ট্রাম্পের দেওয়া রুপার নেকলেস নিজের কাছে রাখতে মূল্য পরিশোধ করলেন কিয়ার স্টারমার

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ০১ ১০:৫৬:০৮
ট্রাম্পের দেওয়া রুপার নেকলেস নিজের কাছে রাখতে মূল্য পরিশোধ করলেন কিয়ার স্টারমার
ছবিঃ সংগৃহীত

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্পের ব্যক্তিগতভাবে নকশা করা একটি রুপার নেকলেস নিজের কাছে রাখার জন্য মূল্য পরিশোধ করেছেন। দ্য গার্ডিয়ানের খবরে বলা হয়েছে, গত সেপ্টেম্বরে ট্রাম্প দম্পতির দ্বিতীয় সফরের সময় স্টারমার এই উপহারটি পান এবং এটিই ছিল সেই সফর থেকে একমাত্র উপহার যা তিনি ব্যক্তিগত সংগ্রহে রাখার সিদ্ধান্ত নেন।

ট্রাম্প দম্পতি স্টারমারকে আরও দুটি ব্যক্তিগতভাবে খোদাই করা উপহার দিয়েছিলেন—একটি গল্ফ ক্লাব এবং একটি রুপার কাফলিংক সেট। তবে এই দুটি এবং স্টারমারের স্ত্রী ভিক্টোরিয়ার জন্য দেওয়া একজোড়া কাউবয় বুট সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ক্যাবিনেট অফিসের তত্ত্বাবধানে রাখা হয়েছে।

সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী, কোনো মন্ত্রীর কাছে যদি ১৪০ পাউন্ডের বেশি মূল্যের সরকারি উপহার আসে, তবে তিনি সেটি নিজের কাছে রাখতে চাইলে উপহারের প্রকৃত মূল্যের সঙ্গে ১৪০ পাউন্ড বাদ দিয়ে বাকি অর্থ সরকারকে পরিশোধ করতে হয়। তবে নেকলেসটির মূল্য কত ছিল তা প্রকাশ করা হয়নি এবং ডাউনিং স্ট্রিটও এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।

এই রাষ্ট্রীয় সফরে ট্রাম্প দম্পতিকে আতিথ্য দেওয়া হয় উইন্ডসর ক্যাসেলে। স্টারমার ট্রাম্পকে উপহার দিয়েছিলেন প্রেসিডেন্সিয়াল সিল ও পদবি-সংবলিত একটি মন্ত্রিসভার লাল বাক্স এবং মেলানিয়া ট্রাম্পকে ইউক্রেনীয় শিশুদের নকশা করা একটি রেশমের ওড়না।

যদিও রাষ্ট্রপ্রধানদের মধ্যে উপহার বিনিময় মূলত প্রতীকী, অতীতে যুক্তরাজ্য ও মার্কিন প্রেসিডেন্টের মধ্যে এমন কিছু উপহার বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। যেমন, ২০০৯ সালে গর্ডন ব্রাউন ওয়াশিংটনে বারাক ওবামাকে দাসপ্রথা-বিরোধী জাহাজ এইচএমএস গ্যানেট-এর কাঠ দিয়ে তৈরি একটি শৈল্পিক কলমদানি উপহার দেন। কিন্তু ওবামার উপহার হিসেবে দেওয়া ২৫টি আমেরিকান ক্লাসিক চলচ্চিত্রের একটি সাধারণ ডিভিডি সেট কূটনৈতিক ভুল হিসেবে ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয়েছিল।

এছাড়াও, কাতারের পক্ষ থেকে ট্রাম্পকে দেওয়া ৪০০ মিলিয়ন ডলার মূল্যের বিলাসবহুল বোয়িং ৭৪৭ বিমানকে এ যাবৎকালের সবচেয়ে বড় উপহার হিসেবে বিবেচনা করা হয়, যা যুক্তরাষ্ট্রে তীব্র সমালোচনার জন্ম দিয়েছিল। রাজনীতিতে আসার আগে নকল গয়না উপহার দেওয়ার অভিযোগও ট্রাম্পের বিরুদ্ধে রয়েছে। অভিনেতা চার্লি শিন দাবি করেছিলেন, ট্রাম্প একবার তার বিয়েতে যে হীরা ও প্লাটিনামের কাফলিংকস উপহার দিয়েছিলেন, তা পরে নকল প্রমাণিত হয়।


১৯৯২ সালের পর নজিরবিহীন সিদ্ধান্ত ট্রাম্পের নির্দেশনায় বাড়ল বৈশ্বিক পারমাণবিক ঝুঁকি

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ০১ ১০:০৯:৪০
১৯৯২ সালের পর নজিরবিহীন সিদ্ধান্ত ট্রাম্পের নির্দেশনায় বাড়ল বৈশ্বিক পারমাণবিক ঝুঁকি
ছবিঃ সংগৃহীত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ১৯৯২ সালের পর প্রথমবারের মতো দেশের প্রতিরক্ষা দপ্তরকে পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা পুনরায় শুরু করার নির্দেশ দিয়েছেন। রাশিয়া ও চীনের মতো প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলোর সঙ্গে 'সমান তালে' চলার লক্ষ্যেই তিনি এই নজিরবিহীন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানাচ্ছে বিবিসি।

দক্ষিণ কোরিয়ায় চীনা প্রেসিডেন্ট শি চিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠকের ঠিক আগে বুধবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ট্রাম্প তার এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, "অন্য দেশগুলোর পরীক্ষামূলক কর্মসূচির কারণে আমি প্রতিরক্ষা দপ্তরকে নির্দেশ দিয়েছি আমাদের পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষাও সমানভাবে শুরু করতে।"

