গাজামুখী ত্রাণবহরে ইসরায়েলি কমান্ডোর অভিযান

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০২ ১৩:৫৭:২৩
গাজামুখী ত্রাণবহরে ইসরায়েলি কমান্ডোর অভিযান
সুমুদ ফ্লোটিলার জাহাজ থেকে আটক কর্মীদের ইসরায়েলে নিয়ে যাচ্ছে কমান্ডোরা/ ছবি: ইসরায়েল এমএফএ

গাজামুখী ত্রাণবহরে ইসরায়েলি কমান্ডোর অভিযান, আটক গ্রেটা থুনবার্গসহ দুই শতাধিক কর্মীগাজামুখী আন্তর্জাতিক নৌবহর গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার জাহাজ থেকে কর্মীদের আটক করেছে ইসরায়েলি কমান্ডোরা। আটক কর্মীদের মধ্যে সুইডিশ পরিবেশবাদী আন্দোলনকারী গ্রেটা থুনবার্গও রয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) ইসরায়েলি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই তথ্য জানিয়েছে।

সংস্থাটির দাবি, আটক সবাই ‘নিরাপদ ও সুস্থ আছেন’ এবং তাদের ‘শান্তিপূর্ণভাবে’ ইসরায়েলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ইসরায়েলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আটক ব্যক্তিদের ইউরোপে ফেরত পাঠাতে ‘ডিপোর্টেশন প্রক্রিয়া’ শুরু করা হবে।

নৌবহরে অভিযান ও কর্মীদের গ্রেপ্তার

জানা গেছে, গত রাত থেকে ইসরায়েলি নৌ কমান্ডোরা ফ্লোটিলার অন্তত ৪৪টির মধ্যে ২১টি নৌযান আটক করেছে। এসব নৌযানে যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর চেষ্টা চলছিল।

আল-জাজিরা জানিয়েছে, গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা থেকে এ পর্যন্ত ৩৭ দেশের ২০১ জন কর্মী-সামাজিক আন্দোলনকারীকে বন্দি করেছে ইসরায়েল। ইসরায়েলি নৌবাহিনী ফ্লোটিলার জাহাজগুলোর যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ করে দেয়, জলকামান ছুড়ে আক্রমণ চালায় এবং আন্তর্জাতিক জলসীমা থেকে কর্মীদের আটক করে।

আটক হওয়া কর্মীদের মধ্যে স্পেন থেকে ৩০ জন, ইতালি থেকে ২২ জন, তুরস্ক থেকে ২১ জন এবং মালয়েশিয়া থেকে ১২ জন অংশ নিয়েছিলেন।

বাংলাদেশি কর্মীদের অবস্থান

নৌবহরের একমাত্র বাংলাদেশি হিসেবে রয়েছেন আলোকচিত্রী শহিদুল আলম। এছাড়া বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক রুহি আক্তার রুহিও ফ্লোটিলায় ছিলেন। শহিদুল আলম ‘কনশায়েন্স’ নামে একটি বড় জাহাজে রয়েছেন, যা এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত আটক হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি।

অবরোধ ভাঙার অঙ্গীকার

গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার মুখপাত্র সাইফ আবুকেশেক জানিয়েছেন, অবৈধভাবে চালানো ইসরায়েলি বাধা সত্ত্বেও তারা গাজার অবরোধ ভাঙতে এবং একটি মানবিক করিডর খুলতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। তিনি বলেন, ইসরায়েলকে ফাঁকি দিয়ে সুমুদ ফ্লোটিলার অন্তত ৩০টি জাহাজ গাজার উপকূল থেকে মাত্র ৮৫ কিমি দূরে রয়েছে। ফ্লোটিলা বলছে, আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর অধিকার তাদের রয়েছে।

সূত্র: আল-জাজিরা


গাজা অভিমুখী নৌবহর আটকাতে ব্যর্থ ইসরায়েল, উড়ছে বাংলাদেশের পতাকা

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০১ ২১:৩৬:৩৪
গাজা অভিমুখী নৌবহর আটকাতে ব্যর্থ ইসরায়েল, উড়ছে বাংলাদেশের পতাকা
গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলায় অংশ নিয়েছেন আলোকচিত্রী শহিদুল আলম। ছবি : সংগৃহীত

মানবিক সহায়তা নিয়ে গাজার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে আন্তর্জাতিক নৌবহর গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা। ইসরায়েলের নৌবাহিনীর তৎপরতা সত্ত্বেও নৌবহরটি এখন গাজার কাছাকাছি রয়েছে। বৃহস্পতিবারের মধ্যেই জাহাজবহরটি গাজার উপকূলে ভিড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।

নৌবহরে বাংলাদেশের পতাকা

গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলায় ৪৪টি দেশের ৫৫টি জাহাজ অংশগ্রহণ করছে। এতে সাংবাদিক, মানবাধিকার কর্মী, শিল্পী এবং সাধারণ স্বেচ্ছাসেবীরা মানবিক সহায়তা পৌঁছে দিতে গাজার উদ্দেশ্যে ছুটছেন। এই নৌবহরে একমাত্র বাংলাদেশি হিসেবে রয়েছেন আলোকচিত্রী শহিদুল আলম। তিনি সেখান থেকে লাল-সবুজের পতাকা হাতে ছবিও শেয়ার করেছেন।

ইসরায়েলি তৎপরতা ব্যর্থ

আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার ত্রাণবাহী জাহাজ বহরকে আটকাতে ইসরায়েলের নৌবাহিনী গত কয়েক দিন ধরে তৎপরতা চালালেও শেষ পর্যন্ত তারা নৌবহরটিকে আটকাতে ব্যর্থ হয়েছে।

গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার অন্যতম মুখপাত্র ওয়ায়েল নাওয়ার জানিয়েছেন, যখন ইসরায়েলি বাহিনী গাজাকে অবরুদ্ধ করে মানবিক সহায়তা প্রবেশ পুরোপুরি বন্ধ করে হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে, ঠিক তখন বিশ্বের শীর্ষ নেতাদের নীরব ভূমিকা দেখে এই আন্তর্জাতিক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। উত্তাল সমুদ্র পাড়ি দিয়ে এই কর্মীরা ফিলিস্তিনিদের পাশে দাঁড়িয়ে বিশ্ব নেতাদের ঘুমন্ত বিবেককে জাগ্রত করতে চান।


কাতারে হামলা হলে সামরিকভাবে জবাব দেবে যুক্তরাষ্ট্র

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০১ ১৯:৩৮:২১
কাতারে হামলা হলে সামরিকভাবে জবাব দেবে যুক্তরাষ্ট্র
গত মাসে কাতারের একটি ভবনে বোমা হামলা চালায় ইসরায়েল। ছবি: সংগৃহীত

গত মাসে দোহায় ইসরায়েলের নজিরবিহীন বোমা হামলার পর কাতারের ওপর ফের আক্রমণ হলে ‘প্রতিশোধমূলক পাল্টা সামরিক পদক্ষেপ’ নেওয়ার বিষয়ে একটি নির্বাহী আদেশে সই করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। নতুন এই আদেশে কাতারের ওপর আক্রমণকে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে বিবেচনা করা হবে।

বুধবার (১ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে আল জাজিরা এই তথ্য জানিয়েছে।

ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশে কী আছে?

ট্রাম্পের সই করা নির্বাহী আদেশে বলা হয়েছে, “বহিরাগত আক্রমণের বিরুদ্ধে কাতারের নিরাপত্তা ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা নিশ্চিত করা যুক্তরাষ্ট্রের নীতি।”

আদেশে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে:

কাতার রাষ্ট্রের ভূখণ্ড, সার্বভৌমত্ব বা গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোর ওপর যেকোনো সশস্ত্র আক্রমণকে যুক্তরাষ্ট্রের শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে বিবেচনা করবে যুক্তরাষ্ট্র।

এই ধরনের আক্রমণের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র কাতারের স্বার্থ রক্ষা ও শান্তি-স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধারের জন্য কূটনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং প্রয়োজনে সামরিকসহ সকল আইনগত এবং উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

আদেশে আরও বলা হয়, যুদ্ধমন্ত্রী (Secretary of War), পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালকের সমন্বয়ে কাতারের সঙ্গে যৌথ তাৎক্ষণিক পরিকল্পনা বজায় রাখা হবে, যাতে কাতারের বিরুদ্ধে যেকোনো বিদেশি আগ্রাসনের দ্রুত এবং সমন্বিত প্রতিক্রিয়া নিশ্চিত করা যায়।

হামলা ও ক্ষমার প্রসঙ্গ

প্রসঙ্গত, গত মাসে ইসরায়েল দোহায় একটি ভবন লক্ষ্য করে কয়েকটি বোমা হামলা চালায়। ইসরায়েলের দাবি ছিল, হামাসের নেতৃত্বকে লক্ষ্য করে এই হামলা চালানো হয়েছে। মূলত কাতারের পৃষ্ঠপোষকতায় গাজার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব নিয়ে রাজধানী দোহায় এই আলোচনা চলছিল। এই হামলায় ফিলিস্তিনি প্রতিনিধিদের কয়েকজন সদস্য নিহত হন এবং একজন কাতারি নিরাপত্তা কর্মকর্তাও নিহত হন।

এই ঘটনার পর গত সোমবার ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু কাতারের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন। হোয়াইট হাউস থেকে যৌথ ফোনকলে ট্রাম্প এবং নেতানিয়াহু কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আব্দুল রহমান বিন জসিম আল থানির কাছে ক্ষমা চান।


ডাক্তারদের হাতের লেখা ঠিক করতে বললেন আদালত, না হলে ব্যবস্থা

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ০১ ১৭:৪৯:২৯
ডাক্তারদের হাতের লেখা ঠিক করতে বললেন আদালত, না হলে ব্যবস্থা
ছবি: সংগৃহীত

বর্তমান যুগে কম্পিউটার ও কী-বোর্ড ব্যবহার করে লেখালেখির প্রচলন বাড়লেও, হাতের লেখার গুরুত্ব কমেনি—বিশেষ করে যদি লেখক একজন চিকিৎসক হন। ভারতের পাঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্ট সম্প্রতি এক আদেশে বলেছেন, পাঠযোগ্য মেডিকেল প্রেসক্রিপশন একটি মৌলিক অধিকার। আদালতের মতে, অস্পষ্ট লেখার কারণে রোগী ভুল ওষুধ সেবন করতে পারেন, যা জীবন-মৃত্যুর পার্থক্য তৈরি করতে পারে।

অস্পষ্ট হাতের লেখা ও মামলার প্রেক্ষাপট

বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো ভারতেও অনেক চিকিৎসকের হাতের লেখা অস্পষ্ট, যা প্রায়শই ফার্মাসিস্টদেরও বুঝতে অসুবিধা তৈরি করে। তবে এই সমস্যাটি শুধু হাস্যরসের বিষয় নয়, বরং রোগীর সুরক্ষার জন্য তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

ভারতের আদালত এই আদেশটি দেন ধর্ষণ, প্রতারণা ও জালিয়াতির অভিযোগসংক্রান্ত একটি মামলার প্রেক্ষিতে। বিচারকরা বাদী নারীর চিকিৎসাসংক্রান্ত প্রতিবেদন দেখেন, যার অনেক অংশই অস্পষ্ট হাতের লেখার কারণে বোঝা যাচ্ছিল না। আদালতের নথিতে বলা হয়েছে, “একটি শব্দ বা অক্ষরও স্পষ্টভাবে পড়া যায়নি।”

হাইকোর্ট নির্দেশ দেন:

পাঠ্যক্রমে হাতের লেখা: এখন থেকে মেডিকেল কলেজের পাঠ্যক্রমে হাতের লেখা উন্নত করার পাঠ অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

ডিজিটাল প্রেসক্রিপশন: দুই বছরের মধ্যে ডিজিটাল প্রেসক্রিপশন চালু করার সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে।

বড় হাতের অক্ষর: ওই সময় পর্যন্ত সকল চিকিৎসককে বড় হাতের অক্ষরে স্পষ্টভাবে প্রেসক্রিপশন লিখতে হবে।

ভারতীয় মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (আইএমএ) সভাপতি দিলীপ ভানুশালী জানিয়েছেন, শহর ও বড় শহরগুলোতে অনেক চিকিৎসক ইতোমধ্যেই ডিজিটাল প্রেসক্রিপশনে চলে গেছেন। তিনি বলেন, “তবে আমরা আমাদের সদস্যদের পরামর্শ দিয়েছি, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী বড় অক্ষরে প্রেসক্রিপশন লেখা উচিত, যাতে রোগী ও কেমিস্ট উভয়ই পড়তে পারেন।”

সূত্র: বিবিসি


গাজার উপকূলে ত্রাণবাহী নৌবহর: ২০০ নটিক্যাল মাইলের ভেতরে প্রবেশ করল

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ৩০ ২১:১৫:৩৪
গাজার উপকূলে ত্রাণবাহী নৌবহর: ২০০ নটিক্যাল মাইলের ভেতরে প্রবেশ করল
এআই জেনারেটেড ছবি।

ফিলিস্তিনের গাজা অভিমুখী আন্তর্জাতিক নৌবহর গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা ইসরায়েলের ঘোষিত ‘বিপৎসীমায়’ প্রবেশ করেছে। গাজার উপকূল থেকে প্রায় ৩৭০ কিলোমিটার (প্রায় ২০০ নটিক্যাল মাইল) দূরে অবস্থান করছে এই ত্রাণবাহী নৌবহর। এতে অংশগ্রহণকারী পরিবেশকর্মী গ্রেটা থুনবার্গসহ আন্তর্জাতিক সক্রিয়রা জানাচ্ছেন, ইসরায়েলের হুমকির কারণে যেকোনো মুহূর্তে নৌবহর বাধার মুখে পড়তে পারে।

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত নৌবহরের সব জাহাজে অংশগ্রহণকারীরা অবস্থান করছেন এবং যাত্রা অব্যাহত রেখেছেন। জাহাজগুলোতে খাবার, চিকিৎসা সামগ্রী এবং অন্যান্য জরুরি সরঞ্জামসহ মানবিক সহায়তা বহন করা হচ্ছে।

আন্তর্জাতিক আইন ও ইসরায়েলি অবস্থান

নৌবহরের একটি জাহাজে থাকা ক্রোয়েশিয়ার আইনজীবী মোরানা মিলজানোভিচ জানিয়েছেন, আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী আন্তর্জাতিক জলসীমা বা অন্য দেশের আঞ্চলিক জলসীমায় বেসামরিক জাহাজ আটকানোর কোনো অধিকার ইসরায়েলের নেই।

তিনি বলেন, “ইসরায়েল কেবল তখনই আটকাতে পারে, যদি কোনো অপরাধ সংঘটনের আশঙ্কা থাকে বা রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার জন্য প্রমাণিত হুমকি থাকে। এখানে এমন কোনো প্রমাণ নেই। আমাদের চারপাশের নৌবহর মানবিক সহায়তা বহন করছে। তাই এটি নিছক মানবিক উদ্যোগ। অংশগ্রহণকারীদের ভিন্ন রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থাকলেও তা প্রাসঙ্গিক নয়।”

নৌবহরটি গাজার উপকূলে পৌঁছানোর মাধ্যমে মানবিক সাহায্য পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সচেতন করার লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছে। বিশ্ব সম্প্রদায়ের নজর কাড়ার পাশাপাশি এই উদ্যোগ ইসরায়েলি নীতি এবং মধ্যপ্রাচ্যের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আন্তর্জাতিক চাপ বৃদ্ধিতে সহায়ক হতে পারে।

সূত্র : আল জাজিরা


ফাঁদ নাকি মুক্তি? ট্রাম্পের শান্তি প্রস্তাবে ফিলিস্তিন কি মুক্তি পাবে?

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ৩০ ২১:০৩:৫৭
ফাঁদ নাকি মুক্তি? ট্রাম্পের শান্তি প্রস্তাবে ফিলিস্তিন কি মুক্তি পাবে?

গাজা-ইসরায়েল সংঘাতের অবসান ঘটাতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০-দফার একটি নতুন যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব দিয়েছেন। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই প্রস্তাবকে 'ঐতিহাসিক' উল্লেখ করে স্বাগত জানিয়েছেন। তবে বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন, আপাত শান্তির এই পরিকল্পনায় বেশ কিছু অস্পষ্টতা এবং চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে, যা ফিলিস্তিনের ভবিষ্যৎকে আরও অনিশ্চিত করে তুলতে পারে।

হোয়াইট হাউসে ঘোষিত এই পরিকল্পনার মূল কাঠামো চমকপ্রদ:

প্রথম ধাপ: ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সব ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হবে, বিনিময়ে মুক্তি পাবে ফিলিস্তিনি বন্দিরা।

শাসনের ভার: গাজার শাসনের ভার ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী বা ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের হাতে না দিয়ে একটি অস্থায়ী টেকনোক্র্যাট কমিটি গঠন করা হবে। এই প্রশাসনিক কমিটির তদারকির জন্য ট্রাম্প ও সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারের নেতৃত্বে গঠিত হবে ‘বোর্ড অব পিস’। তবে কমিটি কীভাবে গঠিত হবে এবং তাদের দৈনন্দিন সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া কী হবে, তা স্পষ্ট নয়।

ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের অস্বীকৃতি: নেতানিয়াহু স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন যে তিনি ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেবেন না, যা ফিলিস্তিনিদের মূল দাবির পরিপন্থী।

মূল চ্যালেঞ্জ ও শর্ত

এই শান্তি প্রস্তাবে বহু 'কিন্তু' রয়ে গেছে। ফিলিস্তিনি সংগঠনগুলো দখলদারিত্ব শেষ না হওয়া পর্যন্ত অস্ত্র ত্যাগ করতে রাজি নয়।

কর্তৃত্বের মানদণ্ড: মাহমুদ আব্বাসের নেতৃত্বাধীন ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে গাজার দায়িত্ব দেওয়া হবে না—যতক্ষণ না তারা 'সংস্কার' এবং গাজার নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার সক্ষমতা অর্জন করছে। কিন্তু এই মানদণ্ড কে নির্ধারণ করবে বা এর সময়সীমা কী—তা নিয়ে রয়েছে ধোঁয়াশা।

নিরাপত্তা বাহিনী: নিরাপত্তার জন্য ‘অস্থায়ী আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতা বাহিনী’ (আইএসএফ) নিযুক্ত হবে গাজায়। কিন্তু এই বাহিনীতে কারা থাকবে, তাদের ক্ষমতা কতটা হবে, কিংবা তারা ইসরায়েলি সেনা হিসেবে কাজ করবে নাকি পর্যবেক্ষক হিসেবে— সে বিষয়েও কোনো স্পষ্ট নির্দেশনা নেই।

সেনা প্রত্যাহার: গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহারের কোনো সুনির্দিষ্ট সময়সীমাও প্রস্তাবে নেই; বরং তা নির্ভর করছে ‘নিরস্ত্রীকরণের মান’ পূরণের ওপর।

