মোবাইলে স্ক্রলিং বাড়াচ্ছে পাইলসের ঝুঁকি

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২১ ১৯:৫৩:২৬
মোবাইলে স্ক্রলিং বাড়াচ্ছে পাইলসের ঝুঁকি
ছবি: সংগৃহীত

আপনি কি শৌচালয়ে বসে মোবাইল ফোনে দীর্ঘক্ষণ স্ক্রল করেন? গবেষণা বলছে, এই অভ্যাসটি পাইলস বা অর্শের ঝুঁকি ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়িয়ে দিতে পারে। বিশেষ করে যাঁরা প্রাতঃকৃত্য বা অন্যান্য কাজের জন্য দীর্ঘসময় কমোডে বসে থাকেন, তাঁদের জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সতর্কবার্তা।

পাইলস কী ও কেন হয়?

পাইলস বা অর্শ হলো মলদ্বারের চারপাশের শিরা ফুলে যাওয়া, যা সাধারণত কোষ্ঠকাঠিন্য বা দীর্ঘ সময় বসে থাকার কারণে হয়ে থাকে। শিরা ফুলে গেলে মলত্যাগের সময় প্রবল চাপ এবং তীব্র যন্ত্রণা অনুভূত হয়। গুরুতর ক্ষেত্রে মলের সঙ্গে রক্তপাতও হতে পারে।

গবেষকরা বলছেন, দীর্ঘ সময় কমোডে বসে মোবাইল ব্যবহার করলে পায়ুদ্বারের শিরার ওপর চাপ আরও বাড়ে। সামনের দিকে ঝুঁকে বসার ভঙ্গি এই চাপকে তীব্র করে তোলে এবং অর্শের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে।

অর্শের অন্যান্য কারণের মধ্যে রয়েছে কোষ্ঠকাঠিন্য, ফাইবারহীন খাদ্যাভ্যাস, স্থূলত্ব এবং অন্তঃসত্ত্বা অবস্থার কারণে শরীরে অতিরিক্ত চাপ।

বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ

১. সময় সীমিত করুন: কমোডে অকারণে দীর্ঘ সময় বসবেন না; প্রাতঃকৃত্যের জন্য ৫ মিনিট বরাদ্দ করুন।

২. খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন: খাদ্যে রাখুন সলিউবল ফাইবারযুক্ত খাবার, সঙ্গে পর্যাপ্ত পানি পান নিশ্চিত করুন।

৩. শারীরিক সক্রিয়তা: শারীরিকভাবে সক্রিয় থাকা জরুরি, যাতে মলদ্বারের শিরাগুলোর ওপর চাপ কমানো যায়।

গবেষকরা সতর্ক করে বলছেন, দৈনন্দিন অভ্যাসে পরিবর্তন না আনা হলে পাইলসের ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে। তাই শারীরিক ও খাদ্যাভ্যাসের যত্ন নেওয়া আবশ্যক।

সূত্র: এই সময়।


সরকার টিকা ক্রয়ের প্রাথমিক অনুমোদন দিয়েছে

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২১ ১৫:১৬:৩৬
সরকার টিকা ক্রয়ের প্রাথমিক অনুমোদন দিয়েছে
ছবিঃ সংগৃহীত

অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি (ACCEA) আজ মূলত অনুমোদন দিয়েছে যে, সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি (Expanded Programme on Immunization - EPI) এর টিকা সরাসরি ক্রয় পদ্ধতির (Direct Procurement Method - DPM) মাধ্যমে ইউনিসেফের মাধ্যমে গাভি (GAVI) থেকে সংগ্রহ করা হবে।

কমিটির ৩০তম বৈঠকটি আজ সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে সভাপতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালাহউদ্দিন আহমেদ।

বৈঠকের পর সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে ড. সালাহউদ্দিন আহমেদ জানান, প্রস্তাবিত টিকা ক্রয়কে প্রাথমিকভাবে অর্থবছর ২০২৫-২৬-এর তিন মাসের জন্য অনুমোদন দেয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, “এখন আমরা তিন মাসের জন্য সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে অনুমোদন দিচ্ছি। পরবর্তীতে আমরা প্রতিযোগিতামূলক নিলামের মাধ্যমে ক্রয় করার চেষ্টা করব।”

কমিটির এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে দেশের টিকাদান কর্মসূচি নিরবিচ্ছিন্নভাবে চলমান রাখার লক্ষ্য ধরা হয়েছে। বিশেষ করে, শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এবং স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এই সরাসরি ক্রয় পদ্ধতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গাভি ও ইউনিসেফের মাধ্যমে সরাসরি টিকা ক্রয় নিশ্চিত হলে, সময়মতো টিকা সরবরাহে ব্যাঘাতের ঝুঁকি কমবে এবং দেশের ইমিউনাইজেশন কর্মসূচি আরও কার্যকরভাবে পরিচালিত হবে।

-নাজমুল হাসান


নীরব ঘাতক: যে ৫টি খাবার কিডনির ক্ষতি করছে

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২১ ১১:৩৯:১১
নীরব ঘাতক: যে ৫টি খাবার কিডনির ক্ষতি করছে
ছবি: সংগৃহীত

সুস্থ থাকার জন্য আমাদের শরীরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ কিডনির যত্ন নেওয়া খুবই জরুরি। কিন্তু আমরা প্রায়ই এমন কিছু খাবার খাই, যা কিডনির ওপর খারাপ প্রভাব ফেলে এবং দীর্ঘমেয়াদে এর ক্ষতি করতে পারে।

১. অতিরিক্ত লবণ

খাবারে বেশি লবণ ব্যবহার করলে শরীরে সোডিয়ামের মাত্রা বেড়ে যায়। এতে কিডনিকে অতিরিক্ত পানি বের করতে বেশি কাজ করতে হয়, যা কিডনির ওপর চাপ তৈরি করে। অতিরিক্ত লবণ খেলে কিডনির কার্যকারিতা ধীরে ধীরে কমে যেতে পারে।

২. অতিরিক্ত চিনিযুক্ত খাবার

মিষ্টি পানীয় এবং প্রক্রিয়াজাত খাবারে প্রচুর চিনি থাকে। অতিরিক্ত চিনি খেলে স্থূলতা ও ডায়াবেটিসের মতো রোগ হতে পারে, যা কিডনি রোগের অন্যতম প্রধান কারণ।

৩. অ্যালকোহল

অতিরিক্ত অ্যালকোহল পান করলে তা কিডনি ও লিভারের ওপর মারাত্মক চাপ সৃষ্টি করে। কিডনির প্রধান কাজ হলো শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ ছেঁকে বের করে দেওয়া। অতিরিক্ত অ্যালকোহল সেই প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করে এবং কিডনির কার্যকারিতা কমিয়ে দেয়।

৪. লাল মাংস

লাল মাংসে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন থাকে। অতিরিক্ত প্রোটিন গ্রহণ করলে তা কিডনির ওপর চাপ সৃষ্টি করে, কারণ প্রোটিন হজম হওয়ার পর যে বর্জ্য পদার্থ তৈরি হয়, তা কিডনিকে ফিল্টার করতে হয়। বিশেষ করে কিডনি রোগীদের জন্য লাল মাংস খুবই ক্ষতিকর হতে পারে।

৫. ক্যাফেইন

অতিরিক্ত ক্যাফেইন গ্রহণ করলে রক্তচাপ বেড়ে যেতে পারে, যা কিডনির জন্য ক্ষতিকর। চা, কফি, এনার্জি ড্রিংকস বা কোমল পানীয়তে প্রচুর ক্যাফেইন থাকে। তাই এসব পানীয় অতিরিক্ত পরিমাণে পান করা উচিত নয়।

কিডনি সুস্থ রাখতে এই খাবারগুলো পরিহার করা জরুরি। পাশাপাশি পর্যাপ্ত পানি পান এবং নিয়মিত স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলা উচিত।


ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকবে মাত্র ৫টি সহজ উপায়ে

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২০ ২১:৪২:৪১
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকবে মাত্র ৫টি সহজ উপায়ে
ছবি: সংগৃহীত

ডায়াবেটিস এখন আর নির্দিষ্ট বয়সের রোগ নয়, বরং গ্রাম থেকে শহর পর্যন্ত এর বিস্তার ঘটেছে। চিকিৎসকদের মতে, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, শারীরিক পরিশ্রমের অভাব, স্থূলতা এবং মানসিক চাপ—এগুলোই ডায়াবেটিসের প্রধান কারণ।

আমাদের শরীরে ইনসুলিন নামক হরমোন রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। অগ্ন্যাশয় যখন যথেষ্ট ইনসুলিন উৎপাদন করতে পারে না, তখনই রক্তে গ্লুকোজ বেড়ে গিয়ে ডায়াবেটিস হয়। তবে এটি এমন কোনো রোগ নয়, যার জন্য পছন্দের সব খাবার বাদ দিতে হবে। বরং স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসে কিছু পরিবর্তন এনেই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।

এ বিষয়ে ভারতীয় পুষ্টিবিদ ডা. অর্চনা বাত্রা পাঁচটি সহজ উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত বলেছেন:

১. প্রোটিন ও ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার

স্ন্যাকস হিসেবে চিপস বা মিষ্টি বিস্কুটের বদলে গাজর-শসার স্টিকস, অঙ্কুরিত মুগ-ডালিমের চাট বা কালো ছোলার চাট খেতে পারেন। ফাইবার ও প্রোটিনে ভরপুর এই খাবারগুলো রক্তে শর্করার মাত্রা ঠিক রেখে দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখে।

২. মিষ্টি পানীয়ের বদলে ইনফিউজড ওয়াটার

সফট ড্রিংক বা মিষ্টি চা-কফি রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বাড়িয়ে দেয়। এর পরিবর্তে লেবু, বেরি, শসা বা পুদিনা পাতা দিয়ে তৈরি পানীয়, কিংবা চিনি ছাড়া হার্বাল চা পান করুন। ফলের রসের বদলে আস্ত ফল খেলে তার ফাইবার হজম প্রক্রিয়াকে ধীর করে দেয়, যা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।

৩. বেশি স্টার্চযুক্ত সবজি এড়িয়ে চলুন

আলু বা ভুট্টার মতো বেশি স্টার্চযুক্ত সবজি রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বাড়ায়। তাই এই ধরনের সবজির বদলে খাদ্যতালিকায় সবুজ শাকসবজি, ব্রকোলি, ফুলকপি বা বেল পেপারের মতো কম কার্বোহাইড্রেটযুক্ত সবজি রাখুন।

৪. প্রক্রিয়াজাত স্ন্যাকসের বদলে বাদাম ও বীজ

চিপস বা ক্র্যাকারসের পরিবর্তে কাঠবাদাম, আখরোট, চিয়া বা ফ্ল্যাক্স সিডের মতো বাদাম ও বীজ খেতে পারেন। এগুলোতে থাকা প্রোটিন, স্বাস্থ্যকর ফ্যাট এবং ফাইবার রক্তে শর্করার ওঠানামা রোধ করে এবং ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে রাখে।

৫. সাদা শস্যের বদলে পূর্ণ শস্য

সাদা চাল, সাদা পাউরুটি বা সাধারণ পাস্তার বদলে ব্রাউন রাইস, কুইনোয়া বা হোল-হুইট ব্রেড বেছে নিন। পূর্ণ শস্যের ফাইবার গ্লুকোজকে ধীরে ধীরে শোষিত হতে সাহায্য করে, ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ করে বেড়ে যায় না।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের জন্য ছোট ছোট সচেতন পরিবর্তন খুবই কার্যকর। দৈনন্দিন খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাত্রায় এই পরিবর্তনগুলো আনলেই সুস্থ থাকা সম্ভব।

সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস


যে কারণে পুরুষের টেস্টোস্টেরন কমে: না জানলে বিপদ

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২০ ১৯:৩৭:৫৩
যে কারণে পুরুষের টেস্টোস্টেরন কমে: না জানলে বিপদ
ছবি: সংগৃহীত

টেস্টোস্টেরন হলো পুরুষদের শরীর ও আচরণের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি হরমোন। পেশির ঘনত্ব, হাড়ের গঠন, মানসিক অবস্থা এবং সার্বিক সুস্থতার পাশাপাশি যৌন আকাঙ্ক্ষা ও সক্ষমতা নিয়ন্ত্রণে এর ভূমিকা অপরিহার্য। যদিও নারী-পুরুষ উভয়ের শরীরেই এই হরমোন থাকে, তবে পুরুষের শরীরে এর পরিমাণ অনেক গুণ বেশি, যার ঘাটতি হলে তা বিভিন্ন সমস্যার জন্ম দিতে পারে।

টেস্টোস্টেরনের ভূমিকা

বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. শাহজাদা সেলিম বলেন, বয়ঃসন্ধিকালের পর ছেলেদের শরীরে এই হরমোনের মাত্রা হঠাৎ করে বেড়ে যায়। এর প্রভাবে দাড়ি-গোঁফ গজানো, যৌনাঙ্গের পরিপক্বতা এবং মানসিকভাবে পুরুষালি আচরণের মতো পরিবর্তনগুলো আসে। তার মতে, একজন পুরুষের শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা অনেকাংশেই এই হরমোনের মাত্রার ওপর নির্ভরশীল।

হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, টেস্টোস্টেরনের প্রভাবে হাড় ও মাংসপেশির ঘনত্ব বাড়ে, কণ্ঠস্বর ভারী হয়, এবং লোম বাড়ে। এটি যৌন ক্রিয়া ও প্রজনন সক্ষমতাও বাড়ায়। সাধারণত, ১৭ বছর বয়সে এবং তার পরবর্তী দুই থেকে তিন দশক পর্যন্ত এই হরমোনের মাত্রা সর্বোচ্চ থাকে। একজন সুস্থ পুরুষ দিনে প্রায় ছয় মিলিগ্রাম টেস্টোস্টেরন উৎপাদন করে।

টেস্টোস্টেরনের ঘাটতি ও এর কারণ

কম টেস্টোস্টেরনের কারণে যৌন তাড়না কমে যাওয়া, অণ্ডকোষ সংকুচিত হওয়া, বন্ধ্যাত্ব, বিষণ্ণতা, ক্লান্তি এবং কাজে উৎসাহের অভাব দেখা দিতে পারে। ডা. শাহজাদা সেলিম বলেন, প্রায় ৮৫-৯০ শতাংশ ক্ষেত্রে অণ্ডকোষের কোনো ক্ষতি হলে এই হরমোনের ঘাটতি হয়। বাংলাদেশে বয়ঃসন্ধিকালে মামস (mumps) আক্রান্ত হলে তা অণ্ডকোষকে ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং টেস্টোস্টেরনের ঘাটতির পথ তৈরি করে। এছাড়া, অতিরিক্ত গরম, রেডিয়েশন, অতিরিক্ত মদ্যপান, কিডনি বা লিভারের রোগ এবং কিছু ওষুধের কারণেও এই ঘাটতি হতে পারে।

প্রতিরোধ ও চিকিৎসা

ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের তথ্য অনুযায়ী, বংশগত বা অন্য কোনো কারণে যদি এই হরমোনের মাত্রা কমে যায়, তার কোনো একক চিকিৎসা নেই। তবে কিছু জীবনযাত্রার অভ্যাস পরিবর্তন করে এর মাত্রা স্বাভাবিক রাখা সম্ভব। এর মধ্যে রয়েছে:

  • স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া
  • নিয়মিত ব্যায়াম করা
  • ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা
  • অতিরিক্ত অ্যালকোহল ও মাদক থেকে দূরে থাকা

ডা. শাহজাদা সেলিম বলেন, দেহের ওজন কমানো এবং অতিরিক্ত গরম বা রেডিয়েশন থেকে দূরে থাকলে টেস্টোস্টেরনের ঘাটতি প্রতিরোধ করা যায়। তিনি আরও বলেন, এই হরমোনের ঘাটতিজনিত চিকিৎসা উপসর্গভিত্তিক, মাত্রাভিত্তিক নয়। হরমোন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপির মাধ্যমে কিছু উপসর্গ কমিয়ে আনা সম্ভব, তবে এটি চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী করা উচিত, কারণ এর কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও থাকতে পারে।

সূত্র : বিবিসি বাংলা


সাইলেন্ট হার্ট অ্যাটাক: বুকে ব্যথা না থাকলেও যে লক্ষণগুলো জানা জরুরি

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ২০ ১২:৩৯:০৫
সাইলেন্ট হার্ট অ্যাটাক: বুকে ব্যথা না থাকলেও যে লক্ষণগুলো জানা জরুরি
ছবি: সংগৃহীত

হার্ট অ্যাটাক মানেই বুক চেপে ধরা ব্যথা—এই ধারণাটি অনেকের মধ্যে প্রচলিত। কিন্তু চিকিৎসকরা বলছেন, সব হার্ট অ্যাটাক এমন স্পষ্টভাবে বোঝা যায় না। কখনো কখনো কোনো রকম বড় ব্যথা বা লক্ষণ ছাড়াই হার্ট অ্যাটাক হতে পারে, যাকে বলা হয় ‘নীরব হার্ট অ্যাটাক’ বা Silent Heart Attack। এটি অনেক সময় ধরা পড়ে না, কিন্তু এর পরিণতি হতে পারে ভয়াবহ।

হার্ট অ্যাটাকের কারণ ও সাধারণ লক্ষণ

সাধারণত, হার্টের রক্তনালিতে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে গেলে হার্ট অ্যাটাক হয়। এতে হার্টের পেশিগুলোতে অক্সিজেন পৌঁছাতে পারে না এবং তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। হার্ট অ্যাটাকের সবচেয়ে পরিচিত লক্ষণ হলো বুকের মাঝখানে হঠাৎ করে তীব্র ব্যথা, যা বিশ্রাম নিলেও কমে না। এর সঙ্গে ঘাম, বমিভাব বা বমি হওয়ার অনুভূতিও হতে পারে।

নীরব হার্ট অ্যাটাক: যারা বেশি ঝুঁকিতে

গবেষণা বলছে, প্রতি ৫ জন হার্ট অ্যাটাক রোগীর মধ্যে একজনের হয় নীরব হার্ট অ্যাটাক। এই ধরনের অ্যাটাক সাধারণত বয়স্ক ব্যক্তি, ডায়াবেটিস বা স্নায়বিক সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তি, এবং যারা নিয়মিত ব্যথানাশক বা স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ খান, তাদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। নারীদের মধ্যেও এই ধরনের অ্যাটাকের হার তুলনামূলকভাবে বেশি।

বুকে ব্যথা না থাকলেও নীরব হার্ট অ্যাটাকের কিছু উপসর্গ থাকে, যেমন:

হঠাৎ হাতে, কাঁধে, চোয়ালে বা পিঠের ওপর দিকে হালকা ব্যথা বা অস্বস্তি।

গ্যাসের মতো পেটে অস্বস্তি বা বদহজম।

হঠাৎ অতিরিক্ত ক্লান্তি বা শ্বাসকষ্ট।

মাথা ঝিমঝিম করা বা মাথাব্যথা।

অতিরিক্ত ঘাম বা রক্তচাপ কমে যাওয়া।

কীভাবে ধরা পড়ে?

নীরব হার্ট অ্যাটাক নির্ণয়ের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা করা হয়। যেমন: ইসিজি (ECG), ট্রপোনিন টেস্ট (রক্তের বিশেষ পরীক্ষা) এবং ইকোকার্ডিওগ্রাম। যদি উপরোক্ত কোনো লক্ষণ দেখা দেয়, তাহলে সময় নষ্ট না করে চিকিৎসকের কাছে যাওয়া জরুরি।

নীরব হার্ট অ্যাটাক ধরা না পড়লে হার্ট দুর্বল হয়ে যেতে পারে, পাম্পিং কমে যেতে পারে এবং জীবন ঝুঁকিতে পড়তে পারে। তাই যেকোনো অস্বাভাবিকতাকে গুরুত্ব দিন, নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করান এবং ধূমপান বা অনিয়মিত জীবনযাপন থেকে দূরে থাকুন। সতর্কতা, সচেতনতা এবং সময়মতো পদক্ষেপই পারে জীবন বাঁচাতে।


কোলেস্টেরল বাড়ছে? মাত্র ১ মাসেই নিয়ন্ত্রণে আনার উপায়

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ১৯ ১০:১০:৫৯
কোলেস্টেরল বাড়ছে? মাত্র ১ মাসেই নিয়ন্ত্রণে আনার উপায়
ছবি: সংগৃহীত

বর্তমানে উচ্চ কোলেস্টেরল একটি বড় স্বাস্থ্যঝুঁকি হয়ে দাঁড়িয়েছে, যা কেবল বয়স্কদের নয়, তরুণদেরও সমানভাবে আক্রান্ত করছে। অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, শরীরচর্চার অভাব, ধূমপান ও অতিরিক্ত মানসিক চাপের কারণে কোলেস্টেরলের মাত্রা অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যাচ্ছে। অথচ চিকিৎসকরা বলছেন, জীবনযাত্রা ও খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনলে মাত্র এক মাসেই এই সমস্যা নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব।

সুষম আহার

কোলেস্টেরল কমাতে খাদ্যতালিকায় গোটা শস্য, প্রচুর শাকসবজি ও ফল অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। শস্যে থাকা পুষ্টি উপাদান ও খনিজ পদার্থ এ ক্ষেত্রে সহায়ক। নিয়মিত তরমুজ, পেয়ারা, আপেল, কমলা, কলা ও পেঁপে খেলে স্বাস্থ্যকর ফলাফল পাওয়া যেতে পারে।

ধূমপান ও মদ্যপান নিয়ন্ত্রণ

ধূমপান কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ায়, তাই অবিলম্বে এই অভ্যাস ত্যাগ করা প্রয়োজন। যারা মদ্যপান করেন, তাদেরও এটি পরিহার করা উচিত।

নিয়মিত শরীরচর্চা

বাড়িতে ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ, যোগব্যায়াম এবং নিয়মিত হাঁটা কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। সকালে কিছু সময় যোগাসন ও ধ্যানের জন্য বরাদ্দ রাখলে মানসিক চাপও কমে।

মানসিক চাপ কমান

অতিরিক্ত মানসিক চাপ শরীরে খারাপ কোলেস্টেরল বাড়াতে পারে। নিয়মিত ধ্যান, যোগব্যায়াম ও পর্যাপ্ত ঘুম মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। মনকে ভালো রাখতে গান শোনা, বই পড়া কিংবা পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানোও উপকারী হতে পারে।

কোলেস্টেরল কমানো একদিনের কাজ নয়, তবে এই সহজ পদ্ধতিগুলো অনুসরণ করলে মাত্র ৩০ দিনেই ইতিবাচক পরিবর্তন দেখা সম্ভব। সুষম খাবার, ধূমপান ও মদ্যপান থেকে বিরত থাকা, নিয়মিত শরীরচর্চা এবং মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখাই হলো সুস্থ থাকার কার্যকর উপায়।

সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা


অবহেলা নয়: ক্যান্সারের ৫টি প্রাথমিক উপসর্গ, যা জানা জরুরি

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ১৮ ২০:৩২:০১
অবহেলা নয়: ক্যান্সারের ৫টি প্রাথমিক উপসর্গ, যা জানা জরুরি
ছবি: সংগৃহীত

ক্যান্সার প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত হলে অনেক ক্ষেত্রেই নিরাময় সম্ভব। কিন্তু বেশিরভাগ মানুষই রোগের শুরুতে শরীরের ছোটখাটো পরিবর্তনকে অবহেলা করেন, যার কারণে রোগটি জটিল আকার ধারণ করে। চিকিৎসকদের মতে, কিছু সাধারণ উপসর্গকে গুরুত্ব দিলে ক্যান্সার দ্রুত শনাক্ত করা যেতে পারে।

চলুন জেনে নেওয়া যাক ক্যান্সারের ৫টি প্রাথমিক উপসর্গ:

১. হঠাৎ ওজন কমে যাওয়া

অল্প সময়ের মধ্যে কোনো কারণ ছাড়াই ওজন কমে যাওয়া ক্যান্সারের একটি প্রাথমিক লক্ষণ হতে পারে। বিশেষ করে খাদ্যাভ্যাস বা জীবনযাত্রায় পরিবর্তন না এনেও যদি ওজন কমে, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

২. অস্বাভাবিক রক্তপাত

প্রস্রাব, পায়খানা কিংবা কাশির সঙ্গে রক্ত আসা কখনোই উপেক্ষা করা উচিত নয়। শরীরের ভেতরে কোনো গুরুতর সমস্যার কারণে এমনটি হতে পারে, যা ক্যান্সারের ইঙ্গিত দেয়।

৩. দীর্ঘদিনের কাশি বা গলা বসে যাওয়া

সাধারণ সর্দি-কাশি ভেবে অনেকেই এটি এড়িয়ে যান। কিন্তু যদি কয়েক সপ্তাহ ধরে কাশি থাকে অথবা গলা বসে যায়, তাহলে তা ফুসফুস বা খাদ্যনালির ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে।

৪. ত্বকে অস্বাভাবিক দাগ বা ক্ষত

ত্বকে নতুন কোনো দাগ, তিলের রঙ বা আকারের পরিবর্তন কিংবা কোনো ক্ষত যদি দীর্ঘ সময় ধরে না শুকায়, তাহলে তা স্কিন ক্যান্সারের প্রাথমিক উপসর্গ হতে পারে।

৫. হজমের সমস্যা বা খাবারে অরুচি

খাবার গিলতে সমস্যা, পেটে অস্বস্তি বা দীর্ঘদিন ধরে ক্ষুধামন্দা থাকা হজমতন্ত্রের ক্যান্সারের প্রাথমিক লক্ষণ হতে পারে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এসব উপসর্গ দেখা দিলে দেরি না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। প্রাথমিক পর্যায়ে ক্যান্সার ধরা পড়লে চিকিৎসা অনেক সহজ হয় এবং রোগী সুস্থ জীবন ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়।


ডেঙ্গুতে আরও দুইজনের মৃত্যু, একদিনে আক্রান্ত ৬২৫

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ১০ ১৯:২৫:০৬
ডেঙ্গুতে আরও দুইজনের মৃত্যু, একদিনে আক্রান্ত ৬২৫
ছবিঃ বি এস এস

দেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতি আবারও উদ্বেগজনক আকার ধারণ করছে। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৬২৫ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে এবং অন্তত দুইজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর (ডিজিএইচএস)।

আজ বুধবার প্রকাশিত এক বিবৃতিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত রোগীদের মধ্যে বরিশাল বিভাগে ৯৬ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ১১২ জন, ঢাকা বিভাগের (রাজধানী বাদে) ১১৪ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে (ডিএসসিসি) ১৩০ জন এবং ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে (ডিএনসিসি) ৮৭ জন। এছাড়া খুলনা বিভাগে ১৭ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ১৫ জন, রাজশাহী বিভাগে ৩৭ জন, রংপুর বিভাগে ১৪ জন এবং সিলেট বিভাগে ৩ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ৩৬ হাজার ৯৬ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন এবং মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৩৯ জনে।

তুলনামূলকভাবে, গত বছর ডেঙ্গুতে ৫৭৫ জনের মৃত্যু হয়েছিল এবং আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১ লাখ ১ হাজার ২১৪ জন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ বছরও ডেঙ্গুর সংক্রমণ আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে, যা জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর চাপ সৃষ্টি করছে।

স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা নাগরিকদের সতর্ক থাকতে, বাসা-বাড়ি ও আশপাশের জমে থাকা পানি সরিয়ে ফেলতে এবং ডেঙ্গুর কোনো উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে আহ্বান জানিয়েছেন।

-সুত্রঃ বি এস এস


জরায়ুর যত্নে সচেতনতা: নারীর সুস্থ জীবনের অপরিহার্য শর্ত

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ১০ ১২:১১:৫৯
জরায়ুর যত্নে সচেতনতা: নারীর সুস্থ জীবনের অপরিহার্য শর্ত
ছবিঃ সংগৃহীত

চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় আফরোজা আক্তার হঠাৎ পেটব্যথা ও রক্তক্ষরণে ভুগতে শুরু করেন। শুরুতে তিনি গুরুত্ব না দিলেও পরে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হলে আলট্রাসাউন্ডে জানা যায়, তার জরায়ুতে ছোট একটি ছিদ্র রয়েছে। চিকিৎসকরা জানান, গর্ভধারণের প্রথম তিন মাসের মধ্যেই আলট্রাসাউন্ড করানো জরুরি। এতে ভ্রূণের অবস্থান বোঝা যায় এবং সম্ভাব্য জটিলতা দ্রুত শনাক্ত করা সম্ভব হয়। আফরোজার অভিজ্ঞতা প্রমাণ করে, সচেতনতার অভাবে কীভাবে নারীরা নিজেদের স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিতে পড়তে পারেন।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সাবেক অধ্যাপক ও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. ফারহানা দেওয়ান বলেন, “অনেকে মনে করেন, জরায়ু কেবল সন্তান জন্মদানের সময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। আসলে জীবনের প্রতিটি ধাপে—মাসিক, যৌনসম্পর্ক, গর্ভাবস্থা, এমনকি মেনোপজের আগে-পরে—জরায়ুর বিশেষ যত্ন প্রয়োজন।”

তিনি জানান, মাসিক চলাকালে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা অত্যন্ত জরুরি। স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহার করতে হবে, ভেজা বা অপরিষ্কার কাপড় ব্যবহার বিপজ্জনক। এ সময়ে গরম পানির ব্যবহার সংক্রমণ রোধে সহায়ক হতে পারে। কারণ মাসিক চলাকালে জরায়ুর মুখ খোলা থাকে, ফলে সামান্য অসাবধানতাও সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ায়। একইভাবে, অতিরিক্ত জোরে যৌনসম্পর্ক জরায়ুতে আঘাত বা সংক্রমণের কারণ হতে পারে। তাই যৌনমিলনের আগে ও পরে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা উচিত এবং মাসিক চলাকালে যৌনসম্পর্ক থেকে বিরত থাকা ভালো।

ডা. দেওয়ান আরও বলেন, গর্ভাবস্থা ও সন্তান জন্মের সময় জরায়ুর প্রতি বিশেষ যত্ন জরুরি। ভ্রূণ জরায়ুতেই থাকে ও বেড়ে ওঠে। তাই প্রাথমিক পর্যায়ে আলট্রাসাউন্ড পরীক্ষা করা হয়, যাতে নিশ্চিত হওয়া যায় ভ্রূণ সঠিক স্থানে রয়েছে কি না। কারণ কখনো কখনো ভ্রূণ ডিম্বাশয় বা ফ্যালোপিয়ান টিউবে বেড়ে ওঠে, যা মারাত্মক জটিলতা সৃষ্টি করে। এছাড়া গর্ভাবস্থায় পরিচ্ছন্নতা ও নিরাপদ যৌন আচরণ জরায়ু ও শিশুর সুরক্ষায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

মেনোপজের আগে-পরে জরায়ুতে নানা পরিবর্তন দেখা দেয়। কেউ অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে ভোগেন, কেউ আবার যোনিশুষ্কতা নিয়ে বিভ্রান্ত হন। মেনোপজের পর অনেক নারীর জরায়ু বড় হয়ে নিচের দিকে নেমে আসে, যা অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এসব ক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত।

খ্যাতনামা স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. মালিহা রশিদ বলেন, “অতিরিক্ত মাসিক, তলপেটে ব্যথা, অনিয়মিত মাসিক, দুর্গন্ধযুক্ত স্রাব, সহবাসের পর রক্তপাত বা দুই মাসিকের মধ্যে রক্তপাত—সবই জরায়ুর সমস্যার লক্ষণ। এর সঙ্গে যদি গ্যাস, কোষ্ঠকাঠিন্য, ক্রমাগত পেটব্যথা বা হজমজনিত সমস্যা দেখা দেয়, তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যাওয়া জরুরি।”

তিনি আরও পরামর্শ দেন—নিচের পেটে চাপ অনুভব, ঘন ঘন প্রস্রাব, বদহজম, খাবারে অনীহা, ওজনের অস্বাভাবিক পরিবর্তন, যৌনমিলনে ব্যথা, অবসাদ বা মেনোপজ-পরবর্তী জটিলতা দেখা দিলে দেরি না করে চিকিৎসা নেওয়া উচিত।

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, প্রাথমিক বিয়ে, অল্প বয়সে সন্তান জন্ম, ঘন ঘন গর্ভধারণ, একাধিক যৌনসঙ্গী, অপরিচ্ছন্নতা, সংক্রমণ, ধূমপান এবং বংশগত কারণ জরায়ুর রোগের ঝুঁকি বাড়ায়।

গাইনোকলজিস্ট ডা. আশরাফুন নেছা বলেন, “সরকার জরায়ু ও স্তন ক্যানসার বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে। জেলা ও কেন্দ্রীয় হাসপাতালে বিনামূল্যে স্ক্রিনিংয়ের ব্যবস্থা রয়েছে। পাশাপাশি স্বল্প খরচে চিকিৎসার সুযোগও দেওয়া হচ্ছে।”

চিকিৎসকদের সর্বশেষ পরামর্শ হলো, নারীরা যদি জরায়ু-সংক্রান্ত কোনো জটিলতায় ভোগেন, তাহলে দ্রুত হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করবেন। দেরি করলে জটিলতা বেড়ে জীবনঝুঁকিও তৈরি হতে পারে।

-রাজীব আহামেদ

পাঠকের মতামত: