রয়টার্সের দাবি: চীনা জেটে ভারতের ২ যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করল পাকিস্তান

সত্য নিউজ: পাকিস্তান গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতে ভারতের অন্তত দুটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে এবং এতে ব্যবহৃত হয়েছে চীনের তৈরি জে-১০ যুদ্ধবিমান—এমনই এক বিস্ফোরক তথ্য উঠে এসেছে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক এক্সক্লুসিভ প্রতিবেদনে। যুক্তরাষ্ট্রের দুই গোয়েন্দা কর্মকর্তার বরাতে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই ঘটনা চীনা প্রযুক্তির সামরিক কার্যকারিতা এবং দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা পরিবেশে তার প্রভাবের স্পষ্ট ইঙ্গিত দেয়।

'অপারেশন সিঁদুর'-এর জবাবে পাল্টা আঘাত

প্রসঙ্গত, ভারতের সামরিক বাহিনী ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামের একটি অভিযানে মঙ্গলবার রাতে পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের নয়টি স্থানে বিমান হামলা চালায়। এর প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তান তাৎক্ষণিক পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে তোলে। পাকিস্তান দাবি করেছে, তারা পাঁচটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ধ্বংস করেছে। যদিও ভারত এখনো নিজেদের কোনো বিমান হারানোর কথা আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করেনি।

রাফাল যুদ্ধবিমান ভূপাতিত: যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তার দাবি

রয়টার্সকে দেওয়া এক মন্তব্যে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মার্কিন কর্মকর্তা জানান, “পাকিস্তান তাদের চীনা জে-১০ যুদ্ধবিমান ব্যবহার করে আকাশ থেকে আকাশে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে, যা অন্তত দুটি ভারতীয় যুদ্ধবিমানকে ভূপাতিত করে।”
আরেক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, “এই ভূপাতিত বিমানগুলোর মধ্যে অন্তত একটি ছিল ফ্রান্সের দাসো অ্যাভিয়েশনের তৈরি রাফাল।”

এফ-১৬ ব্যবহার হয়নি

রয়টার্সের প্রতিবেদনে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, ভারতীয় যুদ্ধবিমান ধ্বংস করতে পাকিস্তান এফ-১৬ ব্যবহার করেনি। উল্লেখ্য, এফ-১৬ যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি এবং তা ব্যবহারে নির্দিষ্ট সীমাবদ্ধতা রয়েছে, বিশেষ করে ভারতের বিরুদ্ধে।

ভারতের প্রতিক্রিয়া ও কূটনৈতিক নীরবতা

রয়টার্স ভারতের বিমানবাহিনীর এক মুখপাত্রের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও, তিনি মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান।
এর আগে, বুধবার রয়টার্স ভারত সরকারের এক সূত্রের বরাতে জানায়, ভারতের তিনটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত হয়েছে।

বিশ্লেষণ: দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা রাজনীতিতে নতুন মোড়

এই ঘটনায় দক্ষিণ এশিয়ায় চীন-পাকিস্তান কৌশলগত সম্পর্কের বাস্তবতা আরও পরিষ্কার হয়েছে। চীনা জে-১০ যুদ্ধবিমান ব্যবহার করে পাকিস্তান কেবল সামরিক সক্ষমতা প্রদর্শন করল না, একই সঙ্গে ভারতীয় প্রতিরক্ষা নীতিকে একটি চ্যালেঞ্জও ছুড়ে দিল।

রাফালের মতো উচ্চপ্রযুক্তির যুদ্ধবিমান ভূপাতিত হওয়ার দাবি এবং চীনা জেটের সরাসরি ব্যবহার দক্ষিণ এশিয়ায় সামরিক ভারসাম্য নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে। এটি কেবল ভারত-পাকিস্তান নয়, যুক্তরাষ্ট্র, চীন এবং আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত প্রভাব ফেলতে পারে।

এখন প্রশ্ন হলো—এই উত্তেজনা শান্তিপূর্ণ পথে সমাধান হবে, নাকি আরও জটিলতা তৈরি করবে? আন্তর্জাতিক মহলের দৃষ্টি এখন দিল্লি, ইসলামাবাদ এবং বেইজিংয়ের পরবর্তী কূটনৈতিক পদক্ষেপের দিকে।