বেইজিংয়ে শি-পুতিন বৈঠক: পশ্চিমাদের সমালোচনায় ঐক্যবদ্ধ দুই নেতা

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০২ ১০:৩৮:০৫
বেইজিংয়ে শি-পুতিন বৈঠক: পশ্চিমাদের সমালোচনায় ঐক্যবদ্ধ দুই নেতা
ছবিঃ সংগৃহীত

চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে মঙ্গলবার বৈঠকে বসেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তি স্মরণে বুধবার আয়োজিত বিশাল সামরিক কুচকাওয়াজের আগে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

এই কুচকাওয়াজে যোগ দিতে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নেতারা বেইজিংয়ে এসেছেন। শুধু সামরিক শক্তি প্রদর্শন নয়, এই আয়োজনকে চীন কূটনৈতিক শক্তি বাড়ানোর একটি সুযোগ হিসেবেও ব্যবহার করছে।

এর আগে সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও) সম্মেলনে শি পশ্চিমাদের ‘বুলিং’ বা দমননীতির অভিযোগ আনেন। অন্যদিকে পুতিন ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য পশ্চিমাদের দায়ী করেন।

২০২২ সালে রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণের আগে থেকেই চীন ও রাশিয়া নিজেদের মধ্যে "সীমাহীন অংশীদারিত্ব" ঘোষণা করে। এরপর থেকে দুই দেশের মধ্যে সামরিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও শক্তিশালী হয়েছে।

চীন প্রকাশ্যে কখনো রাশিয়ার যুদ্ধকে সমালোচনা করেনি। বরং নিজেদের নিরপেক্ষ দাবি করে বেইজিং যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানালেও পশ্চিমাদের অভিযুক্ত করছে ইউক্রেনকে অস্ত্র দিয়ে যুদ্ধ দীর্ঘায়িত করার জন্য।

শি ও পুতিন নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। মে মাসে শি মস্কো সফরে গিয়ে রাশিয়ার সামরিক কুচকাওয়াজেও যোগ দেন। শি বলেন, চীন-রাশিয়ার ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা আন্তর্জাতিক অস্থিরতার মধ্যেও স্থিতিশীলতা আনে।

-সুত্রঃ এ এফ পি


বেইজিংয়ে একসাথে শি–পুতিন–কিম এর ঐতিহাসিক মুহূর্ত

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৩ ১২:৩৬:০৮
বেইজিংয়ে একসাথে শি–পুতিন–কিম এর ঐতিহাসিক মুহূর্ত
ছবিঃ সংগৃহীত

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অবসানের ৮০ বছর পূর্তি উপলক্ষে চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে আয়োজিত দেশটির সবচেয়ে বড় সামরিক কুচকাওয়াজ বিশ্বব্যাপী কূটনৈতিক মনোযোগ কাড়ে। এই অনুষ্ঠানে একই মঞ্চে একসাথে উপস্থিত হন উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং–উন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং আয়োজক দেশ চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। তারা তিনজন একসাথে লাল গালিচায় পা রাখেন এবং পরস্পরের সঙ্গে হাত মেলান। বিশ্লেষকদের মতে, এই দৃশ্য শুধু একটি আনুষ্ঠানিক আচার নয়, বরং বর্তমান বৈশ্বিক ক্ষমতার ভারসাম্যে গভীর প্রতীকী তাৎপর্য বহন করে।

চীনের এই আয়োজনকে অনেক আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক শি জিনপিংয়ের কূটনৈতিক সফলতা হিসেবে দেখছেন। বিশেষত কিম জং–উনের উপস্থিতি এ আয়োজনকে বিশেষ মাত্রা দিয়েছে। কারণ গত ছয় বছরে এটি তার দ্বিতীয় বিদেশ সফর, এবং প্রথমবার তিনি শি জিনপিং ও ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একই মঞ্চে হাজির হলেন। কিমের এই পদক্ষেপকে আঞ্চলিক শক্তিগুলোর ঐক্য জোরদার এবং পশ্চিমা প্রভাবের পাল্টা বার্তা হিসেবে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে।

চীনের স্টেট কাউন্সিল জানিয়েছে, কুচকাওয়াজে মোট ২৬ জন রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকারপ্রধানকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে ছিলেন ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ, ভিয়েতনামের প্রেসিডেন্ট লুয়ং কুয়ং, বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো, জিম্বাবুয়ের প্রেসিডেন্ট এমারসন মনানগাগওয়া, সার্বিয়ার প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্দার ভুচিচ, কিউবার প্রেসিডেন্ট মিগুয়েল দিয়াজ ক্যানেলসহ বিভিন্ন দেশের শীর্ষ নেতা। এছাড়া, মিয়ানমারের ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট মিন অং হ্লাইং, মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম, স্লোভাকিয়ার প্রধানমন্ত্রী রবার্ট ফিকো এবং ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট প্রাবোও সুবিয়ান্তোসহ আরও অনেকে এ অনুষ্ঠানে যোগ দেন। বৈচিত্র্যময় অতিথি তালিকা শি জিনপিংয়ের কূটনৈতিক নেটওয়ার্কের শক্তি ও প্রভাবকে প্রতিফলিত করে।

কুচকাওয়াজের উদ্বোধনী ভাষণে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বলেন, “অপ্রতিরোধ্য চীনকে কোনোভাবেই ভয় দেখানো যাবে না।” তার এই দৃঢ় উচ্চারণ চীনের আত্মবিশ্বাসী সামরিক অবস্থান ও বৈশ্বিক শক্তি হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠার সংকল্পকে সামনে আনে। একইসঙ্গে এটি দেশের জনগণের জন্য অনুপ্রেরণাদায়ী বার্তা হিসেবে কাজ করেছে।

এই সামরিক কুচকাওয়াজে চীন প্রথমবারের মতো কিছু আধুনিক সামরিক প্রযুক্তি প্রদর্শন করে। এর মধ্যে ছিল লেজার অস্ত্র, পারমাণবিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র এবং পানির নিচে পরিচালিত বিশাল ড্রোন। এসব নতুন অস্ত্র প্রদর্শনের মাধ্যমে চীন কেবল সামরিক আধুনিকীকরণে তাদের সাফল্য প্রদর্শন করেনি, বরং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রতিপক্ষ শক্তিগুলোর জন্য এক প্রকার কৌশলগত সতর্কবার্তাও পাঠিয়েছে।

অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কুচকাওয়াজ নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানান। তিনি চীনা জনগণ ও প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে শুভেচ্ছা জানিয়ে রসিকতার সুরে লেখেন, “ভ্লাদিমির পুতিন এবং কিম জং–উনকে সঙ্গে নিয়ে আপনি যখন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করবেন, তখন তাদেরকেও আমার উষ্ণ শুভেচ্ছা পৌঁছে দেবেন।” ট্রাম্পের এই মন্তব্য পশ্চিমা বিশ্বের উদ্বেগ ও শঙ্কাকে প্রতিফলিত করে, যেখানে চীন, রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার ঘনিষ্ঠতা বিশেষভাবে লক্ষণীয়।

-শরিফুল


পাকিস্তানে একদিনে তিন হামলা: নিহত অন্তত ২৫

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৩ ১১:১৬:০৯
পাকিস্তানে একদিনে তিন হামলা: নিহত অন্তত ২৫
ছবিঃ সংগৃহীত

পাকিস্তানে আবারও ভয়াবহ রক্তক্ষয়ী হামলার ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার দেশটির বেলুচিস্তান ও খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে একাধিক হামলায় অন্তত ২৫ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে শুধু কোয়েটায় একটি রাজনৈতিক সমাবেশে আত্মঘাতী বিস্ফোরণে প্রাণ হারান ১৪ জন।

স্থানীয় কর্মকর্তাদের বরাতে জানা যায়, কোয়েটার একটি স্টেডিয়ামের পার্কিং এলাকায় বেলুচিস্তান ন্যাশনাল পার্টির (বিএনপি) সমাবেশ চলাকালে আত্মঘাতী বোমারু নিজেকে বিস্ফোরণ ঘটায়। সমাবেশে শত শত মানুষ উপস্থিত ছিলেন। এতে বহু মানুষ আহত হন, যাদের মধ্যে অন্তত সাতজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তবে দলের প্রধান আখতার মেঙ্গল সমাবেশ শেষে নিরাপদে সরে যেতে সক্ষম হন।

বেলুচিস্তান পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় ও প্রাকৃতিক সম্পদসমৃদ্ধ প্রদেশ হলেও দারিদ্র্য, বৈষম্য ও অবকাঠামোগত পশ্চাদপদতার কারণে দীর্ঘদিন ধরেই ক্ষোভে ফুঁসছে। এই প্রদেশে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন ও সহিংসতা বহু বছর ধরে চলমান। বিশেষ করে ২০২৪ সালে সহিংসতায় প্রাণ হারান ৭৮২ জন। চীনের ‘ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড’ উদ্যোগের অংশ হিসেবে বেলুচিস্তানে বড় অবকাঠামো প্রকল্প হলেও স্থানীয় জনগণের অভিযোগ, এর সুফল তারা ভোগ করতে পারছেন না, বরং বহিরাগতরা লাভবান হচ্ছেন।

