১২৩ ঘণ্টা অনশন শেষে আম জনতার দলের তারেক রহমান হাসপাতালে

রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধনের দাবিতে আমরণ অনশনরত আমজনতার দলের সদস্য সচিব মো. তারেক রহমান গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ায় অবশেষে তাঁর অনশন ভঙ্গ হয়েছে। রোববার (৯ নভেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদের অনুরোধে তিনি অনশন ভেঙেছেন এবং তাঁকে অ্যাম্বুলেন্সে করে রাজধানীর গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
দীর্ঘ ১২৩ ঘণ্টা ধরে নির্বাচন কমিশনের প্রধান ফটকের সামনে অনশনে ছিলেন মো. তারেক রহমান।
সালাহউদ্দিন আহমদের মধ্যস্থতা ও আবেদন
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ ঘটনাস্থলে উপস্থিত গণমাধ্যমকে জানান, আমজনতার দলের সদস্য সচিব তারেক রহমান ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের উজ্জ্বল নক্ষত্র। তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, তারেকও অনেকবার নির্যাতনের শিকার হয়েছেন এবং রিমান্ডে ছিলেন।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, একটি দল যেন গণতান্ত্রিক আন্দোলনে সামনের দিনে ভূমিকা রাখতে পারে, সে জন্য তাঁরা নির্বাচন কমিশনকে রেজিস্ট্রেশনের বিষয়ে অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু দীর্ঘ বিচার-বিবেচনার পর তাকে জানানো হয় যে তার দলকে নিবন্ধন দেওয়া হচ্ছে না।
সালাহউদ্দিন আহমদ আরও জানান, তিনি আজ তারেক রহমানের আবেদন পুনর্বিবেচনার জন্য ইসিতে কথা বলেছেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন, তার দল ন্যায়বিচার পাবে। তারেক রহমানকে অনুরোধ করে অনশন ভাঙতে বলা হলে তিনি সেই অনুরোধ রেখেছেন এবং তাকে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
তিনি আশা প্রকাশ করেন, তারেক রহমান সুস্থ হয়ে উঠবেন এবং নির্বাচন কমিশন তাঁর দলের আপিল পুনর্বিবেচনা করবে।
ঢাকা-১০ আসন হটস্পট: ত্রিমুখী প্রতিদ্বন্দ্বিতা ঘিরে ভোটের হিসাব নিকাশ
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১০ আসনে একটি ত্রিমুখী প্রতিদ্বন্দ্বিতার আবহ তৈরি হতে পারে। এই আসনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এখনও তাদের প্রার্থীর নাম ঘোষণা না করলেও, জামায়াতে ইসলামী ইতোমধ্যে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জসীম উদ্দিন সরকারকে মনোনয়ন দিয়েছে। এবার এই আসনে স্বতন্ত্র বা এনসিপি'র সমর্থন নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতার প্রস্তুতি নিচ্ছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতা হাসনাত আব্দুল্লাহ, যা ভোটের সমীকরণকে আরও জটিল করে তুলছে।
এনসিপি'র কৌশল ও হাসনাত আব্দুল্লাহ
জাতীয় নাগরিক পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা হাসনাত আব্দুল্লাহ সম্প্রতি তার দলীয় নিবন্ধন এবং প্রতীক 'শাপলা কলি' পাওয়ার বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিশ্চিত করেছেন। এখন তিনি তাঁর নির্বাচনী প্রস্তুতি শুরু করেছেন বলে জানা গেছে।
প্রতিদ্বন্দ্বিতার ক্ষেত্র
ঢাকা-১০ আসনটি ধানমন্ডি, নিউমার্কেট, কলাবাগান এবং হাজারীবাগ থানা নিয়ে গঠিত। এটি ঢাকার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আসন।
সমঝোতার ইঙ্গিত
এনসিপি'র আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম আগেই ঘোষণা করেছেন যে, তারা কারও সঙ্গে জোট না করলেও, আসনভিত্তিক সমঝোতা করবেন। এনসিপি এই আসনটিতে হাসনাত আব্দুল্লাহকে সমর্থন দিলে বিএনপি বা অন্য শরিক দলগুলো এই আসনে প্রার্থী না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
আসনটির গুরুত্ব
ঢাকা-১০ আসনে জামায়াতের প্রার্থী জসীম উদ্দিন সরকার এবং এনসিপি নেতা হাসনাত আব্দুল্লাহর উপস্থিতি প্রমাণ করে, বিএনপি'র প্রার্থীর জন্য এই আসনে জয় সহজ হবে না। বিশেষ করে, যুবশক্তি এবং নতুন প্রজন্মের ভোটারদের মধ্যে হাসনাত আব্দুল্লাহর একটি প্রভাব রয়েছে, যা তাকে ভোটের ময়দানে একটি নতুন মাত্রা দিতে পারে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বিএনপি যদি এই আসনে কোনো হেভিওয়েট প্রার্থী না দেয়, তবে আসনটি অন্য দলের দখলে চলে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হবে। দ্রুতই এই আসনটির বিষয়ে বিএনপির চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসার কথা রয়েছে।
ঢাকা-১০ আসনে ত্রিমুখী প্রতিদ্বন্দ্বিতা: কঠিন সমীকরণে দুই ইসলামপন্থী দল ও বিএনপি
লাশ দাফনেও জায়গা দেয়নি আওয়ামী লীগ: মুগ্ধের ভাই মীর স্নিগ্ধ
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ মীর মুগ্ধের যমজ ভাই মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ অভিযোগ করেছেন, তাঁর ভাই যখন শহীদ হন, তখন লাশ দাফনের জন্য আওয়ামী লীগ কোনো কবরস্থানে তাঁদের জায়গা দেয়নি। তিনি বলেন, বাধ্য হয়ে প্রত্যন্ত এক অঞ্চলে গিয়ে, যেখানে পুলিশের নজর থাকবে না—সেখানেই তাঁর ভাইয়ের লাশ দাফন করতে হয়েছিল।
রোববার (৯ নভেম্বর) বিকেলে শিবগঞ্জের শহীদ মীর মুগ্ধ স্কয়ার চত্বরে অনুষ্ঠিত ছাত্র–জনতার সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ এসব কথা বলেন।
সম্প্রতি বিএনপিতে যোগদান করা মীর স্নিগ্ধ বলেন, খুনি হাসিনার মন্ত্রীসহ বহু উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা তাঁদের বাসায় ব্ল্যাঙ্ক চেক নিয়ে এসেছিলেন। তিনি অভিযোগ করেন, তাঁরা বাসায় থাকতে না পেরে আত্মগোপনে যেতে বাধ্য হন এবং ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পর তাঁরা মুক্তি পান।
তিনি বলেন, "আমি বিশ্ববাসীকে দেখানোর চেষ্টা করেছি খুনি হাসিনা কীভাবে আমার ভাইকে হত্যা করেছে। আমরা বলেছি খুনি হাসিনার সঙ্গে আমরা কোনো আপোষ করব না।"
স্নিগ্ধ আরও অভিযোগ করেন, হাসিনা শুধু ২০২৪ সালের অভ্যুস্থানেই নয়, সরকার গঠন করে বিভিন্নভাবে বিএনপির ওপর নির্যাতন করেছে। গুম, খুন এবং ভয় দেখিয়ে নেতাকর্মীদের আত্মগোপনে যেতে বাধ্য করেছে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বের প্রতি আস্থা জানিয়ে তিনি বলেন, "ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ঘোষণা করেছেন। সেই ৩১ দফা বাস্তবায়নের মাধ্যমেই খুনি হাসিনার তৈরীকৃত সরকার ব্যবস্থাকে চিরতরে কবর দিব।"
সাধারণ মানুষ ভোট চায়, চাপানো গণভোট বা সনদ নয়: মির্জা ফখরুল
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মন্তব্য করেছেন যে, গণভোট ও সনদ-এর মতো বিষয়গুলো দেশের সাধারণ জনগণ বোঝে না। তাঁর মতে, এসব বিষয় বোঝেন কিছু শিক্ষিত ওপরতলার লোক, "যাঁরা যুক্তরাষ্ট্র থেকে এসে এসব আমাদের ঘাড়ের ওপর চাপাচ্ছেন।" তিনি বলেন, বিএনপি সব সংস্কারে রাজি আছে, তবে নির্বাচনের দিনই গণভোট অনুষ্ঠিত হতে হবে।
রোববার (৯ নভেম্বর) দুপুরে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের দৌলতপুর বালিকা উচ্চবিদ্যালয় মাঠে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
গণভোট ও সংকটের রাজনীতি
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, "কয়েকটা দল বলছে, নির্বাচনের আগে গণভোট দিতে হবে। আর আমরা বলছি, নির্বাচনের দিনই গণভোট হতে হবে।" তিনি উপস্থিত লোকজনকে প্রশ্ন করেন, "আপনারা কি গণভোট, সনদ এসব বোঝেন? এসব বোঝেন শিক্ষিত কিছু ওপরতলার লোক। যাঁরা আমেরিকা থেকে এসে এসব আমাদের ঘাড়ের ওপর চাপাচ্ছেন।"
তবে তিনি জানান, বিএনপি সব সংস্কার প্রস্তাবে রাজি আছে। তিনি বলেন, "যেটাতে রাজি হব, সেটা বাস্তবায়িত হবে। যেটাতে রাজি হব না, সেটা পার্লামেন্টে যাবে। সেখানে তর্ক-বিতর্ক হবে, এরপর তা পাস হবে।"
মির্জা ফখরুল দাবি করেন, দেশে এখন যত সংকট দেখা যাচ্ছে, তার সবই তৈরি করা এবং নাটক। তিনি বলেন, সাধারণ মানুষ এত কিছু বোঝেন না, তাঁরা শুধু ভোট দিতে চান। তিনি বলেন, "গত ১৫ বছর আমরা কোনো নির্বাচন করতে পারিনি। এবার আমরা সবাই ভোট দিতে চাই।"
শেখ হাসিনা ও অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনা
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আল্লাহর অশেষ রহমতে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। তিনি উল্লেখ করেন, হাসিনা পালিয়ে গিয়ে নিজের দলের নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের অসহায় অবস্থায় ফেলে গেছেন। এতে বোঝা যায়, কর্মী ও জনগণের ওপর শেখ হাসিনার কোনো দরদ নেই। মির্জা ফখরুল বলেন, "আমাদের এই মাটিতেই জন্ম। মারা গেলে এখানেই মারা যাব, কিন্তু দেশের মাটি ছেড়ে কখনো যাব না।"
তিনি বর্তমান সরকারের প্রতিও বিরক্তি প্রকাশ করে বলেন, "অন্তর্বর্তী সরকার ভোট করে আসেনি, আমরা সবাই মিলে এই সরকারকে দায়িত্ব দিয়েছি। সরকারের পেছনে তো কোনো লোক নেই। এ কারণে মানুষের কষ্ট এই সরকার বোঝে না। কৃষকের কষ্ট কোথায়, সমস্যা কোথায়, এই সরকার বোঝে না।"
শেষ নির্বাচন ও ভোটের আবেদন
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই নির্বাচনকে তাঁর জীবনের শেষ নির্বাচন হবে বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, তাঁর শারীরিক পরিস্থিতি তেমন ভালো নয়।
তিনি আবেগঘন আবেদন জানিয়ে বলেন, "আমি আপনাদের মানুষ। আমার অনেক বয়স হয়ে গেছে। কত দিন বাঁচব, জানি না। আমি এই আসন থেকে নির্বাচন করি। কখনো হেরেছি, কখনো জিতেছি। কিন্তু আপনাদের ছেড়ে যাইনি। আমি বলেছি, এটা আমার জীবনের শেষ নির্বাচন।" তিনি বলেন, "আপনাদের কাছে আকুল আবেদন, আমার শেষ নির্বাচনে, আমাকে সাহায্য করবেন, সহযোগিতা করবেন। আমাকে ধানের শীষে ভোট দিয়ে আপনাদের কাজ করার সুযোগ করে দেবেন।"
বিএনপি ক্ষমতায় গেলে কৃষকদের ন্যায্য দামে ধান বিক্রির ব্যবস্থা এবং ফ্যামিলি কার্ড চালু করার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। এ সময় তিনি উপস্থিত লোকজনকে মনে করিয়ে দেন, "দাঁড়িপাল্লাও এখানে নির্বাচন করছে। ধানের শীষ আর দাঁড়িপাল্লার মধ্যে আপনাদের বেছে নিতে হবে।"
মতবিনিময় সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সভাপতি মির্জা ফয়সল আমীন, সাধারণ সম্পাদক পয়গাম আলী, সদর থানা বিএনপির সভাপতি আবদুল হামিদ, সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব হোসেন, পৌর বিএনপির সভাপতি শরিফুল ইসলামসহ জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা।
নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করতে পারেনি সরকার: রাশেদ খান
গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান মন্তব্য করেছেন যে, সরকার এখনো দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করতে পারেনি, যা জনগণের মনে সংশয় সৃষ্টি করেছে। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, যদি এই পরিস্থিতি চলতে থাকে, তাহলে আগামী নির্বাচন হবে দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে সাংঘর্ষিক নির্বাচন।
রবিবার (৯ নভেম্বর) দুপুরে ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডুতে গণসংযোগকালে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও রাজনৈতিক সংস্কৃতি
রাশেদ খান অভিযোগ করেন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর যেভাবে কাজ করার দরকার ছিল, তারা সেভাবে কাজ করতে পারছে না এবং পুলিশের মধ্যে ভয় কাজ করছে। তিনি বলেন, "কোনো জায়গায় গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না তারা।"
তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো বাধাহীনভাবে সভা-সমাবেশ করতে বা গণসংযোগ করতে পারে—এই দায়িত্ব সরকারের। কিন্তু গণঅভ্যুত্থানের পরেও তাঁর কাছে মনে হচ্ছে, রাজনৈতিক সংস্কৃতির কোনো পরিবর্তন হয়নি। বরং দেশে হানাহানি, মারামারি ও বিদ্বেষ বেড়েই চলেছে।
সেরা নির্বাচন ও সংলাপের আহ্বান
গণ অধিকার পরিষদের এই নেতা অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে বলেন, "আপনারা নির্বাচনী পরিবেশ তৈরি করুন।" তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস বলেছেন, আগামী নির্বাচন হবে ইতিহাসের সেরা নির্বাচন। তবে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত সেই পরিবেশ দেখা যাচ্ছে না।
তিনি সরকারকে আহ্বান জানান, "সব দলকে ডেকে আলোচনা করে নির্বাচনী পরিবেশ ভালো করার উদ্যোগ নিন। তবেই আগামী নির্বাচন হবে ইতিহাসের সেরা নির্বাচন।" তিনি অভিযোগ করেন, সরকার কেবল সেরা নির্বাচন করার জন্য মুখের বুলিই শোনাচ্ছে এবং রাজনৈতিক দলগুলোকে সান্ত্বনার বাণী শোনানো হচ্ছে।
এ সময় জেলা গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল জাহিদ রাজন, জেলা যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি রকিবুল হাসান রাকিব, সাংগঠনিক সম্পাদক মিশন আলী, ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন, সাধারণ সম্পাদক রিহান হোসেন রায়হান উপস্থিত ছিলেন।
এটা আমার শেষ নির্বাচন: ঠাকুরগাঁওয়ে ভোট চেয়ে আবেগঘন আবেদন মির্জা ফখরুলের
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আসন্ন নির্বাচনকে তাঁর জীবনের 'শেষ নির্বাচন' হিসেবে উল্লেখ করে ধানের শীষে ভোট দেওয়ার জন্য জনগণের সহযোগিতা চেয়েছেন। তিনি বলেন, 'এটা আমার শেষ নির্বাচন। পরে আর নির্বাচন করার শক্তি থাকবে না। আমার শেষ নির্বাচনে ধানের শীষে ভোট দিয়ে সহযোগিতা করবেন।'
রোববার (৯ নভেম্বর) দুপুরে ঠাকুরগাঁওয়ের জগন্নাথপুর ইউনিয়ন বিএনপির আয়োজনে দৌলতপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, দেশের সাধারণ জনগণ গণভোট বা সনদ বোঝে না। এসব বোঝেন মূলত শিক্ষিত মানুষরা। তিনি অঙ্গীকার করেন, দলের সব সংস্কারে তাঁরা রাজি আছেন, যা রাজি হবেন না, তা সংসদে গিয়ে পাস করা হবে।
তিনি আরও বলেন, দেশে এখন যত সংকট দেখা যাচ্ছে, তার সবই তৈরি করা এবং এক-একটি নাটক। তিনি জোর দিয়ে বলেন, জনগণ এসব বোঝে না; তারা শুধু ভোট দিতে চায়। তাঁর কথায়, 'আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব। এ সরকার জনগণের সরকার নয়। জনগণের কষ্ট বোঝে না।'
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, 'দাঁড়িপাল্লা আপনারা চেনেন। দাঁড়িপাল্লাও এখানে নির্বাচন করছে। ধানের শীষ আর দাঁড়িপাল্লার মধ্যে আপনাদের বেছে নিতে হবে।'
বিএনপি মহাসচিব জানান, তাঁর দল ক্ষমতায় এলে কৃষকদের ন্যায্য দামে ধান বিক্রির ব্যবস্থা করা হবে এবং জনগণের জন্য ফ্যামিলি কার্ড চালু করা হবে।
এ সময় জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক পয়গাম আলী, অর্থবিষয়ক সম্পাদক শরিফুল ইসলাম, সদর সভাপতি আব্দুল হামিদসহ দলটির নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
কুমিল্লার বদলে ধানমন্ডি থানার ভোটার হচ্ছেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া রাজধানীর ধানমন্ডি থানার ভোটার হতে যাচ্ছেন। আগামী ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে তাঁর ঢাকা-১০ আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সম্ভাবনা রয়েছে।
রোববার (৯ নভেম্বর) বিকেল ৩টায় আসিফ মাহমুদ ধানমন্ডি থানা নির্বাচন অফিসে উপস্থিত থাকবেন বলে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. সালাউদ্দিন এক বার্তায় এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নির্বাচন করার আগ্রহ ও কৌশল
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ আসন্ন নির্বাচনে অংশ নেবেন। তাঁর বাড়ি কুমিল্লার মুরাদনগরে হলেও তিনি আগেই জানিয়েছিলেন যে কুমিল্লা-৩ আসন থেকে তিনি নির্বাচন করবেন না।
ধারণা করা হচ্ছে, আসিফ মাহমুদ ঢাকা-১০ আসন থেকে নির্বাচন করতে পারেন। সেক্ষেত্রে তিনি জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর হয়ে কিংবা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করতে পারেন। তবে স্বতন্ত্র নির্বাচন করার সম্ভাবনা বেশি বলে মনে করা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে এনসিপি তাঁর প্রতি সমর্থন দেবে এবং ওই আসনে প্রার্থী দেবে না।
বর্তমানে ঢাকা-১০ আসনে বিএনপি এখনো প্রার্থী ঘোষণা করেনি। তবে জামায়াতে ইসলামী ইতোমধ্যে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জসীম উদ্দিন সরকারকে মনোনয়ন দিয়েছে।
উপদেষ্টার পদত্যাগ ও নিরপেক্ষতার প্রশ্ন
আসিফ মাহমুদ কয়েকদিন আগে জানিয়েছিলেন, ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই তিনি উপদেষ্টার পদ থেকে পদত্যাগ করবেন।
তিনি নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা প্রসঙ্গে বলেন, "উপদেষ্টা বা রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে আছেন, এমন যে কারও রাজনীতি কিংবা নির্বাচন করার ইচ্ছা থাকলে, তাদের সবার পদত্যাগ করা উচিত। যেন কোনোভাবেই নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ না হয়। নির্বাচনে নিরপেক্ষতার স্বার্থে এমনটি করা উচিত।"
আসিফ মাহমুদ বলেন, "যেহেতু প্রধান উপদেষ্টা বারবারই বলছেন যে, আমরা ইতিহাসের একটা শ্রেষ্ঠ নির্বাচন উপহার দিতে চাই, আর সেটা আমরাও চাই। যেহেতু আমরা এই সরকারের অংশ। এই ঐতিহাসিক দায় তো আমাদের ওপরে থাকবে, যদি নির্বাচনটা সুষ্ঠু না হয়।"
তিনি মনে করেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে রাজনীতি-সংশ্লিষ্ট অন্যদেরও পদত্যাগ করা উচিত। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "এই সরকারে তো আরও অনেকে আছেন, যাদের পূর্ববর্তী রাজনৈতিক পরিচয় আছে। আমি মনে করি যে, সবারই তপশিলের আগে পদত্যাগ করা উচিত—একটি স্বচ্ছ এবং সুষ্ঠু, কোনো প্রকার প্রভাবমুক্ত নির্বাচন আয়োজনের জন্য।" তিনি গণমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ২০১৮ সাল থেকে রাজনীতিতে যুক্ত থাকায় তফসিলের আগে সরকার থেকে সরে যাবেন।
বিরোধী আসনে জামায়াতকে ঠেলতে আ.লীগের নতুন পরিকল্পনা!
