বাংলাদেশের অনুরোধ পেয়ে হাসিনাকে ফেরানো নিয়ে ভারত জানাল তাদের অবস্থান

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ২৬ ২০:১৪:৫০
বাংলাদেশের অনুরোধ পেয়ে হাসিনাকে ফেরানো নিয়ে ভারত জানাল তাদের অবস্থান
ছবিঃ সংগৃহীত

ভারত বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ সংক্রান্ত অনুরোধটি পর্যালোচনা করছে বলে জানিয়েছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বুধবার ২৬ নভেম্বর নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল।

সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণ প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে তিনি স্পষ্ট জানান যে তাঁরা বাংলাদেশের সেই অনুরোধ পেয়েছেন এবং বিষয়টি বর্তমানে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। রণধীর জয়সওয়াল আরও বলেন বাংলাদেশের জনগণের প্রতি ভারতের অঙ্গীকার অটুট রয়েছে এবং এ বিষয়ে তাঁরা সব স্টেকহোল্ডারের সঙ্গে গঠনমূলকভাবে আলোচনা চালিয়ে যাবেন।

সম্প্রতি বাংলাদেশে ঘোষিত রায়ের প্রেক্ষাপট উল্লেখ করে সংবাদমাধ্যমগুলো জানায় গত বছরের জুলাই মাসের আন্দোলনের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। রায়ের বিবরণ অনুযায়ী গত বছরের ৫ আগস্ট ঢাকার চকবাজারের চানখাঁরপুল এলাকায় ছয় নিরস্ত্র বিক্ষোভকারীকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় তাঁকে দায়ী করা হয়েছে। ৭৮ বছর বয়সী এই অপসারিত নেত্রী বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছেন বলে উল্লেখ করা হয়।

বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে ভারতের কাছে আনুষ্ঠানিক অনুরোধ পাঠানো হয়। সেই অনুরোধই এখন ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষার অধীনে রয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে দিল্লি।


ছাত্র আন্দোলন থেকে উঠে এসেছি তাই যা ধরি শেষ করে ছাড়ি বলে হুঙ্কার মমতার

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ২৬ ১৫:৪৫:৫৩
ছাত্র আন্দোলন থেকে উঠে এসেছি তাই যা ধরি শেষ করে ছাড়ি বলে হুঙ্কার মমতার
ছবিঃ সংগৃহীত

ভারতের ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন বা এসআইআর পরিচালনায় প্রশাসনিক সিদ্ধান্তকে ঘিরে প্রতিবাদে গর্জে উঠেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন দল বিজেপিকে কড়া ভাষায় সতর্ক করে বলেছেন যদি ভোটার তালিকা থেকে একটিও নাম বাদ যায় তবে তিনি বিজেপির সরকার ভেঙে দেবেন।

সম্প্রতি বিমান সংস্থার লাইসেন্সসংক্রান্ত ত্রুটির কারণে হেলিকপ্টার উড়তে না পারার ঘটনায় আরও একবার তিনি নিজের ক্ষোভ ঝাড়লেন বিজেপির ওপর। ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী বিজেপির উদ্দেশে সরাসরি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলেন ওরে আমার সাথে খেলতে যাস না।

মূলত পূর্বনির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী হেলিকপ্টারে করে বনগাঁ যাওয়ার কথা ছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। কিন্তু বিমান সংস্থার লাইসেন্সসংক্রান্ত ত্রুটির কারণে শেষ মুহূর্তে হেলিকপ্টারটি উড়তে না পারায় শেষ পর্যন্ত সড়কপথেই অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছাতে হয় তাঁকে। মঙ্গলবার তিনি বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বনগাঁয় ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন বিরোধী কর্মসূচিতে অংশ নেন।

জানা গেছে মুখ্যমন্ত্রীর সফরের আগের দিন হেলিকপ্টারটির মহড়া হয়েছিল এবং তখন লাইসেন্সজনিত কোনো সমস্যার কথা জানানো হয়নি। কিন্তু সফরের ঠিক আগে মঙ্গলবার দুপুরে হঠাৎ বিমান সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয় যে হেলিকপ্টারটি উড়তে পারবে না। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই বিজেপিকে হুঙ্কার দেন মুখ্যমন্ত্রী।

বনগাঁর সভায় তিনি বিদ্রূপের সুরে প্রথমে ক্ষমা চেয়ে নেন কারণ তাঁর আসতে একটু দেরি হয়েছে। এরপর তিনি বলেন দেরি হওয়ার পেছনে একটা মজা আছে। বহু মাস তিনি হেলিকপ্টার ব্যবহার করেন না। অনেকগুলো অনুষ্ঠান থাকায় সেদিন তাঁর হেলিকপ্টারে করে যাওয়ার কথা ছিল কিন্তু হঠাৎ খবর এলো হেলিকপ্টার যাবে না। তিনি মন্তব্য করেন নির্বাচন তো শুরুই হয়নি তার আগেই সংঘাত শুরু হয়ে গেল।

বিজেপিকে লক্ষ্য করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন তিনি বিজেপিকে বারবার বলেন তাঁর সাথে যেন খেলতে না আসে। নিজের রাজনৈতিক সংগ্রামের কথা স্মরণ করে মমতা যোগ করেন তিনি ছাত্র আন্দোলন থেকে উঠে এসেছেন। তিনি বলেন যা ধরেন শেষ না করা পর্যন্ত ছাড়েন না। সুতরাং তাঁর হেলিকপ্টার বাতিল করলেও তাঁর কিছু যায় আসে না বরং তিনি সড়কপথেই মানুষের কাছে পৌঁছে যাবেন।


জনসংখ্যার বিচারে টোকিওকে টপকে ঢাকার নতুন বিশ্বরেকর্ড

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ২৬ ১৪:৪৬:৪১
জনসংখ্যার বিচারে টোকিওকে টপকে ঢাকার নতুন বিশ্বরেকর্ড
ছবিঃ সংগৃহীত

জনসংখ্যার দিক থেকে বিশ্বের নবম অবস্থান থেকে সরাসরি দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা। জাতিসংঘের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে তালিকায় প্রথম স্থানে রয়েছে ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তা। যে গতিতে ঢাকার জনসংখ্যা বাড়ছে তাতে ২০৫০ সাল নাগাদ ঢাকাই হবে বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল শহর।

দীর্ঘদিন ধরে জাপানের রাজধানী টোকিও বিশ্বের বৃহত্তম শহরের শীর্ষে ছিল। তবে এবার টোকিওকে তিনে ঠেলে ঢাকা উঠে এসেছে দুইয়ে। বুধবার ২৬ নভেম্বর এক প্রতিবেদনে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা। সবশেষ ২০০০ সালের দিকে জাতিসংঘ টোকিওকে সবচেয়ে বড় শহর হিসেবে চিহ্নিত করেছিল কিন্তু এবার তাদের পেছনে ফেলে শীর্ষে উঠে এসেছে জাকার্তা।

জাতিসংঘের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী জাকার্তায় এখন বসবাস করেন ৪ কোটি ১৯ লাখ মানুষ এবং ঢাকায় বসবাস করছেন ৩ কোটি ৬৬ লাখ মানুষ। অন্যদিকে তৃতীয় স্থানে নেমে যাওয়া টোকিওতে বসবাস করছেন ৩ কোটি ৩৪ লাখ মানুষ।

জাতিসংঘের অর্থনীতি এবং সামাজিক বিষয়ক বিভাগের ওয়ার্ল্ড আর্বানাইজেশন প্রসপেক্ট ২০২৫ শীর্ষক রিপোর্টে বলা হয়েছে বিশ্বব্যাপী মেগাসিটির সংখ্যা এখন ৩৩টি যেখানে ১৯৭৫ সালে ছিল মাত্র আটটি। যেসব শহরে ১ কোটির বেশি মানুষ থাকেন সেগুলোকে মেগাসিটি বলা হয়। এই ৩৩টি মেগাসিটির মধ্যে ১৯টিই এশিয়ায় অবস্থিত এবং শীর্ষ ১০ মেগাসিটির ৯টির অবস্থানও এশিয়াতে।

এসব শহরের মধ্যে রয়েছে ভারতের নয়াদিল্লি ৩ কোটি ২ লাখ এবং চীনের সাংহাই ২ কোটি ৯৬ লাখ। এছাড়া চীনের গুয়াংজু ২ কোটি ৭৬ লাখ ফিলিপাইনের ম্যানিলা ২ কোটি ৪৭ লাখ ভারতের কলকাতা ২ কোটি ২৫ লাখ এবং দক্ষিণ কোরিয়ার সিউল ২ কোটি ২৫ লাখ জনসংখ্যা নিয়ে তালিকার ওপরের দিকে রয়েছে। এর মধ্যে শুধুমাত্র মিসরের রাজধানী কায়রো এশিয়ার বাইরে থাকা শীর্ষ ১০ মেগাসিটির একটি যেখানে বাস করেন ৩ কোটি ২০ লাখ মানুষ। আমেরিকা অঞ্চলে সবচেয়ে বড় শহর ব্রাজিলের সাও পাওলো যেখানে ১ কোটি ৮৯ লাখ বাসিন্দা রয়েছেন। আর সাব সাহারান অঞ্চলের সবচেয়ে বড় শহর হলো নাইজেরিয়ার লাগোস।

জাতিসংঘ বলেছে ঢাকার জনসংখ্যা বাড়ার প্রধান কারণ হলো প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে মানুষের ঢাকায় আগমন। কেউ কাজ বা সুযোগের সন্ধানে আবার কেউ বন্যা ও সমুদ্রস্তর বাড়ার ঝুঁকিতে রাজধানীতে পাড়ি জমিয়েছেন। এছাড়া প্রতিনিয়ত বেড়ে চলেছে রাজধানী ঢাকার পরিধি। এর ফলে নবম স্থান থেকে উঠে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ শহরে পরিণত হয়েছে ঢাকা।


মেয়র মামদানির টিমে একসাথে ১০ বাংলাদেশি

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ২৬ ১০:৫৮:৪৪
মেয়র মামদানির টিমে একসাথে ১০ বাংলাদেশি
ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সিটির রাজনীতিতে বাংলাদেশিদের দীর্ঘদিনের অংশগ্রহণ, ত্যাগ এবং প্রাপ্য অবস্থান এবার নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। সদ্য নির্বাচিত মেয়র জোহরান মামদানির ঘোষিত বিশাল ট্রানজিশন টিমে একসঙ্গে ১০ জন বাংলাদেশির অন্তর্ভুক্তি প্রবাসী কমিউনিটির জন্য এক ঐতিহাসিক অর্জন হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। চার শতাধিক বিশেষজ্ঞ, কর্মী, সংগঠক ও বিভিন্ন ক্ষেত্রের প্রতিনিধিকে নিয়ে গঠিত এই টিমে বাংলাদেশিদের এমন শক্তিশালী উপস্থিতি নিউইয়র্কের রাজনৈতিক পরিসরে অভিবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটির প্রভাব ও অবস্থানকে আরও দৃঢ়ভাবে প্রকাশ করেছে।

সমতলী হক – বাঙালি বুদ্ধিজীবী পরিবারের প্রতিনিধি

টিমে থাকা সবচেয়ে আলোচিত নাম সমতলী হক বাংলাদেশি কবি ও চিন্তক ফরহাদ মজহারের কন্যা। নিউইয়র্কের সিটি ইউনিভার্সিটিতে অধ্যাপনা করা সমতলী একজন সুপরিচিত মানবাধিকারকর্মী ও লেবার আইনজীবী। অধ্যাপনা শুরুর আগে তিনি শ্রমিক অধিকার নিয়ে আইনি পরামর্শক হিসেবে কাজ করেছেন। মেয়র মামদানির প্রার্থিতা ঘোষণার পর থেকেই তিনি ঘনিষ্ঠভাবে তার নির্বাচনী প্রচারণার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, যা তার রাজনৈতিক ও নাগরিক সক্রিয়তার গভীর সম্পর্ককে স্পষ্ট করে।

সমতলী প্রথম স্ত্রীর ঘরে জন্ম নেওয়া ফরহাদ মজহারের কন্যা। তিনি পুয়ের্তো রিকান এক নাগরিককে বিয়ে করেছেন এবং নিউইয়র্কেই বসবাস করেন। তাদের এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে।

টিমে থাকা অন্যান্য ৯ বাংলাদেশি – প্রবাসী নেতৃত্বের শক্ত প্রমাণ

মামদানির ট্রানজিশন টিমে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত যে আরও নয়জন স্থান পেয়েছেন, তারা নানামুখী সামাজিক, নাগরিক, মানবাধিকার, শিক্ষা ও অর্থনৈতিক খাতের প্রতিনিধিত্ব করেন। তারা হচ্ছেন—

  • কাজী ফৌজিয়া, নাগরিক আন্দোলনের নেতা
  • আবদুল আজিজ ভূঁইয়া, জনসংগঠক
  • শামসুল হক, সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা
  • মোহাম্মদ করিম চৌধুরী, শ্রম অধিকার সংগঠক
  • ফারিহাহ আখতার, অভিবাসন অধিকারকর্মী
  • আরমান চৌধুরী, ক্ষুদ্র ব্যবসা ও মুসলিম কমিউনিটি সংগঠক
  • শাহরিয়ার রহমান, সামাজিক সংগঠন ভালো ও ম্যাসভোটের সংগঠক
  • তাজিন আজাদ, শিক্ষা ও যুবখাতের সংগঠক
  • ইমরান পাশা, আইন ও ন্যায়বিষয়ক কাজের প্রতিনিধি এবং স্ট্যাটেন আইল্যান্ড ইসলামিক সেন্টারের নেতা

দক্ষিণ এশিয়ার কমিউনিটিতে বাংলাদেশিরা এগিয়ে

টিমটির ৪০০ সদস্যের পূর্ণ তালিকা বিশ্লেষণে দেখা গেছে ১১ জন পাকিস্তানি, ১৬ জন ভারতীয়, এবং দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশ থেকে প্রতিনিধি থাকলেও বাংলাদেশিদের উপস্থিতি এবারই সর্বাধিক। এই সংখ্যা শুধু রাজনৈতিক অন্তর্ভুক্তির দিক থেকেই নয়, বরং বাংলাদেশি প্রবাসীদের সাংগঠনিক শক্তি, সামাজিক কার্যক্রম এবং ভোটার হিসেবে সক্রিয়তার প্রতিফলন হিসেবেও দেখা হচ্ছে।

-রফিক


ভারতে মূর্তির পায়ে হাতজোড় করতে বাধ্য করল তিন মুসলিম ছাত্রকে

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ২৬ ১০:৩৮:৫২
ভারতে মূর্তির পায়ে হাতজোড় করতে বাধ্য করল তিন মুসলিম ছাত্রকে
ছবি: সংগৃহীত

ভারতে উগ্র হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠীর হাতে মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর নিপীড়ন আবারও আলোচনায় এসেছে মহারাষ্ট্রের কল্যাণ অঞ্চলে সংঘটিত এক উদ্বেগজনক ঘটনার মাধ্যমে। সম্প্রতি আইডিয়াল কলেজের তিন মুসলিম শিক্ষার্থীকে জনসমক্ষে অপমানিত ও হেনস্তা করা হয়; তাদের বাধ্য করা হয় ছত্রপতি শিবাজীর মূর্তির পায়ে হাত জোড় করে মাথা নত করতে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিশ সদস্যরা কোনো প্রতিবাদ না করে নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে।

ঘটনার সূত্রপাত একটি ২০ সেকেন্ডের ভিডিও থেকে, যেখানে দেখা যায় তিন মুসলিম শিক্ষার্থী নির্জন এক শ্রেণীকক্ষে শান্তিপূর্ণভাবে নামাজ আদায় করছেন। ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ার পরই বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি) এবং বজরং দলের সদস্যরা কলেজ ক্যাম্পাসে ঢুকে পড়ে। তারা উত্তেজিত ভঙ্গিতে মুসলিম শিক্ষার্থীদের ঘিরে ধরে ‘জয় শ্রী রাম’ স্লোগান দিতে থাকে এবং তাদের ওপর চাপ প্রয়োগ করতে শুরু করে।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা অনুযায়ী, আতঙ্কিত শিক্ষার্থীরা পরিস্থিতির চাপে পড়ে মূর্তির সামনে হাত জোড় করে মাথানত করতে বাধ্য হন। ঘটনাস্থলে থাকা পুলিশ সদস্যরা পরিস্থিতি উপেক্ষা করে চরমপন্থিদের কর্মকাণ্ড দেখে দাঁড়িয়ে থাকেন। এতে উদ্বিগ্ন অভিভাবকরা বলেন, সংখ্যালঘু ছাত্রদের সুরক্ষায় পুলিশ ও কলেজ প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা প্রশ্নবিদ্ধ।

মহারাষ্ট্রসহ বহু বিজেপি–শাসিত রাজ্যে মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর হয়রানি, হামলা, মিথ্যা অভিযোগে নির্যাতন ও সামাজিক অপমানের যেসব ঘটনা বেড়ে চলেছে, এই ঘটনা তারই আরেকটি উদাহরণ। স্থানীয় মুসলিমরা বলছেন, চরমপন্থী হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলো কোনো অভিযোগের সত্যতা যাচাই ছাড়াই সংখ্যালঘুদের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে এবং নিরাপত্তা বাহিনী অনেক ক্ষেত্রে এদের বিরুদ্ধে কোনোরূপ ব্যবস্থা নিচ্ছে না।

এ ঘটনায় অপদস্থ শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা কলেজ প্রশাসনের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাদের অভিযোগ, কলেজ কর্তৃপক্ষ জনতার চাপে আত্মসমর্পণ করেছে; শুধু তা-ই নয়, ভুক্তভোগী তিন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধেই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে। তারা প্রশ্ন তুলেছেন, নামাজ পড়ার কারণে যদি ছাত্রদের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেওয়ার চিন্তা হয়, তবে উগ্র সংগঠনের হাতে ক্যাম্পাসে যে উস্কানি ও নিপীড়ন হয়েছে তার দায় কে নেবে?

অভিভাবকরা ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা, মুসলিম ছাত্রদের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা এবং কলেজ ক্যাম্পাসে নিরপেক্ষ পরিবেশ পুনঃস্থাপনের দাবি জানিয়েছেন।

-রাফসান


টিউলিপ সিদ্দিকির মামলা নিয়ে বিষ্ফোড়ক মন্তব্য ব্রিটিশ আইনজীবীদের

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ২৬ ১০:১২:৫২
টিউলিপ সিদ্দিকির মামলা নিয়ে বিষ্ফোড়ক মন্তব্য ব্রিটিশ আইনজীবীদের
ছবি: সংগৃহীত

ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিকি, সাবেক স্বৈরাচার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানা এবং আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে পূর্বাচল প্লট বরাদ্দ দুর্নীতি মামলার রায় আগামী ১ ডিসেম্বর ঘোষণা করা হবে। মামলাটি বর্তমানে শুধু বাংলাদেশেই নয়, যুক্তরাজ্যেও বড় রাজনৈতিক ও আইনি বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান জানায়, লন্ডনের বেশ কয়েকজন শীর্ষ আইনজীবী এই মামলাকে ‘পরিকল্পিত, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং অন্যায্য’ বলে বর্ণনা করেছেন এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত আবিদা ইসলামের কাছে একটি আনুষ্ঠানিক চিঠিতে নিজেদের উদ্বেগ তুলে ধরেছেন।

চিঠিতে স্বাক্ষর করা ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন ব্রিটেনের সাবেক বিচারমন্ত্রী রবার্ট বাকল্যান্ড কেসি, সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল ডমিনিক গ্রিভি, খ্যাতনামা আইনজীবী চেরি ব্লেয়ার কেসি, ফিলিপ সেন্ড কেসি এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনজীবী জিওফ্রে রবার্টসন কেসি। তারা অভিযোগ করেছেন যে টিউলিপ সিদ্দিকি তার মামলার বিষয়ে যথাযথ তথ্য পাননি, তার আইনি প্রতিনিধিকে আদালতে পেশ হওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়নি এবং যার সঙ্গে তিনি পরামর্শ করছিলেন তাকে গৃহবন্দি করা হয়েছে। এমনকি ওই আইনজীবীর মেয়েকে হুমকির মুখে পড়তে হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তারা। তাদের মতে, এসব ঘটনা ন্যায়বিচারের মৌলিক নীতি এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার মানদণ্ডের পরিপন্থী।

টিউলিপ সিদ্দিকি হ্যাম্পস্টেড অ্যান্ড হাইগেট আসনের নির্বাচিত এমপি এবং যুক্তরাজ্যের নাগরিক। তিনি দীর্ঘদিন ধরে লন্ডনে বসবাস করছেন এবং কোনোভাবেই পলাতক আসামি নন। তবু শেখ হাসিনার পতনের পর গত বছরের আগস্টে টিউলিপ, তার মা, ভাই এবং আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে পূর্বাচল আবাসিক এলাকায় প্লট বরাদ্দ সংক্রান্ত দুর্নীতির মামলা করা হয়। অভিযোগ রয়েছে, শেখ হাসিনার প্রভাব ব্যবহার করে নিজের মায়ের নামে প্লট বরাদ্দ নিয়েছিলেন টিউলিপ। তিনি অবশ্য শুরু থেকেই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন।

জুলাই গণঅভ্যুত্থান চলাকালে মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত হয়ে শেখ হাসিনা গত সপ্তাহে মৃত্যুদণ্ড পান। তার পরপরই টিউলিপ সিদ্দিকির মামলাটিতেও নতুন করে আন্তর্জাতিক মনোযোগ আসে। দুর্নীতির অভিযোগ প্রকাশ্যে আসার পর টিউলিপ ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন এবং শেষ পর্যন্ত তিনি সিটি মিনিস্টারের পদ থেকে পদত্যাগ করেন। তার দাবি, তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সরকারের মনোযোগ বিচ্যুত করছিল, তাই তিনি স্বেচ্ছায় দায়িত্ব ছেড়েছেন।

বাংলাদেশে মামলার রায় ঘোষণার তারিখ ১ ডিসেম্বর নির্ধারণ করা হয়েছে। মামলার রায় দুই দেশের রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক সম্পর্কেও প্রভাব ফেলতে পারে বলে মত বিশ্লেষকদের। লন্ডনের সংসদ সদস্য, মানবাধিকার সংগঠন ও আইনি মহল ঘটনাটি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানাচ্ছে।

সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান


পাকিস্তানের জাহাজ-বিধ্বংসী ব্যালিস্টিক মিসাইলের সফল পরীক্ষা

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ২৬ ১০:০৭:০৯
পাকিস্তানের জাহাজ-বিধ্বংসী ব্যালিস্টিক মিসাইলের সফল পরীক্ষা
ছবি: সংগৃহীত

পাকিস্তান তাদের প্রতিরক্ষা ইতিহাসে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক স্পর্শ করলো। সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে উদ্ভাবিত জাহাজ-বিধ্বংসী ব্যালিস্টিক মিসাইলের সফল পরীক্ষা চালিয়েছে পাকিস্তান নৌবাহিনী, যা সমুদ্র ও স্থল—উভয় ক্ষেত্রেই নির্ভুল আঘাত হানতে সক্ষম। আঞ্চলিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি, বিশেষ করে ভারত–পাকিস্তান সামরিক উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে এই সফল উৎক্ষেপণ উল্লেখযোগ্য ভূ-কৌশলগত গুরুত্ব বহন করছে।

মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) পাকিস্তানের প্রথম সারির দৈনিক ডন সেনাবাহিনীর মিডিয়া শাখা আইএসপিআরের বরাতে জানায়, অত্যাধুনিক নির্দেশনা ব্যবস্থা ও উন্নত ম্যানুভারিং প্রযুক্তিসমৃদ্ধ এই ক্ষেপণাস্ত্রটি অত্যন্ত উচ্চগতিতে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম। এতে স্টেট অব দ্য আর্ট গাইডেন্স সিস্টেম, উন্নত অ্যাভিওনিক্স, অ্যান্টি-জ্যামিং ন্যাভিগেশন সিস্টেম এবং শেষ মুহূর্তে দিক পরিবর্তন করার ক্ষমতা যুক্ত করা হয়েছে, যা শত্রুপক্ষের নজরদারি ব্যবস্থা ভেদ করতে বিশেষ ভূমিকা রাখবে।

আইএসপিআরের বিবৃতিতে বলা হয়, এই সফল উৎক্ষেপণ পাকিস্তানের স্বয়ংসম্পূর্ণ প্রতিরক্ষা প্রযুক্তির শক্তি প্রমাণ করে এবং ভবিষ্যতের নৌকৌশলগত সক্ষমতা নিশ্চিত করার পথে একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। ক্ষেপণাস্ত্রটি পরীক্ষার সময় নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল নাভিদ আশরাফসহ দেশীয় বিজ্ঞানী ও প্রতিরক্ষা প্রকৌশলীরা উপস্থিত ছিলেন।

বিশ্লেষকদের মতে, সমুদ্র-ভিত্তিক নিরাপত্তা হুমকি মোকাবিলা, ভারতীয় নৌবাহিনীর বাড়তি সক্ষমতা প্রতিরোধ এবং আরব সাগরে কৌশলগত ভারসাম্য বজায় রাখতে এই নতুন ব্যালিস্টিক মিসাইল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। বিশেষ করে শত্রুপক্ষের বড় যুদ্ধজাহাজ, বিমানবাহী রণতরী ও উচ্চমূল্যের সামরিক সম্পদের বিরুদ্ধে এ মিসাইল এক গভীর প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করবে।

পর্যবেক্ষকদের ধারনা, নৌবাহিনীর বহরে যুক্ত হলে মিসাইলটি পাকিস্তানের সমুদ্রসীমা রক্ষা, দূরপাল্লার সামরিক প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো এবং আঞ্চলিক সমুদ্রশক্তির ভারসাম্য নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করতে পারে।

এর মাত্র দুই মাস আগে পাকিস্তান সফলভাবে পরীক্ষা করেছিল দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি নতুন ক্রুজ মিসাইল ফাতাহ–৪, যার পাল্লা ছিল প্রায় ৭০০ কিলোমিটার। ধারাবাহিক পরীক্ষাগুলো ইঙ্গিত দিচ্ছে যে পাকিস্তান তাদের ক্ষেপণাস্ত্র উন্নয়ন কর্মসূচি দ্রুত গতিতে এগিয়ে নিচ্ছে।

-রফিক


ই–১ প্রকল্প ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের ‘শেষ কফিন’

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ২৬ ০৯:৫৭:৫৭
ই–১ প্রকল্প ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের ‘শেষ কফিন’
ছবি: সংগৃহীত

ইসরায়েল অধিকৃত পশ্চিম তীরে আজ যে সহিংস বাস্তুচ্যুতি চলছে, তা কেবল বিচ্ছিন্ন কিছু সামরিক অভিযান নয় বরং সুদীর্ঘ সময় ধরে চালানো একটি পরিকল্পিত ও কাঠামোগত দখলনীতির সর্বশেষ রূপ। গাজায় অব্যাহত গণহত্যা, অবরোধ ও নির্বিচার বোমাবর্ষণের সমান্তরালে পশ্চিম তীরও ধীরে ধীরে পরিণত হচ্ছে অবরুদ্ধ ও ধ্বংসস্তূপে ভরা আরেকটি ফ্রন্টে। আন্তর্জাতিক পরিসরে লজ্জাজনক নীরবতা ও নিষ্ক্রিয়তার সুযোগে ইসরায়েলের সামরিক ও রাজনৈতিক নেতৃত্ব পশ্চিম তীরের জনসংখ্যাগত মানচিত্র পাল্টে ফেলতে চায় বলে মানবাধিকার সংগঠনগুলোর বক্তব্য।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) গত সপ্তাহে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানায়, ২০২৪ সালের পুরোটা জুড়ে জেনিন, নুর শামস ও তুলকারেম শরণার্থী ক্যাম্পে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর কঠোর অভিযান ও ধ্বংসযজ্ঞে ৩২ হাজার ফিলিস্তিনিকে ঘরবাড়ি হারাতে হয়েছে যা ১৯৬৭ সালের পর এই অঞ্চলের সবচেয়ে বড় উচ্ছেদ।

আন্দোলনের ভাষায়, এটি “সাধারণ সামরিক অভিযান” নয়; বরং একটি ক্যাম্পকে পুরোপুরি কার্যক্ষমতা হারানোর মতো করে ধ্বংস করে ফেলা রাস্তা কেটে দেওয়া, ঘর ধ্বংস, বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা, হাসপাতালের প্রবেশপথ অবরুদ্ধ করা এবং চলাচলের শেষ অবশিষ্ট পথও বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া। ইসরায়েল দাবি করছে, এটি “নিরাপত্তার প্রয়োজনীয়তা” এবং “অপারেশন আয়রন ওয়াল”–এর অংশ, যার লক্ষ্য ক্যাম্প থেকে প্রতিরোধমুখী ফিলিস্তিনিদের নির্মূল করা।

কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, বহু মাস পেরিয়ে গেলেও অধিবাসীদের ফিরতে দেওয়া হয়নি। বরং পুরো ক্যাম্পকে পরিণত করা হয়েছে সামরিক নিয়ন্ত্রণাধীন একটি নিষিদ্ধ অঞ্চলে।

গাজায় গণহত্যা চলার পর থেকে পশ্চিম তীরজুড়েও ইসরায়েলি সহিংসতা তীব্রভাবে বেড়েছে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত ১,০০০–রও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত, যা পশ্চিম তীরের জন্য নতুন বাস্তবতা। প্রতিদিনই রাতের অভিযান, আটক, গুলি, বুলডোজার দিয়ে রাস্তা-কাটা, ঘর ভাঙা ও অবরোধ চালানো হচ্ছে।

বিটসেলেম–এর নির্বাহী পরিচালক ইউলি নোভাক বলেছেন, “পশ্চিম তীরে যা ঘটছে, তা হচ্ছে আয়তন ছোট কিন্তু উদ্দেশ্যে গাজার মতোই ধ্বংসাত্মক। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নীরবতা ইসরায়েলের সহিংসতাকে আরও বেপরোয়া করে তুলছে।”

পশ্চিম তীরের সবচেয়ে বড় অংশ এরিয়া সি, যেখানে ফিলিস্তিনিদের প্রশাসনিক ক্ষমতা একেবারেই নেই। এখানে ইসরায়েল যেকোনো ঘরবাড়ি ভেঙে দিতে পারে, এবং সেটিই ঘটছে ব্যাপকভাবে। জাতিসংঘ (ওসিএইচএ) জানিয়েছে, শুধু ২০২৪ সালেই এরিয়া সি–তে ঘরবাড়ি ভেঙে ১,০০০–র বেশি মানুষকে গৃহহীন করা হয়েছে। অধিকৃত পূর্ব জেরুজালেমেও আরও ৫০০ মানুষ ঘরহারা।

ইসরায়েল বলছে, “পারমিট ছিল না” কিন্তু জাতিসংঘ ও মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, এই এলাকায় ফিলিস্তিনিদের জন্য পারমিট পাওয়া প্রায় অসম্ভব, এবং সেটাই ইসরায়েলের একটি কৌশল: পারমিট না দিয়ে পরে ঘর ভাঙার অজুহাত তৈরি করা।

চরম ডানপন্থী ইসরায়েলি নেতৃত্ব, বিশেষ করে অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোত্রিচ প্রকাশ্যেই বলেছেন:

  • “আমার জীবনের সবচেয়ে বড় মিশন হলো ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠন ঠেকানো।”
  • “জুদিয়া–সামারিয়া (পশ্চিম তীর) ইসরায়েলের অংশ এটি আগে স্থলভাগে, পরে আইনে প্রতিষ্ঠা করা হবে।”
  • “সব অবৈধ বসতিকে বৈধ ঘোষণা করা হবে।”

ইসরায়েলি সংসদ ইতিমধ্যে একটি প্রাথমিক বিল পাস করেছে, যা পশ্চিম তীরকে ইসরায়েলের আইনগত এখতিয়ারে আনার পথ খুলতে পারে যা আন্তর্জাতিক আইনের ঘোর লঙ্ঘন।

আগস্টে স্মোত্রিচ ঘোষণা করেন নতুন ই–১ বসতি ৩,000 ঘর তৈরি হবে পূর্ব জেরুজালেম ও পশ্চিম তীরের মধ্যবর্তী জায়গায়। এই অঞ্চল আলাদা হয়ে গেলে ভবিষ্যতে কোনোভাবেই ভৌগোলিকভাবে যুক্ত একটি ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠন সম্ভব হবে না। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় একে “সমাধিস্বরূপ প্রকল্প” বলে অভিহিত করছে।

বর্তমানে পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমে ৭ লাখের বেশি ইসরায়েলি অবৈধ বসতি স্থাপনকারী রয়েছে। এদের অনেকেই আবার সরকারের উচ্চপদে কাজ করছেন, ফলে বসতিদের সহিংসতা আরও প্রতিষ্ঠানিক রূপ পাচ্ছে।

জাতিসংঘের ওসিএইচএ বলছে, ২০২৩–২৪ সালে বসতি উগ্রপন্থীদের সহিংসতা সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে গড়ে প্রতিদিন ৮টি হামলা। এর মধ্যে রয়েছে:

  • জলপাই গাছ কেটে ফেলা
  • কৃষিজমি দখল
  • ফিলিস্তিনিদের ওপর গুলি
  • ঘরবাড়িতে আগুন
  • পশুপাল হত্যা
  • রাস্তায় প্রতিরোধ গড়ে তোলা

জলপাই মৌসুমে এসব হামলা বহুগুণে বেড়েছে। প্যালেস্টাইনি ফার্মার্স ইউনিয়ন বলছে, “এটি গ্রামীণ ফিলিস্তিনি সভ্যতাকে ধ্বংসের কৌশল।”

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, বিটসেলেমসহ বহু মানবাধিকার সংগঠন ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডকে যুদ্ধাপরাধ, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ ও জাতিগত নির্মূল হিসেবে চিহ্নিত করলেও পশ্চিমা শক্তিগুলোর কার্যকর পদক্ষেপ রাজনীতিকভাবেই অনুপস্থিত।


ইসরায়েলকে পাশ কাটিয়ে সৌদি আরবের দিকে ঝুঁকছেন ট্রাম্প

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ২৫ ১৫:৫৮:১৭
ইসরায়েলকে পাশ কাটিয়ে সৌদি আরবের দিকে ঝুঁকছেন ট্রাম্প
ছবিঃ সংগৃহীত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এখন সৌদি আরবের দিকে ঝুঁকছেন বলে আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন। হোয়াইট হাউসে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকে দেওয়া জাঁকজমকপূর্ণ অভ্যর্থনা তা আরও স্পষ্ট করে তুলেছে। ঘোড়সওয়ার রক্ষী পতাকা ও যুদ্ধবিমানের শোভাযাত্রায় তাঁকে স্বাগত জানানো হয় যা ট্রাম্প প্রশাসনে কোনো বিদেশি নেতার জন্য সবচেয়ে বড় আয়োজন হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

সম্প্রতি ওভাল অফিসে বৈঠকের সময় ট্রাম্প যুবরাজকে বারবার রাজকীয় বন্ধু বলে প্রশংসা করেন। তবে এক সাংবাদিক জামাল খাসোগি হত্যার প্রসঙ্গ তুলতেই ট্রাম্প বিরক্ত হয়ে ওঠেন এবং যুবরাজের পক্ষে সাফাই দেন যা মার্কিন গোয়েন্দা রিপোর্টের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় বলে সমালোচকরা বলছেন।

সবচেয়ে বড় পরিবর্তন এসেছে সামরিক নীতি নিয়ে। ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছেন সৌদি আরব যুক্তরাষ্ট্রের মতো এফ ৩৫ যুদ্ধবিমান পাবে এবং ইসরায়েলের সমমানের প্রযুক্তিও তাদের হাতে থাকবে। বহুদিন ধরে মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েলকে সেরা অস্ত্র অগ্রাধিকার দিয়ে আসা মার্কিন নীতি এই সিদ্ধান্তে ভেঙে গেছে। ট্রাম্পের এই ঘোষণায় ইসরায়েল বেজায় অসন্তুষ্ট হয়েছে।

এর পাশাপাশি সৌদি আরব ও আমিরাতের কাছে উন্নত এআই চিপ বিক্রির নিষেধাজ্ঞাও তুলে নেওয়া হয়েছে। এটি সৌদির বৈশ্বিক প্রযুক্তি কেন্দ্র হওয়ার স্বপ্নকে আরও এগিয়ে দিল। বিশেষজ্ঞরা বলছেন ১৯৩০ এর দশকে সৌদির তেলক্ষেত্র নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যে গভীর সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল এআই যুগেও তার পুনরাবৃত্তি ঘটতে পারে।

সাম্প্রতিক আরও কিছু পদক্ষেপ থেকে বিশ্লেষকরা মনে করছেন ট্রাম্প প্রশাসন ইসরায়েলকেন্দ্রিক নীতি থেকে সাময়িকভাবে সরে যাচ্ছে। জাতিসংঘে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের সম্ভাবনা রাখা সিরিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা এবং মধ্যপ্রাচ্য সফরে ইসরায়েল বাদ দিয়ে সৌদি কাতার ও ইউএই সফর করার পরিকল্পনায় বোঝা যায় ট্রাম্প এখন সৌদির সমর্থন আদায়কেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন।

তথ্যসূত্র : দ্য গার্ডিয়ান


সৌদিতে প্রথমবার বার চালু, বিশ্বজুড়ে বাড়ছে কৌতূহল

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ২৫ ১২:২৫:৩০
সৌদিতে প্রথমবার বার চালু, বিশ্বজুড়ে বাড়ছে কৌতূহল
ছবি: সংগৃহীত

সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হয়েছে ‘এ–১২’ নামে একটি নতুন ক্যাফে–বার, যেখানে প্রথমবারের মতো বার-স্টাইল পরিবেশে বিয়ারসহ বিভিন্ন নন–অ্যালকোহলিক পানীয় পরিবেশনের অনুমতি দিয়েছে সৌদি কর্তৃপক্ষ। মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম রক্ষণশীল দেশটিতে এটি একটি ঐতিহাসিক পরিবর্তন হিসেবে দেখা হচ্ছে।

বহির্বিশ্বে যেসব পানীয় সাধারণত অ্যালকোহলযুক্ত, সেগুলোর স্বাদ-অনুভূতি অনুসরণ করে সম্পূর্ণ অ্যালকোহলমুক্ত পানীয়ই পরিবেশন করা হচ্ছে ‘এ–১২’ তে। পুরো পরিবেশ সাজানো হয়েছে আন্তর্জাতিক বারের আদলে, যেখানে নারী-পুরুষ একসঙ্গে বসে আড্ডা দেওয়া ও পানীয় উপভোগের সুযোগ পাচ্ছেন যা সৌদিতে সামাজিকভাবে এক নতুন অভিজ্ঞতা।

১৯৫২ সাল থেকে সৌদি আরবে অ্যালকোহল বিক্রি ও পান সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। আইন লঙ্ঘন করলে কঠোর শাস্তি, জরিমানা ও শারীরিক দণ্ডের বিধান রয়েছে। উপসাগরীয় অঞ্চলে সৌদি আরব ও কুয়েতেই অ্যালকোহল নিষিদ্ধ, যা দেশটির ইসলামী বিধানভিত্তিক সামাজিক কাঠামোর প্রধান বৈশিষ্ট্য।

তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সৌদি আরব বিনোদন, সামাজিক জীবন ও অর্থনৈতিক নীতিতে ব্যাপক পরিবর্তন আনছে। দেশটির কার্যত শাসক ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের ‘ভিশন–২০৩০’–এর অংশ হিসেবে সমাজকে তুলনামূলকভাবে উন্মুক্ত ও অর্থনৈতিকভাবে বহুমুখী করার প্রচেষ্টা চলছে। তারই ধারাবাহিকতায় রিয়াদে প্রথমবারের মতো নন–অ্যালকোহলিক বার চালুর অনুমতি দেওয়া হলো।

এর আগে ২০২৪ সালে অমুসলিম বিদেশি কূটনীতিকদের জন্য রিয়াদে সীমিত পরিসরে অ্যালকোহল বিক্রির অনুমতি দেওয়া হয়। পরবর্তীতে ফ্রান্স–২৪ জানায়, অমুসলিম বিদেশি কর্মী, বিশেষত সৌদি রাষ্ট্রীয় তেল কোম্পানি আরামকোতে কর্মরত অ-সৌদি নাগরিক এবং জেদ্দায় অবস্থানরত কূটনীতিকদের জন্য ২০২৬ সালে আরও দুটি নিয়ন্ত্রিত মদের দোকান চালুর পরিকল্পনা করছে সৌদি সরকার। তবে সাধারণ নাগরিকদের জন্য অ্যালকোহল বিক্রির কোনো সম্ভাবনা নেই।

-রফিক

পাঠকের মতামত:

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

রাষ্ট্রের ধারণাটি একসময় কেবল প্রশাসনিক ক্ষমতা, আইনের শাসন এবং নিরাপত্তা প্রদানের সঙ্গে সম্পর্কিত ছিল। কিন্তু আধুনিক বিশ্বে রাষ্ট্রের ভূমিকা এখন... বিস্তারিত