পারমাণবিক অস্ত্রের ভারসাম্য

ট্রাম্প দাবি করেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক অস্ত্রভান্ডার এখন বিশ্বের সবচেয়ে বড়। তার মতে, রাশিয়া দ্বিতীয় এবং চীন 'অনেক পিছিয়ে' তৃতীয় স্থানে আছে। যদিও স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট (এসআইপিআরআই)-এর তথ্য অনুযায়ী, রাশিয়ার কাছেই সবচেয়ে বেশি (৫,৪৫৯টি) পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে, এরপর যুক্তরাষ্ট্র (৫,১৭৭টি) এবং চীন (৬০০টি)।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার এই সিদ্ধান্তকে 'অনিবার্য' বলে অভিহিত করেছেন। তিনি স্বীকার করেছেন, এই অস্ত্রের 'অপরিসীম ধ্বংসক্ষমতা' রয়েছে, তবুও অস্ত্রভান্ডার 'হালনাগাদ ও আধুনিকায়ন' করা ছাড়া তার হাতে 'কোনো বিকল্প ছিল না'। উল্লেখ্য, সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ এইচ ডব্লিউ বুশ স্নায়ুযুদ্ধ অবসানের প্রেক্ষাপটে ১৯৯২ সালে পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষায় স্থগিতাদেশ জারি করেছিলেন।

অস্ত্র প্রতিযোগিতা ও ঝুঁকি

বিশেষজ্ঞদের মতে, ট্রাম্পের এই ঘোষণা বিশ্বজুড়ে পারমাণবিক অস্ত্রের প্রতিযোগিতাকে আরও উসকে দেবে এবং বিশ্বকে ক্রমবর্ধমান পারমাণবিক হুমকির মুখে ফেলবে। কার্নেগি এনডাওমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিস-এর ফেলো জেমি ওয়াং উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া এবং চীন এমন একটি পর্যায়ে প্রবেশ করছে, যা একটি সম্ভাব্য অস্ত্র প্রতিযোগিতার দিকে নিয়ে যেতে পারে।

লন্ডন-ভিত্তিক থিংক ট্যাংক 'রুসি'-এর সিনিয়র ফেলো দারিয়া দোলঝিকোভা অবশ্য মনে করেন, ট্রাম্পের এই ঘোষণা বিশাল এক ঝুঁকির 'বালতির মধ্যে এক ফোঁটা জলের মতো'। তার মতে, ইউক্রেন যুদ্ধ এবং ভারত-পাকিস্তান, ইরান-ইসরায়েলের মতো অঞ্চলে ক্রমবর্ধমান সংঘাতের কারণে এমনিতেই পারমাণবিক সংঘাতের ঝুঁকি বহুগুণ বেড়ে গেছে।

রাশিয়ার পদক্ষেপ ও চীনের প্রতিক্রিয়া

রাশিয়ার পক্ষ থেকে সম্প্রতি নতুন পারমাণবিক অস্ত্র সরবরাহ ব্যবস্থার পরীক্ষা চালানো হয়, যা মার্কিন প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেদ করতে সক্ষম বলে দাবি করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করেন, রাশিয়ার এই পদক্ষেপই ট্রাম্পের ঘোষণার মূল কারণ।

এদিকে, মার্কিন ঘোষণার প্রতিক্রিয়ায় চীন আশা করেছে যে, যুক্তরাষ্ট্র পারমাণবিক পরীক্ষা নিষিদ্ধকরণ চুক্তির অধীনে তার বাধ্যবাধকতা পূরণ করবে এবং পরীক্ষা স্থগিত রাখার প্রতিশ্রুতি মেনে চলবে।

ঐতিহাসিক ভুল এবং রাজনৈতিক বার্তা

ওয়াশিংটনের আর্মস কন্ট্রোল অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাহী পরিচালক ড্যারিল ক্যাম্পবেল ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তকে 'আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার দিক থেকে একটি ঐতিহাসিক ভুল' বলে অভিহিত করেছেন। তিনি সতর্ক করে বলেন, এই পদক্ষেপ চীন, যুক্তরাষ্ট্র এবং রাশিয়ার মধ্যে একটি বিপজ্জনক ত্রি-পক্ষীয় অস্ত্র প্রতিযোগিতার সূচনা করতে পারে।

অনেকের মতে, যদিও পারমাণবিক পরীক্ষা পুনরায় শুরু করার কোনো বাস্তবসম্মত বৈজ্ঞানিক যুক্তি নেই (কারণ যুক্তরাষ্ট্র বর্তমানে কম্পিউটার সিমুলেশনের মাধ্যমে পরীক্ষা করে), তবে 'দ্য হেরিটেজ ফাউন্ডেশন'-এর গবেষক রবার্ট পিটার্স বলেছেন, এর 'প্রাথমিক কারণ হলো প্রতিপক্ষকে একটি রাজনৈতিক বার্তা পাঠানো'। তিনি জোর দিয়ে বলেন, শক্তি প্রদর্শনের জন্য একজন প্রেসিডেন্টের কখনও কখনও পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা করা প্রয়োজন হতে পারে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সর্বশেষ পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছিল নেভাডা অঙ্গরাজ্যে ভূগর্ভে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সেই স্থানটিকে পুনরায় পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত করতে কমপক্ষে ৩৬ মাস সময় লাগবে।


সুদানের আকাশে রক্তের চিহ্ন স্যাটেলাইট চিত্রেও দেখা যাচ্ছে মর্মান্তিক দৃশ্য

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ০১ ০৯:৩৮:৪৮
সুদানের আকাশে রক্তের চিহ্ন স্যাটেলাইট চিত্রেও দেখা যাচ্ছে মর্মান্তিক দৃশ্য
ছবিঃ সংগৃহীত

সুদানের উত্তর দারফুর রাজ্যের রাজধানী এল-ফাশের শহর দখল করে নেওয়ার পর আধা-সামরিক বাহিনী র‌্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে। স্থানীয়দের বর্ণনা অনুযায়ী, শহরের রাস্তায় শত শত লাশ পড়ে আছে, যা কবর দেওয়ার মতো কেউ নেই। জাতিসংঘের তথ্যমতে, এই সহিংসতার কারণে আটকে পড়া সাধারণ মানুষ মারাত্মক বিপদের মধ্যে রয়েছে।

গত সপ্তাহে শহরটি আরএসএফ দখল করে নেওয়ার সময় কমপক্ষে ১,৫০০ মানুষকে হত্যা করা হয়েছে বলে জানা গেছে। শুধু একটি হাসপাতালেই প্রায় ৪৬০ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে রোগী, স্বাস্থ্যকর্মী ও বেসামরিক নাগরিকও রয়েছেন বলে জাতিসংঘ জানিয়েছে।

ত্রাণের আহ্বান ও আন্তর্জাতিক উদ্বেগ

জাতিসংঘের মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক জানিয়েছেন, দারফুরে ত্রাণ কার্যক্রম জোরদার করার জন্য সেন্ট্রাল ইমার্জেন্সি রেসপন্স ফান্ড থেকে ২০ মিলিয়ন ডলার সহায়তা অনুমোদন করা হয়েছে। তিনি ৪৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

হায়াত নামে এক নারী জানান, সাতজন আরএসএফ সদস্য তাদের বাড়িতে ঢুকে লুটপাট চালায় এবং তার ১৬ বছর বয়সী ছেলেকে তার সামনেই হত্যা করে। তিনি বলেন, "আমরা রাস্তায় অসংখ্য লাশ পড়ে থাকতে দেখেছি, আহতদের কেউ উদ্ধার করতে পারেনি।" আরেকজন বেঁচে যাওয়া ব্যক্তি হুসেইন এল-ফাশেরের পরিস্থিতিকে 'ভয়াবহ' উল্লেখ করে বলেন, মৃতদেহগুলো রাস্তায় পড়ে আছে, তাদের কবর দেওয়ার কেউ নেই।

গণহত্যার ঝুঁকি ও পালানোর চেষ্টা

সুদান বিশেষজ্ঞ শায়না লুইস এই হত্যাযজ্ঞকে 'অত্যন্ত মর্মান্তিক' বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি জানান, "আমরা এক বছরেরও বেশি সময় ধরে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এই গণহত্যার ঝুঁকি সম্পর্কে সতর্ক করেছিলাম, কিন্তু তেমন সাড়া পাওয়া যায়নি।"

লুইস আরও জানান, মহাকাশ থেকে পাওয়া স্যাটেলাইট চিত্রেও এই রক্তাক্ত দৃশ্যের প্রমাণ দেখা যাচ্ছে—বিশাল এলাকায় মাটি লালচে রঙে ঢেকে আছে এবং মৃতদেহের মতো ছায়া ফুটে উঠছে।

সহিংসতা এড়াতে শহর থেকে প্রায় ৩৬ হাজার মানুষ ৭০ কিলোমিটার দূরের তাভিলা শহরে পালিয়ে গেছেন। তাভিলা শহরে ইতোমধ্যে ৬ লাখ ৫০ হাজারের বেশি বাস্তুচ্যুত মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। তবে নরওয়েজিয়ান রিফিউজি কাউন্সিল জানিয়েছে, যারা রওনা হয়েছিল, তাদের অনেকেই পথে মারা গেছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

সহিংসতায় জর্জরিত এল-ফাশের শহরে এখনো খাদ্য, পানি ও ওষুধের চরম সংকট বিদ্যমান। মানবিক সংগঠনগুলো বলছে, এটি সাম্প্রতিক সময়ের অন্যতম ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়।

সূত্র : আল জাজিরা


নিজ দেশে ইসরায়েলিদের বিক্ষোভ

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ৩১ ১১:৫২:০৫
নিজ দেশে ইসরায়েলিদের বিক্ষোভ
ছবি: সংগৃহীত

ইসরায়েলে সেনাবাহিনীতে বাধ্যতামূলক যোগদানের নীতির প্রতিবাদে সম্প্রতি ব্যাপক বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রায় দুই লাখ আল্ট্রা অর্থোডক্স ইহুদি এই আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন, যারা দাবি করেছেন যে তারা ধর্মীয় কারণে সেনা সেবা থেকে অব্যাহতি পান। বৃহৎ বিক্ষোভটি বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) পশ্চিম জেরুজালেমে শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে, খবর দিয়েছে আল-জাজিরা।

বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে আনতে ২,০০০ পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছিল। পুলিশ জানায়, বিক্ষোভ চলাকালীন এক কিশোর নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে মারা গেছেন। বিক্ষোভকারীরা ঐতিহ্যবাহী কালো পোশাক ও টুপি পরে হাতে প্ল্যাকার্ড এবং ব্যানার নিয়ে মিছিল করেছেন। প্রদর্শিত ব্যানারের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল ‘তোরা-র পক্ষে জনগণ’ এবং ‘ইয়েশিভা বন্ধ মানে ইহুদিবাদের মৃত্যু’। কিছু স্থানে আগুন ধরানো হলে শহরের বিভিন্ন অংশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়েছে, যখন ইসরায়েল সরকার আল্ট্রা অর্থোডক্স যুবকদের সেনাবাহিনীতে যোগদানের নোটিশ পাঠানো শুরু করেছে। সরকারী আদেশ ও সেনা আইন অমান্য করার দায়ে ইতিমধ্যেই কয়েকজনকে কারাগারে পাঠানোর খবর পাওয়া গেছে। এক প্রতিবাদী, শমুয়েল অরবাখ, বলেন, “যারা সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে অস্বীকার করছে, তাদের জেলে নেওয়া হচ্ছে। এখানে ইহুদিবাদের বিরুদ্ধে কোনো কার্যকর লড়াই করা সম্ভব নয়।”