একই দিনে ইরান সীমান্তবর্তী এলাকায় আধাসামরিক বাহিনীর একটি কনভয়ের ওপর বোমা হামলায় আরও পাঁচ জন নিহত হন এবং চারজন আহত হন। অন্যদিকে খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের বান্নু শহরে আধাসামরিক বাহিনীর ঘাঁটিতে আত্মঘাতী গাড়ি বোমা হামলা চালানো হয়। বিস্ফোরণের পরপরই আরও পাঁচজন হামলাকারী ঘাঁটির ভেতরে ঢুকে পড়ে। টানা ১২ ঘণ্টার বন্দুকযুদ্ধ শেষে ছয় হামলাকারী নিহত হয়, তবে প্রাণ হারান ছয় সেনাসদস্যও। এ হামলার দায় স্বীকার করেছে ইত্তেহাদ-উল-মুজাহিদিন পাকিস্তান নামের একটি জঙ্গিগোষ্ঠী।

চলতি বছর জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত বেলুচিস্তান ও খাইবার পাখতুনখোয়ায় সন্ত্রাসী হামলায় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যসহ ৪৩০ জনের বেশি নিহত হয়েছেন। দেশজুড়ে নিরাপত্তা পরিস্থিতি ক্রমশই নাজুক হয়ে উঠছে, আর রাজনৈতিক অস্থিরতার পাশাপাশি এই সহিংসতা পাকিস্তানকে এক গভীর সংকটের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।

-সুত্রঃ এ এফ পি


আমি বেঁচে আছি: ডোনাল্ড ট্রাম্প

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৩ ০৮:১৪:৫৫
আমি বেঁচে আছি: ডোনাল্ড ট্রাম্প
ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মৃত্যুর গুজব সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এবং অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলোতে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। বিশেষ করে গত কয়েকদিন ধরে এক্স (সাবেক টুইটার)–এর ট্রেন্ডিং তালিকায় এ গুজব আলোচিত ছিল।

মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) এক সাংবাদিক এ বিষয়ে ট্রাম্পকে প্রশ্ন করলে তিনি বিস্ময় প্রকাশ করে জানান, তাঁর মৃত্যু নিয়ে ট্রেন্ড তৈরি হয়েছিল তা তিনি জানতেনই না। তবে কিছু সংবাদমাধ্যম এ গুজব প্রচার করেছে বলে অভিযোগ তুলে তিনি তাদের সমালোচনা করেন। ট্রাম্পের মন্তব্যে স্পষ্ট ছিল—এই ধরনের গুজবই মূলত গণমাধ্যমের গ্রহণযোগ্যতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।

সাংবাদিক জানতে চান, “সপ্তাহের শেষ দিকে আপনার মৃত্যু নিয়ে একটি ভাইরাল ট্রেন্ড শুরু হয়। আপনি কি দেখেছেন যে, মানুষ কয়েকদিন ধরে আপনাকে না দেখে ধরে নিয়েছে আপনি মারা গেছেন? শনিবার সকাল পর্যন্ত এ বিষয়ে অন্তত ১৩ লাখ ব্যবহারকারী আলোচনা করেছেন।”

প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প অবাক হয়ে বলেন, “সত্যি বলছেন? আমি তো একদমই খেয়াল করিনি। বিষয়টা আসলেই পাগলামির মতো। গত সপ্তাহে আমি একাধিক সংবাদ সম্মেলন করেছি এবং সেগুলো খুবই সফল হয়েছে। দুই দিন কোনো সংবাদ সম্মেলন না করতেই গুজব ছড়িয়ে পড়ল যে, নিশ্চয়ই আমার কিছু হয়েছে।”

এসময় হাসতে হাসতে তিনি বাইডেনকে তুলনা করে বলেন, “বাইডেন তো মাসের পর মাস জনসম্মুখে দেখা দিতেন না। অথচ কেউ কখনও বলেনি যে তাঁর কিছু একটা হয়েছে। অথচ সবাই জানত তখন তিনি সুস্থ ছিলেন।”

নিজের সাম্প্রতিক কার্যক্রমের উদাহরণ টেনে ট্রাম্প বলেন, “আমি প্রায় দেড় ঘণ্টার একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছি, আর সেটি হয়েছে আপনাদেরই এক প্রতিদ্বন্দ্বী চ্যানেলে। আমি বেশ কয়েকটি শোতে অংশ নিয়েছি এবং ট্রুথ সোশ্যালে নিয়মিত পোস্ট দিয়েছি। সেগুলো ছিল অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। সপ্তাহজুড়ে আমি নানা কার্যক্রমে সক্রিয় ছিলাম। এমনকি পোটোম্যাক নদীর পাশের আমার ক্লাবে কয়েকজনের সঙ্গে দেখা করতেও গিয়েছিলাম।”

ট্রাম্প শেষ পর্যন্ত মন্তব্য করেন, “আমার মৃত্যুর খবর পুরোটাই ভুয়া। এতটাই ভুয়া যে, এ কারণেই সংবাদমাধ্যমের বিশ্বাসযোগ্যতা ক্রমেই নিচে নামছে।”


ভয়াবহতার রেশ কাটতে না কাটতেই আফগানিস্তানে ফের ভূমিকম্প

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০২ ২১:৫৭:২১
ভয়াবহতার রেশ কাটতে না কাটতেই আফগানিস্তানে ফের ভূমিকম্প
ছবি : সংগৃহীত

আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলে ভয়াবহ ভূমিকম্পের রেশ কাটতে না কাটতেই দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চলে মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ৫.২ মাত্রার আরেকটি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। এর উৎপত্তিস্থল ছিল জালালাবাদের উত্তর-পূর্বে প্রায় ৩৪ কিলোমিটার দূরে এবং ভূ-পৃষ্ঠের ১০ কিলোমিটার গভীরে। এই ভূমিকম্পের কম্পন পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলেও অনুভূত হয়েছে বলে জানা গেছে।

পাকিস্তানের আবহাওয়া বিভাগ অবশ্য তাদের হিসাবে ভূমিকম্পের মাত্রা ৫.৪ বলে জানিয়েছে।

এর আগে রোববার (১ সেপ্টেম্বর) আফগানিস্তানে আঘাত হানা ৬ মাত্রার ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা হুহু করে বেড়ে চলেছে। তালেবান সরকারের মুখপাত্র জবিহুল্লাহ মুজাহিদের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যমআল জাজিরা জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৪১১ জনে, এবং আহত হয়েছেন তিন হাজার ১২৪ জন।

জবিহুল্লাহ মুজাহিদ আরও জানান, কুনার প্রদেশে ৫ হাজার ৪০০টিরও বেশি বাড়িঘর ধ্বংস হয়ে গেছে। এর মধ্যে গাজীবাদ গ্রামটি প্রায় সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। এই গ্রামের বাসিন্দা রাব্বানি কান্নায় ভেঙে পড়ে বলেন, তিনি তার বাবা-মা, স্ত্রী এবং চার সন্তানসহ পরিবারের সাতজন সদস্যকে হারিয়েছেন। তিনি জানান, এখনও অনেক মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়ে আছেন এবং তাদের কাছে ধ্বংসস্তূপ সরানোর কোনো উপায় নেই।

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) জানিয়েছে, আফগানিস্তানে কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তা এখন বড় ঝুঁকির মুখে। ধারণা করা হচ্ছে, ৩৯ হাজার বর্গকিলোমিটারের বেশি গম চাষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যার ফলে প্রায় ৩ লাখ ৪৯ হাজার টন প্রধান ফসল ঝুঁকির মুখে পড়বে। এছাড়া, পশুপালন খাতও হুমকির সম্মুখীন, কারণ ক্ষতিগ্রস্ত জেলাগুলিতে ১.৩৮ মিলিয়ন পশু রয়েছে।

এদিকে, মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, ৬ মাত্রার এই ভূমিকম্পটির কেন্দ্রস্থল ছিল জালালাবাদের উত্তর-পূর্বে ২৭ কিলোমিটার দূরে এবং গভীরতা ছিল ৮ কিলোমিটার।


ভূমিকম্প বিধ্বস্ত আফগানিস্তান: দুর্গম এলাকায় এখনো চলছে উদ্ধারকাজ

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০২ ১৮:২১:৩৯
ভূমিকম্প বিধ্বস্ত আফগানিস্তান: দুর্গম এলাকায় এখনো চলছে উদ্ধারকাজ
আফগানিস্তানের কুনার প্রদেশের মাজার দারা গ্রামে ভূমিকম্পের পর ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির বাইরে একজন আফগান ব্যক্তি শোক প্রকাশ করছেন। ছবি : এএফপি

আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলে আঘাত হানা এক ভয়াবহ ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা বেড়ে অন্তত এক হাজার ৪০০ জন এবং আহতের সংখ্যা তিন হাজারের বেশি হয়েছে বলে জানিয়েছে তালেবান সরকার। এটি গত কয়েক দশকের মধ্যে দেশটিতে আঘাত হানা সবচেয়ে প্রাণঘাতী ভূমিকম্পগুলোর মধ্যে অন্যতম।

গত রবিবার গভীর রাতে পাকিস্তান সীমান্তের কাছে অবস্থিত দুর্গম পাহাড়ি প্রদেশগুলোতে ৬ মাত্রার এই ভূমিকম্প আঘাত হানে। এর পর থেকেই হতাহতের সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে।

মঙ্গলবার তালেবান সরকারের প্রধান মুখপাত্র জবিউল্লাহ মুজাহিদ এক্সে (সাবেক টুইটার) জানিয়েছেন, শুধু কুনার প্রদেশেই এক হাজার ৪১১ জন নিহত এবং তিন হাজার ১২৪ জন আহত হয়েছেন। এছাড়া, পার্শ্ববর্তী নানগারহার প্রদেশে আরও এক ডজন মানুষ নিহত ও শতাধিক আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আফগানিস্তানে জাতিসংঘের মানবিক সমন্বয়কারী ইন্দ্রিকা রাতওয়াত্তে আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন যে, এই ভূমিকম্পে ‘লাখো মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন’।

কুনার প্রদেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রধান এহসানুল্লাহ এহসান জানিয়েছেন, সারারাত ধরে জরুরি উদ্ধার অভিযান চলেছে। এখনও অনেক আহত মানুষ দূরবর্তী গ্রামগুলোতে চিকিৎসার জন্য অপেক্ষা করছেন। গ্রামবাসীরা নিজেদের হাতেই ভেঙে পড়া কাদামাটি ও পাথরের তৈরি ঘরবাড়ি সরিয়ে উদ্ধার কাজ চালাচ্ছেন।

ইউএস জিওলোজিক্যাল সার্ভে জানিয়েছে, ভূমিকম্পটির কেন্দ্রস্থল ছিল জালালাবাদ শহর থেকে মাত্র ২৭ কিলোমিটার দূরে ও ভূ-পৃষ্ঠের মাত্র ৮ কিলোমিটার গভীরে। এ ধরনের অগভীর ভূমিকম্পে সাধারণত ধ্বংসযজ্ঞের মাত্রা অনেক বেশি হয়। এর ওপর আফগানিস্তানের অধিকাংশ মানুষ নিচু ও কাঁচা ইটের তৈরি ঘরে বসবাস করায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বহুগুণ বেড়ে গেছে।

দীর্ঘ যুদ্ধবিধ্বস্ত এই দেশটি বিশ্বের দরিদ্রতম রাষ্ট্রগুলোর একটি। ২০২১ সালে তালেবান ক্ষমতা দখলের পর থেকে আন্তর্জাতিক মানবিক সহায়তা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাওয়ায় প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলার সক্ষমতা আরও দুর্বল হয়েছে।

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এই পরিস্থিতিতে দ্রুত প্রয়োজন নির্ধারণ এবং জরুরি সহায়তা প্রদানের জন্য প্রাথমিকভাবে ৫০ লাখ ডলার বরাদ্দের ঘোষণা দিয়েছেন। তবে জাতিসংঘের অভিবাসন সংস্থা জানিয়েছে, অনেক সড়ক বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এখনো ক্ষতিগ্রস্ত কিছু গ্রামে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি।

আফগানিস্তান একটি ভূমিকম্পপ্রবণ দেশ। ২০২৩ সালের অক্টোবরে হেরাত প্রদেশে ৬.৩ মাত্রার ভূমিকম্পে দেড় হাজারেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। এবারের ভূমিকম্পটি আরও ভয়াবহ হয়ে দেখা দিয়েছে, কারণ সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পাকিস্তান ও ইরান থেকে কয়েক মিলিয়ন আফগান নিজ দেশে ফিরে এসেছেন এবং তাদের অনেকেই এই ধরনের দুর্গম গ্রামে বসবাস করছিলেন।


ভারত-চীন-রাশিয়ার ঘনিষ্ঠতা 'অত্যন্ত লজ্জাজনক': যুক্তরাষ্ট্র

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০২ ১৬:৪০:৫৬
ভারত-চীন-রাশিয়ার ঘনিষ্ঠতা 'অত্যন্ত লজ্জাজনক': যুক্তরাষ্ট্র
ছবি: সংগৃহীত

চীনের তিয়ানজিনে অনুষ্ঠিত সাংহাই কোঅপারেশন সামিট (এসসিও) ঘিরে বিশ্বনেতাদের ব্যস্ততা ছিল চোখে পড়ার মতো। এ বছরের সম্মেলনে সবার নজর ছিল চীন ও ভারতের সম্পর্কের দিকে। সম্মেলনের শেষ দিনে চীন, ভারত ও রাশিয়ার রাষ্ট্রপ্রধানরা আলাদাভাবে একটি বৈঠকে অংশ নেন, যেখানে কৌশলগত সহযোগিতা, বাণিজ্যিক সম্পর্ক, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং প্রযুক্তিগত উন্নয়নে পারস্পরিক সহায়তার বিষয়ে আলোচনা হয়।

এই তিন দেশের ক্রমবর্ধমান ঘনিষ্ঠতাকে সন্দেহের চোখে দেখছে যুক্তরাষ্ট্র। প্রতিশোধমূলক শুল্ক আরোপের জেরে সম্প্রতি ভারত ও চীনের মধ্যে সম্পর্ক গভীর হয়েছে, যা মার্কিন নীতি-নির্ধারকদের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, শুল্ক ইস্যুতে ভারত এতদিন একতরফা সুবিধা নিচ্ছিল। ট্রাম্পের বাণিজ্য উপদেষ্টা নাভারোও একই ধরনের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।

মার্কিন প্রশাসনের মতে, কর্তৃত্ববাদী দুই শাসক ভ্লাদিমির পুতিন ও শি জিনপিংয়ের সঙ্গে নরেন্দ্র মোদির এই ধরনের ঘনিষ্ঠতা 'অত্যন্ত লজ্জাজনক'। তারা প্রশ্ন তুলেছেন, "মোদি আসলে কী ভাবছেন?" বিশেষ করে যখন বিগত কয়েক দশকে ভারত ও চীনের মধ্যে স্বাভাবিক সম্পর্ক প্রায় অনুপস্থিত ছিল।

এই ত্রিপক্ষীয় বৈঠক কোনো সুফল বয়ে আনবে না বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন বাণিজ্য সচিব স্কট বেসেন্ট। তবে তিনি ভারত ও আমেরিকার মধ্যে সম্পর্ক পুনরুদ্ধারের আশাবাদও ব্যক্ত করেন। একইসঙ্গে তিনি এবং নাভারো আবারও ভারতকে রাশিয়া থেকে জ্বালানি তেল না কেনার পরামর্শ দিয়েছেন।

উল্লেখ্য, গত আগস্টে ট্রাম্প প্রশাসন প্রথমে ভারতীয় পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ বাড়তি শুল্ক আরোপ করে। রাশিয়া থেকে তেল কেনা বন্ধ না করায় এই শুল্ক বাড়িয়ে ৫০ শতাংশ করা হয়। এর ফলে একসময়ের দুই বন্ধু রাষ্ট্রের মধ্যে দূরত্ব আরও বেড়েছে।


ভারতে ভোট চুরির ‘হাইড্রোজেন বোমা’ ফাঁস করবেন রাহুল গান্ধী

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০২ ১৪:৩৩:০৭
ভারতে ভোট চুরির ‘হাইড্রোজেন বোমা’ ফাঁস করবেন রাহুল গান্ধী
কংগ্রেস নেতা ও লোকসভার বিরোধীদলীয় নেতা রাহুল গান্ধী।

ভারতে ভোট চুরি এবং ভোটার তালিকায় কারচুপির অভিযোগ তুলে রাজনৈতিক অঙ্গন উত্তপ্ত করে তুলেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। তিনি দাবি করেছেন, তার হাতে এমন অকাট্য প্রমাণ রয়েছে যা প্রকাশ পেলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জনগণের সামনে মুখ দেখাতে পারবেন না। রাহুল এই প্রমাণকে 'হাইড্রোজেন বোমা' হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম স্ক্রলডটইন এ তথ্য প্রকাশ করেছে।

বিহারের পাটনায় ‘ভোটাধিকার যাত্রা’র সমাপনী অনুষ্ঠানে রাহুল বলেন, সম্প্রতি মহারাষ্ট্র বিধানসভা এবং ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বেঙ্গালুরু সেন্ট্রাল আসনে ব্যাপক কারচুপি হয়েছে। তার ভাষ্যমতে, কর্ণাটকের মহাদেবপুরা বিধানসভা এলাকায় কীভাবে ভোট চুরি হয়েছে, সেটির বিস্তারিত প্রমাণ কংগ্রেস ইতোমধ্যে সংগ্রহ করেছে।

রাহুলের অভিযোগ ও বিজেপির প্রতিক্রিয়া

রাহুল গান্ধীর দাবি অনুযায়ী, কংগ্রেস মহাদেবপুরা বিধানসভা আসনের ভোটার তালিকা ছয় মাস ধরে পরীক্ষা করে এক লাখেরও বেশি অনিয়ম খুঁজে পেয়েছে। তিনি অভিযোগ করেছেন, এই অনিয়মগুলোতে নির্বাচন কমিশন বিজেপির সঙ্গে যোগসাজশ করেছে। রাহুল যেসব অনিয়মের কথা বলেছেন তার মধ্যে রয়েছে:

ডুপ্লিকেট নাম: ১১,৯৬৫টি

ভুয়া বা অকার্যকর ঠিকানা: ৪০,০৯টি

একই ঠিকানায় একাধিক নিবন্ধন: ১০,৪৫৪টি

অকার্যকর ছবি: ৪,১৩২টি

ফরম-৬-এর অপব্যবহার: ৩৩,৬৯২টি

রাহুলের এই মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বিজেপি নেতা রবি শঙ্কর প্রসাদ তাকে 'দায়িত্বজ্ঞানহীন' বলে অভিহিত করেছেন। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, "নির্বাচনের সঙ্গে পরমাণু বোমা বা হাইড্রোজেন বোমার তুলনা কেন করছেন? বিরোধীদলীয় নেতা হয়ে নিজেকে কেন ছোট করছেন?"

নির্বাচন কমিশনের অবস্থান

কংগ্রেসের এসব অভিযোগ অবশ্য নির্বাচন কমিশন অস্বীকার করেছে। গত ১৪ আগস্ট কমিশন রাহুলের মহাদেবপুরা-সংক্রান্ত অভিযোগকে 'ভুল ও বিভ্রান্তিকর' বলে মন্তব্য করে। এর আগেও চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে কমিশন জানিয়েছিল, ভোটের ফলাফল নিয়ে হতাশ রাজনৈতিক দলগুলোর অভিযোগ 'সম্পূর্ণ হাস্যকর'। কংগ্রেসের দাবি, শুধু কর্ণাটক নয়, মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচনেও জাতীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে ব্যবহার করে বিজেপি 'শৈল্পিক কারচুপি' করেছে।


জাতিসংঘে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিল উন্নত যে দেশ

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০২ ১০:০৩:১০
জাতিসংঘে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিল উন্নত যে দেশ
ছবি: সংগৃহীত

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ অধিবেশনে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ইউরোপের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দেশ বেলজিয়াম। মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও উপপ্রধানমন্ত্রী ম্যাক্সিম প্রেভো তাঁর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টের মাধ্যমে বিষয়টি বিশ্ববাসীকে জানান। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আলোচিত এ সিদ্ধান্ত বেলজিয়ামের কূটনৈতিক অবস্থানকে নতুন মাত্রা দিয়েছে এবং ফিলিস্তিন ইস্যুতে পশ্চিমা বিশ্বে নতুন বিতর্ক সৃষ্টি করেছে।

প্রেভো তাঁর পোস্টে লিখেছেন, বেলজিয়াম দীর্ঘদিন ধরে ফিলিস্তিনি জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারের প্রতি সমর্থন জানিয়ে এসেছে। সেই ধারাবাহিকতায় আজ ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেওয়া হলো। শুধু স্বীকৃতিই নয়, বেলজিয়াম সরকার ইসরায়েল সরকারের বিরুদ্ধে অন্তত ১২ দফা কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রস্তুতিও নিচ্ছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো—অধিকৃত পশ্চিম তীরের অবৈধ বসতি থেকে যেকোনো ধরনের আমদানি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা, ইসরায়েলি কোম্পানিগুলোর সঙ্গে সরকারি ক্রয়-বিক্রয় ও কৌশলগত অংশীদারিত্বের নীতি পুনর্বিবেচনা করা এবং সামরিক সরঞ্জাম বা প্রতিরক্ষা খাতে যৌথ প্রকল্পে অংশগ্রহণ বন্ধ করা।

এমন এক সময়ে বেলজিয়ামের এই ঘোষণা এলো যখন গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি আগ্রাসন অব্যাহত রয়েছে। মানবাধিকার সংগঠনগুলোর হিসাব অনুযায়ী, চলমান সংঘাতে এখন পর্যন্ত ৬৩ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন প্রায় এক লাখ ৬০ হাজার মানুষ। হাসপাতাল ও আশ্রয়কেন্দ্রগুলো ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়ায় লাখো মানুষ চরম মানবিক বিপর্যয়ের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। এই পরিস্থিতিতেই আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি প্রশ্নটি নতুন করে গুরুত্ব পাচ্ছে।

এর আগে গত জুলাই মাসে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ঘোষণা দিয়েছিলেন, প্যারিস ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেবে। ফ্রান্সের পর আরও কয়েকটি ইউরোপীয় দেশ একই পথে হাঁটলেও কিছু রাষ্ট্র আবার শর্তসাপেক্ষে অবস্থান নিয়েছে। বেলজিয়াম এবার প্রকাশ্যে ও আনুষ্ঠানিকভাবে যে অবস্থান নিল, তা ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে ফিলিস্তিন প্রশ্নে আরও বিভাজন তৈরি করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

জাতিসংঘের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৪ সালের এপ্রিল পর্যন্ত অন্তত ১৪৭টি দেশ ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। এটি জাতিসংঘের মোট সদস্য রাষ্ট্রের প্রায় তিন-চতুর্থাংশ। ফলে স্পষ্ট হচ্ছে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বড় একটি অংশ ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির পক্ষে দৃঢ় অবস্থান নিয়েছে। বেলজিয়ামের সিদ্ধান্তে এই তালিকা আরও দীর্ঘ হলো।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়ে এবং ইসরায়েলের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণা দিয়ে বেলজিয়াম শুধু একটি কূটনৈতিক অবস্থানই নিল না, বরং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে শক্ত বার্তাও দিল যে, ফিলিস্তিন ইস্যুতে ইউরোপের ভেতরেও রাজনৈতিক পরিবর্তন ঘটছে। এর প্রভাব ন্যাটো এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের নীতিতেও পড়তে পারে। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান যে ইসরায়েলপন্থী, সেখানে বেলজিয়ামের এই পদক্ষেপ পশ্চিমা ঐক্যকে দুর্বল করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ফিলিস্তিনপন্থী দেশগুলো মনে করছে, এ ধরনের স্বীকৃতি ও নিষেধাজ্ঞা ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক চাপে ফেলতে সাহায্য করবে এবং হয়তো যুদ্ধবিরতি ও সমঝোতার দিকে ঠেলে দিতে পারবে। তবে ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ মিত্র দেশগুলো আশঙ্কা করছে, এতে করে কূটনৈতিক টানাপোড়েন আরও বাড়বে এবং মধ্যপ্রাচ্যে স্থিতিশীলতা ফেরানো কঠিন হয়ে পড়বে।

-রাফসান


সুদানের দারফুরে ভয়াবহ ভূমিধস: এক হাজারের বেশি নিহত, জীবিত মাত্র একজন

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০২ ০৯:৪১:১৮
সুদানের দারফুরে ভয়াবহ ভূমিধস: এক হাজারের বেশি নিহত, জীবিত মাত্র একজন
ছবিঃ এ এফ পি

সুদানের পশ্চিম দারফুর অঞ্চলে এক ভয়াবহ ভূমিধসে পুরো একটি পাহাড়ি গ্রাম প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। স্থানীয় বিদ্রোহী সংগঠন সুদান লিবারেশন মুভমেন্ট/আর্মি (এসএলএম) জানিয়েছে, রোববার টানা ভারি বর্ষণের পর দারফুরের মাররা পর্বতমালার তারাসিন গ্রামে এই বিপর্যয় ঘটে। সংগঠনের দাবি অনুযায়ী, গ্রামটির প্রায় এক হাজার বাসিন্দা নিহত হয়েছেন এবং অলৌকিকভাবে একজন মাত্র জীবিত আছেন।

এসএলএম এক বিবৃতিতে জানায়, “ভূমিধসটি এতটাই ব্যাপক এবং ধ্বংসাত্মক ছিল যে পুরো গ্রামটি মাটির নিচে চাপা পড়েছে। মৃতদেহগুলো এখনো মাটি ও ধ্বংসস্তূপের নিচে পড়ে আছে।” ঘটনাস্থলটি দারফুরের একটি এলাকা, যা পূর্বে সাইট্রাস উৎপাদনের জন্য পরিচিত ছিল। সংগঠনটি জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থাগুলোর কাছে অবিলম্বে সহযোগিতা চেয়েছে।

দারফুরের গভর্নর এবং সেনাপন্থী নেতা মিনি মিনাওয়ি একে “সীমান্ত অতিক্রম করা মানবিক বিপর্যয়” হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। তিনি আন্তর্জাতিক মানবিক সংস্থাগুলোর উদ্দেশে বলেন, “আমাদের জনগণের পক্ষে এ ধরনের বিপর্যয়ের মোকাবিলা করা সম্ভব নয়। জরুরি সহায়তা এখন অত্যন্ত প্রয়োজন।”

কিন্তু বড় বাধা হলো চলমান গৃহযুদ্ধ। সেনাবাহিনী ও আধাসামরিক বাহিনী র‌্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ)-এর মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের কারণে দারফুরের অনেক অঞ্চলই আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থার নাগালের বাইরে রয়ে গেছে। ফলে তাৎক্ষণিক ত্রাণ ও উদ্ধার কার্যক্রম কঠিন হয়ে পড়েছে।

২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া গৃহযুদ্ধে সেনাপ্রধান আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান এবং তার সাবেক ডেপুটি আরএসএফ কমান্ডার মোহাম্মদ হামদান দাগালো ক্ষমতার দ্বন্দ্বে লিপ্ত হন। এরপর থেকে দেশজুড়ে চলমান সংঘাতে কয়েক লাখ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন এবং কোটি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। জাতিসংঘের মতে, এটি এখন বিশ্বের সবচেয়ে বড় উদ্বাস্তু ও ক্ষুধা সংকট।

শুধু সুদানের ভেতরেই প্রায় এক কোটি মানুষ বাস্তুচ্যুত, আর অতিরিক্ত চার মিলিয়ন মানুষ প্রতিবেশী দেশে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। রাজধানী খারতুম থেকেই চার মিলিয়নের বেশি মানুষ স্থানচ্যুত হয়েছেন। উত্তর দারফুরের এল-ফাশের বর্তমানে আরএসএফ বাহিনীর সবচেয়ে তীব্র হামলার মুখে রয়েছে।

ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়া মানুষদের উদ্ধারে প্রয়োজন জরুরি আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপ। মানবিক সহায়তা ছাড়া এ বিপর্যয় মোকাবিলা করা সুদানের পক্ষে প্রায় অসম্ভব। ভূমিধসের পাশাপাশি যুদ্ধ ও দুর্ভিক্ষ মিলিয়ে দেশটি আজ চরম মানবিক সংকটে নিমজ্জিত।

-সুত্রঃ এ এফ পি

পাঠকের মতামত: