ভোটার তালিকায় নাম নেই তারেকের, নির্বাচনে লড়তে পারবেন কীভাবে?

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৬ ২০:২২:১৭
ভোটার তালিকায় নাম নেই তারেকের, নির্বাচনে লড়তে পারবেন কীভাবে?
ছবিঃ সংগৃহীত

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান চলতি নভেম্বর মাসের শেষ নাগাদ দেশে ফিরতে পারেন বলে জানিয়েছেন দলটির একজন জ্যেষ্ঠ নেতা। তার এই দেশে ফেরার সম্ভাবনার সঙ্গে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের একটি গুরুত্বপূর্ণ আইনি দিক জড়িত রয়েছে। নির্বাচনে অংশ নিতে হলে তাকে অবশ্যই ভোটার হতে হবে এবং সেই প্রক্রিয়াটি জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই সম্পন্ন করতে হবে। নির্বাচন কমিশন (ইসি) জানিয়েছে, তফসিল ঘোষণার পর নতুন করে কাউকে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে না।

২০০৮ সালে যখন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে প্রথমবার ছবিসহ ভোটার তালিকা তৈরি করা হয়, তখন তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমান লন্ডনে অবস্থান করছিলেন। একারণে তারা সেসময় ভোটার হতে পারেননি। যদিও ডা. জুবাইদা রহমান কয়েক মাস আগে ভোটার হিসেবে নিবন্ধিত হয়েছেন, কিন্তু তারেক রহমান দেশে না ফেরায় এখনও ভোটার তালিকার বাইরেই রয়েছেন।

জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের একটি সূত্র জানিয়েছে, নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য ছবিসহ জাতীয় পরিচয়পত্র থাকা বাধ্যতামূলক, যার জন্য তাকে ভোটার হতে হবে। যদি তিনি তফসিল ঘোষণার আগে দেশে ফিরে ভোটার না হন, তবে তিনি বড় ধরনের আইনি জটিলতায় পড়বেন।

তফসিল ঘোষণার পর ভোটার হওয়ার প্রক্রিয়াটি 'খুবই কঠিন' বলে জানিয়েছেন জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের নিবন্ধন ও প্রবাসী শাখার একজন কর্মকর্তা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি জানান, সেক্ষেত্রে আদালত থেকে একটি বিশেষ 'ডিক্লারেশন' (ঘোষণা) প্রয়োজন হয়। এরপর প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ পাঁচজন কমিশনারকে নিয়ে গঠিত 'ফুল কমিশন'কে এই বিষয়ে সর্বসম্মতভাবে একমত হতে হয়। ওই কর্মকর্তা বলেন, "পাঁচ কমিশনের মধ্যে একজনও যদি দ্বিমত পোষণ করেন, তবে তিনি আর ভোটার হতে পারবেন না।"

প্রবাসীদের জন্য যুক্তরাজ্যের লন্ডন, বার্মিংহাম ও ম্যানচেস্টারে ভোটার নিবন্ধনের কার্যক্রম চালু থাকলেও তারেক রহমান সেই সুযোগ নেননি। জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের প্রবাসী শাখা জানিয়েছে, তিনি লন্ডনে ভোটার হওয়ার জন্য আবেদন করেননি এবং তিনি বাংলাদেশেই ভোটার হবেন বলে জানানো হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, লন্ডনে ভোটার হতে হলেও আবেদনকারীকে সশরীরে নির্বাচন অফিসে গিয়ে স্বাক্ষর, দশ আঙুলের ছাপ ও চোখের আইরিশ দিতে হয়। ইসি জানিয়েছে, চলতি বছরের ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত যুক্তরাজ্য থেকে ১২ হাজার ৪৯৮ জন প্রবাসী ভোটারের আবেদন করলেও চূড়ান্তভাবে ভোটার হয়েছেন ৫ হাজার ৭৪৯ জন, যাদের মধ্যে তারেক রহমানের নাম নেই। সব মিলিয়ে ১১টি দেশের ২১টি স্টেশন থেকে মোট ৬৯ হাজার ৬৬২ জন প্রবাসী আবেদন করে ২৫ হাজার ৮৫৯ জন ভোটার হয়েছেন।

এই পুরো বিষয়টি একটি নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে আটকে আছে। নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার সম্প্রতি জানিয়েছেন, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে ঘোষণা করা হতে পারে এবং ভোটগ্রহণ হবে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে। ইসি বর্তমানে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করছে, যা শেষ হলেই তফসিলের চূড়ান্ত তারিখ ঘোষণা করা হবে।

অন্যদিকে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ গত ১১ নভেম্বর সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, তিনি আশা করছেন তারেক রহমান এই (নভেম্বর) মাসের শেষ নাগাদ অথবা ডিসেম্বরের একেবারে শুরুতে দেশে ফিরতে পারেন।

যদি বিএনপির ওই নেতার কথা অনুযায়ী তারেক রহমান তফসিল ঘোষণার ঠিক আগ মুহূর্তেও দেশে ফেরেন, তবে তিনি ভোটার হওয়ার সুযোগ পাবেন। উল্লেখ্য, বিএনপি এরই মধ্যে তাদের সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকা ঘোষণা করেছে, যেখানে তারেক রহমান বগুড়া-৬ আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে জানানো হয়েছে।

সূত্র:জাগোনিউজ২৪


অতীতে ইসি সরকারের ‘মন্ত্রী’ ছিল: কাদের সিদ্দিকীর কড়া সমালোচনা

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৬ ১৮:১৫:৫০
অতীতে ইসি সরকারের ‘মন্ত্রী’ ছিল: কাদের সিদ্দিকীর কড়া সমালোচনা
ছবিঃ সংগৃহীত

কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেছেন, দেশের মানুষকে স্বাধীনভাবে ভোট দেওয়ার সুযোগ নিশ্চিত করতে পারলেই শান্তি ফিরে আসবে। তিনি নির্বাচন কমিশনের (ইসি) উদ্দেশে বলেন, অতীতে এই প্রতিষ্ঠানটি সরকারের 'মন্ত্রীর' মতো কাজ করেছে। তবে তিনি মনে করেন, এবারের ইসির সামনে জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনার একটি সুযোগ তৈরি হয়েছে।

