তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরল, তবে আগামী নির্বাচন কার অধীনে?

দেশের সর্বোচ্চ আদালত আপিল বিভাগ এক ঐতিহাসিক রায়ে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনীকে বৈধ ঘোষণা করে নির্বাচনকালীন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহাল করেছেন। বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করেন। বেঞ্চের অন্য বিচারপতিরা হলেন—বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম, বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী, বিচারপতি মো. রেজাউল হক, বিচারপতি এস এম ইমদাদুল হক, বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি ফারাহ মাহবুব।
রায়ে আপিল বিভাগ স্পষ্ট করেছেন যে, নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরলেও আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনেই অনুষ্ঠিত হবে। আদালতের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, পুনর্বহালকৃত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা কার্যকর হবে মূলত চতুর্দশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে। আদালত সর্বসম্মতভাবে জানিয়েছেন, ২০১১ সালে দেওয়া আগের রায়টিতে বেশ কিছু ভুল ছিল, যার কারণে সেই রায়টি সম্পূর্ণভাবে বাতিল করা হয়েছে। এর ফলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল সংক্রান্ত আগের সিদ্ধান্তটি আর টিকল না এবং এ সম্পর্কিত সব আপিল ও পুনর্বিবেচনার আবেদন নিষ্পত্তি করা হলো।
আদালতের এই সিদ্ধান্তের ফলে সংবিধানের চতুর্দশ খণ্ডের ‘২এ’ অধ্যায়, যা নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার সঙ্গে সম্পর্কিত, তা পুনরায় সচল ও প্রাণ ফিরে পেল। ১৯৯৬ সালে ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে এই ব্যবস্থা সংবিধানে যুক্ত করা হয়েছিল। তবে এই ব্যবস্থা স্বয়ংক্রিয়ভাবে ফিরে এলেও এর কার্যকারিতা কিছু শর্তের ওপর নির্ভর করবে। ত্রয়োদশ সংশোধনীর ৫৮খ(১) এবং ৫৮গ(২) অনুচ্ছেদগুলোর বিধান কার্যকর হওয়ার মাধ্যমেই কেবল এটি বাস্তবে রূপ পাবে। এছাড়া আদালত জানিয়েছেন, এই রায়ের প্রভাব অতীতের কোনো ঘটনার ওপর পড়বে না, এটি কেবল ভবিষ্যতের নির্বাচনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। অর্থাৎ, রায়টি ‘প্রস্পেক্টিভ’ বা ভবিষ্যৎমুখী হিসেবে কার্যকর হবে।
এই আইনি লড়াইয়ের প্রেক্ষাপট বেশ দীর্ঘ। ২০১১ সালের ১০ মে তৎকালীন প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল করে রায় দিয়েছিলেন। তখন বলা হয়েছিল, অনির্বাচিত ব্যক্তির অধীনে নির্বাচন অগণতান্ত্রিক। তবে গত ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য নতুন করে আইনি লড়াই শুরু হয়। চলতি বছরের ২৭ আগস্ট সুপ্রিম কোর্ট তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা বাতিলের রায়টি পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন মঞ্জুর করেন। এরপর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার এবং সুশীল সমাজের পাঁচজন বিশিষ্ট নাগরিক আপিল দায়ের করেন। দীর্ঘ শুনানির পর আজ এই চূড়ান্ত রায় এল।
আপিল শুনানিতে বিএনপি মহাসচিবের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন ও ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, জামায়াতের পক্ষে আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির এবং বিশিষ্ট নাগরিকদের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শরীফ ভূঁইয়া যুক্তি উপস্থাপন করেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। আইনজীবী শিশির মনির আগেই সাংবাদিকদের ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন যে, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হওয়া সম্ভব নয়। কারণ সংবিধান অনুযায়ী সংসদ ভেঙে দেওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের নিয়ম রয়েছে, অথচ বর্তমান সংসদ ভেঙে গেছে এক বছরেরও বেশি সময় আগে। তাই আবেদনকারীরা চতুর্দশ নির্বাচন থেকেই এই ব্যবস্থা চেয়েছেন।
উল্লেখ্য, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগসহ বিরোধী দলগুলোর তীব্র আন্দোলনের মুখে তৎকালীন বিএনপি সরকার সংবিধানে ত্রয়োদশ সংশোধনী এনে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা চালু করেছিল। এই পদ্ধতির অধীনে ১৯৯৬, ২০০১ ও ২০০৮ সালে তিনটি জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। তবে ২০০৪ সালে এই ব্যবস্থাকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করা হলে আদালত তখন একে বৈধ বলে রায় দিয়েছিলেন। পরে সেটি আপিল বিভাগে গেলে ২০১১ সালে বাতিল হয়ে যায়। অভিযোগ রয়েছে, তৎকালীন প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক অবসরে যাওয়ার অনেক পরে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেন এবং সংক্ষিপ্ত আদেশে পরবর্তী দুই নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে করার যে পর্যবেক্ষণ ছিল, তা পূর্ণাঙ্গ রায়ে বাদ দেন। এই রায়ের সুযোগ নিয়েই শেখ হাসিনার সরকার দলীয় অধীনে পরপর তিনটি বিতর্কিত নির্বাচন করে ক্ষমতায় টিকে ছিল, যার অবসান ঘটে চব্বিশের জুলাই অভ্যুত্থানে।
মুখ বদলালেও থামেনি জুলুম, রাজনৈতিক পরিচয়েই চলছে চাঁদাবাজির মহোৎসব
