আওয়ামী লীগের দাতা থেকে দুর্নীতির খেলোয়াড়: কনস্টেবল খালেক

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ২০ ০৮:৪৭:০৭
আওয়ামী লীগের দাতা থেকে দুর্নীতির খেলোয়াড়: কনস্টেবল খালেক
ছবিঃ সংগৃহীত

পুলিশের কনস্টেবল পদে চাকরি শুরু করেও রাজধানীর বসুন্ধরা ও মিরপুরে একাধিক ফ্ল্যাট, বরিশাল ও মঠবাড়িয়ায় রাজকীয় বাড়ি এবং অর্ধশতাধিক বিঘা জমির মালিক হয়েছেন জেএম খালেক। অনুসন্ধানে জানা গেছে, মঠবাড়িয়ার শাখারীকাঠি গ্রামের এস্কান্দার জমাদ্দারের ছেলে খালেকের শৈশব কেটেছে দারিদ্র্যের মধ্যে। স্কুল জীবনে এলাকার পুকুর ও খাল থেকে শাপলা তুলে বিক্রি করে লেখাপড়ার খরচ চালাতে হতো তাকে। কষ্ট করে এসএসসি ও এইচএসসি পাশ করার পর ২০০৫ সালে পুলিশ কনস্টেবল পদে যোগ দেন তিনি।

প্রথমে বরিশাল ও ঝালকাঠিতে কর্মরত থাকলেও পরে ডিএমপিতে বদলি হলে তার ভাগ্য পরিবর্তনের সুযোগ আসে। রাজারবাগ পুলিশ লাইনে চাকরিরত অবস্থায় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার এক আত্মীয়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের সুবাদে পুলিশের নিয়োগ বাণিজ্য শুরু করেন খালেক। বিশেষ করে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের মাঠপর্যায়ের পদে নিয়োগে মোটা অঙ্কের ঘুষ লেনদেনের মাধ্যমে বিপুল অর্থ উপার্জন করেন তিনি। মাত্র এক দশকের মধ্যেই অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়ে তোলেন।

রাজধানীর মিরপুর নতুন বাজার এলাকায় দুটি ফ্ল্যাট এবং বসুন্ধরায় আরও দুটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট কিনেছেন। বর্তমানে স্ত্রীকে নিয়ে বসুন্ধরার একটি ফ্ল্যাটে বসবাস করছেন তিনি। অন্যদিকে মঠবাড়িয়া পৌর এলাকায় ২০২০ সালে তিন কাঠা জমির ওপর প্রায় চার কোটি টাকা ব্যয়ে চারতলা বাড়ি নির্মাণ করেছেন। ওই ভবনের পাশেই আরও একটি তিনতলা ভবনের নির্মাণকাজ চলছে। এছাড়া জন্মস্থান শাখারীকাঠি, শ্বশুরবাড়ি বেতমোর এবং বোনের বাড়ি নিজামিয়া এলাকায় আত্মীয়দের নামে অর্ধশতাধিক বিঘা জমি কিনেছেন।

এছাড়া খালেক বিভিন্ন ড্রাইভারের নামে কোটি টাকার গাড়ি কিনে ব্যবহার করছেন। অতীতে তিনি প্রভাব খাটাতে সংসদ সদস্যের স্টিকার লাগানো গাড়ি ব্যবহার করতেন। বর্তমানে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিতে শতাধিক মোবাইল সিম এবং বিদেশি রাউটার ব্যবহার করেন।

জেএম খালেক দীর্ঘদিন মঠবাড়িয়া আওয়ামী লীগের একটি গ্রুপের বড় দাতা হিসেবে পরিচিত। স্থানীয় জনশ্রুতি রয়েছে যে ২০২৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নিজের পছন্দের প্রার্থীর বিজয় নিশ্চিত করতে কোটি কোটি টাকা খরচ করেছেন তিনি। তার বিরুদ্ধে বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগও রয়েছে। এমনকি আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা ভারতে আত্মগোপন করলে খালেকও সেখানে গিয়ে আর্থিক সহায়তা দিয়েছেন বলে জানা গেছে।

সম্প্রতি যৌথ বাহিনী তার বাসায় অভিযান চালালেও আগাম খবর পেয়ে তিনি পালিয়ে যান। এর আগে দুর্নীতির অভিযোগ সাবেক আইজিপি বেনজির আহমেদের কাছে জানানো হলেও উৎকোচের বিনিময়ে তা ধামাচাপা দেওয়া হয়। দুর্নীতি দমন কমিশনে অভিযোগ করা হলেও রহস্যজনকভাবে তদন্ত হয়নি। পরে মামলার ভয় এড়াতে করোনার সময় চাকরি থেকে পদত্যাগ করেন তিনি।

স্থানীয় রাজনৈতিক নেতারা তার বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সাবেক কমান্ডার বাচ্চু মিয়া আকন মনে করেন, খালেকের সীমাহীন দুর্নীতি দুদকের মাধ্যমে তদন্ত হওয়া উচিত। উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মাহবুবুল ইসলাম দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানিয়ে বলেন, আওয়ামী লীগের অর্থদাতা হিসেবে খালেক প্রভাব খাটাচ্ছেন। উপজেলা জামায়াতের যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক তারেক মনোয়ার বলেন, যতই ধূর্ত হোক, তাকে আইনের আওতায় আনতেই হবে। অবৈধ সম্পদ রক্ষায় তিনি কিছু অসাধু রাজনৈতিক নেতাদের ছত্রছায়ায় নিজেকে বাঁচাতে চেষ্টা করছেন।

