জোহরান মামদানির প্রকাশ্যে আরবিতে ভোটের আবেদন

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ০৩ ১২:১২:৩৫
জোহরান মামদানির প্রকাশ্যে আরবিতে ভোটের আবেদন
ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে জনবহুল শহর নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে অন্যতম প্রতিশ্রুতিশীল প্রার্থী হিসেবে নিজের অবস্থান দৃঢ় করতে জোহরান মামদানি সম্প্রতি একটি নির্বাচনী ভিডিও প্রকাশ করেছেন।ভিডিওটি মূলত মধ্যপ্রাচ্য থেকে আগত অভিবাসী জনগোষ্ঠীর দৃষ্টি আকর্ষণের উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়েছে, যেখানে তিনি আরবিতে কথা বলেছেন।

ভিডিওতে মামদানি সরাসরি ভোটারদের কাছে আবেদন জানান এবং বিভিন্ন জাতিগত সম্প্রদায়ের মানুষদের সঙ্গে সংলাপের মাধ্যমে তাদের বোঝার চেষ্টা করেছেন।

এ সময় তিনি শহরের নাগরিকদের জীবনমান উন্নত করার জন্য একাধিক প্রতিশ্রুতি দেন, যেমন বাসস্থান, পরিবহন ও সামাজিক সেবা সহজ করা। খবরটি হিন্দুস্তান টাইমস প্রকাশ করেছে।

শুক্রবার (১ নভেম্বর) প্রকাশিত ভিডিওতে মামদানি আরবিতে বলেন, “হ্যালো, আমি জোহরান মামদানি, এবং আমি নিউইয়র্ক সিটির পরবর্তী মেয়র হওয়ার জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছি।”

ভোটারদের ভোট দেওয়ার আহ্বান জানাতে গিয়ে তিনি হালকাভাবে মন্তব্য করেন, “আমি জানি, আপনারা ভাবছেন, আমি যেন আমার দামেস্ক থেকে আসা কোনো আত্মীয়ের মতো লাগছি, তবে আমার আরবি ভাষার দক্ষতা আরও উন্নত করতে হবে।”

নিজেকে সমাজতান্ত্রিক হিসেবে পরিচয় দেওয়া জোহরান মামদানি মুসলিম ও আরবীয় সম্প্রদায়ের নাগরিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, “নিউইয়র্ক শহর বর্তমানে অত্যন্ত ব্যয়বহুল হয়ে উঠেছে, যার কারণে এখানে বসবাস অনেকটাই কঠিন হয়ে গেছে।”

তিনি আরও প্রতিশ্রুতি দেন, মেয়র হিসেবে তিনি ২০ লাখেরও বেশি মানুষের জন্য ভাড়া নিয়ন্ত্রণ করবেন, শহরের পরিবহন ব্যবস্থাকে দ্রুততর করবেন, এবং বিনামূল্যে বিভিন্ন সামাজিক সেবা চালু করবেন। এছাড়াও, তিনি প্রতিটি পরিবারের জন্য সর্বজনীন শিশুসেবা নিশ্চিত করার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে উল্লেখ করেন।

মামদানি বলেন, তিনি জনগণের ছোট ব্যবসাগুলোর বিকাশ, ভাড়া পরিশোধে সহায়তা এবং নিউইয়র্কে ভবিষ্যত গড়ার সুযোগকে সহজ করতে তার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন।

ভিডিওর শেষ অংশে তিনি সজাগভাবে বলেন, “আমি আপনারই একজন, এবং আমি আপনার জন্যই নিবেদিত।”

৩৪ বছর বয়সী জোহরান মামদানি ভারতীয় বংশোদ্ভূত হলেও তার মাতৃহৃদয় রামা সুয়াজি সিরীয় বংশের।নিউইয়র্কের মেয়র পদে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুওমোর সঙ্গে, যিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

এছাড়া, রিপাবলিকান প্রার্থী কার্টিস স্লিওয়ারও এই নির্বাচনে মামদানির প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে রয়েছে।


চ্যাম্পিয়ন ভারতীয় নারী ক্রিকেটারদের পুরস্কারে বাজিমাত

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ০৩ ১১:৫৮:২০
চ্যাম্পিয়ন ভারতীয় নারী ক্রিকেটারদের পুরস্কারে বাজিমাত
ছবি: সংগৃহীত

ভারতের নারী ক্রিকেট দল দক্ষিণ আফ্রিকাকে পরাজিত করে ইতিহাস রচনা করেছে, জয় করে প্রথমবারের মতো নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপ। এর আগে দুইবার ফাইনালে উঠলেও ট্রফি ছোঁয়া হয়নি, কিন্তু এবার ভারতীয় মেয়েরা ব্যর্থ হননি এবং বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে।

বিশ্বকাপ জয়ের পাশাপাশি দলের কয়েকজন তারকা ক্রিকেটার যেমন হারমানপ্রীত কৌর ও স্মৃতি মন্ধান উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অর্থ উপার্জন করেছেন। তাদের আয়ের পরিমাণ ভারতের পুরুষ দলের পুরস্কারের থেকেও বেশি। উদাহরণস্বরূপ, ২০২৩ সালের পুরুষদের একদিনের বিশ্বকাপ জয়ের সময় অস্ট্রেলিয়ার খেলোয়াড়রা যা পেয়েছিল, তার চেয়ে এবার ভারতীয় মেয়েদের উপার্জন বেশি।

