সূরা বনী ইসরাঈলের আয়াতে ইসরায়েলের শেষ পরিণতির আভাস?

ধর্ম ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ১৬ ১৭:২৬:২৪
সূরা বনী ইসরাঈলের আয়াতে ইসরায়েলের শেষ পরিণতির আভাস?

মধ্যপ্রাচ্যের ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ইসরায়েলকে ঘিরে সাম্প্রতিক যুদ্ধ, নিপীড়ন ও ধ্বংসযজ্ঞ যেন এক অস্থির ও রক্তাক্ত বাস্তবতার নাম। বিশেষত গাজা, পশ্চিম তীর এবং পবিত্র মসজিদ এলাকায় সংঘটিত সহিংসতা ও বেসামরিক প্রাণহানির ঘটনায় সারা বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে বহু মুসলমান দাবি করছেন পবিত্র কোরআনের কিছু আয়াত আজকের ইসরায়েলের পরিস্থিতির সঙ্গে অদ্ভুতভাবে সাদৃশ্যপূর্ণ।

বনি ইসরাঈলের ভবিষ্যদ্বাণী কোরআনে?

পবিত্র কোরআনের সূরা বনী ইসরাঈল-এর ৪ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে-“আর আমি বনী ইসরাঈলদের কিতাবে বলে দিয়েছিলাম, ‘তোমরা অবশ্যই দুইবার পৃথিবীতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবে এবং অত্যন্ত অহংকারে বাড়াবাড়ি করবে।’”(সূরা বনী ইসরাঈল: আয়াত ৪)

অনেক ইসলামি বিশ্লেষক ও তাফসিরবিদ মনে করেন, এই আয়াতে বনী ইসরাঈল তথা ইহুদি জাতির ইতিহাসে দুটি বড় বিপর্যয়ের ইঙ্গিত রয়েছে। প্রথমটি ছিল নবীদের অমান্য করা, এমনকি হত্যা; আর দ্বিতীয়টি বর্তমান দখলদার রাষ্ট্র ইসরায়েলের মাধ্যমে ফিলিস্তিনিদের ওপর দমন-পীড়ন চালানো, পবিত্র স্থানগুলোতে হামলা ও মানবাধিকার লঙ্ঘন।

পতনের পূর্বাভাস?

এই সূরার ৭ নম্বর আয়াতে আরও বলা হয়েছে-“…আর যখন দ্বিতীয় প্রতিশ্রুতি পূরণের সময় আসবে, তখন আমি শত্রুদের তোমাদের মুখমণ্ডলে অপমানিত করে ফিরিয়ে দেব, এবং তারা মসজিদে প্রবেশ করবে যেমন প্রথমবার প্রবেশ করেছিল, এবং তারা যা কিছু দখল করবে, ধ্বংস করে দেবে।”

এই আয়াতকে অনেকে ইসরায়েলের ভবিষ্যৎ পতনের একটি ‘ঐশী সতর্কবার্তা’ হিসেবে দেখছেন। কোরআনের ভাষ্য অনুযায়ী, জুলুম ও সীমালঙ্ঘন যখন চূড়ান্তে পৌঁছে, তখন আল্লাহ নিজেই দুনিয়ার ইতিহাসের মোড় ঘুরিয়ে দেন।

গাজা উপত্যকা ও পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি আগ্রাসনের নৃশংসতা, হাসপাতাল ও মসজিদে হামলা, শিশুহত্যা, খাদ্য ও চিকিৎসা অবরোধ এসব চিত্র দেখে অনেক মুসলমানের মনে হচ্ছে, যেন কোরআনের সেই প্রাচীন ভবিষ্যদ্বাণী আবারও বাস্তবে রূপ নিচ্ছে। তাদের মতে, আজকের ইসরায়েলি শাসকগোষ্ঠী সেই একই অহংকার ও নির্যাতনের পথেই হাঁটছে, যেমনটি বর্ণিত হয়েছে কোরআনের ঐতিহাসিক আখ্যানগুলোতে।

বিশ্বজুড়ে বহু মুসলমান ইসরায়েলের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ডকে শুধু রাজনৈতিক নয়, ‘আধ্যাত্মিক ও নৈতিক অপরাধ’ হিসেবেও দেখছেন। কেউ কেউ এটিকে কিয়ামতের পূর্বাভাস হিসেবেও ব্যাখ্যা করছেন। মুসলিম বিশ্লেষকদের মতে, কোরআনের এই আয়াতগুলো শুধু অতীত নয়, বরং ভবিষ্যতের জন্যও একটি হুঁশিয়ারি যেখানে সীমা লঙ্ঘনের শেষপরিণতি অবশ্যম্ভাবী।

ইতিহাসের চাকা ঘুরছে কিনা, তা সময়ই বলে দেবে। তবে এটি স্পষ্ট পবিত্র কোরআনের আলোকে বহু মুসলমান আজকের দুনিয়ার ঘটনাবলি ব্যাখ্যা করছেন এক গভীর ভবিষ্যদ্বাণীপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি থেকে, যেখানে ইমান, বিচার এবং ধৈর্যের চূড়ান্ত পরীক্ষা চলেছে।

-ইসরাত, নিজস্ব প্রতিবেদক

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