গত ৫ আগস্টের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা ছিল, নতুন বাংলাদেশে চাঁদাবাজির দৌরাত্ম্য কমবে এবং জনজীবনে স্বস্তি ফিরে আসবে। কিন্তু বাস্তবিক চিত্র বলছে ভিন্ন কথা। চাঁদাবাজি তো কমেইনি, বরং কোনো কোনো ক্ষেত্রে এর মাত্রা আরও বেড়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ এ বিষয়ে মন্তব্য করেছেন যে, রাজনৈতিক সমঝোতা করা কঠিন হলেও চাঁদাবাজির সমঝোতা করা অনেক সহজ। তিনি আরও উল্লেখ করেন, যখন চাঁদাবাজদের একটি দল সরে যায়, তখন অনিবার্যভাবে অন্য একটি দল সেই শূন্যস্থান দখল করে নেয়। এই পর্যবেক্ষণ এমন এক গভীর সংকটের ইঙ্গিত দেয় যেখানে চাঁদাবাজি কেবল একটি সাধারণ অপরাধ নয়, বরং এটি রাজনৈতিক ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার একটি কৌশলগত হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে। সাধারণ মানুষের আশা ছিল নতুন সরকার কঠোর পদক্ষেপ নেবে এবং একটি স্বচ্ছ বাংলাদেশ গড়বে, কিন্তু বাস্তবতা হলো চাঁদাবাজির চক্রগুলো এখনো পুরোদমে সক্রিয়, কেবল তাদের নিয়ন্ত্রণকারীদের হাতবদল হয়েছে।
একটি চক্রের পতনের পর নতুন চক্রের এই উত্থান প্রমাণ করে যে, চাঁদাবাজি কোনো নির্দিষ্ট দলের সমস্যা নয়, বরং এটি বাংলাদেশের রাজনৈতিক অর্থনীতির গভীরে প্রোথিত একটি কাঠামোগত সমস্যা। গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, শুধুমাত্র ঢাকা শহরের ৫৩টি পরিবহন টার্মিনাল ও স্ট্যান্ড থেকে প্রতিদিন আনুমানিক ২ কোটি ২১ লাখ টাকা চাঁদাবাজি হয়, যা মাস শেষে ৬০ থেকে ৮০ কোটি টাকায় পৌঁছায়। সারা দেশে বাস ও মিনিবাস খাত থেকে বছরে প্রায় ১ হাজার ৫৯ কোটি টাকা অবৈধভাবে আদায় করা হয়। এছাড়া হাট-বাজারের পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা স্থানীয় রাজনীতি এবং তথাকথিত সংগঠনের ছত্রছায়ায় থাকা ব্যক্তিদের দ্বারা নিয়মিত চাঁদাবাজির শিকার হচ্ছেন। চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে পণ্য সরবরাহ বন্ধ, ব্যবসা গুটিয়ে ফেলার হুমকি কিংবা সরাসরি হামলার শিকার হতে হয়। সরকারি-বেসরকারি উন্নয়ন প্রকল্প, টেন্ডার, নির্মাণকাজ থেকে শুরু করে জলমহাল ও বালুমহালের ইজারা—সবর্ত্রই দলীয় ও প্রশাসনিক মদদপুষ্ট চাঁদাবাজ চক্র সক্রিয় রয়েছে। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) তথ্যমতে, ২০০৯ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে বার্ষিক উন্নয়ন পরিকল্পনায় (এডিপি) দুর্নীতি ও চাঁদাবাজির কারণে প্রায় ১ লাখ ৬১ হাজার থেকে ২ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা (১৩-২৪ বিলিয়ন ডলার) নষ্ট হয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ের ঘটনাগুলো বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, মূলত পাঁচটি গোষ্ঠী সরাসরি চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত। এগুলো হলো—রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত কিছু ব্যক্তি, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ, প্রশাসনের কিছু অসাধু কর্মকর্তা, বিভিন্ন সন্ত্রাসী গোষ্ঠী এবং বিচ্ছিন্নভাবে চাঁদাবাজির সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা। তবে বর্তমানে বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি চাঁদাবাজি হচ্ছে রাজনৈতিক পরিচয়ে বা রাজনৈতিক ছত্রছায়ায়। গত ১৫ মাসে গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, ২ হাজার ৩২৫টি চাঁদাবাজির ঘটনার সঙ্গে কোনো না কোনো রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। বিএনপি, জামায়াত এবং এনসিপির মতো বড় দলগুলোর পাশাপাশি ছোট দলগুলোর নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধেও অভিযোগ উঠছে।
কিছু ঘটনা ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। যেমন, ঢাকার যাত্রাবাড়ী থেকে শরীয়তপুর রুটে চলাচলকারী ‘শরীয়তপুর সুপার সার্ভিস’ নামের একটি পরিবহন কোম্পানির কাছে ৫ কোটি টাকা অথবা মাসে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ ওঠে চলতি মাসে। টাকা না দেওয়ায় বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয় এবং ৮ জুলাই থেকে তিন-চার দিন বাস চলাচল বন্ধ রাখা হয়। এমনকি বাসের কর্মচারীদের মারধর করার অভিযোগও পাওয়া যায়, যার প্রতিবাদে পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্তে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ হয়। এই ঘটনার সঙ্গে যাত্রাবাড়ী থানা যুবদলের এক নেতার নাম উঠে আসে, যাকে পরে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়। বিএনপি গত ১১ মাসে চাঁদাবাজি ও দখলদারিত্বের অভিযোগে ৪ হাজারের বেশি নেতা-কর্মীকে বহিষ্কার করলেও চাঁদাবাজি পুরোপুরি বন্ধ হয়নি।
অন্যদিকে, জামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধেও দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে চাঁদাবাজির অভিযোগ আসছে। রংপুরের পীরগাছায় এক অফিস সহায়কের ঘুষ গ্রহণের ভিডিও ধারণ করে তাকে জিম্মি করে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। নাটোরে জামায়াতের নেতা-কর্মীদের চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে স্থানীয় জনগণ কর্মসূচি পালন করেছে। সিরাজগঞ্জের কাজীপুরে এক ব্যবসায়ীর কাছে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগে থানায় মামলা হয়েছে। কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে চাঁদা না পেয়ে বাস টার্মিনালের ইজারাদারের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে জামায়াতের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে। এছাড়া জামালপুরের মেলান্দহে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের কর্মকর্তা পরিচয়ে চাঁদা দাবির অভিযোগে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যাকে স্থানীয় জামায়াত নেতার ভাতিজা বলে দাবি করা হয়েছে। লক্ষ্মীপুরেও মামলার ভয় দেখিয়ে চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে এক যুবকের বিরুদ্ধে, যদিও জামায়াত তাকে নিজেদের কর্মী বলে অস্বীকার করেছে।
জুলাই বিপ্লবের নেতৃত্বে থাকা তরুণদের সংগঠন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) বিরুদ্ধেও চাঁদাবাজির বিস্তর অভিযোগ উঠছে। এসব অভিযোগে তাদের কিছু নেতা আটক ও সমালোচিত হয়েছেন এবং অনেকের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। গত এপ্রিলে দলটির যুগ্ম সদস্য সচিব গাজী সালাউদ্দিন তানভীরকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয়। এছাড়া ধানমন্ডিতে সমন্বয়ক পরিচয়ে মব হামলার ঘটনায় এনসিপির নেতা আবদুল হান্নান মাসুদের নাম আলোচনায় আসে। গত বছরের আগস্টের পর থেকে সারা দেশেই সমন্বয়ক পরিচয়ে ক্ষমতা প্রদর্শন ও চাঁদাবাজির অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। সম্প্রতি চাঁদাবাজির অভিযোগে এনসিপির চট্টগ্রাম মহানগর শাখার এক যুগ্ম সমন্বয়ককে শোকজ নোটিশ দেওয়া হয়েছে। শুধু বড় দল নয়, অনেক ছোট দলের নেতাদের বিরুদ্ধেও চাঁদাবাজির অভিযোগ এখন নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে।
সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন।
বিদেশযাত্রায় দালালের দৌরাত্ম্য কমবে? চালু হলো নতুন ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ‘ওইপি’
বিদেশে কর্মী পাঠানোর পুরো প্রক্রিয়াটিতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে এবং সেবার মান বাড়াতে যাত্রা শুরু করেছে ‘ওভারসিজ এমপ্লয়মেন্ট প্ল্যাটফর্ম’ (ওইপি)। বুধবার (১৯ নভেম্বর) ঢাকার একটি হোটেলে আনুষ্ঠানিকভাবে এই ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের উদ্বোধন করেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। এই উদ্যোগকে নিরাপদ ও কার্যকর শ্রম অভিবাসনের পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে অভিহিত করেছেন তিনি।
অনুষ্ঠানে ড. আসিফ নজরুল বলেন, প্রবাসী কর্মীরাই বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম প্রধান চালিকাশক্তি। তাই তাদের বিদেশ যাওয়ার পথটি নিরাপদ, সুরক্ষিত এবং মর্যাদাপূর্ণ করা সরকারের দায়িত্ব। তিনি জানান, সময়ের সাথে সাথে এই প্ল্যাটফর্মে আরও নতুন নতুন সুবিধা যুক্ত করা হবে, যা কর্মী, নিয়োগকর্তা এবং সরকার—সবার জন্যই উপকারী হবে। মূলত প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে এই উন্নত প্ল্যাটফর্মটি বাংলাদেশ সরকার, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) এবং সুইজারল্যান্ড সরকারের যৌথ উদ্যোগের ফসল।
এই জাতীয় ডিজিটাল গেটওয়েটি এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যেন শ্রম অভিবাসনের সঙ্গে যুক্ত সব পক্ষকে এক জায়গায় নিয়ে আসা যায়। বিদেশ যেতে আগ্রহী কর্মী, রিক্রুটিং এজেন্সি, বিএমইটি, টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার (টিটিসি), নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান, ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ এবং পুনর্বাসন সেবা প্রদানকারীরা সবাই এই এক প্ল্যাটফর্মে সংযুক্ত থাকবেন। এর ফলে অভিবাসন প্রক্রিয়ার প্রতিটি ধাপে স্বচ্ছতা আসবে, জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে এবং সেবার মান বাড়বে। সবচেয়ে বড় কথা, এই প্রযুক্তির ফলে মধ্যস্বত্বভোগী বা দালালদের দৌরাত্ম্য কমবে এবং কর্মীদের অভিবাসন খরচ উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র সচিব আসাদ আলম সিয়াম, বাংলাদেশে সুইজারল্যান্ড দূতাবাসের ডেপুটি হেড অব মিশন দীপাক এলমার এবং আইএলও বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ম্যাক্স টুনন। পররাষ্ট্র সচিব আসাদ আলম সিয়াম বলেন, একটি স্বচ্ছ ও ন্যায়সংগত নিয়োগ ব্যবস্থা দ্বিপাক্ষিক শ্রম চুক্তিগুলোকে আরও শক্তিশালী করে এবং গন্তব্য দেশগুলোর কাছে বাংলাদেশের আস্থাও বাড়িয়ে তোলে। অন্যদিকে আইএলও-এর কান্ট্রি ডিরেক্টর ম্যাক্স টুনন বলেন, তথ্য ও প্রক্রিয়াকে এক জায়গায় আনার মাধ্যমে এই প্ল্যাটফর্ম রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর ওপর নিয়ন্ত্রণ বাড়াবে এবং কর্মীরা যাচাইকৃত সঠিক তথ্য পাবেন, যা নিরাপদ অভিবাসনে সহায়তা করবে।
উন্নয়ন সহযোগীদের পক্ষ থেকে সুইজারল্যান্ড দূতাবাসের দীপাক এলমার বলেন, শুধু প্রযুক্তি দিয়েই পুরো অভিবাসন ব্যবস্থা ঠিক করা সম্ভব নয়। এই প্ল্যাটফর্মের প্রকৃত সাফল্য নির্ভর করবে রিক্রুটিং এজেন্সি, নিয়োগকর্তা এবং অভিবাসীদের সক্রিয় অংশগ্রহণের ওপর। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. নেয়ামত উল্যা ভূঁইয়া। সমাপনী বক্তব্যে তিনি বলেন, ওইপির উদ্বোধন কোনো প্রকল্পের শেষ নয়, বরং এটি শ্রম অভিবাসন ব্যবস্থাপনার এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা। তিনি জানান, তারা এর বৈশিষ্ট্য আরও উন্নত করবেন এবং অংশীদারদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবেন, যাতে প্রবাসী কর্মীরা আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে তাদের বিদেশযাত্রার পরিকল্পনা করতে পারেন। এছাড়া অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দূতাবাস, জাতিসংঘ সংস্থা, শ্রমিক সংগঠন এবং সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
আ.লীগের জন্মস্থান কেনায় বড় অনিয়ম, রাষ্ট্রের শত কোটি টাকা গচ্চা যাওয়ার অভিযোগ