বিশ্বকাপ জয়ের পুরস্কার হিসেবে ভারতীয় নারী দল পেয়েছে মোট ৩৯ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। এই অর্থ দলের খেলোয়াড় ও সহায়ক স্টাফদের মধ্যে সমানভাবে বিতরণ করা হবে। তুলনামূলকভাবে, ২০২৩ সালে রোহিত শর্মার নেতৃত্বে ভারত যখন বিশ্বকাপ জিতেছিল, তখন অস্ট্রেলিয়ার দল পেয়েছিল ৩৫.৫ কোটি টাকা, যা হারমানপ্রীতদের উপার্জনের চেয়ে প্রায় ৪ কোটি কম।

এবারের চ্যাম্পিয়ন দলকে গতবারের মেয়েদের বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন দলের তুলনায় ২৩৯ শতাংশ বেশি অর্থ দেওয়া হয়েছে। রানার্সআপ দলও অতীতের তুলনায় ২৭৩ শতাংশ বেশি অর্থ পেয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, গতবার চ্যাম্পিয়ন এবং রানার্সআপ দল যথাক্রমে ১১ কোটি ও ৫ কোটি টাকা পেয়েছিল। এবার সেমিফাইনাল খেলোয়াড় অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ড পেয়েছে ৯.৩ কোটি টাকা করে, যা আগেরবারের ২.৫ কোটি টাকা থেকে অনেক বেশি।

২০২৫ সালের নারী বিশ্বকাপের মোট পুরস্কারমূল্য দাঁড়িয়েছে ১২৩ কোটি টাকা, যা ২০২১ সালের ২৯ কোটি টাকার চেয়ে চার গুণ বেশি। এবার আইসিসি পুরুষ এবং নারী ক্রিকেটারদের জন্য সমান পুরস্কারমূল্য ঘোষণা করেছে। উল্লেখযোগ্যভাবে, গতবারের পুরুষদের বিশ্বকাপের জন্য দেওয়া অর্থ ৮৪ কোটি টাকা, যা এবার নারী ক্রিকেটারদের থেকে কম।

গ্রুপ পর্বে অংশ নেওয়া প্রতিটি দল পেয়েছে ২ কোটি টাকা করে। পঞ্চম ও ষষ্ঠ স্থানে শেষ করা দল পেয়েছে ৫.৮ কোটি টাকা, আর সপ্তম ও অষ্টম স্থানের দল পেয়েছে ২.৩ কোটি টাকা করে। পাশাপাশি গ্রুপ পর্বের প্রতিটি জয়িত ম্যাচের জন্য ২৮ লাখ টাকা প্রদান করা হয়েছে।

২০২৪ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ের পর ভারতীয় বোর্ড রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলিসহ পুরুষ দলের জন্য ১২৫ কোটি টাকা ঘোষণা করেছিল। এবার নারী দলের বিশ্বকাপ জয় উপলক্ষে বোর্ডের সচিব দেবজিৎ শইকীয়া ঘোষণা করেছেন, দলকে ৫১ কোটি টাকা প্রদান করা হবে। এখান থেকেও জয়ী দলের খেলোয়াড়রা অর্থ পাবেন, যার মধ্যে হারমানপ্রীত কৌর ও স্মৃতি মন্ধান উল্লেখযোগ্যভাবে উপকৃত হবেন।

-রাফসান


মার্কিন বাজারে বড় ধাক্কা! ভারতের রপ্তানি কেন হঠাৎ কমল?

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ০৩ ১১:৫১:৩৬
মার্কিন বাজারে বড় ধাক্কা! ভারতের রপ্তানি কেন হঠাৎ কমল?
প্রতীকী ছবি

যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের পণ্য রপ্তানিতে সাম্প্রতিক সময়ে ভয়ঙ্কর পতন দেখা দিয়েছে। চলতি বছরের মে থেকে সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে ভারত থেকে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি প্রায় ৩৭.৫ শতাংশ কমে গেছে। তথ্যটি প্রকাশ করেছে থিংক ট্যাঙ্ক ‘গ্লোবাল ট্রেড রিসার্চ ইনিশিয়েটিভ’ (জিটিআরআই)।

সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, মে মাসে ভারত থেকে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি ছিল ৮.৮ বিলিয়ন ডলার, যা সেপ্টেম্বরের মধ্যে কমে ৫.৫ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে। এই সময়ে ভারতের ওষুধ, স্মার্টফোন, ধাতু ও গাড়ি খাতের রপ্তানি উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে।

ফার্মাসিউটিক্যাল বা ওষুধ রপ্তানি মে মাসের ৭৪৫.৬ মিলিয়ন ডলার থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে কমে ৬২৮.৩ মিলিয়ন ডলারে নেমেছে, যা ১৫.৭ শতাংশ হ্রাস নির্দেশ করে। শিল্প ধাতু ও গাড়ির যন্ত্রাংশের রপ্তানিও ১৬.৭ শতাংশ কমে ৬০০ মিলিয়ন ডলার থেকে ৫০০ মিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে।

জিটিআরআই-এর প্রতিষ্ঠাতা অজয় শ্রীবাস্তব জানান, বিশেষভাবে অ্যালুমিনিয়ামের রপ্তানি ৩৭ শতাংশ, তামা ২৫ শতাংশ, গাড়ির যন্ত্রাংশ ১২ শতাংশ, এবং লোহা-ইস্পাত ৮ শতাংশ কমেছে। তিনি উল্লেখ করেন, এই হ্রাসের মূল কারণ যুক্তরাষ্ট্রের শিল্প খাতের মন্দা, বিশ্বব্যাপী শুল্ক নীতি এবং প্রতিযোগিতার কারণে নয়।