-শরিফুল


বিদেশযাত্রায় দালালের দৌরাত্ম্য কমবে? চালু হলো নতুন ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ‘ওইপি’

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৯ ২১:২১:৪৯
বিদেশযাত্রায় দালালের দৌরাত্ম্য কমবে? চালু হলো নতুন ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ‘ওইপি’
ছবিঃ সংগৃহীত

বিদেশে কর্মী পাঠানোর পুরো প্রক্রিয়াটিতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে এবং সেবার মান বাড়াতে যাত্রা শুরু করেছে ‘ওভারসিজ এমপ্লয়মেন্ট প্ল্যাটফর্ম’ (ওইপি)। বুধবার (১৯ নভেম্বর) ঢাকার একটি হোটেলে আনুষ্ঠানিকভাবে এই ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের উদ্বোধন করেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। এই উদ্যোগকে নিরাপদ ও কার্যকর শ্রম অভিবাসনের পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে অভিহিত করেছেন তিনি।

অনুষ্ঠানে ড. আসিফ নজরুল বলেন, প্রবাসী কর্মীরাই বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম প্রধান চালিকাশক্তি। তাই তাদের বিদেশ যাওয়ার পথটি নিরাপদ, সুরক্ষিত এবং মর্যাদাপূর্ণ করা সরকারের দায়িত্ব। তিনি জানান, সময়ের সাথে সাথে এই প্ল্যাটফর্মে আরও নতুন নতুন সুবিধা যুক্ত করা হবে, যা কর্মী, নিয়োগকর্তা এবং সরকার—সবার জন্যই উপকারী হবে। মূলত প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে এই উন্নত প্ল্যাটফর্মটি বাংলাদেশ সরকার, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) এবং সুইজারল্যান্ড সরকারের যৌথ উদ্যোগের ফসল।

এই জাতীয় ডিজিটাল গেটওয়েটি এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যেন শ্রম অভিবাসনের সঙ্গে যুক্ত সব পক্ষকে এক জায়গায় নিয়ে আসা যায়। বিদেশ যেতে আগ্রহী কর্মী, রিক্রুটিং এজেন্সি, বিএমইটি, টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার (টিটিসি), নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান, ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ এবং পুনর্বাসন সেবা প্রদানকারীরা সবাই এই এক প্ল্যাটফর্মে সংযুক্ত থাকবেন। এর ফলে অভিবাসন প্রক্রিয়ার প্রতিটি ধাপে স্বচ্ছতা আসবে, জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে এবং সেবার মান বাড়বে। সবচেয়ে বড় কথা, এই প্রযুক্তির ফলে মধ্যস্বত্বভোগী বা দালালদের দৌরাত্ম্য কমবে এবং কর্মীদের অভিবাসন খরচ উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র সচিব আসাদ আলম সিয়াম, বাংলাদেশে সুইজারল্যান্ড দূতাবাসের ডেপুটি হেড অব মিশন দীপাক এলমার এবং আইএলও বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ম্যাক্স টুনন। পররাষ্ট্র সচিব আসাদ আলম সিয়াম বলেন, একটি স্বচ্ছ ও ন্যায়সংগত নিয়োগ ব্যবস্থা দ্বিপাক্ষিক শ্রম চুক্তিগুলোকে আরও শক্তিশালী করে এবং গন্তব্য দেশগুলোর কাছে বাংলাদেশের আস্থাও বাড়িয়ে তোলে। অন্যদিকে আইএলও-এর কান্ট্রি ডিরেক্টর ম্যাক্স টুনন বলেন, তথ্য ও প্রক্রিয়াকে এক জায়গায় আনার মাধ্যমে এই প্ল্যাটফর্ম রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর ওপর নিয়ন্ত্রণ বাড়াবে এবং কর্মীরা যাচাইকৃত সঠিক তথ্য পাবেন, যা নিরাপদ অভিবাসনে সহায়তা করবে।

উন্নয়ন সহযোগীদের পক্ষ থেকে সুইজারল্যান্ড দূতাবাসের দীপাক এলমার বলেন, শুধু প্রযুক্তি দিয়েই পুরো অভিবাসন ব্যবস্থা ঠিক করা সম্ভব নয়। এই প্ল্যাটফর্মের প্রকৃত সাফল্য নির্ভর করবে রিক্রুটিং এজেন্সি, নিয়োগকর্তা এবং অভিবাসীদের সক্রিয় অংশগ্রহণের ওপর। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. নেয়ামত উল্যা ভূঁইয়া। সমাপনী বক্তব্যে তিনি বলেন, ওইপির উদ্বোধন কোনো প্রকল্পের শেষ নয়, বরং এটি শ্রম অভিবাসন ব্যবস্থাপনার এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা। তিনি জানান, তারা এর বৈশিষ্ট্য আরও উন্নত করবেন এবং অংশীদারদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবেন, যাতে প্রবাসী কর্মীরা আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে তাদের বিদেশযাত্রার পরিকল্পনা করতে পারেন। এছাড়া অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দূতাবাস, জাতিসংঘ সংস্থা, শ্রমিক সংগঠন এবং সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।


