আফগান সীমান্তে পাকিস্তানি সেনাদের অভিযান: নিহত ৩১ তালেবান

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ১৬ ১৪:৫৬:৩৬
আফগান সীমান্তে পাকিস্তানি সেনাদের অভিযান: নিহত ৩১ তালেবান
ছবিঃ এ এফ পি

পাকিস্তানের সেনাবাহিনী জানিয়েছে, আফগান সীমান্তবর্তী এলাকায় দুইটি পৃথক অভিযানে তারা ৩১ জন স্থানীয় তালেবান সদস্যকে হত্যা করেছে। ওই অঞ্চলে তালেবানদের উপস্থিতি সম্প্রতি উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।

পাকিস্তানি সেনাবাহিনী সোমবার রাতের দিকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে জানায়, শেষ সপ্তাহান্তে ৩১ জন “খোয়ারিজ” নিহত হয়েছেন। এটি সাম্প্রতিক সময়ে কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ব্যবহৃত একটি পদ, যা পাকিস্তানি তালেবান (TTP) সদস্যদের বর্ণনা করতে ব্যবহৃত হচ্ছে।

এর আগের শনিবার, প্রতিবেশী জেলায় একটি ওঁঠানো হামলায় ১২ জন পাকিস্তানি সেনা নিহত হন। সেই হামলার দায় স্বীকার করেছে TTP।

সেনাবাহিনী তার বিবৃতিতে অভিযোগ করেছে যে ভারত—যার সঙ্গে পাকিস্তানের মে মাসে চার দিনের সীমান্ত সংঘর্ষ হয়েছিল—এই সশস্ত্র গোষ্ঠীকে সমর্থন দিচ্ছে। পারমাণবিক শক্তিধর এই দুই প্রতিবেশী দেশ দীর্ঘদিন ধরে একে অপরের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ব্যবহার করে অস্থিতিশীল করার অভিযোগ করে আসছে। “এলাকায় ভারত-সমর্থিত অন্যান্য সশস্ত্রদের নির্মূল করার জন্য স্যানিটাইজেশন অভিযান চলছে,” বিবৃতিতে বলা হয়েছে।

২০২১ সালে কাবুলে আফগান তালেবান ক্ষমতায় ফেরার পর আফগান সীমান্তবর্তী অঞ্চলে সন্ত্রাসবাদ বেড়ে গেছে। নিরাপত্তা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত দুই মাসে TTP সদস্যদের উপস্থিতি আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। যদিও আফগান তালেবান ও TTP আলাদা সংগঠন, তাদের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে।

ইসলামাবাদ আফগান সরকারের উপর অভিযোগ করেছে, তারা তাদের ভূখণ্ড ব্যবহার করে পাকিস্তানে হামলা চালানো সন্ত্রাসীদের বের করতে ব্যর্থ হয়েছে। কাবুল এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

এই বছরের মধ্যে পাকিস্তানে সন্ত্রাসী হামলায় ৪৬০-এর বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য। নিহতদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় খাইবার পাখতুনখোয়া এবং দক্ষিণাঞ্চলীয় বালুচিস্তান প্রদেশে। গত বছর ছিল পাকিস্তানের প্রায় এক দশক ধরে সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী বছর, যেখানে ১,৬০০-এর বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন, তার মধ্যে প্রায় অর্ধেকই সেনা ও পুলিশ কর্মকর্তা ছিলেন, ইসলামাবাদ ভিত্তিক ‘সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজ’-এর তথ্য অনুযায়ী।

-সুত্রঃ এ এফ পি


গাজায় ইসরায়েলি তীব্র হামলা, যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ণ সমর্থনের ঘোষণা

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ১৬ ১১:২৯:৫৮
গাজায় ইসরায়েলি তীব্র হামলা, যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ণ সমর্থনের ঘোষণা
ছবিঃ সংগৃহীত

গাজা সিটি আবারও ভয়াবহ বিমান হামলার মুখে। মঙ্গলবার দিনভর অব্যাহত ইসরায়েলি বোমাবর্ষণে বহু ঘরবাড়ি মাটির সঙ্গে মিশে গেছে এবং অসংখ্য মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়েছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। ২৫ বছর বয়সী বাসিন্দা আহমেদ গাজাল বলেন, “আমরা ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়া মানুষের আর্তনাদ শুনতে পাচ্ছি।”

এমন পরিস্থিতির মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর ইসরায়েল সফর ঘিরে রাজনৈতিক উত্তাপ আরও বেড়েছে। সোমবার জেরুজালেমে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে রুবিও ঘোষণা দেন, গাজায় নতুন সামরিক অভিযানে ইসরায়েল যুক্তরাষ্ট্রের ‘অটল সমর্থন’ পাবে। তিনি বলেন, “হামাস ধ্বংস না হওয়া পর্যন্ত গাজার মানুষের জন্য কোনো ভালো ভবিষ্যৎ শুরু হতে পারে না।”

এই সফরের আগে মাত্র এক সপ্তাহ আগে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইসরায়েলকে সতর্ক করে বলেছিলেন, মার্কিন মিত্র কাতারে হামাস নেতাদের ওপর বিমান হামলা বন্ধ রাখতে। কিন্তু রুবিও কাতারের মধ্যস্থতায় চলমান যুদ্ধবিরতি আলোচনাকে গুরুত্ব না দিয়ে হামাসকে আখ্যা দেন “বর্বর প্রাণী” হিসেবে। আজ মঙ্গলবার তিনি কাতার সফরে যাচ্ছেন, যাতে দোহাকে আশ্বস্ত করা যায়—যে দেশটি মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম সামরিক ঘাঁটির স্বাগতিক।

মানবিক বিপর্যয়, আন্তর্জাতিক চাপ

গাজা সিটির পাশাপাশি দক্ষিণাঞ্চলীয় খান ইউনিসেও ইসরায়েলি হামলা অব্যাহত রয়েছে। গাজা সিভিল ডিফেন্স সংস্থার মুখপাত্র মাহমুদ বাসসাল জানিয়েছেন, গত সোমবারের হামলায় অন্তত ৪৯ জন নিহত হয়েছেন এবং মঙ্গলবারও নির্বিচারে বোমাবর্ষণ চলছে। জাতিসংঘ গত মাসেই সতর্ক করেছিল—গাজায় এক মিলিয়ন মানুষ দুর্ভিক্ষের ঝুঁকিতে রয়েছে, যদিও ইসরায়েল এই দাবি অস্বীকার করে।

এদিকে, ফ্রান্স আগামী সপ্তাহে জাতিসংঘে একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠকের নেতৃত্ব দেবে, যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি ইউরোপীয় মিত্র দেশ ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার পরিকল্পনা করছে। রুবিও এই স্বীকৃতিকে “প্রতীকী পদক্ষেপ” হিসেবে দেখছেন। অন্যদিকে, নেতানিয়াহু হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, এমন সিদ্ধান্তের পর ইসরায়েল একতরফা কিছু পদক্ষেপ নিতে পারে। তার মন্ত্রিসভার চরম ডানপন্থী সদস্যরা এরই মধ্যে পশ্চিম তীর সংযুক্ত করার দাবি তুলেছেন, যা সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ কিছু আরব দেশের প্রতিবাদ সৃষ্টি করেছে।

মানবাধিকার বনাম কৌশলগত সমীকরণ

রুবিওর সফর শুধু কূটনৈতিক নয়, ছিল উচ্চমাত্রার প্রতীকীও। তিনি পূর্ব জেরুজালেমে বিতর্কিত সিলওয়ান এলাকায় ধর্মীয় পর্যটনের জন্য নির্মিত একটি সুড়ঙ্গ উদ্বোধনে অংশ নেন। স্থানীয় ফিলিস্তিনি মুখপাত্র ফাখরি আবু দিয়াব বলেন, “আমাদের ঘরবাড়ি ধ্বংস হচ্ছে, অথচ মার্কিন নেতৃত্ব চরমপন্থীদের পাশে দাঁড়িয়ে ইতিহাস মুছে দিতে চাইছে।”

হামাসের ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের হামলায় ইসরায়েলে ১,২১৯ জন নিহত হন, যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক। পাল্টা ইসরায়েলি অভিযানে গাজায় ইতিমধ্যে ৬৪ হাজার ৯০০-এর বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন, যার বড় অংশই নারী ও শিশু। জাতিসংঘ এই পরিসংখ্যানকে বিশ্বাসযোগ্য বলছে।

রুবিও সফরের সময় হামাসের হাতে বন্দি থাকা ২৫১ জন ইসরায়েলির পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এর মধ্যে এখনো ৪৭ জন গাজায় বন্দি, যাদের ২৫ জন ইতিমধ্যে নিহত হয়েছেন বলে ইসরায়েলি সেনারা জানিয়েছে।

রুবিওর এই সফর মধ্যপ্রাচ্যের ভূ-রাজনৈতিক সমীকরণে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান আরও স্পষ্ট করেছে। একদিকে ইসরায়েলের প্রতি প্রকাশ্য সমর্থন, অন্যদিকে কাতারকে আশ্বস্ত করা—সব মিলিয়ে ওয়াশিংটন দেখাতে চাইছে, তারা একযোগে মিত্রদের আস্থা ও ইসরায়েলের নিরাপত্তা দুটোই ধরে রাখতে চায়।

-এ এফ এপ


নেতানিয়াহুর বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ১৬ ১০:১৪:১৩
নেতানিয়াহুর বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ
ছবি: সংগৃহীত

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ করেছেন ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের হাতে আটক ইসরায়েলি জিম্মিদের পরিবার ও তাদের সমর্থকেরা। তারা অভিযোগ করেছেন, গাজায় চলমান স্থল অভিযানের কারণে তাদের প্রিয়জনদের জীবনের ঝুঁকি বহুগুণে বেড়ে যাচ্ছে। এ খবর প্রকাশ করেছে আল জাজিরা।

দ্য টাইমস অব ইসরায়েল জানিয়েছে, বর্তমানে নেতানিয়াহুর বাসভবনের বাইরে অবস্থান করছেন বন্দি মাতান জানগাউকার, মাতান আংরিয়েস্ট এবং রম ব্রাসলাভস্কির পরিবার। তাদের সংগঠন হোস্টেজেস অ্যান্ড মিসিং ফ্যামিলিস ফোরাম এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, গাজা সিটিতে ইসরায়েলের সাম্প্রতিক বড় ধরনের সামরিক অভিযানের খবর তারা গভীর দুশ্চিন্তার সঙ্গে গ্রহণ করেছেন।

পরিবারগুলোর দাবি, গাজা সিটিতে এখনো জীবিত বহু বন্দি অবস্থান করছেন। অথচ প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির জন্য ইচ্ছাকৃতভাবে তাদের জীবন উৎসর্গ করতে চাইছেন। তারা অভিযোগ করেন, সেনাপ্রধান ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর বাস্তব মূল্যায়ন নেতানিয়াহু সম্পূর্ণভাবে উপেক্ষা করছেন।

এর আগে সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) জেরুজালেমে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও’র সঙ্গে বৈঠক শেষে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে নেতানিয়াহু বলেন, “হামাস যেখানেই থাকবে, ইসরায়েল সেখানেই আঘাত হানবে।” তার ভাষায়, এ লড়াইয়ে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।

রুবিওর সঙ্গে বৈঠকটি দুই ঘণ্টার বেশি স্থায়ী হয়েছিল। এতে তিনি কাতারে সাম্প্রতিক ইসরায়েলি হামলার কারণে গাজায় যুদ্ধবিরতি প্রচেষ্টার ওপর যে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে, তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। রুবিও স্পষ্ট করে জানান, ইসরায়েলের এমন পদক্ষেপে যুক্তরাষ্ট্র গভীরভাবে চিন্তিত।

তবে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে নেতানিয়াহু ভিন্ন সুরে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল একসঙ্গে কাজ করবে এবং একে অপরকে সন্ত্রাস থেকে রক্ষা করবে। তিনি আরও জানান, রুবিওর সফর একটি শক্ত বার্তা বহন করছে—সন্ত্রাসের মুখে যুক্তরাষ্ট্র দৃঢ়ভাবে ইসরায়েলের পাশে রয়েছে।

সমালোচকদের উদ্দেশে নেতানিয়াহু কড়া প্রতিক্রিয়া জানান। তিনি অভিযোগ করেন, ইসরায়েলের সামরিক পদক্ষেপের বিরোধিতা করছে যারা, তাদের অনেকের মধ্যেই দ্বিচারিতা রয়েছে। তার বক্তব্য অনুযায়ী, নিন্দা আসুক বা সমালোচনা উঠুক, হামাস যেখানে অবস্থান করবে, সেখানেই ইসরায়েলের আক্রমণ চলবে।

-রাফসান


কাতারকে সাবধান হতে বললেন ট্রাম্প

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ১৫ ১২:০৬:৪১
কাতারকে সাবধান হতে বললেন ট্রাম্প
ছবি: সংগৃহীত

ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলার প্রেক্ষাপটে কাতারকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। একইসঙ্গে তিনি ইসরায়েলকেও ভবিষ্যতে আক্রমণ পরিচালনায় আরও সাবধান হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড এ তথ্য প্রকাশ করেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কাতারের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ককে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করেছেন। দোহায় হামলার পর কাতারকে “মহান মিত্র” আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, ভৌগোলিক অবস্থানগত কারণে কাতার অত্যন্ত জটিল পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। উপসাগরীয় এ দেশটি আঞ্চলিক রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে থাকায় তাদের প্রতিটি পদক্ষেপে রাজনৈতিকভাবে সতর্ক থাকতে হয়। ট্রাম্পের ভাষায়, “কাতার আমাদের বড় মিত্র। তারা ভৌগোলিকভাবে সব কিছুর কেন্দ্রবিন্দুতে থাকায় জটিল পরিস্থিতি সামলাচ্ছে। এজন্য তাদের শব্দচয়নেও কিছুটা সতর্ক থাকতে হয়। তবে নিঃসন্দেহে তারা যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ও মহান মিত্র।”

রোববার নিউ জার্সির মরিসটাউন থেকে হোয়াইট হাউসে ফেরার পথে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকেও দোহায় হামলার প্রসঙ্গে সাবধান থাকার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, “আমরা যখন আক্রমণ চালাই, তখন খুব সতর্ক থাকা জরুরি। তাই ইসরায়েলসহ সবাইকে এ বিষয়ে সাবধান হতে হবে।”

উল্লেখ্য, এর আগে গত শুক্রবার নিউইয়র্কে কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুর রহমান আল-থানির সঙ্গে এক নৈশভোজ বৈঠক করেছিলেন ট্রাম্প। বৈঠক সম্পর্কে কাতারি দূতাবাসের উপপ্রধান জানিয়েছেন, এটি ছিল অত্যন্ত সফল ও ফলপ্রসূ।

-রফিক


“গো ব্যাক মোদি” স্লোগানে মুখরিত মণিপুর

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ১৫ ১১:৩৮:২৭
“গো ব্যাক মোদি” স্লোগানে মুখরিত মণিপুর
ছবিঃ সংগৃহীত

ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় অস্থির রাজ্য মণিপুরে প্রায় আড়াই শতাধিক প্রাণহানির দুই বছর পর অবশেষে সফর করলেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তবে তাঁর এই বহুল আলোচিত সফরের মধ্যেই ফের উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে রাজ্যে। শনিবার বিকেলে মোদির সফর শুরুর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সড়কে নেমে আসে বিক্ষুব্ধ জনতা এবং স্লোগানে মুখরিত হয়—“গো ব্যাক মোদি।” শান্তিপূর্ণভাবে শুরু হওয়া এই বিক্ষোভ দমন করতে পুলিশ রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করে। এতে বহু মানুষ আহত হন এবং পরিস্থিতি আরও জটিল আকার ধারণ করে।

মোদি তিন দিনের এক সরকারি সফরে আছেন, যার অন্তর্ভুক্ত আসাম, মণিপুর এবং বিহার। বিশেষ করে বিহার সফরকে রাজনৈতিকভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে ধরা হচ্ছে। ভারতের তৃতীয় সর্বাধিক জনবহুল এই রাজ্যে প্রায় ১৩ কোটি মানুষ বাস করে। হিন্দিভাষী উত্তরাঞ্চলের একমাত্র রাজ্য এটি, যেখানে এখনও ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) এককভাবে ক্ষমতায় আসতে পারেনি। আগামী অক্টোবর বা নভেম্বরে নির্ধারিত রাজ্য নির্বাচনের আগে তাই এই সফরকে কৌশলগত পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। সফরের অংশ হিসেবে মোদি বিহারে প্রায় ৮ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ ঘোষণা করেছেন। এই প্যাকেজে কৃষি প্রকল্প, রেলপথ উন্নয়ন, সড়ক অবকাঠামো এবং বিমানবন্দর সম্প্রসারণ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, যা নির্বাচনের আগে উন্নয়ন বার্তা জোরালো করার একটি প্রচেষ্টা।

মণিপুরে ২০২৩ সালের মে মাসে শুরু হয়েছিল ভয়াবহ সাম্প্রদায়িক সংঘাত। মূলত হিন্দু মেইতেই সম্প্রদায় এবং খ্রিস্টান সংখ্যাগরিষ্ঠ কুকি সম্প্রদায়ের মধ্যে জমি, সরকারি চাকরি এবং সামাজিক-অর্থনৈতিক সুযোগ নিয়ে দীর্ঘদিনের টানাপোড়েন একসময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে রূপ নেয়। এই সহিংসতায় এখনো পর্যন্ত অন্তত ২৫০ জন নিহত হয়েছেন এবং হাজার হাজার মানুষ ঘরবাড়ি হারিয়ে সরকারের তৈরি অস্থায়ী শিবিরে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন।

মোদি শনিবার কুকি অধ্যুষিত চুরাচান্দপুর জেলায় জনসমক্ষে ভাষণ দেন। সেখানে তিনি বলেন, “মণিপুরে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে ভারত সরকার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে। আমি আপনাদের পাশে আছি, ভারত সরকার আপনাদের পাশে আছে।” তিনি উভয় সম্প্রদায়কে শান্তিপূর্ণভাবে সমস্যার সমাধান খুঁজে বের করার আহ্বান জানান। এর পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী মণিপুরের রাজধানী ইম্ফলে, যেখানে মেইতেই সম্প্রদায় ঘনবসতিপূর্ণ, একটি জনসভায় বক্তব্য রাখারও কথা রয়েছে।

মোদি সর্বশেষ মণিপুর সফর করেছিলেন ২০২২ সালে। সে সময় তিনি প্রায় ৯৬০ মিলিয়ন ডলারের উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধন করেছিলেন, যার মধ্যে পাঁচটি নতুন হাইওয়ে এবং একটি আধুনিক পুলিশ সদর দফতর অন্তর্ভুক্ত ছিল। কিন্তু সেই উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর পরই ২০২৩ সালের মে মাসে সহিংসতা তীব্র আকার ধারণ করে, যা রাজ্যের সামাজিক শান্তি ভেঙে দেয়।

রাজনীতির ক্ষেত্রেও মণিপুর অস্থির সময় পার করছে। রাজ্যের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী এন বিরেন সিং, যিনি বিজেপির প্রতিনিধি ছিলেন, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে পদত্যাগ করেন। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে যে তিনি সংঘাতকবলিত সময়ে রক্তপাত ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েছেন। তাঁর পদত্যাগের পর থেকে মণিপুর সরাসরি নয়াদিল্লির কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

মানবাধিকার সংস্থাগুলো অভিযোগ করছে, মেইতেই এবং কুকি জনগোষ্ঠীর মধ্যে জমি ও সরকারি চাকরি নিয়ে বিরোধকে রাজনৈতিক নেতারা নিজেদের স্বার্থে আরও উসকে দিচ্ছেন। এতে বিভাজন গভীরতর হচ্ছে এবং স্থিতিশীলতার সম্ভাবনা আরও ক্ষীণ হয়ে আসছে। মোদির এই সফর তাই শুধু উন্নয়ন ঘোষণা নয়, বরং জটিল সামাজিক সংঘাতের মধ্যে সরকারের ভূমিকা ও সংকট ব্যবস্থাপনার কার্যকারিতা কতটা তা পরীক্ষা করার এক গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত হিসেবেও বিবেচিত হচ্ছে।

-শরিফুল


অবরুদ্ধ গাজায় মৃত্যু-ক্ষুধার মিছিল

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ১৫ ১১:২২:৩০
অবরুদ্ধ গাজায় মৃত্যু-ক্ষুধার মিছিল
ছবি: সংগৃহীত

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর নতুন অভিযানে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় আরও তীব্র আকার ধারণ করেছে। ধারাবাহিক বিমান হামলায় রবিবার ও সোমবারের মধ্যে অন্তত ৫৩ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে গাজার অন্তত ১৬টি ভবন, যার মধ্যে তিনটি বহুতল আবাসিক টাওয়ারও রয়েছে। যুদ্ধ ও অবরোধের কারণে খাদ্যসংকট ও চিকিৎসা ঘাটতি মারাত্মকভাবে বেড়ে গেছে, যার ফলে অপুষ্টি ও ক্ষুধাজনিত মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪২২ জনে। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো সতর্ক করছে যে যদি জরুরি সহায়তা দ্রুত না পৌঁছায়, এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, এই সামরিক অভিযানের মূল লক্ষ্য গাজার উত্তরাঞ্চল দখল এবং সেখানকার সাধারণ মানুষকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করা। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, কেবল রবিবারেই গাজা সিটির অন্তত ৩৫ জন বাসিন্দা নিহত হয়েছেন। রেমাল এলাকায় অবস্থিত আল-কাওসার টাওয়ারে ভয়াবহ বিমান হামলা চালিয়ে সেটিকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। লাগাতার বোমাবর্ষণে হাজারো মানুষ গৃহহীন হয়ে পালাতে বাধ্য হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দা মারওয়ান আল-সাফি বলেন, “আমরা জানি না কোথায় আশ্রয় নেব। প্রতিদিন আমাদের ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে।”

জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক মানবিক সংস্থাগুলো এ পরিস্থিতিকে ভয়াবহ আখ্যা দিয়েছে। জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী সংস্থা (ইউএনআরডব্লিউএ)-এর প্রধান ফিলিপ লাজারিনি জানিয়েছেন, গত চার দিনে সংস্থার অন্তত ১০টি ভবন ইসরায়েলি হামলায় আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে সাতটি স্কুল ও দুটি ক্লিনিক ছিল, যেখানে হাজারো বাস্তুচ্যুত মানুষ আশ্রয় নিয়েছিল। তিনি এক্সে লিখেছেন, “গাজায় এখন আর কোনো নিরাপদ স্থান নেই—কেউ নিরাপদ নয়।” শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফের মুখপাত্র টেস ইঙ্গ্রামও জানিয়েছেন যে গাজার কথিত মানবিক অঞ্চলগুলো বাস্তবে নিরাপদ নয়। তিনি উল্লেখ করেন, প্রতিদিন আশ্রয়কেন্দ্রে মানুষের ভিড় বাড়ছে, এমনকি এক নারী নিরাপদ আশ্রয় না পেয়ে রাস্তায় সন্তান জন্ম দিতে বাধ্য হয়েছেন।

বাস্তুচ্যুত মানুষের জীবনযাপনও হয়ে উঠেছে মানবেতর। উত্তর গাজা থেকে পালিয়ে আসা আহমেদ আওয়াদ জানান, মর্টারের আঘাত থেকে বাঁচতে পালিয়ে এলেও এখনো মৌলিক কোনো চাহিদা মেটানো সম্ভব হয়নি। পানীয় জল, টয়লেট কিংবা আশ্রয়ের ব্যবস্থা নেই; পরিবারগুলো খোলা আকাশের নিচে রাত কাটাচ্ছে। আরেকজন ফিলিস্তিনি, আবেদআল্লাহ আরাম, জানান তাঁর পরিবার তীব্র পানির সংকটে ভুগছে, পর্যাপ্ত খাবার নেই, শিশুরা মারাত্মক অপুষ্টিতে ভুগছে। তিনি বলেন, “বাস্তুচ্যুত হওয়া মানে যেন শরীর থেকে প্রাণটাকে টেনে বের করে নেওয়ার মতো।”

-রফিক


ইসরায়েলি অবরোধের বিরুদ্ধে সমুদ্রপথে প্রতিবাদ, গাজাগামী নৌবহরে যোগ দিল গ্রিসের দুটি জাহাজ

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ১৫ ১১:১৫:১২
ইসরায়েলি অবরোধের বিরুদ্ধে সমুদ্রপথে প্রতিবাদ, গাজাগামী নৌবহরে যোগ দিল গ্রিসের দুটি জাহাজ
ছবিঃ এ এফ পি

গাজায় ইসরায়েলি অবরোধ ভাঙতে এবং মানবিক সহায়তা পৌঁছাতে গ্রিসের সাইরোস দ্বীপ থেকে দুটি জাহাজ রওনা হয়েছে। আন্তর্জাতিক এই উদ্যোগের নাম গ্লোবাল সুমুদ্র ফ্লোটিলা, যা গাজার মানুষের জন্য খাদ্য ও ত্রাণসামগ্রী নিয়ে যাচ্ছে।

রবিবার সন্ধ্যায় গ্রিসের এরমোপোলিস বন্দরে প্রায় ৫০০ মানুষ জড়ো হয়ে ‘ফ্রি প্যালেস্টাইন’ স্লোগান দিয়ে জাহাজ দুটিকে বিদায় জানান। গ্রিসের পতাকা বহনকারী ‘অক্সিজেন’ ও ‘ইলেকট্রা’ নামের এই জাহাজ দুটি পাঁচ ও আটজন ক্রু নিয়ে যাত্রা শুরু করে। সঙ্গে রয়েছে দুর্ভিক্ষকবলিত গাজার মানুষের জন্য ত্রাণসামগ্রী।

একজন ক্রু সদস্য বলেন, “এভাবে আমরা দেখাতে চাই, ইসরায়েলের মানুষের ওপর অনাহার চাপিয়ে দেওয়ার কোনো অধিকার নেই। আমরা ফিলিস্তিনিদের পাশে দাঁড়িয়েছি।” আরেকজন বলেন, “আমাদের লক্ষ্য শুধু ইসরায়েল নয়, নিজেদের সরকারকেও বোঝানো—তারা যেন এ ধরণের অন্যায়কে সমর্থন না করে।”

জাতিসংঘ আগস্টে গাজায় আনুষ্ঠানিকভাবে দুর্ভিক্ষ ঘোষণা করেছে। সেখানে প্রায় এক মিলিয়ন মানুষ খাদ্য সংকটে ভুগছে। তবে ইসরায়েল এই দাবিকে অস্বীকার করেছে।

গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা জানিয়েছে, তারা কোনো সরকার বা রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নয়। ‘সুমুদ’ শব্দের অর্থ ‘অটলতা’। এই অভিযানে সমর্থন জানিয়েছেন পরিবেশ কর্মী গ্রেটা থানবার্গসহ অনেক প্রভাবশালী ব্যক্তি।

যাত্রাপথ ঝুঁকিমুক্ত নয়। টিউনিশিয়ার উপকূলে থাকাকালে অন্তত দুটি সন্দেহভাজন ড্রোন হামলার ঘটনা ঘটেছে। তবু ক্রু সদস্যদের মনোবল অটুট। তাদের কথায়, “গাজায় মানুষ যেভাবে প্রতিদিন জীবন নিয়ে লড়াই করছে, তার তুলনায় আমাদের এই ঝুঁকি কিছুই নয়।”

২০২৩ সালের অক্টোবরে হামাসের হামলার পর ইসরায়েলের পাল্টা অভিযানে গাজায় ৬৪ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে, যাদের অধিকাংশই বেসামরিক নাগরিক। এই পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক এই নৌবহর গাজায় ত্রাণ পৌঁছানো ও অবরোধ ভাঙার এক প্রতীকী প্রচেষ্টা।

-এ এফ পি


দক্ষিণ কোরিয়ার ক্ষোভ প্রশমনে ট্রাম্পের ‘ওপেন ডোর’ নীতি

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ১৫ ১০:৩২:৫৯
দক্ষিণ কোরিয়ার ক্ষোভ প্রশমনে ট্রাম্পের ‘ওপেন ডোর’ নীতি
ছবিঃ সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রবিবার এক সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করে জানিয়েছেন, বিদেশি কর্মীরা যুক্তরাষ্ট্রে “স্বাগত” এবং তিনি কোনোভাবেই বিনিয়োগকারীদের ভয় দেখাতে চান না। তার এই মন্তব্য এসেছে এমন সময়ে যখন মাত্র ১০ দিন আগে মার্কিন অঙ্গরাজ্য জর্জিয়ার একটি বিশাল অভিযানে প্রায় ৪৭৫ জন দক্ষিণ কোরিয়ান শ্রমিককে গ্রেপ্তার করা হয়।

অভিযানটি পরিচালনা করে ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই), যারা অভিযোগ করে যে, অনেক শ্রমিকের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে অথবা তারা যে ভিসা পেয়েছিলেন তাতে ম্যানুয়াল শ্রমের অনুমতি ছিল না। এ অভিযানটি ছিল ট্রাম্প প্রশাসন কর্তৃক ঘোষিত সাম্প্রতিকতম অভিবাসন অভিযানের মধ্যে সবচেয়ে বড় একক রেইড। যদিও শেষ পর্যন্ত তাদের যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কার করা হয়নি, হাতকড়া পরানো ও শিকল দিয়ে বেঁধে শ্রমিকদের নিয়ে যাওয়ার দৃশ্য দক্ষিণ কোরিয়ায় তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। শুক্রবার সিউল সরকার তাদের দেশে ফেরত পাঠায়।

দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট লি জে মিয়ং এ ঘটনাকে “বিস্ময়কর” অভিহিত করে সতর্ক করে দেন যে, এ ধরনের অভিযান ভবিষ্যৎ বিনিয়োগ নিরুৎসাহিত করতে পারে। দক্ষিণ কোরিয়ার ট্রেড ইউনিয়নগুলো যুক্তরাষ্ট্রের কাছে আনুষ্ঠানিক ক্ষমা প্রার্থনার দাবি তুলেছে।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার পোস্টে স্পষ্ট করে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে জটিল প্রযুক্তি পণ্যের কারখানা তৈরির জন্য বিদেশি বিশেষজ্ঞদের থাকা প্রয়োজন। তিনি লেখেন,

“চিপস, সেমিকন্ডাক্টর, কম্পিউটার, জাহাজ, ট্রেন—এসব পণ্য আমরা অন্যদের কাছ থেকে শিখতে চাই বা অনেক ক্ষেত্রে পুনরায় শিখতে চাই, কারণ আগে এগুলোতে আমরা দক্ষ ছিলাম কিন্তু আর তেমন নেই।”

তিনি আরও যোগ করেন,

“আমরা তাদের স্বাগত জানাই, তাদের কর্মীদের স্বাগত জানাই এবং গর্বের সঙ্গে বলতে চাই, আমরা তাদের কাছ থেকে শিখব এবং খুব শিগগিরই তাদের থেকেও ভালো করব।”

এই বার্তাটি মূলত বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশে একটি আশ্বাস—যুক্তরাষ্ট্র বিদেশি বিনিয়োগ নিরুৎসাহিত করতে চায় না, বরং বৈশ্বিক সহযোগিতার মাধ্যমে শিল্প পুনর্জাগরণে আগ্রহী।

বিশ্লেষকরা বলছেন, একদিকে ট্রাম্পের কঠোর অভিবাসন অভিযান অব্যাহত থাকলেও, অন্যদিকে বিনিয়োগকারীদের প্রতি এই নরম বার্তা দেখায় যে, যুক্তরাষ্ট্র এখনও বৈশ্বিক সরবরাহ চেইনের সঙ্গে যুক্ত থাকতে চায় এবং উচ্চ প্রযুক্তি উৎপাদনে বিদেশি দক্ষতাকে মূল্য দেয়।

-শাহিন আলম


টিকটক বন্ধ নাকি বাঁচবে? স্পেনের যুক্তরাষ্ট্র-চীন বৈঠকেই মিলবে সিদ্ধান্ত

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ১৫ ০৯:১৫:২২
টিকটক বন্ধ নাকি বাঁচবে? স্পেনের যুক্তরাষ্ট্র-চীন বৈঠকেই মিলবে সিদ্ধান্ত
রবিবার শুরু হওয়া আলোচনায় চীনের পক্ষ থেকে ছিলেন হে লিফেং এবং যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ছিলেন স্কট বেসেন্ট।

যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারা স্পেনের মাদ্রিদে উচ্চপর্যায়ের বাণিজ্য বৈঠকে দ্বিতীয় দিনের আলোচনায় বসেছেন। বিশ্ব অর্থনীতির দুই প্রধান শক্তি—ওয়াশিংটন ও বেইজিং—চলমান শুল্কযুদ্ধ প্রশমনের চেষ্টা করছে। আলোচনায় নেতৃত্ব দিচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট এবং চীনের ভাইস-প্রিমিয়ার হে লিফেং।

এই বৈঠকের সবচেয়ে আলোচিত বিষয় হলো টিকটক। চীনা মালিকানাধীন এই জনপ্রিয় অ্যাপের যুক্তরাষ্ট্রে ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে। মার্কিন বাজারে টিকটক চালিয়ে যেতে হলে চীনা প্রতিষ্ঠান বাইটড্যান্সকে দ্রুত নতুন ক্রেতা খুঁজে বের করতে হবে। নাহলে দেশটিতে টিকটকের ওপর নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হতে পারে।

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শুরুতে টিকটক নিষিদ্ধ করার পক্ষে ছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে তিনি একের পর এক তিনবার সময়সীমা বাড়িয়েছেন। গত রোববার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প ইঙ্গিত দেন, চতুর্থ দফায়ও সময় বাড়ানো হতে পারে। তিনি বলেন, “আমরা হয়তো টিকটককে বন্ধ হতে দেব, অথবা না-ও দিতে পারি… সেটা চীনের ওপর নির্ভর করছে। আমার কাছে এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ নয়।”

তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি শুধু একটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম অ্যাপকে ঘিরে নয়; এটি মূলত তথ্য সুরক্ষা, ডিজিটাল বাণিজ্য এবং ভূরাজনৈতিক প্রভাবের ভবিষ্যৎ নিয়ন্ত্রণকে ঘিরে এক বৃহত্তর লড়াই। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ১৭ কোটি মানুষ টিকটক ব্যবহার করছে, যা বিষয়টিকে আরও সংবেদনশীল করে তুলেছে।

এদিকে, উভয় দেশ নভেম্বর পর্যন্ত শুল্কবিরতির সময়সীমা বাড়িয়েছে। এর ফলে আপাতত একে অপরের ওপর শতভাগের বেশি আমদানি শুল্ক আরোপের হুমকি কমেছে। এই বিরতি দুই দেশকে আলোচনার জন্য আরও সময় দিচ্ছে, বিশেষ করে “অন্যায্য বাণিজ্যনীতি” ও জাতীয় নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট জটিল বিষয়গুলো সমাধানের জন্য।

অনেকের ধারণা, এই বৈঠক ট্রাম্প ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের মধ্যে আসন্ন দক্ষিণ কোরিয়া শীর্ষ সম্মেলনে সরাসরি সাক্ষাতেরও পথ তৈরি করছে। অক্টোবরেই এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে দুই নেতার সাক্ষাত বিশ্ব অর্থনীতির ভবিষ্যৎ সম্পর্কে বড় সিদ্ধান্ত বয়ে আনতে পারে।

সব মিলিয়ে মাদ্রিদে চলমান আলোচনাই এখন বিশ্বদৃষ্টি আকর্ষণ করছে। এখানেই নির্ধারিত হতে পারে শুধু যুক্তরাষ্ট্র-চীনের বাণিজ্য সম্পর্ক নয়, টিকটকেরও বেঁচে থাকার ভবিষ্যৎ।


যুক্তরাষ্ট্রের ডালাসে ভারতীয় প্রৌঢ় খুন: অবৈধ অভিবাসনের বিরুদ্ধে কড়া বার্তা ট্রাম্পের

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ১৫ ০৯:০৩:১০
যুক্তরাষ্ট্রের ডালাসে ভারতীয় প্রৌঢ় খুন: অবৈধ অভিবাসনের বিরুদ্ধে কড়া বার্তা ট্রাম্পের
(বাঁ দিকে) আমেরিকায় নিহত ভারতীয় প্রৌঢ়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।

আমেরিকার টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের ডালাস শহরে ভারতীয় বংশোদ্ভূত চন্দ্র নাগামাল্লাইয়ার নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, অবৈধ অভিবাসীদের নিয়ে আমেরিকার নরম নীতি এখন অতীত। এ ধরনের অপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা হবে এবং অবৈধভাবে কেউ যেন আর আমেরিকায় প্রবেশ করতে না পারে, তার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

হত্যাকাণ্ডের ঘটনা

গত ১০ সেপ্টেম্বর রাতে চন্দ্র নাগামাল্লাইয়া (৬০) ডালাসে তাঁর পরিবারের সামনে নির্মমভাবে খুন হন। জানা গেছে, তাঁর হোটেলের কর্মচারী ৩৭ বছর বয়সী ইয়োরডানিস কোবোস-মার্টিনেজ, যিনি কিউবা থেকে অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেছিলেন, ব্যক্তিগত বিরোধের জেরে চন্দ্রকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যা করেন। প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যমতে, তিনি চন্দ্রের মাথা কেটে তা নিয়ে রাস্তায় হেঁটে যান এবং পরে মুণ্ডে লাথি মারেন। ঘটনাটি সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়ে এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

ট্রাম্পের প্রতিক্রিয়া

এই ভয়াবহ ঘটনার পর সমাজমাধ্যমে দেওয়া এক বার্তায় ট্রাম্প লিখেছেন, “ডালাসের সম্মানিত ব্যক্তি চন্দ্র নাগামাল্লাইয়া তাঁর স্ত্রী ও সন্তানের সামনে খুন হয়েছেন। হত্যাকারী একজন অবৈধ অভিবাসী, যিনি কিউবা থেকে এসেছিলেন। এর আগে শিশুনিগ্রহ ও গাড়ি চুরির অভিযোগেও তিনি গ্রেফতার হয়েছিলেন। কিন্তু বাইডেন প্রশাসনের অদক্ষতার কারণে তাঁকে আটকে রাখা হয়নি।”

তিনি আরও বলেন, “অবৈধ অভিবাসীদের নিয়ে নরম হওয়ার দিন শেষ। আমেরিকাকে আবার নিরাপদ করতে হবে। এই অপরাধী এখন আমাদের হেফাজতে রয়েছে এবং হত্যার দায়ে সর্বোচ্চ শাস্তি পাবে।”

অভিবাসন ইস্যুতে নতুন করে বিতর্ক

ঘটনাটি যুক্তরাষ্ট্রে নিরাপত্তা ও অভিবাসন নীতি নিয়ে নতুন করে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, যেসব অভিবাসীর অপরাধমূলক রেকর্ড আছে, তাঁদের কেন পুনর্বাসিত বা বহিষ্কার করা হয়নি। ট্রাম্পের বক্তব্যে ইঙ্গিত মিলেছে যে, ভবিষ্যতে তিনি ক্ষমতায় ফিরলে অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে আরও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নিহতের পরিবার ও কূটনৈতিক তৎপরতা

চন্দ্র নাগামাল্লাইয়ার মৃত্যুতে ডালাসে বসবাসরত ভারতীয় প্রবাসী সম্প্রদায়ের মধ্যে শোক নেমে এসেছে। নিহতের পরিবারের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে ভারতীয় দূতাবাস ইতিমধ্যেই যোগাযোগ করেছে এবং প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদানের আশ্বাস দিয়েছে।

পাঠকের মতামত: