গ্র্যাভিটেশনাল ওয়েভ: মহাকাশ গবেষণায় নতুন যুগের সূচনা

প্রযুক্তি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২১ ০৮:৩৭:৪০
গ্র্যাভিটেশনাল ওয়েভ: মহাকাশ গবেষণায় নতুন যুগের সূচনা
ছবি: সংগৃহীত

মানবসভ্যতা মহাবিশ্ব সম্পর্কে যা কিছু জানে, তার প্রায় সবই এসেছে তড়িৎচৌম্বক বিকিরণ বা আলোর মাধ্যমে। দৃশ্যমান আলো দিয়ে শুরু হওয়া জ্যোতির্বিদ্যা ধীরে ধীরে গামা রশ্মি থেকে শুরু করে রেডিও তরঙ্গ পর্যন্ত পুরো তড়িৎচৌম্বক বর্ণালিকে কাজে লাগিয়েছে। এই বিস্তৃত পর্যবেক্ষণের ফলে বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেছেন বিস্ময়কর সব মহাজাগতিক রহস্য। তবে এখন সেই আলোকনির্ভর পর্যবেক্ষণের বাইরে গিয়ে জন্ম নিয়েছে এক বিপ্লবী ধারা গ্র্যাভিটেশনাল ওয়েভ জ্যোতির্বিদ্যা, যেখানে দেখা হয় আলো নয়, বরং স্থান-কাল বা স্পেসটাইমের কম্পন।

এই নতুন ধারার সঙ্গে এসেছে সম্পূর্ণ নতুন ধরনের পর্যবেক্ষণাগার লেজার ইন্টারফেরোমিটার গ্র্যাভিটেশনাল-ওয়েভ অবজারভেটরি (LIGO)। এটি আলো নয়, বরং মহাবিশ্বের গভীরতম স্তরে সংঘটিত মহাকর্ষীয় আলোড়ন শনাক্ত করে।

গ্র্যাভিটেশনাল ওয়েভ কীভাবে সৃষ্টি হয়

আইনস্টাইনের সাধারণ আপেক্ষিকতা তত্ত্ব অনুযায়ী, মহাকর্ষ কোনো অদৃশ্য শক্তি নয় যা দূর থেকে টানে। বরং এটি হলো স্থান-কাল বেঁকে যাওয়ার ফল। যখন কোনো অত্যন্ত ভারী বস্তু দ্রুতগতিতে নড়াচড়া করে বা ত্বরণপ্রাপ্ত হয়, তখন আশপাশের স্থান-কাল বিকৃত হয় এবং সেই বিকৃতি আলোর গতিতে ছড়িয়ে পড়ে। এই ছড়িয়ে পড়া বিকৃতিই হলো গ্র্যাভিটেশনাল ওয়েভ স্থান-কালের মধ্যে সৃষ্ট তরঙ্গ।

কোন বস্তু থেকে আসে এই তরঙ্গ

গ্র্যাভিটেশনাল ওয়েভ তৈরি করতে হলে প্রয়োজন হয় অসাধারণ ভারী বস্তুর। এর প্রথম বাস্তব প্রমাণ পাওয়া যায় একটি বাইনারি পালসার পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে, যেখানে দুটি নিউট্রন তারকা একে অপরকে কেন্দ্র করে ঘুরছিল। প্রতিটি তারকার ভর সূর্যের প্রায় সমান হলেও তাদের কক্ষপথ ধীরে ধীরে সংকুচিত হচ্ছিল। এই শক্তি ক্ষয় হচ্ছিল ঠিক সেই পরিমাণে, যা তত্ত্ব অনুযায়ী গ্র্যাভিটেশনাল ওয়েভ হিসেবে নির্গত হওয়ার কথা। এর মাধ্যমে প্রথমবারের মতো এই তরঙ্গের অস্তিত্ব নিশ্চিত হয়।

কেন এটি শনাক্ত করা এত কঠিন

গ্র্যাভিটেশনাল ওয়েভ যখন কোনো অঞ্চল দিয়ে যায়, তখন এটি দুটি বিন্দুর মধ্যকার দূরত্ব অতি সামান্য পরিবর্তন করে। এই পরিবর্তনের মাত্রা এত ক্ষুদ্র যে LIGO-কে মাপতে হয় প্রায় ১০⁻¹⁹ মিটার দূরত্ব যা একটি প্রোটনের ব্যাসার্ধের তুলনায় প্রায় দশ হাজার গুণ ছোট। এমন সূক্ষ্ম পরিবর্তন শনাক্ত করা আধুনিক বিজ্ঞানের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জগুলোর একটি।

LIGO কীভাবে এই অসম্ভব কাজটি করে

LIGO মূলত একটি বিশাল লেজার ইন্টারফেরোমিটার। এতে দুটি দীর্ঘ ভ্যাকুয়াম পাইপ রয়েছে, প্রতিটির দৈর্ঘ্য প্রায় ৪ কিলোমিটার, যা L-আকৃতিতে বসানো। একটি লেজার রশ্মি দুটি ভাগে বিভক্ত হয়ে এই দুই পথে যায়, প্রতিফলিত হয়ে ফিরে এসে আবার একত্রিত হয়। সাধারণ অবস্থায় দুটি রশ্মি একে অপরকে বাতিল করে দেয়। কিন্তু যদি কোনো গ্র্যাভিটেশনাল ওয়েভ অতিক্রম করে, তাহলে এক বাহু সামান্য বড় হয় এবং অন্যটি ছোট ফলে আলো আর পুরোপুরি বাতিল হয় না। এই সূক্ষ্ম পার্থক্যই সংকেত হিসেবে ধরা পড়ে।

এই সংবেদনশীলতা বাড়াতে লেজার রশ্মিকে একবার নয়, প্রায় ৪০০ বার প্রতিফলিত করা হয়, ফলে কার্যকর দূরত্ব দাঁড়ায় প্রায় ১,৬০০ কিলোমিটার।

