বরগুনায় ডেঙ্গু পরীক্ষায় অনিয়ম, ভুল রিপোর্টে বিপাকে রোগীরা

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ১৭ ১৭:০৮:২৩
বরগুনায় ডেঙ্গু পরীক্ষায় অনিয়ম, ভুল রিপোর্টে বিপাকে রোগীরা

বরগুনায় ডেঙ্গু পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল আকার নিচ্ছে। সরকারি হাসপাতালগুলোতে রোগীর সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে, যা এখন হাসপাতালের ধারণক্ষমতার বাইরে। এরই মধ্যে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ডেঙ্গু শনাক্তের প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা না থাকায় রোগীদের পড়তে হচ্ছে চরম দুর্ভোগে।

অনেক রোগী বলছেন, সরকারি হাসপাতালে প্রয়োজনীয় টেস্টের সুযোগ না থাকায় তারা বাধ্য হয়ে যাচ্ছেন বেসরকারি ক্লিনিক বা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। কিন্তু সেখানেও নেই নির্ভরযোগ্য ল্যাব ব্যবস্থা বা দক্ষ টেকনিশিয়ান। ফলে মিলছে বিভ্রান্তিকর এবং বিপজ্জনক রিপোর্ট।

খেজুরতলার বাসিন্দা মরিয়ম নামের এক রোগী ১৩ জুন বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে। তার প্লাটিলেট ছিল ৬৭ হাজার। পরদিন স্থানীয় একটি বেসরকারি ডায়াগনস্টিকে পরীক্ষা করে রিপোর্টে প্লাটিলেট সংখ্যা পাওয়া যায় প্রায় ৩ লাখ! পরবর্তী পরীক্ষায় একই রোগীর প্লাটিলেট দেখা যায় মাত্র ৫৪ হাজার। চিকিৎসকের তৎপরতায় তিনি ভুল চিকিৎসা থেকে রক্ষা পেলেও, ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে অনেক।

এ রকম আরও একটি ঘটনায় ১০ বছর বয়সী তানিয়া নামের এক শিশুকে দেওয়া হয় প্রায় ১৯ লাখ প্লাটিলেটের রিপোর্ট, যা একেবারেই অবাস্তব। চিকিৎসকের সন্দেহে বিষয়টি ধরা না পড়লে ফল ভয়াবহ হতে পারত।

রোগীদের অভিযোগ, এসব ভুল রিপোর্টের পেছনে রয়েছে ক্লিনিকগুলোর অব্যবস্থাপনা। কেউ কেউ জানান, একই ব্যক্তির বিভিন্ন টেস্ট রিপোর্টে ভিন্ন ফল আসে, যার ফলে একদিকে যেমন টাকা নষ্ট হচ্ছে, তেমনি চিকিৎসার ওপর তৈরি হচ্ছে অনাস্থা।

এই প্রসঙ্গে অভিযুক্ত একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক বলেন, সম্ভবত যন্ত্রাংশের ত্রুটির কারণে এমন ভুল হয়েছে। তাদের লাইসেন্স নবায়নের জন্য নাকি আবেদন করা আছে।

এ বিষয়ে বরগুনার নাগরিক কমিটির একজন প্রতিনিধি বলেন, মানুষের স্বাস্থ্য নিয়ে এমন খেলা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। প্রশাসনকে আরও কঠোর হতে হবে।

বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বর্তমানে সিবিসি টেস্টের কিট না থাকায় রোগীদের বাইরে পাঠানো হচ্ছিল। তবে এখন হাসপাতালেই সব ধরনের ডেঙ্গু পরীক্ষা চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, জেলায় ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন ৬৫ জন। মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১,৯০০ ছাড়িয়েছে এবং মৃত্যুর সংখ্যা ১৭ জনে দাঁড়িয়েছে।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

স্টারমারের নীরবতা: কূটনৈতিক শিষ্টাচার বনাম রাজনৈতিক সংকোচ

স্টারমারের নীরবতা: কূটনৈতিক শিষ্টাচার বনাম রাজনৈতিক সংকোচ

একজন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ, সামাজিক ব্যবসার পথপ্রদর্শক এবং গণতান্ত্রিক উত্তরণের নেতৃত্বদানকারী রাষ্ট্রনায়ক—এই তিনটি পরিচয়ই এখন সমভাবে প্রযোজ্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের... বিস্তারিত