ইসলামে জিহাদ মানেই যুদ্ধ নয়, চারটি স্তম্ভে দাঁড়িয়ে ন্যায়

ইসলামের প্রাথমিক যুগে, বিশেষ করে মক্কা পর্বে, মুসলিমদের ওপর কাফের ও মুশরিকদের নিপীড়ন ছিল নিত্যদিনের ঘটনা। আল্লাহ তায়ালা তাঁদের এই নিপীড়নের প্রতিক্রিয়ায় সরাসরি সশস্ত্র প্রতিরোধের নির্দেশ দেননি; বরং প্রথমে জুলুমের বিরুদ্ধে সীমিত পরিসরে প্রতিরক্ষা করার অনুমতি দেন। এটি ইসলামে জিহাদের ধারাবাহিক ও সুবিন্যস্ত প্রবর্তনের সূচনা যা কোরআনের বিভিন্ন আয়াতে স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হয়েছে।
সশস্ত্র প্রতিরোধের অনুমতির প্রথম আয়াতটি অবতীর্ণ হয় হিজরতের পর, যখন মুসলিমরা মদিনায় একটি সংগঠিত ও রাজনৈতিকভাবে স্বতন্ত্র সমাজ গঠন করে। সূরা হজের ৩৯ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে:
أُذِنَ لِلَّذِينَ يُقَاتَلُونَ بأَنَّهُمْ ظُلِمُوا وَإنَّ اللهَ عَلَى نَصْرِهِمْ لقَدِيرٌঅর্থ: যুদ্ধের অনুমতি দেওয়া হলো তাদেরকে যাদের সঙ্গে কাফেররা যুদ্ধ করে, কারণ তাদের প্রতি অত্যাচার করা হয়েছে। আল্লাহ অবশ্যই তাদের সাহায্য করতে সক্ষম। (সূরা হজ: ৩৯)
এই আয়াতের প্রেক্ষাপটে হজরত আবু বকর (রা.) মহানবী (সা.)-এর মক্কা থেকে হিজরতের সময় বলেছিলেন “তারা নবীকে তাড়িয়ে দিয়েছে, নিশ্চয়ই তারা ধ্বংস হবে।” (সহিহ বুখারি, সহিহ মুসলিম)
এরপরের ধাপে মুসলিমদের ওপর আত্মরক্ষামূলক জিহাদ ফরজ করা হয়। সূরা বাকারা (আয়াত ১৯০)–তে বলা হয়:
وَقَاتِلُوا فِي سَبِيلِ اللهِ الَّذِينَ يُقَاتِلُونَكُمْ وَلا تَعْتَدُواঅর্থ: যারা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে, তোমরা আল্লাহর পথে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করো, তবে সীমা লঙ্ঘন করো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ সীমালঙ্ঘনকারীদের পছন্দ করেন না।
এ আয়াত ইসলামে যুদ্ধের নৈতিক গণ্ডি নির্ধারণ করে দেয়। এটি যুদ্ধকে প্রতিশোধ নয়, বরং ন্যায্যতা ও আত্মরক্ষার এক ধরনের প্রয়াস হিসেবে নির্ধারণ করে।
ইসলামী ফিকহবিদ ও চিন্তাবিদদের মতে, জিহাদের বিধান পরবর্তী সময়ে ফরজে কিফায়া হিসেবে নির্ধারিত হয় অর্থাৎ মুসলিম উম্মাহর একটি দল তা পালন করলেই সমগ্র জাতির দায়িত্ব আদায় হয়। তবে যদি কেউ না করে, তবে গোটা মুসলিম উম্মাহ গুনাহগার হয়। আর শত্রুর সরাসরি আগ্রাসনের সময়, বা ইসলামের অস্তিত্বের ওপর হুমকি তৈরি হলে, জিহাদ ফরজে আইন হিসেবে আবির্ভূত হয় অর্থাৎ প্রত্যেক সামর্থ্যবান মুসলমানের জন্য তা পালন করা অপরিহার্য হয়ে পড়ে।
ইসলামী দৃষ্টিকোণ থেকে জিহাদ কেবল অস্ত্র ধারণ করে যুদ্ধ নয়; বরং এটি বহুমাত্রিক ও চেতনার ভিত্তিতে বিভাজিত:
মনের মাধ্যমে- জুলুমের বিরুদ্ধে ঘৃণা ও প্রতিবাদ
জবানের মাধ্যমে- সত্য প্রচার ও বাতিলের অপনোদন
হাতে বা কার্যতভাবে- প্রতিরোধ বা রক্ষা
সম্পদের মাধ্যমে- জিহাদে অর্থিক সহায়তা
এই চার রূপের মধ্যে অন্তত একটির মাধ্যমে প্রতিটি মুসলমানের জিহাদে অংশ নেওয়া আবশ্যক।
ইসলামে জিহাদের সূচনা ঘটেছে নিপীড়নের প্রতিরোধ হিসেবে, প্রতিশোধ হিসেবে নয়। এটি আত্মরক্ষা, ন্যায়বিচার এবং ধর্মীয় স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠার একটি পবিত্র ও সীমিত উদ্দেশ্য। হিজরতের পর এর অনুমতি থেকে শুরু করে ধাপে ধাপে ফরজ হিসেবে নির্ধারণই ইসলামের প্রজ্ঞাবান, ধৈর্যশীল ও ন্যায়নিষ্ঠ যুদ্ধনীতির অনন্য নজির।
পাঠকের মতামত:
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- আবু সাইদ: এক জনতার মহানায়ক
- বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ: আত্মপরিচয়ের নবতর ব্যাখ্যা ও আগামী রাষ্ট্র নির্মাণের ভিত্তি
- ৩১ জুলাই, শেয়ারবাজারে দরপতনের শীর্ষ ১০ শেয়ার
- “সুশীল” শব্দটি কেন আজও গালি?
- ৩১ জুলাই ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) আজকের বাজার পর্যালোচনা
- ঢাকার ২০টি আসনে বিএনপির নির্বাচনী কৌশল: কারা পাচ্ছেন দলীয় মনোনয়ন?
- ‘নির্বাচনের আগে সংস্কার না হলে আন্দোলন চলবে’—সাবধান করলেন নাহিদ ইসলাম
- ঘুষের হারে পাঁচগুণ বৃদ্ধি, কোথাও কোনো সুশাসন নেই, নিয়ন্ত্রণ নেই- মির্জা ফখরুলের উদ্বেগ
- ভাইরাল ভিডিও নিয়ে ক্ষোভে ফুঁসছেন এডলফ খান!
- তারেক রহমান এখন উপযুক্ত নেতা: কাদের সিদ্দিকী
- ৩১ জুলাই, শেয়ারবাজারে দরবৃদ্ধির শীর্ষ ১০ শেয়ার
- সৃজনশীলতার ৫টি ধাপ: একটি বিশ্লেষণধর্মী বাংলা প্রতিবেদন
- আজ ৩০ জুলায়ের শেয়ারবাজারে শীর্ষ ১০ গেইনারের তালিকায় নতুন চমক
- সিইসি: এআই অপব্যবহার হতে পারে নির্বাচনের জন্য ভয়াবহ হুমকি
- খাবারের আশায় ১২ কিলোমিটার হাঁটা শিশুটি ইসরায়েলি গুলিতে নিহত
- জয়শঙ্কর বললেন, বাংলাদেশের ওপর নজর রাখছে দিল্লি
- যুক্তরাষ্ট্রের আমদানি শুল্ক নীতি: ট্রাম্পের ঘোষণার প্রভাব ও বৈশ্বিক প্রতিক্রিয়া
- মালয়েশিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় তিন বাংলাদেশির মৃত্যু
- রাশিয়ার হুমকির জবাবে পারমাণবিক সাবমেরিন মোতায়েনের নির্দেশ ট্রাম্পের
- পাত্রীর দেওয়া চা খেয়ে অচেতন পাত্র,এরপর যা ঘটল
- গুলিস্তানের সুন্দরবন স্কয়ার মার্কেটে অগ্নিকাণ্ড, আগুন নিয়ন্ত্রণে ১১ ইউনিট কাজ করছে
- প্রতিদিন সাতটি আজওয়া খেজুর: হাদিসে সুপারিশ ও বৈজ্ঞানিক প্রমাণ
- ৩০ বছর পুরোনো ভ্রূণ থেকে জন্ম, ওহাইওতে বিজ্ঞানজগতের বিস্ময়
- জামায়াতে ইসলামীকে ‘ধোঁকাবাজ’ বললেন বিএনপির তাহের সুমন
- যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফেরত পাঠানো ৩৯ বাংলাদেশি ঢাকায় পৌঁছেছেন
- স্বাধীন ফিলিস্তিন না পাওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা হামাসের
- মধ্যরাতে জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে দুই উপদেষ্টার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্ট্যাটাস
- জামায়াত আমিরের হৃদযন্ত্রে আজ ওপেন হার্ট সার্জারি
- ঢাকায় সমাবেশে যোগ দিতে ২০ বগির ট্রেন ভাড়া নিল চট্টগ্রাম ছাত্রদল
- লোকাল বাসে তারেক রহমান, সাধারণ জীবনধারায় প্রশংসিত নেটদুনিয়ায়
- স্মার্টফোনই এখন আয়ের প্ল্যাটফর্ম: তরুণদের মাসে আয় হাজার ডলার
- ট্রাম্পের আদেশে পাল্টা শুল্ক কার্যকর, ক্ষতিগ্রস্ত হবে বাংলাদেশ
- আন্তঃসরকারি আলোচনার সফল পরিণতি: মালয়েশিয়ায় বিশেষ নিয়োগ শুরু
- স্বেচ্ছাসেবক লীগ থেকে যুবলীগ: নিষিদ্ধ সংগঠনের শীর্ষ ৮ নেতা গ্রেফতার
- ডোমিনো এফেক্ট: ছোট পরিবর্তনে কীভাবে বদলায় বড় সিদ্ধান্ত
- হাটহাজারী মাদরাসায় কবর জিয়ারতে নজরুল-সালাহউদ্দিন: খালেদা-তারেকের শুভেচ্ছা বার্তা
- গাজায় লুটপাটের শিকার ১০৪টি ত্রাণবাহী ট্রাক
- সৃজনশীলতার ৫টি ধাপ: একটি বিশ্লেষণধর্মী বাংলা প্রতিবেদন
- কর্ণফুলীর তীরে এক নীরব বিপ্লব: বাংলাদেশের অস্ত্র কারখানা নিয়ে উত্তপ্ত দক্ষিণ এশিয়া
- সেন্ট মার্টিন ও বঙ্গোপসাগর: ইন্দো-প্যাসিফিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার নতুন ভূকেন্দ্র
- আবু সাইদ: এক জনতার মহানায়ক
- বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ: আত্মপরিচয়ের নবতর ব্যাখ্যা ও আগামী রাষ্ট্র নির্মাণের ভিত্তি
- ৩১ জুলাই, শেয়ারবাজারে দরপতনের শীর্ষ ১০ শেয়ার
- “সুশীল” শব্দটি কেন আজও গালি?
- ৩১ জুলাই ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) আজকের বাজার পর্যালোচনা
- ঢাকার ২০টি আসনে বিএনপির নির্বাচনী কৌশল: কারা পাচ্ছেন দলীয় মনোনয়ন?
- ‘নির্বাচনের আগে সংস্কার না হলে আন্দোলন চলবে’—সাবধান করলেন নাহিদ ইসলাম
- ঘুষের হারে পাঁচগুণ বৃদ্ধি, কোথাও কোনো সুশাসন নেই, নিয়ন্ত্রণ নেই- মির্জা ফখরুলের উদ্বেগ
- ভাইরাল ভিডিও নিয়ে ক্ষোভে ফুঁসছেন এডলফ খান!
- তারেক রহমান এখন উপযুক্ত নেতা: কাদের সিদ্দিকী
- ৩১ জুলাই, শেয়ারবাজারে দরবৃদ্ধির শীর্ষ ১০ শেয়ার
- সৃজনশীলতার ৫টি ধাপ: একটি বিশ্লেষণধর্মী বাংলা প্রতিবেদন
- আজ ৩০ জুলায়ের শেয়ারবাজারে শীর্ষ ১০ গেইনারের তালিকায় নতুন চমক
- সিইসি: এআই অপব্যবহার হতে পারে নির্বাচনের জন্য ভয়াবহ হুমকি
- খাবারের আশায় ১২ কিলোমিটার হাঁটা শিশুটি ইসরায়েলি গুলিতে নিহত