নবীজির যে ১০টি ভবিষ্যদ্বাণী অক্ষরে অক্ষরে সত্যি প্রমাণিত হয়েছে

ধর্ম ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ২৯ ১৮:১৪:৪০
নবীজির যে ১০টি ভবিষ্যদ্বাণী অক্ষরে অক্ষরে সত্যি প্রমাণিত হয়েছে
ছবিঃ সংগৃহীত

প্রায় ১৪০০ বছর আগে এমন এক মহামানব পৃথিবীতে এসেছিলেন, যিনি এমন কিছু ঘটনার ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন যা তখন কল্পনাতেও আনা যেত না। তিনি বলেছিলেন দুই পরাক্রমশালী সাম্রাজ্যের পতন, মরুভূমির বুকে আকাশচুম্বী অট্টালিকা নির্মাণ, সুদের ব্যাপকতা এবং আরও অনেক কিছু। আজ আমরা সেই ভবিষ্যদ্বাণীগুলোকে আমাদের চারপাশে বাস্তবরূপে দেখছি। তিনি হলেন মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ), যিনি আল্লাহর রহমত হিসেবে সমগ্র মানবজাতির জন্য এসেছিলেন। তিনি নিজে থেকে অদৃশ্য জ্ঞান জানতেন না, বরং এসব ছিল আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে প্রদত্ত মুজিজা, যা তার নবুওয়ত ও সত্য বার্তার অন্যতম স্পষ্ট নিদর্শন। এই প্রতিবেদনে তার এমন ১০টি ভবিষ্যদ্বাণী তুলে ধরা হলো, যা সময়ের পরিক্রমায় অক্ষরে অক্ষরে সত্য প্রমাণিত হয়েছে।

১. রোম ও পারস্য সাম্রাজ্যের বিজয়: মহানবী (সাঃ) যখন মক্কায় নিপীড়িত ছিলেন, তখনও তিনি সাহাবীদেরকে বিশ্বের দুই পরাশক্তি রোম ও পারস্য সাম্রাজ্যের পতন এবং মুসলমানদের হাতে তাদের সম্পদ আসার সুসংবাদ দেন। তিনি বলেছিলেন, "নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা পৃথিবীকে আমার জন্য সংকুচিত করে দিয়েছেন এবং আমাকে এর পূর্ব ও পশ্চিম সীমানা দেখানো হয়েছে। আর যতটুকু আমার জন্য সংকুচিত করা হয়েছে, ততটুকুতে অচিরেই আমার উম্মতের রাজত্ব বিস্তার লাভ করবে।" তার ইন্তেকালের মাত্র কয়েক বছরের মধ্যেই হযরত ওমর (রাঃ)-এর শাসন আমলে মুসলমানদের হাতে পারস্য সাম্রাজ্যের পতন ঘটে এবং রোমানদের প্রধান প্রধান এলাকা, যেমন শাম (সিরিয়া, ফিলিস্তিন ও জর্ডান মিলে গঠিত) এবং মিশর বিজয় হয়।

২. খেলাফতের মেয়াদকাল: নবীজি (সাঃ) ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন যে, আদর্শ শাসন বা খেলাফত থাকবে মাত্র ৩০ বছর। এরপর শুরু হবে রাজতন্ত্র। তিনি বলেন, "নবুয়ত থাকবে তোমাদের মধ্যে আল্লাহ যতক্ষণ ইচ্ছা করবেন। তারপর তিনি তা উঠিয়ে নেবেন। তারপর নবুয়তের পদ্ধতিতে খেলাফত প্রতিষ্ঠিত হবে তা আল্লাহর ইচ্ছা অনুযায়ী থাকবে। তারপর আল্লাহ তা উঠিয়ে নিবেন। তারপর হবে হানাহানিপূর্ণ রাজত্ব।" ঠিক ৩০ বছর পরেই হযরত আলী (রাঃ)-এর শাহাদতের মাধ্যমে খোলাফায়ে রাশেদীনের যুগের সমাপ্তি ঘটে এবং মুসলিম বিশ্বে রাজতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা শুরু হয়।

৩. নির্দিষ্ট সাহাবীদের শাহাদাত: তিনি তার অত্যন্ত প্রিয় সাহাবীদের শেষ পরিণতি সম্পর্কেও ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন। তিনি হযরত আম্মার ইবনে ইয়াসির (রাঃ)-কে বলেছিলেন, "আফসোস আম্মারের জন্য, তাকে একটি বিদ্রোহী দল হত্যা করবে।" পরে সিফফিনের যুদ্ধে আম্মার (রাঃ)-কে হযরত মুয়াবিয়া (রাঃ)-এর দল হত্যা করে। এই ভবিষ্যদ্বাণী ঘটনার সত্যতা প্রমাণ করে এবং সেই সময়ের সাহাবীদের মাঝে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছিল।

৪. বাইজেন্টাইনদের পুনরুত্থান: কোরআনের সূরা রোমে ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছিল যে, পারস্যদের কাছে পরাজিত হওয়ার পর রোমানরা (বাইজেন্টাইনরা) আবার অল্পদিনের মধ্যে বিজয়ী হবে। আল্লাহ তাআলা বলেন, "রোমানরা পরাজিত হয়েছে নিকটবর্তী এলাকায়। কিন্তু তারা তাদের পরাজয়ের পর অচিরেই বিজয়ী হবে কয়েক বছরের মধ্যেই।" এর ১০ বছরের মধ্যেই রোমানরা পারস্যকে পরাজিত করে, যা সেই সময়ের জন্য ছিল এক বিশাল বিষয় এবং পরে সত্য প্রমাণিত হয়।

৫. উঁচু ভবন নির্মাণের প্রতিযোগিতা: কেয়ামতের আগে কী কী নিদর্শন প্রকাশ পাবে সে ব্যাপারে বলতে গিয়ে মহানবী (সাঃ) বলেছিলেন, "যখন তোমরা দেখবে খালি পায়ের বস্ত্রহীন মেশপালকরা আকাশচুম্বি অট্টালিকা নির্মাণে একে অপরের সাথে প্রতিযোগিতা করছে, তখন কেয়ামতের অনেক নিদর্শন প্রকাশ পাবে।" ১৪০০ বছর আগে আরবের মেশপালকদের দ্বারা এত উঁচু ভবন তৈরি করার কথা কেউ কল্পনাও করতে পারেনি। কিন্তু আজ তেল সমৃদ্ধ আরব দেশগুলোতে বিশ্বের সর্বোচ্চ ভবন তৈরির প্রতিযোগিতা চলছে, যা কেয়ামতের এক সুস্পষ্ট নিদর্শন।

৬. সুদের ব্যাপকতা: তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেছিলেন, "এমন এক সময় আসবে যখন সুদ বা রিবা সর্বত্র ছড়িয়ে পড়বে। যে ব্যক্তি সুদ খাবে না, তার কাছেও এর ধুলিকণা পৌঁছে যাবে।" বর্তমানে বিশ্ব অর্থনীতি, লেনদেন এবং ব্যক্তিগত জীবনে সুদের প্রভাব থেকে মুক্ত থাকা প্রায় অসম্ভব। এটি আমাদের অর্থনীতির একটি অনিবার্য অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং সাধারণ মানুষ কোনো না কোনো ভাবে সুদের লেনদেনে যুক্ত হয়ে যাচ্ছে।

৭. পরিধান করেও উলঙ্গ নারী: জাহেলী যুগে এসে নারীদের অধিকার নিয়ে কাজ করেছিলেন আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)। কেয়ামতের আগে নারীদের অশ্লীলতা নিয়ে তার অনুসারীদের সতর্ক করে গেছেন তিনি। তিনি বলেন, "কেয়ামতের আগে এমন একদল নারীর আবির্ভাব হবে যারা কাপড় পরিধান করেও উলঙ্গ থাকবে। তারা নিজেকে অন্যের প্রতি আকৃষ্ট করবে এবং অন্যের প্রতিও আকৃষ্ট হবে।" আজকের সমাজে পোশাকে শরীর ঢেকে রাখা সত্ত্বেও তা আকর্ষণীয় ও দৃষ্টিকটুভাবে শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গকে প্রদর্শন করে, যা এই ভবিষ্যদ্বাণীকেই তুলে ধরে।

৮. হত্যার সংখ্যা বৃদ্ধি: নবীজি (সাঃ) কেয়ামতের অন্যতম নিদর্শন হিসেবে 'হারজ' বা ব্যাপক হত্যাকাণ্ডের কথা বলেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, "মানুষ জানবে না কেন হত্যা করছে এবং নিহত ব্যক্তিও জানবে না কেন সে মারা গেল।" বর্তমান সময়ে আমরা দেখছি উদ্দেশ্যহীন সহিংসতা, সন্ত্রাসবাদ এবং গণহত্যার কারণে অসংখ্য মানুষ মারা যাচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রেই খুনি বা ভিকটিম জানেনা এর পেছনের মূল কারণ কি।

৯. ফোরাত নদীর উন্মোচন: তিনি ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন যে, ফোরাত নদী শুকিয়ে যাওয়ার পর একটি সোনার পাহাড় বেরিয়ে আসবে, যা নিয়ে মানুষ যুদ্ধ করবে এবং বেশিরভাগ মানুষ মারা যাবে। নবীজি (সাঃ) বলেন, "ততদিন পর্যন্ত কেয়ামত প্রতিষ্ঠিত হবে না যতদিন না ফোরাত নদী থেকে একটি স্বর্ণের পাহাড় বের হবে। মানুষেরা এটি দখল করার জন্য যুদ্ধে লিপ্ত হবে। এ যুদ্ধে শতকরা ৯৯ জনই নিহত হবে। তাদের প্রত্যেকেই বলবে, আমি এ যুদ্ধে রেহাই পাব এবং স্বর্ণের পাহাড়টি দখল করে নেব।" বর্তমানে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ফোরাত নদী দ্রুত শুকিয়ে যাচ্ছে এবং এর তলদেশ উন্মোচিত হচ্ছে। যদিও সোনার পাহাড় এখনও বের হয়নি, তবে এই নদীপথকে কেন্দ্র করে মধ্যপ্রাচ্যে রাজনৈতিক ও সামরিক উত্তেজনা বেড়েই চলেছে।

১০. মসজিদে বিলাসিতা: আমরা বর্তমানে মদিনায় যে মসজিদে নববী দেখি, তা প্রথম নির্মিত হয়েছিল খেজুর গাছের খুঁটি ও উপরে খেজুর পাতা দিয়ে বানানো ছাউনি দিয়ে। তা এখন যুগে যুগে সংস্কার করে বিশাল মসজিদে পরিণত হয়েছে। সারা বিশ্বেও অনেক বড় বড় মসজিদ আমরা দেখতে পাই। নবীজি (সাঃ) বলেছেন, "লোকেরা মসজিদে পরস্পরের মধ্যে নির্মাণ ও কারুকার্য নিয়ে গর্ব না করা পর্যন্ত কেয়ামত হবে না।" বর্তমানে অনেক মসজিদকে বহিরাগত সৌন্দর্যের দিক দিয়ে প্রাসাদ বা বিলাসবহুল ভবনের মতো বানানো হলেও এর ভেতরের ইবাদতের গুণগত মান কমে যাচ্ছে।

আমরা আমাদের জীবনকালে মহানবী (সাঃ)-এর দেওয়া বহু ভবিষ্যদ্বাণীকে সত্য হতে দেখলাম। এটি কেবল ইতিহাস নয়, এটি মুমিনদের জন্য এক বিশাল বার্তা। এসব ভবিষ্যদ্বাণী প্রমাণ করে যে তিনি আল্লাহর সত্য নবী ছিলেন। যারা তার নবুয়ত নিয়ে সন্দেহ পোষণ করে, তাদের জন্য এই ঘটনাগুলোই যথেষ্ট প্রমাণ। সমাজে যখন একের পর এক ফিতনা বা খারাপ সময় আসছে, তখন আমাদের করণীয় হলো তার দেখানো পথে ফিরে আসা এবং কেয়ামতের জন্য প্রস্তুত হওয়া। মহান আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে নবীজির দেখানো পথে চলার তৌফিক দান করুন। আমিন।


রক্তদান শুধু মানবসেবা নয়, এটি এক মহৎ ইবাদত

ধর্ম ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ৩১ ১১:৩৭:৪৪
রক্তদান শুধু মানবসেবা নয়, এটি এক মহৎ ইবাদত
ছবি: সংগৃহীত

মানবদেহে লোহিত রক্তকণিকার গড় আয়ু প্রায় ১২০ দিন। এ সময় শেষ হওয়া পুরোনো রক্তকণিকা ধীরে ধীরে নষ্ট হয় এবং অস্থিমজ্জা থেকে নতুন কণিকা তৈরি হয়। প্রতিদিনই কোটি কোটি নতুন রক্তকণিকা জন্ম নেয়, ফলে পুরোনো কণিকা স্বাভাবিকভাবে প্রতিস্থাপিত হয়। এই প্রক্রিয়ার কারণে সুস্থ মানুষের জন্য রক্তদান সম্পূর্ণ নিরাপদ, কারণ শরীর খুব দ্রুত সেই ক্ষতিপূরণ করতে সক্ষম।

বর্তমান সমাজে শিক্ষিত তরুণসমাজের পাশাপাশি বিভিন্ন বয়সী মানুষ স্বেচ্ছায় রক্তদান করছেন। তাদের এই উদ্যোগের ফলে অসংখ্য রোগী রক্তশূন্যতা ও অন্যান্য রক্তসংক্রান্ত সমস্যার হাত থেকে মুক্তি পাচ্ছেন। রক্তদানের মাধ্যমে তারা শুধু অন্যের জীবন বাঁচাচ্ছেন না, বরং সমাজে মানবতার বীজ বপন করছেন। স্বেচ্ছায় রক্তদান কেবল মানবসেবা নয়, এটি এক মহৎ ইবাদত। যারা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে রক্তদান করেন, তাদের রক্তদান আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের অন্যতম মাধ্যম হয়ে দাঁড়ায়।

একসময় রোগীরা রক্তের অভাবে জীবন বাঁচাতে বড় অঙ্কের অর্থ দিয়ে রক্ত কিনতেন। তবে আজ শিক্ষিত ও সচেতন মানুষরা স্বেচ্ছায়, বিনামূল্যে রক্ত দান করে মানবতার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করছেন। এটি এক সময়োপযোগী উদাহরণ, যা অন্যের জীবন বাঁচায় এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের পথ সুগম করে। দুর্ঘটনা, অস্ত্রোপচার বা প্রসবজনিত জটিলতা দেখা দিলে রক্তের প্রয়োজন তীব্রভাবে অনুভূত হয়। তখন একজন রক্তদাতা হয়ে ওঠেন জীবনরক্ষাকারী। ইসলাম আমাদের শেখায়, অন্যের জীবন বাঁচানো আল্লাহর কাছে অত্যন্ত প্রিয় কাজ।

শরীরের দিক থেকেও রক্তদান উপকারি। নিয়মিত রক্তদানের ফলে রক্ত সঞ্চালন ভালো থাকে, হৃদরোগের ঝুঁকি কমে, এবং নতুন রক্তকণিকা উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। ইসলামও আমাদের শরীরের যত্ন নিতে উৎসাহিত করে। সুতরাং রক্তদান মানবিক ও শারীরিক কল্যাণের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একজন মুসলমান অন্যের জীবন বাঁচিয়ে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারে। কোরআনে আল্লাহতায়ালা বলেন, “যে ব্যক্তি একজন মানুষের জীবন রক্ষা করল, সে যেন সমগ্র মানবজাতিকে রক্ষা করল।” (সূরা আল-মায়িদা: ৩২)

স্বেচ্ছায় রক্তদানকারীদের দ্বারা রোগী বিনামূল্যে রক্ত পান, যা তাদের বিশাল উপকারে আসে। যারা রক্তদান করেন, তারা প্রকৃত অর্থেই উত্তম মানুষ এবং এই মহৎ কাজের বিনিময়ে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করতে পারেন। কোরআনে আল্লাহ বলেন, “যে নেক কাজ করবে, পুরুষ হোক বা নারী, আমি তাকে পবিত্র জীবন দান করব এবং তার কাজের উত্তম প্রতিদান দেব।” (সূরা নাহাল: ৯৭)

ডাক্তার ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করিয়ে দেন, রক্তদানের মাধ্যমে অন্যের কষ্ট লাঘব করা যায়। দীর্ঘদিন রক্তশূন্যতায় ভোগা রোগীরা শারীরিক যন্ত্রণায় থাকে। রক্তদানের মাধ্যমে তাদের এই কষ্ট কমানো হয়, যা ইসলামে সওয়াবের কাজ হিসেবে গণ্য। প্রিয় নবী (সা.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি কোনো মুসলমানের দুঃখ-কষ্ট দূর করে, আল্লাহ কিয়ামতের দিন তার কষ্ট দূর করবেন।” (মুসলিম)

যেহেতু মানবদেহ আল্লাহর মালিকানাধীন, তাই শরীরের কোনো অঙ্গ বা অংশ বিক্রি করা জায়েজ নয়। অর্থের বিনিময়ে রক্ত বিক্রি বৈধ নয়। রক্তদান অবশ্যই মানুষের উপকারের উদ্দেশ্যে এবং আল্লাহকে খুশি করার নিয়তে করা উচিত। এইভাবে রক্তদান সমাজে দয়া, সহানুভূতি ও ঐক্যের বার্তা ছড়িয়ে দেয়। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, “মানুষের মধ্যে সে-ই উত্তম, যে মানুষকে উপকার করে।” (বুখারি)


জান্নাত-জাহান্নামের রহস্য উন্মোচন কুরআনের আলোকে

ধর্ম ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ৩১ ১০:৩৪:২৪
জান্নাত-জাহান্নামের রহস্য উন্মোচন কুরআনের আলোকে
ছবি: সংগৃহীত

ইসলামের পরকালতত্ত্বে জান্নাত ও জাহান্নামের অবস্থান নিয়ে আলেমরা গভীরভাবে আলোচনা করেছেন। কুরআনের আয়াত ও সহিহ তাফসীরের আলোকে জানা যায়, জান্নাত ও জাহান্নাম বাস্তব অস্তিত্বসম্পন্ন স্থান, যেগুলো সৃষ্টির শুরুতেই আল্লাহ তাআলা সৃষ্টি করেছেন। কুরআনে এ দুটি স্থানের অবস্থান ও প্রকৃতি সম্পর্কে এমন সব ব্যাখ্যা পাওয়া যায় যা মানুষের কল্পনার সীমার বাইরে।

আল্লাহ তাআলা সূরা আল-মুতাফফিফীন-এ বলেন, “কখনো নয়, নিশ্চয় নেককার লোকদের আমলনামা থাকবে ইল্লিয়্যীনে। আর তুমি কী জানবে, ‘ইল্লিয়্যীন’ কী?” (সূরা মুতাফফিফীন: ১৮–১৯)। এই আয়াতে জান্নাতের অবস্থান ও তার মহিমার দিকটি উন্মোচিত হয়েছে। তাফসীরবিদ হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, “ইল্লিয়্যীন” অর্থ জান্নাত অথবা সপ্তম আকাশে আরশের নিচে অবস্থিত এক মহিমান্বিত স্থান। (তাফসীরে বাগভী, ৪/৪৬০; তাফসীরে ইবনে কাসীর, ৪/৪৮৭)। ইমাম ইবন কাসীর (রহঃ) ব্যাখ্যা করেছেন, “ইল্লিয়্যীন” শব্দটি এসেছে ‘উলু’ ধাতু থেকে, যার অর্থ উচ্চতা বা মর্যাদা। তিনি বলেন, কোনো বস্তুর অবস্থান যত উপরে হয়, তার সম্মান তত বৃদ্ধি পায়, তাই আল্লাহ তাআলা জান্নাতের শ্রেষ্ঠত্ব বোঝাতে একে ইল্লিয়্যীন বলেছেন। এটি এমন এক স্থান, যার মাহাত্ম্য মানুষের কল্পনাতেও আসে না।

আল্লাহ তাআলা সূরা আয-যারিয়াত-এ বলেন, “আকাশেই রয়েছে তোমাদের রিজিক এবং যা কিছু তোমাদের প্রতিশ্রুত।” (সূরা আয-যারিয়াত: ২২)। ইমাম ইবন কাসীর (রহঃ) এর ব্যাখ্যায় বলেন, “রিজিক” বলতে এখানে বৃষ্টি বোঝানো হয়েছে এবং “যা প্রতিশ্রুত” অর্থ জান্নাত। অর্থাৎ, জান্নাত আকাশের উচ্চস্তরে, আল্লাহর প্রতিশ্রুত পুরস্কার হিসেবে সংরক্ষিত, যা কেবল মুমিনদের জন্য নির্ধারিত।

অন্যদিকে জাহান্নাম সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা বলেন, “কখনো নয়, নিশ্চয় পাপাচারীদের আমলনামা সিজ্জীনে থাকবে। তুমি কী জানবে, সিজ্জীন কী? এটি এক লিখিত গ্রন্থ।” (সূরা মুতাফফিফীন: ৭–৯)। তাফসীরবিদদের মতে, “সিজ্জীন” এসেছে “সাজানা” বা “সঙ্কীর্ণতা” শব্দ থেকে, যার অর্থ অত্যন্ত নিচু ও সীমাবদ্ধ স্থান। ইমাম ইবন কাসীর, ইমাম বাগভী ও ইমাম ইবন রজব (রহ.) তাঁদের তাফসীরে উল্লেখ করেছেন যে, সিজ্জীন সপ্তম ভূমির নিচে অবস্থিত এক ভয়াবহ স্থান, যেখানে অবিশ্বাসী ও পাপাচারীদের আত্মা সংরক্ষিত থাকে। তাফসীরে ইবন কাসীর (৪/৪৮৬–৪৮৭), তাফসীরে বাগভী (৪/৫৪৮), এবং ইবন রজবের “আত-তাখউইফ মিনান নার”-এ (পৃষ্ঠা ১–৬২) বলা হয়েছে, জাহান্নাম বাস্তব এক অগ্নিকুণ্ড, যার অবস্থান পৃথিবীর নীচতম স্তরে, সপ্ত জমিনের গভীরে। ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম (রহ.) তাঁর “হাদিয়্যুল আরওয়াহ ইলা বিলাদিল আফরাহ” (পৃষ্ঠা ৮২–৮৪) গ্রন্থে বলেন, যেমন জান্নাত সপ্ত আসমানের উপরে, তেমনি জাহান্নাম সপ্ত জমিনের নিচে অবস্থিত - উভয়ই স্থায়ী ও বাস্তব স্থান।

‘ইল্লিয়্যীন’ ও ‘সিজ্জীন’ শুধুমাত্র স্থান নয়, বরং মানব আত্মার অবস্থান ও আমলের প্রতিফলনের প্রতীক। ইল্লিয়্যীন নির্দেশ করে আল্লাহর সন্তুষ্টি, আধ্যাত্মিক উচ্চতা ও মর্যাদার প্রতীক, আর সিজ্জীন প্রতীক অবাধ্যতা, পাপাচার ও আত্মার নীচে পতনের। নবী করিম (সা.) বলেছেন, “জান্নাত তোমাদের আমল দ্বারা অর্জিত হয় না, বরং আল্লাহর রহমতেই তোমরা এতে প্রবেশ করবে।” (সহিহ বুখারী ও মুসলিম)।

সবশেষে বলা যায়, কুরআনের আলোকে জান্নাত অবস্থিত সর্বোচ্চ আকাশস্তরে, আল্লাহর আরশের নিচে, আর জাহান্নাম অবস্থান করছে সপ্ত জমিনের গভীরে। ইল্লিয়্যীন ও সিজ্জীন এই দুটি শব্দ শুধু স্থানের নির্দেশ নয়, বরং আল্লাহর রহমত ও ন্যায়বিচারের প্রতীক। প্রত্যেক মানুষ তার আমল ও ঈমান অনুসারে এই দুইয়ের একটিতে স্থান পাবে। আল্লাহই সর্বাধিক জ্ঞানী, এবং তিনিই জানেন এই বাস্তবতার পূর্ণ তাৎপর্য।


সৌদি আরবে ওমরাহ ভিসা নিয়ে কড়াকড়ি ১ নভেম্বর থেকে কার্যকর নতুন নিয়ম

ধর্ম ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ৩১ ০৯:২৪:৩৪
সৌদি আরবে ওমরাহ ভিসা নিয়ে কড়াকড়ি ১ নভেম্বর থেকে কার্যকর নতুন নিয়ম
ছবিঃ সংগৃহীত

ওমরাহ ভিসার কার্যকারিতার মেয়াদ তিন মাস থেকে কমিয়ে এক মাস করেছে সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, ভিসা ইস্যুর তারিখ থেকে ৩০ দিনের মধ্যেই ওমরাহযাত্রীকে সৌদি আরবে প্রবেশ করতে হবে। আগামী ১ নভেম্বর থেকে এই পরিবর্তন কার্যকর হবে।

তবে, দেশে প্রবেশের পর ওমরাহযাত্রীর অবস্থানকাল আগের মতোই তিন মাস বহাল থাকবে। অর্থাৎ, ভিসা হাতে পাওয়ার পর এক মাসের মধ্যে প্রবেশ করলেই তিনি প্রবেশের দিন থেকে সর্বোচ্চ তিন মাস পর্যন্ত সৌদি আরবে অবস্থান করতে পারবেন। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, ভিসা ইস্যুর ৩০ দিনের মধ্যে কোনো যাত্রী সৌদি আরবে প্রবেশ না করলে ভিসাটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল হয়ে যাবে।

মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আহমেদ বাজায়েফার জানিয়েছেন, গ্রীষ্মকাল শেষে শীতল আবহাওয়া শুরু হওয়ায় পবিত্র মক্কা ও মদিনায় বিপুলসংখ্যক ওমরাহযাত্রীর আগমন ঘটবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই আগমন সুষ্ঠুভাবে ব্যবস্থাপনার প্রস্তুতি হিসেবেই নতুন এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

চলতি বছরের জুনের শুরুতে শুরু হওয়া ওমরাহ মৌসুমে এরই মধ্যে রেকর্ড চার মিলিয়নের বেশি বিদেশি হাজি সৌদি আরবে পৌঁছেছেন, যা আগের বছরের পুরো মৌসুমের মোট ওমরাহযাত্রীর সংখ্যাকেও ছাড়িয়ে গেছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ওমরাহ পালনকারীর এই অভূতপূর্ব প্রবৃদ্ধি বিশ্বজুড়ে মুসলমানদের মধ্যে পবিত্র ভূমি সফরের আগ্রহ বাড়ারই প্রমাণ বহন করে।

সূত্র : সৌদি গ্যাজেট ও দ্য ইসলামিক ইনফরমেশন


শয়তানের আক্রমণ থেকে বাঁচুন রাতে ঘুমানোর আগে যে দোয়া পড়তেন নবীজি (সা.)

ধর্ম ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ৩০ ২২:১৮:২৯
শয়তানের আক্রমণ থেকে বাঁচুন রাতে ঘুমানোর আগে যে দোয়া পড়তেন নবীজি (সা.)
ছবিঃ সংগৃহীত ঘুমের আমল

ইসলামের নির্দেশিত পদ্ধতিতে জীবন যাপন করলে প্রতিটি কাজই ইবাদতে পরিণত হতে পারে, এমনকি আমাদের দৈনন্দিন ঘুমও। এজন্য জানা প্রয়োজন, নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঘুমের আগে কোন আমলগুলো নিয়মিত করতেন। আল্লাহর রসুল (সা.)-এর দেখানো পথ অনুসরণ করলে ঘুম কেবল বিশ্রাম নয়, আল্লাহ তাআলার কাছে নৈকট্য লাভের উসিলা হতে পারে।

এখানে ঘুমের আগে নবীজি (সা.)-এর পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ আমল তুলে ধরা হলো

১. ঘুমানোর পূর্বের দোয়া পড়া

রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঘুমের আগে আল্লাহ তাআলার নাম নিতেন এবং দোয়া পড়তেন। হাদিসে এসেছে, "যে ব্যক্তি শোয়ার পর আল্লাহর নাম নেয় না, তার জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে লাঞ্ছনা নেমে আসবে।" (আবু দাউদ ৪৮৫৬)

ঘুমানোর আগে কয়েকটি দোয়া বর্ণিত হয়েছে। সব দোয়া পড়তে না পারলেও সংক্ষেপে এই দোয়াটি পড়া যায়

'আল্লাহুম্মা বিসমিকা আমুতু ওয়া আহ্ইয়া'

অর্থ: 'হে আল্লাহ, তোমার নামে আমি শয়ন করছি এবং তোমারই দয়ায় আমি পুনরায় জাগব।'

২. সুরা ইখলাস, ফালাক ও নাস পড়ে শরীরে ফুঁ দেওয়া

হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, "রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রতি রাতে যখন বিছানায় যেতেন, তখন দুই হাত একত্র করে তাতে সুরা ইখলাস, ফালাক ও নাস পড়ে ফুঁ দিতেন। তারপর মাথা ও চেহারা থেকে শুরু করে যত দূর সম্ভব দেহে তিনবার দুই হাত বোলাতেন।" (বুখারি ৫০১৭) এটি সমস্ত অনিষ্ট ও শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে বাঁচার একটি শক্তিশালী আমল।

৩. আয়াতুল কুরসি পাঠ করা

শোয়ার আগে আয়াতুল কুরসি পাঠ করার বিশেষ ফজিলত রয়েছে। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, "তুমি যখন শয্যা গ্রহণ করবে, তখন আয়াতুল কুরসি পড়বে। তাহলে আল্লাহর পক্ষ থেকে সর্বদা তোমার জন্য একজন রক্ষক থাকবে এবং সকাল পর্যন্ত শয়তান তোমার কাছে আসতে পারবে না।" (বুখারি ২৩১১)

৪. সুরা বাকারার শেষ দুই আয়াত পাঠ

সুরা বাকারার শেষ দুটি আয়াত যেকোনো ব্যক্তির গোটা রাতের নিরাপত্তার জন্য যথেষ্ট। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, "যদি কোনো ব্যক্তি সুরা বাকারার শেষ দুটি আয়াত পাঠ করে, তবে এটিই তার জন্য যথেষ্ট।" (বুখারি ৫০৪০) অর্থাৎ, এটি তাকে রাতের সব ধরনের বিপদাপদ ও কষ্ট থেকে রক্ষা করবে।

৫. সুরা মুলক পাঠ করা

শোয়ার আগে সুরা মুলক (তাবারাকাল্লাজি বিয়াদিহিল মুলক) পাঠ করা বিশেষ ফজিলতের। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, "কোরআনের মধ্যে ৩০ আয়াতবিশিষ্ট একটি সুরা আছে, যেটি কারো পক্ষে সুপারিশ করলে তাকে মাফ করে দেওয়া হয়। সুরাটি হলো তাবারাকাল্লাজি বিয়াদিহিল মুলক (সুরা মুলক)।" (তিরমিজি ২৮৯১) এই সুরা পাঠকের জন্য সুপারিশ করে আল্লাহর কাছে তার ক্ষমা নিশ্চিত করবে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই আমলগুলো নিয়মিত করলে একজন মুমিনের ঘুম কেবল দৈনন্দিন বিশ্রাম থাকে না, বরং আল্লাহর নৈকট্য ও সুরক্ষা লাভে এক মহৎ ইবাদতে পরিণত হয়।


৩১ অক্টোবর বাংলাদেশের প্রধান অঞ্চলের নামাজের সময়সূচি

ধর্ম ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ৩০ ২২:০৪:৩৭
৩১ অক্টোবর বাংলাদেশের প্রধান অঞ্চলের নামাজের সময়সূচি
Sheikh Zayed Grand Mosque Center /ছবিঃ সংগৃহীত

শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৫ ইংরেজি তারিখের জন্য ঢাকা এবং বাংলাদেশের অন্যান্য প্রধান বিভাগের দৈনিক নামাজের সময়সূচি নিচে দেওয়া হলো। (এই সময়সূচি বিভিন্ন নির্ভরযোগ্য ইসলামিক ক্যালেন্ডার থেকে সংগৃহীত। স্থানীয় তারতম্যের জন্য ২/১ মিনিট ভিন্ন হতে পারে)।

ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের সময়সূচি

ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার জন্য ফজর ০৪টা ৪৮ মিনিটে (AM), সূর্যোদয় ০৬টা ০২ মিনিটে (AM), জোহর ১১টা ৪৬ মিনিটে (AM), আসর ০৩টা ৪৪ মিনিটে (PM), মাগরিব ০৫টা ২৪ মিনিটে (PM), এবং ইশা ০৬টা ৩৯ মিনিটে (PM)।

অন্যান্য প্রধান বিভাগীয় শহরের আনুমানিক সময়সূচি

ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে প্রধান বিভাগীয় শহরগুলোর সময়সূচিতে সামান্য পার্থক্য আসে। ৩১ অক্টোবর, ২০২৫ তারিখের জন্য প্রধান বিভাগগুলোর নামাজের আনুমানিক সময়সূচি নিম্নরূপ:

চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামে ফজর ০৪টা ৪২ মিনিটে, সূর্যোদয় ০৫টা ৫৬ মিনিটে, জোহর ১১টা ৪৬ মিনিটে, আসর ০৩টা ৫৪ মিনিটে, মাগরিব ০৫টা ৩৩ মিনিটে এবং ইশা ০৬টা ৪৭ মিনিটে।

খুলনা: খুলনায় ফজর ০৪টা ৫০ মিনিটে, সূর্যোদয় ০৬টা ০৪ মিনিটে, জোহর ১১টা ৪৯ মিনিটে, আসর ০৪টা ০৩ মিনিটে, মাগরিব ০৫টা ৪৩ মিনিটে এবং ইশা ০৬টা ৫৮ মিনিটে।

রাজশাহী: রাজশাহীতে ফজর ০৪টা ৪৯ মিনিটে, সূর্যোদয় ০৬টা ০৪ মিনিটে, জোহর ১১টা ৫০ মিনিটে, আসর ০৪টা ০৩ মিনিটে, মাগরিব ০৫টা ৪৪ মিনিটে এবং ইশা ০৬টা ৫৯ মিনিটে।

সিলেট: সিলেটে ফজর ০৪টা ৪২ মিনিটে, সূর্যোদয় ০৫টা ৫৬ মিনিটে, জোহর ১১টা ৪৪ মিনিটে, আসর ০৩টা ৫৯ মিনিটে, মাগরিব ০৫টা ৩৩ মিনিটে এবং ইশা ০৬টা ৪৯ মিনিটে।

রংপুর: রংপুরে ফজর ০৪টা ৪৭ মিনিটে, সূর্যোদয় ০৬টা ০২ মিনিটে, জোহর ১১টা ৫০ মিনিটে, আসর ০৪টা ০২ মিনিটে, মাগরিব ০৫টা ৪২ মিনিটে এবং ইশা ০৬টা ৫৬ মিনিটে।

বরিশাল: বরিশালে ফজর ০৪টা ৪৬ মিনিটে, সূর্যোদয় ০৬টা ০১ মিনিটে, জোহর ১১টা ৪৬ মিনিটে, আসর ০৩টা ৫৯ মিনিটে, মাগরিব ০৫টা ৩৮ মিনিটে এবং ইশা ০৬টা ৫৪ মিনিটে।


৩০ অক্টোবর বাংলাদেশের প্রধান অঞ্চলের নামাজের সময়সূচি

ধর্ম ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ২৯ ২১:৪৫:০৮
৩০ অক্টোবর বাংলাদেশের প্রধান অঞ্চলের নামাজের সময়সূচি
Sheikh Zayed Mosque/ছবিঃ সংগৃহীত

বৃহস্পতিবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৫ ইংরেজি তারিখের জন্য ঢাকা এবং বাংলাদেশের অন্যান্য প্রধান বিভাগের দৈনিক নামাজের সময়সূচি নিচে দেওয়া হলো। (এই সময়সূচি বিভিন্ন নির্ভরযোগ্য ইসলামিক ক্যালেন্ডার থেকে সংগৃহীত। স্থানীয় তারতম্যের জন্য ২/১ মিনিট ভিন্ন হতে পারে)।

ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের সময়সূচি

ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার জন্য ফজর ০৪টা ৪৬ মিনিটে (AM), সূর্যোদয় ০৬টা ০১ মিনিটে (AM), জোহর ১১টা ৪৬ মিনিটে (AM), আসর ০৩টা ৪৮ মিনিটে (PM), মাগরিব ০৫টা ২৮ মিনিটে (PM), এবং ইশা ০৬টা ৪২ মিনিটে (PM)।

(সাহরির শেষ সময় থাকবে ০৪টা ৪০ মিনিটে (ভোর), এবং ইফতারের সময় হবে ০৫টা ২৮ মিনিটে (সন্ধ্যা)।)

অন্যান্য প্রধান বিভাগীয় শহরের আনুমানিক সময়সূচি

ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে প্রধান বিভাগীয় শহরগুলোর সময়সূচিতে সামান্য পার্থক্য আসে। ৩০ অক্টোবর, ২০২৫ তারিখের জন্য প্রধান বিভাগগুলোর নামাজের আনুমানিক সময়সূচি নিম্নরূপ:

চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামে ফজর ০৪টা ৪২ মিনিটে, সূর্যোদয় ০৫টা ৫৪ মিনিটে, জোহর ১১টা ৪৬ মিনিটে, আসর ০৩টা ৫৮ মিনিটে, মাগরিব ০৫টা ৩৬ মিনিটে এবং ইশা ০৬টা ৫০ মিনিটে।

খুলনা: খুলনায় ফজর ০৪টা ৪৯ মিনিটে, সূর্যোদয় ০৬টা ০৩ মিনিটে, জোহর ১১টা ৫০ মিনিটে, আসর ০৪টা ০৬ মিনিটে, মাগরিব ০৫টা ৪৬ মিনিটে এবং ইশা ০৭টা ০০ মিনিটে।

রাজশাহী: রাজশাহীতে ফজর ০৪টা ৪৯ মিনিটে, সূর্যোদয় ০৬টা ০৪ মিনিটে, জোহর ১১টা ৫২ মিনিটে, আসর ০৪টা ০৭ মিনিটে, মাগরিব ০৫টা ৪৬ মিনিটে এবং ইশা ০৭টা ০১ মিনিটে।

সিলেট: সিলেটে ফজর ০৪টা ৪২ মিনিটে, সূর্যোদয় ০৫টা ৫৪ মিনিটে, জোহর ১১টা ৪৬ মিনিটে, আসর ০৪টা ০১ মিনিটে, মাগরিব ০৫টা ৩৪ মিনিটে এবং ইশা ০৬টা ৪৯ মিনিটে।

রংপুর: রংপুরে ফজর ০৪টা ৪৬ মিনিটে, সূর্যোদয় ০৬টা ০১ মিনিটে, জোহর ১১টা ৫২ মিনিটে, আসর ০৪টা ০৪ মিনিটে, মাগরিব ০৫টা ৪৩ মিনিটে এবং ইশা ০৬টা ৫৮ মিনিটে।

বরিশাল: বরিশালে ফজর ০৪টা ৪৬ মিনিটে, সূর্যোদয় ০৬টা ০০ মিনিটে, জোহর ১১টা ৪৯ মিনিটে, আসর ০৪টা ০২ মিনিটে, মাগরিব ০৫টা ৩৮ মিনিটে এবং ইশা ০৬টা ৫৪ মিনিটে।


নফসের ৩ স্তর: প্রবৃত্তির দাসত্ব থেকে প্রশান্ত আত্মার পথে, কী বলছে বিজ্ঞান?

ধর্ম ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ২৯ ১৯:২৭:১৬
নফসের ৩ স্তর: প্রবৃত্তির দাসত্ব থেকে প্রশান্ত আত্মার পথে, কী বলছে বিজ্ঞান?
ছবিঃ সংগৃহীত

আমরা কেন কখনও ভালো কাজ করতে অনুপ্রাণিত হই, আবার কখনও খারাপ কাজের দিকে ঝুঁকে পড়ি? আমাদের মধ্যে এই অন্তর্দ্বন্দ্বের কারণ কী? ইসলাম বলছে, এর পেছনে মূল ভূমিকা রাখে 'নফস' বা প্রবৃত্তি। পবিত্র কোরআনে নফসের তিনটি স্তরের কথা বলা হয়েছে

নফসে আম্মারা (প্রবৃত্তির দাসত্ব), নফসে লাউয়ামা (অন্তর্দ্বন্দ্ব বা আত্মসমালোচনা) এবং নফসে মুতমাইন্নাহ (প্রশান্ত আত্মা)। আজকের এই প্রতিবেদনে আমরা দেখব কোরআনে বর্ণিত নফসের এই ধাপগুলো কীভাবে আধুনিক সাইকোলজি ও নিউরোসায়েন্সের সাথে সম্পর্কিত এবং কিভাবে আমরা আমাদের জীবন গঠনে এগুলো ব্যবহার করতে পারি।

পবিত্র কোরআনের সূরা শামসের ৯ এবং ১০ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, "অবশ্যই সে সফল হয়েছে যে নিজের নফসকে পরিশুদ্ধ করেছে, আর সে ব্যর্থ হয়েছে যে তা বিনষ্ট করেছে।" কোরআনের ব্যাখ্যাকারকদের মতে, নফসকে পরিশুদ্ধ করার অর্থ হলো সব ধরনের পাপাচার ও কলুষতা থেকে নিজেকে মুক্ত রাখা, প্রবৃত্তি ও রিপুশক্তির উপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা এবং আকল (বিবেক) ও বিবেককে আল্লাহ তাআলার হুকুম ও বিধানের অনুগত করা। অন্যদিকে, নফসকে বিনষ্ট করার অর্থ হলো গুনাহ ও মন্দ কাজে লিপ্ত হয়ে চিন্তা, কর্ম ও মন মানসিকতাকে পাপাচ্ছন্ন করে ফেলা এবং মনের সকল ইচ্ছা ও চাহিদাকে অনুসরণ করে প্রবৃত্তিকে শক্তিশালী করা।

হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এই আয়াত দুটো পাঠ করার পর বলতেন, "হে আল্লাহ! আপনি আমার নফসকে দ্বীনের প্রতি অনুরাগী করে দিন, কারণ আপনি নফসের অভিভাবক ও প্রভু এবং তার সর্বোত্তম পবিত্রকারী।" স্বয়ং রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-ও নফসের ব্যাপারে কতটা সতর্ক ছিলেন, তা এই হাদিসগুলো থেকে বোঝা যায়। কাজেই, আমাদেরকেও নফসের গতি-প্রকৃতি সম্পর্কে জানতে হবে এবং সতর্ক থাকতে হবে।

নফসের তিনটি ধাপ ও বিজ্ঞানসম্মত ব্যাখ্যা:

এটি নফসের সেই স্তর, যেখানে মানুষ তার প্রবৃত্তির দাস হয়ে যায় এবং নীতি নৈতিকতা ভুলে গিয়ে খারাপ কাজে লিপ্ত হয়। কোরআনে বলা হয়েছে, "আর আমি আমার নফসকে পবিত্র মনে করি না, নিশ্চয়ই নফস মন্দ কাজের নির্দেশ দিয়ে থাকে, আমার রব যাকে দয়া করেন সে ছাড়া, নিশ্চয়ই আমার রব ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।" আধুনিক নিউরোসায়েন্স বলছে, ব্রেনের অ্যামিগডালা ও ডোপামিন সিস্টেম আমাদের আবেগ ও ইচ্ছাকে নিয়ন্ত্রণ করে। যখন আমরা লোভনীয় কিছু দেখি, যেমন হারাম উপার্জন বা নিষিদ্ধ সম্পর্ক, তখন মস্তিষ্কের অ্যামিগডালা উত্তেজিত হয় এবং ডোপামিন রিওয়ার্ড সিস্টেম মনে করে এটি পুরস্কার দিচ্ছে, ফলে আমরা খারাপ কাজের প্রতি আসক্ত হয়ে যাই। ইসলামিক স্কলাররা এই স্তর থেকে মুক্তি পেতে ইচ্ছাশক্তি বাড়ানো, গুনাহের পরিবেশ থেকে দূরে থাকা এবং বেশি বেশি ইস্তেগফার বা আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়ার উপর জোর দিয়েছেন।

এটি নফসের সেই স্তর, যেখানে মানুষ তার ভুল বুঝতে পারে, অনুশোচনা করে এবং সংশোধনের চেষ্টা করে। আত্ম-উন্নয়নের জন্য এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। এর গুরুত্ব বোঝানোর জন্য মহান আল্লাহ এই নফসের নামে শপথ করেছেন

"আমি আরও শপথ করছি তিরস্কারকারী নফসের।" সাইকোলজির ভাষায় এটি 'মেটাকগনিশন' বা নিজের চিন্তাকে পর্যবেক্ষণ করার ক্ষমতার সাথে সম্পর্কিত। ব্রেনের প্রিফ্রন্টাল কর্টেক্স আমাদের যুক্তিবোধ ও আত্মনিয়ন্ত্রণ গঠনে সাহায্য করে। যখন আপনি বারবার অনুশোচনা করেন এবং ভালো কাজ করার চেষ্টা করেন, তখন ব্রেইনের নিউরোপ্লাস্টিসিটিতে নতুন নিউরোনাল সংযোগ তৈরি হয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই স্তরে উন্নতি করতে হলে প্রতিদিন মুহাসাবা (আত্মসমালোচনা) করতে হবে এবং ভালো কাজের জন্য আল্লাহর শুকরিয়া আদায় ও খারাপ কাজ থেকে ফিরে আসার জন্য তাওবা করার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।

এটি আত্মার সর্বোচ্চ স্তর, যেখানে মানুষ আল্লাহর উপর পূর্ণ আস্থা রাখে, দ্বিধাহীনভাবে ন্যায় বিচার করে এবং সত্যিকারের প্রশান্তি লাভ করে। কোরআনে বলা হয়েছে, "হে প্রশান্ত আত্মা, তুমি তোমার পালনকর্তার নিকট ফিরে যাও সন্তুষ্ট ও সন্তোষ ভাজন হয়ে।" বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই স্তরে পৌঁছানোর সাথে মাইন্ডফুলনেস, গ্র্যাটিটিউড এবং সেরোটোনিন বৃদ্ধির সম্পর্ক রয়েছে। নিয়মিত দোয়া ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলে মস্তিষ্ক সেরোটোনিন নামক হরমোন নিঃসরণ করে, যা প্রশান্তির অনুভূতি এনে দেয়। পরোপকার ও ভালো কাজ করলে আমাদের ব্রেন অক্সিটোসিন নিঃসরণ করে, যা শান্তি ও সুখের অনুভূতি তৈরি করে। আলেমগণ বলেন, এই স্তরে পৌঁছাতে হলে নিয়মিত কোরআন তেলাওয়াত, সে অনুযায়ী আমল, আল্লাহর প্রতি পরিপূর্ণ আস্থা রাখা এবং দুনিয়ার চাহিদাকে কমিয়ে আখেরাতের দিকে বেশি মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন।

মানুষের জীবনের দুটি বড় শত্রু হলো নফস এবং শয়তান। এরা দুজনই প্রতি মুহূর্তে আমাদেরকে গুনাহের প্রতি উদ্বুদ্ধ করে। নফস ভেতর থেকে উদ্বুদ্ধ করে আর শয়তান সেটিকে আমাদের সামনে আকর্ষণীয় করে তুলে তাতে লিপ্ত করায়। কাজেই, এই দুই শত্রুকে মোকাবেলা করে যদি আমরা জীবন গঠন করতে পারি এবং নফসে মুতমাইন্নাহ বা প্রশান্ত আত্মার অধিকারী হই, তাহলে আমরা প্রশান্ত হৃদয় নিয়ে আল্লাহর ডাকে সাড়া দিয়ে চির শান্তির জায়গা জান্নাতে যেতে পারব।


২৯ অক্টোবর বাংলাদেশের প্রধান অঞ্চলের নামাজের সময়সূচি

ধর্ম ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ২৮ ২১:২৫:৪০
২৯ অক্টোবর বাংলাদেশের প্রধান অঞ্চলের নামাজের সময়সূচি
Soliman Mosque, Istanbul (Turkey)/ছবিঃ সংগৃহীত

বুধবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৫ ইংরেজি তারিখের জন্য ঢাকা এবং বাংলাদেশের অন্যান্য প্রধান বিভাগের দৈনিক নামাজের সময়সূচি নিচে দেওয়া হলো। (এই সময়সূচি বিভিন্ন নির্ভরযোগ্য ইসলামিক ক্যালেন্ডার থেকে সংগৃহীত। স্থানীয় তারতম্যের জন্য ২/১ মিনিট ভিন্ন হতে পারে)।

ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের সময়সূচি

ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার জন্য ফজর ০৪টা ৪৬ মিনিটে (AM), সূর্যোদয় ০৬টা ০১ মিনিটে (AM), জোহর ১১টা ৪৬ মিনিটে (AM), আসর ০৩টা ৪৮ মিনিটে (PM), মাগরিব ০৫টা ২৮ মিনিটে (PM), এবং ইশা ০৬টা ৪২ মিনিটে (PM)।

(সাহরির শেষ সময় থাকবে ০৪টা ৪০ মিনিটে (ভোর), এবং ইফতারের সময় হবে ০৫টা ২৮ মিনিটে (সন্ধ্যা)।)

অন্যান্য প্রধান বিভাগীয় শহরের আনুমানিক সময়সূচি

ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে প্রধান বিভাগীয় শহরগুলোর সময়সূচিতে সামান্য পার্থক্য আসে। ২৯ অক্টোবর, ২০২৫ তারিখের জন্য প্রধান বিভাগগুলোর নামাজের আনুমানিক সময়সূচি নিম্নরূপ:

চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামে ফজর ০৪টা ৪২ মিনিটে, সূর্যোদয় ০৫টা ৫৪ মিনিটে, জোহর ১১টা ৪৬ মিনিটে, আসর ০৩টা ৫৮ মিনিটে, মাগরিব ০৫টা ৩৬ মিনিটে এবং ইশা ০৬টা ৫০ মিনিটে।

খুলনা: খুলনায় ফজর ০৪টা ৪৯ মিনিটে, সূর্যোদয় ০৬টা ০৩ মিনিটে, জোহর ১১টা ৫০ মিনিটে, আসর ০৪টা ০৬ মিনিটে, মাগরিব ০৫টা ৪৬ মিনিটে এবং ইশা ০৭টা ০০ মিনিটে।

রাজশাহী: রাজশাহীতে ফজর ০৪টা ৪৯ মিনিটে, সূর্যোদয় ০৬টা ০৪ মিনিটে, জোহর ১১টা ৫২ মিনিটে, আসর ০৪টা ০৭ মিনিটে, মাগরিব ০৫টা ৪৬ মিনিটে এবং ইশা ০৭টা ০১ মিনিটে।

সিলেট: সিলেটে ফজর ০৪টা ৪২ মিনিটে, সূর্যোদয় ০৫টা ৫৪ মিনিটে, জোহর ১১টা ৪৬ মিনিটে, আসর ০৪টা ০১ মিনিটে, মাগরিব ০৫টা ৩৪ মিনিটে এবং ইশা ০৬টা ৪৯ মিনিটে।

রংপুর: রংপুরে ফজর ০৪টা ৪৬ মিনিটে, সূর্যোদয় ০৬টা ০১ মিনিটে, জোহর ১১টা ৫২ মিনিটে, আসর ০৪টা ০৪ মিনিটে, মাগরিব ০৫টা ৪৩ মিনিটে এবং ইশা ০৬টা ৫৮ মিনিটে।

বরিশাল: বরিশালে ফজর ০৪টা ৪৬ মিনিটে, সূর্যোদয় ০৬টা ০০ মিনিটে, জোহর ১১টা ৪৯ মিনিটে, আসর ০৪টা ০২ মিনিটে, মাগরিব ০৫টা ৩৮ মিনিটে এবং ইশা ০৬টা ৫৪ মিনিটে।


১০টি সহজ অভ্যাস: যে অভ্যাসগুলো আপনাকে ফজরের নামাজে জাগিয়ে তুলবে

ধর্ম ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ২৮ ১৯:২১:০৩
১০টি সহজ অভ্যাস: যে অভ্যাসগুলো আপনাকে ফজরের নামাজে জাগিয়ে তুলবে
ছবিঃ সংগৃহীত

ফজরের নামাজ হলো আল্লাহর সবচেয়ে প্রিয় ইবাদতগুলোর একটি, কিন্তু দুঃখজনকভাবে অনেকেই ঘুমের ঘোরে তা কাটিয়ে দেন। অথচ, কিছু সহজ অভ্যাস ও নিয়ম মেনে চললে ফজরের জামাতে জাগ্রত হওয়া কঠিন নয়। রাসুলুল্লাহ (সা.) ফজরের নামাজের গুরুত্ব নিয়ে তাগিদ দিয়েছেন এবং শয়তানের প্রভাব কাটাতে কিছু কৌশল শিখিয়েছেন।

জাগ্রত হওয়ার ১০টি কার্যকরী অভ্যাস

১. তাড়াতাড়ি ঘুমাতে যাওয়া: রাসুল (সা.) মাগরিবের আগে ঘুমানো এবং ইশার নামাজের পরে অনর্থক কথা বলা অপছন্দ করতেন। (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ১৬৮)

২. পবিত্র অবস্থায় ঘুমানো: ঘুমানোর আগে পবিত্র অবস্থায় অজু করে নেওয়া এবং সুন্নাহ অনুযায়ী ডান কাতে শুয়ে নির্ধারিত দোয়া পাঠ করা উচিত।

৩. দৃঢ় সংকল্প ও নিয়ত: ঘুমাতে যাওয়ার সময় দৃঢ় নিয়ত করো—‘আমি ফজরের নামাজ জামাতে পড়ব।’ আন্তরিক ইচ্ছা ও নিয়তই জাগার প্রথম প্রেরণা।

৪. ঘুম থেকে উঠেই আল্লাহকে স্মরণ: রাসুল (সা.) বলেছেন, ঘুম থেকে উঠে আল্লাহকে স্মরণ করলে শয়তানের বাঁধা তিনটি গিঁটের মধ্যে একটি খুলে যায়। অজু করলে দ্বিতীয়টি এবং নামাজ পড়লে সব গিঁট খুলে যায়। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১১৪২)

৫. একে অন্যকে সহযোগিতা: পরিবার ও প্রতিবেশীদের একে অপরকে নামাজে জাগানোর জন্য উৎসাহিত করো। আল্লাহ বলেন, “তুমি তোমার পরিবারকে নামাজের আদেশ দাও এবং এতে অবিচল থাকো।” (সুরা : ত্বাহা, আয়াত : ১৩২)

৬. অ্যালার্ম ব্যবহার: একটি অ্যালার্ম ঘড়ি ব্যবহার করো এবং সেটি বিছানা থেকে দূরে রাখো, যেন অ্যালার্ম বন্ধ করতে উঠে দাঁড়াতেই হয়। এতে ঘুম ভাঙা সহজ হয় এবং অলসতা দূর হয়।

৭. ঘুমন্ত ব্যক্তিকে পানি ছিটানো: রাসুল (সা.) বলেছেন, আল্লাহ রহম করুন ওই পুরুষের প্রতি, যে রাতে উঠে নামাজ পড়ে এবং তার স্ত্রীকে জাগায়; যদি সে উঠতে অস্বীকার করে, তবে তার মুখে পানি ছিটিয়ে দেয়। নারীর ক্ষেত্রেও একই নিয়ম। (আবু দাউদ, হাদিস : ১৩০৮)

৮. জাগ্রত হওয়ার পর দ্রুত ওঠা: ঘুম থেকে ওঠার পর দেরি না করে দ্রুত বিছানা ছেড়ে উঠতে হবে। সাহাবিরা নবীজির (সা.) প্রথম আজান শুনেই সঙ্গে সঙ্গে দ্রুত উঠে দাঁড়াতেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১১৪৬)

৯. দুপুরে অল্প বিশ্রাম (কাইলুলা): দুপুরের পর অল্প সময় ঘুমানো বা বিশ্রাম নেওয়া ফজরের নামাজের জন্য সহায়ক। এতে শরীর ও মন দুটিই সতেজ হয়। রাসুল (সা.) বলেছেন, “দুপুরে কিছুটা বিশ্রাম নাও, কেননা শয়তান বিশ্রাম নেয় না।” (সহিহ বুখারি : ৪৪৩১)

১০. পাপ ও গুনাহ থেকে দূরে থাকা: গুনাহ হৃদয়কে অন্ধ ও কঠিন করে দেয়, ফলে নামাজের আগ্রহ কমে যায়। রাসুল (সা.) বলেছেন, যে হৃদয় তা গ্রহণ করবে, তার মধ্যে একটি কালো দাগ পড়বে, যা তাকে না ভালো চিনতে দেবে, না মন্দ থেকে বিরত রাখবে। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ২৩১)

একটি বাস্তব শিক্ষা

একজন জেল কর্মকর্তা বলেছিলেন, “আমি ৪০ বছর ধরে কারাগারে কাজ করেছি। এই সময়ে যেসব মানুষ কারাগারে এসেছে, আমি প্রত্যেককে জিজ্ঞেস করেছি : যেদিন তোমার জীবনে এই বিপর্যয় এসেছিল, সেদিন কি তুমি ‘এশা’ ও ‘ফজর’-এর নামাজ জামাতে আদায় করেছিলে?” তিনি বলেন, একজনও এমন মানুষ পাইনি, যে সেই রাতে দুই নামাজই জামাতে পড়েছিল।’ অতএব, নামাজ মানুষকে শুধু আল্লাহর কাছাকাছি করে না, বরং তাকে দুনিয়ার বিপদ থেকেও রক্ষা করে।

পাঠকের মতামত:

রাজনীতি, নির্বাসন ও নৈতিকতা: শেখ হাসিনার সাক্ষাৎকার দক্ষিণ এশিয়ার বাস্তবতাকে কোথায় নিচ্ছে

রাজনীতি, নির্বাসন ও নৈতিকতা: শেখ হাসিনার সাক্ষাৎকার দক্ষিণ এশিয়ার বাস্তবতাকে কোথায় নিচ্ছে

বাংলাদেশের রাজনীতিতে আবারও এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়েছে শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে। নির্বাসনে থাকা সাবেক প্রধানমন্ত্রী দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট পত্রিকাকে... বিস্তারিত

উচ্চ রক্তচাপই স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়: জীবন রক্ষায় প্রতিরোধের উপায়গুলি জেনে নিন

উচ্চ রক্তচাপই স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়: জীবন রক্ষায় প্রতিরোধের উপায়গুলি জেনে নিন

অ্যাপোলো মাল্টিস্পেশালিটি হাসপাতালের নিউরোসার্জন ডা. দেবর্ষি চট্টোপাধ্যায় সতর্ক করে বলেছেন যে, অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপ বা হাইপারটেনশনের কারণেই যেকোনো সময় স্ট্রোক... বিস্তারিত