টানা উত্তেজনা, সীমান্তে পাকিস্তানি রেঞ্জার ভারতের হেফাজতে

সত্য নিউজ: ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে উত্তেজনা নতুন মাত্রা পেয়েছে। সম্প্রতি কাশ্মীরের পহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার পর থেকে দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে সম্পর্ক একেবারে তলানিতে পৌঁছেছে। এই প্রেক্ষাপটেই ভারতের রাজস্থানে আন্তর্জাতিক সীমান্ত থেকে এক পাকিস্তানি রেঞ্জারকে আটক করেছে বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স (বিএসএফ)। এনডিটিভির বরাতে জানা গেছে, শনিবার (৩ মে) মধ্যরাতে এই ঘটনা ঘটে।
প্রতিশোধ নাকি প্রতিক্রিয়া?
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী জানিয়েছে, আটক পাকিস্তানি রেঞ্জারের পরিচয় এখনও প্রকাশ করা হয়নি। তিনি বর্তমানে বিএসএফের রাজস্থান সীমান্ত শাখার হেফাজতে রয়েছেন। এই ঘটনা এমন সময় ঘটল, যখন পাকিস্তান গত ২৩ এপ্রিল পাঞ্জাবের ফিরোজপুর সেক্টর থেকে বিএসএফ কনস্টেবল পূর্ণম কুমার সাহুকে আটক করে রেখেছে। জানা যায়, ওই বিএসএফ সদস্য সীমান্ত অতিক্রম করে পাকিস্তানে প্রবেশ করেছিলেন, তবে তাকে এখনো মুক্তি দেওয়া হয়নি।
কাশ্মীর হামলা ও উত্তেজনার সূত্রপাত
উল্লেখ্য, ২২ এপ্রিল ভারতের জম্মু ও কাশ্মীর অঞ্চলের পহেলগামে এক নির্মম বন্দুক হামলায় অন্তত ২৬ জন বেসামরিক নাগরিক প্রাণ হারান। ভারতের দাবি, এই হামলার পেছনে সরাসরি পাকিস্তানের মদদ রয়েছে। যদিও ইসলামাবাদ এই অভিযোগ জোরালোভাবে অস্বীকার করেছে এবং ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে।
এই ঘটনার পরপরই ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সেনাবাহিনীকে ‘পূর্ণ স্বাধীনতা’ দিয়ে দিয়েছেন—যাতে তারা যেকোনো আগ্রাসনের উপযুক্ত জবাব দিতে পারে। জবাবে পাকিস্তানও ঘোষণা দিয়েছে, তারা দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সর্বোচ্চ প্রস্তুত রয়েছে।
সীমান্তে টানা সংঘর্ষ
কাশ্মীর সীমান্তে (লাইন অব কন্ট্রোল বা এলওসি) টানা দশদিন ধরে ভারত ও পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটছে। সর্বশেষ শনিবার দিবাগত মধ্যরাতে নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর নতুন করে সংঘর্ষ শুরু হয়। ভারতীয় সেনাবাহিনীর দাবি, বিনা উসকানিতে পাকিস্তানি বাহিনী কুপওয়ারা, বারামুলা, পুঞ্চ, রাজৌরি, মেন্ধার, নওশেরা, সুন্দরবনি ও আখনুর এলাকায় গুলি চালিয়েছে। এর জবাবে ভারতও পাল্টা গোলাবর্ষণ করে। যদিও এ পর্যন্ত হতাহতের নির্দিষ্ট কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
চলমান এই উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে সীমান্তে যে কোনো সময় বড় ধরনের সংঘাত ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা। একদিকে দুই দেশের মধ্যে আটকপ্রক্রিয়া ও পাল্টা অভিযানের ঘটনা, অন্যদিকে কাশ্মীরকে কেন্দ্র করে ক্রমবর্ধমান সামরিক উত্তেজনা—সব মিলিয়ে উপমহাদেশে নিরাপত্তা পরিস্থিতি উদ্বেগজনক রূপ নিচ্ছে।
ডলারের যুগের অবসান? পাঁচ শতাব্দীর আর্থিক ইতিহাসে পুনরাবৃত্ত পতনের ছন্দ
কল্পনা করুন, সময়টা ১৯৪৪ সাল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ তখনও শেষ হয়নি। ৪৪টি মিত্র দেশের প্রতিনিধিরা সমবেত হয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ হ্যাম্পশায়ারের পাহাড়ি শহর ব্রেটন উডসের মনোরম মাউন্ট ওয়াশিংটন হোটেলে। সেই বৈঠকে তাঁরা এমন এক সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছেন, যা পরবর্তী আশি বছরের জন্য পৃথিবীর অর্থনীতির ভাগ্য নির্ধারণ করবে। সভাকক্ষের ভেতরে ইতিহাস যেন থমকে আছে। ব্রিটেন, যে দেশ একসময় পৃথিবীর আর্থিক হৃদস্পন্দন ছিল, এখন প্রায় নিঃস্ব। তার জাতীয় ঋণ জিডিপির ২৪৯ শতাংশে পৌঁছেছে। পরপর দুটি বিশ্বযুদ্ধের ধাক্কায় সাম্রাজ্যটির অর্থনীতি প্রায় মুমূর্ষু অবস্থায়। যে দেশ শতাব্দীর পর শতাব্দী সমুদ্রপথ শাসন করেছিল, তার রিজার্ভ শেষ, ব্যাংক শূন্য এবং জনগণ ক্লান্ত। সেই মুহূর্তে উপস্থিত সবাই বুঝেছিল, এক যুগের অবসান ঘনিয়ে এসেছে।
তখন ঘটে ইতিহাসে বিরল এক ঘটনা। বিশ্বের রিজার্ভ মুদ্রার মুকুট এক সাম্রাজ্য থেকে অন্য সাম্রাজ্যের হাতে হস্তান্তরিত হয়। ব্রিটিশ পাউন্ড, যা দুই শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে বিশ্ব বাণিজ্যের মেরুদণ্ড ছিল, হারায় তার মর্যাদা। সেই শূন্যস্থান পূরণ করে মার্কিন ডলার। তবে এটি কেবল আর্থিক হস্তান্তর নয়। এটি ছিল মানবসভ্যতার আর্থিক ইতিহাসে বারবার পুনরাবৃত্ত এক চক্রের ধারাবাহিকতা। এই চক্রের চারটি ধাপ উত্থান, শিখর, অতিবিস্তার এবং পতন যুগে যুগে সাম্রাজ্য থেকে সাম্রাজ্যে পুনরাবৃত্ত হয়েছে। ইতিহাসে পর্তুগাল, স্পেন, নেদারল্যান্ডস এবং ব্রিটেন সবাই এই একই ধাপের মধ্য দিয়ে গেছে। আজ মার্কিন ডলার সেইসব পূর্বসূরির মতোই একই সতর্ক সংকেত দেখাতে শুরু করেছে।
এই চক্রটি বুঝতে হলে ফিরে যেতে হবে অতীতে, প্রায় ছয় শতাব্দী পেছনে, ইউরোপের পশ্চিম উপকূলে, পর্তুগালের উত্থানের কাহিনিতে।
