বিশ্বে লিঙ্গসমতায় ২৪তম, দক্ষিণ এশিয়ায় এক নম্বর বাংলাদেশ

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ১৩ ১৭:৫১:০৩
বিশ্বে লিঙ্গসমতায় ২৪তম, দক্ষিণ এশিয়ায় এক নম্বর বাংলাদেশ

বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের (WEF) সদ্যপ্রকাশিত ‘গ্লোবাল জেন্ডার গ্যাপ রিপোর্ট ২০২৫’-এ লিঙ্গসমতায় বাংলাদেশ এক অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন করেছে। ১৪৮টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ এখন রয়েছে ২৪তম অবস্থানে, যা দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে এককভাবে শীর্ষস্থান। গত বছরের তুলনায় বাংলাদেশের অবস্থান এক লাফে ৭৫ ধাপ উন্নীত হয়েছে—এক বছরে এত বড় অগ্রগতি আর কোনো দেশই করতে পারেনি।

লিঙ্গসমতায় রেকর্ড অগ্রগতি২০২৪ সালের প্রতিবেদনে যেখানে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ৯৯তম, সেখানে ২০২৫ সালে উঠে এসেছে ২৪তম স্থানে। এটি শুধু সংখ্যাগত উন্নয়ন নয়, বরং একটি গভীর কাঠামোগত পরিবর্তনের প্রতিচ্ছবি। অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, স্বাস্থ্য এবং শিক্ষা এই চারটি সূচকেই বাংলাদেশের দৃশ্যমান অগ্রগতি হয়েছে।

বিশ্বের সেরা দেশ হিসেবে আইসল্যান্ড এবারও (টানা ১৬ বছর) প্রথম স্থান ধরে রেখেছে। অপরদিকে, পাকিস্তান রয়েছে সূচকের একেবারে নিচে (১৪৮তম)। প্রতিবেশী ভারত রয়েছে ১৩১তম স্থানে। এশিয়ার বৃহৎ অর্থনীতিগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের এই অগ্রগতি লিঙ্গ সমতা বাস্তবায়নে একটি কার্যকর মডেল হিসেবে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।

দক্ষিণ এশিয়ার সাতটি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ আবারও শীর্ষে অবস্থান করছে। এরপর রয়েছে ভুটান, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, ভারত, মালদ্বীপ ও পাকিস্তান। এই অঞ্চলে রাজনৈতিক ক্ষমতায় নারীর অংশগ্রহণ, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে অগ্রগতি বাংলাদেশের অগ্রণী অবস্থানের অন্যতম প্রধান নিয়ামক।

প্রতিবেদনের ভূমিকায় ফোরামের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাদিয়া জাহিদি মন্তব্য করেন, “লিঙ্গসমতায় বিনিয়োগ আরও প্রাণবন্ত, সমৃদ্ধ ও উৎপাদনশীল অর্থনীতি গড়তে সহায়তা করতে পারে।” এমন মন্তব্য বিশ্ব মঞ্চে বাংলাদেশের সাফল্যের গুরুত্ব এবং ভবিষ্যৎ সম্ভাবনাকেও নির্দেশ করে।

বাংলাদেশের এই অগ্রগতি নিঃসন্দেহে গর্বের বিষয়, তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, এখন প্রয়োজন এই অগ্রগতিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া এবং সমাজের সর্বস্তরে নারী অংশগ্রহণ ও ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করা। বিশেষ করে শ্রমবাজার, প্রযুক্তি, কৃষি ও উদ্যোক্তা খাতে নারীর অংশগ্রহণ বাড়ানো গেলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি আরও গতিশীল হবে।

এ ছাড়া রাজনীতিতে নারীর উপস্থিতি ও নেতৃত্বে স্থায়িত্ব এনে তাকে কাঠামোগত স্তরে প্রতিষ্ঠা করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।

লিঙ্গ সমতায় বাংলাদেশের এই অগ্রগতি কেবল একটি পরিসংখ্যান নয়, বরং এটি জাতি হিসেবে একটি প্রগতিশীল মনোভাব, পরিকল্পিত নীতিমালা ও নারীর সম্ভাবনাকে সঠিকভাবে কাজে লাগানোর প্রতিফলন। এই ধারা অব্যাহত থাকলে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আরও দৃঢ় ও মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানে পৌঁছাতে পারবে।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

স্টারমারের নীরবতা: কূটনৈতিক শিষ্টাচার বনাম রাজনৈতিক সংকোচ

স্টারমারের নীরবতা: কূটনৈতিক শিষ্টাচার বনাম রাজনৈতিক সংকোচ

একজন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ, সামাজিক ব্যবসার পথপ্রদর্শক এবং গণতান্ত্রিক উত্তরণের নেতৃত্বদানকারী রাষ্ট্রনায়ক—এই তিনটি পরিচয়ই এখন সমভাবে প্রযোজ্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের... বিস্তারিত