যুক্তরাষ্ট্রে আটক কোরীয় শ্রমিকদের দেশে ফেরাতে চার্টার্ড ফ্লাইট

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ১০ ১২:৩২:২১
যুক্তরাষ্ট্রে আটক কোরীয় শ্রমিকদের দেশে ফেরাতে চার্টার্ড ফ্লাইট
ছবিঃ সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রে বৃহৎ পরিসরের অভিবাসন অভিযানে আটক হওয়া শতাধিক দক্ষিণ কোরীয় শ্রমিককে দেশে ফিরিয়ে আনতে বুধবার সিউল থেকে একটি চার্টার্ড বিমান ছাড়বে। কোরিয়ান এয়ার কর্তৃপক্ষ জানায়, তাদের বোয়িং ৭৪৭-৮আই উড়োজাহাজ সকাল ১১টায় (স্থানীয় সময়) সিউল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে যাত্রা করবে।

গত বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যে হুন্ডাই ও এলজি এনার্জি সলিউশনের যৌথ উদ্যোগে নির্মাণাধীন ৪.৩ বিলিয়ন ডলারের ব্যাটারি কারখানায় ব্যাপক অভিবাসন অভিযান চালানো হয়। এতে মোট ৪৭৫ জনকে আটক করা হয়, যাদের মধ্যে শতাধিক দক্ষিণ কোরীয় শ্রমিক রয়েছেন। ট্রাম্প প্রশাসনের অভিবাসনবিরোধী কঠোর অভিযানে এটাই একক স্থানে সবচেয়ে বড় ধরপাকড় বলে মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

ইতোমধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী চো হিউন জরুরি বৈঠকে অংশ নিতে সোমবার ওয়াশিংটন গেছেন। তিনি আটক শ্রমিকদের বিষয়টিকে “গুরুতর পরিস্থিতি” আখ্যা দিয়ে দ্রুত ও নিরাপদ প্রত্যাবর্তনের আশ্বাস দিয়েছেন। সংসদ সদস্যদের তিনি জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে প্রাথমিকভাবে এমন একটি চুক্তি হয়েছে যাতে আটক শ্রমিকদের ওপর পাঁচ বছরের পুনঃপ্রবেশ নিষেধাজ্ঞার মতো শাস্তি আরোপ করা হবে না। তার ভাষায়, “আলোচনা ইতিবাচকভাবে এগোচ্ছে।”

ইয়োনহাপ সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, কূটনৈতিক সূত্রের বরাত দিয়ে বলা হয়েছে যে, আটক শ্রমিকদের নিয়ে ফেরার ফ্লাইটটি যুক্তরাষ্ট্র থেকে বৃহস্পতিবার ভোর ৩টা ৩০ মিনিটে (স্থানীয় সময়) উড্ডয়ন করবে।

অভিবাসন বিশেষজ্ঞদের মতে, আটক দক্ষিণ কোরীয় শ্রমিকদের অনেকে এমন ভিসায় যুক্তরাষ্ট্রে ছিলেন যা সরাসরি নির্মাণ কাজে অংশ নেওয়ার অনুমতি দেয় না। এ কারণেই তারা অভিযানে ধরা পড়েন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

দক্ষিণ কোরিয়া যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ নিরাপত্তা মিত্র, একই সঙ্গে এশিয়ার চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতি ও প্রধান গাড়ি ও ইলেকট্রনিক্স উৎপাদনকারী দেশ। তাদের একাধিক কারখানা যুক্তরাষ্ট্রে স্থাপিত হয়েছে। এছাড়া শুল্কবিষয়ক আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগ আহ্বানেও সাড়া দিয়েছে সিউল। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই ঘটনার প্রভাব দুই দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্কেও কিছুটা প্রতিফলিত হতে পারে।

-সুত্রঃ এ এফ পি


মাত্র ২৪ ঘণ্টায় নতুন প্রধানমন্ত্রী

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ১০ ০৯:৫৭:৫৪
মাত্র ২৪ ঘণ্টায় নতুন প্রধানমন্ত্রী
ছবি: সংগৃহীত

প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ফ্রান্সের নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মনোনীত করেছেন সেবাস্তিয়ান লেকর্নুকে। ৩৯ বছর বয়সী এই তরুণ রাজনীতিবিদ এর আগে প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন এবং দীর্ঘদিন ধরেই প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁর ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে পরিচিত।

বিবিসি জানিয়েছে, আস্থা ভোটে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ফ্রাসোয়া বায়রো ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার মাত্র ২৪ ঘণ্টা পরই লেকর্নুর নাম ঘোষণা করা হয়। এ নিয়োগের মাধ্যমে ম্যাক্রোঁ তাঁর দ্বিতীয় মেয়াদে পঞ্চম প্রধানমন্ত্রী পেলেন।

এলিসি প্রাসাদের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, আসন্ন বাজেট অনুমোদন নিশ্চিত করতে লেকর্নুকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সমঝোতার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বাজেট পরিকল্পনা নিয়ে ব্যাপক মতভেদ ও বিরোধিতা সৃষ্টি হওয়ায় দেশ রাজনৈতিক অচলাবস্থার মুখে পড়ে।

এরই প্রেক্ষাপটে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ফ্রাসোয়া বায়রো আকস্মিকভাবে আস্থাভোট আহ্বান করেন। তবে পার্লামেন্টে ৩৬৪-১৯৪ ভোটে পরাজিত হয়ে তিনি ক্ষমতা হারান।

পরাজয়ের পর বায়রো প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁর কাছে গিয়ে পদত্যাগপত্র জমা দেন। তার এই পদত্যাগই সেবাস্তিয়ান লেকর্নুর জন্য প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসার পথ প্রশস্ত করে। দায়িত্ব পাওয়ার পর লেকর্নু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে লেখেন, প্রেসিডেন্ট তাকে একটি স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন ফ্রান্সের স্বাধীনতা ও শক্তি রক্ষা করা, জনগণের সেবা করা এবং দেশের ঐক্য ও প্রাতিষ্ঠানিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা তাঁর সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।

-শরিফুল


ইসরায়েলের হামলা, কাতারের প্রধানমন্ত্রীর ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ১০ ০৯:৪০:৩২
ইসরায়েলের হামলা, কাতারের প্রধানমন্ত্রীর ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া
ছবি: সংগৃহীত

দোহায় ইসরায়েলের বিমান হামলার ঘটনাকে ঘিরে মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুলরহমান বিন জসিম আল-থানি এ হামলার ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে একে সরাসরি রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসবাদ হিসেবে অভিহিত করেছেন। তাঁর মতে, এটি কেবল একটি সামরিক আক্রমণ নয়, বরং সমগ্র অঞ্চলের জন্য এক অশুভ বার্তা। তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলেন, এই হামলার মধ্য দিয়ে স্পষ্ট হলো যে, এখানে একটি বেপরোয়া শক্তি সক্রিয় রয়েছে, যারা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতাকে ধ্বংস করতে চায়।

প্রধানমন্ত্রী বিস্তারিতভাবে জানান, হামলা শুরুর মাত্র দশ মিনিটের মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্র কাতারের সঙ্গে যোগাযোগ করে। এটি প্রমাণ করে যে হামলার ঘটনা পূর্বপরিকল্পিত ছিল এবং আন্তর্জাতিক শক্তিগুলোর কাছে এ বিষয়ে তাৎক্ষণিক বার্তা পৌঁছে যায়। তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, ইসরায়েল এই হামলায় অত্যাধুনিক এমন অস্ত্র ব্যবহার করেছে যা প্রচলিত রাডার সিস্টেমে ধরা পড়েনি। এর ফলে কাতারের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাও ব্যর্থ হয়ে পড়ে। এ বিষয়টি তিনি বিশেষভাবে উদ্বেগজনক হিসেবে চিহ্নিত করে বলেন, ভবিষ্যতে এমন হামলা গোটা উপসাগরীয় অঞ্চলের নিরাপত্তার জন্য ভয়াবহ পরিণতি বয়ে আনতে পারে।

অন্যদিকে, ইসরায়েলি কর্মকর্তারা হামলার সত্যতা অস্বীকার না করে বরং স্বীকার করেছেন যে অভিযানে ১০টিরও বেশি যুদ্ধবিমান ব্যবহার করা হয়েছে। এই স্বীকারোক্তি কাতারের অভিযোগকে আরও দৃঢ় করেছে। সামরিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইসরায়েলের এই হামলা ছিল এক ধরনের “ক্ষমতা প্রদর্শন”, যার উদ্দেশ্য কাতারসহ আঞ্চলিক শক্তিগুলোর ওপর চাপ সৃষ্টি করা।

কাতারের প্রধানমন্ত্রী তাঁর ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ায় আরও বলেন, এটি শুধু কাতারের সার্বভৌমত্বের ওপর আঘাত নয়, বরং গোটা অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতাকে ঝুঁকির মুখে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান, দ্রুত এ ধরনের রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হোক। বিশেষত তিনি জাতিসংঘ, আরব লীগ ও ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি)–কে এ ঘটনার প্রতি কার্যকর প্রতিক্রিয়া জানানোর আহ্বান জানান।

এই হামলার পর দোহায় সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোও বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করছে। কাতারের প্রধানমন্ত্রী স্পষ্ট করেছেন, তাঁর দেশ কোনোভাবেই নীরব থাকবে না। প্রয়োজনে আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক মঞ্চে এ ঘটনার বিরুদ্ধে কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক চাপ সৃষ্টি করা হবে।

-রফিক


নিরাপদ কাতারেও হামলা! দোহায় ইসরাইলি হামলায় তোলপাড় আরব বিশ্ব

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৯ ২১:০০:১৬
নিরাপদ কাতারেও হামলা! দোহায় ইসরাইলি হামলায় তোলপাড় আরব বিশ্ব

কাতারের রাজধানী দোহায় হামাসের শীর্ষ নেতাদের লক্ষ্য করে ইসরাইল বিমান হামলা চালিয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরাইলি সেনাবাহিনী। মঙ্গলবার স্থানীয় সময় দুপুরে একাধিক বিস্ফোরণে শহরের কূটনৈতিক ও আবাসিক এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। কাতারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দোহায় হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর কয়েকজন সদস্যের আবাসিক স্থাপনাকে লক্ষ্য করে এ হামলা চালানো হয়েছে। তবে মন্ত্রণালয় দাবি করেছে, বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

হামাস সূত্র আল জাজিরাকে জানিয়েছে, হামলার সময় সংগঠনের আলোচনাকারী প্রতিনিধিদল যুক্তরাষ্ট্রের নতুন যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব নিয়ে বৈঠক করছিল। এর মধ্যেই হঠাৎ হামলা চালানো হয়। হামাস বলছে, এটি মূলত শান্তি প্রচেষ্টা ব্যাহত করার উদ্দেশ্যেই করা হয়েছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একদিন আগেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দাবি করেছিলেন, ইসরাইল তাঁর প্রস্তাব মেনে নিয়েছে এবং এবার হামাসকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তিনি আরও হুঁশিয়ারি দেন, “এটাই হামাসের জন্য শেষ সতর্কবার্তা।” তবে দোহায় হামলার পর হোয়াইট হাউস আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি। মার্কিন দূতাবাস অবশ্য স্থানীয়দের সতর্ক করে জানিয়েছে, নাগরিকদের নিরাপদ স্থানে অবস্থান করতে।

কাতার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হামলাকেcowardly” আখ্যা দিয়ে বলেছে, এটি আন্তর্জাতিক আইন ও কাতারের সার্বভৌমত্বের নগ্ন লঙ্ঘন এবং কাতার ও বাসিন্দাদের নিরাপত্তার জন্য গুরুতর হুমকি। একই সুরে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইরান ও ফিলিস্তিনি মুক্তি সংস্থা (পিএলও) এ হামলার নিন্দা জানিয়েছে। সৌদি আরব সতর্ক করেছে, ইসরাইলের এ ধরনের “অপরাধমূলক আগ্রাসন” আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য ভয়াবহ পরিণতি বয়ে আনতে পারে।

এদিকে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, “এ হামলা সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে ইসরাইল পরিচালনা করেছে এবং এর পূর্ণ দায়ভার ইসরাইল নিচ্ছে।” ইসরাইলি বিরোধীদলীয় নেতা ইয়াইর লাপিদ এবং কট্টর ডানপন্থী অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোত্রিচ এ অভিযানের প্রশংসা করেছেন।

হামলার লক্ষ্যবস্তু ছিল দোহা শহরের একটি আবাসিক এলাকা, যেখানে বিদেশি দূতাবাস ও বিদ্যালয়ও অবস্থিত। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বিস্ফোরণের শব্দ গোটা শহরে ছড়িয়ে পড়ে এবং মুহূর্তেই আতঙ্ক দেখা দেয়। যুক্তরাষ্ট্রসহ একাধিক দেশ ইতোমধ্যেই দোহায় অবস্থানরত নাগরিকদের নিরাপদে থাকার নির্দেশ দিয়েছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ইসরাইল এ হামলার মাধ্যমে শুধু কাতারের সার্বভৌমত্বকেই লঙ্ঘন করেনি, বরং চলমান আলোচনাকে ভণ্ডুল করার বার্তাও দিয়েছে। আল জাজিরার বিশ্লেষক মারওয়ান বিশারা একে “গ্যাংস্টার আচরণ” হিসেবে আখ্যা দিয়ে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি এ হামলার অনুমোদন না দিয়ে থাকে, তবে অবিলম্বে নিন্দা জানানো উচিত।

ইসরাইল এর আগে গাজা, লেবানন, সিরিয়া, ইয়েমেন, তিউনিসিয়া এবং ইরানেও হামলা চালিয়েছে। এবার কাতারে হামলা মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাতকে আরও জটিল করে তুলতে পারে বলে আন্তর্জাতিক মহল আশঙ্কা করছে।


বিক্ষোভে রক্তক্ষয়, নেপালের প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৯ ১৬:২৯:৩৭
বিক্ষোভে রক্তক্ষয়, নেপালের প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ
ছবিঃ সংগৃহীত

নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি মঙ্গলবার পদত্যাগ করেছেন। এর মাত্র একদিন আগে দেশজুড়ে বিক্ষোভ দমনে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে অন্তত ১৯ জন নিহত হয়, যা সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ দমন-পীড়নের ঘটনা।

রাষ্ট্রপতির কাছে জমা দেওয়া পদত্যাগপত্রে ৭৩ বছর বয়সী ওলি লিখেছেন, “আজ থেকে প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করছি, যাতে রাজনৈতিক সমাধানের পথে আরও অগ্রসর হওয়া যায় এবং বিদ্যমান সংকট নিরসনের উপায় খোঁজা সম্ভব হয়।”

সোমবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরকারের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপের দাবিতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। যদিও পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম অ্যাপগুলো চালু করা হয়, তবুও বিক্ষোভ থামেনি। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের তথ্যমতে, বিক্ষোভকারীদের ওপর সরাসরি গুলি চালানো হয়, যাতে হতাহতের সংখ্যা বেড়ে যায়।

ওলি গত বছর চতুর্থবারের মতো ক্ষমতায় আসেন, যখন তার কমিউনিস্ট পার্টি মধ্য-বামপন্থি নেপালি কংগ্রেসের সঙ্গে জোট গঠন করে সরকার গড়ে। তবে দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, দুর্নীতি ও ধীর অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিয়ে জনঅসন্তোষ ক্রমেই বাড়ছিল।

হিমালয়ের এই দেশটির জনসংখ্যা প্রায় তিন কোটি। এর মধ্যে ১৫ থেকে ৪০ বছর বয়সী তরুণরা মোট জনসংখ্যার প্রায় ৪৩ শতাংশ। কিন্তু বেকারত্বের হার ১০ শতাংশের কাছাকাছি এবং মাথাপিছু আয় মাত্র ১,৪৪৭ ডলার। ফলে তরুণ প্রজন্ম ক্রমেই হতাশ হয়ে পড়ছে।

২০০৮ সালে এক দশকব্যাপী গৃহযুদ্ধের পর নেপাল রাজতন্ত্র বিলুপ্ত করে ফেডারেল প্রজাতন্ত্রে পরিণত হয়। মাওবাদীদের শান্তি চুক্তির মাধ্যমে রাজনীতিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। কিন্তু এরপর থেকে বয়স্ক রাজনীতিবিদদের ক্ষমতা দখলের পালাবদল, দলাদলি ও ঘনঘন সরকার পরিবর্তন জনগণের কাছে রাজনৈতিক নেতৃত্বকে আরও অবিশ্বস্ত করে তুলেছে।

গত শুক্রবার থেকে টিকটকে ভাইরাল হওয়া কিছু ভিডিওতে দেখা যায়, সাধারণ নেপালিদের দুঃখ-দুর্দশার বিপরীতে রাজনীতিবিদদের সন্তানরা বিলাসবহুল সামগ্রী ও বিদেশ ভ্রমণ প্রদর্শন করছে। এসব দৃশ্য বিক্ষোভকে আরও উসকে দিয়েছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।

ওলির পদত্যাগ নিঃসন্দেহে নেপালের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন সমীকরণ তৈরি করবে। তবে এই অস্থিরতা থেকে উত্তরণের পথ এখনো অনিশ্চিত।

-সুত্রঃ এ এফ পি


আবারও যুদ্ধের প্রস্তুতিতে ইরান: সেনাপ্রধান হাতামির হুঁশিয়ারি

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৯ ১২:৩৬:২২
আবারও যুদ্ধের প্রস্তুতিতে ইরান: সেনাপ্রধান হাতামির হুঁশিয়ারি
ছবি: সংগৃহীত

ইরানের সেনাবাহিনীর প্রধান মেজর জেনারেল আমির হাতামি আবারও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সম্ভাব্য যুদ্ধের প্রস্তুতির ঘোষণা দিয়েছেন। সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট মনিটর এক প্রতিবেদনে জানায়, তিনি সম্প্রতি ইসফাহান, তাবরিজ এবং হামাদান শহরে বিভিন্ন সেনা ইউনিট পরিদর্শনের সময় এমন মন্তব্য করেন। তাঁর ভাষায়, এর আগে সংঘটিত ১২ দিনের যুদ্ধে পশ্চিমা মিত্রদের প্রত্যক্ষ সহযোগিতা এবং ন্যাটোর প্রযুক্তিগত সমর্থন সত্ত্বেও ইসরায়েল তেহরানের কাছে ভয়াবহ পরাজয়ের স্বাদ পেয়েছিল।

হাতামি জোর দিয়ে বলেন, ইরানের বিরুদ্ধে যে আগ্রাসন চালানো হয়েছিল তার মূল উদ্দেশ্য ছিল দেশের পারমাণবিক কর্মসূচিকে ধ্বংস করা। কিন্তু সেই সময় ইরানের সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনী ছাড়াও ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড, বাজিস মিলিশিয়া এবং সাধারণ জনগণ সম্মিলিতভাবে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। তিনি উল্লেখ করেন, জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণ এবং সশস্ত্র বাহিনীর কৌশলগত প্রস্তুতি ইসরায়েলি আগ্রাসনকে ব্যর্থ করে দেয়। তাঁর মতে, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি জনগণের সুরক্ষার জন্য নিবেদিত এবং সেটি ধ্বংস করা কোনো বিদেশি শক্তির পক্ষে সম্ভব নয়।

ইরানি সেনাপ্রধান আরও অভিযোগ করেন, ইসরায়েল ও তার মিত্ররা ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করার জন্য পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র করেছিল। তবে আধুনিক প্রযুক্তি, দক্ষ মানবসম্পদ এবং সমন্বিত প্রতিরক্ষা কৌশলের কারণে ইরান সেই ষড়যন্ত্রকে নস্যাৎ করতে সক্ষম হয়। তিনি স্পষ্ট করে বলেন, ইরান বারবার প্রমাণ করেছে যে তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের যেকোনো আগ্রাসন ঠেকাতে সক্ষম।

জনগণের ঐক্যকে সামরিক সক্ষমতার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করেন হাতামি। তাঁর মতে, একটি দেশ যত উন্নত অস্ত্রশস্ত্র ও সামরিক প্রযুক্তিই অর্জন করুক না কেন, জনগণের ঐক্য ছাড়া দীর্ঘস্থায়ী প্রতিরোধ সম্ভব নয়। তিনি বলেন, ইসরায়েলি আগ্রাসনের সময় জনগণের অপ্রত্যাশিত সমর্থন ইরানকে শক্তি যুগিয়েছিল এবং ভবিষ্যতেও জাতীয় ঐক্য ইরানের সবচেয়ে বড় অস্ত্র হিসেবে কাজ করবে।

-রফিক


থাকসিন শিনাওত্রার কারাদণ্ড: রাজনৈতিক বংশপরিচয়ের পতনের আভাস

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৯ ১২:০৩:৩২
থাকসিন শিনাওত্রার কারাদণ্ড: রাজনৈতিক বংশপরিচয়ের পতনের আভাস
ছবিঃ সংগৃহীত

থাইল্যান্ডের সর্বোচ্চ আদালত মঙ্গলবার দেশটির প্রভাবশালী ও বিতর্কিত রাজনীতিবিদ থাকসিন শিনাওয়াত্রাকে এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। আদালত জানায়, ২০২৩ সালে নিজস্ব হাসপাতালে থেকে শিনাওত্রা কারাদণ্ড অযথা সম্পন্ন করেছিলেন, যা বেআইনি ছিল।

দশকেরও বেশি সময় ধরে শিনাওত্রার রাজনৈতিক বংশপরিচয় দেশের সামরিক ও রাজতন্ত্রপন্থী রাজনৈতিক মহলের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। এই পরিবার এবং তাদের পপুলিস্ট ধারা দেশটির প্রথাগত সামাজিক কাঠামোর জন্য হুমকি হিসেবে দেখা হয়। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আইনি ও রাজনৈতিক ব্যর্থতার পরিশেষে তাদের প্রভাব হ্রাস পেতে শুরু করেছে। সর্বশেষ তার কন্যা পেটংটার্ন শিনাওত্রাকে প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে সাময়িকভাবে সরিয়ে দেওয়া হয়।

মঙ্গলবারের সর্বোচ্চ আদালতের রায় থাইল্যান্ডের সবচেয়ে ক্ষমতাধর রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের জন্য একটি কঠিন ধাক্কা হিসেবে দেখা যাচ্ছে। আদালতের নির্দেশে তার ব্যাংকক রিম্যান্ড প্রিজনে স্থানান্তরের জন্য ওয়ারেন্ট জারি করা হয়েছে।

