সজল হত্যা মামলায় সাবেক মেয়র ডা. সেলিনা হায়াত আইভীর বিরুদ্ধে দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ১৮ ১২:২৫:৫২
সজল হত্যা মামলায় সাবেক মেয়র ডা. সেলিনা হায়াত আইভীর বিরুদ্ধে দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর

নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সজল হত্যা মামলায় নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের (নাসিক) সাবেক মেয়র ও আওয়ামী লীগ নেত্রী ডা. সেলিনা হায়াত আইভীর বিরুদ্ধে দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। আজ (মঙ্গলবার) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাঈনুদ্দিন কাদিরের আদালত এই আদেশ দেন।

সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় দায়েরকৃত মামলাটিতে আইভীর নাম এজাহারে না থাকলেও, তদন্তে তার সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ তুলে তাকে রিমান্ডে নিতে ৭ দিনের আবেদন জানায় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। শুনানি শেষে আদালত ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন এবং তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন।

একই দিন ফতুল্লার সাঈদ হত্যা প্রচেষ্টা মামলায়ও আইভীর বিরুদ্ধে শ্যোন অ্যারেস্ট দেখায় পুলিশ। যদিও এই দুটি মামলার কোনো এজাহারেই সরাসরি তার নাম বা অভিযুক্ত হিসেবে তার বিরুদ্ধে অভিযোগের সুস্পষ্ট বিবরণ নেই।

নারায়ণগঞ্জ আদালত পুলিশের পরিদর্শক কাইয়ুম খান গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, “আইভীর বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলাগুলোর মধ্যে এ মামলাটির তদন্তে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি আশান্বিত। আদালত সকল দিক বিবেচনা করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।”

বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু বলেন, “সিদ্ধিরগঞ্জের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় সজলকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়। ডা. আইভী এ মামলায় হুকুমদাতা হিসেবে অভিযুক্ত। তার রিমান্ডে চাঞ্চল্যকর ও প্রাসঙ্গিক তথ্য উদঘাটিত হবে বলে আমরা প্রত্যাশা করি।”

অন্যদিকে, আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আওলাদ হোসেন আদালতে বলেন, “এই দুই মামলায় ডা. আইভীর নাম কোথাও নেই। এজাহারে তার বিরুদ্ধে কোনো ধরনের ধারায় অভিযোগও নেই। এটি একটি রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে প্রণোদিত ষড়যন্ত্রমূলক পদক্ষেপ। আমরা তার ন্যায়বিচার আশা করি।”

উল্লেখ্য, চলতি বছরের ৯ মে, নারায়ণগঞ্জ শহরের পশ্চিম দেওভোগে নিজ বাসভবন থেকে ডা. সেলিনা হায়াত আইভীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর সজল হত্যা মামলায় তাকে আদালতে হাজির করলে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। বর্তমানে তার বিরুদ্ধে সিদ্ধিরগঞ্জ ও ফতুল্লা থানায় মোট ৬টি মামলা চলমান রয়েছে।

ডা. সেলিনা হায়াত আইভী দেশের প্রথম নারী নগরপিতা হিসেবে সুপরিচিত এবং দীর্ঘদিন ধরে নারায়ণগঞ্জ শহরের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে আসছেন। তাই তার বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা, গ্রেপ্তার ও রিমান্ড মঞ্জুরকে কেন্দ্র করে শহরের রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তেজনা বিরাজ করছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই মামলাগুলোর নেপথ্যে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে কি না, তা নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে বেরিয়ে আসা উচিত। একইসাথে দেশের রাজনৈতিক নেতৃত্ব ও বিচারিক ব্যবস্থা এই ঘটনায় যেভাবে সাড়া দিচ্ছে, তা ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছে সাধারণ জনগণ ও সুশীল সমাজ।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

স্টারমারের নীরবতা: কূটনৈতিক শিষ্টাচার বনাম রাজনৈতিক সংকোচ

স্টারমারের নীরবতা: কূটনৈতিক শিষ্টাচার বনাম রাজনৈতিক সংকোচ

একজন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ, সামাজিক ব্যবসার পথপ্রদর্শক এবং গণতান্ত্রিক উত্তরণের নেতৃত্বদানকারী রাষ্ট্রনায়ক—এই তিনটি পরিচয়ই এখন সমভাবে প্রযোজ্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের... বিস্তারিত