প্রতি ২০ মিনিটে একটি শিশু নিহত বা আহত হচ্ছে: জাতিসংঘ

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ মে ৩১ ১৪:৩৩:৫৫
প্রতি ২০ মিনিটে একটি শিশু নিহত বা আহত হচ্ছে: জাতিসংঘ

গাজায় মানবিক বিপর্যয় চরমে পৌঁছেছে। জাতিসংঘের শিশু তহবিল ইউনিসেফ জানিয়েছে, ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ শুরুর পর থেকে গাজায় ৫০ হাজারের বেশি শিশু নিহত বা আহত হয়েছে। গড়ে প্রতি ২০ মিনিটে একটি শিশু প্রাণ হারাচ্ছে অথবা গুরুতর আহত হচ্ছে।

গত মঙ্গলবার প্রকাশিত এক বিবৃতিতে ইউনিসেফ এই ভয়াবহ পরিসংখ্যান তুলে ধরে সতর্ক করেছে—ফিলিস্তিনিদের দুর্দশা আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে, বিশেষ করে শিশুদের জন্য।

ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক ক্যাথরিন রাসেল বলেন,

“মারাত্মক লঙ্ঘন। অবরুদ্ধ ত্রাণ। ক্ষুধা। ধ্বংসপ্রাপ্ত বাড়িঘর, স্কুল, হাসপাতাল। এটা শৈশবের ধ্বংস। জীবনেরই ধ্বংস। এরা শিশু—এরা সংখ্যা নয়। এভাবে কোনো শিশুর বেঁচে থাকার কথা নয়। আর একটি শিশুও নয়।”

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, যুদ্ধবিরতি ভাঙার পর থেকে মাত্র কয়েক সপ্তাহেই গাজায় ১,৩০৯ শিশু নিহত হয়েছে, আহত হয়েছে ৩,৭৩৮ জন।

ইউনিসেফের মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকাবিষয়ক আঞ্চলিক পরিচালক এদুয়ার বেগবেদে বলেন,

“মাত্র ৭২ ঘণ্টায় দুটি ভয়াবহ হামলা দেখিয়েছে, গাজার শিশুদের ওপর যুদ্ধ কতটা নিষ্ঠুর হয়ে উঠেছে।”

তিনি জানান, খান ইউনিস অঞ্চলের আল-নাজ্জার পরিবারের ১২ বছরের নিচে ১০ ভাইবোনের মধ্যে ৯ জন মারা গেছে, কেবল একজন বেঁচে আছে গুরুতর আহত অবস্থায়। অন্যদিকে গাজা সিটির একটি স্কুলে হামলায় নিহত হয়েছে ৩১ জন, যার মধ্যে ১৮ জনই শিশু।

বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়, গাজা উপত্যকায় বর্তমানে—

  • ত্রাণ সরবরাহ সম্পূর্ণরূপে অবরুদ্ধ
  • খাদ্য ও পানির চরম সংকট
  • হাসপাতাল, স্কুল, ঘরবাড়ি ধ্বংসপ্রাপ্ত
  • বারবার স্থানচ্যুতি ঘটছে শিশু ও পরিবারের

গাজা এখন কার্যত বাসযোগ্য অবস্থায় নেই বলেই সতর্ক করেছে ইউনিসেফ।

ক্যাথরিন রাসেল প্রশ্ন তোলেন,

“আর কত শিশুর লাশ লাগবে? আর কত ভয়াবহতা সরাসরি সম্প্রচারে দেখতে হবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের? কোথায় তাদের কার্যকর পদক্ষেপ? কোথায় সাহসী নেতৃত্ব?”

ইউনিসেফ আবারও আহ্বান জানিয়েছে—

  • সহিংসতা অবিলম্বে বন্ধ করতে
  • শিশু ও বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে
  • মানবিক সহায়তার প্রবেশাধিকার দিতে
  • আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ও মানবিক আইন মেনে চলতে
  • সব জিম্মিকে মুক্তি দিতে

বিবৃতির শেষাংশে বলা হয়:

“গাজার শিশুদের এখন নিরাপত্তা, খাদ্য, পানি ও ওষুধের প্রয়োজন। তাদের প্রয়োজন যুদ্ধবিরতি। কিন্তু এর চেয়েও বেশি প্রয়োজন—এই নিষ্ঠুরতা স্থায়ীভাবে বন্ধ করতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের সম্মিলিত ও শক্তিশালী পদক্ষেপ।”

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