হাতিয়ার সঙ্গে সারা দেশের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন, তলিয়ে গেছে নিঝুমদ্বীপ

উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় সৃষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় টানা বৃষ্টিপাত হচ্ছে। বুধবার (২৮ মে) ভোররাত থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হয়। বর্তমানে আকাশ ঘন মেঘে ঢাকা এবং সমুদ্রের পানি উত্তাল।
অমাবস্যার প্রভাবে জোয়ারের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় নদ-নদীর পানির উচ্চতা বেড়ে গেছে। এতে হাতিয়া সংলগ্ন বঙ্গোপসাগর প্রচণ্ডভাবে উত্তাল হয়ে উঠেছে। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে উপজেলা প্রশাসন সাময়িকভাবে হাতিয়ার সঙ্গে দেশের মূল ভূখণ্ডের সব ধরনের নৌ-যোগাযোগ বন্ধ ঘোষণা করেছে।
এদিকে সকাল থেকেই নিঝুমদ্বীপের চারপাশের নদ-নদীতে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৫ থেকে ৬ ফুট পর্যন্ত পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে নিঝুমদ্বীপের ৯টি ওয়ার্ডের অন্তত ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। অনেকের ঘরে পানি ঢুকে পড়েছে, বিপাকে পড়েছে এলাকার সাধারণ মানুষ।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, সৃষ্ট লঘুচাপটি আরও ঘনীভূত হতে পারে এবং উপকূলীয় এলাকায় ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এ অবস্থায় মাছ ধরার ট্রলারগুলোকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচলের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং জনগণকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
নিঝুমদ্বীপের বাসিন্দা স্কুলশিক্ষক আমজাদ হোসেন বলেন, বেড়িবাঁধ না থাকায় সহজেই জোয়ারের পানি ঢুকে প্লাবিত হয় নিঝুমদ্বীপ। দিনের বেলায় একবার জোয়ার হয়েছে। বর্তমানে তীব্র বাতাস হচ্ছে। এভাবে পুরো নিঝুমদ্বীপ তলিয়ে যেতে পারে। ইতোমধ্যে মোল্লা গ্রাম, বান্ধাখালী গ্রাম, পূর্ব মুন্সী গ্রাম, গুচ্ছগ্রাম, পূর্বাঞ্চল গ্রাম, মদিনা গ্রামসহ নিঝুমদ্বীপের সবগুলো গ্রামে পানি ঢুকেছে। বর্তমানে মানুষ বিপাকে আছে।
নামার বাজার এলাকার বাসিন্দা জামশেদ হোসেন বলেন, নামার বাজারসহ আশপাশের সকল রিসোর্ট তলিয়ে গেছে। রাতে আরেকবার জোয়ার হবে। মানুষ জোয়ারে দিশাহারা হয়ে পড়েছে। আল্লাহ রক্ষা না করলে বাঁচার সুযোগ নেই। সব তলিয়ে যাচ্ছে।
এদিকে হাতিয়ার সঙ্গে সারাদেশের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় নোয়াখালীর অন্য কোথা থেকে লোকজন হাতিয়ায় যেতে পারছেন না এবং হাতিয়া থেকে কেউ নোয়াখালীতে আসতে পারছেন না।
হাতিয়া উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, সকাল থেকেই থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। দোকানপাটে মানুষ নেই। বেশির ভাগ মানুষ ঘরে বসে আছে। কাজে যেতে পারছে না। তিন নম্বর সংকেত দেওয়া হলেও মানুষের মাঝে সচেতনতা নেই।
হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আলাউদ্দিন বলেন, হাতিয়া উপজেলা বর্তমানে তিন নম্বর সতর্ক সংকেতের আওতায় রয়েছে। জননিরাপত্তার স্বার্থে সব ধরনের নৌযান চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে। আবহাওয়া স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে। সতর্কতা হিসেবে জেলেদের নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে। প্লাবিত অঞ্চলগুলোর বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। প্রশাসন সার্বক্ষণিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নোয়াখালী কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হালিম সালেহী বলেন, জোয়ারের ফলে স্বাভাবিক উচ্চতার চেয়ে পানির স্তর বৃদ্ধি পেয়েছে। আমরা খোঁজখবর নিচ্ছি। কোথাও বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। বেড়িবাঁধের বাইরে যেন কেউ না থাকে, সেবিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের সচেতন হতে হবে।
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- শেয়ারবাজারে গেম্বলারদের দৌরাত্ম্য: আস্থা ফেরাতে চাই কঠোর শাস্তি ও কাঠামোগত সংস্কার
- বাংলাদেশে সেনা-সরকার উত্তেজনা ও ‘কু’ এর গুঞ্জন: নেপথ্যে কি?
- নতুন রাজনৈতিক সমীকরণে কারা টিকে থাকবে, কারা হারিয়ে যাবে?
- জবি’র সাবেক অধ্যাপক আনোয়ার বেগম হত্যাচেষ্টা মামলায় সুত্রাপুরে আটক
- তারকা পরিচিতি: রক্ষাকবচ না কি সমাজবিমুখ অব্যাহতি?
- সড়ক দুর্ঘটনায় সেনা কর্মকর্তা নিহত
- নাহিদের স্পষ্ট বার্তা: এনসিপিতে নেই দুই উপদেষ্টা আসিফ ও মাহফুজ
- দেশের ৬ জেলায় ৮০ কিলোমিটার বেগে ঝড়-বৃষ্টির শঙ্কা, নদীবন্দরে ২ নম্বর সতর্কতা
- বিএনপির সালাউদ্দিনকে নিয়ে কি লিখলেন প্রেস সচিব শফিকুল?
- বাংলাদেশে আন্তর্বর্তী সরকারের পদক্ষেপে মৌলিক অধিকার হুমকিতে
- “ভারতের দালালরা ঘাপটি মেরে বসে আছে”: মুফতি রেজাউল করিম
- "ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি সব রাজনৈতিক দল অকুণ্ঠ সমর্থন জানিয়েছে"
- মুহাম্মদ ইউনূস প্রশাসনের ভবিষ্যৎ কেন অনিশ্চিত
- জেনে নিন ঈদের ছুটিতে কোন কোন এলাকায় ব্যাংক খোলা থাকবে
- যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে ট্রাম্পের শুল্কারোপ স্থগিত: ক্ষমতা লঙ্ঘনের অভিযোগ