রোববার (১৬ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আয়োজিত সংলাপে অংশ নিয়ে তিনি এসব মন্তব্য করেন। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ইসির দ্বিতীয় দিনের সংলাপের দ্বিতীয় পর্বে কাদের সিদ্দিকীর দলসহ মোট ছয়টি দলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল।

সংলাপে সভাপতিত্ব করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন। এ সময় অন্য তিন নির্বাচন কমিশনার, ইসির জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ এবং কমিশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

কাদের সিদ্দিকী তার বক্তব্যের শুরুতেই বলেন, তিনি আজ কেবল প্রস্তাব দিতে আসেননি, বরং একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে সম্মান জানাতে এবং সংলাপে অংশ নিতে এসেছেন। সরকারের সঙ্গে আলোচনায় অনাগ্রহের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, "১৫ মাস হলো, সরকার ডাকলে আর যাই না। নির্বাচন হওয়ার আগ পর্যন্ত সরকারের ডাকে আলোচনায় যাওয়ার প্রশ্নই আসে না।" তিনি আরও বলেন, দেশে নিবন্ধিত দল ৪০ থেকে ৫০টি থাকলেও আলোচনা হয় মাত্র দুই থেকে তিনটি দলের সঙ্গে, যা কোনোভাবেই নিরপেক্ষ নয়। অতীতের পরিস্থিতির সমালোচনা করে তিনি বলেন, একসময় এমন অবস্থা তৈরি করা হয়েছিল যেন "শেখ হাসিনাই বাংলাদেশ, শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগই বাংলাদেশ।"

কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি 'জয় বাংলা' স্লোগান প্রসঙ্গে বলেন, এটি বলা কোনো অপরাধ হতে পারে না। এই স্লোগানের জন্য যদি মানুষকে কারাগারে পাঠানো হয়, তবে ইতিহাসের কাছে জবাবদিহি করতে হবে। নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা সম্পর্কে তিনি বলেন, নির্বাচনের তপশিল ঘোষণার পর ইসি রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়। তখন সরকারের একমাত্র দায়িত্ব হলো ইসির সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা।

অতীতের নির্বাচন নিয়ে নিজের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে কাদের সিদ্দিকী বলেন, ভোটকেন্দ্রে ফলাফল পরিবর্তনের ঘটনাও ঘটেছে। তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, এক কেন্দ্রে ১ হাজার ৭০৮ ভোটকে ২ হাজার ৬০০ বানানো হয়েছে। মানুষ পরপর তিনবার ভোট দিতে পারেনি। তিনি মন্তব্য করেন, দেশের মানুষ না খেয়ে থাকতে রাজি আছে, কিন্তু ভোট দিতে না পারার যন্ত্রণা সহ্য করতে রাজি নয়।

আন্দোলন পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে তিনি বলেন, কিছু রাজনৈতিক শক্তি 'মুরুব্বিদের' মানছে না এবং বাংলাদেশের ইতিহাসকে অস্বীকার করছে, যা ভবিষ্যতের জন্য বিপজ্জনক। তিনি আরও বলেন, টাকা আত্মসাৎ করলে বা মানুষ খুন করলে শাস্তি হওয়া উচিত, কিন্তু আন্দোলনের কারণে কাউকে শাস্তি দেওয়া ঠিক হবে না। তিনি বলেন, "যদি বলেন, শেখ হাসিনা অপসারণের কারণে শাস্তি দিতে হবে, তাহলে আল্লাহকে শাস্তি দিতে হবে।"

জাতীয় নির্বাচনের সঙ্গে গণভোট আয়োজনের সিদ্ধান্তকে 'বড় অসংগতি' হিসেবে উল্লেখ করেন কাদের সিদ্দিকী। তিনি বলেন, চারটি প্রশ্নে ভোটাররা দুটি 'হ্যাঁ' এবং দুটি 'না' ভোট দিতে পারবেন কি না, সে বিষয়ে জনগণ পরিষ্কারভাবে জানে না। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন, গণভোটে যদি মানুষের অংশগ্রহণ কম হয়, তবে পুরো নির্বাচন প্রক্রিয়াটাই প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়বে।

এসময় তিনি বলেন, ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার তাদের দলকে একটি বৈঠকেও আমন্ত্রণ জানায়নি। একারণে নির্বাচন কমিশনের আমন্ত্রণে তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন।

তিনি পুনরায় জোর দিয়ে বলেন, জনগণকে যদি ভোট দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়, তাহলেই দেশে শান্তি ফিরে আসবে এবং বাংলাদেশ সুইজারল্যান্ডের চেয়েও শান্ত একটি দেশে পরিণত হতে পারে। কাদের সিদ্দিকী সাধারণ মানুষের প্রতি সম্মান জানিয়ে বলেন, রিকশাওয়ালা, ক্ষেতমজুরসহ এই সাধারণ মানুষদের সম্মানের জন্যই দেশ স্বাধীন হয়েছিল।


হাসিনার রায় নিয়ে নৈরাজ্য সৃষ্টির পাঁয়তারা চলছে: মির্জা ফখরুল

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৬ ১৪:৫৪:১০
হাসিনার রায় নিয়ে নৈরাজ্য সৃষ্টির পাঁয়তারা চলছে: মির্জা ফখরুল
ছবিঃ সংগৃহীত

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মন্তব্য করেছেন, একটি নির্দিষ্ট মহল শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলার রায়কে কেন্দ্র করে দেশে নৈরাজ্য বা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে। তিনি বলেন, "আগামীকাল ফ্যাসিস্ট হাসিনার বিরুদ্ধে গণহত্যার রায় হবে। এই নিয়ে সারাদেশে একটা অনিশ্চয়তা, আতঙ্ক বিরাজ করছে। একটা মহল এটা নিয়ে বাংলাদেশে আবার নৈরাজ্য সৃষ্টি করার জন্য পাঁয়তারা করছে।"

মির্জা ফখরুল এই কথিত প্রচেষ্টা রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে বলেন, "আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে যে সুযোগ আমরা পেয়েছি সেই সুযোগ যেন আমরা নষ্ট না করি। গণতন্ত্র উত্তরণের পথকে যেন আমরা আরও সহজ করে তুলি।"