এই পরিস্থিতিতে, শান্তি প্রস্তাব বাস্তবে রূপ নেবে কি না—তা নিয়ে সংশয় রয়ে গেছে। তবে সৌদি আরব, কাতার, মিসরসহ বেশ কয়েকটি দেশের এই প্রস্তাবকে স্বাগত জানানো আশার সঞ্চার করেছে।


পাকিস্তানে ভয়াবহ বোমা হামলা, অভিযোগ ভারতের দিকে

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ৩০ ১৭:০৭:৩৮
পাকিস্তানে ভয়াবহ বোমা হামলা, অভিযোগ ভারতের দিকে
ছবি: সংগৃহীত

পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশের রাজধানী কোয়েটায় ভয়াবহ বোমা হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ১০ জন নিহত এবং প্রায় ৫০ জনের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ফ্রন্টিয়ার কর্পস (এফসি) সদর দপ্তরের কাছে এই হামলা হয়। বিস্ফোরণে পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এবং আশপাশের ভবন কেঁপে ওঠে।

বিস্ফোরণের তীব্রতা ও অভিযান

স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ডন জানিয়েছে, কোয়েটার মডেল টাউন থেকে হালি রোডে প্রবেশের সময় বিস্ফোরকবোঝাই একটি গাড়ি বিস্ফোরিত হয়। বিস্ফোরণের শক্তি এতটাই ছিল যে, নিকটবর্তী গাড়ি, দোকানপাট ও ভবনের জানালা মুহূর্তেই চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে যায়। ঘটনার পর নিরাপত্তা বাহিনী দ্রুত ঘটনাস্থল ঘিরে ফেলে এবং অভিযান চালিয়ে চার সন্ত্রাসীকে হত্যা করে।

বেলুচিস্তানের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বখত মুহাম্মদ কাকার জানিয়েছেন, নিহত ও আহতদের কোয়েটার সিভিল হাসপাতাল ও ট্রমা সেন্টারে নেওয়া হয়েছে। আহতদের মধ্যে অন্তত ছয়জনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিস্ফোরণের পরপরই প্রদেশজুড়ে হাসপাতালগুলোতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়।

ভারতের বিরুদ্ধে অভিযোগ

বেলুচিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী মীর সরফরাজ বুগতি এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, “এটি একটি সুস্পষ্ট সন্ত্রাসী হামলা। পাকিস্তানি জাতির মনোবল দুর্বল করতে এ ধরনের কাপুরুষোচিত হামলা কখনো সফল হবে না।”

পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারিও এক বিবৃতিতে হামলার নিন্দা জানান। তিনি অভিযোগ করে বলেন, “ভারত সমর্থিত সন্ত্রাসীরা এই হামলার পেছনে রয়েছে। ফিতনা-আল-খাওয়ারিজ ও ভারতের স্বার্থে কাজ করা উগ্রপন্থিরা পাকিস্তানের শান্তি ও স্থিতিশীলতা নষ্ট করতে চাইছে, কিন্তু তাদের ষড়যন্ত্র কখনো সফল হবে না।”

বর্তমানে পুরো কোয়েটা শহরে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী শহরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালাচ্ছে। এখন পর্যন্ত কোনো গোষ্ঠী এ হামলার দায় স্বীকার করেনি।


গাজা শান্তি পরিকল্পনা: ট্রাম্পের ২১-দফা প্রস্তাবে ভারত ও ইসরায়েল

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ৩০ ১৬:৩৭:৩৪
গাজা শান্তি পরিকল্পনা: ট্রাম্পের ২১-দফা প্রস্তাবে ভারত ও ইসরায়েল
ছবি: সংগৃহীত

গাজা-ইসরায়েলের সংঘাতের অবসান ঘটাতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত শান্তি পরিকল্পনার প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) হোয়াইট হাউসে ট্রাম্প ও ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বৈঠকের পর এই পরিকল্পনা ঘোষণা করা হয়।

মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) এক্স (সাবেক টুইটার)-এ দেওয়া এক পোস্টে নরেন্দ্র মোদি বলেন:

“গাজা সংঘাতের অবসান ঘটাতে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একটি বিস্তৃত পরিকল্পনার ঘোষণাকে আমরা স্বাগত জানাই। এটি ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিনি জনগণের জন্য এবং বৃহত্তর পশ্চিম এশীয় অঞ্চলের জন্য দীর্ঘমেয়াদী এবং টেকসই শান্তি, নিরাপত্তা এবং উন্নয়নের একটি কার্যকর পথ প্রদান করবে। আমরা আশা করি, সংশ্লিষ্ট সকলেই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের উদ্যোগকে সমর্থন করবেন।”

এই শান্তি পরিকল্পনার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত নিচে তুলে ধরা হলো:

যুদ্ধবিরতি ও প্রত্যাহার: উভয়পক্ষ সম্মত হলে যুদ্ধ অবিলম্বে শেষ হবে। জিম্মি মুক্তির প্রস্তুতির জন্য ইসরায়েলি বাহিনী প্রত্যাহার করবে এবং বিমান ও কামান হামলাসহ সকল সামরিক অভিযান স্থগিত থাকবে।

জিম্মি ও বন্দি মুক্তি: ইসরায়েল এই চুক্তি প্রকাশ্যে গ্রহণ করার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে হামাস জীবিত ও মৃত সকল জিম্মিকে ফিরিয়ে দেবে। জিম্মি মুক্তির পর ইসরায়েল ২৫০ জন যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত বন্দীকে এবং ৭ অক্টোবর ২০২৩-এর পর আটক ১,৭০০ গাজাবাসীকে মুক্তি দেবে। মুক্তিপ্রাপ্ত প্রতিটি ইসরায়েলি জিম্মির বিনিময়ে ইসরায়েল ১৫ জন নিহত গাজার নাগরিকের দেহাবশেষ ফিরিয়ে দেবে।

হামাসের দায়মুক্তি: শান্তির প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং অস্ত্র ত্যাগে সম্মত হামাস সদস্যদের সাধারণ ক্ষমা দেওয়া হবে। গাজা ত্যাগ করতে ইচ্ছুক হামাস সদস্যদের গ্রহণকারী দেশগুলোতে নিরাপদে যাওয়ার পথ দেওয়া হবে। হামাস গাজার প্রশাসনে কোনো ভূমিকা রাখবে না।

পুনর্গঠন: গাজা একটি উগ্রপন্থী, সন্ত্রাসমুক্ত অঞ্চল হবে এবং তা পুনর্গঠিত করা হবে। টানেল এবং অস্ত্র উৎপাদন সুবিধাসহ সমস্ত সামরিক অবকাঠামো ধ্বংস করা হবে এবং পুনর্নির্মাণ করা হবে না।

শাসনব্যবস্থা: গাজা একটি টেকনোক্র্যাটিক, অরাজনৈতিক ফিলিস্তিনি কমিটির অস্থায়ী অন্তর্বর্তীকালীন শাসনব্যবস্থার অধীনে পরিচালিত হবে, যার তত্ত্বাবধানে থাকবে একটি নতুন আন্তর্জাতিক অন্তর্বর্তীকালীন সংস্থা ‘শান্তির বোর্ড’। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ব্রিটেনের সাবেক প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার এর নেতৃত্বে থাকবেন।

হামাসের প্রতি হোয়াইট হাউসের সতর্কবার্তা

হোয়াইট হাউস শান্তি পরিকল্পনায় আরও বলেছে, যদি হামাস এই প্রস্তাব বিলম্বিত করে বা প্রত্যাখ্যান করে, তাহলে উপরোক্ত কাজগুলি আন্তর্জাতিক সহায়তা অভিযানসহ এগিয়ে যাবে। গাজার পুনর্গঠন ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে যুক্তরাষ্ট্র, আরব এবং আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সাথে কাজ করবে।

সূত্র/জি নিউজ


গাজায় শান্তির নকশা না নতুন জটিলতা? ট্রাম্প–নেতানিয়াহুর ২০ দফা পরিকল্পনা

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ৩০ ০৯:৩৭:৪২
গাজায় শান্তির নকশা না নতুন জটিলতা? ট্রাম্প–নেতানিয়াহুর ২০ দফা পরিকল্পনা

হোয়াইট হাউস গাজা যুদ্ধ থামানোর জন্য একটি ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনা প্রকাশ করেছে। প্রস্তাব অনুযায়ী, ইসরায়েল ও হামাস যদি পরিকল্পনায় সম্মত হয় তবে যুদ্ধ তাৎক্ষণিকভাবে বন্ধ হবে। গাজায় আটক সব ইসরায়েলি জিম্মি (জীবিত ও নিহতদের মরদেহ) ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ফেরত দিতে হবে এবং বিনিময়ে শত শত ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেওয়া হবে। গাজার প্রশাসন হামাসের হাতে থাকবে না, বরং অস্থায়ীভাবে একটি টেকনোক্র্যাট কমিটির হাতে যাবে।

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ইতোমধ্যে পরিকল্পনায় সম্মতি জানালেও হামাসের পক্ষ থেকে কোনো লিখিত প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প একে ‘‘শান্তির ঐতিহাসিক দিন’’ আখ্যা দিয়েছেন।

পরিকল্পনার ২০ দফা

১. যুদ্ধবিরতি: উভয় পক্ষ সম্মত হলে যুদ্ধ তাৎক্ষণিকভাবে শেষ হবে। ইসরায়েলি বাহিনী নির্দিষ্ট লাইনে সরে যাবে এবং সামরিক অভিযান স্থগিত থাকবে।

২. ৭২ ঘণ্টার শর্ত: ইসরায়েল প্রকাশ্যে সম্মতি দেওয়ার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সব জীবিত জিম্মি ও মরদেহ ফেরত দিতে হবে।

৩. বন্দি বিনিময়: সব জিম্মি ফেরত এলে ইসরায়েল ২৫০ জন যাবজ্জীবন বন্দি ও ১,৭০০ জন গাজাবাসীকে মুক্তি দেবে, যাদের মধ্যে নারী ও শিশুরাও থাকবে। প্রতিটি ইসরায়েলি মরদেহের বিনিময়ে ১৫ ফিলিস্তিনির মরদেহ ফেরত দেওয়া হবে।

৪. হামাস সদস্যদের শর্ত: যারা অস্ত্র সমর্পণ করে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান মেনে নেবে তাদের ক্ষমা করা হবে। কেউ গাজা ছেড়ে যেতে চাইলে নিরাপদ পথ দেওয়া হবে।

৫. মানবিক সাহায্য: পরিকল্পনা গৃহীত হলে সঙ্গে সঙ্গে পূর্ণ সহায়তা প্রবাহ শুরু হবে। পানি, বিদ্যুৎ, স্যুয়ারেজ, হাসপাতাল ও রাস্তা সংস্কারে সহায়তা আসবে।

৬. জাতিসংঘ তত্ত্বাবধান: সহায়তা প্রবাহ জাতিসংঘ, রেড ক্রিসেন্ট ও নিরপেক্ষ সংস্থার মাধ্যমে হবে। রাফাহ সীমান্ত খুলে দেওয়া হবে।

৭. অস্থায়ী প্রশাসন: গাজা একটি টেকনোক্র্যাট কমিটির মাধ্যমে পরিচালিত হবে, যেখানে ফিলিস্তিনি বিশেষজ্ঞ ও আন্তর্জাতিক প্রতিনিধি থাকবেন।

৮. বোর্ড অব পিস: এই কমিটির ওপর নজরদারি করবে ‘‘বোর্ড অব পিস’’ নামে নতুন আন্তর্জাতিক সংস্থা, যার নেতৃত্ব দেবেন ট্রাম্প। সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারও থাকবেন।

৯. তহবিল ও কাঠামো: গাজা পুনর্গঠনের জন্য তহবিল পরিচালনা করবে ‘‘বোর্ড অব পিস’’। ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ সংস্কার সম্পন্ন করার পর দায়িত্ব নেবে।

১০. অর্থনৈতিক পরিকল্পনা: গাজা পুনর্গঠনে মধ্যপ্রাচ্যের সফল নগর পরিকল্পনাকারী বিশেষজ্ঞরা যুক্ত হবেন। কর্মসংস্থান ও উন্নয়নের সুযোগ তৈরি করা হবে।

১১. বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল: গাজায় একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গঠন করা হবে, যেখানে অংশগ্রহণকারী দেশগুলোকে বিশেষ শুল্ক সুবিধা দেওয়া হবে।

১২. বাসিন্দাদের স্বাধীনতা: কাউকে গাজা ছেড়ে যেতে বাধ্য করা হবে না। চাইলে থাকতে পারবে, আবার চাইলে বের হয়ে পুনরায় ফিরতেও পারবে।

১৩. হামাসের নিষেধাজ্ঞা: হামাস বা অন্য কোনো সশস্ত্র গোষ্ঠীর কোনোভাবেই গাজা শাসনে ভূমিকা থাকবে না।

১৪. সশস্ত্র অবকাঠামো ধ্বংস: সব টানেল, অস্ত্র কারখানা ও সামরিক অবকাঠামো ধ্বংস করতে হবে এবং পুনর্নির্মাণ করা যাবে না।

১৫. নিরস্ত্রীকরণ: গাজা আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষণে নিরস্ত্রীকরণ হবে। অস্ত্র ধ্বংস ও কিনে নেওয়ার মাধ্যমে তা নিশ্চিত করা হবে।

১৬. শান্তিপূর্ণ অর্থনীতি: ‘‘নিউ গাজা’’ শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকবে। আঞ্চলিক অংশীদাররা গ্যারান্টি দেবে।

১৭. আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বাহিনী (ISF): যুক্তরাষ্ট্র, আরব ও আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সহায়তায় গাজায় একটি নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন হবে। তারা ফিলিস্তিনি পুলিশকে প্রশিক্ষণ দেবে।

১৮. সীমান্ত সুরক্ষা: ISF, ইসরায়েল ও মিশর একসাথে সীমান্ত সুরক্ষা ও অস্ত্র প্রবাহ বন্ধে কাজ করবে। দ্রুত পণ্য প্রবাহ নিশ্চিত করা হবে।

১৯. ইসরায়েলের প্রত্যাহার: ইসরায়েল গাজা দখল বা সংযুক্ত করবে না। নির্দিষ্ট শর্ত ও সময়সীমা অনুযায়ী সেনা প্রত্যাহার করবে। নিরাপত্তা বেষ্টনী কেবল অস্থায়ী থাকবে।

২০. ধর্মীয় সহাবস্থান ও রাষ্ট্রগঠন: সহাবস্থান ও সহনশীলতার ভিত্তিতে আন্তঃধর্মীয় সংলাপ হবে। ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ সংস্কার সম্পন্ন করলে আত্মনিয়ন্ত্রণ ও রাষ্ট্রগঠনের পথ খুলবে। যুক্তরাষ্ট্র রাজনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের দিগন্ত তৈরি করবে।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া

ব্রিটেন, ফ্রান্স ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতারা পরিকল্পনাকে স্বাগত জানিয়েছেন। তবে বিশ্লেষকদের মতে, হামাসকে প্রশাসন থেকে পুরোপুরি বাদ দেওয়ায় বাস্তবায়ন নিয়ে প্রশ্ন থেকেই গেছে।

৬৬ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত এবং গাজা প্রায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়ার প্রেক্ষাপটে ট্রাম্প–নেতানিয়াহুর শান্তি পরিকল্পনা নতুন আলোচনার দ্বার খুলেছে। তবে চূড়ান্ত শান্তি নির্ভর করছে হামাসের প্রতিক্রিয়া ও আন্তর্জাতিক চাপের ওপর।


ফাঁস হলো ট্রাম্পের শান্তি পরিকল্পনা: চুক্তি হলে হামাস নেতাদের নিরাপদ প্রস্থান!

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২৯ ২০:৫০:২৯
ফাঁস হলো ট্রাম্পের শান্তি পরিকল্পনা: চুক্তি হলে হামাস নেতাদের নিরাপদ প্রস্থান!
ছবি: সংগৃহীত

ফিলিস্তিনের গাজায় চলমান গণহত্যার মধ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আজ সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) হোয়াইট হাউসে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে আতিথ্য দেবেন। আলোচনায় গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধের অবসান ঘটাতে একটি নতুন শান্তি পরিকল্পনার ওপর জোর দেবেন ট্রাম্প।

ট্রাম্প সম্প্রতি সাংবাদিকদের কাছে একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর সম্ভাবনার কথা জানিয়েছিলেন। তবে নেতানিয়াহু গতকাল রোববার বলেন, এটি এখনো চূড়ান্ত হয়নি। অন্যদিকে হামাস জানিয়েছে, তাদের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে ট্রাম্পের প্রস্তাবটি পাঠানো হয়নি।

ফাঁস হওয়া চুক্তির বিবরণ

মার্কিন ও ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত পরিকল্পনার ফাঁস হওয়া তথ্য অনুসারে, চুক্তি নিশ্চিত হওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে হামাসের হাতে আটক সকল বন্দিকে মুক্তি দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। বন্দিদের ফেরত পাঠানোর পর ইসরায়েল যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত শত শত ফিলিস্তিনি বন্দীকে মুক্তি দেবে।

ফাঁস হওয়া তথ্যে আরও ইঙ্গিত দেওয়া হয় যে:

হামাসের দায়মুক্তি: শান্তির প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হামাস সদস্যদের ‘দায়মুক্তি এবং গাজা থেকে নিরাপদে বেরিয়ে আসার সুযোগ’ দেওয়া হবে। ভবিষ্যতে এই অঞ্চলে তাদের কোনো ভূমিকা থাকবে না।

সেনা প্রত্যাহার: দখলদার ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী ধীরে ধীরে গাজা ত্যাগ করবে।

অন্তর্বর্তী সরকার: গাজায় একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন হবে।

নেতানিয়াহু এই পরিকল্পনাটি আংশিকভাবে নিশ্চিত করে বলেন, “যদি হামাস নেতারা যুদ্ধ শেষ করে এবং সমস্ত জিম্মিকে মুক্তি দেয়, তাহলে আমরা তাদের ছেড়ে দেব। আমি মনে করি, এই সবকিছুই পরিকল্পনার অংশ।”

মানবিক পরিস্থিতি ও যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ

এই পরিকল্পনাটি নেতানিয়াহু ও ট্রাম্প প্রশাসনের আগের অবস্থানের একটি উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ তথ্য অনুসারে, অঞ্চলজুড়ে ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ৬৬ হাজার ছাড়িয়ে গেছে এবং ১ লাখ ৬০ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছে। অনেকেই ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছেন।

চলতি বছরের শুরুতে ইসরায়েল জাতিসংঘ এবং আন্তর্জাতিক মানবিক সংস্থাগুলোকে এড়িয়ে একটি পৃথক সাহায্য বিতরণ উদ্যোগ শুরু করার পর অঞ্চলটিতে দুর্ভিক্ষ আরও প্রকট হয়ে ওঠে। খাদ্য বিতরণ কেন্দ্রের কাছে জড়ো হওয়া ফিলিস্তিনিদের ওপরও ইসরায়েলি বাহিনী গুলি চালিয়ে শত শত মানুষকে হত্যা করছে। গত বছরের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য নেতানিয়াহু ও তার প্রাক্তন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।

পাঠকের মতামত: