ইশরাকের মেয়র শপথে গড়িমসি, নেপথ্যে কি?

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র হিসেবে আদালতের রায়ে নির্বাচিত হলেও শপথ গ্রহণে বিলম্ব নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিএনপির নেতা ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন। তিনি দাবি করেছেন, সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে সময়ক্ষেপণ করে তাকে দায়িত্ব গ্রহণে বাধা দিচ্ছে, যাতে নগর ভবনকেন্দ্রিক দুর্নীতি, ঠিকাদারি নিয়ন্ত্রণ এবং রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের সুযোগ অব্যাহত থাকে।
শনিবার (১৭ মে) সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “নগর ভবনের লুটপাট বন্ধ হবে বলেই আমাকে শপথ নিতে দেওয়া হচ্ছে না। এই বিলম্বের পেছনে প্রশাসনের একটি অংশ জড়িত, যারা দলীয় সুবিধাভোগী গোষ্ঠীর হয়ে কাজ করছে।”
আদালতের রায় ও নির্বাচন কমিশনের গেজেট
গত ২৭ মার্চ ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ ও নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল এক রায়ে ইশরাক হোসেনকে বৈধ মেয়র ঘোষণা করে। এরপর ২৭ এপ্রিল নির্বাচন কমিশন গেজেট প্রকাশ করে তাঁর মেয়র পদ নিশ্চিত করে। নিয়ম অনুযায়ী, গেজেট প্রকাশের পর সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে শপথ পড়ানোর দায়িত্ব থাকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের ওপর। কিন্তু তিন সপ্তাহ পার হলেও মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।
শপথে দেরি কেন?
স্থানীয় সরকার বিভাগ জানিয়েছে, তারা আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত চেয়েছে—শপথ নেওয়ার ক্ষেত্রে কোনো আইনি জটিলতা রয়েছে কি না তা যাচাই করতে। তবে ইশরাক এই ব্যাখ্যাকে "জালিয়াতির মোড়কে কালক্ষেপণ" বলে অভিহিত করেছেন। তাঁর অভিযোগ, “নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত ও গেজেট থাকা সত্ত্বেও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ইচ্ছাকৃতভাবে সময়ক্ষেপণ করছে। এতে বোঝা যায়, সরকারের অভ্যন্তরে এমন একটি বলয় সক্রিয় রয়েছে, যারা নির্বাচনী রায় বাস্তবায়ন না করে নিজস্ব লোক বসাতে চায়।”
তিনি বলেন, “সরকার নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতার ওপর হস্তক্ষেপ করছে। এই প্রবণতা অব্যাহত থাকলে তা জাতীয় নির্বাচনেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।”
নগর ভবন ঘিরে আন্দোলন
ইশরাক জানান, শপথে বিলম্বের প্রতিবাদে তাঁর সমর্থকরা নগর ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেছে। যদিও নগর ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া নিয়ে তিনি সরাসরি জড়িত নন বলেও দাবি করেন। তাঁর ভাষায়, “আমি আন্দোলনের ডাক দেইনি, তালা কে দিয়েছে জানি না। তবে জনগণ তাদের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে নামতেই পারে। তাদের কণ্ঠ রোধ করার কোনো ইচ্ছা আমার নেই। তবে জনদুর্ভোগ হয় এমন কিছু না করতে আমি তাদের অনুরোধ করেছি।”
নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা
সংবাদ সম্মেলনে ইশরাক নির্বাচন কমিশনের ভূমিকাও প্রশ্নবিদ্ধ করেন। তিনি বলেন, “একদিকে কমিশন গেজেট প্রকাশ করে আমার বিজয় স্বীকার করেছে, অন্যদিকে স্থানীয় সরকার বিভাগকে আপিল করার সুযোগ বুঝিয়ে চিঠি দিয়েছে। এতে নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।”
জনগণের কাছে প্রশ্ন
সংবাদ সম্মেলনের শেষদিকে ইশরাক বলেন, “সরকার যদি সত্যিই গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে, তাহলে অবিলম্বে আমার শপথের ব্যবস্থা করবে। অন্যথায় প্রমাণিত হবে, একটি দলের সুবিধার্থে পুরো প্রশাসন কাজ করছে এবং জনগণের ভোটের রায়কে অগ্রাহ্য করছে।”
তিনি প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান, আদালতের রায় ও গেজেট অনুযায়ী দ্রুত শপথের আয়োজন করতে, যাতে নির্বাচিত প্রতিনিধি হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালন করতে পারেন এবং জনগণের প্রতি তাঁর অঙ্গীকার বাস্তবায়ন করতে পারেন।
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে চার্জ দাখিল, বিটিভিতে সরাসরি সম্প্রচার
- বাহরাইনেরমানামায় বিএনপির সাংগঠনিক পুনর্গঠন, নেতৃত্বে আক্তার হোসেন
- বাহরাইনে জাতীয়তাবাদী শক্তির পুনর্জাগরণ: গ্যালালী শাখায় নতুন নেতৃত্ব
- চীন না ভারত? উন্নয়ন না আনুগত্য? বুলেট ট্রেন বলছে স্পষ্ট জবাব
- অবশেষে বিসিবি সভাপতি ফারুককে নিয়ে মুখ খুললেন আসিফ
- বিশ্বশক্তির নজর এখন বাংলাদেশে: খনিজ ভাণ্ডারের নতুন মানচিত্র
- তারেক-ইউনুস উত্তপ্ত ফোনালাপ: যা জানা গেল
- হালদা নদীতে ডিম ছাড়ল রুই জাতীয় মা মাছ, সংগ্রহ প্রায় ১৪ হাজার কেজি নিষিক্ত ডিম
- নতুন বিসিবি সভাপতিবুলবুলের কাছে আশরাফুলের চাওয়া
- শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান: রাষ্ট্র নির্মাণের এক উজ্জ্বল প্রতিমূর্তি
- ঈদের দিন বৃষ্টি হবে কি?
- চট্টগ্রাম বন্দরে নতুন ভোর: দক্ষিণ এশিয়ার তেলের ‘রাজসিংহাসন’ দখলের পথে বাংলাদেশ?
- ভারতের গর্ব এস-৪০০ ধ্বংস: বাস্তবতা নাকি প্রচারযুদ্ধ?
- ধ্বংস থেকে নেতৃত্ব: ৫ আগস্ট থেকে যেভাবে শুরু হলো অর্থনীতির পুনর্জাগরণ
- ইরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞায় হঠাৎ বিরতি: যুক্তরাষ্ট্র কি নতুন কৌশল নিচ্ছে?