রোববার (১৬ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন।

তিনি মওলানা ভাসানীর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, "মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী এই দেশের স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখেছিলেন। তিনি এই দেশকে, রাষ্ট্রকে সত্যিকার অর্থেই কল্যাণমূলক রাষ্ট্র হিসেবে দেখতে চেয়েছিলেন। সেটা তিনি দেখে যেতে পারেননি।" তিনি আরও যোগ করেন, "স্বাধীনতার ঘোষক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মধ্যে তিনি সেই নেতা দেখতে পেয়েছিলেন—যে নেতা হয়তো এই দেশের ভাগ্যে পরিবর্তন আনতে পারে।"

দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে বিএনপি মহাসচিব অভিযোগ করে বলেন, "বাংলাদেশের রাজনীতি একটা বিভ্রান্ত অবস্থার মধ্যে চলে যাচ্ছে। রাজনীতিতে এমন এমন জিনিস ঢুকছে— যেটা বাংলাদেশের মানুষ চিন্তাই করতে পারে না।" তিনি বলেন, "দুর্ভাগ্যক্রমে বর্তমান সময়টা অত্যন্ত জটিল সংকটে উপনীত হয়েছে।"

গত সময়ের সংগ্রামের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, "অনেক আশা, আকাঙ্ক্ষা, ভরসা নিয়ে আমরা ১৬ বছর ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি। আমাদের অসংখ্য নেতাকর্মী গ্রেপ্তার হয়েছে, মিথ্যা মামলা হয়েছে, নিহত হয়েছে, শহীদ হয়েছে। অবশেষে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনা এই দেশ থেকে চলে যেতে বাধ্য হয়েছেন।"

অন্তর্বর্তী সরকার প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, "মানুষের আকাঙ্ক্ষা, চাওয়াটা কিন্তু আমরা সঠিকভাবে ধরতে পারছি না। অন্তর্বর্তী সরকার আমাদের সকলের সমর্থনে এসেছে। তারা চেষ্টা করেছে রাজনৈতিক কাঠামোকে একটি জায়গায় নিয়ে আসার। সেটার জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে সমঞ্জস্য আছে কি না সেটা কিন্তু এখনো বলার সময় আসেনি।"

মির্জা ফখরুল গণতন্ত্রে ফেরার জন্য নির্বাচনকে 'একমাত্র পথ' হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, "অনেক বিভ্রান্তি, হতাশা এবং অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে নির্বাচনের এখন একটা সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।"

তবে তিনি নির্বাচন বিলম্বিত করার ষড়যন্ত্রের বিষয়েও অভিযোগ করেন। ফখরুল বলেন, "এখানে কিছু গোষ্ঠী, কিছু মহল পরিকল্পিতভাবে দেশে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করতে চায় এবং তারা বিভিন্ন রকম দাবি তুলে নির্বাচন বিলম্বিত করতে চায়।"

তিনি জোর দিয়ে বলেন, "এই দেশের মানুষের এখন সবচেয়ে বড় প্রয়োজন হচ্ছে একটি নির্বাচিত সরকার—যার পেছনে জনগণ থাকবে।"

সবশেষে, মির্জা ফখরুল সমস্ত রাজনৈতিক দলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, "কালবিলম্ব না করে নির্বাচন প্রক্রিয়াকে সমর্থন জানিয়ে নির্বাচনের সুযোগ সৃষ্টি করে দিন।"


ইসির সংলাপে নাটক: ঐক্যজোটের এক অংশকে বের করে দিল আরেক পক্ষ

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৬ ১৪:৪৮:১৬
ইসির সংলাপে নাটক: ঐক্যজোটের এক অংশকে বের করে দিল আরেক পক্ষ
ইসির সংলাপ থেকে বের করে দেওয়া হলো ইসলামী ঐক্যজোটের একাংশকে

নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে সংলাপে অংশ নিতে এসে দলীয় কোন্দলের জেরে ইসলামী ঐক্যজোটের একটি অংশকে সম্মেলন কক্ষ থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। রোববার (১৬ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনের সম্মেলন কক্ষে সংলাপ শুরু হওয়ার ঠিক আগে এই ঘটনা ঘটে।

ওই সময় অনুষ্ঠানে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন, অন্য চার নির্বাচন কমিশনার এবং সংলাপে আমন্ত্রিত ছয়টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

জানা গেছে, সংলাপ শুরুর কয়েক মিনিট আগে ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব মুফতি সাখাওয়াত হোসেন রাজির নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল হলরুমে প্রবেশ করে। তারা দেখতে পান, হাসানাত আমিনীর নেতৃত্বাধীন দলটির অন্য অংশের একটি প্রতিনিধি দল সেখানে আগে থেকেই বসে আছে।

এ সময় মুফতি সাখাওয়াত হোসেন রাজি অন্য অংশটিকে 'ফ্যাসিবাদের দোসর' হিসেবে আখ্যায়িত করেন। তিনি ইসির কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলেন, "তারা বিগত নির্বাচনে ফ্যাসিবাদকে বৈধতা দিয়েছে, তাই তারা এই সংলাপে থাকলে আমরা অংশ নেবো না।"

এই পরিস্থিতি সামাল দিতে ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ উভয় পক্ষের কাছেই আমন্ত্রণপত্র দেখতে চান। মুফতি সাখাওয়াত রাজির নেতৃত্বাধীন অংশটি আমন্ত্রণপত্রের শারীরিক কপি বা হার্ডকপি দেখাতে সক্ষম হয়। অন্যদিকে, হাসানাত আমিনীর অনুসারীরা শুধু মোবাইলে থাকা আমন্ত্রণপত্রের কপি দেখান।

তখন ইসি সচিব ঘোষণা করেন, "হার্ডকপি না থাকলে আপনাদের চলে যেতে হবে।" এ সময় আমিনীর অনুসারীরা একাধিকবার অনুরোধ করলেও নির্বাচন কমিশন তাদের সিদ্ধান্তে অটল থাকে। ফলে, হাসানাত আমিনীর নেতৃত্বাধীন অংশটিকে সম্মেলন কক্ষ থেকে বের হয়ে যেতে হয়।

সংলাপ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর ওই অংশের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আলতাফ হোসেন সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, "নির্বাচন কমিশন একতরফা সিদ্ধান্তে আমাদের বের করে দিয়েছে। অথচ আমাদের নামেই দল নিবন্ধিত এবং আমাদেরই আমন্ত্রণপত্র দেওয়া হয়েছিল। ব্ল্যাকমেল করে আমন্ত্রণপত্র অন্য অংশটি নিয়ে গেছে।"

এই ঘটনার পর সংলাপ শুরু হয়। সংলাপের শুরুতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেন, একটি সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতা প্রয়োজন। তিনি আরও উল্লেখ করেন, আচরণবিধি ঠিকভাবে মেনে চললে সংলাপ এবং ভোট প্রক্রিয়া সুন্দরভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব। তিনি দলগুলোকেও এই আচরণবিধি প্রচারে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানান।

রোববার সকালের এই সংলাপে যে দলগুলো অংশ নেয়, সেগুলো হলো— গণফোরাম, গণফ্রন্ট, ইসলামী ঐক্যফ্রন্ট বাংলাদেশ, ইসলামী ঐক্যজোট (রাজি অংশ), বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (বিএসপি) এবং বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি।


২০১৮ নির্বাচনের গোপন নীলনকশা: ‘কপোতাক্ষ কক্ষে’ কী ঘটেছিল

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৬ ১১:৩০:০৬
২০১৮ নির্বাচনের গোপন নীলনকশা: ‘কপোতাক্ষ কক্ষে’ কী ঘটেছিল
ছবি: সংগৃহীত

২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে যে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক পরিবেশ তৈরি হয়েছিল, তার মূলে লুকিয়ে ছিল কয়েকটি গোপন বৈঠক, বিশ্লেষণ কক্ষ এবং একটি বিশেষ টিম যারা নির্বাচনের সার্বিক ফলাফল নির্ধারণে ভূমিকা রেখেছিল বলে একাধিক সূত্র দাবি করছে। এর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় শুরু হয় সেই বছরের অক্টোবর মাসে, যখন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয় দেশের সব প্রধান আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার শীর্ষ কর্মকর্তাদের নিয়ে এক ব্যতিক্রমধর্মী বৈঠক।

বৈঠকে সেনাপ্রধান, স্বরাষ্ট্র সচিব, নির্বাচন কমিশনের সচিবসহ রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা কাঠামোর সব শীর্ষ ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকের প্রথম অংশে বিভিন্ন বাহিনীর সক্ষমতা, মাঠপর্যায়ের পরিস্থিতি এবং নির্বাচনে সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা হয়। তবে শেষ দিকে তৎকালীন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) জাবেদ পাটোয়ারীর বক্তব্য বৈঠকের গতিপথই বদলে দেয়। তিনি সেখানে বলেন, নির্বাচন পরিচালনার ক্ষেত্রে পুলিশ মাঠ পর্যায়ে সবচেয়ে শক্তিশালী বাহিনী এবং চাইলে ২৯০টি আসনে আওয়ামী লীগের বিজয় নিশ্চিত করা সম্ভব। তাঁর বক্তব্য অনুযায়ী, স্থানীয় প্রশাসন, থানাসমূহে দীর্ঘদিনের সম্পর্ক এবং কেন্দ্রভিত্তিক নিয়ন্ত্রণ পুলিশের জন্য সহজলভ্য হওয়ায় “ফলাফল পরিবর্তন” করতে কোনো বড় বাধা দেখা দেবে না।

পুলিশ সদর দপ্তরের একজন কর্মকর্তা যিনি দায়িত্ব হারানোর আশঙ্কায় নাম প্রকাশ করতে চাননি জানান, এই বৈঠকের পর জাবেদ পাটোয়ারী এক ধরনের নীরব চুক্তিতে বা বার্গেইনে ‘অপারেশন’-এর সামগ্রিক দায়িত্ব নেন। তাঁর নেতৃত্বেই গঠিত হয় একটি কার্যকর ও গোপন বিশেষ দল, যার পরিচিতি পরে ‘টিম জাবেদ’ নামে ছড়ায়।

এই সময়েই পুলিশ সদর দপ্তরের নতুন ভবনের দ্বিতীয় তলায় ‘কপোতাক্ষ’ কক্ষের অস্বাভাবিক ব্যবহার শুরু হয়। সাধারণ অফিস কক্ষটি পরিণত হয় ভোট বিশ্লেষণ, কৌশল প্রণয়ন এবং কেন্দ্রভিত্তিক ভোট নিয়ন্ত্রণ পরিকল্পনার কেন্দ্রবিন্দুতে। কক্ষটিতে বসানো হয় আধুনিক কম্পিউটার, প্রজেক্টর, ল্যাপটপ, স্ক্যানারসহ ডিজিটাল ডেটা অ্যানালাইসিসের সব সরঞ্জাম। সেখানে বিভিন্ন পদমর্যাদার কর্মকর্তারা চারটি ভিন্ন জাতীয় নির্বাচনের (১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১ ও ২০০৮) কেন্দ্রভিত্তিক ভোটের প্যাটার্ন বিশ্লেষণ করেন। লক্ষ্য ছিল প্রতিটি কেন্দ্রে কত ভোট “কাস্ট” করতে হবে, কোন কেন্দ্র ঝুঁকিগ্রস্ত এবং কোন এলাকায় কত প্রভাব প্রয়োগ করতে হবে এগুলো নির্ধারণ করা।

সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, এএসপি থেকে ডিআইজি পর্যন্ত মোট ৫৪ জন কর্মকর্তা কপোতাক্ষ কক্ষে আগস্ট থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত নিয়মিত অংশ নেন। একাধিক পুলিশ কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন যে তারা নির্বাচনের পরিকল্পিত ভোট ব্যবস্থাপনায় প্রত্যক্ষ ভূমিকা রাখেন।

এই পুরো অপারেশনের সূত্রপাত আরো স্পষ্ট হয়ে ওঠে স্পেশাল ব্রাঞ্চের (এসবি) একটি গোপন প্রতিবেদনে। ডিআইজি (পলিটিক্যাল) মাহবুব হোসেনের নেতৃত্বে প্রণীত সেই প্রতিবেদনে বলা হয়, সুষ্ঠু ও প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সর্বোচ্চ ১৪টি আসন পেতে পারে। এই রিপোর্ট ক্ষমতাসীন মহলকে হতবাক করে এবং দ্রুত সিদ্ধান্ত হয় নির্বাচনী মাঠকে নিয়ন্ত্রিত করার। এরপরই পুলিশ সদর দপ্তরে কন্ট্রোল রুম স্থাপন, টিম গঠন এবং নির্বাচনী কাঠামো পুনর্গঠনের কাজ শুরু হয়।

কন্ট্রোল রুমে দায়িত্ব পালন করেন ঢাকা সিটি এসবির ডিআইজি মোহাম্মদ আলী মিয়া, এজেডএম নাফিউল ইসলাম, বিশেষ পুলিশ সুপার (পলিটিক্যাল), বিশেষ পুলিশ সুপার (গোপনীয়)সহ আরো অনেকে। নির্বাচনের রাতে কোথায় কত ফোর্স যাবে, কোন কেন্দ্র আগে ‘নিরাপদ’ করতে হবে, কোথায় বিরোধীদলের এজেন্ট ঢুকতে দেওয়া হবে না এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হতো এখান থেকেই।

‘টিম জাবেদ’ ছিল পুরো পরিকল্পনার কেন্দ্রে। এই টিমে ছিলেন সিটিটিসির অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম, এসবির অ্যাডিশনাল আইজিপি নাফিউল ইসলাম, অ্যাডিশনাল ডিআইজি কাজী জিয়া উদ্দিন, এসবির বিশেষ পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান, পুলিশ হেডকোয়ার্টারের এআইজি আনজুমান কালাম, এআইজি মিলন মাহমুদ, এআইজি মাহফুজুর রহমান আল–মামুন, আইজিপির স্টাফ অফিসার মাসুদ আলম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুনসুর আলম কাদেরী এবং কাজী মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন। তারা প্রত্যেকে ভিন্ন ভিন্ন ভূমিকায় নির্বাচনের আগে, নির্বাচনের সময় এবং নির্বাচনের রাতে পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কাজ করেন।

সূত্রঃআমার দেশ


“আমার ভাই মেয়র হবে না, ভাগিনা চেয়ারম্যান নয়”

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৬ ১০:২৩:৪০
“আমার ভাই মেয়র হবে না, ভাগিনা চেয়ারম্যান নয়”
ছবি: সংগৃহীত

নোয়াখালী–৫ (কোম্পানীগঞ্জ–কবিরহাট ও সদরের আংশিক) আসনে ধানের শীষের প্রার্থী ও জেলা বিএনপির নেতা মো. ফখরুল ইসলাম নির্বাচনি গণসমাবেশে দাবি করেছেন, জনগণ ধানের শীষে ভোট দিলে তারেক রহমান প্রধানমন্ত্রী হবেন এবং তাঁর নেতৃত্বেই নদীভাঙন–কবলিত নোয়াখালী রূপান্তরিত হবে আধুনিক সিঙ্গাপুরে।

শনিবার বিকেলে কবিরহাটে অনুষ্ঠিত বিশাল নির্বাচনি জনসভায় তিনি বলেন, এ আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন আরও অনেকেই, তবে যোগ্যদের মধ্য থেকেই দল তাঁকে বেছে নিয়েছে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, ব্যক্তিগতভাবে তাঁকে ভোট দেওয়ার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে ধানের শীষের প্রতীকে ভোট দেওয়া, কারণ সেটি হচ্ছে তারেক রহমানের নেতৃত্বকে প্রতিষ্ঠিত করা।

সমাবেশে মো. ফখরুল ইসলাম প্রতিশ্রুতি দেন যে নির্বাচিত হলে তিনি তাঁর এলাকায় সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও মাদক নির্মূলে কঠোর অবস্থান নেবেন। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, তাঁর কোনো ভাই মেয়র হবে না, কোনো ভাগিনা চেয়ারম্যান হবে না; বরং যোগ্যতার ভিত্তিতেই চাকরি হবে এবং তাঁর বাসায় কাউকে দধি, মাছ বা মাংস নিয়ে যেতে হবে না। তিনি আশ্বস্ত করে বলেন, জনগণের সঙ্গে দেখা করতে কাউকে মামা বা খালুর শরণাপন্ন হতে হবে না এলাকার সাধারণ মানুষ যেকোনো সময় তাঁর সঙ্গে সরাসরি দেখা করতে পারবেন।

তিনি আরও বলেন, দল তাঁকে মনোনয়ন দিলেও সবার কাছে তিনি সমানভাবে গ্রহণযোগ্য নাও হতে পারেন, কিন্তু সেই ব্যক্তিগত মতপার্থক্য ভুলে নোয়াখালীকে বেগম খালেদা জিয়া ও তারুণ্যের অহংকার তারেক রহমানের রাজনৈতিক ঘাঁটি হিসেবে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে ধানের শীষকে জয়ী করতে হবে। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন কবিরহাট উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক কামরুল হুদা চৌধুরী লিটন।

সভায় জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মাহবুব আলমগীর আলো, যুগ্ম আহ্বায়ক এ বি এম জাকারিয়া, সদস্য সচিব হারুনুর রশিদ আজাদ এবং কবিরহাট পৌর বিএনপির আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান মঞ্জুসহ নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

-রফিক


বিএনপির মনোনয়ন সংকট ও আসন–সমঝোতা

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৬ ১০:১৬:১৮
বিএনপির মনোনয়ন সংকট ও আসন–সমঝোতা
ছবি: সংগৃহীত

তরুণ নির্বাচন কমিশনের অধীনে আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রধান বিরোধী রাজনৈতিক শক্তি বিএনপি দলীয় মনোনয়ন প্রক্রিয়ায় এক গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে দাঁড়িয়ে আছে। চলতি নভেম্বর মাসের শুরুতে ২৩৭ আসনে প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করলেও দ্রুতই দলটি অভ্যন্তরীণ বিরোধ ও সমন্বয় সংকটের মুখে পড়ে। ঘোষণার একদিন পরই মাদারীপুর–১ আসনের মনোনয়ন স্থগিত হয়, যা স্পষ্ট করে দিয়েছে বিএনপির মনোনয়ন বণ্টন এখনো চূড়ান্ত রূপ পায়নি। বর্তমানে ৬৪টি আসনে এখনো প্রার্থী ঘোষণা হয়নি, যা নভেম্বরের মধ্যেই চূড়ান্ত করার প্রস্তুতি চলছে।

