টাইপ ৫ ডায়াবিটিস: অপুষ্টিজনিত এক নীরব মহামারি, লক্ষ শিশু ঝুঁকিতে! করণীয় কি?

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ মে ১৭ ১১:৪১:৫২
টাইপ ৫ ডায়াবিটিস: অপুষ্টিজনিত এক নীরব মহামারি, লক্ষ শিশু ঝুঁকিতে! করণীয় কি?

ডায়াবেটিস এক সময় শুধু বয়সজনিত কিংবা জীবনযাপন সংক্রান্ত রোগ হিসেবে বিবেচিত হতো। টাইপ ১ ও টাইপ ২ নামেই রোগটি বিশ্বজুড়ে পরিচিত ছিল, পরে এসেছে টাইপ ৩ ও ৪-এর ধারণা। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্বজুড়ে চিকিৎসাবিজ্ঞানীদের মধ্যে আলোচনার কেন্দ্রে উঠে এসেছে “টাইপ ৫ ডায়াবিটিস”-একটি ভিন্ন প্রকৃতির, উপেক্ষিত এবং বিপজ্জনক স্বাস্থ্যঝুঁকি, যা সবচেয়ে বেশি আঘাত হানছে বিশ্বের দরিদ্র শিশুদের ওপর।

রোগটির বৈশিষ্ট্য ও উৎপত্তি

আন্তর্জাতিক ডায়াবিটিস ফেডারেশন (IDF) জানিয়েছে, নতুন শনাক্ত হওয়া এই টাইপ ৫ ডায়াবিটিসে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা বিশ্বব্যাপী ৩ কোটির বেশি। মূলত আফ্রিকা ও দক্ষিণ এশিয়ার নিম্নআয়ের দেশগুলোতে, বিশেষ করে অপুষ্টিতে ভোগা শিশুদের মধ্যেই এর প্রকোপ সবচেয়ে বেশি। এই রোগটি দীর্ঘমেয়াদি অপুষ্টিজনিত কারণে হয় এবং একে “ম্যালনিউট্রিশন-রিলেটেড ডায়াবিটিস” হিসেবেও উল্লেখ করা হচ্ছে।

টাইপ ১ ডায়াবিটিস হয় যখন শরীরের অটোইমিউন সিস্টেম ইনসুলিন উৎপাদনকারী কোষকে ধ্বংস করে দেয়। টাইপ ২ হয় ওজন ও জীবনযাত্রাজনিত কারণে, যেখানে শরীর ইনসুলিন প্রতিক্রিয়ায় বাধা দেয়। টাইপ ৩ মস্তিষ্কের ক্ষয় ও অ্যালঝাইমার্সের সঙ্গে সম্পর্কিত। কিন্তু টাইপ ৫ একেবারেই আলাদা। এতে অগ্ন্যাশয় ইনসুলিন তৈরির ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে শুধুমাত্র দীর্ঘদিনের অপুষ্টির কারণে।

ইতিহাস ও অবহেলা

রোগটি প্রথম ধরা পড়ে ১৯৫৫ সালে জামাইকায়। তখন একে শুধুই অপুষ্টিজনিত রোগ হিসেবে দেখা হয়েছিল। ১৯৮৫ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এটিকে বিরল রোগ হিসেবে তালিকাভুক্ত করে, কিন্তু পর্যাপ্ত গবেষণা ও তথ্যের অভাবে ১৯৯০ সালে তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়। এরপর এ রোগ নিয়ে দীর্ঘদিন কোনো আন্তর্জাতিক আলোচনাই হয়নি।

২০২২ সালে ভারতের ভেলোরের ক্রিশ্চিয়ান মেডিকেল কলেজের চিকিৎসক ড. নিহাল টমাস তার গবেষণায় দেখান, অপুষ্টিজনিত কারণেই ডায়াবিটিস হতে পারে এবং এটি টাইপ ৫ ডায়াবিটিস হিসেবে চিহ্নিত করা উচিত। একই সঙ্গে নিউ ইয়র্কের অ্যালবার্ট আইনস্টাইন কলেজ অব মেডিসিনের চিকিৎসক ড. মেরেডিথ হকিংস রোগটির উপর ব্যাপক গবেষণা শুরু করেন।

উপসর্গ ও জটিলতা

টাইপ ৫ ডায়াবিটিসের উপসর্গ অনেকটা সাধারণ ডায়াবিটিসের মতোই। আক্রান্ত শিশুদের মধ্যে অতিরিক্ত পিপাসা পাওয়া, ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া, ওজন হ্রাস কিংবা হঠাৎ ওজন বৃদ্ধি, রক্তে শর্করার মাত্রার অনিয়মিত ওঠানামা, দৃষ্টিশক্তির অবনতি, স্নায়বিক সমস্যা এবং হরমোনের ভারসাম্যহীনতা দেখা দেয়। তবে সবচেয়ে উদ্বেগজনক দিক হলো, এটি দীর্ঘমেয়াদি এবং কখনো কখনো অচিহ্নিত থেকে যায় যা একসময় মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।

টাইপ ৫ ডায়াবিটিস ধীরে ধীরে শরীরকে ভেতর থেকে ক্ষয় করতে থাকে। সাধারণ ইনসুলিন থেরাপি বা টাইপ ১/২ ডায়াবিটিসের ওষুধে এটি সাড়া দেয় না। কারণ মূল সমস্যা হলো অগ্ন্যাশয় নিজেই প্রয়োজনীয় ইনসুলিন তৈরি করতে অক্ষম হয়ে পড়ে অপুষ্টিজনিত কারণে।

চিকিৎসা ও প্রতিরোধ

এই রোগের এখনো পর্যন্ত নির্দিষ্ট কোনো চিকিৎসা পদ্ধতি নেই। দীর্ঘদিন অপুষ্টির কারণে যেসব শারীরিক ক্ষতি হয়ে যায়, তা অনেক সময় পূরণযোগ্য নয়। ফলে গবেষকরা মনে করছেন, প্রতিরোধই এই রোগ মোকাবেলার প্রধান উপায়। পুষ্টিকর খাদ্য, নিরাপদ পানীয় জল, এবং শিশুদের পর্যাপ্ত পুষ্টি নিশ্চিত করার মাধ্যমে টাইপ ৫ ডায়াবিটিস প্রতিরোধ করা সম্ভব।

চিকিৎসকরা জোর দিচ্ছেন রোগটি যথাসময়ে সনাক্ত করার ওপর। সঠিকভাবে শনাক্ত না হলে রোগটি সাধারণ ডায়াবিটিস হিসেবে ভুল নির্ণয় হতে পারে, ফলে চিকিৎসায় ফল মিলবে না।

বৈশ্বিক উদ্বেগ ও করণীয়

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং আইডিএফ এখন নতুন করে টাইপ ৫ ডায়াবিটিসকে স্বাস্থ্যনীতির আলোচনায় আনার চেষ্টা করছে। উন্নয়নশীল দেশগুলোতে, যেখানে অপুষ্টি এবং দারিদ্র্য প্রকট, সেখানে জাতীয় স্বাস্থ্যনীতি ও শিশুপুষ্টি কর্মসূচির আওতায় এই রোগ নিয়ে সচেতনতা তৈরি করা জরুরি। এ রোগ শুধু একটি স্বাস্থ্যঝুঁকি নয়, এটি সামাজিক বৈষম্য ও অর্থনৈতিক দুর্বলতার প্রতিচ্ছবিও। বিশ্বের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মধ্যে স্বাস্থ্যসেবা, পুষ্টি এবং শিক্ষার ঘাটতি থেকে জন্ম নিচ্ছে এই নীরব মহামারি।

টাইপ ৫ ডায়াবিটিস নতুন কোনো রোগ নয়, কিন্তু এটি আমাদের নজর এড়িয়ে গেছে দশকের পর দশক। আজ যখন শিশুরা এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছে লক্ষ লক্ষ সংখ্যায়, তখন এটি আর অবহেলার বিষয় নয়। এটি ভবিষ্যতের প্রজন্মের স্বাস্থ্য ও উন্নয়নের ওপর এক ভয়াবহ ছায়া ফেলতে পারে।

সমাধান আছে, কিন্তু তার জন্য প্রয়োজন দ্রুত গবেষণা, সচেতনতা, এবং সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে সমন্বিত পদক্ষেপ। এখনই সময় এই নীরব সংকটকে গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করার কারণ এটাই আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য স্বাস্থ্য নিরাপত্তার এক গুরুত্বপূর্ণ লড়াই।


ফ্রিজে রাখলে বিষ হতে পারে যেসব খাবার: সতর্ক থাকুন

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৮ ১১:৫৪:৩০
ফ্রিজে রাখলে বিষ হতে পারে যেসব খাবার: সতর্ক থাকুন
ছবি : সংগৃহীত

আধুনিক জীবনে ফ্রিজ আমাদের রান্নাঘরের অন্যতম ভরসার হাতিয়ার। খাবারকে টাটকা রাখা, পচন রোধ করা এবং সময় বাঁচানোর জন্য এর জুড়ি মেলা ভার। তবে অনেকেই না জেনে হাতের কাছে যা পান, তাই ফ্রিজে রেখে দেন। কিন্তু পুষ্টিবিদরা বলছেন, সব খাবার ফ্রিজের ঠান্ডা পরিবেশে ভালো থাকে না। বরং কিছু খাবার ফ্রিজে রাখলে স্বাদ, গন্ধ ও পুষ্টিগুণ হারায় এবং কখনো কখনো তা স্বাস্থ্যঝুঁকিও তৈরি করতে পারে। তাই কোন খাবারটি ফ্রিজে রাখা যাবে আর কোনটি যাবে না, তা জানা অত্যন্ত জরুরি।

সবজি সংরক্ষণের ক্ষেত্রে অনেকেই ভুল করে আলু ও পেঁয়াজ ফ্রিজে রেখে দেন। কিন্তু ঠান্ডায় আলুর শর্করা চিনিতে পরিণত হয়, যা রান্নার সময় আলুর স্বাদ নষ্ট করে দেয়। তাই আলু সবসময় শুষ্ক ও হালকা ঠান্ডা জায়গায় রাখা উচিত। একইভাবে পেঁয়াজ ফ্রিজে না রেখে বাতাস চলাচলকারী উষ্ণ স্থানে আলাদাভাবে সংরক্ষণ করা শ্রেয়। এমনকি আলু ও পেঁয়াজ কখনোই পাশাপাশি রাখা উচিত নয়। রসুনের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম প্রযোজ্য; ফ্রিজের আর্দ্রতায় রসুনে দ্রুত ছত্রাক জন্মাতে পারে, তাই এটিও শুকনো ও উষ্ণ স্থানে রাখা ভালো। এছাড়া কুমড়া ফ্রিজে রাখলে ঠান্ডায় নরম হয়ে যায়, তাই এটিও শুষ্ক স্থানে রাখা উচিত।

ফলের ক্ষেত্রেও কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন। যেমন, পাকা কলা ফ্রিজে রাখলে দ্রুত খোসা কালচে হয়ে যায়, তাই এটি ঘরের তাপমাত্রায় রাখাই উত্তম। তরমুজ না কাটা পর্যন্ত ফ্রিজে রাখা ঠিক নয়, কারণ ঘরের তাপমাত্রায় এটি অনেক দিন ভালো থাকে। তবে কেটে ফেলার পর অল্প সময়ের জন্য ফ্রিজে রাখা যেতে পারে। টমেটো ফ্রিজে রাখলে এর ভেতরের টেক্সচার বা গঠন নষ্ট হয়ে যায় এবং স্বাদ কমে যায়। তাই টমেটো সবসময় উষ্ণ স্থানে রাখা উচিত। এছাড়া অ্যাভোকাডো পাকা না হওয়া পর্যন্ত এবং খুবানি, কিউই, পিচ বা আমের মতো ফলগুলোর আসল টেক্সচার ধরে রাখতে এগুলোকে ফ্রিজের বাইরে ঘরের তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করা উচিত।

দৈনন্দিন ব্যবহারের আরও কিছু উপাদান যেমন মধু, পাউরুটি, কফি এবং বিভিন্ন ধরনের তেল ফ্রিজে রাখা একদমই উচিত নয়। মধু ফ্রিজে রাখলে এটি স্ফটিক বা দানা বেঁধে শক্ত হয়ে যায়, যা পরে ব্যবহার করা কঠিন হয়। পাউরুটি ফ্রিজে রাখলে দ্রুত শক্ত ও বাসি হয়ে খাওয়ার অনুপযুক্ত হয়ে পড়ে। কফি ফ্রিজে রাখলে এর চমৎকার সুবাস নষ্ট হয়ে যায় এবং অন্য খাবারের গন্ধ শোষণ করে নেয়। অলিভ অয়েল বা অন্যান্য তেল ফ্রিজে রাখলে তা জমে ঘোলাটে হয়ে যায় এবং গুণাগুণ হারায়। এছাড়া পিনাট বাটার বা চিনাবাদাম মাখন ফ্রিজে রাখলে এতটাই শক্ত হয়ে যায় যে তা পাউরুটিতে মাখানো কঠিন হয়ে পড়ে।

সস ও আচারের মতো খাবারগুলোতে সাধারণত ভিনেগার বা প্রিজারভেটিভ থাকে, তাই এগুলো ফ্রিজে রাখার প্রয়োজন হয় না। হট সস বা ঝাল সস এবং আচার ঘরের তাপমাত্রায় দীর্ঘদিন ভালো থাকে, ফ্রিজে রাখলে এগুলোর ঝাঁজ ও স্বাদ কমে যেতে পারে। সয়াসসও ফ্রিজে রাখলে তার নিজস্ব ঘ্রাণ হারায়। তুলসি পাতা ফ্রিজে রাখলে কালো দাগ পড়ে যায় এবং গন্ধ নষ্ট হয়, তাই এটি সামান্য পানিতে ছায়াযুক্ত স্থানে রাখা ভালো। ডিম ফ্রিজে রাখলে অনেক দিন ভালো থাকে ঠিকই, তবে স্বাদ অটুট রাখতে অনেকেই এটি ঘরের তাপমাত্রায় রাখার পরামর্শ দেন। মূলত সব খাবার ফ্রিজে রাখলেই ভালো থাকে না, খাবারের ধরন অনুযায়ী সঠিক সংরক্ষণ পদ্ধতি জানলেই কেবল খাবারের আসল স্বাদ ও পুষ্টি বজায় রাখা সম্ভব।


শীতে দিনে কত লিটার পানি পান করা জরুরি? জেনে নিন

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৮ ১১:৪৭:৫১
শীতে দিনে কত লিটার পানি পান করা জরুরি? জেনে নিন
ছবি : সংগৃহীত

শীতের ঠান্ডা আবহাওয়ায় ঘাম কম হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই মানুষের তৃষ্ণা কমে যায়। এই সুযোগে অজান্তেই অনেকের পানি পানের পরিমাণ কমে আসে। অধিকাংশ মানুষ মনে করেন, শীতে শরীরের পানির চাহিদা কম থাকে। কিন্তু বাস্তবতা ঠিক উল্টো, শীতকালেও শরীরকে সুস্থ ও সচল রাখতে পর্যাপ্ত পানি পান করা গ্রীষ্মকালের মতোই জরুরি। চিকিৎসকরা সতর্ক করে বলছেন, তৃষ্ণা না পাওয়া মানেই শরীরের পানির প্রয়োজন কমে যাওয়া নয়। হজম প্রক্রিয়া সচল রাখা, রক্ত সঞ্চালন, শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ এবং শরীর থেকে বর্জ্য বের করে দেওয়ার মতো অভ্যন্তরীণ কাজগুলোর জন্য পানির কোনো বিকল্প নেই।

শীতকালে পানি কম খাওয়ার ফলে শরীরে নানা ধরনের জটিলতা দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে এই সময়ে মানুষ সাধারণত ভারী ও তেল-মসলাযুক্ত খাবার বেশি গ্রহণ করে, যা হজমের জন্য প্রচুর পানির প্রয়োজন হয়। পর্যাপ্ত পানি না পেলে গ্যাস, অ্যাসিডিটি, অম্বল ও কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যা বেড়ে যায়। এছাড়া শীতের শুষ্ক বাতাসে ত্বক এমনিতেই আর্দ্রতা হারায়। এর মধ্যে পানি কম খেলে ত্বক আরও খসখসে হয়ে পড়ে, ঠোঁট ফেটে যায় এবং চুলের সতেজতা নষ্ট হয়ে যায়। পাশাপাশি পানিশূন্যতার কারণে রক্ত সঞ্চালন ধীর হয়ে যাওয়ায় শরীরে দ্রুত ক্লান্তি ভর করে এবং কাজের প্রতি মনোযোগ কমে আসে। অনেক সময় দীর্ঘমেয়াদি পানিশূন্যতা কিডনির ওপরও চাপ সৃষ্টি করতে পারে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের দিনে কমপক্ষে ২ থেকে ২.৫ লিটার পানি পান করা প্রয়োজন। তবে ব্যক্তির ওজন এবং শারীরিক পরিশ্রমের ওপর ভিত্তি করে এই পরিমাণ কিছুটা কম-বেশি হতে পারে। তৃষ্ণা না পেলেও নিয়ম করে পানি পানের অভ্যাস গড়ে তোলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। শীতের সকালে ঘুম থেকে উঠে এক গ্লাস কুসুম গরম পানি পান করলে তা শরীরের জন্য টনিকের মতো কাজ করে। এছাড়া সারাদিন অল্প অল্প করে পানি পান করা, চা-কফির পাশাপাশি সাধারণ পানি খাওয়া এবং খাদ্যতালিকায় স্যুপ, কমলা বা পেয়ারার মতো রসালো ফল রাখার মাধ্যমে পানির ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব। প্রস্রাবের রং গাঢ় হয়ে যাওয়া শরীরে পানির অভাবের অন্যতম লক্ষণ, তাই শীত বা গ্রীষ্ম সব ঋতুতেই সুস্থতার চাবিকাঠি হলো পর্যাপ্ত পানি পান করা।


জাপানিদের মতো সুন্দর ত্বক চান? ব্যবহার করুন চালের পানি

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৮ ১০:১০:৩৬
জাপানিদের মতো সুন্দর ত্বক চান? ব্যবহার করুন চালের পানি
ছবি : সংগৃহীত

চালের পানি বা ভাতের মাড়কে অনেকেই ফেলনা মনে করেন। কিন্তু প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক অমূল্য উপাদান হিসেবে এটি বিশ্বজুড়ে সমাদৃত। ত্বককে উজ্জ্বল, মসৃণ এবং সতেজ রাখতে এর জুড়ি মেলা ভার। প্রাচীন জাপানে নারীদের রূপচর্চায় এটি প্রথাগতভাবে ব্যবহৃত হতো এবং আজও এশিয়া জুড়ে এর জনপ্রিয়তা তুঙ্গে। মূলত ভাত সেদ্ধ করার পর যে পানিটুকু অবশিষ্ট থাকে, সেটিই সৌন্দর্যের উৎস। এতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যামিনো অ্যাসিড এবং ভিটামিন বি, সি ও ই থাকে। এই উপাদানগুলো নিয়মিত ব্যবহারে ত্বকের টেক্সচার ও স্বাস্থ্যের ওপর আশ্চর্যজনক প্রভাব পড়ে।

রাতে ঘুমানোর আগে চালের পানি মুখে লাগিয়ে রেখে সকালে ধুয়ে ফেললে ত্বকের ইলাস্টিসিটি বা স্থিতিস্থাপকতা বাড়ে। এটি ব্রণ ও পিম্পল শুকাতে সাহায্য করার পাশাপাশি ত্বকের রঙ ও টেক্সচার উন্নত করে। ফলে ত্বক থাকে কোমল ও মসৃণ। এর কার্যকারিতা আরও বাড়াতে চাইলে চালের পানির সঙ্গে অ্যালোভেরা জেল মিশিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে, যা ত্বকে বাড়তি পুষ্টি জোগায়।

যাদের ত্বক তৈলাক্ত, তাদের জন্য চালের পানি আশীর্বাদস্বরূপ। এটি ত্বকের অতিরিক্ত তেল শোষণ করে এবং লোমকূপের মুখ বা রন্ধ্র বন্ধ রাখতে সহায়তা করে, যা ব্রণের ঝুঁকি কমায়। এতে থাকা ভিটামিন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকে প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা এনে দেয়। প্রতিদিন টোনার হিসেবে অথবা ফেস মাস্কের সঙ্গে মিশিয়ে ব্যবহার করলে ত্বক আরও স্বাস্থ্যকর ও তেলমুক্ত থাকে।

অন্যদিকে শুষ্ক ত্বকের ক্ষেত্রেও চালের পানি সমানভাবে কার্যকর। এটি ত্বককে গভীর থেকে ময়েশ্চারাইজ করে এবং প্রয়োজনীয় পুষ্টি জোগায়। ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখার পাশাপাশি এটি চুলকানি ও জ্বালাপোড়া কমাতে সাহায্য করে। গরম বা শীত—যে কোনো আবহাওয়ায় ত্বক শান্ত রাখতে এবং ত্বকের সুরক্ষা স্তর বা ব্যারিয়ার ঠিক রাখতে চালের পানি অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা পালন করে।


পারফিউমের গন্ধ সারাদিন ধরে রাখার জাদুকরী কৌশল

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৭ ২০:৫৬:৪৪
পারফিউমের গন্ধ সারাদিন ধরে রাখার জাদুকরী কৌশল
ছবি : সংগৃহীত

সুগন্ধি বা পারফিউম কেবল শরীরের দুর্গন্ধ ঢাকার জন্য নয়, এটি একজন ব্যক্তির ব্যক্তিত্ব, রুচি এবং উপস্থিতির জানান দেয়। কিন্তু অনেকেই না জেনে ভুলভাবে পারফিউম ব্যবহার করেন, যার ফলে দামি সুগন্ধিও তার আসল রূপ প্রকাশ করতে পারে না এবং দ্রুত মিলিয়ে যায়।

বেশির ভাগ মানুষ পারফিউম স্প্রে করার পর দুই হাতের কব্জি একে অপরের সঙ্গে ঘষে নেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি সুগন্ধি ব্যবহারের সবচেয়ে বড় ভুল। এই ঘর্ষণের ফলে ত্বকে তাপ উৎপন্ন হয় এবং প্রাকৃতিক এনজাইম তৈরি হয়, যা পারফিউমের মূল ঘ্রাণ বদলে দেয়।

তাই কব্জি বা ত্বকে স্প্রে করার পর তা ঘষাঘষি না করে প্রাকৃতিকভাবে শুকাতে দেওয়া উচিত। এতে সুগন্ধির গন্ধ ধীরে ধীরে প্রকাশ পায় এবং এর স্থায়িত্ব বাড়ে।

সুগন্ধি ব্যবহারের ক্ষেত্রে শরীরের সঠিক স্থান নির্বাচন করা অত্যন্ত জরুরি। শরীরের যেসব জায়গায় নাড়ির স্পন্দন বা পালস রেট বেশি, সেখানেই পারফিউম সবচেয়ে ভালো কাজ করে। ঘাড়ের পাশ, কব্জি, কানের পেছন এবং বক্ষবিভাজিকার মতো উষ্ণ স্থানগুলো থেকে সুগন্ধ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।

বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন, শরীর থেকে অন্তত ৫ ইঞ্চি দূর থেকে পালস পয়েন্টগুলোতে দুই-তিনবার স্প্রে করলেই যথেষ্ট। এছাড়া চুলেও সামান্য স্প্রে করে নেওয়া যেতে পারে।

শুষ্ক ত্বকে পারফিউম ব্যবহার করলে গন্ধ খুব দ্রুত হারিয়ে যায়। ত্বক আর্দ্র না থাকলে সুগন্ধি ধরে রাখার মতো কোনো স্তর তৈরি হয় না। তাই পারফিউম ব্যবহারের আগে ত্বকে সামান্য ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নেওয়া ভালো।

বিশেষ করে গোসলের পর যখন ত্বক পরিষ্কার এবং হালকা ভেজা থাকে, তখন পারফিউম ব্যবহার করলে তা দীর্ঘক্ষণ স্থায়ী হয়। তবে মনে রাখা জরুরি, একই সুগন্ধি সবার শরীরে একরকম ঘ্রাণ ছড়ায় না। শরীরের নিজস্ব রাসায়নিক বৈশিষ্ট্যের ওপর ভিত্তি করে পারফিউমের গন্ধ বদলে যেতে পারে।

অনেকের ধারণা, বেশি স্প্রে করলে হয়তো গন্ধ বেশি হবে। এই ধারণাটি ভুল। অতিরিক্ত সুগন্ধি অনেক সময় আশেপাশের মানুষের বিরক্তি ও অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাই পরিমিত ব্যবহারই কাম্য; সাধারণত ২-৩টি স্প্রেই সারাদিনের জন্য যথেষ্ট হতে পারে।


চুল পড়া বন্ধের ৬টি সহজ ও কার্যকরী ঘরোয়া উপায়

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৭ ২০:৫১:০১
চুল পড়া বন্ধের ৬টি সহজ ও কার্যকরী ঘরোয়া উপায়
ছবি : সংগৃহীত

বর্তমান সময়ে চুল পড়া নারী ও পুরুষ উভয়ের জন্যই একটি সাধারণ কিন্তু উদ্বেগজনক সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। মানসিক চাপ, অপুষ্টি, হরমোনের পরিবর্তন কিংবা অতিরিক্ত কেমিক্যালযুক্ত পণ্যের ব্যবহার—নানা কারণে অকালে ঝরে যাচ্ছে চুল।

তবে হতাশ হওয়ার কিছু নেই। হাতের কাছে থাকা কিছু সাধারণ ঘরোয়া উপাদান নিয়মিত ব্যবহার করলে এই সমস্যা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব। এর মধ্যে অন্যতম কার্যকর উপাদান হলো পেঁয়াজের রস।

পেঁয়াজের রসে প্রচুর পরিমাণে সালফার থাকে, যা মাথার ত্বকের রক্ত সঞ্চালন বাড়াতে সাহায্য করে। এটি নতুন চুল গজাতেও বেশ কার্যকর। সপ্তাহে ২-৩ দিন পেঁয়াজের রস মাথায় লাগিয়ে ৩০ মিনিট পর ধুয়ে ফেললে ভালো ফল পাওয়া যায়।

চুলের গভীর থেকে পুষ্টি জোগাতে নারকেল তেলের জুড়ি নেই। এর সঙ্গে লেবুর রস মিশিয়ে ব্যবহার করলে খুশকি দূর হয়। ২ টেবিল চামচ নারকেল তেলের সঙ্গে ১ চা চামচ লেবুর রস মিশিয়ে ম্যাসাজ করলে চুল সতেজ থাকে।

চুল পড়া বন্ধে মেথি বীজের ব্যবহার বহু পুরোনো। এতে থাকা প্রোটিন ও নিকোটিনিক অ্যাসিড চুলকে মজবুত করে। সারা রাত ভিজিয়ে রাখা মেথি সকালে বেটে মাথায় লাগালে চুল পড়া কমে।

মাথার ত্বক ঠান্ডা রাখতে এবং চুল মজবুত করতে অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করা যেতে পারে। এটি সরাসরি স্ক্যাল্পে লাগিয়ে ৩০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলতে হয়।

এছাড়া আমলকীতে থাকা ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট চুল ঘন করতে সহায়তা করে। শুকনো আমলকীর গুঁড়া নারকেল তেলের সঙ্গে মিশিয়ে গরম করে চুলে লাগালে উপকার পাওয়া যায়।

চুলকে ভেতর থেকে পুষ্টি দিতে ডিম ও অলিভ অয়েলের হেয়ার মাস্ক দারুণ কাজ করে। ডিমে থাকা প্রোটিন ও বায়োটিন চুলের স্বাস্থ্য ফেরাতে সাহায্য করে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধু বাহ্যিক যত্নই যথেষ্ট নয়, চুল পড়া কমাতে জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনাও জরুরি। প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি পান করা, প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার খাওয়া এবং অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা পরিহার করতে হবে।

তবে ঘরোয়া টোটকা ব্যবহারের পরও যদি চুল পড়া অস্বাভাবিক হারে বাড়তে থাকে বা মাথায় টাক পড়ে যায়, তবে দেরি না করে চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।


পিরিয়ডের তীব্র ব্যথা: শরীরে বাসা বাঁধছে যে গোপন রোগ

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৭ ১৯:০০:১০
পিরিয়ডের তীব্র ব্যথা: শরীরে বাসা বাঁধছে যে গোপন রোগ
ছবি : সংগৃহীত

ঋতুস্রাবের সময় তলপেটে তীব্র ব্যথা হবে—এমন ধারণা আমাদের সমাজে দীর্ঘকাল ধরে চলে আসছে। ব্যথা কমাতে অনেকেই গরম পানির ব্যাগ বা ব্যথানাশক ওষুধের ওপর নির্ভর করেন। কিন্তু চিকিৎসকরা বলছেন, এই ব্যথা সবসময় স্বাভাবিক নয় এবং একে অবহেলা করা উচিত নয়।

শরীরের সামান্য কিছু পরিবর্তন বড় কোনো রোগের ইঙ্গিত হতে পারে। বিশেষ করে ঋতুস্রাবের সময় অসহ্য যন্ত্রণা ‘এন্ডোমেট্রিওসিস’ নামক একটি জটিল রোগের লক্ষণ হতে পারে। সময়মতো চিকিৎসা না হলে এটি নারীদের বন্ধ্যত্বের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

কুয়ালালামপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালের স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. শরিফা হালিমা জাফর জানিয়েছেন, প্রতি ১০ জন নারীর মধ্যে একজন এই রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। অথচ সচেতনতার অভাবে অনেকেই এটি বুঝতে পারেন না।

সাধারণত জরায়ুর ভেতরে এন্ডোমেট্রিয়াম নামক একটি স্তর থাকে, যা প্রতি মাসে খসে ঋতুস্রাব হিসেবে শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। কিন্তু এন্ডোমেট্রিওসিস হলে এই স্তরটি জরায়ুর বাইরে যেমন ডিম্বাশয়, ফ্যালোপিয়ান টিউব বা পেলভিসে তৈরি হতে পারে।

সমস্যা হলো, জরায়ুর বাইরের এই স্তর থেকেও রক্তপাত হয়, কিন্তু সেই রক্ত শরীর থেকে বের হতে পারে না। ফলে ভেতরেই রক্ত জমাট বেঁধে প্রদাহ ও তীব্র ব্যথার সৃষ্টি করে।

ডা. শরিফা সতর্ক করে বলেন, অনেকেই এই উপসর্গগুলোকে সাধারণ মাসিকের ব্যথা মনে করে ভুল করেন। ফলে রোগ নির্ণয় করতে ৬ থেকে ১০ বছর পর্যন্ত দেরি হয়ে যায়। আর এই দীর্ঘলগ্নের দেরি ডেকে আনতে পারে চিরস্থায়ী বন্ধ্যত্ব বা জটিল স্বাস্থ্যঝুঁকি।

এই রোগের অন্যতম প্রধান লক্ষণ হলো ঋতুস্রাবের সময় অতিরিক্ত রক্তপাত। যদি হঠাৎ করে স্রাব বেড়ে যায় বা ঘন ঘন স্যানিটারি ন্যাপকিন বদলাতে হয়, তবে তা অবশ্যই উদ্বেগের বিষয়।

যৌনমিলনের সময় বা পরে তীব্র ব্যথা হওয়াও এই রোগের একটি বড় উপসর্গ। পেলভিক অঙ্গগুলোতে ক্ষত থাকলে এমনটি হতে পারে, যা অনেক সময় নারীদের যৌনজীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

এছাড়া মলত্যাগের সময় ব্যথা, জ্বালাপোড়া বা রক্তপাত হওয়াকেও অনেকে সাধারণ পেটের সমস্যা বা আইবিএস ভেবে ভুল করেন। কিন্তু কোষ্ঠকাঠিন্য বা মলত্যাগের সমস্যাও এন্ডোমেট্রিওসিসের লক্ষণ হতে পারে।

দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা থেকে শরীরে অকারণে ক্লান্তি ভর করতে পারে। পর্যাপ্ত বিশ্রামের পরও যদি ক্লান্তি না কাটে, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

সবচেয়ে ভয়ের বিষয় হলো, এন্ডোমেট্রিওসিসের কারণে জরায়ু বা ডিম্বাশয়ে আঠালো স্তর তৈরি হয়ে ডিম্বাণু নিষিক্তকরণে বাধা দিতে পারে। তাই পিরিয়ডের ব্যথাকে ‘স্বাভাবিক’ ভেবে অবহেলা না করে দ্রুত বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।


খালি পেটে পাকা কলা খাওয়া: উপকার, ঝুঁকি ও সঠিক নিয়ম

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৭ ১৪:১৭:৪৭
খালি পেটে পাকা কলা খাওয়া: উপকার, ঝুঁকি ও সঠিক নিয়ম
ছবি: সংগৃহীত

সকালে ঘুম থেকে উঠে অনেকেই দ্রুত শক্তি পাওয়ার আশায় খালি পেটে পাকা কলা খান। সহজলভ্য, স্বল্পমূল্য এবং পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ হওয়ায় কলা দীর্ঘদিন ধরেই স্বাস্থ্যকর খাবারের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে। তবে পুষ্টিবিদ ও চিকিৎসকদের মতে, খালি পেটে কলা খাওয়ার বিষয়টি সবার জন্য সমানভাবে উপকারী নয়। কারও জন্য এটি উপকার বয়ে আনলেও, কিছু মানুষের ক্ষেত্রে উল্টো শারীরিক সমস্যা তৈরি করতে পারে।

কেন খালি পেটে কলা খেলে দ্রুত শক্তি পাওয়া যায়

পাকা কলায় প্রাকৃতিক শর্করা যেমন গ্লুকোজ, ফ্রুক্টোজ ও সুক্রোজ থাকে, যা খুব সহজেই হজম হয়ে রক্তে মিশে যায়। সকালে শরীর দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকার ফলে এনার্জি লেভেল কমে যায়। এ অবস্থায় কলা খেলে তাৎক্ষণিক শক্তি পাওয়া সম্ভব হয়। এজন্য অনেক ক্রীড়াবিদ বা নিয়মিত ব্যায়ামকারীরা সকালে বা ওয়ার্কআউটের আগে কলা খেয়ে থাকেন।

হজমে সহায়ক হলেও সবাই সমান উপকার পায় না

কলায় থাকা খাদ্যআঁশ হজম প্রক্রিয়াকে গতিশীল করে এবং অন্ত্রের কার্যক্রম উন্নত করে। নিয়মিত পরিমিত পরিমাণে কলা খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য কমে এবং পেট পরিষ্কার থাকতে সাহায্য করে। তবে খালি পেটে কলা খেলে কিছু মানুষের ক্ষেত্রে উল্টো পেট ফাঁপা, অম্বল বা গ্যাসের সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে যাদের আগে থেকেই অ্যাসিডিটি বা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা আছে, তাদের জন্য এটি অস্বস্তিকর হতে পারে।

রক্তে শর্করার হঠাৎ ওঠানামার ঝুঁকি

খালি পেটে কলা খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বেড়ে যায়। কিছু সময় পর ইনসুলিন নিঃসরণের কারণে সেই মাত্রা আবার দ্রুত নেমে আসতে পারে। এই ওঠানামার ফলে মাথা ঘোরা, দুর্বল লাগা বা অতিরিক্ত ক্ষুধা অনুভূত হতে পারে। ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে এই প্রক্রিয়া আরও ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে, কারণ এতে রক্তে শর্করার নিয়ন্ত্রণ বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

ম্যাগনেসিয়াম ও ক্যালসিয়ামের ভারসাম্য প্রশ্নে

পাকা কলা ম্যাগনেসিয়ামের একটি ভালো উৎস। তবে খালি পেটে নিয়মিত কলা খেলে শরীরে ম্যাগনেসিয়ামের আধিক্য তৈরি হতে পারে, যা ক্যালসিয়ামের ভারসাম্যে প্রভাব ফেলতে পারে। হৃদ্‌যন্ত্রের সমস্যা আছে এমন ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে এটি দীর্ঘমেয়াদে জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে বলে কিছু গবেষণায় ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।

মানসিক স্বাস্থ্যে ইতিবাচক প্রভাব

কলায় থাকা ট্রিপটোফ্যান শরীরে সেরোটোনিন নামের ‘ফিল-গুড হরমোন’ উৎপাদনে সহায়তা করে। ফলে পরিমিত পরিমাণে কলা খেলে মেজাজ ভালো থাকে এবং মানসিক চাপ কিছুটা কমতে পারে। তবে এই উপকার পেতে কলাকে একমাত্র সমাধান হিসেবে দেখা ঠিক নয়।

ওজন বাড়ার আশঙ্কা কতটা

কলায় ক্যালরি তুলনামূলকভাবে বেশি। খালি পেটে শুধু কলা খেলে কিছু সময় পর আবার ক্ষুধা বাড়তে পারে, ফলে অতিরিক্ত খাবার গ্রহণের ঝুঁকি তৈরি হয়। এতে দীর্ঘমেয়াদে ওজন বাড়ার সম্ভাবনা থাকে। তবে কলা যদি প্রোটিন বা স্বাস্থ্যকর ফ্যাটের সঙ্গে খাওয়া হয়, তাহলে শর্করা ধীরে ধীরে হজম হয় এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা সহজ হয়।

কারা বিশেষভাবে সতর্ক থাকবেন

ডায়াবেটিস রোগী, কিডনি সমস্যায় ভুগছেন এমন ব্যক্তি, হৃদ্‌রোগী এবং দীর্ঘদিনের গ্যাস্ট্রিক বা অ্যাসিডিটির সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের খালি পেটে কলা খাওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। একই সঙ্গে খুব বেশি পাকা কলা বা একেবারে কাঁচা কলা এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।

কীভাবে কলা খেলে সবচেয়ে উপকার পাওয়া যাবে

পুষ্টিবিদদের মতে, কলা একা না খেয়ে এর সঙ্গে প্রোটিন ও ফ্যাটযুক্ত খাবার যুক্ত করাই সবচেয়ে নিরাপদ ও কার্যকর উপায়। যেমন দই, বাদাম, চিনাবাদামের মাখন বা ওটসের সঙ্গে কলা খেলে রক্তে শর্করা ধীরে মিশবে এবং শক্তি দীর্ঘস্থায়ী হবে। মাঝামাঝি পাকা কলা নির্বাচন করাও গুরুত্বপূর্ণ


সকালের ৫ অভ্যাস যা আপনাকে সারাদিন এনার্জি দেবে

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৭ ১০:২৩:০৪
সকালের ৫ অভ্যাস যা আপনাকে সারাদিন এনার্জি দেবে
ছবি: সংগৃহীত

দিনের শুরুটা কেমন হবে, তার ওপর অনেকটাই নির্ভর করে আপনার সারাদিনের এনার্জি, মনোযোগ ও মানসিক অবস্থা। ঘুম থেকে ওঠার পর প্রথম এক ঘণ্টায় আপনি কী করছেন, সেটিই নির্ধারণ করে দেয় আপনি ক্লান্ত থাকবেন নাকি কর্মচঞ্চল। স্বাস্থ্য ও লাইফস্টাইল বিশেষজ্ঞদের মতে, সকালে কিছু সহজ কিন্তু সচেতন অভ্যাস গড়ে তুললেই সারাদিন শরীর ও মন থাকে সতেজ। জেনে নিন এমন ৫টি কার্যকর সকালবেলার অভ্যাসের বিস্তারিত।

১. ঘুম ভাঙার সঙ্গে সঙ্গেই পানি পান করুন

রাতভর ঘুমের সময় শরীর প্রাকৃতিকভাবেই পানিশূন্য হয়ে পড়ে। তাই ঘুম থেকে উঠেই এক গ্লাস পরিষ্কার পানি পান করলে শরীর দ্রুত রিহাইড্রেট হয়। এটি হজমশক্তি সক্রিয় করে, মাথার ঝিমুনি কমায় এবং মেটাবলিজমকে জাগিয়ে তোলে। অনেক বিশেষজ্ঞ ঠান্ডা বা স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানি পানের পরামর্শ দিয়ে থাকেন, যা শরীরকে দ্রুত সতেজ করে।

২. সকালের প্রাকৃতিক আলোয় কিছু সময় কাটান

ভোরের সূর্যালোক শরীরের অভ্যন্তরীণ জৈবঘড়ি বা সার্কেডিয়ান রিদম ঠিক রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। সকালে জানালার পাশে দাঁড়িয়ে বা খোলা জায়গায় কিছু সময় কাটালে মস্তিষ্ক বুঝতে পারে যে দিন শুরু হয়েছে। এতে মেলাটোনিন হরমোনের মাত্রা কমে এবং মনোযোগ ও কর্মক্ষমতা বাড়ে।

৩. হালকা ব্যায়াম বা স্ট্রেচিং করুন

সকালে ভারী ব্যায়াম না করলেও ৫ থেকে ১৫ মিনিটের হালকা স্ট্রেচিং, হাঁটা বা ধীর জগিং রক্ত সঞ্চালন বাড়াতে যথেষ্ট। এতে পেশি সক্রিয় হয়, শরীরের জড়তা কাটে এবং মস্তিষ্কে অক্সিজেনের প্রবাহ বৃদ্ধি পায়। ফলস্বরূপ আপনি দিন শুরু করেন বেশি আত্মবিশ্বাস ও উদ্যম নিয়ে।

৪. পুষ্টিকর নাস্তা দিয়ে দিন শুরু করুন

সকালের নাস্তা বাদ দেওয়া শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। প্রোটিন ও জটিল কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ খাবার যেমন ডিম, ওটস, ফল বা শস্যজাতীয় খাবার শরীরে ধীরে ধীরে শক্তি সরবরাহ করে। এতে রক্তে শর্করার ভারসাম্য বজায় থাকে এবং দুপুর পর্যন্ত শক্তির ঘাটতি অনুভূত হয় না।

৫. সকালবেলা মোবাইল ও সোশ্যাল মিডিয়া এড়িয়ে চলুন

ঘুম থেকে উঠেই মোবাইল ফোনে খবর, মেসেজ বা সোশ্যাল মিডিয়া স্ক্রল করা মানসিক চাপ বাড়াতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, দিনের শুরুতেই অতিরিক্ত তথ্য গ্রহণ মস্তিষ্ককে ক্লান্ত করে তোলে। তাই প্রথম ৩০ থেকে ৬০ মিনিট ফোন ব্যবহার না করে নিজের শরীর ও মনে মনোযোগ দেওয়া বেশি উপকারী।

এই পাঁচটি অভ্যাস নিয়মিত অনুসরণ করলে শুধু শরীর নয়, মানসিকভাবেও আপনি থাকবেন বেশি স্থির ও কর্মক্ষম। ধীরে ধীরে এগুলোকে রুটিনে পরিণত করলে আপনার দিনের মান যেমন বদলাবে, তেমনি দীর্ঘমেয়াদে উন্নত হবে সামগ্রিক জীবনযাপন।


ভোরের স্বপ্ন কি সত্যিই ফলে? যা বলছে বিজ্ঞান

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৭ ০৯:৫৭:৫১
ভোরের স্বপ্ন কি সত্যিই ফলে? যা বলছে বিজ্ঞান
ছবি : সংগৃহীত

ভোরের স্বপ্ন নিয়ে আমাদের সমাজে দীর্ঘদিনের একটি প্রচলিত ধারণা রয়েছে। অনেকেই বিশ্বাস করেন, ভোরের স্বপ্ন নাকি সত্যি হয়। বিশেষ করে ফুটবলপ্রেমীদের জীবনে এমন অভিজ্ঞতার কথা প্রায়ই শোনা যায়।

ধরুন, আপনি আর্জেন্টিনার ভক্ত এবং দলের বিশ্বকাপ জয় নিয়ে চিন্তিত। গভীর রাতে ঘুমানোর পর ভোরে স্বপ্ন দেখলেন মেসি ট্রফি হাতে দৌড়াচ্ছেন। ঘুম ভাঙার পর হয়তো ভাবলেন এটি শুধুই স্বপ্ন।

কিন্তু খেলা শেষে যখন দেখা যায় আর্জেন্টিনা সত্যিই জিতেছে, তখন মনে প্রশ্ন জাগে। এটি কি শুধুই কাকতালীয় ঘটনা, নাকি এর পেছনে কোনো রহস্য আছে? বিশেষজ্ঞরা অবশ্য ভিন্ন কথা বলছেন।

বিজ্ঞানীদের মতে, ভোরের স্বপ্ন সত্যি হবে—এমন কোনো বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই। এটি মূলত একটি লোকজ বিশ্বাস বা কুসংস্কার মাত্র। আধুনিক বিজ্ঞান এই ভবিষ্যৎবাণীর ধারণাকে সমর্থন করে না।

তবে ভোরের স্বপ্ন কেন মানুষের মনে বেশি দাগ কাটে, তার একটি বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা রয়েছে। মানুষের ঘুম সাধারণত ৪ থেকে ৬টি চক্রের মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হয়। এর মধ্যে স্বপ্ন দেখার প্রধান ধাপ হলো ‘আরইএম’ (REM) বা র‍্যাপিড আই মুভমেন্ট।

এই পর্যায়ে ঘুমন্ত মানুষের চোখের মণি দ্রুত নড়াচড়া করে এবং মানুষ স্বপ্ন দেখে। রাতের শেষভাগে বা ভোরের দিকে এই আরইএম পর্যায়টি তুলনামূলক দীর্ঘ হয়। ফলে এই সময়ের স্বপ্নগুলো বেশি স্পষ্ট হয়।

ঘুমের শেষ ভাগে স্বপ্ন দেখার পরপরই সাধারণত মানুষের ঘুম ভেঙে যায়। ফলে সেই স্বপ্নের স্মৃতি মস্তিষ্কে একদম তাজা থাকে। একারণেই অন্য সময়ের তুলনায় ভোরের স্বপ্ন মানুষ বেশি মনে রাখতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কখনো কখনো কাকতালীয়ভাবে কোনো স্বপ্ন বাস্তব ঘটনার সঙ্গে মিলে যেতে পারে। কিন্তু এর মানে এই নয় যে স্বপ্ন ভবিষ্যৎ বলে দেয়। মস্তিষ্ক মূলত সারাদিনের ভাবনা ও আবেগ থেকেই স্বপ্ন তৈরি করে।

তাই ভোরের স্বপ্ন দেখে ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করা বা কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া যুক্তিসংগত নয়। তবে স্বপ্ন যে মানুষের অবচেতন মনের কৌতূহল ও অনুভূতিকে নাড়া দেয়, তা অস্বীকার করার উপায় নেই।

পাঠকের মতামত:

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

রাষ্ট্রের ধারণাটি একসময় কেবল প্রশাসনিক ক্ষমতা, আইনের শাসন এবং নিরাপত্তা প্রদানের সঙ্গে সম্পর্কিত ছিল। কিন্তু আধুনিক বিশ্বে রাষ্ট্রের ভূমিকা এখন... বিস্তারিত