শ্রমনির্ভর খাত যেমন টেক্সটাইল, রত্ন ও গহনা, রাসায়নিক, কৃষিপণ্য এবং যন্ত্রপাতির রপ্তানিও মে থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে ৩৩ শতাংশ কমে ৪.৮ বিলিয়ন ডলার থেকে ৩.২ বিলিয়ন ডলারে নেমেছে। শ্রীবাস্তব বলেন, “এই হ্রাসের প্রভাব গভীর এবং বিস্তৃত।”

সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সৌর প্যানেল রপ্তানি। মে মাসে ২০২.৬ মিলিয়ন ডলার থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে এটি ৭৯.৪ মিলিয়ন ডলারে নেমেছে, যা ৬০.৮ শতাংশ হ্রাস নির্দেশ করে।

পোশাক ও বস্ত্র খাতেও বড় ধাক্কা লেগেছে। পাঁচ মাসের মধ্যে রপ্তানি ৯৪৪ মিলিয়ন ডলার থেকে কমে ৫৯৭ মিলিয়ন ডলারে নেমেছে। এর মধ্যে তৈরি পোশাক রপ্তানি ৪৪ শতাংশ, গৃহসজ্জার টেক্সটাইল ১৬ শতাংশ, এবং সুতা ও ফেব্রিকস ৪১ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।

সমুদ্রজাত ও সামুদ্রিক খাদ্য রপ্তানিতেও প্রায় অর্ধেক হ্রাস হয়েছে। মে মাসে ২২৩ মিলিয়ন ডলার থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কমে ১১৩ মিলিয়ন ডলারে নেমেছে, যা ভারতের শ্রমনির্ভর এই খাতের জন্য বড় আঘাত।

উল্লেখ্য, ২৭ আগস্ট থেকে যুক্তরাষ্ট্র ভারতের বিভিন্ন পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে। এটি মূলত রাশিয়ার তেল কেনা ও ইউক্রেনে সংঘাত চলাকালীন মস্কোকে অর্থ সাহায্য করার অভিযোগের প্রেক্ষিতে নেওয়া পদক্ষেপ।

-রাফসান


গাজায় যুদ্ধবিরতি ভঙ্গ: গোলাবর্ষণ অব্যাহত রাখল ইসরায়েল

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ০৩ ১০:৩১:১৮
গাজায় যুদ্ধবিরতি ভঙ্গ: গোলাবর্ষণ অব্যাহত রাখল ইসরায়েল
ছবিঃ সংগৃহীত

গাজা সিটি ও খান ইউনিসে সোমবার (৩ নভেম্বর) আবারও গোলাবর্ষণ চালিয়েছে ইসরায়েলি সেনারা। বর্তমানে দুই পক্ষই যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তির মধ্যে রয়েছে। এই নতুন হামলা চুক্তির ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে।

ফিলিস্তিনি গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলের ট্যাংক ও সাঁজোয়া যানগুলো আবাসিক এলাকায় গুলি চালিয়েছে। পাশাপাশি ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিটগুলো বিস্ফোরণ ঘটিয়ে কয়েকটি ভবন ধ্বংস করেছে। তবে এই মুহূর্তে হতাহত বা ক্ষয়ক্ষতির বিস্তারিত এখনও জানা যায়নি।

ক্ষয়ক্ষতির হিসাব গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ১১ অক্টোবর যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পর থেকে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ২৩৬ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং ৬০০ জন আহত হয়েছেন।

এই নতুন হামলার মধ্যেই ইসরায়েল আন্তর্জাতিক রেডক্রস কমিটির (আইসিআরসি) কাছ থেকে তিন ইসরায়েলি জিম্মির মরদেহ গ্রহণের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

বিনিময়ের শর্ত চুক্তি অনুযায়ী, প্রতিটি ইসরায়েলি জিম্মির মরদেহের বিনিময়ে ইসরায়েল ১৫ জন ফিলিস্তিনির মরদেহ ফেরত দেবে।

বর্তমান অবস্থা এখন পর্যন্ত ২২৫টি ফিলিস্তিনি মরদেহ ফেরত দেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে ৩০টি গত ৩০ অক্টোবর হস্তান্তর করা হয়। যুদ্ধবিরতির আগে হামাসের হাতে থাকা ২৫১ জন জিম্মির মধ্যে ২০ জন জীবিত এবং প্রায় ১৭ জনের মরদেহ এখনও গাজায় রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে ধাপে ধাপে জিম্মি ও বন্দি বিনিময়, সামরিক অভিযান স্থগিত রাখা এবং গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশের শর্ত অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।


ইসরায়েলের নেতাদের জন্মনাম ও পরিচয় পরিবর্তনের যত কারণ

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ০৩ ০৯:১৬:৩৪
ইসরায়েলের নেতাদের জন্মনাম ও পরিচয় পরিবর্তনের যত কারণ
ছবি: সংগৃহীত

ইসরাইলের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর প্রকৃত জন্মনাম ছিল বেনিয়ামিন মিলেকোভস্কি। তবে তার বাবা ফিলিস্তিনে পুনর্বাসিত হওয়ার পরই তারা নতুন উপাধি গ্রহণ করেন, এবং তখন থেকে পরিবারের সকল সদস্যের সঙ্গে ‘নেতানিয়াহু’ যুক্ত হয়, যার অর্থ ‘সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত’। এ ঘটনা কোনো একক উদাহরণ নয়; ইসরাইলের অন্যান্য শীর্ষ রাজনীতিকদের নামেও একই ধরনের পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। মূলত বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ফিলিস্তিনে আসার পর তারা জায়নবাদী আদর্শ অনুসারে হিব্রু ভাষায় নতুন নাম গ্রহণ করেন।

নেতানিয়াহুর দাদার নাম নাথান মিলেকোভস্কি, যিনি পোল্যান্ডে জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং রুশ-ইহুদি রাজনৈতিক ও ধর্মীয় পরিবারে ছিলেন। তার ছেলে, জন্মসূত্রে বেনজিয়ন মিলেকোভস্কি, ফিলিস্তিনে আসার পর নিজের নাম পরিবর্তন করে বেনজিয়ন নেতানিয়াহু গ্রহণ করেন। একইভাবে ইসরাইলের প্রথম প্রধানমন্ত্রী বেন গুরিয়নও জন্মনাম ডেবিড গুরিয়ন থেকে হিব্রু নাম গ্রহণ করেন, যার অর্থ ‘সিংহশাবক’। দ্বিতীয় প্রধানমন্ত্রী মোশে শারেতের জন্মনাম ছিল মোশে শেরতক, যাকে ১৯৪৯ সালে হিব্রু নাম দেওয়া হয়।

ইসরাইলের একমাত্র নারী প্রধানমন্ত্রী গোলদা মাইর ইউক্রেনে জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং তার নাম ছিল গোল্ডি মাবোভিচ। বিয়ের পর তিনি গোল্ডি মায়ারসন নাম গ্রহণ করেন এবং পরবর্তীতে ১৯৫৬ সালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার সময় নাম পরিবর্তন করে গোলদা মাইর হিসেবে পরিচিত হন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইজহাক শামির জন্মনাম ছিল ইৎজহাক ইয়াজিরনেস্কি, এবং এহুদ বারাক, অ্যারিয়েল শ্যারন, শিমন পেরেস, লেভি এশকলসহ অন্যান্য শীর্ষ রাজনীতিকও হিব্রু নাম গ্রহণ করেন।

নাম পরিবর্তনের এই প্রক্রিয়া কেবল উচ্চপদস্থ রাজনীতিকদের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না; এটি অন্যান্য স্তরের ইহুদি জনগোষ্ঠীর মধ্যেও ছড়িয়ে পড়ে। এই পরিবর্তন সরকারি ও সামরিক নীতির অংশ হিসেবে গ্রহণ করা হয়। ১৯৪৮-৪৯ সালে প্রায় ১৭ হাজার বসতি স্থাপনকারী নিজেদের জন্মনাম পরিবর্তন করে হিব্রু নাম গ্রহণ করেন। ইসরাইলের প্রথম প্রধানমন্ত্রী বেন-গুরিয়ন সরকারি কর্মকর্তা ও কূটনীতিকদের হিব্রু নাম গ্রহণের নির্দেশ দেন এবং ‘কমিটি ফর হিব্রু নেমস’ গঠন করা হয়, যা নাম পরিবর্তনের অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করে।

হিব্রু ভাষার পুনর্জীবন আধুনিক ইহুদি জাতীয় পরিচয় ও জায়নবাদী আদর্শের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত। কথ্য হিব্রু ভাষা প্রায় ১৭০০ বছর আগে ধর্মীয় আচার ও তোরাহ চর্চার মধ্যেই সীমাবদ্ধ হয়ে গিয়েছিল। ইলিয়েজার বেন ইয়েহুদা ১৮৮১ সালে ফিলিস্তিনে এসে হিব্রু ভাষাকে পুনর্জীবিত করেন। তিনি বাইবেল, তালমুদিক সাহিত্য, জার্মান ও ফরাসি ভাষা থেকে শব্দ সংগ্রহের মাধ্যমে আধুনিক হিব্রু ভাষার মৌলিক কাঠামো গড়ে তোলেন। আরবি থেকে শব্দ গ্রহণও তার কৌশলের অংশ ছিল, কারণ আরবি ও হিব্রু একই সেমিটিক পরিবারের অন্তর্গত। আধুনিক হিব্রু ভাষার পুনর্জীবন শুধুমাত্র ভাষাগত উদ্যোগ নয়; এটি জায়নবাদী জাতীয়তাবাদের মূল ভিত্তি হিসেবে বিবেচিত।

পরম লক্ষ্য ছিল ধর্মীয় পরিচয় থেকে সেক্যুলার জাতীয়তাবাদের দিকে ইহুদি পরিচয় রূপান্তর করা। প্রথাগত ইহুদি পরিচয় ধর্মীয় আচরণ ও তোরাহ চর্চার ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু জায়নবাদীরা এই পরিচয়কে জাতীয়তাবাদে রূপান্তর করতে হিব্রু ভাষাকে ব্যবহার করেন। এ কারণে আধুনিক ইসরাইলের ৬০ শতাংশ নাগরিক নিজেদের ধর্মহীন হিসেবে পরিচয় দেন। একই সঙ্গে এটি বৈচিত্র্যময় ইহুদি জনগোষ্ঠীকে ঐক্যবদ্ধ করতে সহায়তা করে।

১৯৪০-৫০-এর দশকে ইহুদিরা বিভিন্ন ভাষা ইদিস, লাদিনো, আরবি, জার্মান, রুশ, ফরাসি বলত। তাই জাতীয় পরিচয় স্থাপনের জন্য হিব্রু ভাষার প্রয়োজন ছিল। ইদিস ভাষার সমৃদ্ধ সাহিত্যিক ঐতিহ্য থাকা সত্ত্বেও জায়নবাদীরা হিব্রুকে বেছে নেন। কারণ ইদিস তাদের মুক্তির লক্ষ্য এবং জাতীয় রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য প্রতিবন্ধকতা হিসেবে কাজ করেছিল।

নাম পরিবর্তনের মাধ্যমে শুধু ব্যক্তি নয়, ভৌগোলিক স্থানের নামও হিব্রু ভাষায় রূপান্তর করা হয়। ফিলিস্তিনে ২,৭৮০টি ঐতিহাসিক স্থানের নাম হিব্রুতে বদলে ফেলা হয়; এর মধ্যে রয়েছে গ্রাম, শহর, প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান, নদী, উপত্যকা, ঝরনা এবং পাহাড়। অনেক ক্ষেত্রে ধ্বনিগত পরিবর্তন, যেমন সোরা থেকে জোরা, বা বাইবেলিক শব্দ ব্যবহার করে নামকরণ করা হয়। নতুন হিব্রু নামের উদাহরণ উম আল-রাশরাশ থেকে ইলাত, ম্লাবিস থেকে পেতাহ তিকভা।

এই নাম পরিবর্তন প্রক্রিয়া শুধু সাংস্কৃতিক নয়, বরং স্মৃতিহত্যার কৌশলও। ১৯৪৭-৪৯ সালের মধ্যে প্রায় ৪০০টি ফিলিস্তিনি গ্রাম ধ্বংস করা হয়, এবং সেখানে হিব্রু নামকরণ ও বনভূমি নির্মাণের মাধ্যমে ইতিহাস ও স্মৃতিকে মুছে ফেলা হয়। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বসতি, ভূমি ও ভাষা নতুন জাতীয়তাবাদী ন্যারেটিভের সঙ্গে পুনর্গঠিত হয়, যা জায়নবাদী রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক প্রজেক্টের অংশ হিসেবে কার্যকর।


‘খাবারোভস্ক’ উন্মোচন: রাশিয়ার পানির নিচে নতুন প্রলয়াস্ত্রের যুগ শুরু

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ০৩ ০৮:৩৭:২১
‘খাবারোভস্ক’ উন্মোচন: রাশিয়ার পানির নিচে নতুন প্রলয়াস্ত্রের যুগ শুরু
ছবি: সংগৃহীত

রাশিয়া তাদের নতুন জাতীয় পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ সামুদ্রিক অস্ত্র সিস্টেমের একটি বড় উপাদান হিসেবে নতুন ক্লাসের একটি ভারী পারমাণবিক সাবমেরিন, নামেছি ‘খাবারোভস্ক’, আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেছে।

রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী আন্দ্রেই বেলোসোভ সেভমাশ জাহাজঘাটিতে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এই সাবমেরিনটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে চালু করেন, যেখানে রাশিয়ান নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল আলেকজান্ডার মোইসেয়েভ এবং জাহাজ নির্মাণ শিল্পের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বেলোসোভ তার উদ্বোধনী ভাষণে বলেন, আজকার এই দিনে সেভমাশ থেকে আমাদের নতুন উচ্চক্ষমতার পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্রবাহী ক্রুজার ‘খাবারোভস্ক’ জাহাজে নামার মাধ্যমে রাশিয়ার সামুদ্রিক সক্ষমতা একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক পাড়ি দিয়েছে।

রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিবরণ অনুযায়ী, এই সাবমেরিনটি বিশেষভাবে আধুনিক পানিতলের যুদ্ধোপকরণ এবং রোবোটিকিক সিস্টেম বহন করার ক্ষমতা বিবেচনায় রেখে নির্মিত হয়েছে, যাতে সম্মিলিতভাবে গভীর সমুদ্র অভিযান ও স্বয়ংক্রিয় তৎপরতা চালানো সম্ভব হয়।

জাহাজ নির্মাণ কাজটি করেছে রুশ জাহাজনির্মাণ প্রতিষ্ঠান সেভমাশ এবং সাবমেরিনটির প্রযুক্তিগত নকশা করেছে রুবিন মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং ডিজাইন ব্যুরো, যা জানায় যে এটি জটিল মেকানিকাল ও ইলেকট্রনিক লোড আউট সামলাতে সক্ষম।

রুশ সংবাদমাধ্যম টাস উল্লেখ করেছে, খাবারোভস্ক ক্লাসের এই প্ল্যাটফর্মসমূহ দেশের সামুদ্রিক সীমা রক্ষায় ও আন্তর্জাতিক মহলে রুশ স্বার্থ সুরক্ষায় কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

রুশ দৈনিক কমারসান্ট আরও জানায় যে, ভবিষ্যতে খাবারোভস্ক-শ্রেণির সাবমেরিনগুলোকে মূল প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ব্যবহার করে পানির নিচে চলাচলকারী উচ্চক্ষমতার ড্রোন ‘পোসাইডন’ পরিচালিত হবে।

পোসাইডন নামক এই ড্রোন সংক্রান্ত পরীক্ষার বিষয়ের দিকে ফিরে গত সপ্তাহে রাশিয়া জানিয়েছে তারা সফলভাবে একটির পরীক্ষা সমাপ্ত করেছে, যার শক্তি সরবরাহে একটি ক্ষুদ্র পারমাণবিক চালক ব্যবহৃত হয়েছে।

রাশিয়ান প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এক বিবৃতিতে বলেছেন যে, ওই পোসাইডন ড্রোনকে একটি ‘মাদার সাবমেরিন’ থেকে উৎক্ষেপণ করা হয়েছে এবং এতে ব্যবহৃত পারমাণবিক রিঅ্যাক্টরের আকার ও কনফিগারেশন কৌশলগত সাবমেরিনে ব্যবহৃত রিঅ্যাক্টরের তুলনায় অনেকটা ছোট।