১৯৪৮ সালে ইসরায়েল প্রতিষ্ঠার সময় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, যারা পূর্ণ সময় ধর্মীয় পাঠে নিয়োজিত থাকবে, তারা সেনাসেবা থেকে অব্যাহতি পাবেন। বর্তমানে এই শ্রেণির সংখ্যা বেড়ে ৬৬,০০০, যা ইসরায়েলের মোট ইহুদি জনসংখ্যার প্রায় ১৪ শতাংশ।

তবে ২০২৪ সালে ইসরায়েলের সুপ্রিম কোর্ট সিদ্ধান্ত দেয়, যে সব নাগরিকের মতো আল্ট্রা অর্থোডক্স পুরুষদেরও সেনাসেবায় অংশ নিতে হবে। এই রায় প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু’র জোট সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। আইন বাস্তবায়নের প্রতিবাদে গত জুলাইয়ে অতি-রক্ষণশীল দল ইউনাইটেড তোরা জুডেইজম (ইউটিজে) জোট ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছে।

বিশ্লেষকরা মনে করেন, এই সংকট ইসরায়েলের ২০২৬ সালের নির্বাচনের আগে নেতানিয়াহু’র রাজনৈতিক অবস্থানকে আরও দুর্বল করতে পারে। দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং সেনাবাহিনীর বাধ্যতামূলক নীতি নিয়ে চলমান বিতর্ক দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলতে পারে, বিশেষ করে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের সঙ্গে সরকারের সম্পর্কের ক্ষেত্রে।


ডা. জাকির নায়েক ঢাকায় আসছেন, ভারতের দাবি হস্তান্তরের

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ৩১ ১১:৪৫:৩৪
ডা. জাকির নায়েক ঢাকায় আসছেন, ভারতের দাবি হস্তান্তরের
ছবি: সংগৃহীত

আগামী নভেম্বরে ঢাকায় আসছেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ধর্মপ্রচারক ডা. জাকির নায়েক। তবে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মালয়েশিয়া থেকে ঢাকায় পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গে তিনি যেন ভারতের হাতে হস্তান্তর করা হয়—এমনটাই আশা করছে নয়াদিল্লি। বিষয়টি ভারতীয় গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল।

৩০ অক্টোবর এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “ডা. জাকির নায়েক একজন পলাতক আসামি, যার বিরুদ্ধে ভারতে আইনানুগ মামলা রয়েছে। আমরা আশা করি, তিনি যেখানে থাকবেন না কেন, সংশ্লিষ্ট দেশ তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে এবং ভারতের নিরাপত্তা উদ্বেগগুলো বিবেচনায় রাখবে।”

জাকির নায়েক ২০১৬ সালের আগ পর্যন্ত ভারতে অবস্থান করতেন এবং বিভিন্ন ইসলামিক অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে আন্তর্জাতিক খ্যাতি অর্জন করেন। তবে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকারের আমলে তার বিরুদ্ধে ‘ঘৃণামূলক বক্তব্য প্রচার’ ও অর্থ পাচারের মামলা দায়ের করা হয়। এছাড়া, তার নিয়ন্ত্রিত চ্যানেল পিস টিভি-এর সম্প্রচারও বন্ধ করে দেওয়া হয়।

এই পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে ৬০ বছর বয়সি ধর্মপ্রচারক ২০১৬ সালে ভারতে থেকে মালয়েশিয়ায় চলে যান এবং সেখানে স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি পান। ভারতের বিচারিক আওতার বাইরে থাকা অবস্থায় জাকির নায়েক একাধিকবার জানিয়েছেন, “আমি ভারতে ফিরে যাব না, যতক্ষণ না ন্যায়বিচারের নিশ্চয়তা পাই।”

এবারের ঢাকায় আগমন হবে ২৮ ও ২৯ নভেম্বর, যেখানে তিনি বাংলাদেশের একটি দাতব্য অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করবেন। অনুষ্ঠানটি স্পার্ক ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট আয়োজন করছে এবং সম্ভবত আগারগাঁও এলাকায় অনুষ্ঠিত হবে।

ভারতীয় দাবির প্রেক্ষিতে বাংলাদেশও আগে জাকির নায়েকের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল। ২০১৬ সালের হলি আর্টিজান হামলার পর অন্তত দুই হামলাকারীকে তার বক্তৃতা থেকে অনুপ্রাণিত বলে রিপোর্ট করা হয়। এর ভিত্তিতে বাংলাদেশে তার প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের পর নিয়মাবলী শিথিল হওয়ায় নিষেধাজ্ঞা ধীরে ধীরে শিথিল করা হয়েছে।

বর্তমান পরিস্থিতিতে, ডা. জাকির নায়েকের ঢাকায় আগমনের সঙ্গে সঙ্গে ভারত আশা করছে, তিনি যেন হাতেন হস্তান্তরিত হন। বিষয়টি কূটনৈতিকভাবে উত্তেজক হওয়ায় দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্ক এবং আইনগত অবস্থান নজরে রাখা গুরুত্বপূর্ণ।

-রাফসান


পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ে ফের উত্তেজনায় ট্রাম্প ও ইরান