পর্তুগালের রিয়াল ও আবিষ্কারের যুগ
১৪৫০ সালের দিকে পর্তুগিজ রিয়াল হয়ে ওঠে বিশ্বের প্রথম প্রকৃত রিজার্ভ মুদ্রা। পরবর্তী আশি বছর পর্তুগাল ছিল বৈশ্বিক বাণিজ্যের অবিসংবাদিত নেতা। তাদের সাফল্যের রহস্য ছিল নৌচালনা ও বৈদেশিক বাণিজ্যে উদ্ভাবন। ১৪৫৩ সালে অটোমান সাম্রাজ্যের হাতে কনস্টান্টিনোপলের পতনের পর প্রাচীন মশলার বাণিজ্যপথ বন্ধ হয়ে যায়। ইউরোপীয় বণিকদের জন্য এটি ছিল এক বিশাল ধাক্কা, কিন্তু পর্তুগাল খুঁজে পেল নতুন পথ। তারা আফ্রিকার দক্ষিণ প্রান্ত ঘুরে সমুদ্রপথে এশিয়ায় পৌঁছে দেয় বাণিজ্যের নতুন দ্বার, শুরু হয় আবিষ্কারের যুগ।
লিসবন তখন হয়ে ওঠে বিশ্বের বাণিজ্যকেন্দ্র। পর্তুগিজ রিয়াল ইউরোপ থেকে এশিয়া পর্যন্ত গৃহীত হতে শুরু করে। সাম্রাজ্য ছড়িয়ে পড়ে আফ্রিকা, ভারত, মালয়েশিয়া, জাপান এবং চীনের ম্যাকাও পর্যন্ত। কিন্তু ইতিহাসের চিরন্তন নিয়ম অনুযায়ী সাফল্যই হয়ে ওঠে পতনের সূচনা। চারটি মহাদেশে সামরিক ঘাঁটি রক্ষা করতে করতে তাদের ভাণ্ডার ফুরিয়ে যায়। প্রতিদ্বন্দ্বী শক্তি ডাচ, ফরাসি ও ব্রিটিশরা ক্রমে শক্তিশালী হয়ে ওঠে। ১৫৩০-এর দশকে রাজপরিবারে উত্তরাধিকার সংকট সৃষ্টি হলে দেশটি অস্থিতিশীল হয়ে পড়ে। শেষ পর্যন্ত ১৫৮০ সালে স্পেনের হাতে পর্তুগাল আত্মসমর্পণ করে, গঠিত হয় আইবেরিয়ান ইউনিয়ন। প্রায় আশি বছরের আধিপত্যের পর ইতিহাসের মঞ্চ থেকে হারিয়ে যায় পর্তুগালের রিয়াল। তার জায়গা নেয় স্প্যানিশ রূপা।
স্প্যানিশ রূপার সাম্রাজ্য
স্পেনের উত্থান শুরু হয় আন্দিজ পর্বতমালার কোলে বলিভিয়ার পোটোসি নামের এক পাহাড়ে বিশ্বের সবচেয়ে সমৃদ্ধ রূপার খনি আবিষ্কারের মধ্য দিয়ে। ১৫৪৫ সালে আবিষ্কৃত এই খনি ১৫৭৫ থেকে ১৬৩৫ সালের মধ্যে উৎপাদন করেছিল বিশ্বের প্রায় অর্ধেক রূপা। এই রূপা দিয়ে তৈরি হয় বিখ্যাত “পিস অফ এইট”, যা বিশ্বের প্রথম বৈশ্বিক মুদ্রা হিসেবে পরিচিত হয়। এই স্প্যানিশ ডলার এতটাই নির্ভরযোগ্য ছিল যে ১৮৫৭ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে বৈধ মুদ্রা হিসেবে প্রচলিত ছিল।
স্পেনের আধিপত্য স্থায়ী হয় প্রায় ১১০ বছর। কিন্তু অতিবিস্তার ও ঋণের বোঝা তাদের পতন ডেকে আনে। রাজা চার্লস প্রথম রেখে যান ৩৬ মিলিয়ন ডুকাট ঋণ এবং প্রতি বছর এক মিলিয়ন ডুকাটের ঘাটতি। তাঁর পুত্র ফিলিপ দ্বিতীয় এই বোঝা সামলাতে গিয়ে চারবার দেউলিয়া ঘোষণা করেন ১৫৫৭, ১৫৬০, ১৫৭৫ এবং ১৫৯৬ সালে। রূপার অবিরাম প্রবাহ দেশে সৃষ্টি করে ভয়াবহ মুদ্রাস্ফীতি। ফিলিপ দ্বিতীয়ের রাজত্বকালে পণ্যের দাম চারগুণ বেড়ে যায়। ফিলিপ তৃতীয়ের আমলে রূপার সরবরাহ অর্ধেকে নেমে আসতেই অর্থনীতি ধসে পড়ে এবং ১৬০৭ সালে আবার দেউলিয়াত্ব ঘোষণা করতে হয়। ১৬৪১ সালে আইবেরিয়ান ইউনিয়ন ভেঙে যায়। স্পেনের রূপার রাজত্বের অবসান ঘটে এবং আর্থিক শক্তির মঞ্চে উঠে আসে ডাচ প্রজাতন্ত্র।
নেদারল্যান্ডসের সোনালি যুগ
১৭ শতকে নেদারল্যান্ডস হয়ে ওঠে বিশ্বের আর্থিক রাজধানী। আমস্টারডাম তখন বাণিজ্যের নতুন কেন্দ্র এবং ডাচ গিল্ডার ইউরোপের কার্যত রিজার্ভ মুদ্রা। আমস্টারডাম ব্যাংক প্রবর্তন করে আন্তর্জাতিক অর্থপ্রদানের আধুনিক ও নির্ভরযোগ্য ব্যবস্থা। ডাচ বণিকেরা প্রথম গঠন করে শেয়ারবাজার, সামুদ্রিক বীমা এবং শেয়ার কোম্পানির ধারণা।
১৬৪২ থেকে ১৭২০ পর্যন্ত, প্রায় আট দশক ধরে, বিশ্বের এক তৃতীয়াংশ বাণিজ্য সম্পন্ন হতো ডাচ মুদ্রায়। কিন্তু একই চক্র পুনরায় দেখা দেয়। চতুর্থ ইংরেজ-ডাচ যুদ্ধের (১৭৮০ থেকে ১৭৮৪) ফলে দেশটি দেউলিয়া হয়ে পড়ে। বিশাল ডাচ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ভেঙে যায়। এই শূন্যস্থান পূরণ করে ব্রিটেন, যে তখন শিল্পবিপ্লবের মাধ্যমে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছিল।
ব্রিটিশ পাউন্ড ও শিল্পবিপ্লবের শতাব্দী
দুই শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে ব্রিটিশ পাউন্ড ছিল বৈশ্বিক বাণিজ্যের প্রধান মুদ্রা। শিল্পবিপ্লব, প্রযুক্তিগত অগ্রগতি ও উপনিবেশ সাম্রাজ্যের শক্তিতে ব্রিটেন গড়ে তোলে পৃথিবীর বৃহত্তম অর্থনীতি। ১৮১৬ সালের গ্রেট রিকয়েনেজের পর স্বর্ণমান প্রতিষ্ঠিত হয়, যা পাউন্ডকে বিশ্বের সবচেয়ে স্থিতিশীল মুদ্রায় পরিণত করে। ১৯২২ সালের মধ্যে ব্রিটিশ সাম্রাজ্য শাসন করত বিশ্বের এক চতুর্থাংশ ভূমি ও এক পঞ্চমাংশ জনসংখ্যা, প্রায় ৪৫৮ মিলিয়ন মানুষ।
তবে দীর্ঘস্থায়ী এই আধিপত্যের অবসান ঘটাতে শুরু করে দুটি বিশ্বযুদ্ধ। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর ঋণ বেড়ে যায় ৬৫০ মিলিয়ন পাউন্ড থেকে ৭ বিলিয়নে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষে সরকারি ঋণ দাঁড়ায় জিডিপির ২৭০ শতাংশে। ব্রিটেন যুদ্ধ জিতলেও হারায় তার আর্থিক নেতৃত্ব।
ব্রেটন উডস ও ডলারের যুগ
১৯৪৪ সালের জুলাই মাসে ৭০০ প্রতিনিধি জড়ো হন ব্রেটন উডসে। লক্ষ্য ছিল যুদ্ধবিধ্বস্ত বিশ্ব অর্থনীতির পুনর্গঠন। সেই সম্মেলন থেকেই জন্ম নেয় আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (IMF) এবং বিশ্বব্যাংক (World Bank)। চুক্তি অনুযায়ী সব বড় মুদ্রা বাঁধা হয় মার্কিন ডলারের সঙ্গে, আর ডলার বাঁধা হয় স্বর্ণে প্রতি আউন্স ৩৫ ডলার দরে। এই মুহূর্তেই ব্রিটিশ পাউন্ডের যুগের সমাপ্তি ঘটে এবং সূচনা হয় আমেরিকান যুগের।
এরপরের পঁচিশ বছর ডলার রাজত্ব করে নিরঙ্কুশভাবে। ১৯৭১ সালে প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন ডলারের স্বর্ণ-রূপান্তরযোগ্যতা স্থগিত করেন এবং স্বর্ণমান বিলুপ্ত হয়। তবু ডলার ধসে পড়েনি। বরং খুঁজে নেয় নতুন ভিত্তি, তেল।
১৯৭৩ সালের ওপেক তেল সংকটের পর যুক্তরাষ্ট্র সৌদি আরবের সঙ্গে এক কৌশলগত চুক্তি করে। মার্কিন সামরিক সুরক্ষার বিনিময়ে সৌদি তেল বিক্রি হবে কেবল ডলারে। ১৯৭৫ সালের মধ্যে সব ওপেক সদস্য এই চুক্তি মেনে নেয়। জন্ম নেয় পেট্রো-ডলার ব্যবস্থা। তেল ছিল সবার প্রয়োজন, তাই ডলারও হয়ে ওঠে সবার প্রয়োজন। এই কৃত্রিম চাহিদা যুক্তরাষ্ট্রকে এমন বিশাল ঘাটতি বহনের সুযোগ দেয় যা অন্য কোনো দেশের পক্ষে অসম্ভব ছিল।
২০০০ সালের দিকে বিশ্বের বৈদেশিক রিজার্ভের ৭০ শতাংশ ছিল ডলারে। কিন্তু ২০২৪ সালে তা কমে দাঁড়ায় ৫৭ দশমিক ৮ শতাংশে। ২০০৮ সালের আর্থিক সংকটের সময় বিদেশি বিনিয়োগকারীরা মার্কিন ট্রেজারির অর্ধেকেরও বেশি ধারণ করত, অথচ ২০২৫ সালে তা নেমে আসে মাত্র ৩০ শতাংশে।
ডি-ডলারাইজেশনের দ্রুত অগ্রযাত্রা
একই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিদ্বন্দ্বী জোট ব্রিকস, যার সদস্য ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকা, সম্প্রতি যুক্ত করেছে মিশর, ইথিওপিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ইরান এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতকে। তারা গড়ে তুলছে ব্রিকস ব্রিজ, একটি পেমেন্ট নেটওয়ার্ক যা সেন্ট্রাল ব্যাংকের ডিজিটাল মুদ্রার মাধ্যমে লেনদেন করবে, ডলার ছাড়াই। ২০২৫ সাল নাগাদ এই জোট ও তাদের ১৩টি অংশীদার দেশ এই উদ্যোগে যুক্ত হচ্ছে।
অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি নিজেই ঋণে ডুবে আছে। ২০২৫ সালের মার্চে মার্কিন সরকারের মোট ঋণ দাঁড়ায় ৩৬ দশমিক ৪ ট্রিলিয়ন ডলারে, যা জিডিপির ১২৪ শতাংশ। এটি সেই একই সূচক যা ইতিহাসে প্রতিটি সাম্রাজ্যের পতনের আগে দেখা গেছে, অতিরিক্ত ঋণ, সামরিক অতিবিস্তার এবং উৎপাদনশীলতার পতন।
ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি
পর্তুগাল, স্পেন, নেদারল্যান্ডস এবং ব্রিটেন সবাই একই পথে হেঁটেছে। তাদের রিজার্ভ মুদ্রার আয়ু ছিল ৭৮ থেকে ২২০ বছর পর্যন্ত, গড়ে প্রায় ৯৫। মার্কিন ডলার এখন ৮১ বছরে পা দিয়েছে। ইতিহাসের চক্র আবার ঘুরে দাঁড়াচ্ছে।
প্রত্যেক রিজার্ভ মুদ্রার চারটি ধাপ থাকে। প্রথম ধাপ উত্থান, যখন একটি দেশ বাণিজ্য, অর্থনীতি বা সামরিক শক্তিতে উদ্ভাবনের মাধ্যমে নেতৃত্ব গড়ে তোলে। পর্তুগাল নৌচালনায় বিপ্লব ঘটায়, স্পেন রূপার জোগান নিয়ন্ত্রণ করে, ডাচরা আধুনিক অর্থব্যবস্থা তৈরি করে, ব্রিটেন শিল্পবিপ্লব ঘটায় এবং যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধ-পরবর্তী শিল্পশক্তিতে উত্থান ঘটায়। দ্বিতীয় ধাপ শিখর, যখন সেই মুদ্রা হয়ে ওঠে বৈশ্বিক মানদণ্ড এবং বিশ্বের ৬০ শতাংশ বাণিজ্য এতে পরিচালিত হয়। তৃতীয় ধাপ অতিবিস্তার, যেখানে সামরিক ব্যয়, ঋণ এবং উৎপাদনশীলতার পতন দেখা দেয়। পর্তুগাল চার মহাদেশে সামরিক বোঝা বইতে পারেনি, স্পেন বারবার দেউলিয়া হয়েছে, ডাচরা ব্রিটেনের সঙ্গে যুদ্ধ করে নিঃশেষ হয়েছে, ব্রিটেনের ঋণ পৌঁছেছিল জিডিপির ২৭০ শতাংশে। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের ঋণ ১২৪ শতাংশ এবং মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ ব্যয় আট ট্রিলিয়ন ডলার। শেষ ধাপ পতন, যখন আস্থা হারিয়ে যায় এবং বৈশ্বিক ক্ষমতার কেন্দ্র সরে যায় অন্যত্র।
পরবর্তী বিশ্বব্যবস্থা: একমেরু না বহুমেরু
স্পেনের হাতে পতনের পর পর্তুগাল আর কখনো মাথা তুলতে পারেনি। স্পেন শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে ধুঁকেছে, নেদারল্যান্ডস ধনী থেকেও আঞ্চলিক শক্তিতে সীমিত হয়েছে, আর ব্রিটেনের সাম্রাজ্য ১৯৪৫-এর পর গলে গেছে। ১৯৫০-এর দশকে এখনও বিশ্বের ৫৫ শতাংশ রিজার্ভ ছিল স্টার্লিংয়ে, কিন্তু দুই দশকের মধ্যেই তা অর্ধেকে নেমে আসে। ব্রিটিশ শতাব্দী শেষ, শুরু হয় আমেরিকান শতাব্দী।
তবে এমন পরিবর্তন একদিনে ঘটে না। ব্রিটেনের পতন ছিল ধীর, যুক্তরাষ্ট্র অর্থনৈতিকভাবে তাকে ছাড়িয়ে গিয়েছিল বহু আগেই, যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে ডলার পাউন্ডকে প্রতিস্থাপন করে পরে। আজ একই ধীর রূপান্তর সম্ভবত আবার ঘটছে, এইবার চীনের দিকে, কিংবা একাধিক শক্তির সম্মিলিত নেতৃত্বে নতুন এক বহুমেরু বিশ্বব্যবস্থার দিকে।
ইতিহাসে রিজার্ভ মুদ্রার গড় আয়ু প্রায় ৯৫ বছর। মার্কিন ডলার সেই সীমার কাছাকাছি এসে পৌঁছেছে। বৈশ্বিক রিজার্ভে ডলারের অংশীদারিত্ব কমছে, বিদেশি ট্রেজারি বিনিয়োগ হ্রাস পাচ্ছে, ব্রিকস বিকল্প গড়ে তুলছে, পেট্রো-ডলার ব্যবস্থা দুর্বল হচ্ছে এবং যুক্তরাষ্ট্র ১৩০ দেশে ৯০০ সামরিক ঘাঁটি ধরে রাখতে হিমশিম খাচ্ছে। এই চিত্র যেন ইতিহাসেরই পুনরাবৃত্তি, একই ছন্দে, নতুন মুখে।
তবে প্রশ্ন রয়ে গেছে, এই পরিবর্তন কত দ্রুত ঘটবে এবং পরবর্তী আর্থিক যুগের নেতৃত্ব নেবে কে। এটি কি হবে ব্রিটেনের মতো ধীর অবসান, নাকি নেদারল্যান্ডসের মতো আকস্মিক পতন। একটি একক শক্তি কি আবার বিশ্ব অর্থনীতির শীর্ষে উঠবে, নাকি ভবিষ্যৎ হবে বহুমেরু, যেখানে কয়েকটি রিজার্ভ মুদ্রা ভাগাভাগি করবে বৈশ্বিক প্রভাব।
ইতিহাস কখনো ঠিক একরকম পুনরাবৃত্তি হয় না, কিন্তু তার ছন্দ ফিরে আসে। আর যদি সেই ছন্দ এবারও সত্য প্রমাণিত হয়, তবে পৃথিবী এখন দাঁড়িয়ে আছে এক ঐতিহাসিক সন্ধিক্ষণে, ডলারের আধিপত্যের শেষ অধ্যায়ের দ্বারপ্রান্তে।
সুদানের গৃহযুদ্ধ: সেনা ও আরএসএফ সংঘাত ও তীব্র মানবিক সংকট
সাত মিনিটে কোটি টাকার জুয়েল চুরি, আরও দুইজন আটক
ফ্রান্সের বিখ্যাত ল্যুভর জাদুঘরে কোটি টাকার জুয়েল ডাকাতির ঘটনায় আরও দুইজনকে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযুক্ত করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এদের একজন নারী এবং একজন পুরুষ। এর ফলে এ মামলায় এখন মোট চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ হলো।
প্যারিসের প্রসিকিউটর জানিয়েছেন, ৩৮ বছর বয়সী ওই নারী এবং ৩৭ বছর বয়সী পুরুষকে বুধবার গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তাদের সঙ্গে আরও তিনজনকে আটক করা হলেও তারা নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ায় মুক্তি পেয়েছেন।
আদালতে হাজিরার সময় নারী অভিযুক্ত কেঁদে ফেলেন এবং সন্তানদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তার বিরুদ্ধে সংগঠিত চুরি এবং অপরাধ পরিকল্পনায় জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয়েছে। বিচারক বলেন, তাকে মুক্তি দেওয়া হলে তদন্তে বাধা সৃষ্টি হতে পারে। তিনি প্যারিসের উপকণ্ঠ লা কুরনভ এলাকায় থাকেন।
পুরুষ অভিযুক্তের বিরুদ্ধে চুরি ও অপরাধ চক্রের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকার অভিযোগ আনা হয়েছে। আগে চুরির ঘটনায় তার নামে মামলা ছিল বলে জানা গেছে। শুনানি না হওয়া পর্যন্ত তিনি কারাগারে থাকবেন। তবে দু’জনই নিজেদের নির্দোষ দাবি করেছেন।
নারীর আইনজীবী বলেন, তার মক্কেল কোনো অপরাধ করেননি এবং এই সিদ্ধান্ত তাকে মানসিকভাবে ভেঙে দিয়েছে। আরেক আইনজীবী অভিযোগ তুলেছেন যে, পুলিশ সন্দেহভাজনদের যেন জালের মাছের মতো ধরে নিয়ে যাচ্ছে।
গত মাসে দিনের বেলায় ল্যুভরে এই ডাকাতি ঘটে। মাত্র সাত মিনিটে চোরেরা পাওয়ার টুল ব্যবহার করে জাদুঘরের প্রদর্শনী থেকে প্রায় ১০২ মিলিয়ন ডলার মূল্যমানের জুয়েল চুরি করে। প্রথমে দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়, যারা আংশিকভাবে অপরাধ স্বীকার করেছেন। তাদের একজনকে গ্রেপ্তার করা হয় বিমানবন্দরে দেশ ছাড়ার সময়, আরেকজনকে ধরা হয় তার বাসার কাছে।
চোরেরা পালানোর সময় নেপোলিয়ন তৃতীয়ের স্ত্রী সম্রাজ্ঞী ইউজেনির একটি হীরক-ও-পান্নাখচিত মুকুট ফেলে যায়। তবে সম্রাট নেপোলিয়ন প্রথমের উপহার হিসেবে পরিচিত মূল্যবান নেকলেসসহ আটটি জুয়েল এখনো নিখোঁজ।
ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লরাঁ নিউনেজ বলেন, “আমরা নিশ্চিত—এই মূল্যবান জুয়েলগুলো উদ্ধার করতে পারব।”
-আলমগীর হোসেন
কেনিয়ায় ভয়াবহ ভূমিধস: মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২১, নিখোঁজ অন্তত ৩০
পশ্চিম কেনিয়ায় টানা ভারি বর্ষণের কারণে ভয়াবহ ভূমিধসে কমপক্ষে ২১ জন নিহত হয়েছেন এবং এখনো নিখোঁজ রয়েছেন আরও অন্তত ৩০ জন। দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কিপচুম্বা মুরকোমেন শনিবার রাতে এক বিবৃতিতে এ হতাহতের তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, দুর্ঘটনার পরপরই উদ্ধারকাজ শুরু হলেও রাতে তা স্থগিত রাখা হয়েছে; ভোর থেকে আবারও উদ্ধার অভিযান শুরু হবে।
ভূমিধসটি ঘটে রাতের অন্ধকারে, কেনিয়ার পশ্চিমাঞ্চলীয় মারাকওয়েট ইস্ট এলাকায়। বর্তমানে অঞ্চলটি বর্ষার মৌসুমে থাকায় পাহাড়ি ঢাল দুর্বল হয়ে পড়েছিল, যা ব্যাপক ধসের কারণ হয়েছে বলে প্রাথমিক ধারণা উদ্ধারকর্মীদের। মাটির বিশাল অংশ ভেসে গিয়ে বহু গ্রামাঞ্চল তলিয়ে গেছে এবং ঘরবাড়ি, রাস্তা ও কৃষিজমি মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
কেনিয়া রেড ক্রস দুর্গত এলাকা থেকে আকাশপথে ধারণ করা কিছু ছবি প্রকাশ করেছে, যেখানে বিস্তীর্ণ এলাকায় কাদার স্রোত, ধ্বংসস্তূপ এবং হঠাৎ সৃষ্ট বন্যার চিত্র দেখা গেছে। সংস্থাটি জানিয়েছে, তারা সরকারি জরুরি সেবা সংস্থাগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করছে এবং আহতদের বিমানযোগে হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে।
রেড ক্রসের বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বন্যা ও ধসের কারণে বহু সড়ক বন্ধ হয়ে গেছে এবং দুর্গত এলাকায় পৌঁছাতে তীব্র চ্যালেঞ্জের মুখে উদ্ধারকর্মীরা। ভৌগোলিক বিচ্ছিন্নতার কারণে অনেক এলাকা এখনো উদ্ধার দলের নাগালের বাইরে, ফলে নিখোঁজের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসন সকল বাসিন্দাকে নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে জরুরি সতর্কতা জারি করেছে।
স্থানীয়দের মতে, ভূমিধস শুরু হলে অনেকেই ঘুমের মধ্যে ছিলেন। হঠাৎ মাটিধসে ঘরবাড়ি ধসে পড়ে এবং অনেক পরিবার মুহূর্তের মধ্যে মাটিচাপা পড়ে যায়। প্রাকৃতিক দুর্যোগের এই ধাক্কা সামাল দিতে স্থানীয় জনগণ স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে মিলিত হয়ে উদ্ধার প্রচেষ্টায় অংশ নিচ্ছেন।
আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, আফ্রিকার এই অঞ্চলে চলতি মৌসুমে অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের হার স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় বেশি। ফলে পাহাড়ি অঞ্চলে ভূমিধসের ঝুঁকি এখনও প্রবল রয়েছে।
-নাজমুল হাসান
অস্ত্র হাতে ইসলামিক সন্ত্রাসীদের নির্মূল করা হবে কেন নাইজেরিয়ায় প্রবেশের ইঙ্গিত ট্রাম্পের
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নাইজেরিয়ায় সম্ভাব্য সামরিক পদক্ষেপের জন্য প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগনকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি দাবি করেছেন, নাইজেরিয়ায় খ্রিস্টানদের ওপর ভয়াবহ সহিংসতা চালানো হচ্ছে; যুক্তরাষ্ট্র এখন অস্ত্র হাতে ইসলামিক সন্ত্রাসীদের সম্পূর্ণ নির্মূল করতে ওই দেশে প্রবেশ করতে পারে।
তবে নাইজেরিয়া সরকার বারবার সে দেশে খ্রিস্টানদের ওপর হত্যার এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। স্থানীয় প্রতিবেদনগুলোতে বলা হয়েছে, নাইজেরিয়ার প্রধানত মুসলিম অধ্যুষিত উত্তরাঞ্চলে নিহতদের মধ্যে বেশিরভাগই মুসলিম সম্প্রদায়। সিএনএন এই খবর জানিয়েছে।
শনিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক দীর্ঘ পোস্টে ট্রাম্প নাইজেরিয়ায় খ্রিস্টানদের ওপর তথাকথিত 'বৃহৎ হত্যাযজ্ঞ'-এর সমালোচনা করেন; তিনি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে, যুক্তরাষ্ট্র 'অবিলম্বে নাইজেরিয়াকে দেওয়া সব ধরনের সাহায্য ও সহায়তা বন্ধ করবে' এবং দেশটির সরকারকে এই হামলার বিরুদ্ধে 'দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার' জন্য সতর্ক করেছেন।
ট্রাম্প বলেন, "আমি আমাদের যুদ্ধ বিভাগকে সম্ভাব্য পদক্ষেপের জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দিচ্ছি; যদি আমরা আক্রমণ করি, সেটা হবে দ্রুত, কঠোর এবং কার্যকর—ঠিক যেমন ওই সন্ত্রাসীরা আমাদের প্রিয় খ্রিস্টানদের ওপর আক্রমণ চালাচ্ছে!"
প্রতিরক্ষা মন্ত্রী পিট হেগসেথ ট্রাম্পের বক্তব্যের একটি স্ক্রিনশট শেয়ার করে সামাজিক মাধ্যমে লিখেছেন, "হয় নাইজেরিয়া সরকার খ্রিস্টানদের রক্ষা করবে, নতুবা আমরা ওই ইসলামিক সন্ত্রাসীদের ধ্বংস করব।" তিনি বলেন, নিরীহ খ্রিস্টানদের হত্যা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না।
তবে বাস্তবে নাইজেরিয়ায় চরমপন্থী ইসলামপন্থীদের হামলায় খ্রিস্টান ও মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ই ভুক্তভোগী। দেশটির সহিংসতার পেছনে একাধিক কারণ রয়েছে; কিছু ধর্মীয় সংঘাত, আবার কিছু কৃষক ও পশুপালকদের মধ্যে জমি ও সম্পদ নিয়ে বিরোধ থেকে শুরু করে জাতিগত ও সামাজিক টানাপোড়েনের ফল। যদিও ভুক্তভোগীদের বেশিরভাগই মুসলিম সম্প্রদায়।
সূত্র : সিএনএন।
রাশিয়ার অপ্রতিরোধ্য পারমাণবিক অস্ত্র পসাইডন ইউরোপের নিরাপত্তায় নতুন হুমকি
রাশিয়া সফলভাবে 'পসাইডন' নামের একটি পারমাণবিক শক্তিচালিত সুপার টর্পেডোর পরীক্ষা সম্পন্ন করেছে। দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন শুক্রবার এই ঘোষণা দেন। গ্রিক পুরাণের সমুদ্রদেবতা পসাইডনের নামে নামকরণ করা এই অস্ত্র সমুদ্রের নিচে ভয়াবহ তেজস্ক্রিয় ঢেউ সৃষ্টি করে উপকূলীয় অঞ্চল ধ্বংস করার সক্ষমতা রাখে বলে দাবি করা হচ্ছে।
বিবিসি-র এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। পুতিনের দাবি, এ ধরনের বিধ্বংসী অস্ত্র বিশ্বের আর কোনো দেশের কাছে নেই। রুশ পার্লামেন্টের একজন জ্যেষ্ঠ সদস্য এই টর্পেডোকে ড্রোন ও পারমাণবিক টর্পেডোর সংমিশ্রণ বলে অভিহিত করেছেন; তার দাবি, এটি পুরো একটি রাষ্ট্রকে অচল করে দিতে সক্ষম।
পসাইডনের কথা প্রথমবার প্রকাশ্যে আসে ২০১৮ সালে; তখন বলা হয়েছিল এটি ঘণ্টায় ২০০ কিলোমিটার গতিতে চলতে পারে এবং পথ পরিবর্তন করতে সক্ষম, যা একে আটকানো প্রায় অসম্ভব করে তোলে।
এর আগে ২১ অক্টোবর রাশিয়া 'বুরেভেস্তনিক' নামের পারমাণবিক চালিত নতুন এক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষারও ঘোষণা দেয়; রাশিয়ার দাবি, এই ক্ষেপণাস্ত্র বিশ্বের যে কোনো প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ভেদ করতে পারে। ন্যাটো এই অস্ত্রটিকে 'এসএসসি-এক্স-৯ স্কাইফল' নামে চিহ্নিত করেছে। পসাইডন ও বুরেভেস্তনিক ছিল ২০১৮ সালে পুতিনের প্রকাশিত 'অজেয় অস্ত্রের' তালিকারই অংশ।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, রাশিয়ার এসব ঘোষণা মূলত একটি রাজনৈতিক প্রচারণা। ব্রিটিশ রাশিয়া-বিশেষজ্ঞ মার্ক গ্যালিওটি বিবিসিকে বলেন, পসাইডন ও বুরেভেস্তনিক মূলত 'আর্মাগেডন অস্ত্র'—এগুলো ব্যবহারের অর্থ হবে পৃথিবী ধ্বংস। তিনি মনে করেন, এসব অস্ত্র 'সেকেন্ড-স্ট্রাইক' বা প্রতিশোধমূলক হামলার উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়েছে।
অনেকে রাশিয়ার প্রযুক্তিগত সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। ২০১৯ সালে একটি রকেট ইঞ্জিন বিস্ফোরণে পাঁচ রুশ পারমাণবিক প্রকৌশলী নিহত হয়েছিলেন; ধারণা করা হয়, সেই বিস্ফোরণ বুরেভেস্তনিক প্রকল্পেরই অংশ ছিল। আন্তর্জাতিক কৌশল গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইআইএসএস জানিয়েছে, পারমাণবিক প্রোপালশন প্রযুক্তিতে রাশিয়ার এখনো বড় ধরনের ঘাটতি রয়েছে।
সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উদ্যোগে রাশিয়া-ইউক্রেন শান্তি সংলাপ ভেস্তে যাওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার তেল কোম্পানিগুলোর ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে; তারই পরপর পুতিনের এই অস্ত্র পরীক্ষার ঘোষণা আসে। বিশ্লেষক গ্যালিওটির মতে, পুতিনের লক্ষ্য হলো ট্রাম্পের দৃষ্টি আকর্ষণ করা এবং নিজের সামরিক শক্তি প্রদর্শন করা।
উপহার নিয়ে তোলপাড় ভারতে বাংলাদেশের 'বিকৃত' মানচিত্র প্রসঙ্গে দিল্লির জবাব
পাকিস্তানের যৌথ বাহিনীর চেয়ারম্যান জেনারেল সাহির শামশাদ মির্জার বাংলাদেশ সফরকালে তাকে দেওয়া প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের একটি উপহার নিয়ে ভারতে তীব্র আলোচনা শুরু হয়েছে। ভারতের কিছু গণমাধ্যম দাবি করেছে, ড. ইউনূস জেনারেল মির্জাকে এমন একটি পতাকা উপহার দিয়েছেন, যাতে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে বাংলাদেশের মানচিত্রের অন্তর্ভুক্ত করে 'বিকৃত মানচিত্র' ব্যবহার করা হয়েছে।
এই বিষয়ে ভারতীয় সাংবাদিক গৌতম লাহিড়ী সম্প্রতি ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ সম্মেলনে সরাসরি প্রশ্ন তোলেন। তিনি জানতে চান, কূটনৈতিক প্রোটোকলের আওতাভুক্ত এমন একটি বিকৃত মানচিত্র সংবলিত গ্রাফিতি উপহার দেওয়াকে ভারত সমর্থন করে কি না।
এই প্রশ্নের জবাবে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, "আমরা জেনেছি যে, 'আর্ট অফ ট্রায়াম্ফ' নামের ওই বইটি জুলাই ২০২৪ সালের ঘটনা নিয়ে বানানো, সেখানে কিছু গ্রাফিতি আছে।" তিনি ইঙ্গিত দেন, এই বিষয়ে বাংলাদেশ থেকে একটি ব্যাখ্যাও চলে এসেছে।
মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং-এর ফেসবুকের অফিশিয়াল ফ্যাক্ট চেক পেজে দেওয়া একটি বিবৃতির দিকে ইঙ্গিত করেন।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং তাদের বিবৃতিতে এই দাবিকে 'সম্পূর্ণ অসত্য এবং কল্পনাপ্রসূত' বলে উল্লেখ করেছে।
প্রেস উইং জানিয়েছে, "প্রকৃতপক্ষে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের সময় ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীদের আঁকা রঙিন ও বৈচিত্র্যময় গ্রাফিতি চিত্রের একটি সংকলন 'দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ' বইটি উপহার দিয়েছেন পাকিস্তানের জেনারেলকে।" বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বইটিতে কোনো বিকৃত মানচিত্র নেই।
ট্রাম্পের ৭,৫০০ শরণার্থী সীমা: যুক্তরাষ্ট্রের সীমাবদ্ধ অভিবাসন নীতির পুনরাবৃত্তি
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন যে, ২০২৬ অর্থবছরে যুক্তরাষ্ট্রে শরণার্থী হিসেবে প্রবেশের সংখ্যা সর্বোচ্চ ৭,৫০০ জনের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে। এটি ১৯৮০ সালের ‘রিফিউজি অ্যাক্ট’-এর পর থেকে সর্বনিম্ন সংখ্যা। ওই আইন অনুযায়ী প্রাথমিকভাবে প্রতি বছর ৫০,০০০ শরণার্থী প্রবেশের অনুমতি থাকলেও পরে তা পরিবর্তনযোগ্য। ১৯৮০ সালে দেশটির শরণার্থী পুনর্বাসন কর্মসূচি চালু হয়। উল্লেখ্য, সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের অধীনে সর্বশেষ অনুমোদিত শরণার্থী সংখ্যা ১,২৫,০০০ জন।
ট্রাম্প প্রশাসন আরও জানিয়েছে, এই নতুন সীমার মধ্যে প্রাধান্য দেওয়া হবে শ্বেতাঙ্গ দক্ষিণ আফ্রিকানদের, যা আন্তর্জাতিকভাবে বিতর্কের সৃষ্টি করেছে।
শরণার্থী হিসেবে কে প্রবেশ করতে পারবেন?
নতুন নীতি অনুযায়ী, সর্বোচ্চ ৭,৫০০ জন শরণার্থীকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের জন্য অনুমোদিত করা হবে। তাদের কঠোর নিরাপত্তা ও প্রমাণ যাচাই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। স্টেট সেক্রেটারি এবং হোমল্যান্ড সিকিউরিটির অনুমোদন ছাড়া কেউ দেশটিতে প্রবেশ করতে পারবে না। জুন ২০২৫-এ ট্রাম্প একটি প্রেসব্রিফিংয়ে ঘোষণা করেন, “যদি কোনো বিদেশী নাগরিকের প্রবেশ যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ ক্ষুণ্ণ করে, তবে তাকে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে না।”
কেন ট্রাম্প শ্বেতাঙ্গ দক্ষিণ আফ্রিকানদের প্রাধান্য দিচ্ছেন?
ট্রাম্পের দাবি, দক্ষিণ আফ্রিকার শ্বেতাঙ্গ আফ্রিকানরা “গণহত্যার” ঝুঁকিতে রয়েছেন। ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তিনি ‘এক্সিকিউটিভ অর্ডার ১৪২০৪’ স্বাক্ষর করেন, যা দক্ষিণ আফ্রিকার ২০২৪ সালের ‘এক্সপ্রোপিয়েশন অ্যাক্ট ১৩’ এর পরিপ্রেক্ষিতে। আইনটি আফ্রিকার ভূমি পুনর্বণ্টনকে বৈধতা দেয়, কখনও কখনও ক্ষতিপূরণ ছাড়া। ট্রাম্পের অভিযোগ, এই আইনের ফলে শ্বেতাঙ্গ সংখ্যালঘুদের ভূমি অবৈধভাবে সংক্ষেপ করা হচ্ছে। মে মাসে ৫৯ জন শ্বেতাঙ্গ দক্ষিণ আফ্রিকান যুক্তরাষ্ট্রে বিশেষ শরণার্থী প্রোগ্রামের মাধ্যমে আসেন।
তবে দক্ষিণ আফ্রিকার রাষ্ট্রপতি সিরিল রামাফোসা ট্রাম্পকে জানিয়েছেন যে, দেশটিতে সহিংসতা সব নাগরিকের বিরুদ্ধে ঘটছে, শুধুমাত্র শ্বেতাঙ্গদের নয়। ইতিহাসবিদ সাউল ডুবো বলেছেন, “দক্ষিণ আফ্রিকা একটি সহিংস দেশ, তবে এটি রাজনৈতিক নয়, বরং অপরাধজনিত সহিংসতা। ট্রাম্পের ‘শ্বেতাঙ্গ গণহত্যা’ দাবি ভিত্তিহীন।” বিশেষজ্ঞরা আরও মন্তব্য করেছেন, ট্রাম্পের এই পদক্ষেপের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট থাকতে পারে, যেমন আন্তর্জাতিক আদালতে দক্ষিণ আফ্রিকার ইজরায়েলের বিরুদ্ধে মামলা।
যুক্তরাষ্ট্রের শরণার্থী নীতি ও ইতিহাস
যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন ও শরণার্থী নীতির ইতিহাসে বহুবার সীমাবদ্ধতা ও বৈষম্য লক্ষ্য করা গেছে।
১৭৯০: ন্যাচারালাইজেশন অ্যাক্ট, যা শুধুমাত্র মুক্ত শ্বেতাঙ্গদের নাগরিকত্বের অনুমতি দেয়।
১৮৭৫: পেজ অ্যাক্ট, মূলত এশীয় নারী শ্রমিক ও যৌনকর্মীদের লক্ষ্য করে প্রবর্তিত।
১৮৮২: চীনা এক্সক্লুশন অ্যাক্ট, চীনা শ্রমিকদের ১০ বছরের জন্য আমেরিকা প্রবেশ বন্ধ করে এবং নাগরিকত্ব থেকে বঞ্চিত করে।
১৯০৭: জেন্টলমেনস্ অ্যাগ্রিমেন্ট, জাপানি শ্রমিকদের প্রবেশ সীমিত করলেও শিক্ষার্থী কিছু অনুমতি পায়।
১৯১৭: এশিয়াটিক ব্যারড জোন অ্যাক্ট, মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বেশিরভাগ দেশের নাগরিকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ।
১৯২৪: জনসন-রিড অ্যাক্ট, জাতীয় উৎস অনুযায়ী কোটা নির্ধারণ এবং এশীয়দের সম্পূর্ণভাবে প্রেরণ নিষিদ্ধ।
২০১৭: ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে ‘মুসলিম ব্যান’, সাতটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের নাগরিকদের প্রবেশ ৯০ দিনের জন্য নিষিদ্ধ করা হয় এবং শরণার্থী প্রোগ্রাম স্থগিত থাকে। ২০২১ সালে বাইডেন এটি প্রত্যাহার করেন।
২০২৫ সালে ট্রাম্প আবারও ১২টি দেশের নাগরিকদের প্রবেশ নিষিদ্ধের ঘোষণা দিয়েছেন, যার মধ্যে আফ্রিকার কিছু দেশও রয়েছে। এছাড়া আরও সাতটি দেশের নাগরিকদের ওপর আংশিক নিষেধাজ্ঞা আরোপিত হয়েছে। সংবাদের ভিত্তিতে ধারণা করা হচ্ছে, ট্রাম্প এই তালিকাকে ৩৬টি দেশ পর্যন্ত সম্প্রসারণ করতে পারেন, যার ২৬টি আফ্রিকান দেশ।
যুক্তরাষ্ট্রের শরণার্থী নীতির প্রভাব
নতুন সীমা ৭,৫০০ জন, যা ইতিহাসে সর্বনিম্ন। এটি সংখ্যাগতভাবে ও নীতিগতভাবে বৈষম্যমূলক। ট্রাম্পের শ্বেতাঙ্গ দক্ষিণ আফ্রিকানদের প্রাধান্য দেওয়ার নীতি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থার সমালোচনার মুখে পড়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এই পদক্ষেপ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সফট পাওয়ার এবং আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তির ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
প্রযুক্তি ও আশা
আশার আলো দেখা দিয়েছে ই-পাসপোর্ট প্রকল্পের মাধ্যমে। এতে মাইক্রোচিপে বায়োমেট্রিক তথ্য সংরক্ষণ করা হয়, যা জালিয়াতি রোধে কার্যকর ভূমিকা রাখবে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এটি নিরাপত্তা বৃদ্ধি করবে, তবে কেবল প্রযুক্তি যথেষ্ট নয়; আন্তর্জাতিক আস্থা ও বৈধ কূটনৈতিক সম্পর্কই দীর্ঘমেয়াদে পাসপোর্টের মর্যাদা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করবে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শরণার্থী নীতি ক্রমশ কঠোর হচ্ছে। ট্রাম্প প্রশাসনের এই পদক্ষেপ শুধু সংখ্যাগতভাবে সীমিত নয়, বরং নির্দিষ্ট জাতি ও দেশের নাগরিকদের জন্য বৈষম্যমূলক। ইতিহাসে যুক্তরাষ্ট্রের কঠোর এবং বৈষম্যমূলক অভিবাসন নীতি যা চীনা শ্রমিক, এশীয় নারী ও মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোর নাগরিকদের ওপর প্রভাব ফেলেছে তার ধারাবাহিকতা ২০২৫ সালে পুনরায় স্পষ্ট হচ্ছে। আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, এই নীতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বৈশ্বিক ভাবমূর্তির জন্য ক্ষতিকর এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঝুঁকি বহন করছে।
ফিলিস্তিনি বন্দির ওপর নির্যাতনের ভিডিও ফাঁস,শীর্ষ ইসরাইলি জেনারেলের পদত্যাগ
ফিলিস্তিনের এক বন্দির ওপর ইসরায়েলি সেনাদের নির্যাতনের ভিডিও ফাঁস হওয়ার ঘটনার জেরে পদত্যাগ করেছেন দেশটির সামরিক বাহিনীর প্রধান আইনি কর্মকর্তা মেজর জেনারেল ইফাত টোমার-ইয়েরুশালমি। শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) তিনি পদত্যাগ করেন এবং স্বীকার করেন যে ২০২৪ সালের আগস্ট মাসে ওই ভিডিও প্রকাশের অনুমতি তিনিই দিয়েছিলেন।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, ভিডিওটি ফাঁস হওয়ার পর ইসরায়েলি সেনাদের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগে মোট পাঁচজনের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করা হয়।
এই ঘটনা ইসরায়েলজুড়ে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে। বিশেষ করে দেশটির ডানপন্থি রাজনীতিকরা এই তদন্তের কঠোর সমালোচনা করেন। এমনকি সেনা সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য যখন তদন্তকারীরা সামরিক ঘাঁটিতে প্রবেশ করেন, তখন বিক্ষোভকারীরা দুটি সামরিক ঘাঁটিতে হামলা চালায়।
ফাঁস হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, কয়েকজন সশস্ত্র সেনা একজন বন্দিকে এক পাশে সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। যদিও এরপর ভেতরে কী ঘটছে, তা ক্যামেরায় দেখা যাচ্ছিল না।
গত বুধবার ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরাইল কাটজ বলেছিলেন, ভিডিও ফাঁসের ঘটনায় ফৌজদারি তদন্ত চলছে এবং টোমার-ইয়েরুশালমিকে জোরপূর্বক ছুটিতে পাঠানো হয়েছে।
পদত্যাগপত্রে টোমার-ইয়েরুশালমি বলেছেন, তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে আইনবহির্ভূত কিছু করেননি; বরং তিনি সেনাবাহিনীর আইনি বিভাগের ভাবমূর্তি রক্ষার চেষ্টা করেছেন। তিনি উল্লেখ করেন, যুদ্ধ চলাকালে তার বিভাগটি 'ভিত্তিহীন অপপ্রচারের লক্ষ্যবস্তুতে' পরিণত হয়েছিল।
পাঠকের মতামত:
- দাম্পত্য জীবনে সম্পর্ক রক্ষার কৌশল ও নৈতিক দিকনির্দেশনা
- ডিএসই সার্কিট ব্রেকার রিপোর্ট – ২ নভেম্বর ২০২৫
- ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের শীর্ষ ৩০ কোম্পানির হালনাগাদ মূল্যসম্ভার
- নৌকা উপহার ঘিরে ফেসবুকে ফাওজুল কবিরের ব্যাখ্যা
- ডলারের যুগের অবসান? পাঁচ শতাব্দীর আর্থিক ইতিহাসে পুনরাবৃত্ত পতনের ছন্দ
- বিশ্বকাপের আগে অবসর: টি–টোয়েন্টি অধ্যায়ের ইতি টানলেন উইলিয়ামসন
- আঞ্চলিক শান্তি-নিরাপত্তায় যৌথ উদ্যোগের ওপর গুরুত্ব দিল ঢাকা–দোহা
- তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা বাতিলই তৈরি করল সংকট: বিএনপি
- প্রবাসী ও বিনিয়োগে নতুন দিগন্ত: বাহরাইনের কাছে ভিসা সুবিধা চাইল বাংলাদেশ
- থাইরয়েড ও হরমোন ভারসাম্য বজায় রাখার সহজ উপায়
- মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি নিশ্চিতেই জোর দিচ্ছে বাংলাদেশ: মানামা সংলাপে তৌহিদ হোসেন
- বিএনপির নাম ব্যবহার করে অপকর্মের কোনো ছাড় নেই: রিজভী
- জ্বালানি বাজারে পরিবর্তন ও বৈশ্বিক প্রভাব প্রকাশ
- দূষিত শহরের তালিকায় দিল্লি শীর্ষে, ঢাকার অবস্থান যত
- শেষ মুহূর্তে মেসির গোলেও বাঁচল না মায়ামি, ন্যাশভিলের দাপটে সিরিজ সমতায়
- সুদানের গৃহযুদ্ধ: সেনা ও আরএসএফ সংঘাত ও তীব্র মানবিক সংকট
- সাত মিনিটে কোটি টাকার জুয়েল চুরি, আরও দুইজন আটক
- রিপাবলিক ব্যাংক এর তৃতীয় প্রান্তিক (Q3) আর্থিক ফলাফল প্রকাশ
- কনফিডেন্স সিমেন্ট লিমিটেডের নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা
- এক্সিম ব্যাংক এর তৃতীয় প্রান্তিক প্রকাশ
- ইউনিয়ন ক্যাপিটাল লিমিটেডের তৃতীয় প্রান্তিক আর্থিক প্রতিবেদন
- মেঘনা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের তৃতীয় প্রান্তিক ফলাফল প্রকাশ
- শাহরুখের জন্মদিনে পরিবার, বন্ধু ও নতুন ছবি
- ভোলায় বিএনপি-বিজেপি সংঘর্ষ আন্দালিব রহমান পার্থের কঠোর হুঁশিয়ারি
- কেনিয়ায় ভয়াবহ ভূমিধস: মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২১, নিখোঁজ অন্তত ৩০
- বাংলাদেশে স্বর্ণের দাম আবারও বাড়ল, বাজুসের নতুন ঘোষণা
- অস্ত্র হাতে ইসলামিক সন্ত্রাসীদের নির্মূল করা হবে কেন নাইজেরিয়ায় প্রবেশের ইঙ্গিত ট্রাম্পের
- জুলাই সনদ নিয়ে সরকারের মধ্যস্থতা, গোপন আলোচনায় কী ঘটছে
- টিভিতে আজকের ক্রীড়া সূচি
- ‘গোল্ডেন বুট’ হাতে, ‘গোলের বন্যা’ পায়ে
- ধ্বংসস্তূপ থেকে মহাশক্তি: চীনের পুনর্জন্মের বিস্ময়গাঁথা
- হাশরের ময়দান: যে অপরাধের জন্য পশু-পাখিরও বিচার হবে
- ০২ নভেম্বর: ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের নামাজের সময়সূচি
- হঠাৎ যমুনায় তিন বাহিনী প্রধানের আগমন নির্বাচনের নিরাপত্তা নিয়ে যা জানা গেল
- ওষুধ ছাড়াই হাতের ব্যথা সারান সহজ এই ব্যায়ামটি ঘরে বসেই করতে পারবেন
- রাশিয়ার অপ্রতিরোধ্য পারমাণবিক অস্ত্র পসাইডন ইউরোপের নিরাপত্তায় নতুন হুমকি
- সহজ কিছু টিপস মানলেই আমেরিকা ভিসা পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে
- রাজনীতির স্বার্থে ইসলামকে ব্যবহার করা হচ্ছে কড়া সমালোচনা সালাহউদ্দিন আহমদের
- যুবদল নেতার চাঁদাবাজির টাকা দিয়েই গণভোট সম্ভব: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর
- সোনার বাংলাদেশ নয় এবার 'খেলাফতের বাংলাদেশ' দেখতে চান মাওলানা মামুনুল হক
- নির্বাচন কমিশন কেকের মতো ভাগাভাগি হয়ে গেছে: হাসনাত
- আয়ারল্যান্ড সিরিজ দিয়ে শান্তর নতুন চক্রের সূচনা তিন অধিনায়কের যুগ বহাল
- ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে সরকার বদ্ধপরিকর: ইসি আনোয়ারুল
- ১৪ বছরের প্রতীক্ষা শেষে খুলনায় আধুনিক কারাগার চালু ফুল দিয়ে বরণ করা হলো কয়েদিদের
- ধাপে ধাপে জানুন বিদেশ থেকে আনা হ্যান্ডসেট নিবন্ধনের প্রক্রিয়া
- উপহার নিয়ে তোলপাড় ভারতে বাংলাদেশের 'বিকৃত' মানচিত্র প্রসঙ্গে দিল্লির জবাব
- কঠিন ব্যাকরণ নয় শিশুদের মতো করে ইংরেজি শেখার সহজ কৌশল শিখে নিন
- বিচার বিলম্বিত করার নতুন কৌশল নভেম্বরের মধ্যে শেখ হাসিনার মামলার রায় অনিশ্চিত
- ট্রাম্পের ৭,৫০০ শরণার্থী সীমা: যুক্তরাষ্ট্রের সীমাবদ্ধ অভিবাসন নীতির পুনরাবৃত্তি
- অভিনয় ছেড়ে শরীর নিয়েই বেশি চর্চা হয় কেন সিডনি সুইনি মুখ খুললেন নগ্ন দৃশ্য বিতর্কে
- রাজনীতি, নির্বাসন ও নৈতিকতা: শেখ হাসিনার সাক্ষাৎকার দক্ষিণ এশিয়ার বাস্তবতাকে কোথায় নিচ্ছে
- IFIC ব্যাংকের Q3 আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ
- পূবালী ব্যাংকের Q3 আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ
- ইতিহাসের পাতায় আজ: ৩০ অক্টোবর - বিজয়, বিপ্লব আর বেদনার দিন
- ২৮ অক্টোবরের ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- ঘূর্ণিঝড় ‘মন্থা’ প্রভাবে ৫ দিন দেশজুড়ে বৃষ্টির পূর্বাভাস
- ২৯ অক্টোবর ডিএসই লেনদেনের সারসংক্ষেপ
- আজকের বাজারের সেরা এবং খারাপ পারফরমার: লাভের সম্ভাবনা কোথায়?
- রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্স এর Q3 আর্থিক ফলাফল প্রকাশ
- ধ্বংসস্তূপ থেকে মহাশক্তি: চীনের পুনর্জন্মের বিস্ময়গাঁথা
- GSP ফাইন্যান্স এর Q3 আর্থিক ফলাফল প্রকাশ
- মেট্রোরেল দুর্ঘটনায় বাবা হারানো: দুই শিশুর ভবিষ্যৎ নিয়ে স্ত্রীর আকুল আবেদন
- ২৮ অক্টোবর ডিএসই লেনদেনের সারসংক্ষেপ
- ২৭ অক্টোবরের ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- ফখরুলের অভিযোগ: অন্তর্বর্তী সরকার আস্থার সেতু ভেঙে দিয়েছে








