তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা নিয়ে বিএনপির ভাবনা, ঢাবিতে স্পষ্ট করলেন আমীর খসরু

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ২০ ১১:৫৭:২৭
তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা নিয়ে বিএনপির ভাবনা, ঢাবিতে স্পষ্ট করলেন আমীর খসরু
ছবিঃ সংগৃহীত

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা আগামী নির্বাচনকে সুসংহত ও শক্তিশালী করবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত এক ফ্রি মেডিকেল ও স্বাস্থ্যসেবা কর্মসূচি শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এই মন্তব্য করেন।

আমীর খসরু উল্লেখ করেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অনুপস্থিতিতে দেশের মানুষকে দীর্ঘ সময় ধরে অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে। তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা আবার ফিরে এসেছে, তবে এটি কীভাবে গঠিত হবে বা এর রূপরেখা কেমন হবে, তা নিয়ে আলোচনার সুযোগ রয়েছে। তার মতে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেই কেবল সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন সম্ভব এবং অতীতে এই ব্যবস্থার অধীনে দেশে বেশ কয়েকটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

রাজনৈতিক দলগুলোর অবস্থান ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, প্রতিটি দলেরই নিজস্ব দর্শন ও ভাবনা রয়েছে। আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে দলগুলো এখন জনগণের কাছে নিজেদের বার্তা পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করছে। তিনি জানান, বিএনপি বিগত দিনের রাজনৈতিক অপসংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে এসে দেশে একটি ইতিবাচক রাজনৈতিক সংস্কৃতি চালু করার পক্ষে অবস্থান নিয়েছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য আরও বলেন, অনির্বাচিত সরকারের অধীনে একটি দেশ কতটা পিছিয়ে পড়তে পারে, তা সাধারণ মানুষ এরই মধ্যে প্রত্যক্ষ করেছে। তিনি মন্তব্য করেন, জনগণের রায় বা ম্যান্ডেট নিয়ে কাজ করা সরকারের জন্য যতটা সহজ হয়, অনির্বাচিত সরকারের পক্ষে সেভাবে কাজ করা সম্ভব হয় না।


নারীদের জন্য নিরাপদ বাংলাদেশ গড়তে তারেক রহমানের ৫ প্রতিশ্রুতি

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ২০ ১১:৩৯:৪৪
নারীদের জন্য নিরাপদ বাংলাদেশ গড়তে তারেক রহমানের ৫ প্রতিশ্রুতি
ছবিঃ সংগৃহীত

অনলাইন এবং অফলাইন—উভয় জগতেই নারীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বিএনপি পাঁচটি বিষয়কে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেবে বলে জানিয়েছেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এই পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন।

তারেক রহমান তার পোস্টে উল্লেখ করেন, ডিজিটাল জগত এখন আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রযুক্তি যেভাবে বিশ্ব এবং বাংলাদেশকে বদলে দিয়েছে, তা উপেক্ষা করার সুযোগ নেই। তিনি নিজের পরিবারের উদাহরণ টেনে বলেন, মাঝেমধ্যে তিনি এবং তার স্ত্রী ভাবেন, তাদের বেড়ে ওঠার সময়ের সঙ্গে আজকের পৃথিবীতে তাদের মেয়ের বেড়ে ওঠার পরিবেশ কতটা ভিন্ন। অনেক বাবা-মায়ের মতো তারাও একই সঙ্গে আশা এবং উদ্বেগ অনুভব করেন। কারণ, বর্তমান সময়ে সুযোগ যেমন বেড়েছে, তেমনি হুমকির মাত্রাও অনেক বেশি।

তিনি জোর দিয়ে বলেন, বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে হলে আমাদের মা, বোন, মেয়ে এবং সহকর্মীরা ভয়ের মধ্যে বাঁচতে পারেন না। অথচ প্রতিদিন অসংখ্য নারীকে কথা বলা, কাজ করা বা পড়াশোনা করার জন্য হয়রানি, ভয়ভীতি ও সহিংসতার শিকার হতে হচ্ছে। এটি আমাদের স্বপ্নের বাংলাদেশ নয়।

তারেক রহমান বলেন, নারীদের অবশ্যই নিরাপদ বোধ করতে হবে—তা হোক অনলাইনে বা অফলাইনে, ঘরে কিংবা বাইরে। এই নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিএনপি পাঁচটি জরুরি বিষয় বাস্তবায়নের পরিকল্পনা করছে।

বিএনপির ৫টি অগ্রাধিকার পরিকল্পনা:

১. জাতীয় অনলাইন সুরক্ষা ব্যবস্থা

নারীদের জন্য একটি জাতীয় সুরক্ষা কাঠামো তৈরি করা হবে। যেখানে সাইবার বুলিং, হুমকি কিংবা ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁসের মতো ঘটনায় নারীরা দ্রুত ও সহজে অভিযোগ জানাতে পারবেন। এটি পরিচালনার জন্য ২৪/৭ হটলাইন এবং একটি অনলাইন পোর্টাল থাকবে, যা দ্রুত এবং সম্মানের সঙ্গে সেবা দিতে প্রশিক্ষিত কর্মীদের দ্বারা পরিচালিত হবে।

২. জনজীবনে নারীদের জন্য সুরক্ষা প্রোটোকল

সাংবাদিক, শ্রমিক, শিক্ষার্থী বা কমিউনিটি লিডার হিসেবে কাজ করা নারীরা যেন নিরাপদে থাকতে পারেন, সেজন্য স্পষ্ট জাতীয় নির্দেশিকা থাকবে। আক্রমণের শিকার হলে তারা দ্রুত আইনি ও ডিজিটাল সহায়তা পাবেন এবং নিরাপদে অভিযোগ জানাতে পারবেন। জনজীবনে অংশগ্রহণের জন্য কোনো নারীকে চুপ করিয়ে রাখা যাবে না।

৩. ডিজিটাল সুরক্ষা শিক্ষা

স্কুল এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ওরিয়েন্টেশনের সময় ব্যবহারিক ডিজিটাল নিরাপত্তা বিষয়ক দক্ষতা শেখানো হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষিত শিক্ষকরা ‘নিরাপত্তা কেন্দ্রবিন্দু’ হিসেবে কাজ করবেন। এছাড়া বার্ষিক সচেতনতামূলক প্রচারণার মাধ্যমে তরুণদের ডিজিটাল বিশ্বে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বিচরণ করতে সহায়তা করা হবে।

৪. সহিংসতা ও হয়রানির বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ

তৃণমূল পর্যায়ে কমিউনিটি হেল্প ডেস্ক, নিরাপদ যাতায়াত ব্যবস্থা, রাস্তায় পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা এবং ট্রমা-সংবেদনশীল সহায়তা নারীদের দৈনন্দিন জীবনকে আরও নিরাপদ করে তুলবে।

৫. নেতৃত্বে নারীদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি

স্কুল, অফিস ও কর্মক্ষেত্রে নারীদের নেতৃত্ব বিকাশে প্রশিক্ষণ ও পরামর্শক নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা হবে। বিএনপি বিশ্বাস করে, যখন নারীরা এগিয়ে যায়, তখন সমগ্র জাতি তাদের সঙ্গে এগিয়ে যায়।

পোস্টের শেষাংশে তারেক রহমান আহ্বান জানিয়ে বলেন, রাজনীতি, ধর্ম বা বর্ণ নির্বিশেষে বাংলাদেশি হিসেবে আমাদের একটি সত্যে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আমরা এমন একটি বাংলাদেশ চাই যেখানে নারীরা নিরাপদ ও ক্ষমতায়িত হবে। আমাদের কন্যা এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সেই কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ গড়তে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।


প্রপাগান্ডা আর ষড়যন্ত্র পেরিয়ে জনতার কাতারে: জন্মদিনে তারেক রহমানকে নিয়ে ভাবনা

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ২০ ০৯:৩৮:৪৮
প্রপাগান্ডা আর ষড়যন্ত্র পেরিয়ে জনতার কাতারে: জন্মদিনে তারেক রহমানকে নিয়ে ভাবনা
ছবিঃ সংগৃহীত

২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে রাজনৈতিক অঙ্গনে সবচেয়ে বেশি আলোচিত নামগুলোর একটি তারেক রহমান। তিনি শারীরিকভাবে দেশে উপস্থিত না থাকলেও তার প্রভাব এবং ছায়া ঘিরে রেখেছে দলের নেতাকর্মী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষকে। সম্প্রতি যশোরের 'শুভ্র বালিকা' বা অ্যালবিনো শিশু আফিয়ার ঘটনাটি এর একটি বড় উদাহরণ। অস্বাভাবিক গায়ের রঙের কারণে বাবা ছেড়ে চলে যাওয়ার পর মা মনিরা যখন দিশেহারা, তখন তাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। তিনি শুধু শিশু ও মায়ের দায়িত্বই নেননি, বরং শিশুটি সম্পর্কে তার বাবার ভুল ধারণা ভাঙানোর জন্যও দলীয় নেতাদের নির্দেশ দিয়েছেন। তারেক রহমানের এমন মানবিক অভিভাবকত্ব শুধু ওই পরিবারকেই নয়, সাধারণ মানুষের মনেও গভীর রেখাপাত করেছে।

আজ ২০ নভেম্বর, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের জন্মদিন। ১৯৬৫ সালের এই দিনে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার জ্যেষ্ঠ সন্তান হিসেবে ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে বেড়ে উঠলেও ক্ষমতা তাকে অন্ধ করতে পারেনি। ১৯৮৯ সালে বগুড়া জেলা বিএনপির প্রাথমিক সদস্য পদ গ্রহণের মাধ্যমে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। তবে ক্ষমতার চেয়ারে বসার চেয়ে তিনি তৃণমূলের মানুষের সঙ্গে মিশে রাজনীতি শিখতেই বেশি আগ্রহী ছিলেন। কৃষকের স্বপ্ন, শ্রমিকের সংগ্রাম আর তারুণ্যের সম্ভাবনাকে তিনি নিজের রাজনৈতিক দর্শনে ধারণ করেছেন।

২০০৭ সালের ওয়ান-ইলেভেন এবং পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগ সরকার তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ব্যাপক অপপ্রচার চালিয়েছিল। তাকে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন করার নানা ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল। কিন্তু চব্বিশের ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থান সেই সব নেতিবাচক প্রচারণাকে মিথ্যা প্রমাণ করেছে। সংকটে ও সম্ভাবনায় মানুষ এখন তারেক রহমানের মধ্যে একজন দূরদৃষ্টিসম্পন্ন দায়িত্বশীল অভিভাবককে খুঁজে পাচ্ছে। মা-বাবার আদর্শে তিনি হয়ে উঠেছেন দেশপ্রেমিক ও মানবতাবাদী এক নেতা, যার দিকে তাকিয়ে আছে আগামীর বাংলাদেশ।

২০০১ সালের জাতীয় নির্বাচনে বিএনপির বিপুল বিজয়ের নেপথ্য কারিগর ছিলেন তারেক রহমান। সরকার গঠিত হওয়ার পর তিনি মন্ত্রিত্ব গ্রহণ না করে দলের সাংগঠনিক কাঠামো শক্তিশালী করার কাজে মন দেন। তার নেতৃত্বেই বিএনপির কর্মকাণ্ড তৃণমূল পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। তিনি চেয়ারপারসনের কার্যালয়কে দেশ ও দল পরিচালনার এক আধুনিক গবেষণাগারে রূপান্তর করেন। সেখানে শিক্ষিত ও মেধাবী কর্মীদের নিয়ে তিনি শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, মানবাধিকার এবং তথ্যপ্রযুক্তিসহ বিভিন্ন বিষয়ে গবেষণা ও পরিকল্পনা প্রণয়ন করতেন, যা সরকার পরিচালনায় সহায়তা করত।

তারেক রহমানের রাজনৈতিক দূরদর্শিতার অন্যতম প্রমাণ ছিল 'তৃণমূল প্রতিনিধি সম্মেলন'। ২০০২ সাল থেকে তিনি দেশের প্রান্তিক জনপদ ঘুরে বেড়িয়েছেন এবং তরুণ প্রজন্মকে দলের প্রাণশক্তিতে রূপান্তর করেছেন। ২০০৫ সালে ইউনিয়ন পর্যায়ে প্রতিনিধিদের নিয়ে টানা তিন মাস সভা করে তিনি দলে নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি করেন। তার বিশ্বাস, সঠিক নির্দেশনা পেলে তৃণমূলের নেতারাই দেশ পরিচালনায় ভূমিকা রাখতে পারেন। এই জনসংযোগ তাকে তরুণদের কাছে 'তারুণ্যের অহংকার' হিসেবে পরিচিত করে তোলে।

রাজনীতির বাইরেও সমাজসেবায় তারেক রহমানের অবদান উল্লেখযোগ্য। তিনি বিশ্বাস করেন, ক্ষমতার বাইরে থেকেও মানুষের সেবা করা সম্ভব। এই লক্ষ্যেই তিনি প্রতিষ্ঠা করেন 'জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন'। এই অরাজনৈতিক সংগঠনটি দীর্ঘদিন ধরে কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও পরিবেশ সুরক্ষায় কাজ করে যাচ্ছে। ১৬ বছরের ফ্যাসিবাদী শাসনের অবসানের পর দেশে এখন গণতন্ত্রের নতুন বাতাস বইছে। এই সময়ে শহীদ জিয়ার আদর্শ এবং খালেদা জিয়ার জাতীয়তাবাদী রাজনীতিকে এগিয়ে নিতে তারেক রহমানের নেতৃত্বের দিকেই তাকিয়ে আছে দল ও দেশ। জন্মদিনে তার অনুসারী ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা প্রত্যাশা করছেন, তার হাত ধরেই রচিত হবে আগামীর সমৃদ্ধ বাংলাদেশের নতুন ইতিহাস।

লেখক : অধ্যাপক এবং গণশিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক, বিএনপি


আসন ছাড় নিয়ে বিএনপির ‘নতুন হিসাব’, বড় কোনো চমক নাকি কারো কপাল পুড়ছে?

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ২০ ০৮:৫৭:৫২
আসন ছাড় নিয়ে বিএনপির ‘নতুন হিসাব’, বড় কোনো চমক নাকি কারো কপাল পুড়ছে?
ছবিঃ সংগৃহীত

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি গত ৩ নভেম্বর নিজেদের ২৩৭টি আসনের সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম ঘোষণা করলেও, তাদের দীর্ঘদিনের যুগপৎ আন্দোলনের শরিক দলগুলোর আসন এখনো চূড়ান্ত করা হয়নি। এই বিলম্বের কারণে মিত্র দল ও জোটগুলোর মধ্যে অস্থিরতা বাড়ছে। তারা দ্রুত এই বিষয়ের সমাধান চাইছে। তবে বিএনপির পক্ষ থেকে মিত্রদের আশ্বস্ত করা হয়েছে যে, আগামী আট থেকে দশ দিনের মধ্যেই আসন ছাড়ের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হবে।

মিত্র দলগুলোর দাবি, ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সেই হিসেবে নির্বাচনের প্রস্তুতির জন্য তাদের হাতে সময় খুবই কম। এছাড়া, কোন আসনে কে প্রার্থী হচ্ছেন—তা নিশ্চিত না হওয়ায় নির্বাচনী এলাকাগুলোতে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হচ্ছে এবং পরিস্থিতি দিন দিন জটিল হয়ে উঠছে। এই কারণেই বিএনপির দীর্ঘদিনের আন্দোলন-সংগ্রামের সঙ্গীরা চাইছেন যেন আসন ভাগাভাগির বিষয়টি দ্রুত সুরাহা করা হয়।

আসন সমঝোতার বিষয়ে আলোচনার জন্য মঙ্গলবার বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খানের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ‘১২ দলীয় জোট’ ও ‘জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট’-এর শীর্ষ নেতারা। বৈঠকে মিত্ররা যুক্তি দেখান যে, ২০১৮ সালের নির্বাচনে যারা বিএনপির পক্ষ থেকে আসন পেয়েছিলেন, তাদের বিষয়টি ঠিক রেখে নতুন করে কাদের আসন ছাড়া হবে, তা দ্রুত ঘোষণা করা প্রয়োজন। কারণ, বিষয়টি ঝুলে থাকায় জোটের সম্ভাব্য প্রার্থীরা পুরোদমে প্রচারণায় নামতে পারছেন না। অন্যদিকে, ওইসব আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীরাও সক্রিয় থাকায় স্থানীয় পর্যায়ে বিএনপি ও মিত্র দলগুলোর নেতাকর্মীদের মধ্যে ঝামেলা বাড়ছে। নেতারা মনে করছেন, আসন চূড়ান্ত হয়ে গেলে এই জটিলতা আর থাকবে না।

বৈঠক শেষে ১২ দলীয় জোটের মুখপাত্র ও বাংলাদেশ এলডিপির চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম গণমাধ্যমকে জানান, তারা নিজেদের যুক্তি ও মাঠপর্যায়ের সমস্যার কথা বিএনপি নেতাদের জানিয়েছেন। জবাবে বিএনপি মহাসচিব তাদের আশ্বস্ত করেছেন যে, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে দ্রুত আলোচনা করে কয়েক দিনের মধ্যেই এ বিষয়ে ফয়সালা করা হবে। একইভাবে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের প্রধান ও এনপিপির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদও জানিয়েছেন, বিএনপির নেতারা তাদের মতামত গুরুত্বসহকারে শুনেছেন এবং দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন।

জানা গেছে, গত সেপ্টেম্বরের শেষ দিকেই বিএনপি তাদের শরিকদের কাছে আসনের চাহিদাপত্র চেয়েছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে ১২ দলীয় জোট ১৮টি এবং জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট ৮টি আসনের তালিকা বিএনপির কাছে জমা দিয়েছে। মঙ্গলবারের বৈঠকে বিএনপির আরেক মিত্র কর্নেল (অব.) অলি আহমদের এলডিপির প্রসঙ্গও উঠে আসে। বিএনপি জানিয়েছে, এলডিপির সঙ্গেও আসন সমঝোতা শিগগিরই হয়ে যাবে। উল্লেখ্য, অলি আহমদের দল ইতিমধ্যে শতাধিক আসনে এককভাবে প্রার্থী ঘোষণা করেছে। এছাড়া গণতন্ত্র মঞ্চ, গণফোরাম এবং নুরুল হক নুরের গণঅধিকার পরিষদকে কয়টি আসন দেওয়া হবে, তা নিয়েও আলোচনা চলছে। ধারণা করা হচ্ছে, গণঅধিকার পরিষদকে একাধিক আসনে ছাড় দেওয়া হতে পারে।

তবে জোটের রাজনীতিতে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে সরকারের জারি করা ‘গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন অধ্যাদেশ, ২০২৫’। গত ৩ নভেম্বর জারি করা এই গেজেট অনুযায়ী, কোনো দল যদি নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত হয়, তবে জোটবদ্ধভাবে নির্বাচন করলেও সেই দলের প্রার্থীকে আবশ্যিকভাবে নিজ দলের প্রতীকেই লড়তে হবে। এই বাধ্যবাধকতার কারণে বিএনপির নিবন্ধিত মিত্র দলগুলোকে নিয়ে নতুন করে জটিলতা তৈরি হয়েছে। বিএনপির নীতিনির্ধারকরা বিষয়টি নিয়ে নতুন করে ভাবছেন।

বিএনপির দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, দলের ভেতরে এ নিয়ে ভিন্নমত রয়েছে। কেউ কেউ মনে করছেন, নিবন্ধিত মিত্র দলগুলোর প্রার্থীরা যদি ধানের শীষের বদলে নিজস্ব প্রতীকে নির্বাচন করেন, তবে তাদের জয়ের সম্ভাবনা কমে যাবে এবং সেই সুযোগে প্রতিপক্ষ জয়ী হতে পারে। এই ঝুঁকির কারণে বিএনপি নিবন্ধিত মিত্রদের আগের তুলনায় কম আসন ছাড়ার কথা ভাবছে। তবে যারা অনিবন্ধিত মিত্র, তারা সুবিধাজনক অবস্থানে আছেন, কারণ তারা আইনিভাবে ধানের শীষ প্রতীকে ভোট করতে পারবেন।

আরপিও সংশোধনের মাধ্যমে জোটগত নির্বাচনে নিজস্ব প্রতীকে ভোট করার বিধানের শুরু থেকেই বিরোধিতা করে আসছে বিএনপি ও তার মিত্ররা। তারা নির্বাচন কমিশন ও আইন মন্ত্রণালয়ে লিখিত আপত্তিও জানিয়েছে। তবে জামায়াত, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এই সংশোধনের পক্ষে শক্ত অবস্থান নিয়েছে। জানা গেছে, বিএনপি বিষয়টি নিয়ে আবারও সরকারের সঙ্গে কথা বলবে এবং মিত্রদেরও এ বিষয়ে সোচ্চার থাকার পরামর্শ দেবে। অন্যদিকে, আসন সমঝোতা নিয়ে এনসিপির সঙ্গে বিএনপির অনানুষ্ঠানিক আলোচনার খবরে পুরনো মিত্রদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। মিত্ররা বিএনপিকে এ বিষয়ে সতর্কতার সঙ্গে পা ফেলার পরামর্শ দিয়েছেন।


ডিসি-ইউএনও বাদ, ইসির নিজস্ব কর্মকর্তাদের রিটার্নিং অফিসার করার প্রস্তাব বিএনপির

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৯ ২০:৪৩:৫১
ডিসি-ইউএনও বাদ, ইসির নিজস্ব কর্মকর্তাদের রিটার্নিং অফিসার করার প্রস্তাব বিএনপির
ছবিঃ সংগৃহীত

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে প্রশাসনের লোকদের বদলে নির্বাচন কমিশনের নিজস্ব কর্মকর্তাদের নিয়োগ দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে বিএনপি। বুধবার (১৯ নভেম্বর) রাজধানীর নির্বাচন ভবনে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আয়োজিত সংলাপে অংশ নিয়ে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান এই প্রস্তাবনা তুলে ধরেন। তিনি মনে করেন, প্রশাসনের কর্মকর্তাদের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে কমিশনের নিজস্ব জনবলকে কাজে লাগালে সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন সহজ হবে।

সংলাপে মঈন খান উল্লেখ করেন, একটি জাতীয় নির্বাচন পরিচালনার জন্য কয়েক লাখ কর্মকর্তার প্রয়োজন হয়, যা কমিশনের বর্তমান জনবলের তুলনায় অনেক বেশি। তবে তিনি মনে করেন, কমিশনের যতটুকু জনবল আছে, তার সর্বোচ্চ সদ্ব্যবহার করা উচিত। তিনি বলেন, ৩০০ আসনে সাধারণত সরকারের কাছ থেকে রিটার্নিং ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ধার করে আনা হয়। কিন্তু নির্বাচন কমিশনের নিজস্ব যে জনবল রয়েছে, তা দিয়েই এই গুরুত্বপূর্ণ পদগুলো পূরণ করা সম্ভব এবং উচিত।

নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশে বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, "একবার সাহস করে এই সিদ্ধান্ত নিন যে, রিটার্নিং অফিসার এবং সহকারী রিটার্নিং অফিসাররা আপনাদের কমিশনের নিজস্ব ও নিবেদিতপ্রাণ লোক হবেন।" তিনি বিশ্বাস করেন, শুধুমাত্র এই একটি সাহসী সিদ্ধান্তের মাধ্যমেই বাংলাদেশের রাজনীতিতে এবং নির্বাচনী ব্যবস্থায় একটি বড় ধরনের গুণগত পরিবর্তন আনা সম্ভব হবে।

বর্তমান ব্যবস্থার সমালোচনা করে মঈন খান একটি রূপক ব্যবহার করেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে চারটি 'বোতাম' থাকে—জেলা প্রশাসক (ডিসি), পুলিশ সুপার (এসপি), উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)। অভিযোগ করে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে এই চারটি বোতাম টিপেই ৩০০ আসনের নির্বাচনের ফলাফল বের করে আনা হয়। তিনি জোর দিয়ে বলেন, এই পুরনো এবং প্রশ্নবিদ্ধ পদ্ধতি থেকে দেশকে অবশ্যই বের হয়ে আসতে হবে।

কমিশনকে শক্ত ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়ে মঈন খান বলেন, বিএনপি নির্বাচন কমিশনকে সব ধরনের সহায়তা করবে। তবে শর্ত হলো কমিশনকে মেরুদণ্ড সোজা করে দাঁড়াতে হবে। তিনি সতর্ক করে বলেন, কমিশন যদি সরকারের কাছে নতজানু হয়ে থাকে, তবে দেশে নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন করা কোনোভাবেই সম্ভব হবে না।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশে সাধারণত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় ৬৪ জেলার জেলা প্রশাসক এবং ঢাকা ও চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনাররা রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করে থাকেন। এছাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং কিছু ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পান। প্রশাসনের কর্মকর্তাদের বদলে ইসির নিজস্ব কর্মকর্তাদের এই দায়িত্ব দেওয়ার দাবি এর আগেও বিভিন্ন নির্বাচনের সময় উঠেছিল, যা এবার বিএনপির পক্ষ থেকে জোরালোভাবে উত্থাপন করা হলো।


খালেদা জিয়া প্রধান,তারেকের ছবি ব্যবহার করলে কী হবে? ইসির সক্ষমতা নিয়ে এনসিপির প্রশ্ন

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৯ ১৮:০০:৪৮
খালেদা জিয়া প্রধান,তারেকের ছবি ব্যবহার করলে কী হবে? ইসির সক্ষমতা নিয়ে এনসিপির প্রশ্ন

নিবন্ধন পাওয়ার পর নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে অনুষ্ঠিত প্রথম সংলাপেই কমিশনের সক্ষমতা নিয়ে সরাসরি প্রশ্ন তুলেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। বুধবার (১৯ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নিবন্ধিত সাতটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ইসির এই সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে এনসিপির পক্ষ থেকে নির্বাচনী আচরণবিধি প্রয়োগের ক্ষেত্রে কমিশনের কঠোরতা এবং বাস্তবতা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করা হয়। সংলাপে দলটির পক্ষে উপস্থিত ছিলেন মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা এবং যুগ্ম সদস্যসচিব জহিরুল ইসলাম মুসা।

আলোচনায় অংশ নিয়ে এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব জহিরুল ইসলাম আচরণবিধির ৭ ধারার ‘চ’ উপধারাটিকে নির্বাচন কমিশনের জন্য ‘প্রথম পরীক্ষা’ হিসেবে অভিহিত করেন। তিনি কমিশনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, বিএনপির বর্তমান দলীয় প্রধান হলেন বেগম খালেদা জিয়া। কিন্তু আচরণবিধি অনুযায়ী কেবল বর্তমান দলীয় প্রধানের ছবি ব্যবহারের নিয়ম রয়েছে। সেক্ষেত্রে বিএনপির কোনো প্রার্থী যদি প্রচারণায় দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ছবি ব্যবহার করেন, তবে কমিশন সেই প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিধিমালা প্রয়োগ করতে পারবে কি না, সেটাই দেখার বিষয়। তিনি মন্তব্য করেন, তখনই কমিশনের আসল সক্ষমতা প্রমাণিত হবে। উল্লেখ্য, আগামী নির্বাচনের জন্য প্রণীত খসড়া আচরণবিধিতে বলা হয়েছে, প্রার্থীরা পোস্টার বা ব্যানারে কেবল বর্তমান দলীয় প্রধানের ছবি ব্যবহার করতে পারবেন।

সংলাপে এনসিপির নেতারা দাবি করেন, নতুন এই আচরণবিধি বাংলাদেশের প্রচলিত নির্বাচনী সংস্কৃতি ও উৎসবমুখর পরিবেশের সঙ্গে পুরোপুরি সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। জহিরুল ইসলাম অভিযোগ করেন, কিছু বিধিনিষেধের মাধ্যমে দেশের দীর্ঘদিনের নির্বাচনী ঐতিহ্যকে পাশ কাটানোর চেষ্টা করা হয়েছে। তিনি ব্যানারের উপাদান নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, বিধিমালায় কাপড় বা চটের ওপর ব্যানার করার কথা বলা হয়েছে, কিন্তু দেশে চটের ওপর প্রিন্ট করার মতো প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা খুবই নগণ্য, বিশেষ করে প্রত্যন্ত অঞ্চলে এই সুযোগ নেই বললেই চলে। এছাড়া প্রচারণার সময় সাউন্ডবক্সের শব্দসীমা ৬০ ডেসিবেল নির্ধারণ করা নিয়েও তিনি আপত্তি জানান। তার প্রশ্ন, এই শব্দের মাত্রা কারা পরিমাপ করবে এবং সাধারণ মানুষের কাছে সেই যন্ত্র আছে কি না। অভিযোগ জানানোর প্রক্রিয়াটিও অস্পষ্ট বলে তিনি মন্তব্য করেন।

এনসিপির পক্ষ থেকে আচরণবিধির আইনি কাঠামোর অস্পষ্টতা নিয়েও কথা বলা হয়। জহিরুল ইসলাম বলেন, বিধিমালায় তদন্ত কমিটির কাছে অভিযোগ করার কথা বলা হলেও সেই কমিটির সংজ্ঞা বা গঠনপ্রণালী স্পষ্ট করা হয়নি, যা পুরো প্রক্রিয়াকে জটিল করে তুলতে পারে। এমনকি বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ পাওয়ার পর কমিশনের কোনো কর্মকর্তা যদি ব্যবস্থা না নেন, তবে তার বিরুদ্ধে কী করণীয়, সে বিষয়েও প্রশ্ন তোলে দলটি। এনসিপির আশঙ্কা, এই আচরণবিধির মাধ্যমে পরোক্ষভাবে কিছু প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দল ও ব্যক্তিকে সুবিধা দেওয়া হয়েছে।

তবে আচরণবিধির কিছু বিষয়কে স্বাগতও জানিয়েছে এনসিপি। বিশেষ করে ২৪ ও ২৫ ধারায় প্রতীক বরাদ্দের পর সব প্রার্থীর উপস্থিতিতে নির্বাচনী ইশতেহার পাঠ, আচরণবিধি মানার অঙ্গীকার এবং টেলিভিশনে নির্বাচনী সংলাপে অংশ নেওয়ার যে সুযোগ রাখা হয়েছে, সেগুলোকে সাধুবাদ জানিয়েছে দলটি। তারা এই ধারাগুলোকে ঐচ্ছিক না রেখে বাধ্যতামূলক করার দাবি জানিয়েছে। এছাড়া নির্বাচনী সহিংসতা বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ হিসেবে জহিরুল ইসলাম প্রস্তাব দেন যে, কোনো দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল বা সহিংসতায় কেউ নিহত বা আহত হলে সংশ্লিষ্ট প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল করতে হবে।

সংলাপে এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী আসন্ন গণভোটের নীতিমালা সম্পর্কে জানতে চান। তিনি নির্বাচন কমিশনকে পূর্ণ নিরপেক্ষতা বজায় রাখার আহ্বান জানিয়ে বলেন, কমিশন যদি কোনো বিশেষ দলের প্রতি অনুগত না থেকে কেবল সংবিধানের প্রতি দায়বদ্ধ থাকে, তবে এনসিপি তাদের শতভাগ সহযোগিতা করবে। এছাড়া জোটের প্রার্থীদের নিজ দলের প্রতীকেই নির্বাচন করতে হবে—গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের এমন সংশোধনীকে ইতিবাচক হিসেবে উল্লেখ করে তিনি কমিশনকে এই সিদ্ধান্তে অটল থাকার আহ্বান জানান।


বিশৃঙ্খলা হলে আরেকটি বিপ্লব ঘটবে, নির্বাচন কমিশনকে এনসিপির হুঁশিয়ারি

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৯ ১৬:০২:২১
বিশৃঙ্খলা হলে আরেকটি বিপ্লব ঘটবে, নির্বাচন কমিশনকে এনসিপির হুঁশিয়ারি
ছবিঃ সংগৃহীত

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী নির্বাচন কমিশনকে সতর্ক করে বলেছেন, আগামী নির্বাচনে তরুণ প্রজন্মের বিশাল অংশগ্রহণ থাকবে। তাই নির্বাচনের পরিবেশ উৎসবমুখর রাখতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে। তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, যদি নির্বাচনে কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয় এবং তরুণদের নির্বাচনের প্রতি যে সম্মানবোধ তৈরি হয়েছে তা নষ্ট হয়, তবে তারা হয়তো আরেকটি বিপ্লবের দিকে ধাবিত হতে পারে।

বুধবার (১৯ নভেম্বর) নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আয়োজিত এক সংলাপে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী আসন্ন নির্বাচনের সঙ্গে যুক্ত গণভোটের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরেন। তিনি কমিশনের কাছে জানতে চান, গণভোট কীভাবে পরিচালিত হবে এবং এটি কবে বাস্তবায়ন করা হবে। বিশেষ করে গণভোটে জালিয়াতি বা প্রতারণা রোধে কমিশন কোনো সুনির্দিষ্ট নীতিমালা গ্রহণ করেছে কি না, তা দ্রুত জনসমক্ষে প্রকাশ করার দাবি জানান তিনি। কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী এনসিপি প্রস্তুতি নেবে এবং প্রয়োজনে সব ধরনের সহযোগিতা করবে বলেও জানান তিনি।

নির্বাচন কমিশনের (ইসি) স্বাধীনতার ওপর জোর দিয়ে এনসিপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, কমিশন যদি সব রাজনৈতিক দলের প্রভাবমুক্ত হয়ে সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে, তবে তার দল কমিশনকে শতভাগ সহযোগিতা করবে। তিনি অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোকেও সহযোগিতামূলক মনোভাব নিয়ে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

নারী ভোটারদের নিরাপত্তা ও অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার বিষয়েও এনসিপি সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব দিয়েছে। নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, নির্বাচনের সময় নারী ভোটাররা অনেক ক্ষেত্রে সাইবার হয়রানি বা হ্যারাসমেন্টের শিকার হতে পারেন। তাই তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশনের অধীনে একটি বিশেষ 'মনিটরিং সেল' গঠনের প্রস্তাব দেন তিনি।

প্রবাসী ভোটারদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সময়সীমা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেন এনসিপি সমন্বয়ক। তিনি বলেন, প্রবাসীদের জন্য নির্ধারিত সময় খুবই সীমিত। যদি এই প্রক্রিয়াটি আরও আগে থেকে চালু করা যেত, তবে তাদের অংশগ্রহণ বাড়ত, যা নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা ও ভোটার সংখ্যা বৃদ্ধিতে সহায়ক হতো। এছাড়া নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর যোগাযোগ সহজ করতে তিনি প্রতিটি দলের জন্য একজন নির্দিষ্ট কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া বা 'ট্যাগ' করার প্রস্তাব করেন, যাতে দলগুলো তাদের উদ্বেগ দ্রুত জানাতে পারে।

দীর্ঘ সময় পর প্রার্থীরা নিজস্ব প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নিয়ে নিজেদের পরিচয় তুলে ধরার সুযোগ পাচ্ছেন বলে মন্তব্য করেন নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। নির্বাচনের দিন যাদের বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হবে, তাদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার পদক্ষেপে তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি নির্বাচন কমিশনকে ধন্যবাদ জানিয়ে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিতে ইসির নির্দেশনা মেনে কাজ করার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।


নির্বাচন নিয়ে কেউ কেউ গাছে কাঁঠাল রেখে গোঁফে তেল দিচ্ছেন: জামায়াত আমির

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৯ ১৫:৪৫:৪৭
নির্বাচন নিয়ে কেউ কেউ গাছে কাঁঠাল রেখে গোঁফে তেল দিচ্ছেন: জামায়াত আমির
ছবিঃ সংগৃহীত

আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে একটি বিশেষ মহল এখনই ষড়যন্ত্রের জাল বুনছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি মন্তব্য করেছেন, কেউ কেউ 'গাছে কাঁঠাল রেখে গোঁফে তেল' দিচ্ছেন এবং পেশিশক্তি ও কালো টাকার জোরে অন্যের ভোট ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করছেন। মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর কাফরুল দক্ষিণ থানা জামায়াতের এক প্রীতি সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। এই অসাধু চক্রের উদ্দেশে তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, যুবকদের ভোট নিয়ে কোনো ছিনিমিনি খেলা বরদাস্ত করা হবে না। ডাকাতরা যেন ভোট চুরির দুঃসাহস না দেখায়, কারণ প্রয়োজন হলে যুবকরা অন্যায়ের বিরুদ্ধে বিস্ফোরিত হবে। তিনি তরুণদের আশ্বস্ত করে বলেন, তাদের পছন্দের প্রার্থীকেই তারা ভোট দেবে, জামায়াত তাদের ভোটাধিকার রক্ষায় পাহারাদারের ভূমিকা পালন করবে।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মামলার রায় প্রসঙ্গে জামায়াত আমির বলেন, এই রায়ের মাধ্যমে মজলুম মানুষের কান্না কিছুটা হলেও থামবে এবং স্বজনহারা পরিবারগুলো সাময়িক সান্ত্বনা পাবে। বিচারপ্রক্রিয়াটি সরাসরি সম্প্রচারিত হওয়ায় একে ন্যায়বিচারের মানদণ্ড হিসেবে উল্লেখ করে তিনি সরকার ও বিচার বিভাগকে উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান। তিনি স্পষ্ট করেন যে, জামায়াত কারও ওপর অবিচার চায় না, এমনকি প্রতিপক্ষের ওপরও নয়। ক্ষমতায় গেলে তারা কারও সম্পদ কেড়ে নেবে না, বরং বিত্তশালীদের সম্পদের সুরক্ষা নিশ্চিত করবে।

দেশের অর্থনীতি ও দ্রব্যমূল্য নিয়ে কথা বলতে গিয়ে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, দেশ যদি চাঁদাবাজমুক্ত হয়, তবে উন্নয়নের গতি বহুগুণ বেড়ে যাবে এবং দ্রব্যমূল্য অর্ধেকে নেমে আসবে। তিনি অভিযোগ করেন, উৎপাদন পর্যায় থেকে শুরু করে ফুটপাতের হকার পর্যন্ত সবাই এখন চাঁদাবাজির শিকার। তিনি ব্যবসায়ীদের আশ্বস্ত করেন যে, ভবিষ্যতে কাউকে ব্যবসা করতে গিয়ে কোনো দলের বা গোষ্ঠীর মুখাপেক্ষী হতে হবে না। বাপ-দাদার জমিদারি মনে করা চাঁদাবাজদের সমাজ থেকে নির্মূল করার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। একইসঙ্গে ফুটপাতের হকারদের জন্য সম্মানজনক পুনর্বাসনের ব্যবস্থার কথাও উল্লেখ করেন।

দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে পড়া দুর্নীতির বিষবাষ্প দূর না হওয়া পর্যন্ত তাদের লড়াই থামবে না। বিচার বিভাগের মর্যাদা পুনরুদ্ধারের ওপর জোর দিয়ে জামায়াত আমির বলেন, বিচারকদের এমন সম্মানের আসনে থাকা উচিত যেন কেউ তাদের প্রভাবিত করার সাহস না পায়। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, একসময় বিচারকদের যে গাম্ভীর্য ও সম্মান ছিল, তা আজ নেই। পরিস্থিতির এতটাই অবনতি হয়েছে যে, বিচার করতে করতে শেষ পর্যন্ত পালাতে গিয়ে কাউকে কাউকে কলাপাতায় ঘুমানোর মতো পরিস্থিতিতেও পড়তে হয়েছে। এছাড়া ব্যাংক ও বিমা খাতসহ লুণ্ঠিত হওয়া জনগণের সম্পদ পুনরুদ্ধারেও তার দল লড়াই চালিয়ে যাবে বলে জানান।

পররাষ্ট্রনীতি ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ে দলের অবস্থান পরিষ্কার করে শফিকুর রহমান বলেন, সভ্য সব দেশের সঙ্গেই তারা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে চান, তবে কারও প্রভুত্ব মেনে নেওয়া হবে না। একটি স্বাধীন দেশের মতোই বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি স্বাধীন ও স্বতন্ত্র হবে।

নারীদের কর্মসংস্থান ও কর্মঘণ্টা নিয়ে তার আগের একটি বক্তব্যের ব্যাখ্যা দেন জামায়াত আমির। তিনি বলেন, ইনসাফের স্বার্থেই নারীদের কর্মঘণ্টা কমানোর কথা বলা হয়েছিল, যা অনেকে ভুল ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি মনে করেন, একজন নারী শুধু কর্মী নন, তিনি একটি পরিবারের কেন্দ্রবিন্দু এবং একজন মা। কর্মঘণ্টা কমিয়ে দিলে নারীরা পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে কাজ শেষ করে পরিবারের ও সন্তানের যত্ন নিতে পারবেন, যা দিনশেষে সমাজ ও রাষ্ট্রকেই শক্তিশালী করবে। তিনি দাবি করেন, বর্তমানে নারীরা যেভাবে কাজ করছেন, ভবিষ্যতে তাদের সম্মান ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করে আরও ভালো কর্মপরিবেশ তৈরি করা হবে। সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তরের আমির মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন।


বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্র হওয়া থেকে বাঁচাতে গণতন্ত্রের বিকল্প নেই: মির্জা ফখরুল

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৯ ১৪:৫০:২৯
বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্র হওয়া থেকে বাঁচাতে গণতন্ত্রের বিকল্প নেই: মির্জা ফখরুল
ছবিঃ সংগৃহীত

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মন্তব্য করেছেন, বাংলাদেশকে যদি ব্যর্থ রাষ্ট্র হওয়া থেকে বাঁচাতে হয়, তবে অবিলম্বে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, গণতন্ত্রের পাশাপাশি বিচার বিভাগ, রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতাও নিশ্চিত করা জরুরি।

বুধবার (১৯ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর একটি হোটেলে ‘চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানে বিএনপি’ শীর্ষক একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

দেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট নিয়ে সতর্কবার্তা উচ্চারণ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তিগুলোর মধ্যে সচেতনভাবে কোনো একটি মহল বিভক্তি সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে কি না, তা গভীরভাবে খতিয়ে দেখা দরকার। তিনি সাম্প্রতিক কিছু ঘটনার প্রতি ইঙ্গিত করে প্রশ্ন রাখেন, শেখ হাসিনার রায়কে কেন্দ্র করে যে ধরনের 'মবোক্রেসি' বা বিশৃঙ্খলা দেখা গেছে, তা কি মূল রায় থেকে মানুষের দৃষ্টি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য করা হয়েছে? এই বিষয়টি নিয়ে ভাবার অবকাশ রয়েছে।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আরও বলেন, গণতন্ত্র মানে কেবল একটি নির্বাচন আয়োজন করা নয়। নির্বাচনের পরেও গণতন্ত্রকে একটি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে হবে, যাতে রাষ্ট্রের ভিত্তি মজবুত থাকে। তিনি মনে করেন, রাষ্ট্রকে সঠিকভাবে পরিচালনা করতে হলে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের চর্চা অপরিহার্য।

অনুষ্ঠানে তিনি ২৪-এর গণ-অভ্যুত্থানে দলের নেতাকর্মীদের ভূমিকার কথাও স্মরণ করেন এবং দেশের ভবিষ্যৎ রাজনীতিতে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।


যে আসন থেকে লড়বেন নুরুল হক নুর

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৯ ০৮:০৪:২৭
যে আসন থেকে লড়বেন নুরুল হক নুর
ছবি: সংগৃহীত

পটুয়াখালী–৩ (দশমিনা–গলাচিপা) আসন থেকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর। মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৪টায় দশমিনা উপজেলা গণঅধিকার পরিষদের আয়োজনে এক জনসভায় তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে এ ঘোষণা দেন। ট্রাক মার্কা নিয়েই তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামবেন বলে জানান এবং উপস্থিত জনতার সমর্থন কামনা করেন।

জনসভায় নুর বলেন, সাম্প্রতিক গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দেশের মানুষের মধ্যে নতুন প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে। এই স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য জাতীয় সরকার গঠনের কোনো বিকল্প নেই। তার মতে, জাতীয় সরকারই দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে পারে এবং একটি কার্যকর রাজনৈতিক সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম।

তিনি দাবি করেন, দেশ–বিদেশে তার যে পরিচিতি ও গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে, তা কাজে লাগিয়ে পটুয়াখালী–৩ আসনের উন্নয়নই হবে তার মূল লক্ষ্য। দীর্ঘ অবহেলা, যোগাযোগব্যবস্থার দুরবস্থা এবং পিছিয়ে পড়া জনজীবনের উন্নয়নে তিনি একটি সমন্বিত পরিকল্পনা হাতে নিতে চান।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায় ঘোষণার পরদিন নিজের নির্বাচনী এলাকায় এসে নুর বলেন, এ রায় রাজনৈতিক দলগুলোকে গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা দিয়েছে। অতীতের নির্যাতন, গুম, খুন, দখলবাজি ও একনায়কতান্ত্রিক আচরণ আর কোনো দলের মুখোশ হয়ে উঠলে জনগণকে ঐক্যবদ্ধভাবে দাঁড়াতে হবে বলেও তিনি সতর্ক করেন।

তিনি আরও বলেন, দেশে আবারও ফ্যাসিবাদের আলামত দেখা যাচ্ছে। কোনো রাজনৈতিক নেতা বা দল যদি ক্ষমতার দাপটে দখলদারিত্ব বা জুলুম চালায়, তাহলে জনগণের আদালতে তাদের কোনো গ্রহণযোগ্যতা থাকবে না। এ ধরনের পরিস্থিতি রোধ করতে জনগণকে সজাগ ও ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান তিনি।

অঞ্চলভিত্তিক কিছু নেতার অতিউৎসাহী অবস্থান জাতীয় ঐক্যকে বিঘ্নিত করছে উল্লেখ করে নুর বলেন, দেশকে আর নতুন সংকটের মুখোমুখি করা যাবে না। সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে ঐকমত্যের নির্বাচনই দেশের জন্য কল্যাণকর। দলগুলোর পারস্পরিক আলোচনার মাধ্যমে আসন ভাগাভাগি করলে স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নের পথ সুগম হবে বলেও তিনি মত দেন।

নুর ঘোষণা দেন, নির্বাচিত হতে পারলে জামায়াত, বিএনপি, ইসলামী আন্দোলনসহ সব রাজনৈতিক দলের নেতাদের নিয়ে বসে চর এলাকার উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হবে। তিনি বলেন, বছরের পর বছর অবহেলার ফলে এলাকার সড়ক–যোগাযোগ, বাজারব্যবস্থা, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা পিছিয়ে পড়েছে। এসব খাতে নবজাগরণ ঘটানোই হবে তার অঙ্গীকার।

জনসভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক লিয়ার হোসেন এবং সঞ্চালনা করেন সদস্য সচিব মিলন মিয়া। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ঢাকা মহানগর উত্তর গণঅধিকার পরিষদের সহসভাপতি মিজান হাওলাদার, জেলা কমিটির আহ্বায়ক সৈয়দ নজরুল ইসলাম লিটু, যুগ্ম আহ্বায়ক আবু কালামসহ অন্যান্য নেতারা।

-রাফসান

পাঠকের মতামত:

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

রাষ্ট্রের ধারণাটি একসময় কেবল প্রশাসনিক ক্ষমতা, আইনের শাসন এবং নিরাপত্তা প্রদানের সঙ্গে সম্পর্কিত ছিল। কিন্তু আধুনিক বিশ্বে রাষ্ট্রের ভূমিকা এখন... বিস্তারিত