দেশের মূল্যস্ফীতি এখনও লক্ষ্যমাত্রার ওপরে, সেপ্টেম্বরের চিত্র প্রকাশ করল বিবিএস

চলতি অর্থবছরের আগস্টে দেশের মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমার পর এক মাস বাদে তা আবারও বেড়েছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, সেপ্টেম্বরে দেশের মূল্যস্ফীতি কিছুটা বেড়ে ৮ দশমিক ৩৬ শতাংশে দাঁড়িয়েছে, যা গত আগস্টে ছিল ৮ দশমিক ২৯ শতাংশ। এই সময়ে দেশের খাদ্য ও খাদ্যবহির্ভূত—উভয় খাতের পণ্যের দামই বেড়েছে।
সোমবার (৬ অক্টোবর) বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর প্রকাশিত মাসিক ভোক্তা মূল্য সূচকে (সিপিআই) মূল্যস্ফীতির এই তথ্য উঠে এসেছে।
লক্ষ্যমাত্রার ওপরে মূল্যস্ফীতি
চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা ৬ দশমিক ৫ শতাংশের মধ্যে রাখার কথা বলা হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি দিলেও, মূল্যস্ফীতি এখনো লক্ষ্যমাত্রার ওপরে থাকায় এই অর্থবছরের লক্ষ্য পূরণ করা কঠিন হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
সিপিআই তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, সেপ্টেম্বর মাসে দেশের খাদ্য মূল্যস্ফীতি কিছুটা বেড়ে ৭ দশমিক ৬৪ শতাংশে দাঁড়িয়েছে (আগস্টে ছিল ৭.৬ শতাংশ)। খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতিও বেড়ে ৮ দশমিক ৯৮ শতাংশে দাঁড়িয়েছে (আগের মাসে ছিল ৮.৯ শতাংশ)।
গ্রামাঞ্চলে জীবনযাত্রার ব্যয় বেশি
সর্বশেষ এ মাসে শহরের তুলনায় গ্রামাঞ্চলের মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় বেশি হয়েছে। সেপ্টেম্বর মাসে গ্রাম এলাকায় গড় মূল্যস্ফীতি বেড়ে ৮ দশমিক ৪৭ শতাংশে দাঁড়িয়েছে, যেখানে শহর এলাকায় তা ৮ দশমিক ২৮ শতাংশে নেমেছে। তবে গ্রামাঞ্চলের মানুষ খাবারের (৭.৫৪ শতাংশ) চেয়ে খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের (৯.৪ শতাংশ) কেনাকাটায় বেশি কষ্ট ভোগ করেছে।
দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের অবস্থান
সরকারের নানা পদক্ষেপের পরও দেশের মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হচ্ছে না। অন্যদিকে, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি মূল্যস্ফীতি এখন বাংলাদেশে। ভারতে বর্তমানে মূল্যস্ফীতি ২.০৭ শতাংশ, পাকিস্তানে ৫.৬ শতাংশ, শ্রীলঙ্কায় ১.৫ শতাংশ এবং নেপালে ১.৬৮ শতাংশ।
তবে একক মাস হিসেবে মূল্যস্ফীতি বাড়লেও, গত বছরের সেপ্টেম্বরের তুলনায় চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ১.৫৬ শতাংশ কমেছে। গত বছরের সেপ্টেম্বরে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ছিল ৯.৯২ শতাংশ।
প্রবাসী আয়ে বড় চমক: সেপ্টেম্বরের রেমিট্যান্স নিয়ে এল সুখবর
বিদায়ী সেপ্টেম্বর মাসে প্রবাসী বাংলাদেশিরা দেশে ২৬৮ কোটি ৫৯ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই হিসাবে প্রতিদিন গড়ে দেশে এসেছে ৮ কোটি ৯৫ লাখ ডলার রেমিট্যান্স। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় রেমিট্যান্স প্রবাহে বড় ধরনের উল্লম্ফন ঘটেছে।
রোববার (৫ অক্টোবর) বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।
রেমিট্যান্স বৃদ্ধির কারণ
গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে রেমিট্যান্স আসার পরিমাণ ছিল ১৬৩ কোটি ৪০ লাখ ডলার। সেই তুলনায় চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে রেমিট্যান্স প্রবাহে বিশাল প্রবৃদ্ধি দেখা দিয়েছে।
ব্যাংক-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, গত আগস্ট মাসে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বৈধ চ্যানেলে প্রবাসী আয়প্রবাহ উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। এছাড়া ডলারের উচ্চ দামও বৈধ পথে প্রবাসী আয় পাঠাতে উৎসাহিত করছে। এসব কারণ মিলিয়ে গত কয়েক মাস ধরেই রেমিট্যান্স আয় বৃদ্ধি পেয়েছে, যার ব্যতিক্রম হয়নি চলতি সেপ্টেম্বর মাসেও।
এর আগে, গত আগস্টে দেশে আসে ২৪২ কোটি ১৮ লাখ ৯০ হাজার মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স এবং জুলাইয়ে এসেছিল ২৪৭ কোটি ৮০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স।
ব্যাংকিং খাতে দক্ষ এমডি পাওয়া এখন বড় চ্যালেঞ্জ: গভর্নর আহসান এইচ মনসুর
বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে দক্ষ ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) খুঁজে পাওয়া এখন বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। শনিবার (৪ অক্টোবর) রাজধানীর ওয়েস্টিন হোটেলের বলরুমে ফিন্যান্সিয়াল এক্সিলেন্স লিমিটেডের ১৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর এই মন্তব্য করেন।
দক্ষ জনবলের ঘাটতি
তিনি বলেন, “ভালো মানের এমডি পাওয়া এখন বড় সমস্যা। এমনকি ভালো হেড অব ডিপার্টমেন্ট খুঁজে পাওয়াও কঠিন হয়ে পড়েছে। সেটা কর্পোরেট বিভাগ হোক বা কনজিউমার বিভাগ—প্রতিটি ক্ষেত্রেই দক্ষ জনবলের ঘাটতি স্পষ্ট।”
গভর্নর আরও বলেন:
“প্রোপার নলেজ ও প্রোপার ট্রেইনিংপ্রাপ্ত এমডি আমরা পাচ্ছি না। এটা ব্যাংকিং খাতের জন্য এক ধরনের ব্যর্থতা। ফলে সামনে আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জ আরও বাড়বে।”
ডিজিটাল ব্যাংকিং প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ যখন আধুনিক প্রশাসনের দিকে অগ্রসর হচ্ছে, তখন প্রতিটি সেক্টরে পর্যাপ্ত দক্ষ জনবল পাওয়া যাচ্ছে না। এমনকি দেশের বেশিরভাগ ব্যাংক এখনো ভারতীয় কোর ব্যাংকিং সফটওয়্যারের ওপর নির্ভর করছে এবং দেশে এখনো নিজস্ব সফটওয়্যার তৈরি সম্ভব হয়নি।
মানসিকতা ও চ্যালেঞ্জ
অনুষ্ঠানে উপস্থিত অর্থনীতিবিদ ও অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, “মানসিকতা খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারণ, প্রশিক্ষিত কিন্তু মানসিকভাবে সঠিকভাবে প্রস্তুত নয় এমন জনবল অনেক সময় অপ্রশিক্ষিত জনবলের চেয়েও বেশি ক্ষতি করতে পারে।” তিনি সতর্ক করেন, আগামী ৪-৫ মাসে দেশের সামনে অনেক বড় চ্যালেঞ্জ আসছে।
অনুষ্ঠানে বক্তারা দক্ষ মানবসম্পদ উন্নয়ন, প্রযুক্তি নির্ভর ব্যাংকিং এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠার ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেন।
১৯৭৪ সালের ১ টাকা এখনকার কত টাকার সমান?
একসময় জমিদারদের প্রতাপ এতটাই ছিল যে, তাদের বাড়ির সামনে দিয়ে জুতো পরে হাঁটার সাহস ছিল না কারও। কিন্তু সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে টাকার মান এমনভাবে বদলে গেছে যে, তখনকার জমিদার জীবনে যত টাকা দেখেছেন, আজকের একজন ভিখারির ঝুলিতেও তার চেয়ে বেশি টাকা থাকতে পারে। তবে এই সংখ্যাধিক্য সত্ত্বেও, সাধারণ মানুষের হাতে থাকা ক্রয়ক্ষমতা অনেক কম—যা আগের দিনের ধনী-গরিবের অর্থনৈতিক ব্যবধানকে আরও প্রকট করেছে।
ক্রয়ক্ষমতার ঐতিহাসিক পতন
সম্প্রতি অর্থ বিভাগ টাকার ক্রয়ক্ষমতার এই পতন নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সেখানে টাকার মান কমে যাওয়ার ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরা হয়েছে:
১৯৭৪ বনাম ২০১৪: প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১৯৭৪-৭৫ অর্থবছরে ১ টাকার ক্রয়ক্ষমতা সমান ছিল ২০১৪ সালের ১২ টাকা ৪৫ পয়সা। অর্থাৎ, ১৯৭৪ সালে ১ টাকায় যা কেনা যেত, ২০১৪ সালে সেটি কিনতে খরচ হয় ১২ টাকারও বেশি।
২০১৪ বনাম ১৯৭৪: অন্যদিকে, ২০১৪ সালের ১ টাকার ক্রয়ক্ষমতা ১৯৭৪ সালের মাত্র ৮ পয়সার সমান। ২০১৪ সালের তুলনায় বর্তমানে ২০২৫ সালে এই হিসাব করতে গেলে ক্যালকুলেটর নিয়ে বসতে হবে।
১৯৭৪ সাল থেকে বর্তমান পর্যন্ত বাংলাদেশে বার্ষিক গড়ে ৭.৩% হারে মূল্যস্ফীতি হয়েছে। এর ফলে সরকারি কয়েন ও ছোট নোটের (১ পয়সা থেকে ২ টাকা) ব্যবহার কার্যত বিলুপ্তির পথে।
স্বাধীনতার পর অর্থনৈতিক অবস্থা কেমন ছিল, তা কয়েকটি উদাহরণে স্পষ্ট:
ঐতিহাসিক মূল্য: স্বাধীনতার পরও মাত্র ২০ টাকায় পাওয়া যেত এক মণ চাল। ১ পয়সায় মিলত চকোলেট। ১৯৭৪ সালে চালের দাম দ্বিগুণ হয়ে ৪০ টাকায় পৌঁছালে সারা দেশে হাহাকার পড়ে যায়।
টিফিনের মূল্য: সেই সময় ধনী পরিবারের ছেলেমেয়েরা স্কুলে টিফিন বাবদ পেত সর্বোচ্চ ৫০ পয়সা থেকে ১ টাকা, যা দিয়ে আইসক্রিম, চকোলেট, ঝালমুড়িসহ অনেক কিছু কেনা যেত।
বর্তমান বাস্তবতা: এখনকার প্রজন্ম এসব শুনলে রূপকথা মনে করে। কারণ আজ ভিক্ষুকও পাঁচ-দশ টাকার কম নিতে চায় না। বাসভাড়ার ন্যূনতম হার এখন ৫ টাকা, আর রাজধানীতে সিটিং বাসে অর্ধ কিলোমিটারের ভাড়া ১০ টাকার কম পাওয়া যায় না।
সময় বদলেছে, টাকার মানও বদলেছে। এক সময়ের "এক টাকা" এখন অনেকটাই কেবল ইতিহাস আর স্মৃতির অংশ।
পোশাক রপ্তানিতে চীনের হারানো বাজার হিস্যা বুঝে নিচ্ছে বাংলাদেশ
বৈশ্বিক বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে ক্রমে অবস্থান হারাচ্ছে প্রধান রপ্তানিকারক দেশ চীন। দেশটির হারানো অবস্থানে হিস্যা বাড়াচ্ছে বাংলাদেশ। মোট রপ্তানি আয়, রপ্তানির পরিমাণ ও পণ্যমূল্য—সব বিবেচনায় চীনের অবস্থান দুর্বল হচ্ছে। বিপরীতে শক্তিশালী হয়েছে বাংলাদেশ। তবে অর্থমূল্যের পরিমাণে চীনের রপ্তানি এখনো বাংলাদেশের দ্বিগুণেরও বেশি।
মার্কিন পাল্টা শুল্ক কাঠামোতে চীন ও অন্য প্রতিযোগী দেশগুলোর তুলনায় যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। রপ্তানিকারক উদ্যোক্তারা আশা করছেন, আগামীতে চীনের বাজার হিস্যা বেশ ভালোভাবে বুঝে নেবে বাংলাদেশ।
দশকের তথ্য-উপাত্তে চিত্র
যুক্তরাষ্ট্রের অফিস অব টেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারেলের (অটেক্সা) ২০১৫ সাল থেকে গত বছর পর্যন্ত এক দশকের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণে দেখা যায়:
রপ্তানি মূল্য: এই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে চীনা তৈরি পোশাকের রপ্তানি কমেছে ৪৬ শতাংশ। বিপরীতে, বাংলাদেশের রপ্তানি বেড়েছে ৩৬ শতাংশ। ২০১৫ সালে চীনে রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৩ হাজার ৫৪ কোটি ডলার, যা গত বছর নেমে আসে ১ হাজার ৬৫১ কোটি ডলারে। অন্যদিকে, বাংলাদেশের রপ্তানি ৫৪০ কোটি ডলার থেকে বেড়ে ৭৩৪ কোটি ডলারে উন্নীত হয়েছে।
রপ্তানির পরিমাণ: পরিমাণে গত এক দশকে যুক্তরাষ্ট্রে চীনা পোশাকের রপ্তানি কমেছে ১৮ শতাংশের বেশি, যেখানে বাংলাদেশের বেড়েছে সাড়ে ৭ শতাংশের মতো।
ইউনিট প্রাইস: যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে চীনা পণ্যের গড় ইউনিট প্রাইসও কমেছে ৩৪ শতাংশ। অন্যদিকে, বাংলাদেশের বেড়েছে সাড়ে ৭ শতাংশের মতো।
সুবিধাজনক অবস্থানে বাংলাদেশ
তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক উদ্যোক্তাদের সংগঠন বিজিএমইএর সাবেক পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, “আগামীতে চীন আরও কম রপ্তানি করবে। সেখানে বাংলাদেশ আরও ভালো করবে।” তিনি বলেন, চীন-যুক্তরাষ্ট্র শুল্ক লড়াই শুরু হওয়ার পর থেকেই চীনা পোশাকের রপ্তানি কমতে থাকে।
তবে রুবেল সতর্ক করে বলেন, “এখন ভলিউমে বেশি রপ্তানি করেও কম মূল্য পাই আমরা। ভিয়েতনাম কিংবা অন্যান্য দেশ কম রপ্তানি করেও বেশি মূল্য পায়। এখন মূল্য সংযোজিত পণ্যে মনোযোগ বাড়াতে হবে।”
মার্কিন নতুন শুল্ক কাঠামোয় চীনা পণ্যের শুল্ক ১৪৫ শতাংশের মতো। বিপরীতে, বাংলাদেশের পণ্যের ওপর পাল্টা শুল্ক মাত্র ২০ শতাংশ। এছাড়া মার্কিন কাঁচামালে উৎপাদিত পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধার মতো বড় শুল্কছাড়ও পাচ্ছে বাংলাদেশ।
ফেব্রুয়ারির মধ্যে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত: অর্থ উপদেষ্টার
দেশ থেকে পাচার হয়ে যাওয়া অর্থের একটি অংশ আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যেই ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। তবে কী পরিমাণ অর্থ ফেরত আসবে, সে বিষয়ে তিনি কিছু বলেননি।
মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
টাকা ফেরত আনা ও আইনি প্রক্রিয়া
পাচারের অর্থ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে কি না—সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, “টাকা যারা পাচার করে তারা বুদ্ধি সব জানে কীভাবে করতে হবে। এটা আনতে গেলে কিছুটা সময়ের প্রয়োজন। তবে কিছুটা অগ্রগতি হয়েছে। অনেক লিগ্যাল ফার্মের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে। ফেব্রুয়ারির মধ্যে হয়তো কিছু আসতে পারে। বাকিটার জন্য আমরা ক্ষেত্রে প্রস্তুত করছি।”
তিনি বলেন, “এই ফরমালিটি কোনো সরকার এড়িয়ে যেতে পারবে না। এটা তো ইন্টারন্যাশনাল প্র্যাকটিস। এটা ছাড়া কীভাবে আনবে?” তিনি জানান, ১১-১২টি বড় অঙ্কের পাচারের ঘটনাকে উচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে দেখা হচ্ছে। এছাড়া ২০০ কোটি টাকার বেশি পাচার হয়েছে এমন বিষয়গুলোও তদন্ত করা হচ্ছে।
নতুন সরকারের প্রতি বার্তা
নতুন সরকার তাদের এই ধারাবাহিকতা রাখবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “রাখতে তারা বাধ্য। কারণ যে প্রসেসগুলো আমরা চালু করলাম, ওইটা চালু না থাকলে তো টাকা ফেরত আনতে পারবে না। আর যদি আনতে হয়, এই প্রসেসগুলো মেনটেইন করতে হবে।”
তিনি বলেন, “অলরেডি অ্যাসেট ফ্রিজ করা হয়েছে বাইরের কতগুলো দেশে। কোথায় ওদের টাকা আছে, কোথায় অ্যাকাউন্ট আছে, কোন কোন দেশে ওদের পাসপোর্ট আছে, সেটার তথ্যও আছে। এখন বাকি একটু কাজ করতে যতটুকু সময় লাগে।”
পুষ্টিহীনতা ও খাদ্য নিরাপত্তা
বিবিএসের একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী দেশের ১০টি পরিবারের মধ্যে তিনটি পরিবারে পুষ্টিহীনতা বা খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা রয়েছে—এই প্রসঙ্গে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, “আমাদের কিছুটা নিউট্রিশনের ঘাটতি আছে, বিশেষ করে শিশু আর মায়েদের মধ্যে।”
তিনি বলেন, “এটার জন্য আমরা চেষ্টা করছি যথাসম্ভব। আমাদের খাদ্য যেটা হয় সেটা সুষম নয়। চালের ওপর বেশি নির্ভর করি। কিন্তু অন্যগুলো এক্সেস। এগুলোর ক্রয় ক্ষমতা একটু কম। এই জন্য আমাদের খাদ্যের ঘাটতি। আমিষের জন্য ডিমটা সব থেকে বেশি দরকার, সেটাও কিন্তু অনেকে ক্রয় করতে পারবেন।”
এডিবি’র প্রতিবেদনে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস
চলতি অর্থবছর শেষে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ৪ শতাংশ হবে, যা আগামী ২০২৬ সালে অর্থবছর শেষে ৫ শতাংশে বৃদ্ধি পাবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) প্রকাশিত এডিবির ‘এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুক (এডিও)’ প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা যায়।
প্রবৃদ্ধির কারণ ও ঝুঁকি
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পোশাক রপ্তানি খাত স্থিতিশীল থাকলেও ধীরগতির প্রবৃদ্ধির অন্যতম কারণ হলো রাজনৈতিক পটপরিবর্তন এবং দেশীয় চাহিদা হ্রাস। অন্যদিকে, বারবার বন্যা, শিল্প শ্রমিক বিরোধ এবং ক্রমাগত উচ্চ মুদ্রাস্ফীতির কারণে দেশীয় চাহিদা কমেছে।
এডিবি জানিয়েছে, চলতি অর্থবছরে ভোগব্যয় বাড়বে। এর কারণ হলো রেমিট্যান্সের শক্তিশালী প্রবৃদ্ধি এবং আসন্ন নির্বাচনসংক্রান্ত বিভিন্ন খরচ।
টেকসই প্রবৃদ্ধির জন্য চ্যালেঞ্জ
বাংলাদেশে এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর হো ইউন জিয়ং বলেন, “ভবিষ্যৎ প্রবৃদ্ধি নির্ভর করবে ব্যবসায়িক পরিবেশ উন্নয়ন করে প্রতিযোগিতা বাড়ানো, বিনিয়োগ আকৃষ্ট করা এবং নির্ভরযোগ্য জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করার ওপর।” তিনি আরও বলেন, দেশের ব্যাংক খাতের দুর্বলতা অব্যাহত রয়েছে। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা টেকসই প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য জরুরি।
এডিবির প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৬ অর্থবছরের জন্য কিছু ঝুঁকি রয়ে গেছে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যসংক্রান্ত অনিশ্চয়তা, ব্যাংক খাতের দুর্বলতা এবং নীতি বাস্তবায়নে অনাগ্রহ প্রবৃদ্ধির অগ্রগতিতে বাধা হতে পারে। এ জন্য সঠিক সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি বজায় রাখা এবং কাঠামোগত সংস্কার দ্রুততর করার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।
মূল্যস্ফীতি ও রপ্তানির চাপ
প্রতিবেদনে জানানো হয়, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ছিল ৯.৭ শতাংশ, যা গত অর্থবছরে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ শতাংশে। এর পেছনে রয়েছে পাইকারি বাজারে সীমিত প্রতিযোগিতা, সরবরাহ শৃঙ্খলে বাধা এবং টাকার অবমূল্যায়ন।
এডিবি সতর্ক করেছে যে, যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রপ্তানির ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নে প্রতিযোগিতা বাড়ার কারণে রপ্তানি খাত ও এর প্রবৃদ্ধি চাপ বাড়াবে। ফলে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে রপ্তানিকারকদের মূল্য কমাতে হতে পারে।
ইসলামী ব্যাংকিংয়ের লভ্যাংশ হালাল নাকি সুদ? জানুন প্রকৃত সত্য
বাংলাদেশসহ মুসলিম বিশ্বের অনেক দেশে ইসলামী ব্যাংকিং ব্যবস্থার প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়ছে। কিন্তু একটি প্রশ্ন প্রায়ই সামনে আসে—ইসলামী ব্যাংকে টাকা রেখে আমরা লভ্যাংশ বা মুনাফা খেতে পারব কিনা। এ বিষয়ে ভিন্ন ভিন্ন ওলামায়ে কেরামের পর্যবেক্ষণ রয়েছে।
ইসলামী ব্যাংক ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ
আমাদের দেশের ইসলামী ব্যাংকগুলো বাংলাদেশ ব্যাংকের অধীনে পরিচালিত হয়। অর্থাৎ, ইসলামী ব্যাংকগুলোকে অন্যান্য সব ব্যাংকের মতোই দেশের ব্যাংকিং আইন, বিধি-বিধান ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালা মেনে চলতে হয়। যেহেতু বাংলাদেশ ব্যাংক নিজেই একটি সুদভিত্তিক প্রতিষ্ঠান, তাই ইসলামী ব্যাংকের কার্যক্রম শতভাগ সুদমুক্ত রাখা বাস্তবে কঠিন হয়ে পড়ে। এ কারণে অনেকে মনে করেন, ইসলামী ব্যাংককে পুরোপুরি শরিয়াহ–সম্মত বলা যায় না।
শরিয়াহ বোর্ডের ভূমিকা
তবে প্রতিটি ইসলামী ব্যাংকের একটি স্বতন্ত্র শরিয়াহ বোর্ড থাকে। এই বোর্ডের দায়িত্ব হলো ব্যাংকের সব কার্যক্রম ইসলামী শরিয়াহ অনুযায়ী হচ্ছে কি না তা তদারকি করা, প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া এবং শরিয়াহভিত্তিক নীতিমালা প্রণয়ন করা।সহজভাবে বললে, শরিয়াহ বোর্ডের মূল দায়িত্ব হলো—
- ব্যাংকের বিনিয়োগ ও লেনদেন সুদমুক্ত রাখা
- শরিয়াহসম্মত বিনিয়োগপদ্ধতি অনুসরণ নিশ্চিত করা
- প্রয়োজনে গ্রাহকদের জন্য নির্দেশনা প্রদান করা
যেহেতু শরিয়াহ বোর্ডে দেশ-বিদেশের প্রখ্যাত আলেমগণ থাকেন, তাই সাধারণ মানুষ তাদের নির্দেশনা অনুসারে ইসলামী ব্যাংকের লভ্যাংশ গ্রহণকে বৈধ মনে করতে পারেন।
টাকা রাখা বনাম লভ্যাংশ গ্রহণ
ইসলামী ব্যাংকে টাকা জমা রাখা এবং সেখান থেকে মুনাফা গ্রহণ করা দুটি ভিন্ন বিষয়। টাকা জমা রাখা শুধু বৈধ নয়, বরং জরুরি। কারণ, যদি কেউ সুদী ব্যাংকে টাকা রাখে তবে তার অর্থ দিয়ে ব্যাংক সুদভিত্তিক কার্যক্রম পরিচালনা করবে, যা পরোক্ষভাবে সুদের কারবারকে সমর্থন করার সমান অপরদিকে ইসলামী ব্যাংকে টাকা রাখলে অন্তত নিশ্চিত হওয়া যায় যে, আপনার অর্থ সুদভিত্তিক লেনদেনে ব্যবহার করা হবে না।
লভ্যাংশ বা মুনাফা গ্রহণের বৈধতা
শরিয়াহ বোর্ড অনুমোদিত ইসলামী ব্যাংকের মুনাফা গ্রহণ করা বৈধ, তবে কিছু শর্তসাপেক্ষে।
- শরিয়াহ–সম্মত বিনিয়োগ পদ্ধতি:ইসলামী ব্যাংকগুলো সাধারণত মুদারাবা (লাভ-লোকসানের অংশীদারিত্ব) ও মুশারাকা (অংশীদারিত্ব) ভিত্তিক বিনিয়োগ করে থাকে। এ পদ্ধতিগুলো সুদমুক্ত এবং শরিয়াহ–সম্মত।
- সুদ নয়, বরং লাভ:প্রচলিত ব্যাংকের মতো নির্দিষ্ট সুদের হার এখানে নেই। বরং ব্যাংক যে ব্যবসা বা বিনিয়োগ থেকে লাভ করবে, সেই লাভের একটি অংশ গ্রাহককে প্রদান করবে। ফলে এটিকে সুদ বলা যাবে না।
- শরিয়াহ বোর্ডের তদারকি:ইসলামী ব্যাংকের প্রতিটি বিনিয়োগ ও লেনদেন শরিয়াহ বোর্ড দ্বারা অনুমোদিত হতে হবে। এতে গ্রাহক নিশ্চিত হতে পারবেন যে প্রাপ্ত মুনাফা সুদের আওতাভুক্ত নয়।
গ্রাহকের করণীয়
- ব্যাংক যাচাই করুন: নিশ্চিত করুন যে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক বা ব্যাংকিং উইন্ডো একটি পূর্ণাঙ্গ শরিয়াহ বোর্ড দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে।
- বিনিয়োগ পদ্ধতি জানুন: ব্যাংক কোন কোন প্রকল্পে বিনিয়োগ করছে তা জানার চেষ্টা করুন এবং শরিয়াহ অনুমোদিত কিনা তা খোঁজ নিন।
- সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে পরামর্শ করুন: যদি সন্দেহ থাকে তবে সরাসরি ব্যাংকের শরিয়াহ বোর্ড বা কোনো ইসলামী অর্থনীতি বিষয়ক বিশেষজ্ঞের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
সারকথা হলো, ইসলামী ব্যাংকে টাকা জমা রাখা এবং লভ্যাংশ গ্রহণ করা বৈধ, যদি সেই ব্যাংকটি সত্যিকার অর্থে শরিয়াহ বোর্ড দ্বারা অনুমোদিত হয় এবং তাদের বিনিয়োগ ও লেনদেন শরিয়াহসম্মত পথে পরিচালিত হয়। ইসলামী ব্যাংকের লভ্যাংশ আসলে সুদ নয়, বরং লাভ-লোকসানভিত্তিক অংশীদারিত্বের ফলাফল। তবে গ্রাহকের সচেতন থাকা জরুরি, যাতে তারা নিশ্চিত হতে পারেন যে তাদের অর্থ সত্যিকার অর্থেই শরিয়াহ–সম্মত উপায়ে ব্যবহার হচ্ছে।
যোগ্যতা যাচাই পরীক্ষা ঘিরে ইসলামী ব্যাংকে বিপুল সংখ্যক কর্মী ছাঁটাই ও ওএসডি
কর্মস্থলের নিয়মনীতি লঙ্ঘন এবং শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড তাদের ২০০ কর্মীকে চাকরিচ্যুত করেছে। একই সঙ্গে, প্রায় ৫ হাজার জনকে (৪,৯৭১ জন) ওএসডি (অন সার্ভিস ডিউটি) করা হয়েছে। এতে ব্যাংকের অভ্যন্তরে নতুন অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। ওএসডি হওয়া কর্মীরা আপাতত কোনো দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না, তবে বেতন-ভাতা পাবেন।
যোগ্যতা যাচাই পরীক্ষা ও বিতর্ক
ব্যাংক সংশ্লিষ্ট একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ২০১৭ সালে চট্টগ্রামের প্রভাবশালী ব্যবসায়ী গ্রুপ এস আলম ইসলামী ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর বিপুলসংখ্যক কর্মীকে কোনো লিখিত পরীক্ষা ছাড়াই সরাসরি নিয়োগ দেওয়া হয়। নিয়োগপ্রাপ্তদের বড় অংশই ছিলেন চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার বাসিন্দা।
একজন সিনিয়র কর্মকর্তা অভিযোগ করে বলেন, “এস আলম গ্রুপের সময়ে অযোগ্য লোকজনকে নিয়োগ দিয়ে ব্যাংকটিকে প্রায় ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। এখন আমরা ব্যাংকের স্বার্থে সবাইকে যোগ্যতা যাচাই পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি।”
বাংলাদেশ ব্যাংক এবং হাইকোর্টের নির্দেশনার ভিত্তিতে গত ২৭ সেপ্টেম্বর এই পরীক্ষার আয়োজন করা হয়। পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য ৫,৩৮৫ জন কর্মকর্তাকে বলা হলেও মাত্র ৪১৪ জন অংশ নেন। যারা উপস্থিত হননি, সেই ৪,৯৭১ জনকে পরদিনই ওএসডি করা হয়। এছাড়া পরীক্ষার আয়োজনকে কেন্দ্র করে বিভ্রান্তি ছড়ানো ও প্রকাশ্যে বিরোধিতা করায় ২০০ কর্মীকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।
কর্মীদের অভিযোগ ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অবস্থান
ওএসডি হওয়া কর্মীদের অভিযোগ, হাইকোর্ট নিয়মিত প্রমোশনাল পরীক্ষা চালানোর নির্দেশ দিলেও ব্যাংক কর্তৃপক্ষ সেই আদেশ অমান্য করে আলাদা যোগ্যতা যাচাই পরীক্ষার আয়োজন করে, যা বেআইনি। তারা পুনরায় আদালতের আশ্রয় নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বলেন, “ছাঁটাইয়ের উদ্দেশ্যে এ ধরনের পরীক্ষা দেশে এই প্রথম। সাধারণত পদোন্নতির জন্য ভাইভা নেওয়া হয়, তবে এখানে কর্মীদের মান যাচাইয়ের বিষয়টি নতুন অভিজ্ঞতা।” তিনি যোগ করেন, ইসলামী ব্যাংক একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান হলেও, নিয়োগ বা কর্মী যাচাইয়ের ক্ষেত্রে তাদের দেশের প্রচলিত আইন ও নীতিমালা মেনে চলতে হবে।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে নিয়ন্ত্রণ গ্রহণের পর এস আলম গ্রুপ ইসলামী ব্যাংক থেকে প্রায় ১ লাখ ৩১ হাজার কোটি টাকা তুলে নেয় বলে অভিযোগ রয়েছে। ২০২৪ সালের আগস্টে সরকার পরিবর্তনের পর বাংলাদেশ ব্যাংক এস আলমের প্রভাব কমাতে পরিচালনা পর্ষদে রদবদল আনে।
রেকর্ড ভাঙা দামে বিশ্ববাজারে স্বর্ণ
বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। ইতিহাসে প্রথমবারের মতো প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ৩ হাজার ৮০০ ডলার ছাড়িয়েছে। এই নজিরবিহীন উত্থানের সরাসরি প্রভাব পড়তে পারে বাংলাদেশের বাজারেও। ব্যবসায়ীরা বলছেন, বিশ্ববাজারের পরিস্থিতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে দেশের বাজারেও যে কোনো সময় নতুন দামের ঘোষণা আসতে পারে।
দেশের বাজারে বর্তমান অবস্থা
গত জুলাই থেকেই আন্তর্জাতিক বাজারে স্বর্ণের দাম ধীরে ধীরে বাড়তে শুরু করে এবং শেষ এক মাসে সেই বৃদ্ধির গতি আরও বেড়েছে। শুধু আগস্ট-সেপ্টেম্বর মাসেই আউন্সপ্রতি দাম বেড়েছে প্রায় ৫০০ ডলার।
এই অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশেও একাধিক দফায় স্বর্ণের দাম সমন্বয় করা হয়েছে। সর্বশেষ ২৮ সেপ্টেম্বরের সমন্বয়ে বর্তমানে ভালো মানের (২২ ক্যারেট) এক ভরি স্বর্ণের দাম দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৯২ হাজার ৯৬৯ টাকা। এর আগে ২৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তা ১ লাখ ৯৪ হাজার ৮৫৯ টাকা ছিল, যা ছিল দেশের সর্বোচ্চ রেকর্ড।
দাম বৃদ্ধির কারণ কী?
বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতির (বাজুস) স্ট্যান্ডিং কমিটি অন ট্যারিফ অ্যান্ড ট্যাক্সেশনের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন এই অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধির পেছনে একাধিক আন্তর্জাতিক কারণের কথা বলেছেন।
ডলারের প্রতি অনাস্থা: আমেরিকার শুল্কনীতি নিয়ে টানাপোড়েন, চীন-রাশিয়া-ভারতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বৈঠক এবং মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েল-সংক্রান্ত উত্তেজনার কারণে ডলারের প্রতি আস্থা কমছে।
নিরাপদ বিনিয়োগ: এই পরিস্থিতিতে চীন ও ভারতসহ অনেক দেশ নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে স্বর্ণ মজুত করছে।
উৎপাদন হ্রাস: খনিতে উৎপাদন হ্রাস ও সরবরাহ কমে যাওয়াও দামের ঊর্ধ্বগতির অন্যতম কারণ।
বাজুসের এক সদস্য জানিয়েছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে দাম আরও বাড়তে থাকলে বাংলাদেশেও তা সমন্বয় করতে হবে। তার কথায়, "স্বর্ণের দামের ওপর দেশের ব্যবসায়ীদের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। বিশ্ববাজারে যেমন দাম বাড়ে বা কমে, এখানেও তার প্রতিফলন ঘটে।" সব মিলিয়ে বাংলাদেশের বাজারে শিগগিরই নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা।
পাঠকের মতামত:
- দেশের মূল্যস্ফীতি এখনও লক্ষ্যমাত্রার ওপরে, সেপ্টেম্বরের চিত্র প্রকাশ করল বিবিএস
- বাবিলের অভিশাপ থেকে মায়ং-এর তন্ত্র: কালো জাদুর আদি ইতিহাস
- শেখ হাসিনার আতঙ্ক কমার বদলে উল্টো বেড়েই চলেছে: গোলাম মাওলা রনি
- মাত্র ৬০ সেকেন্ডে ৭০ তলা! চীনের হুইজিয়াং ব্রিজে প্রযুক্তি ও রোমাঞ্চের অবিশ্বাস্য মেলবন্ধন
- ৫০ বছরের সম্পর্ক: সৌদি আরবে সাধারণ কর্মী নিয়োগে ঐতিহাসিক চুক্তি সই
- বিসিবি নির্বাচনের প্রাথমিক ফল ঘোষণা, পরিচালক পদে জয়ী যারা
- মেয়ে ও স্ত্রী রাজনীতিতে আসা নিয়ে কী ইঙ্গিত দিলেন তারেক রহমান?
- ঘুম থেকে উঠেই শরীর ব্যথা? হতে পারে ৫টি গুরুতর কারণ
- মানুষ হলে কোন ধর্ম বেছে নিত চ্যাটজিপিটি? কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার উত্তরে বিশ্বে তোলপাড়!
- ঘুম না হলে ওষুধ নয়, মিলতে পারে সহজ ব্যায়ামে সমাধান
- এনসিপি নেতার হুঁশিয়ারি: ‘শাপলা প্রতীক ছাড়া নির্বাচনে বিকল্প নেই’
- ভোট দিয়েছেন তামিম? ফল ঘোষণার আগে নিজের অবস্থান জানালেন
- এ সপ্তাহেই অনেক ঘটনা ঘটবে: গুম মামলা নিয়ে চিফ প্রসিকিউটরের ইঙ্গিত
- চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পেলেন ৩ বিজ্ঞানী
- আদালতে দণ্ড থেকে রাষ্ট্রপ্রধান: তিন রাষ্ট্রের সাক্ষী ড. ইউনূসের অবিশ্বাস্য জীবনগাঁথা
- ডিএসইতে সোমবারের লেনদেনের সারসংক্ষেপ
- ডিএসইতে সোমবার লেনদেন শেষে টপ লুজার তালিকা প্রকাশ
- ডিএসইতে সোমবার লেনদেন শেষে টপ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের ২ বছর: মানবিক বিপর্যয়ের ভয়াবহ চিত্র
- আশুলিয়ায় পোশাক কারখানায় ভয়াবহ আগুন
- হংকং ম্যাচের আগে দেশে পৌঁছে যা বললেন হামজা
- নির্বাচনী আয়োজনে নতুন পদক্ষেপ, ভোটারদের বিশেষ অধিকার ফিরিয়ে দিচ্ছে ইসি
- আওয়ামী লীগের বিচার: ‘এ বিষয়ে সবচেয়ে বড় বিচারক আমি মনে করি জনগণ’
- বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে ভারতের প্রত্যাশা কী, জানালেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব
- চ্যাম্পিয়নের দুর্দিন: সেভিয়ার মাঠে ৪–১ গোলে হার বার্সেলোনার
- যুক্তরাষ্ট্র–রাশিয়া পরমাণু অস্ত্র চুক্তি: এক বছরের জন্য নবায়নের প্রস্তাবে ট্রাম্পের সম্মতি
- “যুদ্ধ চলতে পারে না আলোচনার সময়”— যুক্তরাষ্ট্রের সতর্ক বার্তা ইসরায়েলকে
- আঞ্চলিক সহযোগিতায় নতুন দিগন্তে বাংলাদেশ–মালদ্বীপ সম্পর্ক
- বিসিবি নির্বাচন আজ: নাটকীয় ঘটনাপ্রবাহে নিরবচ্ছিন্ন পদযাত্রা আমিনুল-বাহিনীর
- তারেক রহমানের ঘোষণা: “জনগণের নির্বাচনে আমি থাকব জনগণের মধ্যেই”
- নতুন পে স্কেলে বেতন কত বাড়তে পারে, জানাল কমিশন
- ৬ অক্টোবর, ২০২৫ (সোমবার) ঢাকা ও অন্যান্য বিভাগের নামাজের সময়সূচি
- ট্রাম্পের আহ্বান উপেক্ষা করে দ্বিতীয় দিনেও গাজায় হামলা অব্যাহত
- আধুনিক বিজ্ঞান ও কোরআনের আলোকে জিন: রহস্যময় অস্তিত্বের এক নতুন দিগন্ত!
- ‘শাপলা’ প্রতীক না দেওয়া নিয়ে নির্বাচন কমিশনকে সারজিস আলমের হুঁশিয়ারি
- প্রবাসী আয়ে বড় চমক: সেপ্টেম্বরের রেমিট্যান্স নিয়ে এল সুখবর
- ঐকমত্য থাকলেও সংকট: বিএনপি-জামায়াতের দ্বন্দ্ব সনদ বাস্তবায়নে বাধা?
- সূর্যও যেখানে বামন: মহাবিশ্বের দানব নক্ষত্রদের সামনে আমাদের অস্তিত্ব কতটুকু?
- থাইরয়েডের সঙ্গে হতাশা: মানসিক স্বাস্থ্যের এই গোপন সংযোগটি জানুন
- মুক্তা থেকে রিয়েল এস্টেট: যেভাবে ৫০ বছরে মরুভূমিকে সম্পদে পরিণত করলো দুবাই
- সংসদ নির্বাচনের দিনই জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণভোট হতে পারে: সালাহউদ্দিন আহমদ
- ডেঙ্গু পরিস্থিতি চরম আকার ধারণ করল, একদিনের চিত্রে উদ্বেগ
- সভ্যতার সঙ্গমস্থল আফগানিস্তান: ইতিহাস, সংগ্রাম ও পুনর্জাগরণের এক দীর্ঘ যাত্রা
- রবার্ট ওপেনহাইমার: যে বিজ্ঞানীর হাতে তৈরি হয়েছিল মানব ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর বোমা!
- ব্রণ চেপে ফাটানো: হতে পারে যে ভয়াবহ রোগ, সতর্ক করলেন বিশেষজ্ঞরা
- ‘পশুর মতো আচরণ’: ইসরায়েলে গ্রেটা থুনবার্গসহ কর্মীদের ভয়াবহ নির্যাতনের অভিযোগ
- আগামী ২৪ ঘণ্টায় ৩ বিভাগে অতি ভারী বৃষ্টির শঙ্কা
- মার্কিন প্রস্তাব নিয়ে উত্তাল তেল আবিব: জিম্মি মুক্তির দাবিতে হাজারো ইসরায়েলি, পাশে ট্রাম্প
- কোরআন অবমাননা: নর্থ সাউথ থেকে শিক্ষার্থী অপূর্ব পাল স্থায়ীভাবে বহিষ্কার
- আফগানিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করার লক্ষ্য, আজ রাতে মাঠে নামছে বাংলাদেশ
- বার্লিন সম্মেলন ১৮৮৪–৮৫: আফ্রিকা বিভাজনের রাজনীতি, অর্থনীতি ও উত্তরাধিকার
- রসুনের গোপন শক্তি: এক কোয়া কি সত্যিই শরীরকে বদলে দিতে পারে?
- সর্ব রোগের ঔষধ কালিজিরা’র আদ্যপ্রান্ত: ঐতিহ্য, বিজ্ঞান, ব্যবহার ও সতর্কতা
- ম্যালেরিয়া: কারণ, লক্ষণ, ঝুঁকি, প্রতিরোধ ও চিকিৎসা
- স্মার্টফোন থেকে ডিলিট হওয়া ছবি ফিরে পাওয়ার ৩টি সহজ উপায়
- মেথি কি সত্যিই ‘সুপারফুড’? বিজ্ঞান, উপকার, ঝুঁকি ও খাওয়ার সেরা সময়
- ডিএসইতে মঙ্গলবার লেনদেন শেষে টপ লুজার তালিকা প্রকাশ
- শ্বাসরুদ্ধকর জয়: শেষ মুহূর্তের নাটকীয়তায় আফগানিস্তানকে হারিয়ে সিরিজ নিশ্চিত করল বাংলাদেশ
- ডিএসইতে মঙ্গলবার লেনদেন শেষে টপ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- যে সাগরে কেউ ডুবে না, কেন সেখানে লুকিয়ে আছে এক অভিশপ্ত ইতিহাস?
- ল্যাপটপে পানি পড়লে কী করবেন? যে ৭টি কাজ ভুলেও করা উচিত নয়
- ঘৃতকুমারী বা অ্যালোভেরা: কাঁটাযুক্ত পাতার ভেতর লুকানো আরোগ্যের জেল
- টিসিবির তালিকায় যুক্ত হচ্ছে আরও ৫ পণ্য
- ডিএসইতে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরার ইঙ্গিত দিল মঙ্গলবারের লেনদেন
- রহস্যময় পাণ্ডুলিপি কোডেক্স জাইগাস: কেন এটি ‘শয়তানের বাইবেল’ নামে পরিচিত?