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ৩১ ১০:৪১:১৭
পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ে ফের উত্তেজনায় ট্রাম্প ও ইরান
ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তে আবারও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক অঙ্গন। বুধবার (৩০ অক্টোবর) তিনি পেন্টাগনকে নির্দেশ দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার কর্মসূচি পুনরায় চালু করতে। এই ঘোষণার পরপরই ইরানের পক্ষ থেকে আসে কঠোর প্রতিক্রিয়া। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইয়্যেদ আব্বাস আরাগচি এক বিবৃতিতে ট্রাম্প প্রশাসনের এই পদক্ষেপকে ‘পশ্চাদমুখী ও দায়িত্বজ্ঞানহীন’ বলে আখ্যা দেন এবং বলেন, এটি বিশ্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থার প্রতি এক প্রকাশ্য চ্যালেঞ্জ।

আরাগচি তার বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রকে আক্রমণাত্মক মনোভাবাপন্ন একটি ‘পারমাণবিক অস্ত্রে সজ্জিত দখলদার দানব’ হিসেবে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, “ওয়াশিংটন তাদের প্রতিরক্ষা বিভাগের প্রকৃত স্বরূপ লুকাতে পারছে না। তারা নিজেদের ‘ডিপার্টমেন্ট অব ডিফেন্স’-এর নাম পরিবর্তন করে আসলে ‘যুদ্ধ বিভাগ’ করেছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের নীতির আসল চরিত্র প্রকাশ করে।” ইরানি মন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক নীতিকে কটাক্ষ করে বলেন, “যে দেশ বিশ্বব্যাপী আগ্রাসন চালাচ্ছে, সেটি এখন নিজেকে রক্ষার নামে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে- এ এক ভয়ংকর ভণ্ডামি।”

তিনি আরও বলেন, “এই দখলদার রাষ্ট্রই ইরানের শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক কর্মসূচিকে অপবাদ দিচ্ছে, অথচ তারাই পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছে। একই সঙ্গে আমাদের প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ও সুরক্ষিত স্থাপনাগুলোতে হামলার হুমকি দিচ্ছে, যা আন্তর্জাতিক আইন ও জাতিসংঘ সনদের স্পষ্ট লঙ্ঘন।” আরাগচির মতে, যুক্তরাষ্ট্রের এই আচরণ শুধুমাত্র দ্বিচারিতা নয়, বরং বৈশ্বিক শান্তির জন্য গুরুতর হুমকি।

তিনি বলেন, “একদিকে যুক্তরাষ্ট্র নিজেদের পারমাণবিক অস্ত্রভাণ্ডার সম্প্রসারণ করছে, অন্যদিকে ইরানের শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক গবেষণাকে অপরাধ হিসেবে উপস্থাপন করছে এটি এক অতি স্পষ্ট আন্তর্জাতিক ভণ্ডামি। ভুল করবেন না, যুক্তরাষ্ট্রই আজ বিশ্বের সবচেয়ে বড় পারমাণবিক বিস্তার-ঝুঁকি।”

আরাগচি সতর্ক করে বলেন, “এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক শান্তি, নিরাপত্তা ও কূটনৈতিক ভারসাম্যের জন্য এক ভয়াবহ বিপদ ডেকে আনবে। এমন সময় যখন বিশ্বব্যাপী সংঘাত কমিয়ে আনার আহ্বান উঠছে, তখন যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্ত বৈশ্বিক অনিশ্চয়তা বাড়াবে।”

এর আগে ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছিলেন, “অন্য দেশগুলো পরীক্ষামূলক পারমাণবিক কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে। তাই আমি প্রতিরক্ষা দপ্তরকে নির্দেশ দিয়েছি, আমরাও সমানভাবে আমাদের পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার কার্যক্রম শুরু করব।” তিনি আরও দাবি করেন, “যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক অস্ত্রভাণ্ডার এখন বিশ্বের সবচেয়ে বড়। রাশিয়া রয়েছে দ্বিতীয় স্থানে, আর চীন অনেক পিছিয়ে তৃতীয় অবস্থানে।”

আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্প প্রশাসনের এই সিদ্ধান্ত পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ চুক্তির প্রতি এক সরাসরি আঘাত। ঠান্ডা যুদ্ধের পর থেকে স্থিতিশীল থাকা বৈশ্বিক পরমাণু ভারসাম্য এখন নতুন করে অনিশ্চয়তার মুখে পড়ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি শুধু ইরান নয়, বরং রাশিয়া, চীন ও উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে নতুন এক অস্ত্র প্রতিযোগিতার ঝুঁকি তৈরি করবে।

ইরান বহুদিন ধরেই দাবি করে আসছে যে তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে, যা আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (IAEA) তত্ত্বাবধানে পরিচালিত। অন্যদিকে, ওয়াশিংটন দীর্ঘদিন ধরে ইরানের বিরুদ্ধে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির অভিযোগ তুলে আসছে। এমন পরিস্থিতিতে ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত ইরানের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানকে আরও শত্রুভাবাপন্ন করে তুলেছে বলে মনে করছেন কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা।

-রফিক


তুরস্ক-কাতারের মধ্যস্থতায় পাকিস্তান-আফগানিস্তান সীমান্তে নতুন শান্তির বার্তা

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ৩১ ১০:২৮:০৯
তুরস্ক-কাতারের মধ্যস্থতায় পাকিস্তান-আফগানিস্তান সীমান্তে নতুন শান্তির বার্তা

দীর্ঘ পাঁচ দিনের বৈঠক শেষে তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারায় মধ্যস্থতাকারীদের তৎপরতায় অবশেষে যুদ্ধবিরতি চালিয়ে যেতে সম্মত হয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার দুই প্রতিবেশী রাষ্ট্র, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান। বৃহস্পতিবার রাতে তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “দুই দেশই যুদ্ধবিরতির ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে এবং সীমান্তে নতুন করে কোনো সংঘাতের উদ্ভব না ঘটাতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।” একইসঙ্গে জানানো হয়, যুদ্ধবিরতি-সংক্রান্ত শর্তাবলির বিস্তারিত নিয়ে আগামী ৬ নভেম্বর ইস্তাম্বুলে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের সরকারি প্রতিনিধিরা আবারও বৈঠকে বসবেন। সেই বৈঠক পর্যন্ত উভয় দেশ সীমান্তে সর্বোচ্চ সতর্কতা বজায় রাখবে এবং শান্তি রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।

দুই দেশের মধ্যে ২ হাজার ৬০০ কিলোমিটার দীর্ঘ যে সীমান্ত রেখা রয়েছে, তা ডুরান্ড লাইন নামে পরিচিত। ১৮৯৩ সালে ব্রিটিশ ভারতের আমলে নির্ধারিত এই সীমান্তই আজও দুই দেশের সম্পর্কের সবচেয়ে বিতর্কিত ইস্যু। ২০২১ সালে তালেবান সরকার আফগানিস্তানের ক্ষমতায় আসার পর থেকেই পাকিস্তান-আফগানিস্তান সম্পর্ক দ্রুত অবনতির দিকে যেতে থাকে। বর্তমানে সম্পর্কটি প্রায় সম্পূর্ণ ভেঙে পড়ার পর্যায়ে পৌঁছেছে।

এই অবনতির কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে পাকিস্তানের নিষিদ্ধ তালেবানপন্থি সশস্ত্র সংগঠন তেহরিক-ই তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি)। বহু বছর আগে ইসলামাবাদ আনুষ্ঠানিকভাবে এই গোষ্ঠীকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করলেও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ খাইবার পাখতুনখোয়ায় এখনো সক্রিয়ভাবে তাদের তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। পাকিস্তানের অভিযোগ, আফগানিস্তানের তালেবান সরকার টিটিপিকে আশ্রয় ও প্রশ্রয় দিচ্ছে। তবে কাবুল সরকার সব সময়ই এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে এবং বলেছে, আফগানিস্তানের ভূখণ্ড থেকে কোনো সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনার অনুমতি দেওয়া হয় না।

গত ৯ অক্টোবর কাবুলে টিটিপির শীর্ষ নেতাদের অবস্থানে বিমান হামলা চালায় পাকিস্তান। এতে গোষ্ঠীটির আমির নূর ওয়ালি মেহসুদ, তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী ক্বারি সাইফুল্লাহ মেহসুদসহ একাধিক জ্যেষ্ঠ কমান্ডার নিহত হন। আফগানিস্তান এ হামলাকে তাদের সার্বভৌমত্বে সরাসরি হস্তক্ষেপ হিসেবে বর্ণনা করে। ঘটনার দুই দিন পর, অর্থাৎ ১১ অক্টোবর, আফগান সেনাবাহিনী সীমান্তে পাকিস্তানি সেনা অবস্থানগুলো লক্ষ্য করে পাল্টা হামলা চালায়। এরপর উভয় পক্ষের পাল্টাপাল্টি গোলাগুলিতে সীমান্ত এলাকায় ব্যাপক সংঘাত ছড়িয়ে পড়ে।

১৪ অক্টোবর পর্যন্ত চলা এই সংঘর্ষে অন্তত ২০০ আফগান সেনা ও ২৩ পাকিস্তানি সেনা নিহত হন। মানবিক পরিস্থিতির অবনতি ঘটায় ১৫ অক্টোবর উভয় দেশই ৪৮ ঘণ্টার জন্য যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে। তবে যুদ্ধবিরতির মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও সীমান্তে উত্তেজনা অব্যাহত ছিল।

পরবর্তীতে ১৮ অক্টোবর দোহায় দুই দেশের প্রতিনিধিদের মধ্যে শান্তি আলোচনা শুরু হয়। আলোচনার প্রাথমিক পর্ব শেষে ২৫ অক্টোবর থেকে বৈঠকের স্থানান্তর হয় তুরস্কের ইস্তাম্বুলে, যেখানে মধ্যস্থতার ভূমিকা নেয় কাতার ও তুরস্ক।

২৮ অক্টোবর আলোচনায় অচলাবস্থা দেখা দিলেও মধ্যস্থতাকারীদের কূটনৈতিক তৎপরতায় তা পুনরুজ্জীবিত হয়। এরপর ২৯ অক্টোবর থেকে নতুন করে বৈঠক শুরু হয়, যার ফলশ্রুতিতে ৩০ অক্টোবর দুই দেশ আনুষ্ঠানিকভাবে যুদ্ধবিরতি অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্তে পৌঁছায়।

তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাদের বিবৃতিতে এই অগ্রগতিকে “দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি পুনঃপ্রতিষ্ঠার গুরুত্বপূর্ণ ধাপ” বলে অভিহিত করেছে। তারা আরও জানিয়েছে, “দীর্ঘদিনের পারস্পরিক অবিশ্বাস ও সীমান্তসংঘাতের পর পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের পক্ষ থেকে যুদ্ধবিরতির প্রতিশ্রুতি দক্ষিণ এশিয়ার স্থিতিশীলতার জন্য ইতিবাচক বার্তা বয়ে আনবে।”


দীর্ঘ বৈঠকের পর যুদ্ধবিরতি চালিয়ে যেতে সম্মত পাকিস্তান ও আফগানিস্তান

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ৩১ ০৯:২৯:৪৮
দীর্ঘ বৈঠকের পর যুদ্ধবিরতি চালিয়ে যেতে সম্মত পাকিস্তান ও আফগানিস্তান
ছবিঃ সংগৃহীত

দক্ষিণ এশিয়ার দুই প্রতিবেশী রাষ্ট্র পাকিস্তান ও আফগানিস্তান চলমান যুদ্ধবিরতির ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে সম্মত হয়েছে। তুরস্কের ইস্তাম্বুলে পাঁচ দিন ধরে চলা বৈঠকের পর অবশেষে দুই দেশের সরকারি প্রতিনিধিরা এই বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেছেন।

বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানিয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যুদ্ধবিরতি সংক্রান্ত বিভিন্ন শর্ত নিয়ে আলোচনা করতে আগামী ৬ নভেম্বর ইস্তাম্বুলে দুই দেশের প্রতিনিধিরা পুনরায় বৈঠকে বসবেন। সেই বৈঠকের আগ পর্যন্ত যাতে সীমান্তে কোনো সংঘাত সৃষ্টি না হয়—সে ব্যাপারে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের সরকার সজাগ থাকবে বলেও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

আফগানিস্তানের সঙ্গে পাকিস্তানের ২ হাজার ৬০০ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে, যা 'ডুরান্ড লাইন' নামে পরিচিত। ২০২১ সালে আফগানিস্তানে তালেবান সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই দুই দেশের সম্পর্কের দ্রুত অবনতি ঘটে এবং বর্তমানে তা তলানিতে ঠেকেছে।

এই অবনতির প্রধান কারণ হলো পাকিস্তানের তালেবানপন্থি রাজনৈতিক গোষ্ঠী তেহরিক-ই তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি)। এই নিষিদ্ধ গোষ্ঠীটি পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ খাইবার পাখতুনখোয়াকে তাদের ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করে, যার সঙ্গে আফগানিস্তানের সীমান্ত রয়েছে। আফগান তালেবান সরকার টিটিপিকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছে বলে পাকিস্তান বারবার অভিযোগ করে আসছে। তবে আফগানিস্তান বরাবরই এই অভিযোগ অস্বীকার করে।

গত ৯ অক্টোবর আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে পাকিস্তান বিমান হামলা চালায়, যাতে টিটিপির শীর্ষ নেতা নূর ওয়ালি মেহসুদ ও দ্বিতীয় শীর্ষ নেতা ক্বারি সাইফুল্লাহ মেহসুদসহ বেশ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতা নিহত হন। এই হামলাকে আফগানিস্তানের সার্বভৌমত্বে আঘাত হিসেবে অভিযোগ করে আফগান সেনাবাহিনী দুই দিন পর ১১ অক্টোবর সীমান্তে পাকিস্তানের সেনাচৌকি লক্ষ্য করে হামলা চালায়, যার পালটা জবাব দেয় পাকিস্তান সেনাবাহিনীও।

১৪ অক্টোবর পর্যন্ত চলা এই সংঘাতের পর ১৫ অক্টোবর দুই দেশ ৪৮ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে। এই সংঘাত চলাকালীন ২ শতাধিক আফগান সেনা এবং ২৩ জন পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়েছিলেন।

১৮ অক্টোবর থেকে দোহায় শুরু হওয়া দুই দেশের সরকারি প্রতিনিধিদের বৈঠক পরে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে স্থানান্তর করা হয়। ২৫ অক্টোবর থেকে সেখানে দুই দেশের প্রতিনিধিরা ফের বৈঠক শুরু করেন। এই আলোচনায় কাতার ও তুরস্ক গুরুত্বপূর্ণ মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করে। মাঝে ২৮ অক্টোবর বৈঠক ভেস্তে যাওয়ার উপক্রম হলেও, মধ্যস্থতাকারীদের তৎপরতায় তা এড়ানো সম্ভব হয় এবং ৩০ অক্টোবর দুই দেশ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়।

সূত্র: জিও নিউজ


সামরিক প্রস্তুতি লেবাননে ইসরায়েলি আগ্রাসন মোকাবিলায় প্রেসিডেন্টের কঠোর নির্দেশ

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ৩০ ২১:৫৮:০৬
সামরিক প্রস্তুতি লেবাননে ইসরায়েলি আগ্রাসন মোকাবিলায় প্রেসিডেন্টের কঠোর নির্দেশ
ছবিঃ সংগৃহীত

যুদ্ধবিরতি কার্যকর থাকা সত্ত্বেও লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে ইসরায়েলি অনুপ্রবেশ ও হামলা অব্যাহত থাকায় দেশটির আরব-সমর্থিত প্রেসিডেন্ট জোসেফ আউন সেনাবাহিনীকে যেকোনো ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করার নির্দেশ দিয়েছেন। ২০২৪ সালের শেষের দিকে যুদ্ধবিরতি সই হওয়ার পর ইসরায়েলের বিরুদ্ধে লেবাননের পক্ষ থেকে এটিই প্রথম সরাসরি সামরিক পদক্ষেপ।

বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) স্থানীয় গণমাধ্যম এই আদেশের খবর নিশ্চিত করে। এর একদিন আগেই গত রাতে দক্ষিণ লেবাননের ব্লিদা শহরে একটি পৌরসভা ভবনে ইসরায়েলি বাহিনী হামলা চালিয়ে একজন সরকারি কর্মকর্তাকে হত্যা করে।

লেবাননের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা (এনএনএ) জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট জোসেফ আউন ইসরায়েলি হামলার কঠোর নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি এটিকে 'ইসরায়েলি আগ্রাসনের ধারাবাহিক প্যাটার্নের অংশ' বলে অভিহিত করেছেন।

