ইরান- ইসরায়েল সংঘাত
ইরানে আগাম হামলা: ট্রাম্পের ‘দুই সপ্তাহের সময়’ কি ছিল কৌশলগত বিভ্রান্তি?

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বৃহস্পতিবার ঘোষণা দিয়েছিলেন, ইরানকে সম্ভাব্য সামরিক হামলা এড়াতে সর্বোচ্চ দুই সপ্তাহ সময় দেওয়া হচ্ছে। তিনি তখন বলেছিলেন, “বেধে দেওয়া সময়ে ইরান যদি নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ না করে, তাহলে তাদের আর ফিরতে দেওয়া হবে না।”
কিন্তু এর মাত্র দুদিনের মাথায় শনিবার রাতেই যুক্তরাষ্ট্র ইরানের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায়। হামলার লক্ষ্য ছিল ফোরদো, নাতাঞ্জ এবং ইস্পাহান। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এ হামলাকে "সফল" আখ্যা দিয়ে জানান, মার্কিন বি-২ স্টেলথ বোমারু বিমান ব্যবহারের মাধ্যমে এই হামলা অত্যন্ত নিখুঁতভাবে পরিচালিত হয় এবং সব বিমান নিরাপদে ফিরে এসেছে।
প্রশ্ন উঠছে, ট্রাম্প যে ‘দুই সপ্তাহের সময়’ বেঁধে দিয়েছিলেন, তা মাত্র দুই দিনেই কেন ভঙ্গ হলো? বিশ্লেষকরা বলছেন, এটা ছিল একটি কৌশলগত বিভ্রান্তি, যা মূলত ইরানকে সাময়িকভাবে আশ্বস্ত করে তৎপরতা মন্থর করার জন্যই ব্যবহার করা হয়েছিল।
আবার অনেকে বলছেন, মার্কিন প্রশাসনে ইরান বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি স্টিভ উইটকফের সঙ্গে চলমান গোপন আলোচনা ভেস্তে যাওয়ায় দ্রুত হামলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। অর্থাৎ, সময় বেঁধে দেওয়ার পেছনে মূল উদ্দেশ্য ছিল আলোচনার জায়গা তৈরি করা, যা ব্যর্থ হওয়ায় পরিকল্পিত সময়সীমার আগেই আক্রমণ চালানো হয়।
যদিও হামলার সরাসরি ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো বিবরণ এখনো প্রকাশ করা হয়নি, তবে তেহরানের কূটনৈতিক মহলে এবং ইরানের ঘনিষ্ঠ সামরিক বিশ্লেষকদের মধ্যে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই হামলা ইরানের প্রতিরক্ষা নীতিতে নতুন মোড় আনতে পারে এবং পারমাণবিক কর্মসূচিকে আরও অপ্রতিরোধ্য করে তুলতে পারে।
হামলার পরপরই ডোনাল্ড ট্রাম্প এক বিবৃতিতে বলেন, “আমরা এখনো শান্তির জন্য দরজা খোলা রাখছি।” তার এই বক্তব্যে কিছু বিশ্লেষক আশাবাদী হলেও, ইরান ইতোমধ্যেই স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে, তারা ইসরায়েলের আগ্রাসনের মধ্য দিয়ে কোনো আলোচনায় বসবে না।
ইসরায়েল বর্তমানে ইরানের সামরিক ক্ষমতা দুর্বল করতে ধারাবাহিক হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু ইরানের হাতে এখনো ব্যাপক সংখ্যক ব্যালিস্টিক মিসাইল ও ড্রোন রয়েছে। এই পরিস্থিতি নতুন এক সামরিক মেরুকরণ ও উত্তেজনার জন্ম দিতে পারে, যা মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে আরও বড় সংঘর্ষের ঝুঁকি সৃষ্টি করছে।
ট্রাম্প প্রশাসনের হঠাৎ এই আগ্রাসী কৌশল এবং কথিত ‘দুই সপ্তাহের সময়সীমা’ মূলত ছিল কূটনৈতিক কৌশল যা দ্রুত সামরিক পদক্ষেপে রূপ নিয়েছে। ইরান-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক এখন এক অগ্নিস্ফুলিঙ্গে দাঁড়িয়ে আছে, যেখানে একপাশে আলোচনার দরজা খোলা রাখা হলেও অপরপাশে যুদ্ধের শীতল ছায়া ঘন হয়ে উঠছে। এই মুহূর্তে বিশ্ববাসীর চোখ তেহরানের প্রতিক্রিয়ার দিকে কারণ এই প্রতিক্রিয়াই ঠিক করে দেবে, সামনে আলোচনা আসবে না কি আরও ভয়াবহ সংঘর্ষ।
-ইসরাত, নিজস্ব প্রতিবেদক
পাঠকের মতামত:
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- দীর্ঘ পতনের পর শেয়ারবাজারে এল সুখবর!
- জুলাই চার্টার ও জাতীয় ঐকমত্য: জামায়াতের অনুপস্থিতি কতটা যুক্তিসঙ্গত?
- বিশ্ববিদ্যালয় সংকট, বাজেট বৈষম্য ও শিক্ষায় ন্যায্যতার দাবি
- উৎসব: ঈদের পর্দায় অনবদ্য এক উদযাপন
- জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় ভোট হবে কিনা জানালেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা
- আকাশে বিস্ফোরণ, মাটিতে মৃত্যু: ক্লাস্টার বোমায় জর্জরিত ইসরায়েল
- Clash of Civilizations: মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধের নতুন রূপরেখা
- চলমান সংঘাতে ইসরায়েলের ১০টি বড় ক্ষতি
- জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে মুখোমুখি বিশ্ব শক্তিগুলো
- শরীয়তপুরের ডিসির নারী কেলেঙ্কারি ও ভিডিও ফাঁস: সর্বশেষ আপডেট
- শেয়ারবাজারে মুনাফা কমেছে যেসব ব্যাংকের
- তবে কি বন্ধ হতে যাচ্ছে ইরানের পরমাণু কার্যক্রম, যা জানা গেল
- প্রতিদিন ভোরে যে দোয়া পড়তেন বিশ্বনবী (সা.)
- ইসরায়েলে ইরানি মিসাইল, নিহত অন্তত ৭
- তুরস্ক, সৌদি, ইরান-পাকিস্তানের হাতে ‘ইসলামিক আর্মি’ গঠন! কি হতে যাচ্ছে?