জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি নিশ্চিতে এনসিপির কঠোর আহবান

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ২৯ ১৬:২৩:৩৬
জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি নিশ্চিতে এনসিপির কঠোর আহবান
ফাইল ছবি

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) সরকারের প্রতি আহবান জানিয়ে বলেছে, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে তার আইনি ভিত্তি নিশ্চিত করতে অগ্রাধিকার হিসেবে প্রথম খসড়া (প্রস্তাব-১) গ্রহণ করতে হবে। এনসিপি মনে করে, সনদকে শুধু রাজনৈতিক সমঝোতার দলিল হিসেবে নয়, বরং কার্যকর আইনগত কাঠামো হিসেবে গড়ে তোলাই মূল লক্ষ্য।

পার্টির পক্ষ থেকে জানানো হয়, জুলাই সনদে স্বাক্ষর থেকে বিরত থাকার মূল কারণ ছিল এর আইনি ভিত্তি যথাযথভাবে নিশ্চিত না হওয়া। কিন্তু জাতীয় ঐকমত্য কমিশন সম্প্রতি সরকারের কাছে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের রূপরেখা সুপারিশ করেছে। এনসিপি মনে করে, এই প্রক্রিয়ায় পার্টির আপোষহীন অবস্থান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। পাশাপাশি কমিশনের অবদানকেও তারা প্রশংসনীয় হিসেবে অভিহিত করেছে।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশন দুটি স্বতন্ত্র বাস্তবায়ন রূপরেখা সরকারকে প্রস্তাব করেছে। এর মধ্যে সংবিধান সম্পর্কিত নয় এমন সংস্কারের জন্য প্রজ্ঞাপন ও অধ্যাদেশের খসড়া সুপারিশ করা হয়েছে। এনসিপি এই প্রজ্ঞাপন ও অধ্যাদেশ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সরকারকে ত্বরান্বিত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।

তবে সংবিধান সম্পর্কিত অন্তত ৪৮টি সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আলোচনার বিষয় রয়েছে। এনসিপি মনে করে, প্রস্তাব-১ বাস্তবায়ন ছাড়া পুরো সংবিধান সংস্কারের কার্যক্রম ভণ্ডুল হয়ে যেতে পারে। প্রস্তাব-১-এর মাধ্যমে নিশ্চিত করা যায় যে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সংবিধান সংস্কার পরিষদ কার্য সম্পন্ন না হলে সেটিকে সংবিধান সংস্কার আইন হিসেবে গণ্য করা হবে। এটি গণভোটের মাধ্যমে সনদের কার্যকরী ম্যান্ডেট নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে অত্যাবশ্যকীয়।

এনসিপি আরও উল্লেখ করেছে, প্রস্তাব-১-এ কিছু ভাষিক অস্পষ্টতা বিদ্যমান যা সংশোধন করা জরুরি। উদাহরণস্বরূপ, ৮(ক) ধারায় “গাঠনিক ক্ষমতা প্রয়োগ করিতে পারিবে”কে পরিবর্তন করে “করিবে” লেখা প্রয়োজন এবং ৮(ঘ) ধারায় সংবিধান সংস্কার বিলের বিষয়াদি “বিবেচনা করিবে” অংশটি অস্পষ্টতা তৈরি করছে, যা পরিষ্কার করতে হবে।

পক্ষান্তরে, এনসিপি সরকারের প্রতি আহবান জানাচ্ছে যে, সংবিধান সংস্কার বিলের খসড়া দ্রুত প্রণয়ন ও জনগণের কাছে উন্মুক্ত করা হোক। সনদ বাস্তবায়নের আইনি ভিত্তি সম্পন্ন হলে, এনসিপি বিশ্বাস করে, জুলাই সনদে স্বাক্ষর প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হবে এবং রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় অগ্রগতি সম্ভব হবে।

সংক্ষেপে, এনসিপি সরকারের প্রতি তিনটি মূল আহবান জানিয়েছে:১. জুলাই সনদ বাস্তবায়নের প্রথম খসড়া (প্রস্তাব-১) গ্রহণ করে আইনি ভিত্তি নিশ্চিত করা।২. সংবিধান সংস্কার বিল খসড়া দ্রুত প্রণয়ন ও জনগণের নিকট উন্মুক্তকরণ।৩. আইনি ভিত্তিসম্পন্ন আদেশের খসড়া গ্রহণের মাধ্যমে সনদ স্বাক্ষরের প্রক্রিয়ায় অগ্রগতি তৈরি করা।

(হাসনাত আব্দুল্লাহর ফেসবুক থেকে)


বিজয় দিবসেই লন্ডনের মঞ্চে শেষবারের মতো তারেক রহমান

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৬ ১৮:৫৫:৫৪
বিজয় দিবসেই লন্ডনের মঞ্চে শেষবারের মতো তারেক রহমান
ছবি : সংগৃহীত

দীর্ঘ প্রবাস জীবনের ইতি টেনে দেশে ফেরার চূড়ান্ত প্রস্তুতির অংশ হিসেবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আজ মঙ্গলবার মহান বিজয় দিবসের দিনে লন্ডনে নিজের শেষ দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নিতে যাচ্ছেন। যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বিদায় ও দিকনির্দেশনা প্রদানের লক্ষ্যে স্থানীয় সময় বিকেল ৫টায় লন্ডনের সিটি প্যাভিলিয়নে আয়োজিত এই সমাবেশে তিনি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন এবং নেতাকর্মীদের উদ্দেশে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখবেন। লন্ডনের স্থানীয় বিএনপি নেতারা নিশ্চিত করেছেন যে সময়ের স্বল্পতার কারণে কমিউনিটি ও সুধীজনদের সঙ্গে আলাদা কোনো অনুষ্ঠানের আয়োজন করা সম্ভব হয়নি তাই আজকের এই সমাবেশটিই কার্যত তারেক রহমানের আনুষ্ঠানিক বিদায়ী অনুষ্ঠান হিসেবে গণ্য হচ্ছে।

যুক্তরাজ্য বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খসরুজ্জামান খসরু জানিয়েছেন যে প্রিয় নেতার দেশে ফেরার আগে লন্ডনে অনুষ্ঠিতব্য এই সম্ভাব্য শেষ জনসভায় অংশ নেওয়ার জন্য নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা ও আগ্রহ তৈরি হয়েছে এবং অনুষ্ঠানটি সফল করতে দলের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। আজকের এই হাইভোল্টেজ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এম এ মালিক এবং সভা পরিচালনার দায়িত্বে থাকবেন বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও যুক্তরাজ্য বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কয়ছর এম আহমেদ। দলীয় সূত্রমতে জানা গেছে আগামী ২৪ ডিসেম্বর তারেক রহমান যখন লন্ডনের কিংস্টনের বাসভবন থেকে হিথ্রো বিমানবন্দরের উদ্দেশে রওনা হবেন তখন রাস্তার দুই পাশে দাঁড়িয়ে হাজারো নেতাকর্মী তাকে বিদায় সংবর্ধনা জানাবেন। উল্লেখ্য ২০০৭ সালের এক-এগারোর পটপরিবর্তনের পর কারাবরণ এবং পরবর্তীতে ২০০৮ সালে চিকিৎসার জন্য সপরিবারে যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমানোর পর থেকে দীর্ঘ দেড় যুগ ধরে তিনি সেখানেই অবস্থান করছিলেন এবং আজকের এই কর্মসূচির মধ্য দিয়ে তার দীর্ঘ লন্ডন অধ্যায়ের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘটতে যাচ্ছে।


তারেককে নিয়ে রিল বানালেই পুরস্কার! বিএনপির অভিনব ঘোষণা

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৬ ১৮:২৭:২২
তারেককে নিয়ে রিল বানালেই পুরস্কার! বিএনপির অভিনব ঘোষণা
ছবি : সংগৃহীত

দীর্ঘ ১৮ বছরের নির্বাসিত জীবনের অবসান ঘটিয়ে আগামী ২৫ ডিসেম্বর লন্ডন থেকে দেশে ফিরছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং তার এই প্রত্যাবর্তনকে কেন্দ্র করে দলটির নেতাকর্মীদের মধ্যে বিরাজ করছে এক উৎসবমুখর পরিবেশ। তারেক রহমানের ঢাকায় বসবাসের জন্য গুলশান এভিনিউয়ের ১৯৬ নম্বর বাসাটি চূড়ান্ত করা হয়েছে যা মূলত সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান নিহত হওয়ার পর তৎকালীন সরকারের মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্তে খালেদা জিয়াকে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল এবং সম্প্রতি গণপূর্ত উপদেষ্টা ও রাজউক চেয়ারম্যান এই বাড়ির দলিলপত্র বিএনপি চেয়ারপারসনের কাছে হস্তান্তর করেছেন। তারেক রহমানের নতুন এই বাসভবনটি খালেদা জিয়ার বর্তমান বাসভবন ‘ফিরোজা’র ঠিক পাশেই অবস্থিত এবং সেখানে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে যে নিরাপত্তার জন্য বাসার সামনে ছাউনি বসানো হয়েছে এবং সড়কজুড়ে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনের কাজও প্রায় শেষ পর্যায়ে।

তারেক রহমানের দাপ্তরিক কাজ পরিচালনার জন্য গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয় এবং নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আলাদা চেম্বার প্রস্তুত করার পাশাপাশি গুলশানের ৯০ নম্বর সড়কের ১০/সি বাড়িটি নতুন অফিস হিসেবে ভাড়া নেওয়া হয়েছে যেখান থেকে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। চারতলা বিশিষ্ট এই নতুন ভবনে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার পাশাপাশি দোতলায় ব্রিফিং রুম এবং অন্যান্য তলায় গবেষণা সেলসহ বিভিন্ন বিভাগের জন্য বসার সুব্যবস্থা করা হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে এই নতুন কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তারেক রহমানের উপদেষ্টা মাহদী আমিন ‘আমার ভাবনায় বাংলাদেশ’ শিরোনামে একটি জাতীয় রিল মেকিং প্রতিযোগিতার ঘোষণা দেন এবং জানান যে এই কার্যালয়টি মূলত নির্বাচনী কার্যক্রমের কেন্দ্রবিন্দু হবে।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানিয়েছেন যে আগামী ২৫ ডিসেম্বর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তারেক রহমানকে স্বাগত জানাতে দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা সড়কের দুই পাশে সুশৃঙ্খলভাবে অবস্থান নিয়ে তাদের প্রিয় নেতাকে রাজকীয় অভ্যর্থনা জানাবেন। এই প্রস্তুতি সফল করতে গতকাল গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনগুলোর এক যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে যেখানে অভ্যর্থনার বিস্তারিত পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করা হয়। বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান আবেগঘন কণ্ঠে বলেন যে তারা বহু বছর ধরে এই দিনটির অপেক্ষায় ছিলেন এবং তারা বিশ্বাস করেন যে তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তনের মাধ্যমেই দেশে হারানো গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হবে এবং একটি আধুনিক ও স্বনির্ভর রাষ্ট্র গঠনের স্বপ্ন বাস্তবায়িত হবে।


৫০ জন প্রার্থীকে হত্যার মিশন নিয়েছে আওয়ামী লীগ: রাশেদ

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৬ ১১:৩০:৩৩
৫০ জন প্রার্থীকে হত্যার মিশন নিয়েছে আওয়ামী লীগ: রাশেদ
ছবি : সংগৃহীত

মহান বিজয় দিবসের দিনে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান এক বিস্ফোরক অভিযোগ উত্থাপন করে বলেছেন যে আওয়ামী লীগ একটি ভয়ংকর মিশন হাতে নিয়েছে যার অংশ হিসেবে তারা প্রায় ৫০ জন সম্ভাব্য প্রার্থীকে হত্যা করার পরিকল্পনা করেছে। মঙ্গলবার সকালে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি দাবি করেন যে এই হত্যা মিশনের শুরুটা হয়েছে বিপ্লবী যোদ্ধা ও ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার কণ্ঠস্বর ওসমান হাদির ওপর হামলার মধ্য দিয়ে যাকে হত্যার উদ্দেশ্যেই মাথায় গুলি চালানো হয়েছিল। হাদির ওপর হামলার ঘটনায় এখনো পর্যন্ত কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করতে না পারায় তিনি তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সাম্প্রতিক ঘোষণার সমালোচনা করে রাশেদ খান বলেন যে আসামিদের ধরিয়ে দিতে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণার বিষয়টি প্রমাণ করে গোয়েন্দা সংস্থা পুলিশ র‍্যাব ও যৌথ বাহিনী তাদের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হচ্ছে। তিনি সরকারের প্রতি ইঙ্গিত করে মন্তব্য করেন যে এর আগে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ ঘোষণা করা হলেও এখন সময় এসেছে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ২’ শুরু করার যার লক্ষ্য হওয়া উচিত খোদ সরকারে উপদেষ্টা পরিষদে ও বিভিন্ন দপ্তরে ঘাপটি মেরে থাকা ফ্যাসিবাদের দোসরদের খুঁজে বের করা। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের কার্যক্রম নিয়ে হতাশা ব্যক্ত করে তিনি বলেন যে রাষ্ট্র পরিচালনায় তাদের অযোগ্যতা অদক্ষতা এবং উপদেষ্টাদের মধ্যে চরম সমন্বয়হীনতা দৃশ্যমান হয়েছে এবং তারা আমেরিকা বা ইউরোপের মতো উন্নত রাষ্ট্র ব্যবস্থার স্বপ্ন দেখালেও বাস্তবে তার কোনো প্রতিফলন ঘটেনি।

স্বাধীনতার ৫৪ বছর পেরিয়ে গেলেও সাম্য মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচারের ভিত্তিতে একটি নতুন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে না পারার আক্ষেপ জানিয়ে তিনি বলেন যে একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধারা যে স্বপ্নের কথা বলেছিলেন তা আজও অধরা রয়ে গেছে। আওয়ামী লীগের কঠোর সমালোচনা করে ছাত্রনেতা থেকে রাজনীতিক বনে যাওয়া রাশেদ খান মন্তব্য করেন যে যারা নিজেদের মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তি দাবি করে তারাই মূলত ২০১৪ ২০১৮ ও ২০২৪ সালের পাতানো নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা ও গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে। তিনি আরও যোগ করেন যে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও বাকস্বাধীনতার যে বাংলাদেশ গড়ার কথা ছিল তা আওয়ামী লীগের দুঃশাসনের কারণে সম্ভব হয়নি বরং তারা মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনাকেই ভূলুণ্ঠিত করেছে।


নতুন রাজনীতি হবে চাঁদাবাজ ও দখলদারদের বিপক্ষে: জামায়াত

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৬ ১১:১১:৪১
নতুন রাজনীতি হবে চাঁদাবাজ ও দখলদারদের বিপক্ষে: জামায়াত
ছবি : সংগৃহীত

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক বিশাল যুব র‍্যালিতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান দেশের প্রচলিত ঘুনে ধরা রাজনৈতিক সংস্কৃতির আমূল পরিবর্তনের ডাক দিয়ে বলেছেন যে অতীতের সব বস্তাপচা রাজনীতিকে তিনি পায়ের তলে পিষে ফেলতে চান। মঙ্গলবার সকালে ‘রাজপথে বিজয়ে’ শীর্ষক ম্যারাথন ও যুব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে ঘোষণা করেন যে যারা পুরনো ও অকার্যকর রাজনীতির পাহারাদারি করার চেষ্টা করবে তারা নিজেরাই একসময় অচল মালে পরিণত হবে। তিনি স্পষ্ট করেন যে এখন সময় হয়েছে বাংলাদেশে এক নতুন ধারার রাজনীতি শুরু করার যা হবে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার পক্ষে এবং বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর হাতিয়ার। জামায়াত আমিরের মতে আগামীর রাজনীতি হবে দুর্নীতিবাজ, চাঁদাবাজ, দখলদার, মামলাবাজ ও ধর্ষণকারীদের বিরুদ্ধে এক কঠোর প্রতিরোধ এবং সেখানে কোনো অন্যায়ের ঠাঁই হবে না।

আওয়ামী লীগের দীর্ঘ শাসনামলের তীব্র সমালোচনা করে তিনি বলেন যে স্বাধীন বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনাকে একটি নির্দিষ্ট পরিবার, গোষ্ঠী ও দলের স্বার্থে ব্যবহার করা হয়েছে এবং সোনার বাংলা গড়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তারা মূলত দেশকে একটি শ্মশানে পরিণত করেছিল। ইতিহাসের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে তিনি উল্লেখ করেন যে ১৯৭০ সালের নির্বাচনের পর যখন পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর বৈষম্যের কারণে যুদ্ধ অনিবার্য হয়ে উঠেছিল তখন দেশের মানুষ একাট্টা হলেও স্বাধীনতার পর একটি দল মুক্তিযুদ্ধকে নিজেদের পৈতৃক সম্পত্তি এবং বাকি জনগণকে দাসে পরিণত করার অপচেষ্টা চালিয়েছে। ডা. শফিকুর রহমান অভিযোগ করেন যে রক্ষী বাহিনীর নামে দেশে এক জল্লাদ বাহিনী গড়ে তোলা হয়েছিল এবং বিদেশ থেকে আসা ত্রাণ চুরির ফলে ১৯৭৪ সালে যে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি হয় তাতে লাখো মানুষ প্রাণ হারায় যাদের শেষমেশ আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামের মাধ্যমে দাফন করতে হয়েছিল।

বিগত সরকারের তিন মেয়াদের শাসনকালকে রক্তপাত ও লাশের রাজনীতি হিসেবে অভিহিত করে তিনি বলেন যে লগি-বৈঠার তাণ্ডব, বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনা, শাপলা চত্বরের নৃশংসতা এবং সুবর্ণচরে ভোটের অপরাধে নারীর ওপর বর্বরতা ছিল তাদের ফ্যাসিবাদী চরিত্রের বহিঃপ্রকাশ। সাম্প্রতিক সময়ে ওসমান হাদির ওপর হামলার প্রসঙ্গ টেনে তিনি সতর্ক করে দেন যে ফ্যাসিবাদীরা পালিয়ে গেলেও তাদের ষড়যন্ত্র থামেনি এবং তারা এখনো দেশে অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছে। আসন্ন ফেব্রুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া নির্বাচন প্রসঙ্গে জামায়াত আমির আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে এই নির্বাচন কোনো নির্দিষ্ট দলের বিজয় নয় বরং ১৮ কোটি মানুষের বিজয়ের দ্বার উন্মোচন করবে। নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনকে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়ে তিনি হুঁশিয়ারি দেন যে কালো টাকার বিনিময়ে মানুষ কেনার দিন শেষ হয়ে গেছে এবং কোনো বিশেষ দলকে অন্যায্য সুবিধা দেওয়ার চেষ্টা করা হলে জনগণ তা কঠোর হাতে প্রতিহত করবে। যুবসমাজের ওপর আস্থা রেখে তিনি বলেন যে আজকের এই বিজয় দিবস কেবল স্মরণের দিন নয় বরং পুরোনো রাজনীতির কবর রচনা করে এক নতুন ও শান্তির বাংলাদেশ গড়ার শপথ নেওয়ার দিন।


জিয়া বিদ্রোহ না করলে দেশ স্বাধীন হতো না: হাফিজ

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৬ ০৯:১৮:৫৪
জিয়া বিদ্রোহ না করলে দেশ স্বাধীন হতো না: হাফিজ
বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম। ছবি: সংগৃহীত

একাত্তরের রণাঙ্গনের অন্যতম সাহসী যোদ্ধা এবং বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম দ্ব্যর্থহীন ভাষায় মন্তব্য করেছেন যে মহান মুক্তিযুদ্ধ কোনো নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের একক এজেন্ডা ছিল না বরং এটি ছিল সমগ্র জাতির অস্তিত্ব রক্ষার এক মহাকাব্যিক লড়াই। সোমবার রাজধানীর বনানীর বাসভবনে যুগান্তরকে দেওয়া এক একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি স্পষ্ট করেন যে সব শ্রেণি-পেশার মানুষের অংশগ্রহণেই এই বিজয় অর্জিত হয়েছে এবং বিশেষ করে মেজর জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সৈনিকরা যদি সেদিন বিদ্রোহ না করতেন তবে হয়তো মুক্তিযুদ্ধও হতো না এবং বাংলাদেশও স্বাধীন হতো না। মুক্তিবাহিনীর মধ্যে তার নেতৃত্বাধীন প্রথম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টই সবচেয়ে বেশি সাহসিকতা পুরস্কার অর্জন করেছে এবং একইসঙ্গে সর্বাধিক সংখ্যক শহীদ হওয়ার গৌরবও এই ব্যাটালিয়নের বলে তিনি গর্বভরে উল্লেখ করেন।

রণাঙ্গনের এই অকুতোভয় বীর স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে জানান যে ১৪ ডিসেম্বর ছিল তার জীবনের এক অলৌকিক দিন কারণ সেদিন তিনি নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা পেয়েছিলেন যখন তার চারপাশে মেশিনগানের গুলিতে সহযোদ্ধারা লুটিয়ে পড়ছিল। এই যুদ্ধের ভয়াবহতা ও তার বীরত্ব এতটাই অসামান্য ছিল যে কমান্ডার মেজর জিয়াউর রহমান তাকে ‘বীরশ্রেষ্ঠ’ উপাধিতে ভূষিত করার জন্য লিখিত সুপারিশ পর্যন্ত পাঠিয়েছিলেন। ৩০ মার্চ যশোর ক্যান্টনমেন্টে বিদ্রোহের মাধ্যমে তিনি যে যুদ্ধের সূচনা করেছিলেন তার সফল পরিসমাপ্তি ঘটে ১৪ ডিসেম্বর সিলেটে পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে। হাফিজ উদ্দিন আহমেদ আবেগঘন কণ্ঠে বলেন যে যশোর ক্যান্টনমেন্টে আট ঘণ্টার সম্মুখ যুদ্ধের পর তিনি যখন অস্ত্রাগার ভেঙে বাইরে বেরিয়ে আসেন তখন হাজার হাজার সাধারণ গ্রামবাসী দা ও কুড়াল নিয়ে তাদের স্বাগত জানায় এবং তখনই তিনি বাঙালির স্বাধীনতার প্রকৃত স্পিরিট বা আকাঙ্ক্ষা অনুভব করতে পারেন।

যুদ্ধের কৌশলগত দিক বর্ণনা করতে গিয়ে তিনি উল্লেখ করেন যে জুলাই মাসে কামালপুরের ভয়াবহ যুদ্ধে শক্তিশালী বেলুচ রেজিমেন্টের বিপক্ষে লজিস্টিক সাপোর্ট ছাড়াই তিনি এবং ক্যাপ্টেন সালাহ উদ্দিন মাত্র দুইশ সৈন্য নিয়ে আক্রমণ চালিয়েছিলেন যা ছিল মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম ভয়াবহ কনভেনশনাল অ্যাটাক। পরবর্তীতে জেড ফোর্সের অংশ হিসেবে সিলেট দখলের পরিকল্পনা করেন এবং অপ্রচলিত পথ হিসেবে চা বাগানের ভেতর দিয়ে অগ্রসর হয়ে ১৪ ডিসেম্বর সিলেট এমসি কলেজের অধ্যক্ষের বাসভবন এলাকায় পাকিস্তানি বাহিনীর ওপর অতর্কিত হামলা চালান। ভারতীয় বিমান বাহিনীর সহায়তায় এবং মুক্তিযোদ্ধাদের তীব্র প্রতিরোধের মুখে ১৫ ডিসেম্বর পাকিস্তানি বাহিনী আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মসমর্পণের বার্তা পাঠায় যা ছিল তাদের জন্য এক চূড়ান্ত আনন্দের মুহূর্ত। তবে এই বিজয়ের আনন্দ ছিল বিষাদমাখা কারণ তার ব্যাটালিয়নের ২০০ জন সাহসী সৈনিক এবং ক্যাপ্টেন সালাহউদ্দিন ও লেফটেন্যান্ট আনোয়ারের মতো মেধাবী অফিসাররা সম্মুখযুদ্ধে শহীদ হয়েছিলেন। বর্তমান প্রেক্ষাপট নিয়ে বর্ষীয়ান এই রাজনীতিক ও সাবেক মন্ত্রী আহ্বান জানান যে মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনা অর্থাৎ সামাজিক সুবিচার সাম্য ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে এবং কেউ যেন এই মহান অর্জনকে ছোট করার হীন চেষ্টা না করে।


প্রতিশোধ নয় গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ চাই: তারেক রহমান

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৫ ২১:৩৬:৫৯
প্রতিশোধ নয় গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ চাই: তারেক রহমান
ছবি : সংগৃহীত

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলেছেন যে যতদিন বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটি বিশ্বের মানচিত্রে টিকে থাকবে ততদিন এই গৌরবোজ্জ্বল দিনটির গুরুত্ব ও তাৎপর্য বিন্দুমাত্র মলিন হবে না। তিনি দেশবাসীকে স্মরণ করিয়ে দেন যে বাংলাদেশ হঠাৎ করে গজিয়ে ওঠা কোনো ভূখণ্ড নয় বরং লাখো শহীদের আত্মত্যাগ এবং অসংখ্য মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে এই স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে যা জাতির জন্য এক অহংকারের বিষয়। স্বাধীনতার সঠিক ইতিহাস ও প্রেক্ষাপট তুলে ধরতে গিয়ে তিনি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের লেখা ‘একটি জাতির জন্ম’ নিবন্ধটিকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ও প্রামাণ্য দলিল হিসেবে অভিহিত করেন।

তারেক রহমান তার বক্তব্যে অভিযোগ করেন যে পতিত ও পলাতক একটি বিশেষ রাজনৈতিক চক্র দীর্ঘ সময় ধরে নিজেদের হীন দলীয় স্বার্থ চরিতার্থ করতে মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার ইতিহাসকে বিকৃত করেছে এবং এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে পরাজিত শক্তি এখন বিজয়ের এক নতুন বিভ্রান্তিকর ইতিহাস রচনার অপচেষ্টা চালাচ্ছে যা শহীদদের রক্তের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতার শামিল। তিনি দলের নেতাকর্মী ও দেশবাসীর উদ্দেশ্যে স্পষ্ট করেন যে পরাজিত শক্তির বিরুদ্ধে কোনো প্রকার প্রতিশোধ নেওয়া বিএনপির লক্ষ্য নয় বরং বিজয়ের প্রকৃত সুফল প্রতিটি নাগরিকের ঘরে পৌঁছে দেওয়ার জন্য একটি স্বনির্ভর ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ে তোলাই আজকের দিনের মূল অঙ্গীকার হওয়া উচিত। জনগণের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন ছাড়া স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র কখনোই টেকসই হতে পারে না এবং ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর থেকে শুরু করে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত ইতিহাসের বিভিন্ন বাঁকে এই সত্য বারবার প্রমাণিত হয়েছে বলে তিনি মত প্রকাশ করেন।

আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণাকে জনগণের দীর্ঘদিনের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন হিসেবে উল্লেখ করলেও তিনি সতর্ক করে বলেন যে ষড়যন্ত্র এখনো পুরোপুরি থামেনি এবং গণতন্ত্রের সাহসী সন্তান ওসমান হাদির ওপর সাম্প্রতিক হামলা সেই গভীর চক্রান্তেরই একটি অংশ মাত্র। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ব্যর্থ হলে বা দেশে নির্বাচন না হলে কারা লাভবান হবে সেই মোক্ষম প্রশ্ন তুলে তিনি ষড়যন্ত্রকারীদের পরিচয় সম্পর্কে ইঙ্গিত দেন এবং বলেন যে আল্লাহর ওপর ভরসা রেখে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন চালিয়ে গেলে অপশক্তি পিছু হটতে বাধ্য হবে। বক্তব্যের শেষ পর্যায়ে তারেক রহমান আগামী দশককে রূপান্তরের দশক হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন এবং একটি বৈষম্যহীন মানবিক বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে দলমত নির্বিশেষে সবাইকে বিভাজন ও হিংসা ভুলে মানুষ হিসেবে একে অপরের পাশে দাঁড়ানোর উদাত্ত আহ্বান জানান।


আমরা নিরাপদ না থাকলে শত্রুরাও নিরাপদ থাকবে না: মাহফুজ

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৫ ২১:১৯:৫৯
আমরা নিরাপদ না থাকলে শত্রুরাও নিরাপদ থাকবে না: মাহফুজ
ছবি : সংগৃহীত

সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম দ্ব্যর্থহীন ভাষায় হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন যে যারা এই দেশে বসে ভারতের স্বার্থ রক্ষা করবে তাদের কোনোভাবেই নিরাপদ থাকতে দেওয়া হবে না। সোমবার রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ইনকিলাব মঞ্চ আয়োজিত সর্বদলীয় প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এই বিস্ফোরক মন্তব্য করেন এবং স্পষ্ট জানিয়ে দেন যে আমরা যদি নিরাপদ না থাকি তবে এদেশে আমাদের শত্রুরাও নিরাপদ থাকবে না কারণ এটাই এখন অস্তিত্বের মূল শর্ত বা বেসিক কন্ডিশন। ঢাকা ৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির ওপর বর্বরোচিত সশস্ত্র হামলার প্রতিবাদে আয়োজিত এই সমাবেশে মাহফুজ আলম অভিযোগ করেন যে ভারতীয় আধিপত্য টিকিয়ে রাখার স্বার্থে বাংলাদেশে পরিকল্পিতভাবে সাংস্কৃতিক অঙ্গন বুদ্ধিজীবী মহল ও আইন অঙ্গনের একটি বড় অংশকে কব্জা করা হয়েছে।

তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন যে সমাজের একটি অংশ নিজেদের বিবেক ও চিন্তাকে বিক্রি করে দিয়েছে এবং আরেকটি অংশ সচেতনভাবেই বাংলাদেশে অবস্থান করে দেশের বিরুদ্ধে নানামুখী অপতৎপরতায় লিপ্ত রয়েছে যাদের তিনি ভিনদেশি ‘অ্যাসেট’ হিসেবে অভিহিত করেন। মাহফুজ আলমের মতে ওসমান হাদি মূলত এই ভিনদেশি অ্যাসেটদের বিরুদ্ধেই লড়াইয়ে অবতীর্ণ হয়েছিলেন এবং বিদেশি স্বার্থরক্ষাকারীরা তাকে হত্যার জন্য নানা যুক্তি তৈরি করেছে যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। হাদিকে যখন গুলি করে হত্যার চেষ্টা করা হলো তখন তথাকথিত প্রগতিশীল বুদ্ধিজীবী ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের অনেকেই রহস্যজনক নীরব ভূমিকা পালন করেছেন বলে অভিযোগ করেন সাবেক এই উপদেষ্টা এবং তিনি প্রশ্ন তোলেন যে আক্রমণের সময় কেন কেউ প্রতিবাদ করেনি বা কোনো শব্দ উচ্চারণ করেনি।

৫ আগস্টের পটপরিবর্তনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি আক্ষেপ করে বলেন যে তখন মুজিববাদী আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসীদের বাড়িঘর গুড়িয়ে দেওয়ার ক্ষমতা তাদের ছিল কিন্তু তারা সংবরণ করেছিলেন তবে এখন মনে হচ্ছে ক্ষমা করে তারা ভুল করেছেন এবং ভবিষ্যতে আর কাউকে ক্ষমা করা হবে না। তিনি কঠোর ভাষায় সতর্ক করে বলেন যে পরিস্থিতি অত্যন্ত সংকটময় তাই আমাদের গায়ে হাত দিলে ছেড়ে দেওয়া হবে না বরং একটা লাশ পড়লে আমরাও পাল্টা লাশ নেব এবং অনেক সুশীলতা বা ধৈর্য দেখানো হয়েছে কিন্তু আর কোনো আপস বা রিকনসিলিয়েশন করা হবে না। মাহফুজ আলম তার বক্তব্যের শেষ পর্যায়ে ইঙ্গিত দেন যে যদি এদেশের মুক্তির লড়াই দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন হয় তবে তাও করা হবে এবং শত্রুদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।


হাদির ওপর হামলায় ক্ষুব্ধ জামায়াত আমির দিলেন সিইসিকে হুঁশিয়ারি

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৫ ১৮:৪৮:০৫
হাদির ওপর হামলায় ক্ষুব্ধ জামায়াত আমির দিলেন সিইসিকে হুঁশিয়ারি
বক্তব্য রাখেন জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান। পুরোনো ছবি

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদির ওপর বর্বরোচিত সশস্ত্র হামলার ঘটনায় দেশজুড়ে যখন নিন্দার ঝড় বইছে তখন প্রধান নির্বাচন কমিশনারের এ সংক্রান্ত মন্তব্যকে অত্যন্ত দায়িত্বহীন আখ্যায়িত করে গভীর ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে জামায়াতের ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখা আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি স্পষ্ট ভাষায় দাবি জানান যে সিইসিকে অবিলম্বে তার ওই বিতর্কিত বক্তব্য ও অবস্থান সম্পর্কে জাতির সামনে সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা প্রদান করতে হবে। ডা. শফিকুর রহমান তার বক্তব্যে ক্ষোভের সঙ্গে উল্লেখ করেন যে একজন বিপ্লবী নেতা গুলিবিদ্ধ হওয়ার পরই কেবল সরকারের টনক নড়বে বা তারা নড়েচড়ে বসবে এমন প্রতিক্রিয়াশীল সরকার তারা কখনোই প্রত্যাশা করেন না বরং তারা চান একটি জনবান্ধব ও প্রো-অ্যাক্টিভ প্রশাসন।

গত চুয়ান্ন বছর ধরে দেশের মানুষের ভাগ্য এক গভীর চোরাবালিতে আটকা পড়েছিল বলে মন্তব্য করে জামায়াত আমির বলেন যে জুলাই অভ্যুত্থানের মাধ্যমে জাতীয় ঐক্যের যে বিরল সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে তাকে কাজে লাগিয়েই আমাদের সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। তিনি দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে ঘোষণা দেন যে আগামীতে জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে জামায়াত রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পেলে একা নয় বরং সব রাজনৈতিক দলকে সঙ্গে নিয়ে একটি ঐক্যবদ্ধ ও অংশগ্রহণমূলক সরকার গঠন করে জাতিকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে। ফ্যাসিবাদের দীর্ঘ শাসনামলে অনেকেই আপসকামিতার পথ বেছে নিলেও জামায়াত কখনোই অন্যায়ের কাছে মাথানত করেনি এবং ভবিষ্যতেও করবে না বলে তিনি দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। গণমাধ্যমের ভূমিকার সমালোচনা করে তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন যে ভালো না লাগলে প্রয়োজনে জামায়াতকে ব্ল্যাকআউট করুন কিন্তু কোনোভাবেই খণ্ডিত বা বিকৃত বক্তব্য প্রচার করে দলের বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রপাগান্ডা ছড়াবেন না কারণ গঠনমূলক সমালোচনাকে আমরা স্বাগত জানাই কিন্তু জাতীয় স্বার্থ ক্ষুণ্নকারী সাংবাদিকতা কখনোই কাম্য নয়।

একই অনুষ্ঠানে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান মন্তব্য করেন যে স্বাধীনতার মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য আজো অধরা রয়ে গেছে কারণ বিগত শাসকরা কেবল নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তনে ব্যস্ত ছিলেন এবং হাদির ওপর হামলার দায় স্বীকার করে ব্যর্থতার কারণে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ করা উচিত বলে তিনি মত দেন। অপর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম মাসুম আক্ষেপ করে বলেন যে শাসকদের বিভাজনের রাজনীতির কারণেই জাতি বারবার দ্বিখণ্ডিত হয়েছে এবং অভ্যুত্থানের মাধ্যমে অর্জিত ইস্পাতকঠিন ঐক্য ধরে রাখতে ব্যর্থ হওয়ার কারণেই আজ হাদির মতো বিপ্লবীদের ওপর হামলার দুঃসাহস দেখাচ্ছে দুর্বৃত্তরা।


শকুনেরা আবারও স্বাধীনতা খামচে ধরছে: সারজিস

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৫ ১৮:৪৩:০৮
শকুনেরা আবারও স্বাধীনতা খামচে ধরছে: সারজিস
ছবি : সংগৃহীত

জাতীয় নাগরিক পার্টির উত্তরাঞ্চলের প্রধান সংগঠক সারজিস আলম সোমবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এক বিশাল প্রতিরোধ সমাবেশে অংশ নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে স্বাধীনতার চুয়ান্ন বছর পেরিয়ে গেলেও দেশবিরোধী অপশক্তি বা 'শকুনেরা' এখনো আমাদের সার্বভৌমত্বকে ক্ষতবিক্ষত করার হীন প্রচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র এবং আসন্ন নির্বাচনের সম্ভাব্য প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির ওপর বর্বরোচিত সশস্ত্র হামলার প্রতিবাদে আয়োজিত এই সর্বদলীয় সমাবেশে তিনি দ্ব্যর্থহীন ভাষায় ঘোষণা করেন যে জুলাইয়ের রক্তঝরা বিপ্লবের মাধ্যমে অর্জিত নতুন স্বাধীনতাকে কোনোভাবেই নস্যাৎ হতে দেওয়া হবে না। সারজিস আলম তার জ্বালাময়ী বক্তব্যে স্মরণ করিয়ে দেন যে স্বৈরাচারী শক্তি এর আগে রংপুরের আবু সাঈদের বুকে গুলি চালিয়ে ছাত্র জনতার আন্দোলনকে স্তব্ধ করতে চেয়েছিল কিন্তু তারা চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে এবং ঠিক একইভাবে হাদির ওপর কাপুরুষোচিত হামলা চালিয়ে চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের সেই অদম্য স্পিরিট বা চেতনাকে দমানোর যে স্বপ্ন তারা দেখছে তা কখনোই বাস্তবে রূপ নেবে না।

তিনি উপস্থিত জনতাকে আশ্বস্ত করে বলেন যে বাংলার মাটিতে এখনো লাখো হাদি বেঁচে আছে যারা নিজেদের জীবন দিয়ে হলেও দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে বদ্ধপরিকর। এদিকে চাঞ্চল্যকর এই হত্যাচেষ্টার ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তদন্তে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধিত হয়েছে এবং রাজধানীর পল্টন থানায় দায়েরকৃত মামলার সূত্র ধরে ইতিমধ্যেই সন্দেহভাজন বেশ কয়েকজন ব্যক্তিকে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। পুলিশি অভিযানে ঘটনার সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত মোটরসাইকেলের মালিক এবং সীমান্তে মানুষ পাচারকারী চক্রের দুই সদস্যকে আটক করার পাশাপাশি মূল অভিযুক্ত শুটার ফয়সালের স্ত্রী শ্যালক ও অন্য একজন নারীকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে যা অপরাধী চক্রের নেটওয়ার্ক ভেঙে দিতে সহায়ক হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

গত শুক্রবার পুরানা পল্টনের জনাকীর্ণ বক্স কালভার্ট রোডে চলন্ত রিকশায় থাকা অবস্থায় সন্ত্রাসীদের বুলেটে বিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হওয়া এই তরুণ রাজনীতিবিদকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সোমবার দুপুরে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স যোগে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়েছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও এভারকেয়ার হাসপাতালে প্রাথমিক নিবিড় পরিচর্যা শেষে জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকা হাদিকে বিদেশে স্থানান্তরের সময়ও তার সহযোদ্ধারা এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা রাজপথে স্লোগান তুলে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের এই সমাবেশে বক্তারা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন যে জুলাই বিপ্লবের নায়কদের ওপর আঘাত কোনোভাবেই সহ্য করা হবে না এবং অবিলম্বে সকল অপরাধীকে খুঁজে বের করে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।

পাঠকের মতামত:

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

রাষ্ট্রের ধারণাটি একসময় কেবল প্রশাসনিক ক্ষমতা, আইনের শাসন এবং নিরাপত্তা প্রদানের সঙ্গে সম্পর্কিত ছিল। কিন্তু আধুনিক বিশ্বে রাষ্ট্রের ভূমিকা এখন... বিস্তারিত