রাশিয়ার নিরাপত্তা পরিষদের উপপ্রধান দিমিত্রি মেদভেদেভ এই সিস্টেমকে ‘ডুমসডে মিসাইল’ হিসেবে অভিহিত করেছেন, যা এর সম্ভাব্য ধ্বংসাত্মক ক্ষমতার প্রতি ইঙ্গিত করে।

রুশ পার্লামেন্টের প্রতিরক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান আন্দ্রেই কার্তাপোলভ অভিযোগ করেছেন যে এই ড্রোনটির ক্ষমতা একবার প্রয়োগ হলে পুরো উপকূলীয় কোনো একটি দেশের অবকাঠামো ধ্বংসের জন্য সক্ষম হতে পারে।

অন্যদিকে, রাশিয়ার বাইরে অনেক সামরিক ও বৈজ্ঞানিক বিশেষজ্ঞ পোসাইডনের কার্যকারিতা, পরিসীমা এবং কৌশলগত বাস্তবায়ন নিয়ে শংকিত এবং প্রশ্ন তুলেছেন; তাদের বিশ্লেষণে রাশিয়ার দাবি কোনো কোনো দিক থেকে অতিরঞ্জিত হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এতসব বিতর্ক ও সমালোচনার মাঝেও ক্রেমলিন এবং রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম স্পষ্টভাবে এই ধাঁচের সামুদ্রিক ম্যানুভারকে রাশিয়ার নৌকৌশলগত ক্ষমতা বাড়ানোর একটি বড় পদক্ষেপ হিসেবে উপস্থাপন করছে।

অবসরে থাকলেও, খাবারোভস্ক এবং পোসাইডন চক্রবৃদ্ধি রুশ সামুদ্রিক নীতি ও কৌশলে দীর্ঘ সময়ের জন্য প্রভাব ফেলতে পারে; এ কারণে আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা পর্যবেক্ষক এবং সমুদ্র নিরাপত্তা বিশ্লেষকগণের মনোযোগ এই প্রকল্পের উন্নয়ন, পরীক্ষার ফলাফল ও বাস্তব আইনি ও কৌশলগত প্রভাবের দিকে নিবদ্ধ থাকবে।

-রফিক


বিদেশি ‘সরকার পরিবর্তন বা জাতি গঠনের’ মার্কিন নীতির দিন শেষ: তুলসী গ্যাবার্ড

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ০২ ২০:৫৩:৩৩
বিদেশি ‘সরকার পরিবর্তন বা জাতি গঠনের’ মার্কিন নীতির দিন শেষ: তুলসী গ্যাবার্ড
তুলসী গ্যাবার্ড মনে করেন যুক্তরাষ্ট্রকে পেছনে টানছে ওই নীতি। সংগৃহীত ছবি

অন্য দেশের সরকার পরিবর্তনে যুক্তরাষ্ট্র যে নীতি মেনে আসছিল, ডোনাল্ড ট্রাম্পের শাসনামলে এসে তা শেষ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক তুলসী গ্যাবার্ড। তিনি দাবি করেন, অন্য দেশে অযাচিত হস্তক্ষেপ এবং যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রব্যবস্থা চাপানোর নীতির কারণে মিত্রের চেয়ে শত্রুই বেশি তৈরি হয়েছে।

শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) বার্তা সংস্থা এপি এই তথ্য জানিয়েছে। বাহরাইনে অনুষ্ঠিত ‘মানামা ডায়ালগ’ নিরাপত্তা সামিটের আগে তুলসী গ্যাবার্ড এই মন্তব্য করেন।

পুরোনো বৈদেশিক নীতির ব্যর্থতা

মার্কিন জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক তুলসী গ্যাবার্ড বলেন, দশক ধরে যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক নীতি—যা রিজিম চেইঞ্জ বা রাষ্ট্র গঠনের ওপর ভিত্তি করে পরিচালিত হয়েছে—তা এক ধরনের ব্যর্থ চক্রে আটকে ছিল। তিনি এই নীতিকে ‘একমাত্রিক ও একরূপ’ বলেও অভিহিত করেন।

তিনি মনে করেন, শাসক পরিবর্তনের মাধ্যমে অন্য দেশে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা চাপানো এবং নানা সংঘাতে অযাচিত হস্তক্ষেপের কারণে মিত্রের চেয়ে অধিক শত্রু তৈরি হয়েছে। তুলসী গ্যাবার্ডের মতে, এমন নীতির কারণে যুক্তরাষ্ট্রে ট্রিলিয়ন ডলার ব্যয়, অগণিত প্রাণহানি এবং অনেক ক্ষেত্রে বৃহত্তর নিরাপত্তা হুমকি তৈরি হয়েছে।

ট্রাম্পের অবস্থান ও মধ্যপ্রাচ্যের চ্যালেঞ্জ

তুলসী গ্যাবার্ডের এই মূল্যায়ন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নিজস্ব ভাবনার সঙ্গে মিলে যায়, যা ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরের সন্ত্রাসী হামলার পর যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধে প্রতিফলিত হয়েছিল।

আফগানিস্তান: ট্রাম্প তার প্রথম মেয়াদে আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের চুক্তি করেছিলেন, যা বাইডেন প্রশাসনের সময়ে ২০২১ সালে বিশৃঙ্খলভাবে শেষ হয়।

সিরিয়া: এছাড়া তিনি সিরিয়ার সাময়িক প্রেসিডেন্ট আহমাদ আল-শারাকে গ্রহণ করেছেন।

তবে তুলসী গ্যাবার্ড মনে করেন, মধ্যপ্রাচ্যে ট্রাম্পের নীতি এখনো চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। তিনি বলেন, সামনের পথ সহজ বা সরল হবে না, তবে ট্রাম্প এই পথে দৃঢ় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

তুলসী গ্যাবার্ডের এই বক্তব্য ট্রাম্পের সাম্প্রতিক মধ্যপ্রাচ্য সফরকালের বক্তব্যের পুনরাবৃত্তি। যদিও তিনি ট্রাম্প প্রশাসনের দক্ষিণ আমেরিকায় যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন, মাদকবহনের অভিযোগ তুলে জাহাজে হামলা এবং ভেনেজুয়েলায় গোপন অভিযান চালানোর বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।


ইসরায়েলের হামলা ও সীমিত হিউম্যানিটেরিয়ান সাহায্য: গাজা-লেবাননে নতুন উত্তেজনা

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ০২ ১৮:৪৪:৪৬
ইসরায়েলের হামলা ও সীমিত হিউম্যানিটেরিয়ান সাহায্য: গাজা-লেবাননে নতুন উত্তেজনা
ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় গাজা-রক্ষাকারী আংশিক যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও, ইসরায়েল এখনও প্রতিশ্রুত সহায়তার মাত্র অংশই পৌঁছে দিয়েছে। গাজা উপত্যকায় পৌঁছানোর কথা ছিল দৈনিক ৬০০ ট্রাকের ত্রাণ সামগ্রী, কিন্তু বাস্তবে ইসরায়েল অনুমোদন দিয়েছে মাত্র ১৪৫টি ট্রাকের। এই পরিস্থিতি ত্রাণ কার্যক্রমকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করছে এবং সাধারণ মানুষ এখনও খাদ্য, পানি ও চিকিৎসা সেবায় প্রবল সংকটে রয়েছে।

উত্তেজনা ক্রমেই বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে লেবাননের দক্ষিণে ইসরায়েলি বিমান হামলায় অন্তত চারজনের মৃত্যু হয়েছে। এ হামলা পূর্বে দীর্ঘকাল ধরে স্থায়ী শান্তি বজায় রাখা গাজা-লেবাননের সীমান্তের পরিস্থিতিতে নতুন ধাক্কা দিয়েছে। বিশেষত, গত বছর হিজবুল্লাহর সঙ্গে প্রায় এক বছরের যুদ্ধবিরতির চুক্তি ছিল, যা এই হামলার পর অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

আরব ও মুসলিম দেশের মন্ত্রীরা আগামী সোমবার ইস্তানবুলে বৈঠক করবেন। বৈঠকে গাজা যুদ্ধবিরতি কার্যক্রম এগিয়ে নেওয়ার পরবর্তী পদক্ষেপ, আন্তর্জাতিক শান্তি-স্থাপনা বাহিনী মোতায়েনসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে। এর মধ্যে ত্রাণ পরিবেশন, নিরাপত্তা বজায় রাখা এবং স্থায়ী যুদ্ধবিরতির ব্যবস্থাপনা অন্যতম আলোচ্যসূচি।

ইসরায়েলের গাজা অভিযান অক্টোবর ২০২৩ থেকে শুরু হওয়ার পর কমপক্ষে ৬৮,৮৫৮ জন নিহত এবং ১,৭০,৬৬৪ জন আহত হয়েছে। একই সময়ে, ৭ অক্টোবর ২০২৩-এ হামাসের হামলার কারণে ইসরায়েলে ১,১৩৯ জন নিহত এবং প্রায় ২০০ জনকে বন্দি করা হয়েছে।

-আল জাজিরা


গিজার পিরামিডের পাশেই নতুন স্থাপনা বিশ্বের বৃহত্তম জাদুঘরে কী আছে

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ০২ ১৬:১০:১৩
গিজার পিরামিডের পাশেই নতুন স্থাপনা বিশ্বের বৃহত্তম জাদুঘরে কী আছে
ছবিঃ সংগৃহীত

দীর্ঘ দুই দশকেরও বেশি সময় পর অবশেষে মিসরে বিশ্বের সর্ববৃহৎ প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর চালু হয়েছে। গ্র্যান্ড ইজিপশিয়ান মিউজিয়াম নামের এই বিশাল জাদুঘরটি মিসরের গিজার বিখ্যাত পিরামিডের পাশেই নির্মাণ করা হয়েছে।

প্রকল্পটি শুরু হয়েছিল ১৯৯২ সালে হোসনি মোবারকের আমলে; তবে এর নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০০৫ সালে। নানা প্রতিবন্ধকতা, আর্থিক সংকট, আরব বসন্ত এবং করোনা মহামারির মতো দীর্ঘ সময় অতিক্রম করে অবশেষে মিসরীয়দের স্বপ্নের এই জাদুঘরটি বাস্তব রূপ পেল। এতে মোট ব্যয় হয়েছে প্রায় ১০০ কোটি মার্কিন ডলার।

গ্র্যান্ড ইজিপশিয়ান মিউজিয়ামকে প্রাচীন মিসরীয় সভ্যতার স্থায়িত্ব ও মহিমার প্রতীক বলা হচ্ছে। জাদুঘরটি ২.৫৮ লাখ বর্গফুট জায়গাজুড়ে তৈরি; যা প্রায় ৭০টি ফুটবল খেলার মাঠের সমান।

এই জাদুঘরে মিসরের প্রাক-রাজবংশীয় যুগ থেকে কপটিক যুগ পর্যন্ত প্রায় ১ লাখ প্রত্নবস্তু সংরক্ষিত আছে। যার মধ্যে ৩ হাজার দুশ বছরের পুরোনো রামেসিস দ্বিতীয়ের ৮৩ টন ওজনের বিশাল মূর্তি এবং গিজার বিখ্যাত পিরামিড নির্মাণের জন্য পরিচিত খুফু ফেরাউনের ৪ হাজার পাঁচশ বছরের পুরোনো রাজকীয় নৌকাও রয়েছে।

জাদুঘরের প্রধান নির্বাহী আহমেদ ঘোনেইম জানান, নতুন প্রজন্মের কাছে প্রাচীন ঐতিহ্যকে আকর্ষণীয় করে তুলতে এখানে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে; যার মধ্যে রয়েছে মিক্সড রিয়েলিটি ও মাল্টিমিডিয়া প্রদর্শনীর ব্যবস্থা।


চীন সরকারের নজিরবিহীন সফলতা ৩০০ মিলিয়ন ভিজিটরের চোখে অন্য শিনচিয়াং

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ০২ ১৪:২৪:৩৪
চীন সরকারের নজিরবিহীন সফলতা ৩০০ মিলিয়ন ভিজিটরের চোখে অন্য শিনচিয়াং
শিনচিয়াং/ Getty Images

উইঘুর মুসলিমদের ওপর চীনের কঠোর নিয়ন্ত্রণ এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের গুরুতর অভিযোগের মধ্যেও শিনচিয়াং (Xinjiang) এখন দেশটির ভেতরে এবং বাইরে একটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে সহিংসতা ও বিতর্কের কারণে অঞ্চলটি পর্যটকদের কাছে অপ্রিয় ছিল; কিন্তু এখন বেইজিং সরকার অবকাঠামো উন্নয়নে শত শত কোটি ডলার বিনিয়োগ করে এই বিতর্কিত অঞ্চলের ভাবমূর্তি নতুন করে সাজাচ্ছে।

চীন সরকারের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে শিনচিয়াং প্রায় ৩০ কোটি পর্যটককে স্বাগত জানিয়েছে; যা ২০১৮ সালের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি। এই সময়ে পর্যটন থেকে রাজস্ব আয়ও প্রায় ৪০ শতাংশ বেড়ে ৩৬০ বিলিয়ন ইউয়ান-এ পৌঁছেছে। চীন ২০৩০ সালের মধ্যে বছরে ৪১ কোটির বেশি পর্যটক আকর্ষণ করার লক্ষ্য নিয়েছে।

পর্যটকদের মতে, শিনচিয়াং-এর দৃশ্যপট 'অপ্রত্যাশিতভাবে সুন্দর'—কেউ কেউ একে 'নিউজিল্যান্ড, সুইজারল্যান্ড এবং মঙ্গোলিয়ার মিশ্রণ' বলে বর্ণনা করছেন। সরকার এই অঞ্চলটির প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং স্থানীয় 'জাতিগত' অভিজ্ঞতা দেখিয়ে প্রচার করছে। বর্তমানে হিলটন ও ম্যারিয়টের মতো প্রায় ২০০টি আন্তর্জাতিক হোটেল এখানে চালু হয়েছে বা চালু হওয়ার পরিকল্পনা করছে।

তবে বিদেশি পর্যবেক্ষক ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের প্রবেশাধিকার এই অঞ্চলে অত্যন্ত সীমিত; উইঘুর প্রবাসীরা এখনো নিখোঁজ স্বজনদের গল্প শোনাচ্ছেন। অনেক পর্যটকই এই এলাকায় পুলিশের ব্যাপক উপস্থিতি ও নিরাপত্তা ক্যামেরা লক্ষ্য করেছেন; বিদেশিদের নির্দিষ্ট হোটেলে থাকার বাধ্যবাধকতাও রয়েছে।

সিংগাপুরের এক পর্যটক জানিয়েছেন, স্থানীয় উইঘুর খাদ্য বিক্রেতারা তাদের হিজাব পরা দেখে বলেছিলেন যে, তারা প্রকাশ্যে হিজাব পরতে পারায় 'ঈর্ষান্বিত'; কারণ স্থানীয় মসজিদগুলোতেও তাদের প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। অন্যদিকে, সরকারের সমালোচকরা বলছেন, চীন সরকার উইঘুর সংস্কৃতিকে কেবল নৃত্য ও রঙিন লোকজ উৎসবের মধ্যে সীমাবদ্ধ রেখে 'পর্যটন আকর্ষণ' হিসেবে ব্যবহার করছে।

মানবাধিকার সংস্থাগুলোর মতে, উইঘুরদের ধর্ম, ইতিহাস বা সংস্কৃতির সঙ্গে সম্পর্কিত শত শত গ্রামের নাম পরিবর্তন করা হয়েছে; মসজিদ ধ্বংস বা অন্য কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। তবে বেইজিং সকল অভিযোগই অস্বীকার করে।

সূত্র: বিবিসি

পাঠকের মতামত:

রাজনীতি, নির্বাসন ও নৈতিকতা: শেখ হাসিনার সাক্ষাৎকার দক্ষিণ এশিয়ার বাস্তবতাকে কোথায় নিচ্ছে

রাজনীতি, নির্বাসন ও নৈতিকতা: শেখ হাসিনার সাক্ষাৎকার দক্ষিণ এশিয়ার বাস্তবতাকে কোথায় নিচ্ছে

বাংলাদেশের রাজনীতিতে আবারও এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়েছে শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে। নির্বাসনে থাকা সাবেক প্রধানমন্ত্রী দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট পত্রিকাকে... বিস্তারিত