অতিসংবেদনশীল যন্ত্র, অতিরিক্ত সতর্কতা

LIGO এতটাই সংবেদনশীল যে আশপাশের গাড়ির গতি পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণ করতে হয়। এখানকার গতি সীমা ঘণ্টায় মাত্র ১৬ কিলোমিটার। এমনকি ভূমিকম্পের ক্ষুদ্র কম্পন বা পৃথিবীর মহাকর্ষক্ষেত্রের সামান্য পরিবর্তনও যন্ত্রে প্রভাব ফেলতে পারে। তাই LIGO-এর আয়নাগুলো ৪০ কেজি ওজনের এবং বিশেষ সিলিকা ফাইবারে ঝুলিয়ে রাখা হয়।

ভুল সংকেত এড়াতে যুক্তরাষ্ট্রে দুটি পৃথক LIGO কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে একটি লুইজিয়ানার লিভিংস্টনে এবং অন্যটি ওয়াশিংটনের হ্যানফোর্ডে। প্রকৃত গ্র্যাভিটেশনাল ওয়েভ হলে উভয় কেন্দ্রেই একসঙ্গে সংকেত ধরা পড়ে।

মহাবিশ্ব দেখার এক নতুন জানালা

গ্র্যাভিটেশনাল ওয়েভ জ্যোতির্বিদ্যা আমাদের এমন সব ঘটনা দেখার সুযোগ দিচ্ছে, যা আলো দিয়ে কখনোই ধরা পড়ত না। যেমন দূরবর্তী গ্যালাক্সিতে লক্ষ লক্ষ সূর্যের ভরের ব্ল্যাকহোলের সংঘর্ষ, বা সামান্য বিকৃত আকৃতির নিউট্রন তারকার অভ্যন্তরীণ গঠন। ইতিহাস বলছে, প্রতিবার মানুষ মহাবিশ্ব দেখার নতুন পদ্ধতি পেয়েছে, তখনই এসেছে অপ্রত্যাশিত আবিষ্কার। এই নতুন জ্যোতির্বিদ্যাও সম্ভবত এমন সব রহস্য উন্মোচন করবে, যা আমরা এখনো কল্পনাও করিনি।

সূত্র: ব্রিটানিকা


হঠাৎ কেন বন্ধ হয়ে যায় ফেসবুক অ্যাকাউন্ট? জানুন সমাধান

প্রযুক্তি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২১ ০৭:৪৬:৩৩
হঠাৎ কেন বন্ধ হয়ে যায় ফেসবুক অ্যাকাউন্ট? জানুন সমাধান
ছবি: সংগৃহীত

হঠাৎ ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ডিজেবল হয়ে যাওয়ার ঘটনা এখন আর বিরল নয়। কোনো পূর্ব সতর্কতা ছাড়াই লগইন করতে গিয়ে অনেক ব্যবহারকারী দেখতে পান—তাদের আইডি সাময়িক বা স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যক্তিগত যোগাযোগ, ছবি, স্মৃতি, ব্যবসায়িক পেজ বা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হারানোর শঙ্কা তৈরি হয়। তবে বাস্তবতা হলো, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ফেসবুক নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম ভাঙার কারণেই অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে থাকে।

ফেসবুক অ্যাকাউন্ট হঠাৎ বন্ধ হওয়ার প্রধান কারণ

ফেসবুকের নিজস্ব Community Standards এবং Account Integrity Policy রয়েছে। এগুলোর কোনোটি লঙ্ঘিত হলে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

১. ভুয়া নাম বা অন্যের পরিচয়ে অ্যাকাউন্ট চালানো

ফেসবুক চায় ব্যবহারকারীরা বাস্তব নাম ও পরিচয় ব্যবহার করুক। সেলিব্রিটি, রাজনৈতিক ব্যক্তি বা অন্য কারো নাম-ছবি ব্যবহার করলে অভিযোগের ভিত্তিতে অ্যাকাউন্ট দ্রুত বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

২. বিভ্রান্তিকর বা অবাস্তব নাম ব্যবহার

অদ্ভুত শব্দ, উপাধি, প্রতীক বা অতিরিক্ত চিহ্নযুক্ত নাম ব্যবহার করলে ফেসবুক তা সন্দেহজনক হিসেবে চিহ্নিত করে।

৩. বারবার কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড ভঙ্গ

ঘৃণামূলক বক্তব্য, সহিংস কনটেন্ট, উসকানিমূলক পোস্ট, ভুয়া তথ্য ছড়ানো বা আত্মহানিসংক্রান্ত বিষয় পোস্ট করলে প্রথমে সতর্কতা, পরে নিষেধাজ্ঞা এবং শেষ পর্যন্ত অ্যাকাউন্ট ডিজেবল হতে পারে।

৪. আপত্তিকর মন্তব্য ও অনলাইন হেনস্থা

নিয়মিত গালাগালি, ব্যক্তিগত আক্রমণ বা সাইবার বুলিংয়ের অভিযোগ পেলে ফেসবুক কঠোর ব্যবস্থা নেয়।

৫. বয়স সংক্রান্ত নীতিমালা লঙ্ঘন

১৩ বছরের কম বয়সী ব্যবহারকারীদের ফেসবুক ব্যবহারের অনুমতি নেই। বয়স ভুয়া প্রমাণিত হলে রিভিউ ছাড়াই আইডি বন্ধ করা হয়।

৬. অ্যাকাউন্ট হ্যাক হওয়া

অ্যাকাউন্ট হ্যাক হলে অপরিচিত কেউ নিয়ম ভেঙে পোস্ট বা স্প্যাম কার্যক্রম চালাতে পারে। এতে ব্যবহারকারীর অজান্তেই আইডি ডিজেবল হয়ে যেতে পারে।

৭. সন্দেহজনক লিংক বা থার্ড-পার্টি অ্যাপ ব্যবহার

অপরিচিত অ্যাপ বা লিংকে ক্লিক করে অনুমতি দিলে অ্যাকাউন্ট ঝুঁকিতে পড়ে।

ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ হলে কী করবেন

অ্যাকাউন্ট বন্ধ হয়ে গেলে আতঙ্কিত না হয়ে কিছু ধাপে এগোলে পুনরুদ্ধারের সুযোগ থাকে।

প্রথমত, ফেসবুকের Appeal বা Review Request অপশন ব্যবহার করে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আবেদন করুন।

দ্বিতীয়ত, পরিচয় যাচাইয়ের জন্য জাতীয় পরিচয়পত্র বা পাসপোর্ট আপলোড করতে হতে পারে।

তৃতীয়ত, যদি হ্যাকের কারণে আইডি বন্ধ হয়, তাহলে Hacked Account Recovery ফর্ম পূরণ করুন।

চতুর্থত, একাধিক আবেদন না করে ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করুন। অতিরিক্ত আবেদন অনেক সময় ক্ষতিকর হয়।

ভবিষ্যতে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট সুরক্ষিত রাখার উপায়

  • ফেসবুক নিরাপদ রাখতে কিছু অভ্যাস গড়ে তোলা জরুরি।
  • আসল নাম ও সঠিক তথ্য ব্যবহার করুন
  • টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন চালু রাখুন
  • সন্দেহজনক লিংক ও অ্যাপ এড়িয়ে চলুন
  • নিয়মিত Community Standards অনুসরণ করুন
  • উত্তেজনাপূর্ণ বা আক্রমণাত্মক মন্তব্য থেকে বিরত থাকুন

কেন সচেতনতা জরুরি

ফেসবুক এখন শুধু সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম নয়; এটি ব্যবসা, সংবাদ, আন্দোলন ও ব্যক্তিগত পরিচয়ের বড় একটি প্ল্যাটফর্ম। একটি অ্যাকাউন্ট বন্ধ হয়ে যাওয়া মানে অনেকের জন্য পেশাগত ও সামাজিক ক্ষতি। তাই নিয়ম মেনে, সচেতনভাবে ব্যবহার করাই একমাত্র নিরাপদ পথ।

সতর্ক থাকলে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ডিজেবল হওয়া অনেকাংশেই এড়ানো সম্ভব।


ভাষার দেয়াল ভাঙল গুগল: হেডফোনে সরাসরি শোনা যাবে ৭০ ভাষা

প্রযুক্তি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২০ ২১:০৫:১৪
ভাষার দেয়াল ভাঙল গুগল: হেডফোনে সরাসরি শোনা যাবে ৭০ ভাষা
ছবি : সংগৃহীত

প্রযুক্তি বিশ্বে ভাষাগত যোগাযোগের দূরত্ব ঘুচিয়ে দিতে গুগল ট্রান্সলেটে একটি যুগান্তকারী পরিবর্তন নিয়ে এসেছে গুগল। প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে নতুন এই আপডেটের মাধ্যমে এখন যেকোনো সাধারণ হেডফোনই হয়ে উঠবে রিয়েল টাইম বা তাৎক্ষণিক অনুবাদের একটি শক্তিশালী মাধ্যম। ব্যবহারকারীরা এখন সরাসরি তাদের ব্যবহৃত হেডফোনের মাধ্যমেই লাইভ অডিও অনুবাদ শুনতে পারবেন যা আন্তর্জাতিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

গত বৃহস্পতিবার বেটা সংস্করণে চালু হওয়া এই বিশেষ ফিচারটি ব্যবহারের জন্য আপাতত একটি উপযোগী অ্যান্ড্রয়েড ফোন এবং গুগল ট্রান্সলেট অ্যাপের প্রয়োজন হবে। এই প্রযুক্তির আওতায় ৭০টিরও বেশি ভাষায় নির্বিঘ্নে অডিও অনুবাদ পাওয়া সম্ভব। গুগল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে তাদের নিজস্ব কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা টুল ‘জেমিনি’ ব্যবহার করে অনুবাদের মানকে আরও সূক্ষ্ম ও উন্নত করা হয়েছে। বিশেষ করে বিভিন্ন ভাষার বাগধারা, প্রবাদ প্রবচন, স্থানীয় অভিব্যক্তি ও স্ল্যাংয়ের মতো জটিল বাক্যাংশগুলো সঠিকভাবে অনুবাদ করতে জেমিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

গুগলের সার্চ ভার্টিক্যালস বিভাগের প্রোডাক্ট ম্যানেজমেন্টের ভাইস প্রেসিডেন্ট রোজ ইয়াও জানিয়েছেন যে আগে এই বিশেষ লাইভ অনুবাদ সুবিধা কেবল পিক্সেল বাডস ব্যবহারকারীদের জন্য সীমিত থাকলেও এখন এটি সাধারণ হেডফোন ব্যবহারকারীদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। তিনি আরও জানান যে বিদেশের মাটিতে ভাষণ বা বক্তৃতা শোনা অথবা ভিন্ন ভাষার টেলিভিশন অনুষ্ঠান ও অনলাইন কনটেন্ট দেখার সময় কেবল হেডফোন লাগিয়ে অ্যাপের লাইভ ট্রান্সলেট অপশনে ট্যাপ করলেই পছন্দের ভাষায় রিয়েল টাইম অনুবাদ শোনা যাবে। এটি পর্যটক ও শিক্ষার্থীদের জন্য অত্যন্ত কার্যকর হবে বলে মনে করছেন প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা।

বর্তমানে প্রাথমিক পর্যায়ে যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো ও ভারতে এই বেটা সংস্করণটি চালু করা হয়েছে। তবে গুগল আশ্বস্ত করেছে যে ২০২৬ সালের মধ্যে আইওএস বা আইফোন ব্যবহারকারীদের জন্য এবং বিশ্বের আরও অনেক দেশে এই সুবিধা সম্প্রসারণ করার পরিকল্পনা রয়েছে। পাশাপাশি ব্যবহারকারীদের ভাষা শেখার অগ্রগতি পর্যবেক্ষণের জন্য ‘স্ট্রিক ট্র্যাকিং’ ও উন্নত ফিডব্যাক ব্যবস্থাও যুক্ত করা হচ্ছে যা গুগল ট্রান্সলেট অ্যাপকে কেবল একটি অনুবাদ টুল নয় বরং একটি পূর্ণাঙ্গ ভাষা শেখার প্ল্যাটফর্ম হিসেবে গড়ে তুলবে।


২০৩৫ সালে চাঁদে ফুটবল ম্যাচ? বিজ্ঞানীদের অবিশ্বাস্য দাবি

প্রযুক্তি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২০ ১১:৩৬:০৪
২০৩৫ সালে চাঁদে ফুটবল ম্যাচ? বিজ্ঞানীদের অবিশ্বাস্য দাবি
ছবি : সংগৃহীত

শুনতে কল্পবিজ্ঞানের গল্পের মতো মনে হলেও বিজ্ঞানীদের দাবি অনুযায়ী আগামী ২০৩৫ সালের মধ্যেই চাঁদের পৃষ্ঠে মানুষের প্রথম ফুটবল ম্যাচ আয়োজন করা সম্ভব হতে পারে। ইন্সটিটিউশন অফ ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি বা আইইটির গবেষকরা মহাকাশে ফুটবলের এই রোমাঞ্চকর ভবিষ্যতের কথা জানিয়েছেন। তবে পৃথিবীর জনপ্রিয় এই খেলাটি যখন চাঁদের ধূসর পৃষ্ঠে পৌঁছাবে তখন এর রূপ ধরনে আসবে আমূল পরিবর্তন। পৃথিবীর চিরচেনা সবুজ মাঠের বদলে চাঁদের প্রতিকূল পরিবেশে ফুটবল খেলাটি হবে সম্পূর্ণ ভিন্ন অভিজ্ঞতার।

চাঁদের ফুটবল ম্যাচের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হবে সেখানকার মহাকর্ষ বল যা পৃথিবীর তুলনায় মাত্র ছয় ভাগের এক ভাগ। এখানে বায়ুমণ্ডল বা বাতাসের কোনো বাধা না থাকায় বলের আচরণ হবে অদ্ভুত। একজন খেলোয়াড় স্বাভাবিক শক্তিতে লাথি দিলেই বল পৃথিবীর চেয়ে অন্তত ছয় গুণ বেশি দূরত্ব অতিক্রম করবে। এই সমস্যা সমাধানে বিজ্ঞানীরা মাঠের আকার আট গুণ ছোট করার প্রস্তাব দিয়েছেন। এছাড়া শারীরিক সক্ষমতা ও ক্লান্তি বিবেচনায় ৯০ মিনিটের দীর্ঘ লড়াইয়ের বদলে খেলাটি হবে চারটি কোয়ার্টারে। খেলোয়াড়দের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে এটি হবে সম্পূর্ণ স্পর্শহীন বা ‘নো কন্টাক্ট’ একটি খেলা এবং গোল পোস্টের সীমানা নির্ধারণে চারপাশ থেকে নেট ব্যবহার করার পরিকল্পনা করা হয়েছে।

ফুটবল খেলায় ব্যবহৃত সরঞ্জামেও আসবে আমূল পরিবর্তন। চাঁদে বাতাসের চাপ না থাকায় সাধারণ বায়ুপূর্ণ বল সেখানে কাজ করবে না। তার বদলে বিজ্ঞানীরা বিশেষ ধরনের ফোম দিয়ে তৈরি দেড় গুণ বড় আকারের বল ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন। চাঁদের তীব্র সূর্যরশ্মি ও গ্লেয়ার এড়ানোর জন্য বলের রং হবে সাদা-কালো যাতে মহাকাশচারীরা তা স্পষ্ট দেখতে পান। আর ফুটবল ভক্তদের জন্য মজার খবর হলো চাঁদের মাঠে সম্ভবত জটিল ‘অফসাইড’ নিয়মটি থাকছে না।

খেলোয়াড়দের পোশাক বা জার্সিতেও থাকবে আধুনিক প্রযুক্তির ছোঁয়া। সাধারণ জার্সি পরে চাঁদে খেলা অসম্ভব হওয়ায় খেলোয়াড়দের পরতে হবে নমনীয় অথচ বায়ুরোধী বিশেষ প্রেসার স্যুট। এই স্যুটের ভেতরে অত্যাধুনিক হিটিং এবং কুলিং সিস্টেম থাকবে যা শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করবে এবং ঘাম শুষে নেবে। প্রতিটি হেলমেটের ভেতরে থাকবে বিশেষ যোগাযোগ ব্যবস্থা যার মাধ্যমে সতীর্থ ও রেফারির সঙ্গে কথা বলা যাবে। আইইটির ফিউচারিস্ট ব্রায়ান ডেভিড জনসন মনে করেন আসন্ন চন্দ্র মিশনের পর চাঁদে মানুষের বসতি স্থাপন সময়ের ব্যাপার মাত্র আর তখনই মানুষের বিনোদনের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠবে এই মহাকাশ ফুটবল।

সূত্র: বিবিসি


বদলে গেল ইতিহাস: পৃথিবীতে প্রাণের জন্ম নিয়ে বিজ্ঞানীদের নতুন দাবি

প্রযুক্তি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৯ ০৯:৪৯:৩২
বদলে গেল ইতিহাস: পৃথিবীতে প্রাণের জন্ম নিয়ে বিজ্ঞানীদের নতুন দাবি
ছবি : সংগৃহীত

পৃথিবীর বুকে প্রাণের উদ্ভব ঠিক কবে হয়েছিল, তা নিয়ে দীর্ঘদিনের প্রচলিত ধারণা পাল্টে দিয়েছে নতুন এক বৈজ্ঞানিক গবেষণা। এতদিন মনে করা হতো পৃথিবী সৃষ্টির অনেক পরে প্রাণের সঞ্চার হয়েছে, কিন্তু বিজ্ঞানীরা এখন দাবি করছেন যে আমাদের ভাবনারও অনেক আগে—পৃথিবী সৃষ্টির মাত্র ৪০ কোটি বছর পরেই—প্রাণের স্পন্দন শুরু হয়েছিল। সাম্প্রতিক এই গবেষণায় উঠে এসেছে ‘লাস্ট ইউনিভার্সাল কমন অ্যানসেস্টর’ বা সংক্ষেপে ‘লুকা’র নাম, যাকে বর্তমান বিশ্বের সব প্রাণের আদিমতম পূর্বপুরুষ হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে। বিশালাকায় নীল তিমি থেকে শুরু করে মানুষ পর্যন্ত সবার মূলেই রয়েছে এই এককোষী অণুজীব।

ব্রিটেনের ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের নেতৃত্বে পরিচালিত এবং ‘নেচার ইকোলজি অ্যান্ড ইভোলিউশন’ জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণায় বলা হয়েছে, আজ থেকে প্রায় ৪২০ কোটি বছর আগেই ‘লুকা’ পৃথিবীর বুকে অস্তিত্বশীল ছিল। পৃথিবীর বয়স আনুমানিক ৪৬০ কোটি বছর। আগে বিজ্ঞানীদের ধারণা ছিল ৪০০ কোটি বছর আগে প্রাণের জন্ম হয়। কিন্তু নতুন এই তথ্য প্রাণের সময়কালকে অন্তত ২০ কোটি বছর এগিয়ে এনেছে। এত প্রাচীন সময়ের কোনো জীবাশ্ম বা ফসিল পাওয়া অসম্ভব। তাই বিজ্ঞানীরা আণুবীক্ষণিক ফাইলোজেনেটিক্স কৌশল এবং বিবর্তনের জটিল গাণিতিক মডেল ব্যবহার করে বর্তমান প্রাণীদের জিনের বিশ্লেষণ ঘটিয়ে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন।

রহস্যময় এই ‘লুকা’ ছিল মূলত একটি সরল এককোষী অণুজীব বা প্রোক্যারিওট। তবে গঠন সরল হলেও এর মধ্যে এক ধরনের আদিম রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার উপস্থিতি লক্ষ্য করেছেন গবেষকরা, যা বেশ চমকপ্রদ। আরও আশ্চর্যের বিষয় হলো, সে সময় লুকা একাই পৃথিবীতে ছিল না। বিজ্ঞানীদের অনুমান, লুকার বর্জ্যের ওপর নির্ভর করে বেঁচে থাকত এমন আরও কিছু অণুজীব তখন বিদ্যমান ছিল। এর মাধ্যমে প্রমাণিত হয় যে, সৃষ্টির একদম শুরুর দিকেই পৃথিবীতে একটি প্রাথমিক বাস্তুতন্ত্র গড়ে উঠেছিল। ক্যামব্রিয়ান বিস্ফোরণের কয়েকশ কোটি বছর আগেই যে প্রাণ তার ডালপালা মেলতে শুরু করেছিল, এই আবিষ্কার তা নতুন করে প্রমাণ করল।


মহাবিশ্বের ‘ডাইনোসর’ নক্ষত্রের খোঁজ পেল জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ

প্রযুক্তি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৮ ১২:০০:৫৫
মহাবিশ্বের ‘ডাইনোসর’ নক্ষত্রের খোঁজ পেল জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ
ছবি : সংগৃহীত

মহাবিশ্বের একেবারে শুরুর দিকে এমন কিছু নক্ষত্রের অস্তিত্ব ছিল যা বর্তমানের নক্ষত্রগুলোর তুলনায় ছিল অকল্পনীয় রকমের বিশাল ও শক্তিশালী। জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ ব্যবহার করে বিজ্ঞানীরা সম্প্রতি এমনই কিছু ‘মহাজাগতিক দৈত্যের’ সন্ধান পেয়েছেন। গবেষকরা আকৃতি ও প্রকৃতির বিশালতার কারণে এই আদিম নক্ষত্রগুলোকে পৃথিবীর ডাইনোসরের সঙ্গে তুলনা করছেন। গবেষণায় দেখা গেছে, এই নক্ষত্রগুলোর ভর ছিল সূর্যের তুলনায় এক হাজার থেকে দশ হাজার গুণ বেশি, যা আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞানের ধারণাকেও পাল্টে দিচ্ছে।

এসব নক্ষত্রের জীবনকাল ছিল মহাজাগতিক সময়ের হিসেবে খুবই সংক্ষিপ্ত। গবেষকদের মতে, এগুলো মাত্র দুই লাখ পঞ্চাশ হাজার বছরের মতো টিকে থাকত। সবচেয়ে অবাক করা বিষয় হলো, মৃত্যুর সময় এই নক্ষত্রগুলোতে সাধারণ নক্ষত্রের মতো কোনো সুপারনোভা বা বিস্ফোরণ ঘটত না। বরং বিশাল ভরের কারণে নিজস্ব অভিকর্ষজ বলের প্রভাবে এগুলো সরাসরি ব্ল্যাক হোলে রূপান্তরিত হতো। পৃথিবী থেকে প্রায় ১২.৭ বিলিয়ন আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত GS 3073 নামের একটি গ্যালাক্সি থেকে এই যুগান্তকারী তথ্য পাওয়া গেছে। এর অর্থ হলো, বিজ্ঞানীরা বিগ ব্যাং বা মহাবিস্ফোরণের মাত্র ১.১ বিলিয়ন বছর পরের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করেছেন।

জেমস ওয়েব টেলিস্কোপের মাধ্যমে ওই গ্যালাক্সির রাসায়নিক বিশ্লেষণ করতে গিয়ে বিজ্ঞানীরা এক অদ্ভুত অসামঞ্জস্য খুঁজে পান। সেখানে অক্সিজেনের তুলনায় নাইট্রোজেনের পরিমাণ ছিল অস্বাভাবিকভাবে বেশি। সাধারণ নক্ষত্র বা পরিচিত কোনো নক্ষত্র-বিস্ফোরণের মাধ্যমে এই রাসায়নিক ভারসাম্যহীনতার ব্যাখ্যা দেওয়া সম্ভব ছিল না। পরে কম্পিউটার মডেল ব্যবহার করে গবেষকরা নিশ্চিত হন যে, সূর্যের চেয়ে হাজার গুণ ভারী নক্ষত্রের ভেতরে চলা বিশেষ পারমাণবিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই কেবল এত বিপুল পরিমাণ নাইট্রোজেন তৈরি হওয়া সম্ভব।

এই গবেষণাটি মহাবিশ্বের সুপারম্যাসিভ ব্ল্যাক হোল বা অতিভরের কৃষ্ণগহ্বরগুলো কীভাবে এত দ্রুত তৈরি হয়েছিল, সেই রহস্য উন্মোচনে নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে। গবেষকদের ধারণা, আদিম যুগের এই বিশাল নক্ষত্রগুলো সরাসরি ব্ল্যাক হোলে পরিণত হতো এবং পরবর্তীতে এসব ব্ল্যাক হোল একে অপরের সঙ্গে মিশে গিয়ে দ্রুততম সময়ে গ্যালাক্সির কেন্দ্রে থাকা সুপারম্যাসিভ ব্ল্যাক হোলগুলো তৈরি করত। GS 3073 গ্যালাক্সির কেন্দ্রে থাকা বিশাল ব্ল্যাক হোলটিও সম্ভবত এভাবেই গঠিত হয়েছে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।


ভিডিও এডিটিং এখন আরও সহজ: অ্যাডোবির ফায়ারফ্লাই নতুন রূপে

প্রযুক্তি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৭ ১১:১৫:০৬
ভিডিও এডিটিং এখন আরও সহজ: অ্যাডোবির ফায়ারফ্লাই নতুন রূপে
ছবি : সংগৃহীত

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই প্রযুক্তির জগতে বড় ধরনের চমক নিয়ে এল অ্যাডোবি। তাদের জনপ্রিয় ভিডিও টুল ফায়ারফ্লাইয়ে যুক্ত হয়েছে এক নতুন আপডেট। এখন থেকে ব্যবহারকারীরা কেবল টেক্সট বা লেখা কমান্ড দিয়েই ভিডিওর নির্দিষ্ট অংশে পরিবর্তন আনতে পারবেন।

সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো, ছোট কোনো পরিবর্তনের জন্য এখন আর পুরো ভিডিও নতুন করে তৈরি করার প্রয়োজন হবে না। প্রযুক্তিবিষয়ক সংবাদমাধ্যম টেকক্রাঞ্চ জানিয়েছে, আগের সংস্করণের সেই বড় সীমাবদ্ধতা এবার দূর করা হয়েছে।

নতুন এই এডিটরের মাধ্যমে ভিডিওর রং পরিবর্তন, ক্যামেরা অ্যাঙ্গেল ঠিক করা কিংবা ভিডিওর ভেতরের কোনো নির্দিষ্ট বস্তু বদলে ফেলার মতো জটিল কাজগুলো এখন মুহূর্তেই করা সম্ভব। ভিডিও নির্মাতাদের কাজ সহজ করতে এতে একটি টাইমলাইন সুবিধাও যুক্ত করা হয়েছে।

এই টাইমলাইনের সাহায্যে ভিডিওর ফ্রেম, অডিওসহ বিভিন্ন কারিগরি দিক আলাদাভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। গত অক্টোবরে পরীক্ষামূলকভাবে চালু হওয়া এই এডিটরটি এখন সবার জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছে অ্যাডোবি।

শুধু নিজেদের প্রযুক্তি নয়, ফায়ারফ্লাইয়ে অন্য প্রতিষ্ঠানের শক্তিশালী কিছু এআই মডেলও যুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে ছবি তৈরির জন্য রয়েছে ‘ফ্লাক্স.২’ এবং ভিডিওর মান বাড়িয়ে ১০৮০পি বা ৪কে রেজল্যুশনে রূপান্তর করার জন্য যুক্ত হয়েছে ‘অ্যাস্ট্রা’ মডেল।

এছড়াও ফায়ারফ্লাই ভিডিও টুলে ক্যামেরার মুভমেন্ট বা নড়াচড়া আরও উন্নত ও মসৃণ করার সুবিধা যোগ হয়েছে। অ্যাডোবি আশা করছে, যুগান্তকারী এই আপডেট ভিডিও নির্মাতাদের সময় বাঁচাবে এবং কাজের গতি বহু গুণ বাড়িয়ে দেবে।


ডায়মন্ড অ্যানভিল সেলে জানা গেল পৃথিবীর জন্মরহস্য

প্রযুক্তি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৬ ২১:২৭:২১
ডায়মন্ড অ্যানভিল সেলে জানা গেল পৃথিবীর জন্মরহস্য
ছবি : সংগৃহীত

পৃথিবীর গভীরতম স্তরে বিদ্যমান খনিজ ‘ব্রিজম্যানাইট’ সম্পর্কে বিজ্ঞানীদের দীর্ঘদিনের ধারণা ভুল প্রমাণিত হয়েছে এবং নতুন এক গবেষণায় দেখা গেছে যে এই খনিজটি আগের ধারণার চেয়ে ৫ থেকে ১০০ গুণ বেশি পানি ধারণ করে রেখেছিল। ১২ ডিসেম্বর বিশ্বখ্যাত বিজ্ঞান সাময়িকী ‘সায়েন্স’-এ প্রকাশিত এই চাঞ্চল্যকর গবেষণায় দাবি করা হয়েছে যে এই আবিষ্কার পৃথিবীতে পানি কীভাবে টিকে ছিল এবং গ্রহটি কীভাবে বসবাসের উপযোগী হয়ে উঠল সেই ধারণায় আমূল পরিবর্তন আনছে। চীনের গুয়াংঝু ইনস্টিটিউট অব জিওকেমিস্ট্রির গবেষক ওয়েনহুয়া লু ও অধ্যাপক দু ঝিশুয়ের নেতৃত্বে পরিচালিত এই গবেষণাটি পৃথিবীর জন্মলগ্নের রহস্য উন্মোচনে এক নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে যেখানে বলা হয়েছে প্রায় ৪৬০ কোটি বছর আগে পৃথিবী সৃষ্টির শুরুতে যখন গ্রহটির পৃষ্ঠ গলিত ম্যাগমা বা আগুনের সাগরে ঢাকা ছিল তখনও উচ্চ তাপমাত্রায় তৈরি হওয়া ব্রিজম্যানাইট তার ভেতরে বিপুল পরিমাণ পানি আটকে রাখতে সক্ষম হয়েছিল।

