মুহাম্মদ ইউনূস এবং তারেক রহমানের বৈঠক

ভোটের আগে বৈঠক: কী ইঙ্গিত দিচ্ছে তারেক-ইউনূস যুগলবন্দী?

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ১১ ১০:১৫:৩০
ভোটের আগে বৈঠক: কী ইঙ্গিত দিচ্ছে তারেক-ইউনূস যুগলবন্দী?

যুক্তরাজ্যে সফররত বাংলাদেশ সরকারের অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ১৩ জুন, শুক্রবার সকাল লন্ডনের স্থানীয় সময় অনুযায়ী হোটেল ডোরচেস্টারে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে বলে বিএনপির পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে। এটি এমন এক সময়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে যখন বাংলাদেশের রাজনৈতিক মহলে সরকারের সঙ্গে বিএনপির টানাপোড়েন তীব্র অবস্থায় রয়েছে, বিশেষ করে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন সংক্রান্ত ইস্যুতে।

বিএনপির একাধিক সূত্র জানিয়েছে, এই বৈঠকের উদ্যোগ মূলত সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ ও প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে নেওয়া হয়েছে এবং তাদের আগ্রহের পরেই বিএনপির পক্ষ থেকে সম্মতি দেওয়া হয়েছে। তবে শুরুতে বিএনপি এই বৈঠকে অনাগ্রহী ছিল, কিন্তু নির্বাচনের সময়সূচী নিয়ে আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনায় দলটি অবশেষে রাজি হয়েছে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, এই সাক্ষাৎটি একপ্রকার সৌজন্যতার অংশ এবং এটি সুষ্ঠু রাজনৈতিক আলাপ-আলোচনার জন্য একটি সুযোগ।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক সোমবার রাতে অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও অংশ নেন। বৈঠকের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস ও তারেক রহমানের মধ্যে এই বৈঠকের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়। বৈঠকটি বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে একটি ‘টার্নিং পয়েন্ট’ হিসেবে দেখা হচ্ছে এবং এর মাধ্যমে নতুন রাজনৈতিক দিকনির্দেশনা ও সম্ভাবনা সৃষ্টি হতে পারে বলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মনে করেন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা এই বৈঠককে দুই পক্ষের মধ্যে চলমান আস্থার সংকট দূর করার একটি গুরুত্বপুর্ণ উদ্যোগ হিসেবে দেখছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও বিশ্লেষক কাজী মারুফুল ইসলাম বলেন, দেশের স্বার্থে সরকারের সঙ্গে বিএনপির মধ্যকার আস্থাভঙ্গ অবিলম্বে কাটিয়ে উঠতে হবে এবং এই বৈঠক সেই পথিকৃৎ হতে পারে।

বৈঠকের পটভূমিতে রয়েছে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন। বিএনপি দীর্ঘদিন ধরে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন দাবি করে আসছে, যা সরকারের ঘোষণা করা ২০২৬ সালের এপ্রিলের নির্বাচনের পরিকল্পনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ৬ জুন জাতির উদ্দেশে ভাষণে এপ্রিলে নির্বাচন আয়োজনের কথা ঘোষণা করার পর বিএনপি তীব্র আপত্তি জানায়। ফলে নির্বাচনের তারিখ ও প্রস্তুতি নিয়ে রাজনৈতিক উত্তেজনা চরমে ওঠে।

বিএনপির অবস্থান এখনও অনড়, তবে এই বৈঠকের পর নির্বাচনের সময়সূচী নিয়ে কোনরূপ সমঝোতা হওয়ার সম্ভাবনাও বিশ্লেষকরা উন্মোচিত করছেন। মির্জা ফখরুল উল্লেখ করেন, রোজার মাস ও ঈদের পরপর নির্বাচন করাটা রাজনৈতিক ও জনসাধারণের জন্য দুর্ভোগজনক হবে, তাই বাস্তবতার আলোকে সময়ের পুনর্বিবেচনা প্রয়োজন।

রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, এই বৈঠক বাংলাদেশে রাজনৈতিক সংকট নিরসনে ও সরকারের সঙ্গে বিএনপির সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের ক্ষেত্রে একটি নতুন দিগন্তের সূচনা হতে পারে। এটি ভবিষ্যতের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে এবং দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারে।

সার্বিকভাবে, অধ্যাপক ইউনূস ও তারেক রহমানের এই বৈঠক শুধু একটি সৌজন্য সাক্ষাৎ নয়, বরং বাংলাদেশের নির্বাচনী রাজনীতি ও সরকার-বিএনপি সম্পর্কের নতুন অধ্যায়ের সূচনা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। আগামী নির্বাচনের পথপ্রদর্শনে এটি একটি মাইলফলক হয়ে উঠতে পারে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।

-ইসরাত, নিজস্ব প্রতিবেদক


হাদি হত্যার ঘাতক ফয়সালের ব্যাংক হিসাবে ১২৭ কোটির রহস্যময় লেনদেন

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২১ ২১:৪২:০২
হাদি হত্যার ঘাতক ফয়সালের ব্যাংক হিসাবে ১২৭ কোটির রহস্যময় লেনদেন
ছবি : সংগৃহীত

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ডের প্রধান অভিযুক্ত ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান রাহুলের ব্যাংক হিসাবে ১২৭ কোটি টাকারও বেশি অস্বাভাবিক লেনদেনের তথ্য পেয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ বা সিআইডি। রোববার (২১ ডিসেম্বর) রাতে সিআইডির অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার আবু তালেব এই চাঞ্চল্যকর তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার সংগৃহীত তথ্য বিশ্লেষণ করে অভিযুক্তের এই ‘বিপুল এবং অস্বাভাবিক’ আর্থিক লেনদেনের চিত্র ফুটে উঠেছে যা এই হত্যাকাণ্ডকে নতুন এক রহস্যের দিকে ঠেলে দিয়েছে।

সিআইডি সূত্র জানিয়েছে যে মামলার মূল অভিযুক্ত ফয়সাল এখনও পলাতক থাকলেও তার পরিবারের সদস্য ও সহযোগীদের গ্রেপ্তারের সময় বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ আলামত জব্দ করা হয়েছে। এর মধ্যে বিভিন্ন ব্যাংকের চেক বই পর্যালোচনায় দেখা গেছে যে সেখানে বড় বড় অঙ্কের অর্থের লেনদেনের রেকর্ড রয়েছে। চূড়ান্তভাবে সম্পন্ন না হওয়া এসব রেকর্ডে থাকা অর্থের সমষ্টিগত মূল্য প্রায় ২১৮ কোটি টাকা। সিআইডির প্রাথমিক বিশ্লেষণে উঠে এসেছে যে এই বিশাল অঙ্কের অর্থ মানি লন্ডারিং, সংঘবদ্ধ অপরাধ বা কোনো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে অর্থায়নের উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হয়ে থাকতে পারে।

বর্তমান পরিস্থিতিতে সিআইডি মানি লন্ডারিং বা মুদ্রা পাচারের বিষয়ে একটি পৃথক অনুসন্ধান কার্যক্রম শুরু করেছে। তদন্তকারীরা খতিয়ে দেখছেন যে এই বিশাল পরিমাণ অর্থের উৎস কী ছিল এবং শরিফ ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ডের পেছনে এই অর্থের কোনো প্রভাব ছিল কি না। ইতোমধ্যে অভিযুক্ত ফয়সাল ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্টে থাকা প্রায় ৬৫ লাখ টাকা রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করার জন্য দ্রুত আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের কাজ শুরু করেছে সিআইডি।

উল্লেখ্য যে গত ১২ ডিসেম্বর রাজধানীর পুরানা পল্টনে প্রকাশ্য দিবালোকে শরিফ ওসমান হাদিকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হলেও গত বৃহস্পতিবার তিনি সেখানে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। হাদি হত্যাকাণ্ডের প্রধান ঘাতকের ব্যাংক হিসাবে এত বিপুল অঙ্কের অর্থের সন্ধান পাওয়ায় জনমনে প্রশ্ন উঠছে যে এটি কেবল একটি ব্যক্তিগত হত্যাকাণ্ড নাকি এর পেছনে কোনো গভীর রাজনৈতিক বা সাম্প্রদায়িক ষড়যন্ত্র ও শক্তিশালী কোনো গোষ্ঠীর অর্থায়ন রয়েছে। সিআইডি জানিয়েছে যে মূল অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করতে পারলে এই রহস্যময় লেনদেনের প্রকৃত কারণ ও হাদি হত্যার মূল মোটিভ উদঘাটিত হবে।


পুলিশ ও প্রশাসন চালানো এখন কঠিন কাজ: আইন উপদেষ্টা

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২১ ২১:১৩:০৬
পুলিশ ও প্রশাসন চালানো এখন কঠিন কাজ: আইন উপদেষ্টা
ছবি : সংগৃহীত

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের দেড় দশকের শাসনামলে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর ভিত দুর্বল হয়ে পড়ায় বর্তমানে পুলিশ, বিচার বিভাগ ও প্রশাসনের মতো গুরুত্বপূর্ণ খাত পরিচালনা করা অত্যন্ত ‘কঠিন হয়ে পড়েছে’ বলে মন্তব্য করেছেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। রোববার (২১ ডিসেম্বর) পূর্বাচল নতুন শহরে অবস্থিত স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের (এসইউবি) সপ্তম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে তিনি দেশের বর্তমান প্রশাসনিক সংকটের এই চিত্র তুলে ধরেন। এবারের সমাবর্তনটি বিশেষভাবে উৎসর্গ করা হয়েছে সম্প্রতি ঘাতকের গুলিতে প্রাণ হারানো ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অকুতোভয় তরুণ নেতা শরিফ ওসমান বিন হাদির স্মরণে।

আইন উপদেষ্টা তার বক্তব্যে বলেন যে স্বাধীনতার ৫৪ বছর অতিবাহিত হলেও বাংলাদেশ ব্যক্তি পর্যায়ে অনেক কিছু অর্জন করেছে কিন্তু রাষ্ট্র গঠনে প্রয়োজনীয় টেকসই প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার ক্ষেত্রে অনেক পিছিয়ে রয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন যে অতীতে পুলিশ ও বিচার বিভাগের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো অগ্রসরমান অবস্থায় থাকলেও গত পনের বছরে এগুলোর নিরপেক্ষতা ও কার্যকারিতা ধ্বংস করা হয়েছে। আসিফ নজরুলের মতে দেশ গঠনে শক্তিশালী প্রতিষ্ঠানের গুরুত্ব কতখানি তা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী ইউরোপের অগ্রযাত্রা থেকেই বোঝা যায়। তিনি আক্ষেপ করে বলেন যে বাংলাদেশে সবসময় প্রতিষ্ঠানকে ছাপিয়ে ব্যক্তি ও পরিবার প্রাধান্য পেয়েছে যার ফলে কোনো উন্নয়নই টেকসই রূপ নিতে পারেনি।

বক্তব্যের শুরুতেই আইন উপদেষ্টা অত্যন্ত আবেগপ্রবণ হয়ে শরিফ ওসমান হাদির স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। হাদির জানাজায় মানুষের অভূতপূর্ব সমাগমের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন যে তিনি তার জীবনে কখনো এত বড় কোনো জানাজা দেখেননি। আসিফ নজরুলের মতে হাদির জন্য মানুষের এই যে হাহাকার ও দোয়া তা প্রমাণ করে যে তিনি নিজের স্বার্থের চেয়ে ইনসাফ কায়েমের লড়াইকে বেশি গুরুত্ব দিতেন। হাদি এই নশ্বর পৃথিবী ছেড়ে আরও উত্তম কোনো স্থানে অবস্থান করছেন বলে তিনি তার দৃঢ় বিশ্বাসের কথা জানান এবং তরুণ প্রজন্মকে হাদির নির্ভীক জীবন থেকে শিক্ষা নেওয়ার আহ্বান জানান।

সমাবর্তন অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ সমাবর্তন বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে স্টেট ইউনিভার্সিটির ১০টি বিভাগের মোট ৬৭২ জন শিক্ষার্থীকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি প্রদান করা হয়। এছাড়া কৃতিত্বপূর্ণ ফলের জন্য তিনজন শিক্ষার্থীকে চ্যান্সেলর’স গোল্ড মেডেল এবং আরও অনেককে বিভিন্ন সম্মাননা পদক প্রদান করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের প্রেসিডেন্ট ডা. এ এম শামীমসহ জ্যেষ্ঠ শিক্ষকরা সমাবর্তনে অংশ নিয়ে নতুন গ্র্যাজুয়েটদের আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় যোগ্য হয়ে ওঠার পরামর্শ দেন।


কূটনৈতিক এলাকায় বিক্ষোভকারীদের হানা: দিল্লির কাছে জবাবদিহি চায় ঢাকা

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২১ ২০:৪৩:৫৩
কূটনৈতিক এলাকায় বিক্ষোভকারীদের হানা: দিল্লির কাছে জবাবদিহি চায় ঢাকা
ছবি : সংগৃহীত

নয়াদিল্লিতে অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশনের সামনে উগ্রপন্থীদের বিক্ষোভ এবং উদ্ভূত পরিস্থিতির বিষয়ে ভারত সরকারের দেওয়া আনুষ্ঠানিক ব্যাখ্যা বা প্রেসনোট পুরোপুরি প্রত্যাখ্যান করেছে বাংলাদেশ সরকার। রোববার (২১ ডিসেম্বর) বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত এক জরুরি প্রেস ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন ঢাকার এই শক্ত অবস্থানের কথা স্পষ্ট করেন। তিনি দিল্লির অত্যন্ত সুরক্ষিত কূটনৈতিক জোনের অভ্যন্তরে বিক্ষোভকারীদের প্রবেশাধিকার নিয়ে তীব্র প্রশ্ন তুলেছেন এবং ভবিষ্যতে ভারতের মাটিতে বাংলাদেশের কূটনৈতিক মিশনগুলোর আকার ছোট করার প্রচ্ছন্ন ইঙ্গিত দিয়েছেন।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তার বক্তব্যে বলেন যে নয়াদিল্লির মতো একটি অতি সুরক্ষিত এলাকায় বিদেশি মিশনের এত কাছে বিক্ষোভকারীরা কীভাবে পৌঁছাতে পারল তা একটি বড় রহস্য। হাইকমিশনারের বাসভবনে হামলার চেষ্টার ঘটনাকে কেন্দ্র করে তিনি ভারতের নিরাপত্তা ব্যবস্থার কার্যকারিতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন। তৌহিদ হোসেনের মতে ভারতের দেওয়া প্রেসনোটে বাস্তবতাকে আড়াল করার চেষ্টা করা হয়েছে যা ঢাকা কোনোভাবেই গ্রহণ করছে না। প্রয়োজনে নয়াদিল্লিতে মিশনের কার্যক্রম সংকুচিত করার বিষয়টিও সরকারের বিবেচনাধীন রয়েছে বলে তিনি ইঙ্গিত দেন।

এর আগে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল এক বিবৃতিতে দাবি করেন যে ২০ ডিসেম্বর ২০ থেকে ২৫ জন যুবক ময়মনসিংহে দীপু চন্দ্র দাস হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে স্লোগান দিতে হাইকমিশনের সামনে জড়ো হয়েছিল। ভারতের দাবি অনুযায়ী সেখানে কোনো নিরাপত্তা বেষ্টনী ভাঙার চেষ্টা হয়নি এবং পুলিশ কয়েক মিনিটের মধ্যেই তাদের সরিয়ে দিয়েছে। রণধীর জয়সওয়াল আরও উল্লেখ করেন যে ভারত ভিয়েনা কনভেনশন অনুযায়ী সব বিদেশি মিশনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার বিষয়টি নিয়ে তারা নিবিড়ভাবে নজর রাখছে।

তবে ভারতের এই দাবিকে ‘বিভ্রান্তিকর’ হিসেবে দেখছে বাংলাদেশ। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন জানান যে ময়মনসিংহে সংঘটিত একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভিনদেশের সার্বভৌম কূটনৈতিক সীমানায় বিক্ষোভ প্রদর্শন এবং হাইকমিশনারকে হুমকি দেওয়া আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী। তিনি বলেন যে বাংলাদেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ইতোমধ্যে দীপু হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ত্বরিত ব্যবস্থা নিয়েছে কিন্তু দিল্লিতে বাংলাদেশের কূটনীতিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ভারত ব্যর্থ হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে দুই দেশের মধ্যকার কূটনৈতিক সম্পর্কে নতুন করে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে যা নিরসনে দিল্লির আরও দায়িত্বশীল আচরণ প্রত্যাশা করছে ঢাকা।


হাদি হত্যার ঘাতক সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই: অতিরিক্ত আইজিপি

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২১ ১৮:৫৪:৩৯
হাদি হত্যার ঘাতক সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই: অতিরিক্ত আইজিপি
ছবি : সংগৃহীত

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ডের প্রধান অভিযুক্ত ফয়সাল করিম মাসুদের অবস্থান সম্পর্কে এখনও কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য পায়নি পুলিশ। রোববার (২১ ডিসেম্বর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত আইজিপি খন্দকার রফিকুল ইসলাম এই তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন যে অপরাধীর শেষ অবস্থান শনাক্ত করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক ইউনিট ও গোয়েন্দা সংস্থা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। তবে আসামি ফয়সাল দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন এমন কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্য এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।

সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত আইজিপি আরও বলেন যে অনেক সময় অপরাধীদের অবস্থান নিয়ে জনমনে বিভ্রান্তি ছড়ানো হয় যা তদন্ত প্রক্রিয়ায় ব্যাঘাত ঘটায়। অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে এবং দ্রুততম সময়ে তাকে আইনের আওতায় আনা হবে বলে তিনি আশ্বস্ত করেন। হাদি হত্যাকাণ্ডটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে কি না কিংবা এর পেছনে কোনো নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের ইন্ধন রয়েছে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান যে তদন্ত এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে এবং এখন পর্যন্ত কোনো দলের সুনির্দিষ্ট সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি।

একই সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ডিবি প্রধান শফিকুল ইসলাম মামলার ভিন্ন একটি দিক তুলে ধরেন। তার মতে প্রাথমিক তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে মনে হচ্ছে যে এই হত্যাকাণ্ড রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই সংঘটিত হয়েছে। এখানে ব্যক্তিগত কোনো শত্রুতা বা উদ্দেশ্যে থাকার সম্ভাবনা ক্ষীণ বলে তিনি মন্তব্য করেন। ডিবি প্রধান আরও জানান যে ঘটনার শুরু থেকেই সব সরকারি সংস্থা সমন্বিতভাবে মাঠে রয়েছে এবং প্রতিটি সম্ভাব্য দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

উল্লেখ্য যে গত ১২ ডিসেম্বর রাজধানীর পল্টনে প্রকাশ্য দিবালোকে শরিফ ওসমান হাদিকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে নেওয়া হলেও শেষ পর্যন্ত তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। হাদির মৃত্যুতে দেশের ছাত্র-জনতার মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে এবং খুনিদের দ্রুত বিচার দাবি করা হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলছে যে মামলার প্রধান ঘাতক ফয়সালসহ তার সহযোগীদের গ্রেপ্তার করতে পারলেই এই হত্যাকাণ্ডের পেছনের মূল রহস্য উদঘাটিত হবে।


৩ দিনের রিমান্ড শেষে জানা গেল হান্নান নির্দোষ: পেলেন জামিন

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২১ ১৮:৪৫:৩২
৩ দিনের রিমান্ড শেষে জানা গেল হান্নান নির্দোষ: পেলেন জামিন
ছবি : সংগৃহীত

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক সন্দেহে আটক আব্দুল হান্নান অবশেষে জামিন পেয়েছেন। রোববার (২১ ডিসেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. হাসান শাহাদাত শুনানি শেষে এই আদেশ প্রদান করেন। গত ১৭ ডিসেম্বর পুলিশের পক্ষ থেকে দাখিল করা এক প্রতিবেদনে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয় যে আব্দুল হান্নান প্রকৃত মোটরসাইকেল মালিক নন বরং শুধুমাত্র রেজিস্ট্রেশন নম্বরের একটি সংখ্যার ভুলের কারণে তাকে আটক করা হয়েছিল।

ঘটনার বিবরণে জানা গেছে যে গত ১২ ডিসেম্বর পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে চলন্ত অটোরিকশায় থাকা শরিফ ওসমান হাদিকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হয়। এই ঘটনায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক শনাক্ত করতে গিয়ে গত ১৩ ডিসেম্বর আব্দুল হান্নানকে আটক করে র‍্যাব-২। পরবর্তীতে তাকে পল্টন মডেল থানায় সোপর্দ করে ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারায় তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। তদন্ত চলাকালে পুলিশ জানতে পারে যে আব্দুল হান্নানের নামে বিআরটিএ-তে নিবন্ধিত দুটি মোটরসাইকেল থাকলেও তার কোনোটিই হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত হয়নি।

পুলিশি তদন্তে দেখা গেছে যে শরিফ ওসমান হাদিকে হত্যার সময় ঘাতকরা ‘হোন্ডা’ ব্র্যান্ডের ‘হর্নেট’ মডেলের একটি মোটরসাইকেল ব্যবহার করেছিল। অন্যদিকে আব্দুল হান্নানের বাইকটি ছিল ‘সুজুকি’ ব্র্যান্ডের ‘জিক্সার’ মডেলের। মূলত মোটরসাইকেলের নম্বরের শেষের একটি সংখ্যার বিভ্রান্তি থেকেই এই অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। যে নম্বরের শেষে ‘৬’ থাকার কথা ছিল সেখানে ‘৫’ নম্বর শনাক্ত হওয়ায় নির্দোষ হান্নানকে কারাবরণ করতে হয়। রিমান্ড চলাকালে শোরুম মালিকের মুখোমুখি করা হলে হান্নানের সংশ্লিষ্টতা না পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হয় পুলিশ।

এদিকে গুরুতর আহত অবস্থায় সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন থাকাকালীন গত ১৮ ডিসেম্বর রাতে শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত হিসেবে ফয়সাল করিম মাসুদ ও রাহুল দাউদসহ তাদের সহযোগীদের নাম উঠে এসেছে যারা এখনো পলাতক রয়েছে। তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন যে আসল খুনিদের শনাক্ত করতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। নিরপরাধ আব্দুল হান্নানের মুক্তি মিললেও প্রকৃত অপরাধীদের গ্রেপ্তার করতে না পারা এবং তদন্তের প্রাথমিক পর্যায়ে পুলিশের এই ভুল নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।


তফসিলের পর সেনাপ্রধানের সাথে প্রথম বৈঠক: বড় সিদ্ধান্তের আভাস

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২১ ১৮:৩২:৩১
তফসিলের পর সেনাপ্রধানের সাথে প্রথম বৈঠক: বড় সিদ্ধান্তের আভাস
ছবি : সংগৃহীত

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং বহুপ্রতীক্ষিত গণভোটকে কেন্দ্র করে সারা দেশে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে যৌথ বাহিনীর সাঁড়াশি অভিযান শুরু করার নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। রোববার (২১ ডিসেম্বর) বিকেলে আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে আয়োজিত এক বিশেষ ব্রিফিংয়ে নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ এই তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান যে বর্তমানে সারা দেশে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নিয়মিত অভিযান চলছে এবং প্রতিদিন গড়ে প্রায় ২ হাজার ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। এই কার্যক্রম সম্পর্কে জনগণকে অবহিত করতে এখন থেকে নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হবে বলেও তিনি জানান।

এর আগে দুপুর থেকে নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে উচ্চপর্যায়ের একাধিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। দুপুর ১২টার দিকে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ নাজমুল হাসান এবং বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খান সিইসির সঙ্গে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে বসেন। ভোটের তফসিল ঘোষণার পর তিন বাহিনী প্রধানের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের এটিই প্রথম আনুষ্ঠানিক সাক্ষাৎ যা নির্বাচনের কৌশলগত নিরাপত্তার ক্ষেত্রে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।

পরবর্তীতে দুপুর ২টা ৫০ মিনিটে নির্বাচন ভবনের অডিটরিয়ামে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির সার্বিক পর্যালোচনায় বড় পরিসরে আরেকটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সিইসির সভাপতিত্বে ওই বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, তিন বাহিনী প্রধানের প্রতিনিধি এবং সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার অংশগ্রহণ করেন। এছাড়া পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি), এনএসআই, ডিজিএফআই, কোস্ট গার্ড, বিজিবি, র‍্যাব এবং আনসার ও ভিডিপির মহাপরিচালকসহ ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনারও উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন চার নির্বাচন কমিশনার এবং ইসি সচিব।

বৈঠক শেষে ইসি সূত্র জানায় যে ভোটারদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং কোনো ধরনের নাশকতা রোধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করা হয়েছে। নির্বাচন ও গণভোটকে সামনে রেখে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার এবং দাগি অপরাধীদের গ্রেপ্তারে যৌথ বাহিনীর এই অভিযান জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে আরও জোরদার করা হবে। নির্বাচন কমিশন আশা করছে যে সশস্ত্র বাহিনী ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এই সমন্বিত প্রচেষ্টার ফলে দেশে একটি শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর নির্বাচনী পরিবেশ বজায় থাকবে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে জেলাভিত্তিক নিরাপত্তা ছক চূড়ান্ত করে মাঠে নামবে বিশেষ দলগুলো।


দিল্লি-ঢাকা কূটনৈতিক সংঘাত: হাইকমিশন নিয়ে পাল্টাপাল্টি দাবি

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২১ ১৭:৫৬:০২
দিল্লি-ঢাকা কূটনৈতিক সংঘাত: হাইকমিশন নিয়ে পাল্টাপাল্টি দাবি
ছবি : সংগৃহীত

নয়াদিল্লিতে অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশনে উগ্রপন্থীদের হামলার চেষ্টা এবং উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে ভারত সরকারের দেওয়া ব্যাখ্যা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। রোববার (২১ ডিসেম্বর) বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন ঢাকার এই কঠোর অবস্থানের কথা জানান। তিনি বলেন যে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া প্রেসনোটে ঘটনাটিকে যেভাবে ‘সহজ ও সাধারণ’ করে দেখানো হয়েছে, বাস্তব পরিস্থিতি ছিল তার চেয়ে অনেক বেশি উদ্বেগজনক। বিশেষ করে নয়াদিল্লিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনারকে হত্যার হুমকি দেওয়ার মতো নজিরবিহীন ঘটনা ঘটেছে বলে ঢাকা অভিযোগ করেছে।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা প্রশ্ন তোলেন যে দিল্লির অত্যন্ত সুরক্ষিত এবং সংবেদনশীল কূটনৈতিক এলাকার গভীরে অবস্থিত বাংলাদেশ মিশনে উগ্রপন্থীরা কীভাবে এত সহজে প্রবেশ করতে পারল। তার মতে এটি কোনো সাধারণ বিক্ষোভ ছিল না বরং পরিকল্পিতভাবে ২০ থেকে ২৫ জনের একটি দলকে সেখানে আসতে দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও জানান যে হাইকমিশনের ভেতরে থাকা কর্মকর্তারা এবং তাদের পরিবার বর্তমানে চরম নিরাপত্তা শঙ্কায় রয়েছেন এবং এক ধরণের আতঙ্কিত পরিবেশের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। মিশনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ভারতের আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতা হলেও এক্ষেত্রে চরম অবহেলা করা হয়েছে বলে ঢাকা মনে করে।

এর আগে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল এক বিবৃতিতে জানিয়েছিলেন যে ২০ ডিসেম্বর বাংলাদেশ হাইকমিশনের সামনে ২০ থেকে ২৫ জন যুবক ময়মনসিংহে দীপু চন্দ্র দাস হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে স্লোগান দিয়েছেন। ভারতের দাবি অনুযায়ী সেখানে কোনো নিরাপত্তা বেষ্টনী ভাঙার চেষ্টা হয়নি এবং পুলিশ কয়েক মিনিটের মধ্যেই বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দিয়েছে। ভারতের পক্ষ থেকে বিষয়টিকে বাংলাদেশের গণমাধ্যমের ‘বিভ্রান্তিকর প্রচারণা’ হিসেবে অভিহিত করা হলেও পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন আজ সেই দাবি নাকচ করে দিয়েছেন। তিনি বলেন যে হাইকমিশনারকে ‘শালাকে গুলি করে মার’ বলে উগ্রপন্থীদের চিৎকার করার তথ্য তারা পেয়েছেন যা কোনোভাবেই অবহেলা করার মতো বিষয় নয়।

ময়মনসিংহের দীপু চন্দ্র দাস হত্যাকাণ্ডের প্রসঙ্গ টেনে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন যে একজন বাংলাদেশি নাগরিকের নৃশংস মৃত্যুকে ভারত যেভাবে ‘সংখ্যালঘু নাগরিকদের ওপর হামলা’ হিসেবে চিত্রায়িত করছে তা একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়। তিনি স্পষ্ট করেন যে নিহত ব্যক্তি বাংলাদেশের নাগরিক এবং এই ঘটনায় বাংলাদেশ সরকার তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নিয়ে ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। তিনি উল্লেখ করেন যে এ ধরণের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা পুরো অঞ্চলেই ঘটে থাকে কিন্তু একে কেন্দ্র করে ভিনদেশের কূটনৈতিক মিশনে হামলা ও হাইকমিশনারকে হত্যার হুমকি দেওয়া কূটনৈতিক শিষ্টাচারের চরম লঙ্ঘন। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশি কূটনীতিকদের নিরাপত্তা আরও জোরদার করতে ভারতের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ঢাকা।


নির্বাচন সামনে রেখে সারাদেশে যৌথ অভিযান শুরু হচ্ছে

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২১ ১৭:৪৮:১৭
নির্বাচন সামনে রেখে সারাদেশে যৌথ অভিযান শুরু হচ্ছে
ছবি: সংগৃহীত

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটকে ঘিরে সারাদেশে কঠোর আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা জোরদার করার ঘোষণা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ জানিয়েছেন, খুব শিগগিরই দেশব্যাপী যৌথ অভিযান শুরু করা হবে, যাতে কোনো ধরনের সহিংসতা, সন্ত্রাসী তৎপরতা বা বিশৃঙ্খলা মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে।

রোববার (২১ ডিসেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সংক্রান্ত এক গুরুত্বপূর্ণ ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন তিনি।

ব্রিফিংয়ে নির্বাচন কমিশনার স্পষ্ট ভাষায় বলেন, সরকারের বার্তা একেবারেই পরিষ্কার। কাউকে কোনো অবস্থাতেই সন্ত্রাসী কার্যকলাপে জড়াতে দেওয়া হবে না। নির্বাচনকালীন পরিবেশ যাতে শান্তিপূর্ণ, অবাধ ও নিরপেক্ষ থাকে, সে জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও জানান, নির্বাচন ঘিরে কোনো গোষ্ঠী বা ব্যক্তি যদি নাশকতা, ভয়ভীতি প্রদর্শন বা সহিংস কর্মকাণ্ডের চেষ্টা করে, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ লক্ষ্যে প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয় জোরদার করা হয়েছে।

নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ভোটারদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং নির্বাচনের বিশ্বাসযোগ্যতা রক্ষাই এই যৌথ অভিযানের মূল উদ্দেশ্য। পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রয়োজন অনুযায়ী অভিযান আরও বিস্তৃত করা হবে বলেও ইঙ্গিত দেন কমিশনার।

-রফিক


মবকারীদের ছাড় দেবে না সরকার: ধর্ম উপদেষ্টার কড়া হুঁশিয়ারি

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২১ ১৪:৪২:৫১
মবকারীদের ছাড় দেবে না সরকার: ধর্ম উপদেষ্টার কড়া হুঁশিয়ারি
ছবি : সংগৃহীত

দেশে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ‘মব জাস্টিস’ বা উশৃঙ্খল জনতার হাতে আইন তুলে নেওয়ার ঘটনাগুলোকে কঠোর হাতে দমন করার ঘোষণা দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। রোববার (২১ ডিসেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন সাফ জানিয়ে দিয়েছেন যে মবকারীদের অবিলম্বে আইনের আওতায় আনা হবে। তিনি বলেন যে আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মারা কিংবা কোনো সংবাদমাধ্যম বা গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় হামলা চালানো অত্যন্ত গর্হিত কাজ এবং সরকার এমন অরাজকতা কোনোভাবেই বরদাস্ত করবে না। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বর্তমানে সরকারের নিয়ন্ত্রণেই রয়েছে বলে তিনি দেশবাসীকে আশ্বস্ত করেন।

ময়মনসিংহের ভালুকায় ধর্ম অবমাননার অজুহাতে দীপু চন্দ্র দাস নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা এবং পরবর্তীতে তার মরদেহ গাছে বেঁধে পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনাকে ‘অত্যন্ত নিন্দনীয়’ হিসেবে অভিহিত করেন ধর্ম উপদেষ্টা। তিনি বলেন যে এ ধরণের বর্বরতা রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে একটি বড় বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। গত ১৮ ডিসেম্বর রাতের ওই ঘটনায় ইতোমধ্যে ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে তিনি নিশ্চিত করেন। নিহত যুবকের পরিবারের দাবি যে এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড যা ধর্ম অবমাননার অপবাদ দিয়ে ঘটানো হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে ধর্ম উপদেষ্টা বর্তমান পরিস্থিতির সীমাবদ্ধতা তুলে ধরে বলেন যে দেশের প্রতিটি স্থাপনায় একযোগে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সরকারের জন্য কিছুটা কঠিন কাজ। তবে যেকোনো ধরণের সহিংসতা ঠেকাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তৎপর রয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টার কার্যালয়ে হওয়া হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন যে সংবাদমাধ্যমের ওপর এ ধরণের আক্রমণ কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। সরকার এই ঘটনাগুলোকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে এবং এর পেছনে জড়িতদের শনাক্ত করার কাজ চলছে।

বর্তমান সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে এবং দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করতে কিছু গোষ্ঠী উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এ ধরণের অস্থিরতা তৈরি করছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার এর আগে এক বিবৃতিতে জানিয়েছিল যে ‘নতুন বাংলাদেশে’ এ ধরণের সহিংসতার কোনো স্থান নেই। ধর্ম উপদেষ্টা তার বক্তব্যে জোর দিয়ে বলেন যে কেউ অপরাধ করলে তাকে আইনের হাতে সোপর্দ করতে হবে কিন্তু আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া হবে শাস্তিযোগ্য অপরাধ। তিনি জনগণকে উস্কানিতে কান না দিয়ে শান্তি বজায় রাখার এবং সামাজিক শৃঙ্খলা রক্ষায় সরকারকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান।

পাঠকের মতামত:

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

রাষ্ট্রের ধারণাটি একসময় কেবল প্রশাসনিক ক্ষমতা, আইনের শাসন এবং নিরাপত্তা প্রদানের সঙ্গে সম্পর্কিত ছিল। কিন্তু আধুনিক বিশ্বে রাষ্ট্রের ভূমিকা এখন... বিস্তারিত