রাতে বারবার পা নড়ে? সতর্ক হোন, হতে পারে ‘রেস্টলেস লেগ সিনড্রোম’

রাতে বিছানায় শুয়ে আছেন, অথচ ঘুম আসছে না। পায়ে বারবার অস্বস্তি লাগছে—কখনো টান ধরা, কখনো জ্বালা, আবার কখনো গা ছমছম করছে। মনে হচ্ছে পা নাড়াচাড়া না করলে আরাম নেই। এই ধরনের সমস্যাকে হালকাভাবে নেওয়া চলবে না, কারণ চিকিৎসকরা বলছেন, এটি হতে পারে ‘রেস্টলেস লেগ সিনড্রোম’ (Restless Legs Syndrome - RLS) নামের একটি স্নায়বিক রোগের লক্ষণ।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম সিএনএন-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা সাধারণত বসে বা শুয়ে থাকার সময় পায়ে টান ধরা, ঝিনঝিনি, জ্বালা বা অস্বস্তিকর অনুভূতি পান। সাময়িক স্বস্তি মিললেও এর কারণে ঘুম ভেঙে যায় বা ঘুম আসতে দেরি হয়।
সমস্যার কারণ ও ঝুঁকিতে কারা
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই রোগের মূল দুটি কারণ হলো: বংশগত প্রভাব এবং শরীরের আয়রনের ঘাটতি।
বেশি ঝুঁকিতে যারা: অন্তঃসত্ত্বা ও মাসিক হয় এমন নারী, অ্যানিমিয়া রোগী, ডায়ালাইসিসে থাকা রোগী এবং নিরামিষভোজীদের মধ্যে এই রোগের ঝুঁকি তুলনামূলক বেশি। নারীদের মধ্যে পুরুষদের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ বেশি এ সমস্যা দেখা যায়। কিছু ওষুধ—বিশেষ করে সেরোটোনিন রিইনটেক ইনহিবিটার জাতীয় ওষুধ গ্রহণকারীরাও ঝুঁকিতে থাকতে পারেন।
করণীয় কী এবং কেন সচেতনতা জরুরি?
চিকিৎসকরা বলছেন, জীবনধারায় কিছু পরিবর্তন আনলে এই রোগ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
জীবনধারায় পরিবর্তন: অ্যালকোহল ও চিনি খাওয়া কমানো, নিয়মিত ঘুমের অভ্যাস তৈরি করা এবং হালকা শরীরচর্চা করা।
চিকিৎসা: আয়রনের ঘাটতি থাকলে সাপ্লিমেন্ট বা ইনফিউশন নেওয়া যেতে পারে।
সাময়িক স্বস্তি: পায়ে ম্যাসাজ, গরম বা ঠান্ডা পানির সেঁক দেওয়া এবং হাঁটাহাঁটি বা মনোযোগ ধরে রাখার মতো কাজ করলে সাময়িক আরাম পাওয়া যায়।
দীর্ঘদিন ধরে অস্বস্তি চলতে থাকলে স্নায়ু বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হওয়া জরুরি। চিকিৎসকরা বলছেন, রেস্টলেস লেগ সিনড্রোম একেবারেই নিরাময়যোগ্য। তবে উপসর্গকে গুরুত্ব না দিলে এর প্রভাব সারাদিনের কাজে পড়ে, যেমন—ক্লান্তি, বিরক্তি বা মেজাজ খারাপ হওয়া। তাই রাতের বেলায় অকারণে পা নাড়াকে অবহেলা না করে সময়মতো বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া সবচেয়ে নিরাপদ।
ডেঙ্গু বা ভাইরাসের পর দুর্বলতা? প্লেটলেট বাড়বে যা খেলে
রক্তে প্লেটলেটের মাত্রা কমে গেলে শরীরের রক্ত জমাট বাঁধার ক্ষমতা দুর্বল হয়ে পড়ে। এর ফলে কোনো ক্ষত সারতে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি সময় লাগে। প্লেটলেট কমে যাওয়ার কিছু সাধারণ উপসর্গের মধ্যে রয়েছে হঠাৎ রক্তক্ষরণ, শরীর অতিরিক্ত ক্লান্ত লাগা এবং বারবার সংক্রমণে আক্রান্ত হওয়া। চিকিৎসকরা বলছেন, ডেঙ্গু, বিভিন্ন ভাইরাল সংক্রমণ কিংবা অস্থি মজ্জা বা বোন ম্যারোর সমস্যার কারণেও রক্তে প্লেটলেটের সংখ্যা হ্রাস পেতে পারে। তাই এই সমস্যা দেখা দিলে তা অবহেলা করা উচিত নয়, কারণ এতে ঝুঁকি বাড়তে পারে।
তবে চিকিৎসকদের মতে, সঠিক খাদ্যাভ্যাস অনুসরণ করা এবং জীবনযাত্রায় কিছু জরুরি পরিবর্তন আনার মাধ্যমে প্লেটলেটের মাত্রা বাড়ানো সম্ভব।
এই বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার ওপর জোর দেন। ভিটামিন-সি প্লেটলেটের সংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি শরীরের সামগ্রিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকেও শক্তিশালী করে। কমলা, লেবু, কিউই, পেঁপে, স্ট্রবেরি এবং বেল পেপারের মতো খাবারে থাকা ভিটামিন-সি প্লেটলেটকে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস এবং সংক্রমণের কারণে হওয়া ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে।
প্লেটলেট বাড়াতে ফোলেট বা ভিটামিন বি-৯ সমৃদ্ধ খাবারও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই উপাদানটি কোষ বিভাজনে এবং নতুন প্লেটলেট তৈরিতে সহায়তা করে। নিয়মিত পালং শাক, শিম, মুসুর ডাল, বিট এবং অ্যাভোকাডো খেলে শরীরে ফোলেটের ঘাটতি পূরণ হতে পারে, যা প্লেটলেটের মাত্রা ঠিক রাখতে সাহায্য করে।
অনেক সময় শরীরে ভিটামিন বি-১২ এবং আয়রনের অভাব হলেও প্লেটলেটের সংখ্যা কমে যেতে পারে। পুষ্টিবিদরা এই ঘাটতি মেটাতে ডিম, মাছ, মুরগির মাংস, বিভিন্ন ধরনের সবুজ শাকসবজি এবং কুমড়ার বীজ খাদ্য তালিকায় রাখার পরামর্শ দেন। তবে কারও শরীরে এগুলোর ঘাটতি বেশি হলে চিকিৎসকের পরামর্শে সাপ্লিমেন্টও গ্রহণ করা যেতে পারে।
দীর্ঘদিন ধরেই প্লেটলেট বাড়ানোর একটি ঘরোয়া উপায় হিসেবে পেঁপে পাতার রস ব্যবহৃত হয়ে আসছে। তবে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন যে, কাঁচা পেঁপে পাতা সরাসরি খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। এর পরিবর্তে, বাজারে পাওয়া যায় এমন স্ট্যান্ডার্ডাইজড বা প্রস্তুতকৃত রস তুলনামূলকভাবে নিরাপদ। তবে সেটিও অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়েই গ্রহণ করা উচিত।
খাবারের পাশাপাশি স্বাস্থ্যকর জীবনধারাও প্লেটলেট বাড়াতে সহায়ক। শরীরে পর্যাপ্ত পানি থাকলে তা রক্তের ভলিউম বা পরিমাণ ঠিক রাখতে সাহায্য করে। বিশেষজ্ঞরা বোন ম্যারোর ক্ষতি এড়াতে অ্যালকোহল বা মদপান কমিয়ে ফেলার পরামর্শ দেন। এর পাশাপাশি, পর্যাপ্ত ঘুম, নিয়মিত বিশ্রাম এবং হালকা ব্যায়াম শরীরকে দ্রুত সুস্থ হতে সহায়তা করে এবং মানসিক চাপ কমায়। দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় এসব খাবার যুক্ত করা এবং একটি সঠিক জীবনধারা অনুসরণ করলে রক্তে প্লেটলেটের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা সহজ হতে পারে।
ধূমপান ছাড়ার পর শরীর যেভাবে নিজেকে 'মেরামত' করে, জানুন বিস্তারিত
ধূমপানের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে প্রায় সবাই অবগত। তবে অনেকেই হয়তো জানেন না যে, ধূমপান ছেড়ে দেওয়ার পর শরীর অত্যন্ত দ্রুত নিজেকে সারিয়ে তুলতে শুরু করে। চিকিৎসকরা বলছেন, ধূমপান বন্ধ করার মাত্র কয়েক ঘণ্টা পর থেকেই শরীর মেরামতের কাজ শুরু করে দেয় এবং কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই স্বাস্থ্যে চোখে পড়ার মতো ইতিবাচক পরিবর্তন আসে।
অ্যানেস্থেশিয়া ও পেইন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. কুনাল সুধ জানিয়েছেন, ধূমপান শুধু ফুসফুসের ক্ষতি করে না, এটি ধীরে ধীরে ফুসফুসকে শক্ত এবং কম নমনীয় করে ফেলে। এর ফলে ফুসফুস ঠিকমতো প্রসারিত হতে পারে না, যা শ্বাস-প্রশ্বাসকে কঠিন করে তোলে। দীর্ঘদিন ধরে ধূমপানের অভ্যাস থেকে দীর্ঘস্থায়ী কাশি, ফুসফুসে মিউকাস বা শ্লেষ্মা জমে থাকা, ব্রঙ্কাইটিস এবং এমফিসেমার মতো জটিল রোগ দেখা দিতে পারে। এর পাশাপাশি, ফুসফুসের ক্যানসারের ঝুঁকিও বহুগুণ বেড়ে যায়।
ডা. সুধ আরও বলেন, ধূমপান ফুসফুসের নিজস্ব রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকেও দুর্বল করে দেয়। একারণে ধূমপায়ীরা প্রায়ই বিভিন্ন সংক্রমণে আক্রান্ত হন, তাদের সুস্থ হতে বেশি সময় লাগে এবং শারীরিক শক্তিও কমে যেতে থাকে।
তবে ডা. সুধের মতে, স্বাস্থ্য ফিরিয়ে আনার জন্য ধূমপান পুরোপুরি ছেড়ে দেওয়াই হলো সবচেয়ে শক্তিশালী একটি সিদ্ধান্ত। তিনি ব্যাখ্যা করেন, ধূমপান বন্ধ করার মুহূর্ত থেকেই শরীর তার ভেতরের ক্ষতিগুলো সারাতে শুরু করে। মাত্র কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই শ্বাস-প্রশ্বাসের উন্নতি ঘটে, ফুসফুসের কর্মক্ষমতা বাড়তে থাকে এবং শরীরে রক্ত সঞ্চালনের প্রক্রিয়া আগের চেয়ে ভালো হয়।
তবে ধূমপান ছাড়ার এই প্রক্রিয়া ধরে রাখতে কিছু পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। প্রয়োজনে পেশাদার চিকিৎসকের সহায়তা নেওয়া যেতে পারে। ফুসফুসের কার্যক্ষমতা বাড়াতে নিয়মিত কার্ডিও ব্যায়াম এবং প্রতিদিন শ্বাস-প্রশ্বাসের বিশেষ ব্যায়াম করা খুবই উপকারী। এর পাশাপাশি স্বাস্থ্যকর খাবারের ওপরও জোর দিয়েছেন ডা. সুধ। তিনি 'গাট-লাং অ্যাক্সিস' বা অন্ত্র ও ফুসফুসের সংযোগের কথা উল্লেখ করে বলেন, স্বাস্থ্যকর খাবার অন্ত্রকে ভালো রাখে, যা শরীরের সার্বিক প্রদাহ কমায় এবং শ্বাসতন্ত্রকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে।
ধূমপান শরীরের প্রায় প্রতিটি অঙ্গের, বিশেষ করে ফুসফুস ও হৃদযন্ত্রের ওপর মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। তবে সবচেয়ে আশার কথা হলো, ধূমপান ছেড়ে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই শরীর দ্রুত নিজেকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরানোর কাজ শুরু করে দেয়। তাই, যত দ্রুত সম্ভব এই অভ্যাস ত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া এবং প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞের সাহায্য নেওয়াই হতে পারে নিজের ফুসফুস, হৃদযন্ত্র তথা ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত রাখার সর্বোত্তম উপায়।
সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস
গলায় সাদা দানা? এটি খাবারের টুকরো নয়, হতে পারে টনসিল স্টোন
স্বাস্থ্যবিষয়ক নানা সমস্যার মধ্যে ‘টনসিল স্টোন’ বা টনসিলে জমে থাকা শক্ত দানার কথা অনেকেই শুনে থাকেন না। অথচ একেবারে ছোট ও সাধারণ মনে হলেও এই দানাগুলো অনেক সময় দীর্ঘস্থায়ী মুখের দুর্গন্ধ, গিলতে অস্বস্তি বা গলায় আটকে থাকার অনুভূতির মতো বিরক্তিকর অবস্থার জন্ম দেয়। চিকিৎসাবিজ্ঞানের পরিভাষায় একে বলা হয় Tonsillolith, যা টনসিলের গহ্বর বা tonsillar crypt–এ জমে থাকা উপাদানগুলো ধীরে ধীরে কঠিন হয়ে গঠিত হয়।
টনসিলের দুটি পাশে থাকা palatine tonsil–এ অসংখ্য ক্ষুদ্র গর্ত থাকে, যেগুলি ব্যাকটেরিয়া, মৃত কোষ ও খাবারের ক্ষুদ্র কণাগুলোকে আটকে রাখে। সময়ের সাথে এগুলো ক্যালসিয়ামের সঙ্গে প্রতিক্রিয়া করে শক্ত পাথরের মতো রূপ নেয়, যাকে বলা হয় টনসিল স্টোন। সাধারণত সাদা বা হলুদচে রঙের এই দানাগুলো দেখতে ছোট হলেও এর ভেতরের জৈব-রাসায়নিক উপাদান মুখে তীব্র দুর্গন্ধ সৃষ্টি করতে পারে।
চিকিৎসকদের মতে, টনসিল স্টোন থাকা ব্যক্তির সবসময় দৃশ্যমান উপসর্গ পাওয়া যায় না। অনেক সময় আয়নার সামনে দাঁড়ালে টনসিলের ভেতর ছোট সাদা দানার মতো কিছু দেখতে পাওয়া যায়, কিন্তু ব্যক্তি নিজে কোনো ব্যথা বা অস্বস্তি অনুভব করেন না। তবে যাদের উপসর্গ থাকে, তাদের ক্ষেত্রে মুখে বাজে গন্ধ, গলায় আটকে থাকার অনুভূতি, হালকা গলা ব্যথা বা কথা বলতে অস্বস্তির মতো সমস্যা হতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে রোগীরা মনে করেন গলায় কোনো খাবার আটকে আছে, কিন্তু বাস্তবে এটি টনসিল স্টোন।
টনসিল স্টোনের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য প্রভাব হলো মুখে তীব্র দুর্গন্ধ বা এক ধরনের সালফারের মতো গন্ধ। ব্যাকটেরিয়ার উৎপাদিত Volatile Sulfur Compounds (VSCs) এই দুর্গন্ধের অন্যতম কারণ। ফলে রোগীরা সাধারণত ব্রাশ করেও মুখের বাজে গন্ধ দূর করতে পারেন না, কারণ দুর্গন্ধটি দাঁতে নয়, টনসিলের খাঁজে জমে থাকা স্টোন থেকেই উৎপন্ন হয়।
এই সমস্যার প্রতিরোধে চিকিৎসকরা মুখের নিয়মিত পরিচর্যার ওপর জোর দেন। প্রতিদিন সঠিকভাবে ব্রাশ করা, জিহ্বা পরিষ্কার করা, মুখ শুকনো হয়ে যায় এমন অভ্যাস (যেমন ধূমপান) এড়িয়ে চলা এবং নিয়মিত গার্গল করা টনসিল স্টোন গঠনের সম্ভাবনা কমাতে পারে। মুখের ভেতর পর্যাপ্ত আর্দ্রতা বজায় রাখা এবং পর্যাপ্ত পানি পান করাও গুরুত্বপূর্ণ। দুর্গন্ধ দীর্ঘস্থায়ী হলে অবশ্যই চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করতে বলা হয়।
চিকিৎসকরা জানান, অনেক রোগী টনসিল স্টোন দূর হওয়ার পর এক ধরনের আরাম ও স্বস্তি অনুভব করেন। কোনো রোগী চিকিৎসা শেষে মন্তব্য করেছেন –“ভেবেও বুঝতে পারিনি এমন ছোট দানা থেকেও এত দুর্গন্ধ হতে পারে। এখন গলা অনেক স্বাভাবিক লাগে এবং বাজে গন্ধও নেই।”এ ধরনের অভিজ্ঞতা প্রমাণ করে, ছোট কিন্তু অবহেলিত স্বাস্থ্যসমস্যা কখনও কখনও জীবনযাত্রার মানে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, টনসিল স্টোন উপেক্ষা করা ঠিক নয়। সময়মতো চিকিৎসা না নিলে টনসিলের প্রদাহ বৃদ্ধি পেতে পারে এবং সেকেন্ডারি সংক্রমণের ঝুঁকিও তৈরি হতে পারে। তাই গলার ভেতর সাদা দানা দেখা গেলে বা মুখে স্থায়ী দুর্গন্ধ টের পেলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
স্বাস্থ্যসচেতনতার অংশ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা সামাজিক বার্তা দিচ্ছেন –“গলায় সাদা দানা বা মুখে বাজে গন্ধকে কখনো হালকাভাবে নেবেন না। এটি কেবল খাবারের টুকরো নয়; এটি টনসিল স্টোন হতে পারে। সময়মতো চিকিৎসা না নিলে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে।”
ডিম কি সত্যিই কোলেস্টেরল বাড়ায়? নতুন গবেষণার চমক
ঘরে মাছ–মাংস না থাকলে ডিমই প্রথম ভরসা। সহজলভ্য, দ্রুত রান্না করা যায় এবং সব বয়সী মানুষের জন্য সমান পুষ্টিকর। শিশুর বৃদ্ধি, বয়স্কদের শারীরিক সক্ষমতা এবং শীতের রোগ প্রতিরোধে ডিমের ভূমিকা অনন্য। প্রতিদিন কতটি ডিম খাওয়া উচিত এ প্রশ্নের উত্তর জানতে বিজ্ঞানীরা সাম্প্রতিক সময়ে নানা গবেষণা করেছেন।
ডিম প্রকৃত অর্থেই পুষ্টির ভাণ্ডার। ভিটামিন ডি, বি-কমপ্লেক্স ভিটামিন, বায়োটিন, রিবোফ্লাভিন, থায়ামিন, উচ্চমানের প্রোটিন, সেলেনিয়ামসহ অসংখ্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান ডিমে পাওয়া যায়। বিশেষ করে শীতকালে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা মজবুত করতে এবং শরীর উষ্ণ রাখতে ডিম অত্যন্ত কার্যকর।
২০২৩ সালে আমেরিকান লাইব্রেরি অব মেডিসিনে প্রকাশিত এক গবেষণায় বলা হয়, সুস্থ প্রাপ্তবয়স্কদের প্রতিদিন একটি ডিম খাওয়া হৃদরোগ, স্ট্রোক কিংবা মৃত্যুহার বাড়ায় না। বরং বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, বেশিরভাগ সুস্থ মানুষের জন্য প্রতিদিন ১–২টি ডিম পুরোপুরি নিরাপদ এবং উপকারী।
ডিম রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। এতে থাকা উচ্চমানের প্রোটিন অ্যান্টিবডি তৈরি করে, যা ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে সুরক্ষা দেয়। শীতে ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি থাকে, আর ডিমের কুসুম এই ঘাটতি পূরণে গুরুত্বপূর্ণ উৎসে পরিণত হয়।
বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, নিয়মিত ডিম খেলে হৃদরোগ, স্ট্রোক, চোখের সমস্যা, মনে রাখার ক্ষমতা হ্রাস ও পেশি দুর্বলতার মতো ঝুঁকি কমে। কুসুমে থাকা ‘ভালো কোলেস্টেরল’ শরীরের জন্য উপকারী। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট চোখকে ক্ষতিকর আলো থেকে রক্ষা করে। ডিমে থাকা জিঙ্ক শীত–বিষয়ক অসুখ কাটাতেও সহায়তা করে।
তবে ডিমে অ্যাভিডিন নামের একটি উপাদান আছে, যা বায়োটিনের শোষণ কমাতে পারে। তাই অতিরিক্ত ডিম খাওয়া সবার জন্য উপযুক্ত নয়।সুস্থ প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য প্রতিদিন ১–২টি ডিমই যথেষ্ট, শীতকালে এই পরিমাণ অপরিবর্তিত থাকে। কিন্তু হৃদরোগ, ডায়াবেটিস বা উচ্চ কোলেস্টেরল আছে এমন ব্যক্তি সপ্তাহে ৪–৭টির বেশি ডিম খাবেন না এমন পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শে খাদ্যতালিকা তৈরি করা উচিত।
বুকে জ্বালাপোড়া সামান্য নয়, কখন বুঝবেন এটি প্রাণঘাতী সমস্যার সংকেত?
বুকে জ্বালাপোড়া বা হার্টবার্ন হলো এক ধরনের সাধারণ হজমজনিত সমস্যা, যা প্রায়শই মশলাদার বা তেলযুক্ত খাবারের কারণে হয়। এটি ঘটে যখন অম্লীয় পাকস্থলীর অ্যাসিড খাদ্যনালীতে ফিরে আসে। হার্ভার্ড ও স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজিস্ট ডা. সৌরভ সেথি সতর্ক করেছেন যে হার্টবার্ন সাধারণত গুরুতর নয়, তবে দীর্ঘস্থায়ী হলে তা বিপজ্জনক জটিলতার দিকে নিয়ে যেতে পারে।
হার্টবার্ন ও এসোফেজিয়াল ক্যানসার
ডা. সেথি বলেন, তিনি সম্প্রতি এমন এক রোগী দেখেছেন যিনি দীর্ঘস্থায়ী হার্টবার্ন ভুগছিলেন এবং পরে এসোফেজিয়াল ক্যানসার হয়েছে।
কারণ হার্টবার্ন হয় যখন নিচের খাদ্যনালী স্ফিঙ্কটার (Lower Esophageal Sphincter) ঠিকভাবে বন্ধ হয় না এবং পাকস্থলীর অ্যাসিড খাদ্যনালীতে ফিরে আসে।
বিপজ্জনক জটিলতা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অম্লীয় অ্যাসিডের পুনরাবৃত্ত এক্সপোজার খাদ্যনালীর লাইনে প্রদাহ ও ক্ষতি সৃষ্টি করে, যা বারেট’স এসোফাগাস নামক প্রাক-ক্যানসার পদার্থ তৈরি করতে পারে এবং শেষ পর্যন্ত ক্যানসারে রূপ নিতে পারে। দীর্ঘস্থায়ী হার্টবার্ন প্রায়শই গ্যাস্ট্রোইসোফেজিয়াল রিফ্লাক্স ডিজিজ (GERD)-এর সঙ্গে যুক্ত থাকে।
প্রতিরোধ ও ব্যবস্থাপনার কৌশল
সময়মতো ব্যবস্থা নিলে এসোফেজিয়াল ক্যানসারের ঝুঁকি কমানো সম্ভব এবং হার্টবার্নের উপসর্গও নিয়ন্ত্রণে আনা যায়। ডা. সৌরভ সেথির গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শগুলো নিম্নরূপ:
১. শোয়ার ভঙ্গি মাঝে মাঝে হার্টবার্ন হলে বাম পাশে শুতে চেষ্টা করুন। বালিশ দিয়ে মাথা উঁচু রাখলে রাতের রিফ্লাক্স কমে।
২. খাবারের সময় রাতের খাবার ঘুমের ৩-৪ ঘণ্টা আগে খাওয়া উচিত। খাওয়ার পর কমপক্ষে ২-৩ ঘণ্টা পরে শুতে যান।
৩. অল্প খাবার কম পরিমাণে কিন্তু ঘনঘন খেলে পাকস্থলীর চাপ কমে।
৪. ডায়েট হার্টবার্ন সৃষ্টি করা খাবার চিহ্নিত করে এড়িয়ে চলুন। ফল, শাক-সবজি এবং হোল গ্রেইনের উপর জোর দিন।
৫. বর্জন মদ ও ক্যাফেইন সীমিত করুন, কারণ এগুলো রিফ্লাক্স বাড়ায়। ধূমপান ত্যাগ করুন।
৬. ওজন স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখা হার্টবার্ন কমাতে সাহায্য করে।
৭. ওষুধ প্রয়োজনে ওভার-দ্যা-কাউন্টার অ্যান্টি-অ্যাসিড ওষুধ ব্যবহার করা যেতে পারে, তবে নতুন ওষুধ শুরু করার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
কখন ডাক্তারের পরামর্শ নেবেন
ডা. সেথি সতর্ক করেছেন, “যদি হার্টবার্ন স্থায়ী হয়, বিশেষ করে যদি খাওয়ার সময় গিলে খাওয়ায় সমস্যা বা খাদ্য আটকে থাকার অনুভূতি থাকে, তাহলে অবশ্যই ডাক্তার দেখানো প্রয়োজন।” তিনি মনে করিয়ে দেন, সব রোগীর ক্ষেত্রেই ক্যানসার হয় না।
দ্রষ্টব্য এই তথ্য পেশাদার চিকিৎসকের পরামর্শের বিকল্প নয়। সর্বদা বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
শীতে অতিরিক্ত শীত লাগে কোন ভিটামিন কম থাকলে এই সমস্যা বাড়ে জানেন কি
শীতকাল এলে অনেকেই অনুভব করেন, কম্বল বা চাদরের নিচে থাকা সত্ত্বেও হাত ও পা সারা সময় ঠাণ্ডা থাকছে। এমন অবস্থায় হাতে-পায়ে কাঁপুনিও দেখা দিতে পারে, এবং সাধারণ ধারণা শীতের কারণেই এমনটা হচ্ছে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সমস্যাটি শুধুমাত্র শীতের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়। এটি হতে পারে শরীরে ভিটামিন বি-১২ সহ অন্যান্য ভিটামিনের অভাবের কারণে।
গবেষণা এবং চিকিৎসকদের মতে
শরীরে ভিটামিন বি-১২ এর ঘাটতি থাকলে অতিরিক্ত শীত অনুভূত হয়। বিশেষ করে হাত ও পা তেমনভাবে গরম হয় না।
এছাড়া আয়রনের অভাবও শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে প্রভাব ফেলে। তাই কেবল শীতকে দায়ী করা ঠিক নয়।
ভিটামিনের ঘাটতি পূরণের উপায়
শরীরে ভিটামিন বি-১২ এর ঘাটতি পূরণের জন্য খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন জরুরি।
বি-১২ এর উৎস: মাছ, মাংস এবং ডিমের কুসুম নিয়মিত খেলে ভিটামিন বি-১২ এর ঘাটতি দূর করা সম্ভব।
ওমেগা-থ্রি: সামুদ্রিক মাছ খেলে শরীরে ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডও পৌঁছায়, যা ভিটামিন বি-১২ এর কার্যকারিতা বাড়াতে সাহায্য করে।
ভিটামিন ডি: এছাড়া দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার শরীরে ভিটামিন ডি পূরণের জন্য সহায়ক।
ঝিনঝিন ভাব ও করণীয়
শীতের সময় হাত-পা ঠাণ্ডা হওয়া ছাড়াও যদি ঝিনঝিন ভাব অনুভূত হয়, তবে সেটিও ভিটামিন ঘাটতির নির্দেশ দিতে পারে। তাই এই সমস্যা উপেক্ষা না করে পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রয়োজনীয় খাবার গ্রহণ করা এবং প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
নিয়মিত খাদ্যাভ্যাস ও প্রয়োজনীয় পরামর্শের মাধ্যমে শীতের সময়ে হাত-পা ঠাণ্ডা থাকার সমস্যা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব। শরীরের এই সতর্ক সংকেতগুলো জানার মাধ্যমে সহজেই সমস্যাটি প্রতিরোধ করা যায়।
থাইরয়েড নিয়ন্ত্রণে ৫টি ঘরোয়া পানীয় ক্লান্তি দূর করে ওজন রাখবে স্বাভাবিক
অল্প কাজেই ক্লান্তি, সারাদিন ঘুম ঘুম ভাব, ওজন বেড়ে যাওয়া কিংবা হঠাৎ কমে যাওয়ার মতো উপসর্গগুলো দেখলে অনেকেই সমস্যার উৎস বুঝতে পারেন না। চিকিৎসকদের মতে, এগুলো থাইরয়েড হরমোনের ভারসাম্যহীনতার সাধারণ উপসর্গ। শরীরের বিপাকক্রিয়া থেকে শুরু করে হরমোন নিঃসরণ পর্যন্ত সবকিছুই নিয়ন্ত্রণ করে এই ছোট্ট থাইরয়েড গ্রন্থি।
থাইরয়েড গ্রন্থিটি কখনো অতিসক্রিয় হয়ে ওঠে, আবার কখনো নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে। এই দুই ক্ষেত্রেই শরীরের স্বাভাবিক কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটে। ফলে নিয়মিত ওষুধের পাশাপাশি কিছু প্রাকৃতিক উপায় অবলম্বন করা জরুরি, যা হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করবে।
পুষ্টিবিদদের মতে, কিছু সহজ ঘরোয়া পানীয় নিয়মিত পান করলে থাইরয়েডের সমস্যা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। চলুন জেনে নেওয়া যাক তেমনই ৫টি কার্যকর পানীয় সম্পর্কে।
১. ঈষদুষ্ণ পানিতে লেবুর রস ও এক চিমটে সৈন্ধব নুন
প্রতিদিন সকালে ঈষদুষ্ণ পানিতে কয়েক ফোঁটা লেবুর রস মিশিয়ে পান করলে হজমশক্তি উন্নত হয়। থাইরয়েডের রোগীরা প্রায়ই শরীরের আর্দ্রতা ও ক্লান্তিজনিত সমস্যায় ভোগেন। এই পানীয় আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং বিপাকক্রিয়া সচল রাখে। অন্যদিকে সৈন্ধব নুনে থাকা ম্যাগনেশিয়াম ও পটাশিয়াম হরমোনের ভারসাম্য রক্ষা করতে সহায়ক।
২. সজনে পাতার চা
সজনেপাতা বা মোরিঙ্গা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, জিঙ্ক এবং আয়রনের একটি চমৎকার উৎস। এই উপাদানগুলো থাইরয়েড হরমোনের সমতা বজায় রাখে এবং অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমায়। নিয়মিত সজনেপাতার চা পান করলে হরমোনের অসামঞ্জস্যজনিত ক্লান্তি ও অবসাদ দূর হয়।
৩. জিরে-ধনে-মৌরি ভেজানো পানি
পেট পরিষ্কার ও লিভার সুস্থ রাখতে জিরে, ধনে ও মৌরি ভেজানো পানি অনেক উপকারী। এই মিশ্রণ শরীরের টক্সিন দূর করে ও লিভারের কার্যকারিতা বাড়ায়। লিভারের কার্যকারিতা সঠিক থাকলে থাইরয়েড হরমোনের T3 ও T4-এর মাত্রাও সঠিক থাকে।
৪. ডাবের পানিতে এক চিমটে দারচিনি
ডাবের পানি শরীরকে ঠান্ডা রাখে ও ইলেকট্রোলাইটের ভারসাম্য বজায় রাখে। এর সঙ্গে এক চিমটে দারচিনি মিশিয়ে খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং থাইরয়েড হরমোনের কার্যকারিতাও উন্নত হয়। এটি একটি সতেজ ও প্রাকৃতিক এনার্জি ড্রিংক হিসেবেও কাজ করে।
৫. অশ্বগন্ধা গাছের ছাল ভেজানো পানি
আয়ুর্বেদে অশ্বগন্ধা বহু যুগ ধরে হরমোন ভারসাম্য এবং মানসিক চাপ কমাতে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। গবেষণায় দেখা গেছে, এটি থাইরয়েড গ্রন্থির কার্যকারিতা উন্নত করে এবং কর্টিসল বা স্ট্রেস হরমোনের মাত্রা কমায়। ফলে শরীর থাকে উদ্যমী ও মন থাকে প্রশান্ত।
হরমোনের সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিয়মিত ঘুম, সঠিক খাবার এবং মানসিক প্রশান্তির পাশাপাশি এই পানীয়গুলোকে দৈনন্দিন রুটিনে যুক্ত করা যেতে পারে। তবে যেকোনো ঘরোয়া উপায় গ্রহণের আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া সবচেয়ে ভালো।
সূত্র : এই সময়
৬০ দিনে ফ্যাটি লিভার থেকে মুক্তি: জীবনযাত্রার চাপ কমাতে ৫টি বিশেষ খাবার
আজকের ব্যস্ত জীবনধারা এবং সেডেন্টারি লাইফস্টাইলের কারণে মানবদেহে নানা স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। জাঙ্কফুডের বৃদ্ধি এবং চলাফেরার অভাবে লিভারের ওপর চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে ফ্যাটি লিভার বা লিভারে অতিরিক্ত চর্বি জমার সমস্যা এখন ১৫ থেকে ৪০ বছর বয়সী মানুষের মধ্যেও ব্যাপক হারে দেখা যাচ্ছে। অথচ লিভার আমাদের শরীরের বিপাক হার নিয়ন্ত্রণ, পুষ্টি শোষণ এবং টক্সিন নিঃসরণের মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো করে থাকে। লিভারের যত্ন না নিলে শরীরের স্বাস্থ্য দ্রুত বিঘ্নিত হয়।
বিশেষজ্ঞদের দাবি, খাদ্যতালিকায় ফাইবার, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং পুষ্টিতে সমৃদ্ধ কিছু খাবার নিয়মিত রাখলে লিভারের স্বাস্থ্য স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনা সম্ভব। তারা বলছেন, মাত্র ৬০ দিনের মধ্যে লিভারের ফ্যাট গলানো যেতে পারে।
লিভারের যত্নে কার্যকর ৫টি খাবার
১. গ্রিন টি
গ্রিন টিতে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্যাটেচিন রয়েছে, যা লিভারের ফ্যাট কমাতে বিশেষভাবে সহায়ক। ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অফ মলিকুলার সায়েন্সেস-এ প্রকাশিত গবেষণায় দেখা গেছে, নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার সারাতে গ্রিন টি দারুণ কার্যকর। দিনে দুই থেকে তিন কাপ গ্রিন টি নিয়মিত খেলেই লিভারের স্বাস্থ্য বজায় থাকে।
২. বিটের রস
বিটের মধ্যে থাকা প্রাকৃতিক যৌগ লিভারের কোষকে ক্ষয় থেকে রক্ষা করে। এটি লিভারে জমে থাকা দূষিত পদার্থ বের করতে এবং লিভারের সামগ্রিক কার্যকারিতা উন্নত করতে অত্যন্ত সহায়ক।
৩. হলুদ
হলুদের মধ্যে রয়েছে কারকিউমিন, যা একটি শক্তিশালী অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান। এটি লিভারসহ শরীরের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের স্বাস্থ্য রক্ষা করে। নিয়মিত রান্নার খাবারে হলুদ রাখলে ফ্যাটি লিভারের ঝুঁকি অনেকাংশে কমে।
৪. শাকসবজি
মৌসুম অনুযায়ী তাজা শাকসবজি খাদ্যতালিকায় রাখা লিভারের জন্য অপরিহার্য। এই সময়ে বাজারে পাওয়া পালংশাক, বাঁধাকপি, ব্রকোলি, বিনস ও ক্যাপসিকামের মতো সবজিগুলো লিভারের প্রদাহ কমায়, অক্সিডেটিভ স্ট্রেস প্রতিরোধ করে এবং ফ্যাটি লিভারের সমস্যায় সহায়ক ভূমিকা রাখে।
৫. রসুন
রসুনে আছে সালফার সমৃদ্ধ যৌগ, যা শরীর থেকে টক্সিন বা বিষাক্ত পদার্থ বের করতে সহায়তা করে এবং লিভারের কোষের ক্ষয় প্রতিরোধ করে। নিয়মিত রসুন খেলে ফ্যাটি লিভারের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পাঁচটি খাবার সঠিক খাদ্যাভ্যাসে অন্তর্ভুক্ত করলে মাত্র ৬০ দিনের মধ্যে লিভারের স্বাস্থ্য উন্নত করা সম্ভব।
সূত্র : এই সময়
ক্যানসার চিকিৎসায় মহা সাফল্য: নতুন ভ্যাকসিনের প্রাথমিক পরীক্ষায় শতভাগ কার্যকারিতা
ক্যানসার চিকিৎসায় বিজ্ঞানীরা এক যুগান্তকারী অগ্রগতি অর্জন করেছেন। নতুন এক ধরনের ক্যানসার ভ্যাকসিনের প্রাথমিক মানবদেহে পরীক্ষায় শতভাগ সাড়া পাওয়ার দাবি করেছেন গবেষকরা, যা বিশ্বজুড়ে ক্যানসার আক্রান্তদের জন্য এক নতুন আশার আলো দেখাচ্ছে।
রাশিয়ার বিজ্ঞানীদের দাবি, নতুন এই ক্যানসার ভ্যাকসিন 'এন্টারোমিক্স' মানবদেহে প্রাথমিক পরীক্ষায় শতভাগ কার্যকারিতা এবং নিরাপত্তা দেখিয়েছে। পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী রোগীদের টিউমার উল্লেখযোগ্যভাবে ছোট হয়ে গেছে এবং কারও শরীরে কোনো গুরুতর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি।
mRNA প্রযুক্তিতে তৈরি ভ্যাকসিন
গবেষকেরা জানিয়েছেন, 'এন্টারোমিক্স' ভ্যাকসিনটি mRNA প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে। উল্লেখ্য, এই প্রযুক্তিই করোনা ভাইরাসের টিকা তৈরিতে ব্যবহৃত হয়েছিল।
গবেষকেরা আরও জানান, এই ভ্যাকসিনটি মূলত দেহের রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থা বা ইমিউন সিস্টেমকে এমনভাবে প্রশিক্ষণ দেয়, যাতে তা ক্যানসার কোষগুলোকে সঠিকভাবে শনাক্ত করে ধ্বংস করতে পারে। এর ফলে প্রচলিত চিকিৎসা পদ্ধতি, যেমন কেমোথেরাপি বা রেডিয়েশনের তুলনায় এটি অনেক বেশি নিরাপদ ও বুদ্ধিদীপ্ত বিকল্প হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
কম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ও সাফল্যের প্রত্যাশা
প্রাথমিক পরীক্ষার ফলাফলে দেখা গেছে, অংশগ্রহণকারী রোগীদের শরীরে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছিল খুবই সামান্য। প্রচলিত কেমোথেরাপি বা রেডিয়েশনের তুলনায় এটি অনেক নিরাপদ বিকল্প হতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।
গবেষকেরা আশাবাদী যে, পরবর্তী ধাপের পরীক্ষাগুলোতেও যদি এই একই ধরনের ইতিবাচক ফলাফল পাওয়া যায়, তবে 'এন্টারোমিক্স' বিভিন্ন ধরনের ক্যানসারের ক্ষেত্রেও সমান কার্যকর প্রমাণিত হতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই আবিষ্কার ক্যানসার চিকিৎসায় এক নতুন যুগের সূচনা করতে পারে। এটি রোগের অগ্রগতি রোধ, ক্যানসার রোগীদের আয়ুষ্কাল বৃদ্ধি এবং তাদের জীবনমান উন্নয়নের নতুন সম্ভাবনা তৈরি করবে। সফলভাবে প্রয়োগ করা গেলে এই ভ্যাকসিনটি বিশ্বব্যাপী ক্যানসারবিরোধী লড়াইয়ে একটি অত্যন্ত কার্যকর অস্ত্র হয়ে উঠতে পারে।
পাঠকের মতামত:
- ইসরায়েলের গোপন ফাঁদেই উল্টো ধরা, ইরানের যে কৌশলে বোকা বনেছিল ইসরায়েল
- হাসারাঙ্গাকে ছেড়ে রিশাদের দিকে নজর? আইপিএল নিলামে টাইগারদের চাহিদা
- প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগে মামলা, আদালতে আত্মসমর্পণ করলেন মেহজাবীন
- বয়স বাড়লেও তারুণ্য থাকবে অটুট, যদি পাতে থাকে এই শীতের সবজি!
- অতীতে ইসি সরকারের ‘মন্ত্রী’ ছিল: কাদের সিদ্দিকীর কড়া সমালোচনা
- জেন-জি বিক্ষোভে উত্তাল আরেক দেশ, প্রেসিডেন্টের বাসভবনে হামলার চেষ্টা
- দেশের পরিস্থিতি খুব ভালো নয়, খারাপও নয়: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
- আমার প্রতি এত রাগ বা হিংসা কেন? সব অভিযোগ খণ্ডন করলেন নিগার সুলতানা
- বিদেশি কর্মী নিয়োগে 'ইউ-টার্ন' সৌদির,কমছে বেতন ও সুবিধা
- ২০২৬ সালের ব্যাংক ছুটির তালিকা প্রকাশ করল বাংলাদেশ ব্যাংক
- ডেঙ্গু বা ভাইরাসের পর দুর্বলতা? প্লেটলেট বাড়বে যা খেলে
- সাগর যেখানে সমাধিক্ষেত্র: ভূমধ্যসাগরে আবারও ডুবল স্বপ্নের নৌকা
- অতীতে কেউ হাত দেয়নি, প্রবাসীদের ভোট নিয়ে যা বললেন সিইসি
- অভিনেত্রী মেহজাবীন ও তার ভাইয়ের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা
- গণভোটের আইনি ভিত্তি নেই: রিজভী
- ১৬ নভেম্বর ডিএসই লেনদেনের সারসংক্ষেপ
- ১৬ নভেম্বর ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ লুজার তালিকা প্রকাশ
- ১৬ নভেম্বর ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- হাসিনার রায় নিয়ে নৈরাজ্য সৃষ্টির পাঁয়তারা চলছে: মির্জা ফখরুল
- ইসির সংলাপে নাটক: ঐক্যজোটের এক অংশকে বের করে দিল আরেক পক্ষ
- গাজা–ইরান ইস্যুতে রহস্যময় ফোনালাপ নেতানিয়াহুর সঙ্গে পুতিনের
- শেখ হাসিনাদের রায় সরাসরি দেখতে পাবেন যেভাবে
- ২৪টি বন্ডে লেনদেনহীন দিন: কেন স্থবির বাংলাদেশের ডেট মার্কেট
- তারল্য সংকটে চাপ বাড়ছে DSE–৩০ সূচকে
- ২০১৮ নির্বাচনের গোপন নীলনকশা: ‘কপোতাক্ষ কক্ষে’ কী ঘটেছিল
- ৩১ লাখ শিক্ষার্থীর জন্য সপ্তাহে পাঁচ দিন পুষ্টিকর খাবার
- নির্বাচনের আগে সংলাপ ম্যারাথন- সকালে ৬ দল, বিকেলে আরও ৬ দল
- শীতে ত্বক বাঁচানোর কার্যকর উপায়
- শীতে ঘরোয়া উপায়ে চুলের পূর্ণাঙ্গ যত্ন
- রাহিমা ফুডসের প্রান্তিক ফলাফল যেমন
- সায়হাম টেক্সটাইল এর প্রথম প্রান্তিক প্রকাশ
- উপকরণ সংকটে নাভানা সিএনজি-এর মুনাফায় ধাক্কা
- নাভানা ফার্মাসিউটিক্যালসের দুর্দান্ত Q1
- ১,৪৪৪ টন সোনার সবচেয়ে বড় স্বর্ণভান্ডার আবিষ্কার
- “আমার ভাই মেয়র হবে না, ভাগিনা চেয়ারম্যান নয়”
- বিএনপির মনোনয়ন সংকট ও আসন–সমঝোতা
- ১৬ নভেম্বর সকালে ঢাকার বাতাসের মান নেমে গেল বিপজ্জনক পর্যায়ে
- রাজধানীতে আজ রাজনৈতিক কর্মসূচির ছড়াছড়ি, জেনে নিন বিস্তারিত
- ঢাকা ও আশপাশে আজ নামাজের নির্ধারিত সময় জানুন
- আজ বন্ধ ঢাকার প্রধান যেসব মার্কেটগুলো
- এনসিএলে আজ চার ম্যাচ: ঘরোয়া ক্রিকেটে উত্তাপ বাড়ছে
- নতুন দামে ২১ ও ১৮ ক্যারেট স্বর্ণের মূল্যও কমল
- আজ একটি যুদ্ধ থামালাম, কাদের উদ্দেশে এই মন্তব্য ট্রাম্পের?
- ধূমপান ছাড়ার পর শরীর যেভাবে নিজেকে 'মেরামত' করে, জানুন বিস্তারিত
- সন্ধ্যার আতঙ্ক: মাত্র দুই ঘণ্টায় ঢাকার তিন এলাকায় ৪টি বিস্ফোরণ
- অ্যাকশন, রিভেঞ্জ আর সিক্রেট মিশন: দেখুন সেরা ১০ কোরিয়ান অ্যাকশন সিরিজ!
- রাজনৈতিক দলগুলো ফ্যাসিবাদের ভাষায় কথা বলছে: ডাকসু ভিপি
- বরিশালে হুলস্থুল কাণ্ড: পুলিশের হাতে কামড় দিয়ে ছাত্রদল নেতার পলায়ন
- "বিএনপি ক্ষমতায় গেলে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতিতে মহান আল্লাহর ওপর আস্থা ও বিশ্বাস পুনর্বহাল করা হবে"
- রেকর্ড ভাঙল সরকারের ঋণ, অর্থ বিভাগের পরিসংখ্যানে নতুন তথ্য
- সিলেট টেস্টে আয়ারল্যান্ড অলআউট ২৮৬ রানে, দুর্দান্ত সূচনায় বাংলাদেশ
- গোলের রাজা কে, মেসি না রোনালদো? সংখ্যার হিসাবে কে এগিয়ে, কে পিছিয়ে!
- কোরিয়ান ড্রামায় মুগ্ধ বিশ্ব: মিস্ট্রি থ্রিলার থেকে টাইম ট্রাভেল, দেখুন সেরা ১০ সিরিজ!
- সাদমানের পর মুমিনুলকে নিয়ে জয়ী রথ বাংলাদেশের ওপেনিংয়ে রেকর্ড জুটি
- মামলার রেশ না কাটতেই তিশার বিরুদ্ধে প্রাণনাশের অভিযোগ
- বাংলাদেশ নেপাল ম্যাচের আগে জেনে নিন হেড টু হেড পরিসংখ্যানে কারা চালকের আসনে
- নেপালের বিপক্ষে দুর্দান্ত হামজা জোড়া গোলে ম্যাচ ঘুরিয়ে দিল বাংলাদেশ
- আজকের খেলাধুলা সূচি
- আজ বিশ্ব ব্যাচেলর দিবস: একাকীত্ব নয়, স্বাধীনতার উৎসব
- ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে বড় ধরনের পতন: ৩৮৪ কোম্পানির মধ্যে মাত্র ১৫টি বেড়েছে
- আজ রাজধানীতে রাজনৈতিক যেসব কর্মসূচি, কোথায় কী হচ্ছে জেনে নিন
- লকডাউনের দিনেও দোকান-শপিংমল খোলা থাকবে: মালিক সমিতি
- রোনালদোর শেষ খেলার পরিকল্পনা নিয়ে বড় ঘোষণা
- কাদিয়ানী ইস্যু ও পাকিস্তানি সংযোগ: বাংলাদেশের ধর্মীয় রাজনীতিতে বিপজ্জনক অস্থিরতার ইঙ্গিত
- মুশফিক-তামিমদের ক্লাবে ঢোকার অপেক্ষায় লিটন দাস আজই কি গড়বেন রেকর্ড