আ.লীগের জন্মস্থান কেনায় বড় অনিয়ম, রাষ্ট্রের শত কোটি টাকা গচ্চা যাওয়ার অভিযোগ

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৯ ২১:১৫:১১
আ.লীগের জন্মস্থান কেনায় বড় অনিয়ম, রাষ্ট্রের শত কোটি টাকা গচ্চা যাওয়ার অভিযোগ
ছবিঃ সংগৃহীত

পুরান ঢাকার ঐতিহাসিক রোজ গার্ডেন ভবনটি কেনা নিয়ে বড় ধরনের আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ রয়েছে, আওয়ামী লীগের জন্মস্থান হিসেবে পরিচিত এই ভবনটি কিনতে গিয়ে রাষ্ট্রের প্রায় ৩৩২ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বুধবার (১৯ নভেম্বর) দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, অনুসন্ধানে যাদেরই সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যাবে, কমিশন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

দুদক সূত্রে জানা গেছে, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের কিছু অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজশে এই বিশাল অঙ্কের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি নজরে আসার পর দুদক তাৎক্ষণিকভাবে অভিযান চালায় এবং সংশ্লিষ্ট নথিপত্র ও তথ্য সংগ্রহ করে। প্রাথমিক তথ্যের ভিত্তিতে কমিশন এখন বিস্তারিত অনুসন্ধান শুরু করেছে। উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার ব্যক্তিমালিকানাধীন এই ঐতিহাসিক ভবনটি পুরাকীর্তি হিসেবে সংরক্ষণের জন্য কিনে নেয়। সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদনের পর ভবনটি কিনতে সরকারের ব্যয় হয়েছিল ৩৩১ কোটি ৭০ লাখ ২ হাজার ৯০০ টাকা।

রোজ গার্ডেনের সঙ্গে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের এক গভীর সম্পর্ক রয়েছে। ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন এই বাড়িতেই দুদিনব্যাপী সম্মেলনের মাধ্যমে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠিত হয়, যা পরে আওয়ামী লীগ নাম ধারণ করে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে এই দলটিই পরবর্তীতে বাংলাদেশের স্বাধিকার আন্দোলন ও ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দেয়। ঐতিহাসিক গুরুত্ব বিবেচনা করেই ভবনটি অধিগ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।

ভবনটির ইতিহাস বেশ পুরোনো ও বৈচিত্র্যময়। ১৯৩১ সালে পুরান ঢাকার হৃষিকেশ দাস রোডে ২২ বিঘা জমির ওপর এই বাগানবাড়িটি নির্মাণ করেছিলেন ধনাঢ্য ব্যবসায়ী হৃষিকেশ দাস। তিনি শৌখিন মানুষ ছিলেন এবং পশ্চিমমুখী এই দোতলা ভবনের চারপাশে দেশ-বিদেশ থেকে আনা বিরল প্রজাতির গোলাপের বাগান তৈরি করেছিলেন। সেই গোলাপ বাগান থেকেই বাড়িটির নাম হয়ে যায় ‘রোজ গার্ডেন’। করিন্থিয়ান-গ্রীক স্থাপত্যশৈলী মেনে তৈরি প্রায় সাত হাজার বর্গফুট আয়তনের এই ভবনের দ্বিতীয় তলায় একটি বিশাল জলসা ঘর রয়েছে। ঘরটির মেঝে সাদা পাথরের এবং ছাদ বা সিলিংয়ে সবুজ কাঁচ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে দৃষ্টিনন্দন ফুলের নকশা। এছাড়া ভবন চত্বরে ছিল পাথরের মূর্তি, ফোয়ারা এবং শানবাঁধানো পুকুর।

তবে এই জাঁকজমক বেশিদিন টেকেনি। বাড়িটি নির্মাণের কয়েক বছরের মধ্যেই হৃষিকেশ দাস দেউলিয়া হয়ে পড়েন এবং ১৯৩৬ সালে তিনি বাড়িটি ঢাকার বই ব্যবসায়ী খান বাহাদুর মৌলভী কাজী আবদুর রশীদের কাছে বিক্রি করে দেন। এরপর এখানে বিখ্যাত প্রভিন্সিয়াল লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৬৬ সালে আবদুর রশীদের ভাই কাজী হুমায়ূন বাড়িটির মালিকানা পান এবং তখন এটি ‘হুমায়ূন সাহেবের বাড়ি’ নামে পরিচিতি পায়। ১৯৭০ সালে এটি তৎকালীন চলচ্চিত্র উন্নয়ন সংস্থার কাছে ভাড়া দেওয়া হয় এবং ‘বেঙ্গল স্টুডিও’ হিসেবে ব্যবহৃত হতে থাকে। ১৯৯৩ সালে স্টুডিওটি এখান থেকে সরে গেলে বাড়িটি আবারও কাজী হুমায়ূন পরিবারের দখলে আসে।

ততদিনে কাজী হুমায়ূন মারা গেছেন এবং মালিকানা পান তার বংশধর কাজী রকিব। ১৯৮৯ সালে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর রোজ গার্ডেনকে সংরক্ষিত ভবন ঘোষণা করলেও আইনি প্রক্রিয়ায় মালিকরা এর স্বত্ব ফিরে পান। সর্বশেষ মালিক লায়লা রকীব ও তার সন্তানদের কাছ থেকেই সরকার দলিল মূলে বাড়িটি কিনে নিয়েছিল। এখন সেই কেনাকাটার প্রক্রিয়াতেই বড় ধরনের দুর্নীতির ছায়া দেখছে দুদক।


৫ আগস্টের পর দ্বিতীয় উপদেষ্টা হিসেবে ভারতে খলিলুর, বৈঠকে গুরুত্ব পেল যেসব বিষয়

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৯ ২০:৩৯:০৩
৫ আগস্টের পর দ্বিতীয় উপদেষ্টা হিসেবে ভারতে খলিলুর, বৈঠকে গুরুত্ব পেল যেসব বিষয়
ছবিঃ সংগৃহীত

ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান এবং ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (১৯ নভেম্বর) দিল্লিতে অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশন এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। বৈঠকে দুই দেশের নিরাপত্তা উপদেষ্টা কলম্বো সিকিউরিটি কনক্লেভ (সিএসসি) এবং দ্বিপক্ষীয় স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। এই বৈঠকের সময়ই অজিত দোভালকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান ড. খলিলুর রহমান।

সপ্তম কলম্বো সিকিউরিটি কনক্লেভের এনএসএ বা জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা পর্যায়ের বৈঠকে যোগ দিতে ড. খলিলুর রহমানের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছে। এই সফরের অংশ হিসেবেই ভারতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের সঙ্গে তাদের সৌজন্য সাক্ষাৎ ও বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) এই সম্মেলনে যোগ দিতে ভারতের রাজধানীতে পৌঁছান খলিলুর রহমান। ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ সচিবালয়ের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা।

ঢাকা ও দিল্লির কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে, সিএসসির জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের সপ্তম সম্মেলনটি বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) দিল্লির হায়দ্রাবাদ হাউসে অনুষ্ঠিত হবে। সকালে জোটভুক্ত দেশগুলোর নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের নিয়ে এই সম্মেলন শুরু হবে এবং মধ্যাহ্নভোজের পর তা শেষ হবে। নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী, ওই দিন বিকেলেই ড. খলিলুর রহমানের ঢাকার উদ্দেশে দিল্লি ত্যাগ করার কথা রয়েছে।

কলম্বো সিকিউরিটি কনক্লেভ মূলত ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের একটি নিরাপত্তা জোট। ২০২০ সালে ভারত, শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপের মধ্যে সামুদ্রিক সহযোগিতার পরিধি বাড়ানোর লক্ষ্য নিয়ে এটি গঠিত হয়েছিল। পরে ২০২২ সালে মরিশাস এতে যুক্ত হয়। গত বছর মরিশাসে অনুষ্ঠিত অষ্টম বৈঠকে বাংলাদেশকেও এই জোটের পঞ্চম সদস্য হিসেবে স্বাগত জানানো হয়। এছাড়া সেশেলস এই জোটে পর্যবেক্ষক রাষ্ট্র হিসেবে অংশ নিয়ে থাকে।

উল্লেখ্য, গত বছরের ৫ আগস্ট বাংলাদেশে রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো উপদেষ্টার এটি দ্বিতীয় ভারত সফর। এর আগে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ইন্ডিয়া এনার্জি উইকে অংশ নিতে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান ভারত সফর করেছিলেন।


সারা দেশে মোবাইল ফোনের দোকান বন্ধের ঘোষণা

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৯ ১৪:৩২:১৭
সারা দেশে মোবাইল ফোনের দোকান বন্ধের ঘোষণা
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) এমবিসিবির সংবাদ সম্মেলন

স্মার্টফোন ও গ্যাজেট ব্যবসায়ীদের সংগঠন বিজনেস কমিউনিটি বাংলাদেশ (এমবিসিবি) সারা দেশে মোবাইল ফোনের দোকান বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে। বুধবার (১৯ নভেম্বর) রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের নেতারা এই সিদ্ধান্তের কথা জানান।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত বক্তারা জানান, সুমাশ টেকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) এবং সংগঠনের সেক্রেটারি আবু সাঈদ পিয়াসকে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) তুলে নিয়ে গেছে। মূলত এই ঘটনার প্রতিবাদ জানাতেই তারা দোকান বন্ধ রাখার মতো কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন।

ব্যবসায়ীরা কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, যদি আজকের মধ্যে অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি পিয়াসকে মুক্তি না দেওয়া হয়, তবে তারা সারা দেশে আরও কঠোর আন্দোলনে নামবেন। এমনকি তারা পরিস্থিতি সাপেক্ষে 'দেশ অচল' করে দেওয়ার হুমকিও দিয়েছেন সংবাদ সম্মেলন থেকে। নেতারা বলেন, সুমাশ টেকের প্রধান নির্বাহীকে আটকের প্রতিবাদে দেশজুড়ে সব মোবাইল ফোনের দোকান বন্ধ রাখা হবে।

