পারমাণবিক ইরান ঠেকাতে ওয়াশিংটন-লন্ডনের জোট

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ২০ ১১:২৬:১৭
পারমাণবিক ইরান ঠেকাতে ওয়াশিংটন-লন্ডনের জোট

ইরান যেন কখনো পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি বা অর্জন করতে না পারে এ ব্যাপারে যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র ঐকমত্যে পৌঁছেছে। সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি ও যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও–এর মধ্যে এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বৈঠক শেষে যৌথ বিবৃতিতে জানানো হয়, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি বিশ্ব নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে উঠছে, এবং তা প্রতিহত করাই এখন অগ্রাধিকার।

বর্তমানে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ঘিরে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। ইসরাইল একের পর এক ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার রাতে ইসরাইল দাবি করেছে, তারা আরাকের একটি ‘নিষ্ক্রিয় পারমাণবিক চুল্লি’ ও নাতানজের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্রকে লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালিয়েছে।

এই হামলাগুলো এমন এক সময় ঘটছে, যখন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার কূটনৈতিক প্রচেষ্টায় ব্যস্ত। ডেভিড ল্যামি বলেন, “মধ্যপ্রাচ্য এই মুহূর্তে এক বিপজ্জনক মোড়ে এসে দাঁড়িয়েছে। একটি কূটনৈতিক সমাধান অর্জনের জন্য আগামী দুই সপ্তাহে একটি বাস্তব সুযোগ রয়েছে।”

এর আগে হোয়াইট হাউস জানায়, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দুই সপ্তাহের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেবেন যে, যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি ইরান-ইসরাইল সংঘাতে জড়াবে কি না। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এখন নিয়মিত জাতীয় নিরাপত্তা টিমের সঙ্গে সিচুয়েশন রুমে বৈঠক করছেন, এবং তিনি জানিয়েছেন কূটনৈতিক সমাধানই তাঁর অগ্রাধিকার।

সাম্প্রতিক সংঘাতে ইসরাইল জানিয়েছে, তাদের অন্তত ২৪ জন নাগরিক নিহত হয়েছেন। অপরদিকে, ওয়াশিংটনভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস অ্যাক্টিভিস্টস নিউজ এজেন্সি (HRANA) জানিয়েছে, শুক্রবার থেকে এখন পর্যন্ত ইরানে নিহতের সংখ্যা ৬৩৯ জনে পৌঁছেছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এই সহিংসতা শুধু আঞ্চলিক নয়, বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তা ও জ্বালানি বাজারেও প্রভাব ফেলছে।

যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যের এই যৌথ অবস্থানকে জাতিসংঘ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের কূটনীতিকরা স্বাগত জানাচ্ছেন, এবং এটিকে মধ্যপ্রাচ্যে সম্ভাব্য একটি যুদ্ধবিরতি ও আলোচনার পথ রচনার গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হিসেবে দেখছেন। ল্যামি বলেন, “আমরা বিশ্বাস করি আন্তর্জাতিক আইন ও কূটনৈতিক সংলাপের মাধ্যমেই এই সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধান সম্ভব।”

যখন ইসরাইল ও ইরান পরস্পরের ওপর হামলা চালিয়ে চলেছে, তখন যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক উদ্যোগ এক নতুন আশার আলো দেখাচ্ছে। তবে, পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত যে একটি ভুল পদক্ষেপ পুরো অঞ্চলকে আরও অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে।

-রফিক, নিজস্ব প্রতিবেদক

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

স্টারমারের নীরবতা: কূটনৈতিক শিষ্টাচার বনাম রাজনৈতিক সংকোচ

স্টারমারের নীরবতা: কূটনৈতিক শিষ্টাচার বনাম রাজনৈতিক সংকোচ

একজন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ, সামাজিক ব্যবসার পথপ্রদর্শক এবং গণতান্ত্রিক উত্তরণের নেতৃত্বদানকারী রাষ্ট্রনায়ক—এই তিনটি পরিচয়ই এখন সমভাবে প্রযোজ্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের... বিস্তারিত