যুক্তরাজ্যের হুঁশিয়ারি: গাজায় সংকট চললে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ০৯ ১৪:০২:২৭
যুক্তরাজ্যের হুঁশিয়ারি: গাজায় সংকট চললে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ

গাজায় চলমান মানবিক সংকট নিরসনে কার্যকর উদ্যোগ না নিলে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে যুক্তরাজ্য। মঙ্গলবার (৯ জুলাই) দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি পার্লামেন্টের পররাষ্ট্রবিষয়ক কমিটির এক বৈঠকে এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সমর্থনে গঠিত ‘গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএফএইচ)’ কাঙ্ক্ষিত ফল আনতে ব্যর্থ হয়েছে। “এই ফাউন্ডেশনকে আমরা সমর্থন করি না। এটি কার্যকরভাবে কাজ করছে না। বহু মানুষ এখনো অনাহারে, অনেকেই প্রাণ হারিয়েছেন,” বলেন ল্যামি।

বৈঠকে এক আইনপ্রণেতার প্রশ্নের উত্তরে ল্যামি বলেন, “গাজায় এই সহনীয়তার বাইরে যাওয়া পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে, হ্যাঁ, যুক্তরাজ্য আরও কঠোর পদক্ষেপ নেবে।”

সম্প্রতি যুক্তরাজ্য অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, নিউজিল্যান্ড ও নরওয়ের সঙ্গে মিলে ইসরায়েলি কট্টরপন্থী দুই মন্ত্রী—ইতামার বেন-গভির ও বেজালেল স্মোটরিচ—এর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। তাদের বিরুদ্ধে পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে সহিংসতা উসকে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।

ইতোমধ্যে যুক্তরাজ্য ইসরায়েলের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য আলোচনা স্থগিত করেছে এবং গাজায় খাদ্য সংকট শুরু হলে অস্ত্র রপ্তানির ওপরও আংশিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।

তবে মানবাধিকার সংগঠনগুলোর মতে, এসব পদক্ষেপ এখনও প্রতীকী পর্যায়ে রয়েছে এবং তেল আবিবের ওপর যথেষ্ট চাপ তৈরি করতে পারছে না।

বৈঠকে ল্যামি আরও বলেন, পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বসতি সম্প্রসারণ ও দখলদারি আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের শামিল। তবে যুক্তরাজ্যের চাপের ফলে ইসরায়েলের নীতিতে কি কোনো পরিবর্তন এসেছে—এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “পরিবর্তন এখনো অপর্যাপ্ত।”

তবু যুক্তরাজ্যের অবস্থানকে ইউরোপ ও জি-৭ মিত্রদের তুলনায় অনেক বেশি বলিষ্ঠ বলে দাবি করেন তিনি।

ল্যামি জানান, যুক্তরাজ্য এখনই ফিলিস্তিনকে একতরফাভাবে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে চায় না। “আমরা চাই এই স্বীকৃতি এমন এক সময়ে আসুক, যা বাস্তব সমাধানের পথ খুলে দেবে।”

তবে পররাষ্ট্রবিষয়ক কমিটির চেয়ার এমিলি থর্নবেরি পাল্টা যুক্তি তুলে ধরে বলেন, “যদি আমরা আরও অপেক্ষা করি, তবে স্বীকৃতি দেওয়ার মতো বাস্তবতা আর অবশিষ্ট থাকবে না। এখনই পদক্ষেপ নেওয়ার সময়।”

প্রসঙ্গত, যুক্তরাজ্য জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য এবং ইসরায়েলের অন্যতম বড় বাণিজ্যিক অংশীদার। দেশটির রয়্যাল এয়ার ফোর্স গাজায় বন্দি ইসরায়েলিদের অবস্থান শনাক্তে নজরদারি অভিযানও চালিয়েছে। তবে ফিলিস্তিনি পক্ষে আন্দোলনকারী সংগঠন ‘প্যালেস্টাইন অ্যাকশন’ নিষিদ্ধ করে এবং তাদের বহু সদস্যকে গ্রেপ্তার করায় দেশটির নীতিতে দ্বৈত অবস্থানের অভিযোগও উঠেছে।

/আশিক

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