অভিযোগ উঠেছে, মঙ্গলবার গভীর রাতে আবু সাঈদ পিয়াসকে ডিবি পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। পিয়াসের পরিবারের একজন সদস্য এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তার স্ত্রী সুমাইয়া চৌধুরী জানান, গতরাত আনুমানিক ৩টার দিকে মিরপুর-১ নম্বরের বাসা থেকে গোয়েন্দা পুলিশ তার স্বামীকে তুলে নিয়ে যায়। তিনি আরও জানান, এ সময় ডিবি সদস্যরা পিয়াসের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটিও জব্দ করে নিয়ে গেছে।

এমবিসিবির নেতারা দাবি করেছেন, তাদের সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকা পিয়াসকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে। অন্যথায় তারা তাদের অবস্থান আরও কঠোর করবেন। ডিআরইউতে আয়োজিত ওই সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ব্যবসায়ীরা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, এই ঘটনায় পুরো ব্যবসায়ী মহলে এক ধরনের আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। তারা সরকারের কাছে এই আটকের বিষয়ে একটি স্পষ্ট ব্যাখ্যা দাবি করেছেন।


যারা দেয়াল রাঙিয়েছে, তারাই ভোট দেবে, নির্বাচনের আগে ইউনূসের বার্তা

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৮ ২১:১৯:৪২
যারা দেয়াল রাঙিয়েছে, তারাই ভোট দেবে, নির্বাচনের আগে ইউনূসের বার্তা
ছবিঃ সংগৃহীত

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে তরুণ প্রজন্মের জন্য একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত হিসেবে বর্ণনা করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, বিগত স্বৈরাচারী শাসনামলে অনুষ্ঠিত তিনটি কারচুপির নির্বাচনে যারা ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছিল, সেই রেকর্ডসংখ্যক তরুণ এবার প্রথমবারের মতো তাদের ভোট দেওয়ার সুযোগ পাবে।

মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় নেদারল্যান্ডসের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বিষয়ক ভাইস মিনিস্টার প্যাস্কেল গ্রোটেনহুইস সৌজন্য সাক্ষাতে এলে ড. ইউনূস এসব কথা বলেন। প্রধান উপদেষ্টা উল্লেখ করেন, গণঅভ্যুত্থানের সময় ঢাকা এবং অন্যান্য শহরের দেয়াল যারা গ্রাফিতি ও চিত্রকর্মে রাঙিয়ে তুলেছিল, সেই তরুণরাই এবার ভোটকেন্দ্রে আসবে। তিনি ডাচ মন্ত্রীকে আশ্বস্ত করেন যে, তার সরকার ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথমার্ধেই একটি অবাধ, সুষ্ঠু, বিশ্বাসযোগ্য এবং উৎসবমুখর নির্বাচন আয়োজনে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।

বৈঠকে আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশ নিতে না পারার প্রেক্ষাপটও ব্যাখ্যা করেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি জানান, দল হিসেবে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং নির্বাচন কমিশন তাদের নিবন্ধন স্থগিত করেছে। মূলত এই আইনি বাধার কারণেই আওয়ামী লীগ আসন্ন সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না।

আলোচনার সময় দুই নেতা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে গুরুত্ব দেন। কৃষি, বাণিজ্য, বিনিয়োগ, প্রযুক্তি এবং যুব উন্নয়নসহ বিভিন্ন খাতে সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়ে তারা একমত পোষণ করেন। বিশেষ করে, যুব ও নারী উদ্যোক্তাদের সহায়তা করার জন্য একটি 'সোশ্যাল বিজনেস ফান্ড' তৈরির সম্ভাবনা নিয়েও তাদের মধ্যে আলোচনা হয়।

ডাচ ভাইস মিনিস্টার প্যাস্কেল গ্রোটেনহুইস বাংলাদেশের নির্বাচনী প্রস্তুতির প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার এত অল্প সময়ের মধ্যে ভোটের জন্য যেভাবে প্রস্তুত হয়েছে, তা সত্যিই প্রশংসনীয়। এছাড়া তিনি বাংলাদেশের নতুন শ্রম আইনেরও ভূয়সী প্রশংসা করেন। তার মতে, এই আইন নেদারল্যান্ডস ও ইউরোপীয় বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে সহায়ক হবে। ডাচ মন্ত্রী জানান, নেদারল্যান্ডস শিগগিরই বাংলাদেশের বিনিয়োগ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক সই করার পরিকল্পনা করছে।

প্যাস্কেল গ্রোটেনহুইস মন্তব্য করেন, গত ৫০ বছর ধরে বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডস উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে কাজ করেছে। এখন তারা এই সম্পর্ককে রাজনীতি, বাণিজ্য এবং বিনিয়োগের ক্ষেত্রে একটি সম-অংশীদারিত্বে রূপান্তর করতে চান। তিনি আরও যোগ করেন, যেসব ডাচ কোম্পানি দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ থেকে পণ্য কিনছে, তারা এখন সরাসরি এ দেশে বিনিয়োগ ও কাজ করতে আগ্রহী।


কাল থেকে প্রবাসী ভোটার নিবন্ধন? জেনে নিন কোন দেশে কখন সুযোগ

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৮ ২০:২১:১২
কাল থেকে প্রবাসী ভোটার নিবন্ধন? জেনে নিন কোন দেশে কখন সুযোগ
ছবিঃ সংগৃহীত

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রবাসী বাংলাদেশিরা যাতে সহজেই তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন, সেই লক্ষ্যে চালু করা হয়েছে ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ নামের একটি বিশেষ অ্যাপ। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন আনুষ্ঠানিকভাবে এই অ্যাপটির উদ্বোধন করেন। বাংলাদেশে এবারই প্রথমবারের মতো পোস্টাল ভোটের বা ডাকযোগে ভোট দেওয়ার এমন সুযোগ তৈরি করা হয়েছে। এই ব্যবস্থার মাধ্যমে অ্যাপে নিবন্ধনের পর ভোটারদের কাছে শুধুমাত্র প্রতীক সম্বলিত ব্যালট পেপার পাঠানো হবে।

অ্যাপে নিবন্ধিত ভোটাররা তাদের পছন্দের প্রতীকের পাশে টিক বা ক্রস চিহ্ন দিয়ে ভোট দিতে পারবেন। বিশেষ উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, এই ব্যালটে ‘না’ ভোটের অপশনও যুক্ত থাকছে। তবে, যেসব আসনে মাত্র একজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন, শুধুমাত্র সেসব আসনের ভোটাররাই এই ‘না’ ভোট দেওয়ার সুযোগ পাবেন। নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, আগামী ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা বাংলাদেশি ভোটাররা পর্যায়ক্রমে নিবন্ধনের সুযোগ পাবেন।

কমিশন বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের জন্য পাঁচ দিন করে নিবন্ধনের সময়সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছে। সময়সূচি অনুযায়ী, পূর্ব এশিয়া, দক্ষিণ আমেরিকা ও আফ্রিকা অঞ্চলের ৫২টি দেশের প্রবাসীরা ২৩ নভেম্বর পর্যন্ত নিবন্ধন করতে পারবেন। উত্তর আমেরিকার ১৪টি দেশ এবং ওশানিয়া অঞ্চলের দুটি দেশে বসবাসরত বাংলাদেশিরা ২৪ থেকে ২৮ নভেম্বরের মধ্যে নিবন্ধনের সুযোগ পাবেন। অন্যদিকে, ইউরোপের ৪২টি দেশের প্রবাসীদের নিবন্ধন করতে হবে ২৯ নভেম্বর থেকে ৩ ডিসেম্বরের মধ্যে। মধ্যপ্রাচ্যের সৌদি আরবে নিবন্ধন প্রক্রিয়া শুরু হবে ৪ ডিসেম্বর এবং তা চলবে ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ব্যালট পেপার যে খামে করে পাঠানো হবে, তার সঙ্গে একটি ঘোষণাপত্রও থাকবে। ভোটারকে ব্যালটে ভোট দেওয়ার পাশাপাশি ওই ঘোষণাপত্রেও স্বাক্ষর করতে হবে। ভোটার যে নিজেই ভোটটি দিয়েছেন, তা নিশ্চিত করতেই এই স্বাক্ষর প্রয়োজন। যদি কোনো ভোটার ভোট দেওয়ার পর ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর না করেই ব্যালট পেপার ফেরত পাঠান, তবে রিটার্নিং কর্মকর্তা সেই ভোটটি বাতিল বলে গণ্য করবেন।

শুধু প্রবাসী ভোটাররাই নন, এবার পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোট দিতে পারবেন নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা সরকারি চাকরিজীবীরা এবং দেশের ৭১টি কারাগারে থাকা বন্দি ও কয়েদিরাও। তাদের জন্যও নির্বাচন কমিশন আলাদা নিবন্ধন ব্যবস্থা চালু করবে।

নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব ও প্রবাসী ভোটার প্রকল্পের পরিচালক কে এম আলী নেওয়াজ বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন, মনোনয়নপত্র জমা, যাচাই-বাছাই ও প্রত্যাহারের পর যখন চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হবে, ঠিক তখনই প্রবাসী ভোটাররা অ্যাপের মাধ্যমে নিজ নিজ আসনের প্রার্থীদের তালিকা দেখতে পারবেন। ভোটাররা অ্যাপে তাদের নির্বাচনী এলাকার রাজনৈতিক দল বা পছন্দের প্রার্থীর প্রতীক দেখতে পাবেন। সেখানে থাকা ১১৯টি প্রতীকের মধ্যে তারা তাদের পছন্দের প্রতীকের পাশে টিক বা ক্রস চিহ্ন দেবেন।

প্রবাসী ভোটার প্রকল্পের টিম লিডার সালীম আহমাদ খান ভোটের প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানান, পছন্দের প্রতীকে ভোট দেওয়ার পর ভোটাররা সেই ব্যালটটি একটি ফিরতি খামে (রিটার্ন এনভেলপ) ভরে কাছাকাছি কোনো পোস্ট অফিসে জমা দেবেন। খামের ওপর আগে থেকেই ডাক মাসুল বা খরচ পরিশোধ করা থাকবে, ফলে এটি কোনো খরচ ছাড়াই সরাসরি বাংলাদেশে নির্দিষ্ট ঠিকানায় পৌঁছে যাবে।


আগের চিঠির জবাব আসেনি, দণ্ডিত হাসিনাকে ফেরাতে এবার কী করছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়?

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৮ ২০:১৩:৫০
আগের চিঠির জবাব আসেনি, দণ্ডিত হাসিনাকে ফেরাতে এবার কী করছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়?
ছবিঃ সংগৃহীত

২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে ভারত থেকে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন জানিয়েছেন, পলাতক এই দুই আসামিকে ফেরাতে ভারতের কাছে পাঠানোর জন্য আনুষ্ঠানিক চিঠি প্রস্তুত করা হচ্ছে। একটি কূটনৈতিক পত্র বা 'নোট ভার্বাল'-এর মাধ্যমে এই অনুরোধ জানানো হবে।

মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে কয়েকজন সাংবাদিকের সঙ্গে আলাপকালে উপদেষ্টা এই তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালকে ফেরত চেয়ে ভারতকে এখনো চিঠি পাঠানো হয়নি, তবে চিঠি তৈরির কাজ চলছে। আজকেই হয়তো এই চিঠি পাঠানো হতে পারে বলে তিনি ইঙ্গিত দেন।

চিঠি পাঠানোর প্রক্রিয়া সম্পর্কে উপদেষ্টা স্পষ্ট করেন যে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ট্রাইব্যুনালের দেওয়া রায়ের পুরো কপি পাঠাবে না। শুধুমাত্র নোট ভার্বালের মাধ্যমে রায়ের বিষয়টি ভারতকে অবগত করা হবে এবং সেই সূত্র ধরে শেখ হাসিনাকে হস্তান্তরের জন্য অনুরোধ জানানো হবে।

এর আগে গতকাল সোমবারও পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছিলেন। তখন তিনি জানিয়েছিলেন, দুই আসামিকে ফেরাতে সোমবার রাতে অথবা মঙ্গলবার সকালেই চিঠি পাঠানো হবে। তিনি উল্লেখ করেন, এর আগেও শেখ হাসিনাকে ফেরানোর জন্য ভারতকে চিঠি দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু তার কোনো জবাব পাওয়া যায়নি।

তবে উপদেষ্টার মতে, এখনকার পরিস্থিতি আগের চেয়ে ভিন্ন। কারণ, এখন আদালতের মাধ্যমে তাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট শাস্তি ঘোষণা করা হয়েছে। ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের অপরাধী প্রত্যর্পণ চুক্তি থাকার বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, সেই চুক্তির আওতাতেই তাকে ফেরত আনতে আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি দেওয়া হচ্ছে।


যাচাই-বাছাইয়ে অসংগতি, প্রথমবারের মতো বাতিল হলো জুলাই যোদ্ধাদের গেজেট

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৮ ১৮:৫৭:০৪
যাচাই-বাছাইয়ে অসংগতি, প্রথমবারের মতো বাতিল হলো জুলাই যোদ্ধাদের গেজেট
ছবিঃ সংগৃহীত

রংপুর বিভাগের ৫৩ জন ব্যক্তিকে ‘জুলাই যোদ্ধা’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হলেও নানা অভিযোগ ও অসংগতির কারণে তাদের সেই গেজেট বাতিল করেছে সরকার। সোমবার (১৭ নভেম্বর) মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের উপসচিব (গেজেট) হরিদাস ঠাকুরের স্বাক্ষরিত ওই আদেশে অবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করার কথা বলা হয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে, সরকার তার ক্ষমতাবলে এই ৫৩ জনের নাম বাতিল করেছে। এই সিদ্ধান্তের আইনি ভিত্তি হিসেবে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার ও জুলাই যোদ্ধাদের কল্যাণ ও পুনর্বাসন অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর ১১(৪) ধারা এবং ‘রুলস অব বিজনেস ১৯৯৬’-এর সংশ্লিষ্ট বিধিমালা উল্লেখ করা হয়েছে। মূলত তালিকা নিয়ে বিভিন্ন মহল থেকে অভিযোগ ওঠার পরই সরকার এই কঠোর পদক্ষেপ নিল।

কিছুদিন আগেই মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক ই আজম জানিয়েছিলেন যে, আগের গেজেটভুক্ত তালিকাগুলো পুনরায় যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। তিনি উল্লেখ করেছিলেন, বিভিন্ন স্থান থেকে এবং সংবাদমাধ্যমের খবরে জানা গেছে, তালিকায় এমন অনেকের নাম ঢুকেছে যারা জুলাই আন্দোলনে আহত হননি বা সশরীরে আন্দোলনে উপস্থিতই ছিলেন না। বিষয়টি নিয়ে সরকার যে চিন্তিত ছিল, এই বাতিলের সিদ্ধান্ত তারই প্রতিফলন।

এর আগেও গত ৩ আগস্ট শহীদদের তালিকা থেকে আটজনের নাম বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল মন্ত্রণালয়। তবে আহত বা ‘জুলাই যোদ্ধা’ ক্যাটাগরিতে গেজেট বাতিল করার ঘটনা এটিই প্রথম।

বর্তমানে সরকারি হিসাবে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদের সংখ্যা ৮৩৬ জন। অন্যদিকে আহতদের তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করা হয়েছে— ‘অতি গুরুতর আহত’, ‘গুরুতর আহত’ এবং ‘আহত’। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত তালিকায় থাকা আহত বা জুলাই যোদ্ধার সংখ্যা প্রায় ১৩ হাজার ৮০০ জন। সরকার জানিয়েছে, প্রকৃত আন্দোলনকারীদের স্বীকৃতি নিশ্চিত করতেই এই শুদ্ধি অভিযান বা যাচাই প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে।


১০ দিনের আল্টিমেটাম: হাসিনাপন্থি শিক্ষকদের নিয়ে ৪ ছাত্রসংসদের কঠোর ঘোষণা

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৮ ১৮:৫২:৩৩
১০ দিনের আল্টিমেটাম: হাসিনাপন্থি শিক্ষকদের নিয়ে ৪ ছাত্রসংসদের কঠোর ঘোষণা
ছবিঃ সংগৃহীত

মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে বিবৃতি দেওয়া শিক্ষকদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে দেশের প্রধান চারটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রসংসদ। তারা অবিলম্বে এই শিক্ষকদের চাকরিচ্যুত করার দাবি জানিয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ডাকসু), জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাকসু), রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাকসু) এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) যৌথভাবে এই দাবি উত্থাপন করেছে।

ডাকসুর জিএস এস এম ফরহাদ, জাকসুর জিএস মো. মাজহারুল ইসলাম, রাকসুর জিএস সালাহউদ্দিন আম্মার এবং চাকসুর জিএস সাঈদ বিন হাবিব স্বাক্ষরিত এক যৌথ বিবৃতিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনগুলোকে ১০ কার্যদিবসের আল্টিমেটাম দেওয়া হয়েছে। বিবৃতিতে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, এই সময়ের মধ্যে হাসিনাপন্থি শিক্ষকদের চাকরি থেকে অব্যাহতি না দিলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।

ছাত্রনেতারা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাম্প্রতিক রায়কে 'ন্যায়বিচারের যুগান্তকারী পদক্ষেপ' হিসেবে অভিহিত করেছেন। রায়ে ২০২৪ সালের জুলাই বিপ্লবে ড্রোন, হেলিকপ্টার ও প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করে ছাত্র-জনতার ওপর হত্যাযজ্ঞ চালানোর নির্দেশদাতা হিসেবে শেখ হাসিনাকে দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। ছাত্রসংসদগুলো মনে করে, এই রায় শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধার বহিঃপ্রকাশ।

এমন পরিস্থিতির মধ্যেই ‘বাংলাদেশ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল শিক্ষকবৃন্দ’ ব্যানারে একটি বিবৃতি প্রচার করা হয়, যেখানে শেখ হাসিনার পক্ষে অবস্থান নেওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ছাত্রনেতারা। তাদের ভাষ্যমতে, দেশের সর্বোচ্চ আদালত যেখানে শেখ হাসিনাকে মানবতাবিরোধী অপরাধী হিসেবে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে, সেখানে তার পক্ষে সাফাই গাওয়া আদালতের রায়ের প্রতি অবজ্ঞা এবং জুলাই বিপ্লবের শহীদ ও আহতদের প্রতি চরম অপমান।

বিবৃতিতে শিক্ষকদের ওই প্রচারণায় 'জালিয়াতি'র অভিযোগও আনা হয়েছে। ছাত্রনেতারা উল্লেখ করেন, শিক্ষকদের ওই বিবৃতিতে ১০০১ জনের স্বাক্ষর থাকার দাবি করা হলেও প্রকাশিত তালিকায় মাত্র ৬৫৯ জনের নাম পাওয়া গেছে। এছাড়া অনেক শিক্ষকের অজান্তেই তাদের নাম তালিকায় যুক্ত করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

এই পরিস্থিতিতে ছাত্রসংসদগুলো সংশ্লিষ্ট সব বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে দ্রুত তদন্ত করে দোষী শিক্ষকদের চিহ্নিত করার আহ্বান জানিয়েছে। একইসঙ্গে সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে, তারা যেন শেখ হাসিনার পক্ষে অবস্থান নেওয়া এসব শিক্ষকের সব ধরনের ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করেন এবং সামাজিকভাবে ও প্রাতিষ্ঠানিকভাবে তাদের প্রতিহত করেন।

পাঠকের মতামত:

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

রাষ্ট্রের ধারণাটি একসময় কেবল প্রশাসনিক ক্ষমতা, আইনের শাসন এবং নিরাপত্তা প্রদানের সঙ্গে সম্পর্কিত ছিল। কিন্তু আধুনিক বিশ্বে রাষ্ট্রের ভূমিকা এখন... বিস্তারিত