রেনাটার পাশে আইএফসি, আসছে ৭০০ কোটি টাকার ঋণ

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ মে ০৯ ১৩:১৫:৫৯
রেনাটার পাশে আইএফসি, আসছে ৭০০ কোটি টাকার ঋণ

সত্য নিউজ:দেশের অন্যতম প্রধান ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান রেনাটা লিমিটেড-কে প্রায় ৭০০ কোটি টাকা (৫ কোটি ৮০ লাখ মার্কিন ডলার) ঋণ দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক গ্রুপের সহযোগী সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশন (আইএফসি)। এ লক্ষ্যে গতকাল বৃহস্পতিবার (৮ মে) রেনাটা ও আইএফসির মধ্যে একটি আনুষ্ঠানিক ঋণচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এই অর্থায়ন বাংলাদেশের ওষুধশিল্পে অন্যতম বড় আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

ওষুধশিল্পে বড়ধরনের বৈশ্বিক আস্থা ও সমর্থন

এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ঋণের অর্থ ব্যবহার করে রেনাটা মূলত উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি, সরবরাহ শৃঙ্খল শক্তিশালীকরণ এবং উদ্ভাবনী পণ্য উন্নয়নে বিনিয়োগ করবে। এতে দেশের মানুষের জন্য সাশ্রয়ী মূল্যে মানসম্পন্ন ওষুধ সরবরাহের সক্ষমতা আরও বাড়বে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাজারে রপ্তানির দিকেও অগ্রসর হবে রেনাটা, যা দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

আইএফসি ও রেনাটার এই অংশীদারিত্বকে “জেনেরিক ওষুধ শিল্পে বাংলাদেশের বৈশ্বিক নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠার এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ” হিসেবে দেখা হচ্ছে। এতে শুধু উৎপাদন বাড়বে না, দক্ষ কর্মসংস্থানের সুযোগও তৈরি হবে।

রেনাটার বক্তব্য: অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জে বড় সহায়তা

রেনাটার ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ এস কাইসার কবির এই বিনিয়োগকে সময়োপযোগী ও প্রয়োজনীয় হিসেবে অভিহিত করেন। তিনি বলেন,
“ডলার সরবরাহে ঘাটতি, বিনিময় হারের অবমূল্যায়ন ও উচ্চ সুদের হার—এই তিনটি বড় চ্যালেঞ্জের মধ্যে আমরা কাজ করছি। এই পরিস্থিতিতে আইএফসির ঋণ আমাদের জন্য সরবরাহ ব্যবস্থায় স্থিতিশীলতা ও টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে বড় সহায়ক হবে।”

আইএফসি: রেনাটার সক্ষমতা বাড়বে, কর্মসংস্থান তৈরি হবে

আইএফসির দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক আঞ্চলিক পরিচালক ইমাদ এন ফাখুরি জানান,
“রেনাটার সঙ্গে আমাদের এই অংশীদারত্ব কেবল উৎপাদন বা মুনাফার জন্য নয়—এটি বাংলাদেশের ওষুধশিল্পকে বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় এগিয়ে নেওয়ার জন্য।” তিনি আরও বলেন, “এই চুক্তির মাধ্যমে নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে এবং রেনাটার জেনেরিক ওষুধ সরবরাহ বিশ্বব্যাপী আরও বিস্তৃত হবে।”

প্রেক্ষাপট: বাংলাদেশের ফার্মা খাতের অগ্রগতি

বাংলাদেশ ইতোমধ্যে তার ৯৮ শতাংশেরও বেশি ওষুধ চাহিদা দেশীয়ভাবে পূরণ করছে, এবং বিশ্বের ১৫০টিরও বেশি দেশে ওষুধ রপ্তানি করছে। আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন উৎপাদন ও রপ্তানির সক্ষমতা তৈরি হওয়ায় বাংলাদেশের ওষুধশিল্প এখন বৈশ্বিকভাবে প্রতিযোগিতামূলক হয়ে উঠছে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, আইএফসির এই দীর্ঘমেয়াদি ঋণ কেবল রেনাটার জন্য নয়, বরং গোটা ফার্মাসিউটিক্যাল খাতের জন্য একটি বার্তা—বিশ্ব বাংলাদেশের শিল্পকে গুরুত্ব দিচ্ছে এবং ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার স্বীকৃতি দিচ্ছে।

এই বিনিয়োগ দেশের ওষুধশিল্পকে একটি নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারে, যেখানে উদ্ভাবন, মান, এবং বৈশ্বিক বিস্তারে বাংলাদেশ আরও দৃঢ় ভূমিকা পালন করবে। রেনাটা ও আইএফসির অংশীদারত্ব অর্থনীতির একটি কৌশলগত খাতে আন্তর্জাতিক আস্থা ও উন্নয়ন অংশীদারিত্বের অনন্য দৃষ্টান্ত হয়ে উঠতে পারে।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