ইরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞায় হঠাৎ বিরতি: যুক্তরাষ্ট্র কি নতুন কৌশল নিচ্ছে?

যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন ইরানের বিরুদ্ধে নতুন করে কোনো নিষেধাজ্ঞা আরোপের কার্যক্রম আপাতত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব ক্যারোলাইন লেভিটের দপ্তর থেকে সোমবার (২ জুন) এ সংক্রান্ত একটি অভ্যন্তরীণ নির্দেশনা জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ (NSC), মার্কিন অর্থ দপ্তর ও পররাষ্ট্র দপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ইরানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম মেহর নিউজ এবং ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল।
এই ঘোষণাকে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকেরা একটি 'কৌশলগত বিরতি' হিসেবে দেখছেন। যদিও নির্দেশনার ধরন এবং যে দপ্তর থেকে এটি এসেছে—তা নিয়ে মার্কিন প্রশাসনের অভ্যন্তরে দায়িত্ব বিভাজন ও সমন্বয় নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
হোয়াইট হাউসের ঘনিষ্ঠ সূত্র জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে প্রবর্তিত ‘সর্বোচ্চ চাপ (Maximum Pressure)’ নীতি বর্তমানে কার্যত স্থবির হয়ে গেছে। মূল কারণ প্রশাসনিক সমন্বয়ের অভাব। জানা গেছে, জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদে (NSC) প্রায় ১০০ জনের বেশি কর্মকর্তা ছুটিতে রয়েছেন, যার ফলে নীতিনির্ধারণে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা যখন NSC বা ট্রেজারি ডিপার্টমেন্টের বদলে প্রেস সচিবের দপ্তর থেকে আসে, তখন বোঝা যায় ভেতরে একটি কাঠামোগত সংকট চলছে। সিবিএস নিউজ আরও জানিয়েছে, NSC-এর নিজস্ব যোগাযোগ টিম কার্যত ভেঙে পড়েছে।
এই বিরতি এমন সময় এলো, যখন মধ্যপ্রাচ্যে নিরাপত্তা পরিস্থিতি উত্তপ্ত। গাজা, লেবানন ও হুথিদের কার্যকলাপ ঘিরে ইরান ও তার মিত্রদের ওপর নজরদারি বেড়েছে। ফলে হঠাৎ করে নিষেধাজ্ঞা বন্ধের সিদ্ধান্তে আন্তর্জাতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে—যুক্তরাষ্ট্র কি ইরানের সঙ্গে অন্তর্বর্তী সমঝোতার পথে হাঁটছে?
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ওয়াশিংটন হয়তো সাময়িকভাবে ইরানকে আরও সময় দিতে চাইছে, যাতে আঞ্চলিক উত্তেজনা প্রশমিত করা যায়। আবার এটাও হতে পারে যে, যুক্তরাষ্ট্র চাইছে নতুন আলোচনার ভিত্তি তৈরি করতে এবং সরাসরি নিষেধাজ্ঞা না দিয়ে কূটনৈতিক চাপ বাড়াতে।
হোয়াইট হাউস এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে জানায়নি এই নিষেধাজ্ঞা বিরতি কতদিনের জন্য কার্যকর থাকবে বা কবে নাগাদ বিষয়টি পুনরায় বিবেচনায় নেওয়া হবে। এদিকে মধ্যপ্রাচ্যের সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহ ইঙ্গিত দিচ্ছে, এই বিরতির প্রভাব শুধু ইরান নয়, বরং পুরো অঞ্চলের কৌশলগত সমীকরণে পড়তে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের এই হঠাৎ নীতিগত বিরতি নিঃসন্দেহে একটি বড় বার্তা বহন করছে। প্রশাসনের ভেতরের বিশৃঙ্খলা হোক বা নতুন কূটনৈতিক পরিকল্পনা—এর প্রতিফলন ঘটবে ইরান, সৌদি আরব, ইসরায়েল এমনকি ইউরোপীয় মিত্রদের মধ্যেও। নিষেধাজ্ঞা বন্ধের এই সিদ্ধান্ত ভবিষ্যতে যুক্তরাষ্ট্র-ইরান সম্পর্কের নতুন অধ্যায় সূচিত করবে কি না, তা সময়ই বলবে। তবে নিশ্চিতভাবে বলা যায়, ওয়াশিংটন আপাতত ইরানের বিরুদ্ধে ‘সরাসরি কঠোরতা’ নয়, বরং ‘নীরব পর্যবেক্ষণের’ পথ বেছে নিয়েছে।
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে চার্জ দাখিল, বিটিভিতে সরাসরি সম্প্রচার
- চীন না ভারত? উন্নয়ন না আনুগত্য? বুলেট ট্রেন বলছে স্পষ্ট জবাব
- অবশেষে বিসিবি সভাপতি ফারুককে নিয়ে মুখ খুললেন আসিফ
- বিশ্বশক্তির নজর এখন বাংলাদেশে: খনিজ ভাণ্ডারের নতুন মানচিত্র
- বাহরাইনেরমানামায় বিএনপির সাংগঠনিক পুনর্গঠন, নেতৃত্বে আক্তার হোসেন
- বাহরাইনে জাতীয়তাবাদী শক্তির পুনর্জাগরণ: গ্যালালী শাখায় নতুন নেতৃত্ব
- তারেক-ইউনুস উত্তপ্ত ফোনালাপ: যা জানা গেল
- শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান: রাষ্ট্র নির্মাণের এক উজ্জ্বল প্রতিমূর্তি
- নতুন বিসিবি সভাপতিবুলবুলের কাছে আশরাফুলের চাওয়া
- হালদা নদীতে ডিম ছাড়ল রুই জাতীয় মা মাছ, সংগ্রহ প্রায় ১৪ হাজার কেজি নিষিক্ত ডিম
- ঈদের দিন বৃষ্টি হবে কি?
- চট্টগ্রাম বন্দরে নতুন ভোর: দক্ষিণ এশিয়ার তেলের ‘রাজসিংহাসন’ দখলের পথে বাংলাদেশ?
- ভারতের গর্ব এস-৪০০ ধ্বংস: বাস্তবতা নাকি প্রচারযুদ্ধ?
- ধ্বংস থেকে নেতৃত্ব: ৫ আগস্ট থেকে যেভাবে শুরু হলো অর্থনীতির পুনর্জাগরণ
- জবি’র সাবেক অধ্যাপক আনোয়ার বেগম হত্যাচেষ্টা মামলায় সুত্রাপুরে আটক