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামীর অবস্থান নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে নানা জল্পনা। নির্ভরযোগ্য সূত্রমতে, দলটি এবার বিরোধী দলের আসনে বসতে আগ্রহী নয়, বরং সরকার গঠনের অংশীদার হওয়ার লক্ষ্যেই বিএনপির সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে। যদিও বিএনপি এককভাবে নির্বাচনে শক্ত অবস্থানে রয়েছে, তবুও ক্ষমতার অংশীদারিত্বে জামায়াতের আগ্রহ বাড়ছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, আওয়ামী লীগের পতনের পরবর্তী রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে জামায়াতের অবস্থান অত্যন্ত কৌশলগত। দলটি সরাসরি আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোটবদ্ধ না হলেও, স্বতন্ত্রভাবে অন্তত ৬০টি আসনে প্রার্থী দেয়ার পরিকল্পনা করেছে। এই আসনগুলোর বেশিরভাগই এমন এলাকায়, যেখানে আওয়ামী লীগের তথাকথিত ‘রিজার্ভ ভোটব্যাংক’ বা সংখ্যালঘু ভোটের অনুপাত তুলনামূলক বেশি। নির্বাচন ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে আওয়ামী লীগের একটি বিশেষ টিম দেশ ও বিদেশ থেকে এই প্রার্থী বাছাই এবং প্রচারণা কৌশল নিয়ে কাজ করছে।
ওই নির্বাচনী টিমের সদস্যদের দাবি, আওয়ামী লীগের প্রভাবাধীন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা অন্তত ১০ থেকে ১৫টি আসনে নিশ্চিত জয় পেতে পারে। আরও ৪০টি আসনে তারা অল্প ব্যবধানে বিজয়ের আশা করছে। সব মিলিয়ে দলটির সম্ভাব্য সাফল্যের পরিমাণ ৩৫ থেকে ৬০ আসনের মধ্যে হতে পারে। ফলে আওয়ামী লীগ বিরোধী শিবিরে থেকেও সংসদে প্রভাব বজায় রাখতে পারে— এমন আশঙ্কা উড়িয়ে দেয়া যাচ্ছে না।
অন্যদিকে, জামায়াতে ইসলামীর রাজনৈতিক বিশ্লেষণ বলছে, সীমিত আসনে জয় পেলে তাদের সাংগঠনিক অবস্থান দুর্বল হয়ে পড়বে। তাই তারা বিএনপির সঙ্গে সমঝোতায় গিয়ে সংসদে বৃহত্তর উপস্থিতি নিশ্চিত করতে চায়। দলটির ভেতরে এখন মন্ত্রিসভায় অংশগ্রহণের সম্ভাবনাও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হচ্ছে। একাধিক সূত্র জানিয়েছে, আগামী জাতীয় সরকারের সম্ভাব্য মন্ত্রিপরিষদেও জামায়াত স্থান পেতে চায়, যেন দলীয় জনবল ও মাঠপর্যায়ের কর্মীদের পুনর্গঠনের সুযোগ তৈরি হয়।
জামায়াতের এক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, বিরোধী দলে বসলে সরকারের সমালোচনা করা তাদের বাধ্যতামূলক দায়িত্ব হয়ে দাঁড়াবে। সেই পরিস্থিতিতে যদি আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীরা বিরোধী দলে বসে সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলেন, তাহলে সংসদে এক জটিল সমীকরণ তৈরি হবে। এতে বিএনপির নেতৃত্বাধীন বিরোধী রাজনীতি ও জামায়াতের অবস্থান উভয়ই বিভ্রান্তিকর হয়ে উঠতে পারে। এই অস্বস্তিকর পরিস্থিতিকে ‘ট্র্যাজিক পলিটিক্স’ হিসেবে দেখছে জামায়াত, এবং তারা কোনোভাবেই এমন অবস্থায় যেতে চায় না।
ইতিহাস ঘেঁটে দেখা যায়, ১৯৯৬ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আওয়ামী লীগের সঙ্গে হাত মিলিয়েই বিএনপি সরকারের পতনের আন্দোলনে অংশ নেয় জামায়াত। তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থার ধারণাটি প্রথম জামায়াতই সামনে এনেছিল। এখন যদি পরিস্থিতি এমন হয় যে, ভবিষ্যতে তাদের আবার আওয়ামী লীগের বিপরীতে বিএনপির পাশে দাঁড়াতে হয়, তাহলে সেটি দলীয় রাজনীতির জন্য এক গভীর আত্মঘাতী পদক্ষেপ হবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
এই প্রেক্ষাপটে জামায়াত নেতারা বেশ কৌশলী প্রতিক্রিয়া দিচ্ছেন। জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেন, জাতীয় পার্টি ফ্যাসিস্ট সরকারের সহযোগী ছিল এবং গণতন্ত্র ধ্বংসে সমান অংশীদার। তিনি দাবি করেন, আওয়ামী লীগ ছদ্মবেশে যত স্বতন্ত্র প্রার্থীই দিক না কেন, জনগণ তাদের চিনে ফেলবে এবং প্রতিহত করবে।
অন্যদিকে, জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ড. হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, জামায়াত বিরোধী দলে যাবে না, বরং সরকার গঠনেই অংশ নেবে, ইনশাআল্লাহ। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জনগণের কাছে মুখ দেখাতে পারবে না, কারণ জনগণ আজ অত্যন্ত সচেতন।
সূত্র:যুগান্তর
১৭ বছর কষ্ট করেছি, ৩০০ আসনেই প্রার্থী চাই: রুমিন ফারহানা
বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেছেন, তাঁরা দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে কষ্ট করেছেন, তাই আসন্ন নির্বাচনে তাঁরা ৩০০টি সংসদীয় আসনেই দলের প্রার্থী দেখতে চান। তিনি মনে করেন, দল যাকে মনোনয়ন দেবে, নিশ্চয়ই তিনি যোগ্য হবেন, তবে একই সঙ্গে তাঁর নেতাকর্মীরা তাঁকে যে অনুরোধ জানাবেন, সেই প্রাণের দাবি শুনতে তিনি বাধ্য।
শনিবার (৮ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জের তারুয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ওলামা দল আশুগঞ্জ উপজেলা শাখার সংবর্ধনা ও পরিচিতি সভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
জনগণের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেন, "আমি জনগণের সঙ্গে ছিলাম, আছি ও জনগণের সঙ্গে থাকবো।" তিনি বলেন, আজ তিনি যে পর্যায়ে এসে দাঁড়িয়েছেন, তার পেছনে তাঁর জনগণের অক্লান্ত পরিশ্রম আছে, তাদের শ্রম রয়েছে এবং অর্থ ব্যয় রয়েছে। তিনি স্পষ্ট করে বলেন, "আমার নেতাকর্মীরা আমাকে যে সিদ্ধান্ত দিবে, আমার ভোটাররা যে সিদ্ধান্ত দেবে, আমার সরাইল-আশুগঞ্জের জনগণ যে সিদ্ধান্ত দিবে, তার সঙ্গে আমি থাকবো।"
জোট ও মনোনয়ন স্থগিত থাকা আসন
নির্বাচনী জোট গঠন প্রসঙ্গে রুমিন ফারহানা বলেন, বিএনপি অনেক বড় একটি রাজনৈতিক দল এবং দীর্ঘ ১৭ বছর সংগ্রাম ও ত্যাগ স্বীকার করেছে। বিএনপির সঙ্গে অন্যান্য দলগুলোর জোট গঠনের আলোচনা চলছে। তিনি জানান, জোটের শরিকরা যে আসনগুলো চেয়েছে, সেগুলো আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, অতি দ্রুতই এই স্থগিত আসনগুলোতে প্রার্থী ঘোষণা করা হবে।
আশুগঞ্জ উপজেলা ওলামা দলের আহ্বায়ক গাজী মুফতি দেলোয়ার হোসেন বেলালীর সঞ্চালনায় সংবর্ধনা ও পরিচিতি সভায় সভাপতিত্ব করেন তারুয়া ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি মো. তোফাজ্জল হোসেন সাইমোল্লা। অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া ওলামা দলের আহ্বায়ক মাওলানা ইসহাক মিয়া। অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া ওলামা দলের সদস্য সচিব মাওলানা ইয়াহইয়া মাছউদ।
মঞ্জু বনাম হেলাল: খুলনার রাজনীতিতে দুই পরীক্ষিত নেতার লড়াই, কে এগিয়ে এই কঠিন সমীকরণে?
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে খুলনা-২ (খুলনা সদর ও সোনাডাঙ্গা) আসনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এবং বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী—উভয় দলই প্রার্থী দেওয়ায় ভোটের সমীকরণ বেশ জটিল এবং তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এই আসনে বিএনপির পক্ষে লড়ছেন সাবেক সংসদ সদস্য ও নগর বিএনপির সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু, আর জামায়াতের পক্ষে দাঁড়িয়েছেন কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও মহানগর জামায়াতের সেক্রেটারি শেখ জাহাঙ্গীর হুসাইন হেলাল।
খুলনা-২ আসনটি ঐতিহাসিকভাবেই বিএনপির একটি শক্তিশালী ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। স্বাধীনতা পরবর্তী জাতীয় সংসদ নির্বাচনগুলোতে বিএনপি এই আসনটিতে মোট চারবার জয়লাভ করেছে, যেখানে আওয়ামী লীগ জিতেছে দুবার। তবে এই নির্বাচনে দুই ইসলামপন্থী দলের প্রার্থীর উপস্থিতির কারণে ভোটের ফল অপ্রত্যাশিত হতে পারে বলে মনে করছেন স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
বিএনপি প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জুর শক্তি ও চ্যালেঞ্জ
নজরুল ইসলাম মঞ্জু এই আসনের একজন পরীক্ষিত নেতা। সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে তার উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড এবং দলের কঠিন সময়েও স্থানীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ ধরে রাখার কারণে তার একটি শক্তিশালী সাংগঠনিক ভিত্তি রয়েছে।
অতীতের ফলাফল
মঞ্জু এই আসন থেকে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন। ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সঙ্গে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। সেবার সামান্য ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হলেও তাঁর প্রাপ্ত ভোট ছিল ৯০,৯৫০ (৫০.০%), যা তাঁর ব্যক্তিগত জনপ্রিয়তার প্রমাণ দেয়।
নেতৃত্বের মূল্যায়ন
দলের দুর্দিনে হাইকমান্ড তাকে এই আসন থেকে এককভাবে মনোনয়ন দেওয়ায় তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মধ্যে নতুন করে উচ্ছ্বাস দেখা দিয়েছে, যা তাঁর নির্বাচনী গতিকে আরও বেগবান করতে পারে।
তবে এবার জামায়াতের প্রার্থী থাকায় ইসলামপন্থী ভোটের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ বিভক্ত হয়ে যেতে পারে, যা মঞ্জুর জয় নিশ্চিত করার পথে বড় চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করবে।
জামায়াত প্রার্থী শেখ জাহাঙ্গীর হুসাইন হেলালের প্রভাব
শেখ জাহাঙ্গীর হুসাইন হেলালের সবচেয়ে বড় শক্তি হলো তার স্থানীয় পর্যায়ে পরিচিতি এবং জামায়াতের শক্তিশালী সাংগঠনিক কাঠামো।
স্থানীয় পরিচিতি
হেলাল খুলনা সিটি করপোরেশনের (কেসিসি) ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ওয়ার্ড কাউন্সিলর হিসেবে কাজ করার সুবাদে তিনি স্থানীয় জনগণের মধ্যে একটি পরিচিতি ও ভিত্তি তৈরি করতে সক্ষম হয়েছিলেন।
ভোটের ব্যাংক
জামায়াতে ইসলামীর খুলনাসহ এই অঞ্চলে নিজস্ব একটি শক্তিশালী ভোট ব্যাংক রয়েছে। যদিও ১৯৯৬ সালের পর থেকে জামায়াত এই আসনে সরাসরি প্রার্থী দেয়নি, এবার হেলালের মতো একজন পরিচিত মুখকে প্রার্থী দেওয়ায় জামায়াতের ভোটগুলো পুরোপুরি একত্রিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ভোটের সমীকরণ ও বিশ্লেষকদের মত
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, দুই প্রধান প্রার্থীর উপস্থিতির কারণে ইসলামপন্থী ও জাতীয়তাবাদী ঘরানার ভোটগুলো বিভক্ত হওয়ার প্রবল শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
১. ভোট বিভাজন: মঞ্জু এবং হেলাল উভয়েরই লক্ষ্য থাকবে ইসলামপন্থী ও জাতীয়তাবাদী ঘরানার ভোটারদের আকৃষ্ট করা। দুই নেতার উপস্থিতিতে এই ভোট ভাগ হয়ে গেলে তা শেষ পর্যন্ত অন্য দলের প্রার্থীর জন্য সুবিধা এনে দিতে পারে।
২. জোটের অভাব: দুই দলই (বিএনপি ও জামায়াত) গত ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে একসঙ্গে থাকলেও নির্বাচনে কোনো আনুষ্ঠানিক জোট না হওয়ায় তাদের এই স্বতন্ত্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা খুলনার ভোটের হিসাবে নতুন পরিবর্তন আনবে। জামায়াত এই আসনে পূর্ণ শক্তি নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ভোটাররা মনে করছেন, এই খুলনা শহরে জনপ্রতিনিধি নির্বাচনে প্রার্থীর অতীতের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড, স্থানীয় গ্রহণযোগ্যতা এবং এলাকার সার্বিক উন্নয়নের বিষয়ই শেষ পর্যন্ত প্রাধান্য পাবে। এই দুই হেভিওয়েট প্রার্থীর দ্বৈরথ খুলনা-২ আসনকে এবারের নির্বাচনের অন্যতম আকর্ষণীয় আসনে পরিণত করেছে।
পাঠকের মতামত:
- ১২৩ ঘণ্টা অনশন শেষে আম জনতার দলের তারেক রহমান হাসপাতালে
- ঢাকা-১০ আসন হটস্পট: ত্রিমুখী প্রতিদ্বন্দ্বিতা ঘিরে ভোটের হিসাব নিকাশ
- মশলা কিনতে এসে দেশ দখল: যেভাবে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি হয়ে উঠেছিল পৃথিবীর সবচেয়ে ভয়ঙ্কর প্রাইভেট আর্মি!
- রংপুরে চার হত্যার দায় স্বীকার পুলিশের, জবানবন্দিতে এল শীর্ষ কর্তাদের নাম
- পদ্মার চরাঞ্চলে অপারেশন ফার্স্ট লাইট: উদ্ধার বিপুল আগ্নেয়াস্ত্র
- গভীর ঘুমের রহস্য: গ্লিমফ্যাটিক সিস্টেম কীভাবে মস্তিষ্ক ও হৃদযন্ত্রকে সুস্থ রাখে?
- লাশ দাফনেও জায়গা দেয়নি আওয়ামী লীগ: মুগ্ধের ভাই মীর স্নিগ্ধ
- ১৭ জেলার তাপমাত্রা ১২ থেকে ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নামার পূর্বাভাস
- মাঠ থেকে সেনাবাহিনী সরিয়ে নেওয়ার গুজব নিয়ে মুখ খুললেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
- কোরিয়ান ড্রামায় মুগ্ধ বিশ্ব: মিস্ট্রি থ্রিলার থেকে টাইম ট্রাভেল, দেখুন সেরা ১০ সিরিজ!
- ইসলামী ব্যাংক লুটপাট: ১০ হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে বৃহত্তম মামলা দায়ের
- নেপাল-ভারত ম্যাচের আগে উৎসব: দেশে ফিরছেন হামজা, শিরোপা জিতে ফিরছেন কি সৌমিত?
- ঢাকায় একরাতে চার্চে চার বিস্ফোরণ: আতঙ্কে খ্রিস্টান সম্প্রদায়!
- অ্যান্ড্রয়েড ১৫-ভিত্তিক HyperOS 3 নিয়ে চুপিসারে বড় আপডেট আনছে শাওমি!
- শক্তিশালী ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল জাপান জারি করা হল সুনামি সতর্কতা
- সাধারণ মানুষ ভোট চায়, চাপানো গণভোট বা সনদ নয়: মির্জা ফখরুল
- বেতন বাড়বে না আন্দোলন চলবে? শিক্ষকদের দাবিতে নতুন মোড়
- নির্বাচন করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানালেন উপদেষ্টা আসিফ: দিলেন পদত্যাগের ইঙ্গিতও
- নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করতে পারেনি সরকার: রাশেদ খান
- ক্ষত সারাতে লাগবে না অস্ত্রোপচার: শরীর নিজেই গজাবে নতুন টিস্যু, যুগান্তকারী আবিষ্কার
- নতুন পে কমিশনের সিদ্ধান্ত নেবে আগামী সরকার: অর্থ উপদেষ্টা
- ০৯ নভেম্বর ডিএসই লেনদেনের সারসংক্ষেপ
- ০৯ নভেম্বর ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ লুজার তালিকা প্রকাশ
- ০৯ নভেম্বর ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- এক ভিসায় জিসিসি'র ছয় দেশ ভ্রমণ, চালু হচ্ছে 'গ্র্যান্ড ট্যুরস ভিসা'
- দল নিবন্ধনে অনড়: ইসি’র গেটে ১২৩ ঘণ্টা ধরে অনশনে তারেক রহমান
- ইংল্যান্ড প্রবাসী কিউবা মিচেল: অবশেষে জাতীয় দলের ক্যাম্পে ডাক পেলেন
- দুই উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবিতে শহীদ মিনারে প্রাথমিকের শিক্ষকরা: শুরু হলো দেশব্যাপী কর্মবিরতি
- সাবেক মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীকে জামিন দিলেন হাইকোর্ট
- গাজায় পানির সংকট তীব্র নিকাশি ব্যবস্থা ধ্বংস হওয়ায় ভূ-গর্ভস্থ পানিও দূষিত, নেই কোনো বিকল্প
- এটা আমার শেষ নির্বাচন: ঠাকুরগাঁওয়ে ভোট চেয়ে আবেগঘন আবেদন মির্জা ফখরুলের
- কুমিল্লার বদলে ধানমন্ডি থানার ভোটার হচ্ছেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ
- ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে
- বিরোধী আসনে জামায়াতকে ঠেলতে আ.লীগের নতুন পরিকল্পনা!
- ডিএসইর নির্দেশনা অনুযায়ী বোর্ড সভার তারিখ প্রকাশ
- দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তির নায়ক ট্রাম্প- পাকিস্তান প্রধানমন্ত্রী
- শেষ বাঁশির আগেই বদলে গেল গল্প- টটেনহ্যাম বনাম ম্যান ইউ
- বাংলাদেশ–ভারত ফুটবল ম্যাচের টিকিটের দাম প্রকাশ
- পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি নিয়ে আফগানিস্তানের বার্তা
- বাংলাদেশি টাকার বিপরীতে বিদেশি মুদ্রার সর্বশেষ বিনিময় হার প্রকাশ
- মাটিন স্পিনিংয়ের প্রথম প্রান্তিকের ফলাফল প্রকাশ
- ফার্মা এইডের ডিভিডেন্ড ঘোষণা
- মুনাফায় রেকর্ড গড়ল ফাইন ফুডস লিমিটেড
- হাক্কানি পাল্পের প্রথম প্রান্তিকে মুনাফা ইতিবাচক
- ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের Q3 প্রতিবেদন প্রকাশ
- আজকের নামাজের সময়সূচি ও নামাজের ফজিলত
- ভোটার তালিকা ও এনআইডি ব্যবস্থাপনায় বড় পরিবর্তন
- ১ কোটি টাকার বদলে ১৮ লাখ টাকার লিফট! দুর্নীতির মহোৎসব
- রবিবার ঢাকায় বন্ধ থাকবে যেসব মার্কেট ও এলাকা
- তেজাবি স্বর্ণের দাম বাড়ায় বাজারে নতুন সমন্বয়, জানুন আজকের রেট
- গবেষণা ভিত্তিক শিক্ষা: বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য এক নতুন দিগন্ত
- শেয়ারবাজারে শীর্ষ বিশ শেয়ারের তালিকা প্রকাশ
- ০৩ নভেম্বর ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- পানি ও খাদ্য নিরাপত্তা: ভবিষ্যতের সম্ভাব্য যুদ্ধের কারণ
- ৫ ও ৬ নভেম্বর বন্ধ থাকবে ২ বছরের সরকারি ট্রেজারি বন্ড
- ০৩ নভেম্বর ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ লুজার তালিকা প্রকাশ
- ঢাকার আজকের গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক কর্মসূচি এক নজরে
- গ্রিন সিগন্যাল কী পেল মান্না, নুর, পার্থসহ ১২ জোটনেতা
- ইসরায়েলের নেতাদের জন্মনাম ও পরিচয় পরিবর্তনের যত কারণ
- রপ্তানি আয়ে বড় ধস; যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কে চাপে পোশাক শিল্প
- ১২১তম ১০০ টাকা প্রাইজবন্ড ড্র, প্রথম পুরস্কার ৬ লাখ টাকা
- দেউলিয়া পাঁচটি ইসলামি ব্যাংক একীভূত
- ড. ইউনুস বিশ্বের ৫০০ প্রভাবশালী মুসলিমের মধ্যে ৫০তম
- ইন্টারন্যাশনাল স্পেশালাইজড নিট লিমিটেডের প্রথম প্রান্তিক আর্থিক ফলাফল প্রকাশ
- রেকর্ড ডেট ঘিরে দুই দিন লেনদেন বন্ধ থাকবে








