শেয়ারবাজার

রিজার্ভের দাপট: বিদ্যুৎ খাতের ১৪ কোম্পানি বিনিয়োগের নতুন ঠিকানা

শেয়ারবাজার ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ১৩ ১১:০৯:৩৪
রিজার্ভের দাপট: বিদ্যুৎ খাতের ১৪ কোম্পানি বিনিয়োগের নতুন ঠিকানা

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) তালিকাভুক্ত বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের ২৩টি কোম্পানির মধ্যে ১৪টি কোম্পানি তাদের পরিশোধিত মূলধনের (Paid-up Capital) চেয়ে বেশি রিজার্ভ ধরে রেখেছে, যা তাদের আর্থিক স্থিতিশীলতার একটি দৃঢ় প্রমাণ। সর্বশেষ আর্থিক প্রতিবেদন ও বাজার তথ্যের ভিত্তিতে জানা গেছে, এই ১৪ কোম্পানির রিজার্ভ পরিস্থিতি বিনিয়োগকারীদের জন্য আশাব্যঞ্জক বার্তা দিচ্ছে।

অন্যদিকে, ৭টি কোম্পানির রিজার্ভ পেইড-আপ ক্যাপিটালের তুলনায় কম, এবং ২টি কোম্পানি নেতিবাচক রিজার্ভে রয়েছে। এই চিত্রটি খাতটির ভেতরকার শক্তিশালী ও দুর্বল কোম্পানিগুলোর মধ্যে স্পষ্ট পার্থক্য তুলে ধরে।

রিজার্ভের দিক থেকে এগিয়ে থাকা কোম্পানিগুলো

যেসব কোম্পানির রিজার্ভ তাদের পরিশোধিত মূলধনের চেয়ে বেশি, তাদের তালিকা নিচে তুলে ধরা হলো:

কোম্পানিপরিশোধিত মূলধন (কোটি টাকা)রিজার্ভ (কোটি টাকা)
তিতাস গ্যাস ৯৮৯.২২ ৮৩৬৮.৩০
ইউনাইটেড পাওয়ার ৫৭৯.৬৯ ২৬৪৯.২৪
সামিট পাওয়ার ১০৬৭.৯০ ২৫৭২.১৬
মেঘনা পেট্রোলিয়াম ১০৮.২১ ২৪১৩.৭৪
যমুনা অয়েল ১১০.৪২ ২৪৫৬.৭৮
পদ্মা অয়েল ৯৮.২৩ ২১৭৬.৪২
এমজেএল বাংলাদেশ ৩১৬.৭৫ ১০০২.১৪
ঢাকা ইলেকট্রনিক ৩৯৭.৫৭ ১১০৯.৯৭
ডরিন পাওয়ার ১৮১.১১ ৬৭২.৭১
লিন্ডে বিডি ১৫.২১ ৫৭৮.২০
শাহজীবাজার পাওয়ার ১৮৬.৬৩ ৪২৯.৫৩
এনার্জিপ্যাক পাওয়ার ১৯০.১৬ ৩২৯.৬৪
লুবরেফ বাংলাদেশ ১৪৫.২৪ ২৫৩.৫০
ইস্টার্ন লুব্রিক্যান্টস ১.৫৮ ২৫.৯৯

এই তালিকার মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য হলো তিতাস গ্যাস, যার রিজার্ভ পরিমাণ ৮৩৬৮ কোটি টাকা—যা তার পরিশোধিত মূলধনের আট গুণেরও বেশি। এমন শক্তিশালী আর্থিক ভিত কোম্পানিটিকে ভবিষ্যতে দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ, অবকাঠামো সম্প্রসারণ এবং জরুরি পরিস্থিতি মোকাবেলায় বিশেষভাবে সক্ষম করে তোলে।

বিনিয়োগকারীদের জন্য ইতিবাচক বার্তা

রিজার্ভ পুঁজি কোম্পানির আর্থিক সক্ষমতার একটি গুরুত্বপূর্ণ সূচক। এ ধরনের কোম্পানিগুলো সাধারণত:

লাভের একটি অংশ রিজার্ভে রেখে ভবিষ্যৎ প্রকল্পে বিনিয়োগ করতে পারে

নিয়মিত লভ্যাংশ প্রদানে সক্ষম হয়

অর্থনৈতিক মন্দার সময় ব্যয় মেটাতে রিজার্ভ ব্যবহার করতে পারে

অতিরিক্ত ঋণের উপর নির্ভর না করে পরিচালিত হতে পারে

এ সব দিক বিবেচনায়, এই ১৪ কোম্পানির আর্থিক কাঠামো বাজারে এক ধরনের আস্থা তৈরি করছে।

দুর্বল অবস্থানে থাকা কোম্পানিগুলোর চিত্র

এদিকে, যেসব কোম্পানির রিজার্ভ পরিশোধিত মূলধনের চেয়ে কম বা ঋণাত্মক, সেগুলোর আর্থিক ঝুঁকি তুলনামূলক বেশি। এসব কোম্পানিকে টিকে থাকতে হলে কার্যকর ব্যবসা কৌশল, ব্যয় সংকোচন এবং কর্পোরেট গভার্ন্যান্সে উন্নয়ন আনতে হবে বলে বিশ্লেষকদের মত।

খাতটির ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা

বাংলাদেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির প্রধান চালিকাশক্তি। শিল্পায়ন, নগরায়ণ এবং জ্বালানি নিরাপত্তার প্রেক্ষাপটে এই খাতটির গুরুত্ব ক্রমশ বাড়ছে। সেই দৃষ্টিকোণ থেকে আর্থিকভাবে সুসংগঠিত কোম্পানিগুলোই ভবিষ্যতে এ খাতের নেতৃত্ব দেবে।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের মধ্যে ১৪টি কোম্পানির শক্তিশালী রিজার্ভ পজিশন নিঃসন্দেহে বাজারের জন্য একটি ইতিবাচক বার্তা। যেখানে অর্থনৈতিক চাপে পুঁজিবাজারের অনেক খাত টালমাটাল, সেখানে এই খাতটির শক্ত অবস্থান বিনিয়োগকারীদের জন্য এক ধরনের আস্থা ও সম্ভাবনার বার্তা দিচ্ছে।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

স্টারমারের নীরবতা: কূটনৈতিক শিষ্টাচার বনাম রাজনৈতিক সংকোচ

স্টারমারের নীরবতা: কূটনৈতিক শিষ্টাচার বনাম রাজনৈতিক সংকোচ

একজন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ, সামাজিক ব্যবসার পথপ্রদর্শক এবং গণতান্ত্রিক উত্তরণের নেতৃত্বদানকারী রাষ্ট্রনায়ক—এই তিনটি পরিচয়ই এখন সমভাবে প্রযোজ্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের... বিস্তারিত