ারা বেগম বলেন, ‘ছেলেকে হারানোর শূন্যতা কখনো পূরণ হবে না। আর কোনো মায়ের বুক যেন এভাবে খালি না হয় সে জন্য দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।’


মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি হাসিনা-কামালের সব সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের নির্দেশ

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৭ ১৭:০৫:১৯
মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি হাসিনা-কামালের সব সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের নির্দেশ
ছবিঃ সংগৃহীত

গত বছরের জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের নামে বাংলাদেশে থাকা সমস্ত সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে রাষ্ট্রীয় মালিকানায় নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

সোমবার (১৭ নভেম্বর) ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এই রায় ঘোষণা করেন। ট্রাইব্যুনালের অন্য দুই সদস্য হলেন বিচারপতি শফিউল আলম মাহমুদ এবং বিচারপতি মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

এই মামলায় শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মোট পাঁচটি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আনা হয়েছিল। অভিযোগগুলো হলো গত বছরের ১৪ জুলাই গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনার ‘উসকানিমূলক বক্তব্য’ প্রদান; হেলিকপ্টার, ড্রোন ও প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করে আন্দোলনকারীদের নির্মূল করার নির্দেশ দেওয়া; রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদকে গুলি করে হত্যার নির্দেশ; রাজধানীর চানখাঁরপুল এলাকায় ছয়জন আন্দোলনকারীকে গুলি করে হত্যার নির্দেশ এবং সবশেষ আশুলিয়ায় ছয়জনকে পুড়িয়ে হত্যার নির্দেশ দেওয়া।

মামলার শুরুতে শেখ হাসিনা ছিলেন একমাত্র আসামি। পরবর্তীতে চলতি বছরের ১৬ মার্চ সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকেও এই মামলায় আসামি করা হয়। সবশেষ, গত ১২ মে মামলার তদন্ত প্রতিবেদনে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের নাম অন্তর্ভুক্ত হয়।

ট্রাইব্যুনাল গত ১০ জুলাই এই মামলায় তিনজনের বিরুদ্ধেই আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করেন। ওই দিনই সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন 'অ্যাপ্রুভার' বা রাজসাক্ষী হওয়ার জন্য আবেদন করেন এবং পরে তিনি ট্রাইব্যুনালে জবানবন্দি দেন।

ছাত্র-জনতার ব্যাপক আন্দোলনের মুখে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান, যার মধ্য দিয়ে তার নেতৃত্বাধীন সরকারের প্রায় ১৬ বছরের শাসনের অবসান হয়।

মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলার তিন আসামির মধ্যে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামাল বর্তমানে পলাতক রয়েছেন। বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, তারা দুজনই ভারতে অবস্থান করছেন। চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন এই মামলার একমাত্র গ্রেপ্তারকৃত আসামি।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (প্রসিকিউটর) গাজী মোনাওয়ার জানিয়েছেন, পলাতক থাকার কারণে শেখ হাসিনা এবং আসাদুজ্জামান খান কামাল সাজার এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করতে পারবেন না।

তিনি আইনের ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, ট্রাইব্যুনাল আইনে স্পষ্টভাবে বলা আছে যে, রায় ঘোষণার ৩০ দিনের মধ্যে আপিল করতে হয়। তবে আপিলের এই সুযোগ নিতে হলে সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে অবশ্যই আত্মসমর্পণ করতে হবে। অথবা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হলেও ওই আসামি আপিলের সুযোগ পেতে পারেন।


বিবাহবার্ষিকীর দিনেই মৃত্যুদণ্ডের রায় পেলেন শেখ হাসিনা

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৭ ১৬:৫৩:১৪
বিবাহবার্ষিকীর দিনেই মৃত্যুদণ্ডের রায় পেলেন শেখ হাসিনা
ছবিঃ সংগৃহীত

গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। তার বিরুদ্ধে আনা মোট পাঁচটি অভিযোগের মধ্যে দুটি অভিযোগে তাকে মৃত্যুদণ্ড এবং অপর একটি অভিযোগে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

সোমবার (১৭ নভেম্বর) এই রায় ঘোষণা করা হয়। দিনটি ঘটনাক্রমে শেখ হাসিনার বিবাহবার্ষিকীর দিন। ১৯৬৭ সালের এই দিনেই তিনি পরমাণুবিজ্ঞানী ড. এম এ ওয়াজেদ আলী মিয়ার সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার সময় তাদের বিয়ে হয়। ড. ওয়াজেদ আলী ২০০৯ সালের ৯ মে মারা যান।

শেখ হাসিনার পাশাপাশি এই মামলার অপর দুই আসামির বিরুদ্ধেও রায় ঘোষণা করা হয়েছে। সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে একটি অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। মামলার তৃতীয় আসামি পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন 'অ্যাপ্রুভার' বা রাজসাক্ষী হওয়ায় তাকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তিন আসামির মধ্যে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামাল পলাতক রয়েছেন। বিভিন্ন সূত্রমতে, তারা দুজনই বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছেন।

সোমবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এই রায় ঘোষণা করেন। ট্রাইব্যুনালের অন্য সদস্যরা হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

রায় ঘোষণার সময় আদালত কক্ষ আইনজীবীতে পরিপূর্ণ ছিল। এছাড়া জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে নিহত কয়েকজনের পরিবারের সদস্যরাও এ সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

রায় পড়ার সময় ট্রাইব্যুনাল জানান, ঢাকার যাত্রাবাড়ী, রামপুরা, বাড্ডা, সাভার, আশুলিয়া, রংপুরসহ বিভিন্ন স্থানে যেভাবে প্রাণঘাতী গুলি ব্যবহার করে আন্দোলনকারীদের হত্যা করা হয়েছে, সেগুলোর ভিডিও এবং তথ্যপ্রমাণের বিবরণ রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে।

আন্দোলনের সময়কার মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা যেসকল প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল, সেগুলোর বিভিন্ন অংশও আদালতে পড়ে শোনানো হয়। বেলা সোয়া একটার দিকে গণ-অভ্যুত্থান চলাকালে বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে শেখ হাসিনার হওয়া টেলিফোন কথোপকথনগুলো আদালতে শোনানো হয়। এর কিছুক্ষণ আগে শেখ হাসিনার সঙ্গে সে সময়ের তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর একটি ফোনালাপও শোনানো হয়।

এর আগে গত ১৩ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এই মামলার রায় ঘোষণার জন্য আজকের দিনটি (১৭ নভেম্বর) ধার্য করেছিলেন।

পাঠকের মতামত:

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

রাষ্ট্রের ধারণাটি একসময় কেবল প্রশাসনিক ক্ষমতা, আইনের শাসন এবং নিরাপত্তা প্রদানের সঙ্গে সম্পর্কিত ছিল। কিন্তু আধুনিক বিশ্বে রাষ্ট্রের ভূমিকা এখন... বিস্তারিত