৭১-এ জামায়াত, ২৪-এ আ.লীগ—দলীয় শাস্তির দাবি

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ মে ১১ ২১:৩৭:৫১
৭১-এ জামায়াত, ২৪-এ আ.লীগ—দলীয় শাস্তির দাবি

সত্য নিউজ: ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধকালীন গণহত্যায় জামায়াতে ইসলামী এবং ২০২৪ সালের জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডে দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচার ও শাস্তি দাবি করেছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের একাংশ। রোববার গণমাধ্যমে পাঠানো এক যৌথ বিবৃতিতে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সভাপতি তামজিদ হায়দার ও সাধারণ সম্পাদক শিমুল কুম্ভকার এ দাবি জানান।

বিবৃতিতে তারা বলেন, “আওয়ামী লীগ ও জামায়াতে ইসলামী উভয়ই গণতন্ত্রবিনাশী ও মুক্তিকামী মানুষের হত্যাকারী সংগঠন। এ দুই দলকে বিচারের আওতায় না আনলে তা হবে একাত্তর ও চব্বিশের শহীদদের রক্তের সঙ্গে সরাসরি বিশ্বাসঘাতকতা।”

ছাত্র ইউনিয়নের মতে, কেবল নির্বাহী আদেশে দল নিষিদ্ধ করাই যথেষ্ট নয়। বরং বিচারিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আওয়ামী লীগ এবং তার অঙ্গসংগঠনগুলোর গত ১৬ বছরে সংঘটিত গুম, খুন, নির্যাতন ও অন্যান্য অপরাধের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে।

বিবৃতিতে বলা হয়, “যেভাবে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের হত্যাকাণ্ডে বর্তমান সরকার বিচারিক প্রক্রিয়ায় এগোচ্ছে, ঠিক একই মনোভাব ও উদ্যোগ থাকতে হবে ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে যুক্ত হয়ে জামায়াত ও তার সহযোগীদের দ্বারা সংঘটিত গণহত্যার বিচারেও।”

ছাত্র ইউনিয়নের দুই শীর্ষ নেতা আরও বলেন, “আওয়ামী লীগ দীর্ঘদিন ধরে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ভেক ধরে রাজনৈতিক বৈধতা পেতে গিয়ে নিজেরাই যুদ্ধাপরাধের আদলে নির্যাতন ও গণহত্যায় জড়িয়ে পড়েছে। এই বাস্তবতা অস্বীকার করে কেউ দায়মুক্তি পেতে পারে না। অতীতের জামায়াতকে বিচারের মুখে দাঁড় করানো সম্ভব হলে, আওয়ামী লীগকেও সেই কাঠগড়ায় দাঁড় করানো জরুরি।”

তারা দাবি করেন, “গণহত্যায় জড়িত দল হিসেবে আওয়ামী লীগ ও জামায়াত—উভয়ের বিচার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সংশোধিত আইনের আওতায় অবিলম্বে শুরু করতে হবে। এই বিচার যেন ফাঁকফোকরহীন হয় এবং শাস্তি নিশ্চিত হয়।”

ছাত্র ইউনিয়নের বিবৃতিতে ‘গণহত্যাকারী হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে শাস্তি নিশ্চিত করার’ কথাও বলা হয়। তারা সতর্ক করে দিয়ে বলেন, কেবল নিষিদ্ধকরণে তুষ্ট থাকলে ছাত্র-শ্রমিক-জনতা আবার রাজপথে নামবে।

বিবৃতির শেষাংশে বলা হয়, “ক্ষমা প্রার্থনা, অনুশোচনা বা রাজনৈতিক নাটকের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ কিংবা জামায়াত কোনোভাবেই দায়মুক্তি পেতে পারে না। ইতিহাসের দায় মেটাতে হলে তাদের অপরাধের জন্য উপযুক্ত শাস্তি দিতে হবে—তা না হলে গণতন্ত্র ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হবে না।”

এই বিবৃতি সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিবেশে একটি নতুন মাত্রা যোগ করেছে। একদিকে জামায়াত নিষিদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৭১ সালের দায়ের কথা উঠছে, অন্যদিকে আওয়ামী লীগকে একই কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর দাবি বর্তমান প্রজন্মের মধ্যে রাজনীতির প্রতি এক গভীর সংশয় এবং ন্যায়বিচারের আকাঙ্ক্ষাকে প্রতিফলিত করছে।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

স্টারমারের নীরবতা: কূটনৈতিক শিষ্টাচার বনাম রাজনৈতিক সংকোচ

স্টারমারের নীরবতা: কূটনৈতিক শিষ্টাচার বনাম রাজনৈতিক সংকোচ

একজন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ, সামাজিক ব্যবসার পথপ্রদর্শক এবং গণতান্ত্রিক উত্তরণের নেতৃত্বদানকারী রাষ্ট্রনায়ক—এই তিনটি পরিচয়ই এখন সমভাবে প্রযোজ্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের... বিস্তারিত