গবেষণাগারে এই তত্ত্ব যাচাই করতে বিজ্ঞানীরা ‘ডায়মন্ড অ্যানভিল সেল’ নামক বিশেষ যন্ত্র ব্যবহার করে লেজারের সাহায্যে ৪ হাজার ১০০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি তাপমাত্রা ও প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি করেন এবং অবাক হয়ে লক্ষ্য করেন যে এত চরম তাপমাত্রায় ব্রিজম্যানাইটের আণবিক গঠন এমনভাবে পরিবর্তিত হয় যাতে পানির অণু সহজেই তার ভেতরে প্রবেশ করতে পারে। পূর্ববর্তী গবেষণায় ধারণা করা হতো যে এই খনিজে পানির পরিমাণ ছিল প্রতি মিলিয়নে ২২০ ভাগের কম কিন্তু নতুন ফলাফলে দেখা গেছে পৃথিবীর নিচের ম্যান্টলে বা লোয়ার ম্যান্টলে জমে থাকা পানির পরিমাণ বর্তমান পৃথিবীর সব মহাসাগরের মোট পানির ০.০৮ থেকে ১ গুণ পর্যন্ত হতে পারে। গবেষকরা মনে করছেন এই গভীর পানিই পৃথিবীর ভূ-অভ্যন্তরের চলাচল সহজ করেছিল এবং শিলাকে নরম করে গলনাঙ্ক কমানোর পাশাপাশি প্লেট টেকটনিকস বা ভূত্বকের প্লেটের চলাচল সক্রিয় রাখতে মূল ভূমিকা পালন করেছিল। দীর্ঘ সময়ের পরিক্রমায় এই আবদ্ধ পানিই আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের মাধ্যমে ভূপৃষ্ঠে উঠে এসে বায়ুমন্ডল ও আজকের বিশাল মহাসাগর গঠনে সহায়তা করেছে যা পৃথিবীকে প্রাণের জন্য বাসযোগ্য করে তোলার ক্ষেত্রে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।


ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট একসেপ্ট করলেই বিপদ: জানুন কেন

প্রযুক্তি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৫ ২১:১১:২২
ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট একসেপ্ট করলেই বিপদ: জানুন কেন

ডিজিটাল বিপ্লবের এই যুগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম মানুষের পারস্পরিক যোগাযোগ ব্যবস্থাকে সহজ ও দ্রুততর করলেও এর অন্তরালে ক্রমশই দীর্ঘ হচ্ছে অনলাইন প্রতারণার কালো ছায়া। প্রযুক্তির আশীর্বাদকে পুঁজি করে এক শ্রেণির সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র ভার্চুয়াল জগতকে অপরাধের নতুন চারণক্ষেত্রে পরিণত করেছে যেখানে অপরিচিত ব্যক্তির সঙ্গে গড়ে ওঠা সাধারণ সখ্যতা শেষ পর্যন্ত বাস্তবে বড় ধরনের আর্থিক ও মানসিক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ের ঘটনাগুলো বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে প্রতারকরা ফেসবুক ইনস্টাগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপের মতো জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্মগুলোকে ব্যবহার করে অত্যন্ত সুচতুরভাবে প্রবাসী ব্যবসায়ী কিংবা উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তার ভুয়া পরিচয় দিয়ে সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জন করছে। কখনো বন্ধুত্ব আবার কখনো বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তারা ভুক্তভোগীদের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদী সম্পর্ক গড়ে তোলে যা আসলে এক গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ মাত্র।

বিশেষজ্ঞরা এই ধরনের অপরাধের মনস্তত্ত্ব বিশ্লেষণ করে জানিয়েছেন যে প্রতারকরা এখন আর তাড়াহুড়ো করে না বরং তারা দীর্ঘ সময় ধরে নিয়মিত যোগাযোগের মাধ্যমে ভুক্তভোগীর মনে এমনভাবে বিশ্বাস স্থাপন করে যাতে সন্দেহের কোনো অবকাশ না থাকে। সম্পর্কের এক পর্যায়ে তারা হঠাৎ করে নিজের মিথ্যা অসুস্থতা ব্যবসায়িক বড় ক্ষতি বা আইনি জটিলতার মতো জরুরি পরিস্থিতির দোহাই দিয়ে বিপুল অঙ্কের অর্থ সহায়তা চেয়ে বসে এবং বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়াতে ভুয়া নথিপত্র ছবি বা ভিডিও পাঠাতেও দ্বিধা করে না। প্রতারণার আরেকটি মোক্ষম হাতিয়ার হিসেবে তারা ভিডিও কলকে বেছে নিচ্ছে যার মাধ্যমে ভুক্তভোগীদের মানসিকভাবে দুর্বল করে ফেলা হয় এবং পরবর্তীতে ব্যক্তিগত স্পর্শকাতর তথ্য হাতিয়ে নিয়ে বা আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাইবার ইউনিটের কর্মকর্তারা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন যে অনলাইন প্রতারণার শিকার হওয়া ব্যক্তিদের একটি বড় অংশই প্রাথমিক পর্যায়ে বিষয়টিকে গুরুত্ব দেন না বা লজ্জায় এড়িয়ে যান যার ফলে অপরাধীরা আরও বেশি বেপরোয়া হয়ে ওঠার সুযোগ পায়। পুলিশের পক্ষ থেকে অপরিচিত কারও অনুরোধে হুট করে অর্থ পাঠানো ব্যক্তিগত গোপনীয় তথ্য শেয়ার করা কিংবা যাচাই না করে কোনো সন্দেহজনক লিঙ্কে ক্লিক করা থেকে বিরত থাকার জন্য কঠোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা মনে করেন অনলাইনে পরিচয় হওয়াটা দোষের কিছু না হলেও বাস্তব জীবনে সেই ব্যক্তির পরিচয় ও পটভূমি যাচাই না করে কোনো প্রকার আর্থিক লেনদেন বা গভীর সম্পর্কে জড়ানো অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ তাই একমাত্র সচেতনতাই পারে এই ডিজিটাল ফাঁদ থেকে মানুষকে রক্ষা করতে।


সৌরজগতের সীমানা পেরিয়ে ঐতিহাসিক মাইলফলকের পথে নাসা

প্রযুক্তি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৫ ১১:৩৩:৩০
সৌরজগতের সীমানা পেরিয়ে ঐতিহাসিক মাইলফলকের পথে নাসা
ছবি : সংগৃহীত

মহাকাশ বিজ্ঞানের ইতিহাসে এক অভূতপূর্ব মাইলফলক স্পর্শ করতে চলেছে মানবজাতির তৈরি সবচেয়ে দূরবর্তী বস্তু ভয়েজার-১। ১৯৭৭ সালে পৃথিবী ছেড়ে যাওয়া এই মহাকাশযানটি ২০২৬ সালের নভেম্বর মাসে এমন এক মহাজাগতিক অবস্থানে পৌঁছাবে যেখানে আলো বা রেডিও সংকেতের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে পৌঁছাতে সময় লাগবে পূর্ণ ২৪ ঘণ্টা। বিজ্ঞানের ভাষায় এই বিশাল দূরত্বকে বলা হয় এক লাইট-ডে বা আলোক-দিবস যা প্রায় ১৬ বিলিয়ন মাইল বা ২৬ বিলিয়ন কিলোমিটারের সমান। বর্তমানে পৃথিবী থেকে প্রায় ১৫.৮ বিলিয়ন মাইল দূরে অবস্থান করা এই নভোযানটি আমাদের সূর্যের চৌম্বকক্ষেত্রের সুরক্ষাবলয় বা হেলিওস্ফিয়ার অতিক্রম করে এখন নক্ষত্রমন্ডলীর মধ্যবর্তী বা ইন্টারস্টেলার স্পেসের গভীর অন্ধকারে বিচরণ করছে।

এই বিপুল দূরত্বের কারণে ভয়েজার-১ এর সঙ্গে পৃথিবীর যোগাযোগ ব্যবস্থা এখন এক চরম ধৈর্যের পরীক্ষায় পরিণত হয়েছে। প্রকল্প ব্যবস্থাপক সুজি ডড বিষয়টিকে সহজ করে ব্যাখ্যা করতে গিয়ে জানান যে পৃথিবী থেকে কোনো নির্দেশ পাঠালে তা মহাকাশযানে পৌঁছাতে এবং সেখান থেকে উত্তর ফিরে আসতে সময় লাগে প্রায় দুই দিন। উদাহরণস্বরূপ সোমবার সকাল ৮টায় পৃথিবী থেকে শুভ সকাল বার্তা পাঠালে তার প্রতিউত্তরের জন্য বিজ্ঞানীদের অপেক্ষা করতে হয় মঙ্গলবার সকাল ৮টা পর্যন্ত। মহাকাশযানটি এবং এর যমজ ভয়েজার-২ প্রায় অর্ধশতাব্দী ধরে চালু থাকায় এদের শক্তি ভান্ডার ক্রমশ ফুরিয়ে আসছে যার ফলে প্রকৌশলীরা বাধ্য হয়েই একের পর এক বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি বন্ধ করে দিচ্ছেন যাতে ন্যূনতম শক্তিতেও এদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা সম্ভব হয়।

ভয়েজার-১ এর বেঁচে থাকার লড়াইটা অত্যন্ত প্রযুক্তিগত ও সূক্ষ্ম কারণ এর অ্যান্টেনাটিকে সবসময় নিখুঁতভাবে পৃথিবীর দিকে তাক করে রাখতে হয়। মহাকাশের চরম ঠান্ডায় যদি জ্বালানি সরবরাহকারী পাইপগুলো জমে যায় এবং অ্যান্টেনার দিক সামান্যতমও সরে যায় তবে পৃথিবীর সঙ্গে এর সংযোগ চিরতরে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে এবং মিশনটি সমাপ্ত বলে গণ্য হবে। এতসব প্রতিকূলতার মধ্যেও মাত্র ১৬০ বিট প্রতি সেকেন্ড গতিতে বা পুরনো আমলের ডায়াল আপ ইন্টারনেটের মতো ধীরগতিতে এটি এখনও হেলিওপজ বা সূর্যের প্রভাবসীমার বাইরের অজানা তথ্য পৃথিবীতে পাঠিয়ে যাচ্ছে। নাসার বিজ্ঞানী দল আশা করছেন অন্তত ২০২৭ সাল পর্যন্ত মহাকাশযানটির বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি সচল রাখা সম্ভব হবে এবং কেউ কেউ আশাবাদী যে এটি আরও দুই থেকে পাঁচ বছর পর্যন্ত আমাদের তথ্য দিয়ে সমৃদ্ধ করবে। শেষ পর্যন্ত ভয়েজার শুধু একটি যন্ত্র নয় বরং এটি অসীম মহাকাশে পৃথিবীর এক নিঃসঙ্গ দূত যা মানব সভ্যতার অস্তিত্বের জানান দিয়ে চলেছে।

পাঠকের মতামত:

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

রাষ্ট্রের ধারণাটি একসময় কেবল প্রশাসনিক ক্ষমতা, আইনের শাসন এবং নিরাপত্তা প্রদানের সঙ্গে সম্পর্কিত ছিল। কিন্তু আধুনিক বিশ্বে রাষ্ট্রের ভূমিকা এখন... বিস্তারিত