পুরান ঢাকার ঐতিহাসিক রোজ গার্ডেন ভবনটি কেনা নিয়ে বড় ধরনের আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ রয়েছে, আওয়ামী লীগের জন্মস্থান হিসেবে পরিচিত এই ভবনটি কিনতে গিয়ে রাষ্ট্রের প্রায় ৩৩২ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বুধবার (১৯ নভেম্বর) দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, অনুসন্ধানে যাদেরই সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যাবে, কমিশন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের কিছু অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজশে এই বিশাল অঙ্কের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি নজরে আসার পর দুদক তাৎক্ষণিকভাবে অভিযান চালায় এবং সংশ্লিষ্ট নথিপত্র ও তথ্য সংগ্রহ করে। প্রাথমিক তথ্যের ভিত্তিতে কমিশন এখন বিস্তারিত অনুসন্ধান শুরু করেছে। উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার ব্যক্তিমালিকানাধীন এই ঐতিহাসিক ভবনটি পুরাকীর্তি হিসেবে সংরক্ষণের জন্য কিনে নেয়। সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদনের পর ভবনটি কিনতে সরকারের ব্যয় হয়েছিল ৩৩১ কোটি ৭০ লাখ ২ হাজার ৯০০ টাকা।
রোজ গার্ডেনের সঙ্গে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের এক গভীর সম্পর্ক রয়েছে। ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন এই বাড়িতেই দুদিনব্যাপী সম্মেলনের মাধ্যমে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠিত হয়, যা পরে আওয়ামী লীগ নাম ধারণ করে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে এই দলটিই পরবর্তীতে বাংলাদেশের স্বাধিকার আন্দোলন ও ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দেয়। ঐতিহাসিক গুরুত্ব বিবেচনা করেই ভবনটি অধিগ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।
ভবনটির ইতিহাস বেশ পুরোনো ও বৈচিত্র্যময়। ১৯৩১ সালে পুরান ঢাকার হৃষিকেশ দাস রোডে ২২ বিঘা জমির ওপর এই বাগানবাড়িটি নির্মাণ করেছিলেন ধনাঢ্য ব্যবসায়ী হৃষিকেশ দাস। তিনি শৌখিন মানুষ ছিলেন এবং পশ্চিমমুখী এই দোতলা ভবনের চারপাশে দেশ-বিদেশ থেকে আনা বিরল প্রজাতির গোলাপের বাগান তৈরি করেছিলেন। সেই গোলাপ বাগান থেকেই বাড়িটির নাম হয়ে যায় ‘রোজ গার্ডেন’। করিন্থিয়ান-গ্রীক স্থাপত্যশৈলী মেনে তৈরি প্রায় সাত হাজার বর্গফুট আয়তনের এই ভবনের দ্বিতীয় তলায় একটি বিশাল জলসা ঘর রয়েছে। ঘরটির মেঝে সাদা পাথরের এবং ছাদ বা সিলিংয়ে সবুজ কাঁচ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে দৃষ্টিনন্দন ফুলের নকশা। এছাড়া ভবন চত্বরে ছিল পাথরের মূর্তি, ফোয়ারা এবং শানবাঁধানো পুকুর।
তবে এই জাঁকজমক বেশিদিন টেকেনি। বাড়িটি নির্মাণের কয়েক বছরের মধ্যেই হৃষিকেশ দাস দেউলিয়া হয়ে পড়েন এবং ১৯৩৬ সালে তিনি বাড়িটি ঢাকার বই ব্যবসায়ী খান বাহাদুর মৌলভী কাজী আবদুর রশীদের কাছে বিক্রি করে দেন। এরপর এখানে বিখ্যাত প্রভিন্সিয়াল লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৬৬ সালে আবদুর রশীদের ভাই কাজী হুমায়ূন বাড়িটির মালিকানা পান এবং তখন এটি ‘হুমায়ূন সাহেবের বাড়ি’ নামে পরিচিতি পায়। ১৯৭০ সালে এটি তৎকালীন চলচ্চিত্র উন্নয়ন সংস্থার কাছে ভাড়া দেওয়া হয় এবং ‘বেঙ্গল স্টুডিও’ হিসেবে ব্যবহৃত হতে থাকে। ১৯৯৩ সালে স্টুডিওটি এখান থেকে সরে গেলে বাড়িটি আবারও কাজী হুমায়ূন পরিবারের দখলে আসে।
ততদিনে কাজী হুমায়ূন মারা গেছেন এবং মালিকানা পান তার বংশধর কাজী রকিব। ১৯৮৯ সালে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর রোজ গার্ডেনকে সংরক্ষিত ভবন ঘোষণা করলেও আইনি প্রক্রিয়ায় মালিকরা এর স্বত্ব ফিরে পান। সর্বশেষ মালিক লায়লা রকীব ও তার সন্তানদের কাছ থেকেই সরকার দলিল মূলে বাড়িটি কিনে নিয়েছিল। এখন সেই কেনাকাটার প্রক্রিয়াতেই বড় ধরনের দুর্নীতির ছায়া দেখছে দুদক।
৫ আগস্টের পর দ্বিতীয় উপদেষ্টা হিসেবে ভারতে খলিলুর, বৈঠকে গুরুত্ব পেল যেসব বিষয়
ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান এবং ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (১৯ নভেম্বর) দিল্লিতে অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশন এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। বৈঠকে দুই দেশের নিরাপত্তা উপদেষ্টা কলম্বো সিকিউরিটি কনক্লেভ (সিএসসি) এবং দ্বিপক্ষীয় স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। এই বৈঠকের সময়ই অজিত দোভালকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান ড. খলিলুর রহমান।
সপ্তম কলম্বো সিকিউরিটি কনক্লেভের এনএসএ বা জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা পর্যায়ের বৈঠকে যোগ দিতে ড. খলিলুর রহমানের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছে। এই সফরের অংশ হিসেবেই ভারতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের সঙ্গে তাদের সৌজন্য সাক্ষাৎ ও বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) এই সম্মেলনে যোগ দিতে ভারতের রাজধানীতে পৌঁছান খলিলুর রহমান। ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ সচিবালয়ের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা।
ঢাকা ও দিল্লির কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে, সিএসসির জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের সপ্তম সম্মেলনটি বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) দিল্লির হায়দ্রাবাদ হাউসে অনুষ্ঠিত হবে। সকালে জোটভুক্ত দেশগুলোর নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের নিয়ে এই সম্মেলন শুরু হবে এবং মধ্যাহ্নভোজের পর তা শেষ হবে। নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী, ওই দিন বিকেলেই ড. খলিলুর রহমানের ঢাকার উদ্দেশে দিল্লি ত্যাগ করার কথা রয়েছে।
