ঢাকার রাস্তায় চলবে বৈদ্যুতিক বাস! কবে থেকে?

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ মে ১৭ ০৯:৪৭:১১
 ঢাকার রাস্তায় চলবে বৈদ্যুতিক বাস! কবে থেকে?

সত্য নিউজ: ঢাকায় শুরু হতে যাচ্ছে বৈদ্যুতিক বাস চালুর যুগান্তকারী উদ্যোগ। আগামী ১ জুলাই থেকে শুরু হবে এই প্রকল্পের বাস্তবায়ন কার্যক্রম, যা নগর পরিবহন ব্যবস্থায় এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। এ প্রকল্পের ঘোষণা দিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।

শুক্রবার (১৬ মে) রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে তিনি বলেন, “ঢাকায় চলবে বৈদ্যুতিক বাস। আগামী পহেলা জুলাই থেকে এই প্রকল্পের কাজ শুরু হবে।” তিনি এটিকে শহরের গণপরিবহন সংকট নিরসনে সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ ও দূরদর্শী পদক্ষেপ হিসেবে উল্লেখ করেন।

৪০০ বৈদ্যুতিক বাস, ৩টি চার্জিং ডিপো:

বাস্তবায়ন হবে ২০৩০-এর মধ্যে জানা গেছে, প্রকল্পটির আওতায় প্রথম ধাপে ৪০০টি বৈদ্যুতিক বাস কেনা হচ্ছে। পাশাপাশি নির্মাণ করা হবে তিনটি পূর্ণাঙ্গ চার্জিং ডিপো। বিশ্বব্যাংক এই প্রকল্পে সহায়তা দিচ্ছে ২ হাজার ১৩৫ কোটি টাকা এবং বাংলাদেশ সরকার যুক্ত করবে অতিরিক্ত ৩৭৫ কোটি টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে ২০৩০ সাল পর্যন্ত। পরিকল্পনা অনুযায়ী, ধাপে ধাপে এই বৈদ্যুতিক বাসগুলো ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ রুটগুলোতে চালু করা হবে। এই বাসগুলো হবে সম্পূর্ণ বিদ্যুৎচালিত, আধুনিক যাত্রীসেবা ও স্বস্তিকর যাত্রার জন্য উপযোগী। চার্জিং ডিপোসমূহ স্থাপন করা হবে শহরের কৌশলগত স্থানে, যাতে কার্যকারিতা ও রক্ষণাবেক্ষণ সহজ হয়।

যানজট ও দূষণ হ্রাসে যুগান্তকারী সম্ভাবনা

এই প্রকল্পের অন্যতম মূল লক্ষ্য হলো নগরের যানজট ও পরিবেশ দূষণ কমানো। ইঞ্জিনচালিত বাসের পরিবর্তে নির্গমনহীন বৈদ্যুতিক বাস চালুর মাধ্যমে কার্বন নিঃসরণ উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পাবে। একইসঙ্গে, ইঞ্জিনের শব্দদূষণও হ্রাস পাবে, যা নাগরিকদের মানসিক শান্তি ও আরামদায়ক নগরজীবনে সহায়ক হবে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বৈদ্যুতিক বাস শুধু পরিবেশবান্ধব নয়, এটি দীর্ঘমেয়াদে অর্থনৈতিকভাবেও লাভজনক। ফুয়েল ও রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় কমে যাওয়ায় সরকারের খরচ কমবে এবং গণপরিবহনের মান বাড়বে।

নগর জীবনের মানোন্নয়নে নতুন সম্ভাবনা

এই প্রকল্প শুধুমাত্র একটি পরিবহন উদ্যোগ নয়; এটি নগর ব্যবস্থাপনার একটি রূপান্তরমুখী পদক্ষেপ। পরিবহন ব্যবস্থার আধুনিকায়নের মাধ্যমে নাগরিকদের সময় ও অর্থ সাশ্রয় হবে, যাত্রীসেবা হবে আরও মানবিক ও টেকসই। এর মাধ্যমে তৈরি হবে একটি পরিচ্ছন্ন, কার্যকর এবং পরিকল্পিত শহরের ভিত্তি। বৈদ্যুতিক বাস প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে ঢাকা শহরের পরিবহন ব্যবস্থায় যেসব দীর্ঘদিনের সমস্যা যেমন—বেহাল বাস, যানজট, ভাড়া বিশৃঙ্খলা ও দূষণ—তা দূরীকরণে বড় অগ্রগতি হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

ঢাকায় বৈদ্যুতিক বাস চালুর এই পদক্ষেপ কেবল প্রযুক্তিগত পরিবর্তন নয়, এটি একটি মানসিক ও নীতিগত পরিবর্তনের ইঙ্গিত। সরকার যেখানে জলবায়ু সহনশীলতা, নাগরিক সেবা ও স্মার্ট নগর পরিকল্পনার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, এই প্রকল্প সেখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হয়ে থাকবে।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