দলীয় সূত্র বলছে, যেসব আসনে এখনো প্রার্থী ঘোষণা হয়নি, তার পেছনে দুটি বড় কারণ রয়েছে। প্রথমত, যুগপৎ আন্দোলনের শরিক দলগুলোর জন্য কিছু আসন ছাড়ার কৌশল; দ্বিতীয়ত, একাধিক হেভিওয়েট নেতার মনোনয়ন প্রত্যাশা নিয়ে অভ্যন্তরীণ প্রতিযোগিতা। দলে দলে বিভাজন এড়াতে এবং মিত্রদের সাথে সমঝোতায় পৌঁছাতে বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব সচেষ্ট। তারা আশাবাদী তফসিল ঘোষণার আগেই, অর্থাৎ নভেম্বরের মধ্যেই সব প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করা যাবে।

৩ নভেম্বর ঘোষিত প্রাথমিক তালিকার পর প্রায় ২৩টি আসনে মনোনয়ন–বঞ্চিত নেতাদের ব্যাপক বিক্ষোভ দেখা গেছে। অনেক এলাকায় বিক্ষুব্ধ নেতারা ‘স্বতন্ত্র’ প্রার্থী হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলেও জানা গেছে। এই অভ্যন্তরীণ আক্ষেপ বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে বেশ চিন্তায় ফেলেছে। তাই বিভাগীয় নেতাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে স্থানীয় বিরোধ থামাতে। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সিনিয়র নেতারাও মনোনয়ন–প্রাপ্ত ও বঞ্চিতদের সঙ্গে আলোচনায় বসছেন সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে।

দলীয় নীতিনির্ধারকদের আরেকটি কৌশল হলো বিবাদপূর্ণ আসনগুলোতে মনোনীত প্রার্থীদের মাঠপর্যায়ের অবস্থান নিরপেক্ষ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে যাচাই-বাছাই। এ যাচাই শেষে কয়েকটি আসনে প্রার্থী পরিবর্তনের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। বিএনপি মনে করছে যথাযথ যাচাইই নির্বাচনি বিভ্রান্তি ও ভেঙে পড়া সংগঠনের ঝুঁকি কমাবে।

স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, সব বিরোধপূর্ণ আসনে সমঝোতা আনার চেষ্টা চলছে। এখনো যেসব আসনে প্রার্থী ঘোষণা হয়নি, সেগুলোও শিগগিরই চূড়ান্ত করা হবে। তার ভাষায়,“আমরা নভেম্বরের মধ্যেই সব আসনে দলীয় মনোনয়ন প্রক্রিয়া শেষ করতে সক্ষম হবো।”

দলটির সিনিয়র নেতারা মনে করেন, ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকে নির্বাচন অনুষ্ঠানের সম্ভাবনা থাকায় সব ধরনের রাজনৈতিক সমন্বয় খুব দ্রুত করতে হবে। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাম্প্রতিক জাতির উদ্দেশে দেওয়া বক্তব্যকে বিএনপি স্বাগত জানিয়েছে নির্বাচন প্রক্রিয়া নির্বিঘ্ন রাখার কৌশল হিসেবে। দলের উচ্চপর্যায়ের অভিমত তফসিল ঘোষণার আগেই প্রার্থী চূড়ান্ত এবং মিত্রদের সঙ্গে আসন সমঝোতা ছাড়া উপায় নেই।

যুগপৎ আন্দোলনে বিএনপির সঙ্গে থাকা শরিক দলগুলোর মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে। তাদের দাবি বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীরা প্রায় প্রতিদিনই মাঠে শোডাউন, গণসংযোগ ও নানা কর্মসূচি করছেন। কিন্তু জোটের প্রার্থীরা আনুষ্ঠানিক তালিকা না পাওয়ায় প্রচারে নামতে পারছেন না। এতে একই আসনে উত্তেজনা বাড়ার পাশাপাশি সাধারণ ভোটাররাও বিভ্রান্ত হতে পারেন বলে তাদের আশঙ্কা।

বিএলডিপির চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম জানান, বিএনপি মৌখিকভাবে সবুজ সংকেত দিলেও আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না থাকায় প্রতিনিয়ত বিব্রতকর পরিস্থিতির তৈরি হচ্ছে। তিনি বলেন,“জোটের প্রার্থী তালিকা দ্রুত প্রকাশ করলে মাঠে কাজ শুরু করা সহজ হবে।”

গণতন্ত্র মঞ্চের শীর্ষ নেতা ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক অভিযোগ করেন, বিএনপি আসন সমঝোতায় অগ্রগতি না করায় শরিকদের সঙ্গে মনস্তাত্ত্বিক দূরত্ব তৈরি হচ্ছে। তিনি সতর্ক করেন এ অবস্থার অবসান না হলে গণতন্ত্র মঞ্চ বিকল্প রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হবে।

সাইফুল হক বলেন, জোট রাজনীতিতে ‘বিজয়ী হওয়া’ এবং ‘আন্দোলনের প্রতিনিধিত্ব বজায় রাখা’ উভয়টিই সমান গুরুত্বপূর্ণ। বিএনপি নিজ দলের প্রার্থীদের পাশাপাশি শরিকদেরও জেতাতে সহায়তা না করলে ‘সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে’।

স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ জানান, শরিকদের সঙ্গে আলোচনা প্রায় শেষ পর্যায়ে। সমঝোতা হলে তা উভয় পক্ষই ঘোষণা করবে। তিনি আরও বলেন, যদি আরপিও সংশোধন না হয়, তাহলে নিবন্ধিত শরিকদের তাদের নিজ প্রতীকেই নির্বাচনে অংশ নিতে হতে পারে যা জোট রাজনীতিতে আরও নতুন জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে।

সমগ্র রাজনৈতিক বাস্তবতা বলছে বিএনপি একদিকে অভ্যন্তরীণ মনোনয়ন সংকটে আছে, অন্যদিকে আসন–সমঝোতা নিয়ে মিত্রদের চাপ বাড়ছে। তফসিলের সময় ঘনিয়ে আসায় প্রতিটি দিন এখন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিএনপির ওপর চাপ -

  • অভ্যন্তরীণ বিরোধ মেটানো,
  • মিত্রদের সাথে সমঝোতা চূড়ান্ত করা,
  • এবং নির্বাচনের আগে একীভূত রাজনৈতিক অবস্থান তৈরি করা।

এই তিনটি সমান্তরাল চ্যালেঞ্জ কত দ্রুত ও সফলভাবে মোকাবিলা করতে পারে সেই দিকেই এখন রাজনৈতিক মহলের দৃষ্টি।

-রফিক


"বিএনপি ক্ষমতায় গেলে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতিতে মহান আল্লাহর ওপর আস্থা ও বিশ্বাস পুনর্বহাল করা হবে"

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৫ ২০:৩৭:৫৫
"বিএনপি ক্ষমতায় গেলে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতিতে মহান আল্লাহর ওপর আস্থা ও বিশ্বাস পুনর্বহাল করা হবে"
ফাইল ছবি- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, সংবিধানে সর্বপ্রথম ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’ সংযোজন করেছিলেন বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান। তিনি আরও বলেন, সংবিধানের প্রস্তাবনায় মহান আল্লাহর ওপর আস্থা ও বিশ্বাসও জিয়াউর রহমানই যুক্ত করেছিলেন।

শনিবার বেলা ১২টার দিকে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আন্তর্জাতিক খতমে নবুওয়ত মহাসম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, বর্তমানে সংবিধানে মহান আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস বহাল নেই। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতিতে মহান আল্লাহর ওপর আস্থা ও বিশ্বাস পুনর্বহাল করা হবে।

তিনি আরও বলেন, “আমরা মুসলমান। আমরা লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ—এ বিশ্বাস করি। নবীজি শেষ নবী, তাঁর পরে কোনো নবী আসবেন না। কেউ নিজেকে নবী দাবি করলে তিনি এ আকিদার বাইরে।”

মহাসম্মেলনের দায়িত্বশীল মাওলানা মুহিউদ্দীন রব্বানী জানান, কাদিয়ানিদের অমুসলিম ঘোষণা ও খতমে নবুওয়তের আকিদা রক্ষার দাবিতে এ সম্মেলন আয়োজন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দেশ থেকে আগত শীর্ষ আলেমরা অংশ নেন।


মতিঝিলে শরিফ ওসমান হাদির প্রচারে বাধা, গায়ে ময়লা পানি নিক্ষেপ

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৫ ২০:২১:১৭
মতিঝিলে শরিফ ওসমান হাদির প্রচারে বাধা, গায়ে ময়লা পানি নিক্ষেপ
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি। ছবি : সংগৃহীত

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে গিয়ে মতিঝিলের এ জি বি কলোনিতে হেনস্থার শিকার হয়েছেন। অভিযোগ উঠেছে, তিনি যখন ওই এলাকায় প্রচারণা চালাচ্ছিলেন, তখন তার গায়ে ময়লা পানি ছুড়ে মারা হয়। তবে এই ঘটনা কে বা কারা ঘটিয়েছে, সে বিষয়ে তিনি কিছু জানাননি।

শনিবার (১৫ নভেম্বর) এই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রকাশিত হয়েছে। ওই ভিডিওতে শরিফ ওসমান হাদিকে কথা বলতে শোনা যায়। তিনি উল্লেখ করেন, তার গায়ে তিনবার ময়লা পানি ছোড়া হয়েছে।

ভিডিওতে তাকে বলতে শোনা যায়, "ভাই ময়লা পানি যে মারছেন আরও মারতে পারেন, সমস্যা নেই মারেন...।"

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শরিফ ওসমান হাদি ঢাকা-৮ আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এই আসনটি শাহবাগ, মতিঝিল, রমনা, পল্টন ও শাহজাহানপুর এলাকা নিয়ে গঠিত। ইনকিলাব মঞ্চের এই মুখপাত্র ঢাকা-৮ আসনে একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে লড়ছেন।


এ মাসেই আত্মপ্রকাশ ঘটছে বামপন্থিদের নতুন বৃহত্তর জোটের

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৫ ১৮:৩৮:৫৩
এ মাসেই আত্মপ্রকাশ ঘটছে বামপন্থিদের নতুন বৃহত্তর জোটের
ছবি: সংগৃহীত

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বামপন্থী রাজনৈতিক দলগুলো 'যুক্তফ্রন্টে'র আদলে একটি নতুন জোট গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে। আশা করা হচ্ছে, চলতি নভেম্বর মাসেই একটি 'কনভেনশনে'র মাধ্যমে দেশের প্রধান প্রধান বাম ও প্রগতিশীল রাজনৈতিক জোট ও দলগুলোর সমন্বয়ে এই নতুন জোটের আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশ ঘটবে।

জানা গেছে, এই বৃহত্তর বাম জোট 'জুলাই জাতীয় সনদে'র মতো একটি 'জনতার সনদ' বা জনগণের সনদ নিয়ে মাঠে নামবে। 'একসঙ্গে আন্দোলন ও নির্বাচন'—এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে তারা দেশের গণতন্ত্র এবং জনজীবনের নানা সংকট মোকাবেলায় বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা করবে।

শুধু তাই নয়, আগামী নির্বাচনে ঐক্যবদ্ধভাবে ৩০০ আসনেই ভোটের লড়াইয়ে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে এই জোট। জোটের সম্ভাব্য শরিক দলগুলো এরই মধ্যে নিজ নিজ দলের পক্ষ থেকে প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ শুরু করে দিয়েছে।

গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে এবং জাতীয় নির্বাচন ঘনিয়ে আসার প্রেক্ষাপটেই বামপন্থীরা এই নতুন জোট গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করে।

এই বৃহত্তর জোট গঠনের পেছনে মূল উদ্যোক্তা হিসেবে কাজ করছে ছয়টি বাম দলের সমন্বয়ে গঠিত 'বাম গণতান্ত্রিক জোট' এবং শরীফ নূরুল আম্বিয়ার নেতৃত্বাধীন 'বাংলাদেশ জাসদ'। বাম গণতান্ত্রিক জোটের শরিক দলগুলো হলো— বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টি, বাংলাদেশের বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগ, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক আন্দোলন এবং বাসদ (মার্কসবাদী)।

জোটের উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, গত আট-নয় মাসের আলোচনার পর এই জোটে যোগ দেওয়ার বিষয়ে আরও কয়েকটি বাম ও প্রগতিশীল দল একমত হয়েছে। এর মধ্যে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন গণফোরাম, ঐক্য ন্যাপ এবং জাতীয় গণফ্রন্ট রয়েছে।

এছাড়া, যুগপৎ আন্দোলনে থাকা বামপন্থীদের আরেকটি জোট 'ফ্যাসিবাদবিরোধী বাম মোর্চা'র শরিক দলগুলোর সাথেও আলোচনা চলছে। এই মোর্চার চারটি দল হলো— বাংলাদেশের সাম্যবাদী আন্দোলন, বাসদ (মাহবুব) এবং গণমুক্তি ইউনিয়ন। শুধু রাজনৈতিক দলই নয়, পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি, দলিত ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর একাধিক সংগঠন এবং গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক ঐক্যসহ বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠনও নতুন এই জোটে যোগ দেওয়ার বিষয়ে সম্মতি জানিয়েছে।

বামপন্থী নেতারা জানিয়েছেন, গত ১৫ নভেম্বর রাজধানীর রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে একটি 'কনভেনশনে'র মাধ্যমে নতুন এই জোটের আত্মপ্রকাশের কথা ছিল। কিন্তু ওই দিন একই স্থানের কাছাকাছি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অন্য একটি সংগঠনের মহাসমাবেশ থাকায় কনভেনশনটি স্থগিত করা হয়। তবে উদ্যোক্তারা বলছেন, চলতি মাসের মধ্যেই সুবিধাজনক সময়ে কনভেনশন করে অথবা সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জোটের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হবে।

এদিকে, নতুন এই জোটের নাম এখনও চূড়ান্ত হয়নি। কোনো কোনো দলের নেতা 'নয়া যুক্তফ্রন্ট' বা 'গণতান্ত্রিক যুক্তফ্রন্ট' নাম রাখার প্রস্তাব দিয়েছেন। তবে অনেকেই এর সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেছেন। তাদের মতে, ১৯৫৪ সালের 'যুক্তফ্রন্ট' যে ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে গঠিত হয়েছিল, বর্তমান পরিস্থিতি তার থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। ফলে, জোটের নাম কী হবে বা এটি কোন কাঠামোতে চলবে, তা সবার মতামত নিয়েই ঠিক করা উচিত। এ কারণে, কনভেনশনেই জোটের নাম এবং 'জনতার সনদ' চূড়ান্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এই নতুন জোট শুধু আন্দোলনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না, তারা আগামী নির্বাচনে ৩০০ আসনেই একযোগে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার পরিকল্পনা করছে। তপশিল ঘোষণার আগেই সম্ভাব্য শরিক দলগুলো নিজ নিজ প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ শুরু করেছে। জোট গঠনের পর সব দলের প্রার্থীদের তালিকা এক করে আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতার ভিত্তিতে জোটগত চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করা হবে। জানা গেছে, শুধু দলীয় নেতাই নন, অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক ও সমমনা বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের প্রতিনিধি এবং শ্রেণি-পেশার পরিচিত মুখগুলোকেও প্রার্থী করার পরিকল্পনা রয়েছে।

বাংলাদেশ জাসদের সভাপতি শরীফ নূরুল আম্বিয়া এ বিষয়ে বলেছেন, দেশের বর্তমান রাজনৈতিক সংকট কাটিয়ে উঠতে এবং জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর 'নব্য ফ্যাসিবাদের' পুনরুত্থান ঠেকাতে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের বাম, প্রগতিশীল, অসাম্প্রদায়িক ও গণতান্ত্রিক শক্তির বৃহত্তর ঐক্য জরুরি হয়ে পড়েছে। এই বিবেচনা থেকেই তারা বৃহত্তর ঐক্যের বিষয়ে একমত হয়েছেন।

বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক ও বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ ফিরোজ বলেন, তারা শাসক শ্রেণির রাজনৈতিক দলগুলোর বাইরে একটি বিকল্প বৃহত্তর রাজনৈতিক জোট গঠন করতে যাচ্ছেন। এই জোটের পক্ষ থেকে আগামী নির্বাচনে ৩০০ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার চেষ্টা করা হবে।

সিপিবির সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ ক্বাফী রতনও একই ধরনের কথা বলেছেন। তিনি উল্লেখ করেন, জুলাই অভ্যুত্থানের পর দেশে দক্ষিণপন্থী, সাম্প্রদায়িক ও মৌলবাদী গোষ্ঠীর উত্থানের যে সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে, তা ঠেকাতেই বাম, প্রগতিশীল ও অসাম্প্রদায়িক শক্তিগুলো এক হচ্ছে। তারা একসঙ্গে নির্বাচন করার পাশাপাশি 'জনতার সনদ' নিয়ে সাধারণ মানুষের জীবন-জীবিকার বিভিন্ন সংকট সমাধানে মাঠেও সক্রিয় থাকবেন।

পাঠকের মতামত:

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

রাষ্ট্রের ধারণাটি একসময় কেবল প্রশাসনিক ক্ষমতা, আইনের শাসন এবং নিরাপত্তা প্রদানের সঙ্গে সম্পর্কিত ছিল। কিন্তু আধুনিক বিশ্বে রাষ্ট্রের ভূমিকা এখন... বিস্তারিত

উড়ন্ত সরীসৃপের খাদ্যাভ্যাস নিয়ে ধারণা বদল ৩২০টি ফাইটোলিথ পেলেন গবেষকরা

উড়ন্ত সরীসৃপের খাদ্যাভ্যাস নিয়ে ধারণা বদল ৩২০টি ফাইটোলিথ পেলেন গবেষকরা

ডাইনোসরের যুগে আকাশে রাজত্ব করত বিশাল আকৃতির উড়ন্ত সরীসৃপ 'টেরাসর'। এই রহস্যময় প্রাণীদের বিভিন্ন প্রজাতি আবিষ্কৃত হলেও তাদের খাদ্যাভ্যাস নিয়ে... বিস্তারিত