কলম্বো সিকিউরিটি কনক্লেভ মূলত ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের একটি নিরাপত্তা জোট। ২০২০ সালে ভারত, শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপের মধ্যে সামুদ্রিক সহযোগিতার পরিধি বাড়ানোর লক্ষ্য নিয়ে এটি গঠিত হয়েছিল। পরে ২০২২ সালে মরিশাস এতে যুক্ত হয়। গত বছর মরিশাসে অনুষ্ঠিত অষ্টম বৈঠকে বাংলাদেশকেও এই জোটের পঞ্চম সদস্য হিসেবে স্বাগত জানানো হয়। এছাড়া সেশেলস এই জোটে পর্যবেক্ষক রাষ্ট্র হিসেবে অংশ নিয়ে থাকে।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৫ আগস্ট বাংলাদেশে রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো উপদেষ্টার এটি দ্বিতীয় ভারত সফর। এর আগে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ইন্ডিয়া এনার্জি উইকে অংশ নিতে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান ভারত সফর করেছিলেন।
সারা দেশে মোবাইল ফোনের দোকান বন্ধের ঘোষণা
স্মার্টফোন ও গ্যাজেট ব্যবসায়ীদের সংগঠন বিজনেস কমিউনিটি বাংলাদেশ (এমবিসিবি) সারা দেশে মোবাইল ফোনের দোকান বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে। বুধবার (১৯ নভেম্বর) রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের নেতারা এই সিদ্ধান্তের কথা জানান।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত বক্তারা জানান, সুমাশ টেকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) এবং সংগঠনের সেক্রেটারি আবু সাঈদ পিয়াসকে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) তুলে নিয়ে গেছে। মূলত এই ঘটনার প্রতিবাদ জানাতেই তারা দোকান বন্ধ রাখার মতো কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন।
ব্যবসায়ীরা কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, যদি আজকের মধ্যে অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি পিয়াসকে মুক্তি না দেওয়া হয়, তবে তারা সারা দেশে আরও কঠোর আন্দোলনে নামবেন। এমনকি তারা পরিস্থিতি সাপেক্ষে 'দেশ অচল' করে দেওয়ার হুমকিও দিয়েছেন সংবাদ সম্মেলন থেকে। নেতারা বলেন, সুমাশ টেকের প্রধান নির্বাহীকে আটকের প্রতিবাদে দেশজুড়ে সব মোবাইল ফোনের দোকান বন্ধ রাখা হবে।
অভিযোগ উঠেছে, মঙ্গলবার গভীর রাতে আবু সাঈদ পিয়াসকে ডিবি পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। পিয়াসের পরিবারের একজন সদস্য এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তার স্ত্রী সুমাইয়া চৌধুরী জানান, গতরাত আনুমানিক ৩টার দিকে মিরপুর-১ নম্বরের বাসা থেকে গোয়েন্দা পুলিশ তার স্বামীকে তুলে নিয়ে যায়। তিনি আরও জানান, এ সময় ডিবি সদস্যরা পিয়াসের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটিও জব্দ করে নিয়ে গেছে।
এমবিসিবির নেতারা দাবি করেছেন, তাদের সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকা পিয়াসকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে। অন্যথায় তারা তাদের অবস্থান আরও কঠোর করবেন। ডিআরইউতে আয়োজিত ওই সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ব্যবসায়ীরা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, এই ঘটনায় পুরো ব্যবসায়ী মহলে এক ধরনের আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। তারা সরকারের কাছে এই আটকের বিষয়ে একটি স্পষ্ট ব্যাখ্যা দাবি করেছেন।
যারা দেয়াল রাঙিয়েছে, তারাই ভোট দেবে, নির্বাচনের আগে ইউনূসের বার্তা
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে তরুণ প্রজন্মের জন্য একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত হিসেবে বর্ণনা করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, বিগত স্বৈরাচারী শাসনামলে অনুষ্ঠিত তিনটি কারচুপির নির্বাচনে যারা ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছিল, সেই রেকর্ডসংখ্যক তরুণ এবার প্রথমবারের মতো তাদের ভোট দেওয়ার সুযোগ পাবে।
মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় নেদারল্যান্ডসের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বিষয়ক ভাইস মিনিস্টার প্যাস্কেল গ্রোটেনহুইস সৌজন্য সাক্ষাতে এলে ড. ইউনূস এসব কথা বলেন। প্রধান উপদেষ্টা উল্লেখ করেন, গণঅভ্যুত্থানের সময় ঢাকা এবং অন্যান্য শহরের দেয়াল যারা গ্রাফিতি ও চিত্রকর্মে রাঙিয়ে তুলেছিল, সেই তরুণরাই এবার ভোটকেন্দ্রে আসবে। তিনি ডাচ মন্ত্রীকে আশ্বস্ত করেন যে, তার সরকার ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথমার্ধেই একটি অবাধ, সুষ্ঠু, বিশ্বাসযোগ্য এবং উৎসবমুখর নির্বাচন আয়োজনে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
বৈঠকে আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশ নিতে না পারার প্রেক্ষাপটও ব্যাখ্যা করেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি জানান, দল হিসেবে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং নির্বাচন কমিশন তাদের নিবন্ধন স্থগিত করেছে। মূলত এই আইনি বাধার কারণেই আওয়ামী লীগ আসন্ন সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না।
আলোচনার সময় দুই নেতা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে গুরুত্ব দেন। কৃষি, বাণিজ্য, বিনিয়োগ, প্রযুক্তি এবং যুব উন্নয়নসহ বিভিন্ন খাতে সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়ে তারা একমত পোষণ করেন। বিশেষ করে, যুব ও নারী উদ্যোক্তাদের সহায়তা করার জন্য একটি 'সোশ্যাল বিজনেস ফান্ড' তৈরির সম্ভাবনা নিয়েও তাদের মধ্যে আলোচনা হয়।
ডাচ ভাইস মিনিস্টার প্যাস্কেল গ্রোটেনহুইস বাংলাদেশের নির্বাচনী প্রস্তুতির প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার এত অল্প সময়ের মধ্যে ভোটের জন্য যেভাবে প্রস্তুত হয়েছে, তা সত্যিই প্রশংসনীয়। এছাড়া তিনি বাংলাদেশের নতুন শ্রম আইনেরও ভূয়সী প্রশংসা করেন। তার মতে, এই আইন নেদারল্যান্ডস ও ইউরোপীয় বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে সহায়ক হবে। ডাচ মন্ত্রী জানান, নেদারল্যান্ডস শিগগিরই বাংলাদেশের বিনিয়োগ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক সই করার পরিকল্পনা করছে।
প্যাস্কেল গ্রোটেনহুইস মন্তব্য করেন, গত ৫০ বছর ধরে বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডস উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে কাজ করেছে। এখন তারা এই সম্পর্ককে রাজনীতি, বাণিজ্য এবং বিনিয়োগের ক্ষেত্রে একটি সম-অংশীদারিত্বে রূপান্তর করতে চান। তিনি আরও যোগ করেন, যেসব ডাচ কোম্পানি দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ থেকে পণ্য কিনছে, তারা এখন সরাসরি এ দেশে বিনিয়োগ ও কাজ করতে আগ্রহী।
কাল থেকে প্রবাসী ভোটার নিবন্ধন? জেনে নিন কোন দেশে কখন সুযোগ
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রবাসী বাংলাদেশিরা যাতে সহজেই তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন, সেই লক্ষ্যে চালু করা হয়েছে ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ নামের একটি বিশেষ অ্যাপ। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন আনুষ্ঠানিকভাবে এই অ্যাপটির উদ্বোধন করেন। বাংলাদেশে এবারই প্রথমবারের মতো পোস্টাল ভোটের বা ডাকযোগে ভোট দেওয়ার এমন সুযোগ তৈরি করা হয়েছে। এই ব্যবস্থার মাধ্যমে অ্যাপে নিবন্ধনের পর ভোটারদের কাছে শুধুমাত্র প্রতীক সম্বলিত ব্যালট পেপার পাঠানো হবে।
অ্যাপে নিবন্ধিত ভোটাররা তাদের পছন্দের প্রতীকের পাশে টিক বা ক্রস চিহ্ন দিয়ে ভোট দিতে পারবেন। বিশেষ উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, এই ব্যালটে ‘না’ ভোটের অপশনও যুক্ত থাকছে। তবে, যেসব আসনে মাত্র একজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন, শুধুমাত্র সেসব আসনের ভোটাররাই এই ‘না’ ভোট দেওয়ার সুযোগ পাবেন। নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, আগামী ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা বাংলাদেশি ভোটাররা পর্যায়ক্রমে নিবন্ধনের সুযোগ পাবেন।
কমিশন বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের জন্য পাঁচ দিন করে নিবন্ধনের সময়সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছে। সময়সূচি অনুযায়ী, পূর্ব এশিয়া, দক্ষিণ আমেরিকা ও আফ্রিকা অঞ্চলের ৫২টি দেশের প্রবাসীরা ২৩ নভেম্বর পর্যন্ত নিবন্ধন করতে পারবেন। উত্তর আমেরিকার ১৪টি দেশ এবং ওশানিয়া অঞ্চলের দুটি দেশে বসবাসরত বাংলাদেশিরা ২৪ থেকে ২৮ নভেম্বরের মধ্যে নিবন্ধনের সুযোগ পাবেন। অন্যদিকে, ইউরোপের ৪২টি দেশের প্রবাসীদের নিবন্ধন করতে হবে ২৯ নভেম্বর থেকে ৩ ডিসেম্বরের মধ্যে। মধ্যপ্রাচ্যের সৌদি আরবে নিবন্ধন প্রক্রিয়া শুরু হবে ৪ ডিসেম্বর এবং তা চলবে ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ব্যালট পেপার যে খামে করে পাঠানো হবে, তার সঙ্গে একটি ঘোষণাপত্রও থাকবে। ভোটারকে ব্যালটে ভোট দেওয়ার পাশাপাশি ওই ঘোষণাপত্রেও স্বাক্ষর করতে হবে। ভোটার যে নিজেই ভোটটি দিয়েছেন, তা নিশ্চিত করতেই এই স্বাক্ষর প্রয়োজন। যদি কোনো ভোটার ভোট দেওয়ার পর ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর না করেই ব্যালট পেপার ফেরত পাঠান, তবে রিটার্নিং কর্মকর্তা সেই ভোটটি বাতিল বলে গণ্য করবেন।
শুধু প্রবাসী ভোটাররাই নন, এবার পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোট দিতে পারবেন নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা সরকারি চাকরিজীবীরা এবং দেশের ৭১টি কারাগারে থাকা বন্দি ও কয়েদিরাও। তাদের জন্যও নির্বাচন কমিশন আলাদা নিবন্ধন ব্যবস্থা চালু করবে।
নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব ও প্রবাসী ভোটার প্রকল্পের পরিচালক কে এম আলী নেওয়াজ বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন, মনোনয়নপত্র জমা, যাচাই-বাছাই ও প্রত্যাহারের পর যখন চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হবে, ঠিক তখনই প্রবাসী ভোটাররা অ্যাপের মাধ্যমে নিজ নিজ আসনের প্রার্থীদের তালিকা দেখতে পারবেন। ভোটাররা অ্যাপে তাদের নির্বাচনী এলাকার রাজনৈতিক দল বা পছন্দের প্রার্থীর প্রতীক দেখতে পাবেন। সেখানে থাকা ১১৯টি প্রতীকের মধ্যে তারা তাদের পছন্দের প্রতীকের পাশে টিক বা ক্রস চিহ্ন দেবেন।
প্রবাসী ভোটার প্রকল্পের টিম লিডার সালীম আহমাদ খান ভোটের প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানান, পছন্দের প্রতীকে ভোট দেওয়ার পর ভোটাররা সেই ব্যালটটি একটি ফিরতি খামে (রিটার্ন এনভেলপ) ভরে কাছাকাছি কোনো পোস্ট অফিসে জমা দেবেন। খামের ওপর আগে থেকেই ডাক মাসুল বা খরচ পরিশোধ করা থাকবে, ফলে এটি কোনো খরচ ছাড়াই সরাসরি বাংলাদেশে নির্দিষ্ট ঠিকানায় পৌঁছে যাবে।
আগের চিঠির জবাব আসেনি, দণ্ডিত হাসিনাকে ফেরাতে এবার কী করছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়?
২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে ভারত থেকে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন জানিয়েছেন, পলাতক এই দুই আসামিকে ফেরাতে ভারতের কাছে পাঠানোর জন্য আনুষ্ঠানিক চিঠি প্রস্তুত করা হচ্ছে। একটি কূটনৈতিক পত্র বা 'নোট ভার্বাল'-এর মাধ্যমে এই অনুরোধ জানানো হবে।
মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে কয়েকজন সাংবাদিকের সঙ্গে আলাপকালে উপদেষ্টা এই তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালকে ফেরত চেয়ে ভারতকে এখনো চিঠি পাঠানো হয়নি, তবে চিঠি তৈরির কাজ চলছে। আজকেই হয়তো এই চিঠি পাঠানো হতে পারে বলে তিনি ইঙ্গিত দেন।
চিঠি পাঠানোর প্রক্রিয়া সম্পর্কে উপদেষ্টা স্পষ্ট করেন যে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ট্রাইব্যুনালের দেওয়া রায়ের পুরো কপি পাঠাবে না। শুধুমাত্র নোট ভার্বালের মাধ্যমে রায়ের বিষয়টি ভারতকে অবগত করা হবে এবং সেই সূত্র ধরে শেখ হাসিনাকে হস্তান্তরের জন্য অনুরোধ জানানো হবে।
এর আগে গতকাল সোমবারও পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছিলেন। তখন তিনি জানিয়েছিলেন, দুই আসামিকে ফেরাতে সোমবার রাতে অথবা মঙ্গলবার সকালেই চিঠি পাঠানো হবে। তিনি উল্লেখ করেন, এর আগেও শেখ হাসিনাকে ফেরানোর জন্য ভারতকে চিঠি দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু তার কোনো জবাব পাওয়া যায়নি।
তবে উপদেষ্টার মতে, এখনকার পরিস্থিতি আগের চেয়ে ভিন্ন। কারণ, এখন আদালতের মাধ্যমে তাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট শাস্তি ঘোষণা করা হয়েছে। ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের অপরাধী প্রত্যর্পণ চুক্তি থাকার বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, সেই চুক্তির আওতাতেই তাকে ফেরত আনতে আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি দেওয়া হচ্ছে।
যাচাই-বাছাইয়ে অসংগতি, প্রথমবারের মতো বাতিল হলো জুলাই যোদ্ধাদের গেজেট
রংপুর বিভাগের ৫৩ জন ব্যক্তিকে ‘জুলাই যোদ্ধা’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হলেও নানা অভিযোগ ও অসংগতির কারণে তাদের সেই গেজেট বাতিল করেছে সরকার। সোমবার (১৭ নভেম্বর) মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের উপসচিব (গেজেট) হরিদাস ঠাকুরের স্বাক্ষরিত ওই আদেশে অবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করার কথা বলা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে, সরকার তার ক্ষমতাবলে এই ৫৩ জনের নাম বাতিল করেছে। এই সিদ্ধান্তের আইনি ভিত্তি হিসেবে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার ও জুলাই যোদ্ধাদের কল্যাণ ও পুনর্বাসন অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর ১১(৪) ধারা এবং ‘রুলস অব বিজনেস ১৯৯৬’-এর সংশ্লিষ্ট বিধিমালা উল্লেখ করা হয়েছে। মূলত তালিকা নিয়ে বিভিন্ন মহল থেকে অভিযোগ ওঠার পরই সরকার এই কঠোর পদক্ষেপ নিল।
কিছুদিন আগেই মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক ই আজম জানিয়েছিলেন যে, আগের গেজেটভুক্ত তালিকাগুলো পুনরায় যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। তিনি উল্লেখ করেছিলেন, বিভিন্ন স্থান থেকে এবং সংবাদমাধ্যমের খবরে জানা গেছে, তালিকায় এমন অনেকের নাম ঢুকেছে যারা জুলাই আন্দোলনে আহত হননি বা সশরীরে আন্দোলনে উপস্থিতই ছিলেন না। বিষয়টি নিয়ে সরকার যে চিন্তিত ছিল, এই বাতিলের সিদ্ধান্ত তারই প্রতিফলন।
এর আগেও গত ৩ আগস্ট শহীদদের তালিকা থেকে আটজনের নাম বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল মন্ত্রণালয়। তবে আহত বা ‘জুলাই যোদ্ধা’ ক্যাটাগরিতে গেজেট বাতিল করার ঘটনা এটিই প্রথম।
বর্তমানে সরকারি হিসাবে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদের সংখ্যা ৮৩৬ জন। অন্যদিকে আহতদের তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করা হয়েছে— ‘অতি গুরুতর আহত’, ‘গুরুতর আহত’ এবং ‘আহত’। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত তালিকায় থাকা আহত বা জুলাই যোদ্ধার সংখ্যা প্রায় ১৩ হাজার ৮০০ জন। সরকার জানিয়েছে, প্রকৃত আন্দোলনকারীদের স্বীকৃতি নিশ্চিত করতেই এই শুদ্ধি অভিযান বা যাচাই প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে।
পাঠকের মতামত:
- তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরল, তবে আগামী নির্বাচন কার অধীনে?
- বিড়াল পালনের সঙ্গে মানসিক রোগের ঝুঁকি, আন্তর্জাতিক গবেষণায় নতুন ইঙ্গিত
- হিমালয়লঘেঁষা জনপদে জেঁকে বসেছে শীত, দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রার দিকে তেঁতুলিয়া
- বৃহস্পতিবারের রাশিফল: জেনে নিন আপনার দিনটি কেমন যাবে
- সকালে নেমেই অপেক্ষার অবসান, ১১তম ব্যাটসম্যান হিসেবে রেকর্ড বুকে মুশফিক
- প্রপাগান্ডা আর ষড়যন্ত্র পেরিয়ে জনতার কাতারে: জন্মদিনে তারেক রহমানকে নিয়ে ভাবনা
- মুখ বদলালেও থামেনি জুলুম, রাজনৈতিক পরিচয়েই চলছে চাঁদাবাজির মহোৎসব
- চরম নাটকীয়তা! আবারও পেছাল বিপিএলের নিলাম
- মধ্যরাতে পুলিশি অ্যাকশন: হেফাজতে ইমরান খানের ৩ বোন
- জেনে নিন আজ ঢাকার কোথায় কী আয়োজন
- আসন ছাড় নিয়ে বিএনপির ‘নতুন হিসাব’, বড় কোনো চমক নাকি কারো কপাল পুড়ছে?
- যুদ্ধবিরতির মধ্যেই গাজায় ইসরায়েলের বিমান হামলা
- আত্মহত্যার ৮০ বছর পর হিটলারের ডিএনএ পরীক্ষায় মিলল চাঞ্চল্যকর তথ্য
- বিদেশযাত্রায় দালালের দৌরাত্ম্য কমবে? চালু হলো নতুন ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ‘ওইপি’
- আ.লীগের জন্মস্থান কেনায় বড় অনিয়ম, রাষ্ট্রের শত কোটি টাকা গচ্চা যাওয়ার অভিযোগ
- মাঠেই মুশফিকের হাতে ক্রেস্ট, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য কী বার্তা দিলেন উপদেষ্টা?
- দিনভর বন্ধ মোবাইল মার্কেট, ভোগান্তিতে হাজারো ক্রেতা
- পরীমনির মতো ভাইরাল হতে এসেছেন? পুলিশের মন্তব্যে চটলেন ডাকসু নেত্রী
- ডিসি-ইউএনও বাদ, ইসির নিজস্ব কর্মকর্তাদের রিটার্নিং অফিসার করার প্রস্তাব বিএনপির
- ৫ আগস্টের পর দ্বিতীয় উপদেষ্টা হিসেবে ভারতে খলিলুর, বৈঠকে গুরুত্ব পেল যেসব বিষয়
- ভাত খেলেই কেন দুচোখ জুড়ে ঘুম নামে? জেনে নিন বৈজ্ঞানিক কারণ
- উচ্চ কোলেস্টেরল নিয়ে চিন্তিত? রান্নাঘরের এই ৭টি উপাদানই হতে পারে সমাধান
- বিএনপির দুর্গে হানা দিলেন সারজিস? পঞ্চগড়-১ আসনে জমজমাট লড়াইয়ের আভাস
- ১৯ বছর পর আবার গণভোট? রাজনীতিবিদদের প্রশ্নের জবাবে যা বললেন সিইসি
- গ্যাস নাকি ইলেকট্রিক চুলা: মাস শেষে পকেটের টাকা বাঁচবে কোনটিতে?
- খালেদা জিয়া প্রধান,তারেকের ছবি ব্যবহার করলে কী হবে? ইসির সক্ষমতা নিয়ে এনসিপির প্রশ্ন
- জীবাশ্ম জ্বালানি ছেড়ে পারমাণবিক শক্তিতে ফিরছে জাপান
- সাগরে মাছ ধরতে গিয়ে বিপদ: ট্রলারসহ ১৬ জেলে এখন আরাকান আর্মির কব্জায়
- জাতিসংঘের প্রতিবেদনকে ‘ঐতিহাসিক দলিল’ ঘোষণা, হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ
- চুক্তি খাতায়-কলমে, বাস্তবে আগ্রাসন: যুদ্ধবিরতির মধ্যেই গাজায় হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল
- বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশকে তুলে ধরলেন মিথিলা, সঙ্গী ঐতিহ্যবাহী জামদানি
- বিশৃঙ্খলা হলে আরেকটি বিপ্লব ঘটবে, নির্বাচন কমিশনকে এনসিপির হুঁশিয়ারি
- শততম টেস্টে মুশফিকের ফিফটি, মুমিনুলের বিদায়ের পর লিটনের মাইলফলক
- নির্বাচন নিয়ে কেউ কেউ গাছে কাঁঠাল রেখে গোঁফে তেল দিচ্ছেন: জামায়াত আমির
- ১৯ নভেম্বর ডিএসই লেনদেনের সারসংক্ষেপ
- ১৯ নভেম্বর ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ লুজার তালিকা প্রকাশ
- ১৯ নভেম্বর ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- হামজা-মোরসালিনদের জয়ে ভাসছে দেশ, অথচ 'পুকুর শুকিয়ে' মরছে ঘরোয়া ফুটবল
- গাজীপুরে কয়েল কারখানায় ভয়াবহ আগুন, নিয়ন্ত্রণে ৯ ইউনিট
- বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্র হওয়া থেকে বাঁচাতে গণতন্ত্রের বিকল্প নেই: মির্জা ফখরুল
- দিল্লির ‘কাঁটা’ শেখ হাসিনা, সম্পর্কে টানাপোড়েন কতদিন?
- সারা দেশে মোবাইল ফোনের দোকান বন্ধের ঘোষণা
- জনপ্রিয় মার্কেটগুলো আজ বন্ধ ক্রেতাদের জন্য সতর্কতা
- ট্রুডোর নতুন প্রেম নিয়ে অবশেষে মুখ খুললেন সাবেক স্ত্রী
- যে আসন থেকে লড়বেন নুরুল হক নুর
- গুলিস্তানের মার্কেটে মধ্যরাতের আগুন আতঙ্ক
- ইতিহাস গড়ল বাংলাদেশ: ঢাকার মাঠে ভারতকে হারিয়ে দাপুটে জয়
- সময়সীমা পার হলে কী হবে? শেখ হাসিনার আপিল নিয়ে প্রসিকিউটরের ব্যাখ্যা
- বন্ধু দেশেই অপহরণের ফাঁদ! বাধ্য হয়ে ভারতের বিরুদ্ধে ইরানের কঠোর পদক্ষেপ
- যারা দেয়াল রাঙিয়েছে, তারাই ভোট দেবে, নির্বাচনের আগে ইউনূসের বার্তা
- বাংলাদেশ–ভারত লড়াইয়ে উত্তাপ সর্বোচ্চে
- মামলার রেশ না কাটতেই তিশার বিরুদ্ধে প্রাণনাশের অভিযোগ
- অ্যাকশন, রিভেঞ্জ আর সিক্রেট মিশন: দেখুন সেরা ১০ কোরিয়ান অ্যাকশন সিরিজ!
- নেপালের বিপক্ষে দুর্দান্ত হামজা জোড়া গোলে ম্যাচ ঘুরিয়ে দিল বাংলাদেশ
- বাংলাদেশ নেপাল ম্যাচের আগে জেনে নিন হেড টু হেড পরিসংখ্যানে কারা চালকের আসনে
- ইতিহাস ভারতের, বর্তমান বাংলাদেশের: পরিসংখ্যান ও শক্তির বিচারে কে এগিয়ে?
- আজকের খেলাধুলা সূচি
- জুলাই অভ্যুত্থান মামলা শেখ হাসিনাসহ ৩ আসামির রায়ের তারিখ ঘোষণা
- যে যে মামলায় ফাঁসির রায় হলো হাসিনা-কামালের
- ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে বড় ধরনের পতন: ৩৮৪ কোম্পানির মধ্যে মাত্র ১৫টি বেড়েছে
- কাদিয়ানী ইস্যু ও পাকিস্তানি সংযোগ: বাংলাদেশের ধর্মীয় রাজনীতিতে বিপজ্জনক অস্থিরতার ইঙ্গিত
- রোনালদোর শেষ খেলার পরিকল্পনা নিয়ে বড় ঘোষণা
- ভারত ম্যাচের আগে পরীক্ষা-নিরীক্ষা নেপালের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে একাদশে কারা
- রাকিবের দুর্দান্ত দৌড়, মোরসালিনের ফিনিশিং: শুরুতেই ব্যাকফুটে ভারত
- শেখ হাসিনার মামলার রায় ঘিরে ঢাকা জুড়ে সতর্কতা








