গাজায় ইসরায়েলি বর্বর হামলা

গাজা আগ্রাসনে ‘না’: ফ্রান্স-কানাডা-ব্রিটেনের কড়া বার্তা

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ মে ২০ ১৩:৩৯:৩২
গাজা আগ্রাসনে ‘না’: ফ্রান্স-কানাডা-ব্রিটেনের কড়া বার্তা

সত্য নিউজ: ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান এবং মানবিক সহায়তা পৌঁছাতে বাধা দেওয়ার নীতির বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ছে। সম্প্রতি ব্রিটেন, ফ্রান্স ও কানাডা এক যৌথ বিবৃতিতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকি দিয়ে বলেছে, পরিস্থিতি যদি অবিলম্বে না পাল্টায়, তবে তারা কঠোর পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হবে।

পূর্বঘোষিত সামরিক অভিযান ও গাজার ওপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণের ঘোষণা দিয়েছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তবে এই অবস্থান আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্বেগ আরও ঘনীভূত করেছে, বিশেষত যখন জাতিসংঘ ও মানবাধিকার সংস্থাগুলো গাজায় আসন্ন দুর্ভিক্ষ এবং বিশাল বেসামরিক প্রাণহানির আশঙ্কা প্রকাশ করছে।

যৌথ বিবৃতির বার্তা

সোমবার যুক্তরাজ্য, কানাডা ও ফ্রান্সের পক্ষ থেকে দেওয়া যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, "ইসরায়েলি সরকার যে পরিকল্পিতভাবে গাজায় মানবিক সহায়তা বন্ধ রেখেছে তা আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের পরিপন্থী। এ ছাড়া পশ্চিম তীরে বসতি সম্প্রসারণের যেকোনো উদ্যোগের বিরুদ্ধেও আমরা অবস্থান নিচ্ছি। পরিস্থিতি পরিবর্তন না হলে নিষেধাজ্ঞাসহ পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে আমরা দ্বিধা করবো না।"

নেতানিয়াহুর পাল্টা প্রতিক্রিয়া

বিবৃতির জবাবে নেতানিয়াহু বলেন, "লন্ডন, অটোয়া ও প্যারিস ৭ অক্টোবর হামলার মতো আরও হামলাকে পুরস্কৃত করছে।" তিনি বলেন, "ইসরায়েল তার জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বৈধভাবে কাজ করে যাচ্ছে এবং যুদ্ধের শেষ লক্ষ্য হলো জিম্মি মুক্তি ও গাজার অসামরিকীকরণ।"

যুদ্ধের বাস্তবতা

ইসরায়েল গত মার্চ থেকেই গাজায় খাদ্য, জ্বালানি ও ওষুধ সরবরাহ কার্যত বন্ধ রেখেছে। তারা দাবি করছে, হামাসের হাতে আটক ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি আদায়ে এটি একটি চাপ প্রয়োগের কৌশল। অথচ আন্তর্জাতিক মানবিক সংগঠনগুলো বলছে, এই কৌশলে পুরো গাজার জনগণ মানবিক বিপর্যয়ে নিপতিত হচ্ছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, চলমান আক্রমণে ইতোমধ্যেই ৫৩ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। অপরদিকে, ইসরায়েলের ভাষ্য অনুযায়ী, ৭ অক্টোবরের হামলায় ১২০০ জন নিহত হন এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যাওয়া হয়।

আন্তর্জাতিক সমর্থন ও প্রতিক্রিয়া

পশ্চিমা এই তিন দেশের নেতারা যুক্তরাষ্ট্র, মিশর ও কাতারের মধ্যস্থতায় গাজায় অস্ত্রবিরতির প্রচেষ্টাকে সমর্থন জানিয়েছেন। তাঁরা দ্বি-রাষ্ট্রীক সমাধানের অংশ হিসেবে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও পুনর্ব্যক্ত করেন। হামাস এই বিবৃতিকে স্বাগত জানিয়ে বলেছে, “এটি আন্তর্জাতিক আইন পুনরুদ্ধারের পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।”

গাজার মানবিক সংকট ও ইসরায়েলের দীর্ঘস্থায়ী সামরিক পদক্ষেপের প্রেক্ষিতে, পশ্চিমা বিশ্বের অবস্থান আরও জোরালো হয়ে উঠছে। আন্তর্জাতিক মহলের দৃষ্টি এখন এই দ্বন্দ্ব কত দ্রুত এবং কীভাবে সংলাপ ও মানবিক দায়বদ্ধতার মাধ্যমে সমাধানে পৌঁছায়, সেই প্রশ্নের জবাব খুঁজছে। পরিস্থিতির গুরুত্ব বিবেচনায়, ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাত আন্তর্জাতিক রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