অন্যদিকে, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী দাবি করেছে যে, ব্লিদার পৌরসভা ভবনটি বেসামরিক অবকাঠামো হলেও তা সম্প্রতি হিজবুল্লাহর কার্যকলাপের জন্য ব্যবহৃত হচ্ছিল।

হিজবুল্লাহ ইসরায়েলি আক্রমণের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এবং প্রেসিডেন্ট আউনের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে। একইসঙ্গে তারা লেবাননের সেনাবাহিনীর প্রতিরক্ষামূলক সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের নভেম্বরে হিজবুল্লাহ এবং ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি সই হয়েছিল। চুক্তি অনুযায়ী, আগামী জানুয়ারিতে দক্ষিণ লেবানন থেকে ইসরায়েলি সেনাদের পূর্ণাঙ্গ প্রত্যাহারের কথা ছিল। কিন্তু ইসরায়েল কেবল আংশিকভাবে প্রত্যাহার করে নেয় এবং পাঁচটি সীমান্ত চৌকিতে তাদের সামরিক উপস্থিতি বজায় রাখে।

গত আগস্ট মাসে লেবাননের আরব-সমর্থিত সরকার একটি পরিকল্পনা অনুমোদন করেছিল, যেখানে দেশের সমস্ত অস্ত্র রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণে আনার কথা বলা হয়েছিল। তবে হিজবুল্লাহ সেই পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যান করে জোর দিয়ে বলেছিল, দখলকৃত পাঁচটি সীমান্ত ফাঁড়ি থেকে ইসরায়েলি সেনারা প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত তারা নিজেদের কাছে অস্ত্র রাখবে।

২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজায় ইসরায়েলি হামলা শুরু হওয়ার পর হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধেও আক্রমণ শুরু হয়। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে লেবাননে ইসরায়েলি পূর্ণাঙ্গ আক্রমণের পর থেকে এই অঞ্চলে ৪ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত এবং প্রায় ১৭ হাজার জন আহত হয়েছে।


উন্মোচিত হল ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির সত্যতা

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ৩০ ১৪:২৪:২১
উন্মোচিত হল ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির সত্যতা
ছবি: সংগৃহীত

আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ)-এর মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রোসি বুধবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে সাংবাদিকদের বলেন, ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করছে এমন কোনো প্রমাণ নেই। তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, তেহরান এখনও পরমাণু অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তি (NPT)-এর প্রতি অটল রয়েছে এবং তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যেই সীমাবদ্ধ।

গ্রোসি স্বীকার করেছেন যে, জাতিসংঘের পরমাণু পরিদর্শকদের সঙ্গে তেহরানের সহযোগিতা সাম্প্রতিক সময়ে কিছুটা কমে গেছে। তবে তিনি নিশ্চিত করেছেন, ইরান NPT-এর প্রতিশ্রুতি পূর্ণাঙ্গভাবে মানছে। উল্লেখ্য, ফ্রান্স, জার্মানি ও যুক্তরাজ্য সম্প্রতি ইরানের বিরুদ্ধে জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের প্রক্রিয়া বা ‘স্ন্যাপব্যাক’ ব্যবস্থাকে সক্রিয় করার উদ্যোগ নিয়েছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে তেহরান আইএইএর সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্মূল্যায়নের ঘোষণা দেয়।

গ্রোসি বলেন, “আমরা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছি এবং ধীরে ধীরে ইরানে পরিদর্শন কার্যক্রম পুনরায় শুরু করছি। যদিও সব স্থানে এখনও পৌঁছানো সম্ভব হয়নি, যেখানে আমাদের থাকা উচিত।” তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, যুক্তরাষ্ট্রের হামলার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত কিছু স্থাপনার পরিদর্শন এখনো সম্পূর্ণভাবে করা হয়নি এবং সেগুলো নিয়ে ইরানের সঙ্গে চলমান আলোচনার পর্যায়ে আছি।

আইএইএর প্রধান উল্লেখ করেছেন, ইরান পরিদর্শনের ক্ষেত্রে বাস্তব চ্যালেঞ্জ রয়েছে। আঞ্চলিক নিরাপত্তা পরিস্থিতির কারণে কিছু সময় পরিদর্শকরা ইরান থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছিল। তারপর থেকেই তিনি পরিদর্শন কাঠামো পুনর্নির্মাণ এবং কার্যক্রম পুনরায় শুরু করার জন্য সক্রিয়ভাবে কাজ করছেন।

ইরান বারবার জোর দিয়ে বলেছে যে, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি সম্পূর্ণরূপে বিদ্যুৎ উৎপাদনের মতো শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে পরিচালিত হয়। আইএইএ প্রধান গ্রোসির এই মন্তব্যগুলির মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মহলে ইরানের পারমাণবিক কার্যক্রমকে অস্ত্র উৎপাদনকেন্দ্রিক নয়, বরং নিয়ন্ত্রিত এবং শান্তিপূর্ণ কার্যক্রম হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে।

-রাফসান

পাঠকের মতামত:

রাজনীতি, নির্বাসন ও নৈতিকতা: শেখ হাসিনার সাক্ষাৎকার দক্ষিণ এশিয়ার বাস্তবতাকে কোথায় নিচ্ছে

রাজনীতি, নির্বাসন ও নৈতিকতা: শেখ হাসিনার সাক্ষাৎকার দক্ষিণ এশিয়ার বাস্তবতাকে কোথায় নিচ্ছে

বাংলাদেশের রাজনীতিতে আবারও এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়েছে শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে। নির্বাসনে থাকা সাবেক প্রধানমন্ত্রী দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট পত্রিকাকে... বিস্তারিত