থাকসিন ২০০১ এবং ২০০৫ সালে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন, তবে দ্বিতীয় মেয়াদে সামরিক অভ্যুত্থানের পর নির্বাসনে যান। ২০২৩ সালের আগস্টে দেশে ফেরার পর তিনি দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে আট বছরের সাজা পান। কিন্তু তিনি কখনো সেল না কাটিয়ে ব্যক্তিগত হাসপাতালে পাঠানো হয়। রাজার বিশেষ ক্ষমা ও বয়স্ক বন্দীদের জন্য পূর্বমুক্তির প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সাজা এক বছরে কমিয়ে দেওয়া হয়।

এই সময়ের ফেরা ও হাসপাতাল ট্রান্সফার, যা পেউ থাই পার্টির নতুন সরকার গঠনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল, তা জনমনে বিশেষ ব্যবস্থার অভিযোগ ও সন্দেহ সৃষ্টি করেছিল। আদালতের রায়ে বলা হয়, “অভিযুক্তের সাজা কার্যকর করা বেআইনি। তিনি জানতেন বা সচেতন ছিলেন যে তার স্বাস্থ্য জরুরি অবস্থার মধ্যে নেই এবং এটি বহির্বিভাগে চিকিৎসা করা যেত।”

শিনাওত্রার পরিবারের জন্য রাজনৈতিক সাফল্যের এই ধাক্কা একটি চ্যালেঞ্জ হলেও তারা এখনও রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে গণ্য। তার কন্যা পেটংটার্ন জানিয়েছেন, “আমার পিতা এখনও মানুষের জীবন উন্নয়নের জন্য তাঁর নৈতিক ও রাজনৈতিক ভূমিকার মাধ্যমে নেতা হিসেবে রয়েছেন।”

বিশ্লেষকরা মনে করেন, শিনাওত্রা সহজে রাজনীতি ছাড়বেন না। থাইল্যান্ডের রাজনীতিতে তার প্রভাব ও বুদ্ধিমত্তা এখনও বিবেচনার বিষয়। আদালতের বাইরে তার সমর্থকরা লাল রঙের পোশাকে উপস্থিত হয়ে রায়ের প্রতি একাগ্রতা দেখিয়েছেন।

সাম্প্রতিক সময়ে পেউ থাই পার্টি ক্ষমতা হারানো এবং শিনাওত্রার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত নিয়ে নানা গুজব ও রাজনৈতিক উত্তেজনা চলছে। তবে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, “এটি শেষ নয়, তবে পেউ থাইয়ের শক্তি কমিয়ে দিয়েছে।”

-সুত্রঃ এ এফ পি


মেক্সিকোতে ভয়াবহ ট্রেন-বাস সংঘর্ষে ১০ নিহত, আহত ৪১

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৯ ১১:০৪:২৮
মেক্সিকোতে ভয়াবহ ট্রেন-বাস সংঘর্ষে ১০ নিহত, আহত ৪১
ছবিঃ সংগৃহীত

মেক্সিকোর মধ্যাঞ্চলে এক ভয়াবহ দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১০ জন এবং আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৪১ জন। সোমবার স্থানীয় কর্তৃপক্ষ এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। দুর্ঘটনাটি ঘটেছে মেক্সিকো সিটির উত্তর-পশ্চিমে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দূরে আটলাকোমুলকো এলাকায়, যখন একটি মালবাহী ট্রেন ধাক্কা দেয় একটি ডাবল-ডেকার যাত্রীবাহী বাসে।

স্থানীয় গণমাধ্যমে প্রচারিত সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, রেললাইন অতিক্রমের সময় হঠাৎ করেই ট্রেনটি বাসটিকে আঘাত করে। আশেপাশের যানবাহন থেমে থাকলেও বাসটি লাইন পার হওয়ার চেষ্টা করছিল। ভিডিওতে কোনো রেলগেট বা নিরাপত্তা ব্যারিয়ার দৃশ্যমান হয়নি, যা দুর্ঘটনার ভয়াবহতাকে আরও বাড়িয়ে দেয়।

দুর্ঘটনার পর স্থানীয় সিভিল প্রটেকশন বিভাগের কর্মকর্তা অ্যাড্রিয়ান হার্নান্দেজ জানান, আহতদের মধ্যে চারজনের অবস্থা গুরুতর। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবিতে দেখা গেছে, আহত যাত্রীরা বাস থেকে কোনোরকমে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছেন। ঘটনাস্থলে তোলা ছবিতে পুরো বাসটির ছাদ ও পেছনের অংশ ছিন্নভিন্ন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা গেছে।

স্থানীয় প্রসিকিউটর কার্যালয়ের তত্ত্বাবধানে বাস চালককে আটক করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন হার্নান্দেজ। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, চালকের অবহেলা ও সড়কপথে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে কর্তৃপক্ষ।

-সুত্রঃ এ এফ পি


বার্নি স্যান্ডার্সের সঙ্গে জোহরান মামদানি, নিউইয়র্ক মেয়র নির্বাচনে প্রগতিশীল ঢেউ

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৯ ১০:২২:৫১
বার্নি স্যান্ডার্সের সঙ্গে জোহরান মামদানি, নিউইয়র্ক মেয়র নির্বাচনে প্রগতিশীল ঢেউ

যুক্তরাষ্ট্রের ভেরমন্ট অঙ্গরাজ্যের সেনেটর বার্নি স্যান্ডার্স তাঁর Fighting the Oligarchy Tour–এর অংশ হিসেবে শনিবার নিউইয়র্কের ব্রুকলিন কলেজে এক টাউন হলে অংশ নেন। সঙ্গে ছিলেন নিউইয়র্ক সিটির মেয়র প্রার্থী ও ডেমোক্র্যাটিক সোশ্যালিস্ট জোহরান মামদানি। স্যান্ডার্সের এই ট্যুর ইতিমধ্যেই ২১টি অঙ্গরাজ্যে পৌঁছেছে এবং তিন লাখেরও বেশি মানুষ এতে যুক্ত হয়েছেন। ব্রুকলিনে আয়োজিত এ সমাবেশে প্রায় ১,৭০০ মানুষ উপস্থিত ছিলেন, যা মামদানির ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তা ও নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনের জাতীয় গুরুত্বকে আরও স্পষ্ট করে।

টাউন হলে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মামদানি বলেন, রাজনীতি সাধারণ মানুষের শক্তিতে চালিত হতে পারে। আয়বৈষম্য ও বড় করপোরেশনের প্রভাবের বিরুদ্ধে তিনি কঠোর অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি দাবি করেন, ডোরড্যাশ তাঁর প্রার্থিতা ঠেকাতে এক মিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছে। তবে তাঁর বার্তা ছিল স্পষ্ট—“নিউইয়র্ক সিটি বিক্রির জন্য নয়।” অন্যদিকে বার্নি স্যান্ডার্স ধনকুবেরদের ক্ষমতার সমালোচনা করে বলেন, এলন মাস্ককে ট্রিলিয়নেয়ার বানানোর মতো সিদ্ধান্তগুলো এক অমানবিক বৈষম্যের প্রতিফলন, যখন লক্ষ লক্ষ মানুষ খাবারের জন্য সংগ্রাম করছে।

প্রগতিশীল এ প্রার্থী সামাজিক নীতির দিকেও নজর দেন। শিশুসেবা (childcare) নিয়ে স্থানীয়দের প্রশ্নের জবাবে মামদানি জানান, ছয় সপ্তাহ থেকে পাঁচ বছর বয়সী শিশুদের জন্য বিনামূল্যে ডে–কেয়ার চালু করবেন। তিনি বলেন, শিশুসেবার ব্যয় অনেক পরিবারের আয়ের ২৫ শতাংশ পর্যন্ত চলে যায়, যা নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্তের জন্য অসহনীয়।

তবে এই অগ্রযাত্রার পাশাপাশি মামদানি ও স্যান্ডার্স হোয়াইট হাউস থেকে আসা চাপের দিকেও ইঙ্গিত করেছেন। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি মামদানিকে “কমিউনিস্ট” বলে আক্রমণ করেছেন এবং অভিযোগ উঠেছে যে তিনি নিউইয়র্কের বর্তমান মেয়র এরিক অ্যাডামসকে নিজের প্রশাসনে অন্তর্ভুক্ত করার পরিকল্পনা করছেন। যদিও ট্রাম্প পরে এ দাবি অস্বীকার করেন, নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয় অ্যাডামসকে সৌদি আরবে রাষ্ট্রদূত করার বিষয়টি আলোচনায় রয়েছে। এদিকে সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমো, যিনি বর্তমানে মামদানির নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী, ট্রাম্পের হস্তক্ষেপের তীব্র বিরোধিতা করেছেন।

জরিপগুলোতে মামদানি দ্বিগুণ ব্যবধানে কুমোকে পেছনে ফেলেছেন। তবে এখনো কোনো জরিপে তিনি ৫০ শতাংশ ভোটারের সমর্থন পাননি। কুমোর দাবি, যদি অ্যাডামস বা রিপাবলিকান প্রার্থী কার্টিস স্লিওয়া সরে দাঁড়ান, তবে সেই ভোট তাঁর দিকে যাবে। তা সত্ত্বেও মামদানির জনপ্রিয়তা প্রমাণ করছে, প্রগতিশীল নীতির প্রতি নিউইয়র্কবাসীর আস্থা বাড়ছে।

স্যান্ডার্স বলেন, মামদানির উত্থান প্রমাণ করছে প্রগতিশীল তরঙ্গ এখন জাতীয় পর্যায়ে ছড়িয়ে পড়ছে। তিনি উল্লেখ করেন, মিনিয়াপলিস, সিয়াটল ও অ্যালবুকার্কির মতো শহরে প্রগতিশীল প্রার্থীরা মেয়র পদে লড়াই করছেন। এ প্রার্থীরা আয়বৈষম্য, আবাসন সমস্যা ও শ্রমিক সুরক্ষার মতো ইস্যু সামনে এনেছেন, যা সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত।

টাউন হলে স্যান্ডার্স ও মামদানি উভয়েই সতর্ক করেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রয়োজনে নিউইয়র্কে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করতে পারেন। মামদানি বলেন, আমরা ক্যালিফোর্নিয়ার মতো আদালতের পথে এমন পদক্ষেপ ঠেকানোর প্রস্তুতি নিতে হবে। তবে বাস্তবতা হলো, গত বছরই গভর্নর ক্যাথি হোচুল নিউইয়র্ক সাবওয়েতে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করেছিলেন, যদিও তখন অপরাধের হার কমছিল। সর্বশেষ তথ্য বলছে, ২০২৫ সালের প্রথম আট মাসে নিউইয়র্কে গুলির ঘটনা ছিল ইতিহাসে সর্বনিম্ন পর্যায়ে।

সব মিলিয়ে, ব্রুকলিনের এই টাউন হল শুধু নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনের প্রতিযোগিতা নয়, বরং মার্কিন রাজনীতিতে প্রগতিশীল শক্তির ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনা হিসেবে নতুন এক অধ্যায় উন্মোচন করেছে। সূত্রঃ আল জাজিরা।


গাজা অভিমুখী শান্তিপূর্ণ মিশনে হামলা

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৯ ১০:১৭:২৪
গাজা অভিমুখী শান্তিপূর্ণ মিশনে হামলা
গাজা, ছবিঃ সংগৃহীত

গাজা সলিডারিটি ফ্লোটিলা (GSF) জানিয়েছে, তাদের বহরে থাকা ‘ফ্যামিলি বোট’ নামের জাহাজে এক ড্রোন হামলার ফলে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। হামলায় জাহাজটির প্রধান ডেক এবং নিচতলার সংরক্ষণাগারে মারাত্মক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে সংগঠনটি নিশ্চিত করেছে।

সংগঠনটি তাদের সরকারি প্ল্যাটফর্মে প্রকাশিত এক ভিডিওতে জাহাজের অগ্নিকাণ্ডের পরবর্তী চিত্র তুলে ধরেছে। সেখানে দেখা যায়, সামনের ডেকের মেঝে ও দেয়াল সম্পূর্ণ কালো হয়ে গেছে এবং চারপাশে দগ্ধ চিহ্ন স্পষ্ট।

GSF এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, “আমাদের শান্তিপূর্ণ মিশনকে ভয় দেখানো বা বাধাগ্রস্ত করার লক্ষ্যে এমন আগ্রাসী কর্মকাণ্ড চালানো হলেও আমরা থেমে থাকব না। গাজার জনগণের পাশে দাঁড়ানো এবং অবরোধ ভাঙার আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে দৃঢ় সংকল্প ও অঙ্গীকার নিয়ে।”

প্রসঙ্গত, অগ্নিকাণ্ডের সময় জাহাজে ছয়জন ক্রু সদস্য অবস্থান করছিলেন। তবে সৌভাগ্যক্রমে তারা সবাই নিরাপদে আছেন বলে জানানো হয়েছে।

আন্তর্জাতিক মানবিক সহায়তা এবং গাজার অবরোধ ভাঙার শান্তিপূর্ণ উদ্যোগে নিয়োজিত এই বহরটি দীর্ঘদিন ধরেই নানা প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হচ্ছে। তবুও GSF-এর দাবি, তারা গাজার মানুষের দুর্দশা লাঘবের জন্য তাদের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে।

সূত্র: আল জাজিরা

পাঠকের মতামত: