সমুদ্রপথে রোহিঙ্গাদের ঝুঁকি বাড়ছে: জাতিসংঘ

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ মে ২৪ ১৩:৩২:৩১
সমুদ্রপথে রোহিঙ্গাদের ঝুঁকি বাড়ছে: জাতিসংঘ

নিজস্ব প্রতিবেদক: মিয়ানমার ও বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে চলমান নিপীড়ন ও মানবিক সহায়তার ক্রমাবনতি এক ভয়াবহ পরিণতির দিকে ঠেলে দিচ্ছে এই জাতিগোষ্ঠীকে। জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) জানায়, হতাশা ও নিরুপায়তার কারণে বিপজ্জনক সমুদ্রযাত্রায় নামতে বাধ্য হচ্ছেন রোহিঙ্গারা, যার ফলে ঘটছে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ও ব্যাপক প্রাণহানি।

২০২৫ সালের জন্য ইউএনএইচসিআর যে ৩৮৩.১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থ সহায়তা চেয়েছে, তার মাত্র ৩০ শতাংশ এখন পর্যন্ত সংগৃহীত হয়েছে। আন্তর্জাতিক অনুদান হ্রাসের ফলে সংস্থাটি ২০২৪ সালে ৩০০ মিলিয়নেরও বেশি ডলারের প্রকল্প বাতিল করতে বাধ্য হয়েছে।

সম্প্রতি মে মাসে কক্সবাজার ও রাখাইন রাজ্য থেকে সমুদ্রপথে যাত্রা করা দুটি নৌকা ডুবে যায়। এতে প্রায় ৫১৪ জন রোহিঙ্গা যাত্রী ছিলেন। এখন পর্যন্ত মাত্র ৮৭ জনকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। যদি অনুমিত ৪২৭ জনের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত হয়, তবে এটি হবে ২০২৫ সালে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য সবচেয়ে প্রাণঘাতী সমুদ্র দুর্ঘটনা।

ইউএনএইচসিআর-এর এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের আঞ্চলিক পরিচালক হাই কিউং জুন বলেন, “মানবিক সহায়তা কমে যাওয়া রোহিঙ্গাদের জন্য শুধু ক্ষতিকর নয়, বরং তাদের অস্তিত্বকেও হুমকির মুখে ফেলছে। এখন তারা মর্যাদাপূর্ণ জীবনের আশায় ঝুঁকিপূর্ণ পথ বেছে নিতে বাধ্য হচ্ছে।”

বিশ্বের শরণার্থী সংকট মোকাবিলায় সবচেয়ে বড় অনুদানদাতা যুক্তরাষ্ট্র, যারা ২০২৪ সালে ইউএনএইচসিআর-কে ২ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি দিয়েছে যা সংস্থাটির মোট অনুদানের প্রায় ৪০ শতাংশ। তবে সাম্প্রতিক কালে মার্কিন ও পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলোর প্রতিরক্ষা ব্যয়ে অগ্রাধিকার দেওয়ায় মানবিক তহবিলে বড় ধাক্কা এসেছে।

ইউএনএইচসিআর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, বাংলাদেশ, মিয়ানমারসহ আশ্রয়দানকারী দেশগুলোতে রোহিঙ্গাদের টেকসই জীবন নিশ্চিত করতে জরুরি ভিত্তিতে আর্থিক সহায়তা বাড়াতে হবে। এটি শুধু মানবিক দায়িত্ব নয়, বরং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা রক্ষার ক্ষেত্রেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