কারাবন্দি নোবেলজয়ী মোহাম্মদির বিরুদ্ধে ইরান সরকারের হুমকি!

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ১২ ২০:১১:১৯
কারাবন্দি নোবেলজয়ী মোহাম্মদির বিরুদ্ধে ইরান সরকারের হুমকি!

শান্তিতে নোবেল বিজয়ী এবং ইরানের বিশিষ্ট মানবাধিকারকর্মী নার্গিস মোহাম্মদি সম্প্রতি তেহরান থেকে প্রাণনাশের হুমকি পেয়েছেন বলে জানিয়েছে নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটি। শুক্রবার (১১ জুলাই) প্রকাশিত এক বিবৃতিতে কমিটি জানায়, ইরানের সরকারপন্থি কিছু এজেন্ট তার প্রতি এই হুমকি দিয়েছে, যা এখন আন্তর্জাতিকভাবে গভীর উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

নারীদের অধিকার, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের পক্ষে সোচ্চার ভূমিকার জন্য ২০২৩ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হন নার্গিস মোহাম্মদি। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ইরান সরকারের দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে আসছেন। বর্তমানে তিনি সরকারের কড়া নজরদারির মধ্যে আছেন এবং এর আগে তিনি তেহরানের berucht এভিন কারাগারে আটক ছিলেন। স্বাস্থ্যগত কারণ দেখিয়ে তাকে সাময়িক মুক্তি দেওয়া হলেও, তার আইনজীবীরা সবসময় আশঙ্কা করে আসছেন যে, যেকোনো মুহূর্তে তাকে আবারও গ্রেপ্তার করা হতে পারে।

নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটির পক্ষ থেকে প্রকাশিত বিবৃতিতে জানানো হয়, মোহাম্মদির আইনজীবীদের মাধ্যমে ইঙ্গিতপূর্ণভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, তিনি যদি ইরান কিংবা আন্তর্জাতিক পরিসরে গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের পক্ষে অবস্থান নেওয়া চালিয়ে যান, তাহলে তার জীবন হুমকির মুখে পড়বে।

নোবেল কমিটির চেয়ারম্যান ইয়োরগেন ওয়াটনে ফ্রাইডন এই হুমকিকে ‘ভয়ানক ও অগ্রহণযোগ্য’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। তিনি বলেন, এই হুমকির মধ্য দিয়ে শুধু নার্গিস মোহাম্মদি নয়, বরং ইরানে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা চর্চাকারী প্রতিটি নাগরিকের নিরাপত্তা নিয়েই এখন প্রশ্ন উঠছে।

নার্গিস মোহাম্মদির প্রতি এই হুমকি এমন এক সময়ে এলো, যখন ইরানে ভিন্নমতের প্রতি সহিষ্ণুতা কমে যাচ্ছে এবং আন্তর্জাতিক মহল দেশটির মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে ক্রমাগত উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছে। ইরানের সরকার এখনো এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি।

উল্লেখ্য, নার্গিস মোহাম্মদির লড়াই মূলত ইরানে নারীদের ওপর চলমান দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে। তিনি বহু বছর ধরে কারাবন্দি থেকেও তার মানবাধিকার চর্চা বন্ধ রাখেননি। ২০২৩ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কার প্রাপ্তির সময় তিনি কারাগারেই ছিলেন। ফলে তার সন্তানরাই তার পক্ষে পুরস্কার গ্রহণ করেন—যা বিশ্বব্যাপী আলোড়ন তোলে।

নার্গিস মোহাম্মদির লড়াই এখন একক কোনো ব্যক্তির নয়, বরং এটি হয়ে উঠেছে গোটা ইরানি সমাজে স্বাধীনতা ও অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রতীক। এই হুমকি সেই সংগ্রামের পথকে আরও কঠিন করে তুললেও, তার সাহস ও অবিচল অবস্থান বিশ্বের বিভিন্ন গণতান্ত্রিক চেতনায় উৎসাহ যোগাচ্ছে।

/আশিক

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