কানাডায় গাজা সংঘাতের পর ইসলামবিদ্বেষের পরিমাণ অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ০৭ ১১:৪৮:৫০
কানাডায় গাজা সংঘাতের পর ইসলামবিদ্বেষের পরিমাণ অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি
ছবি: সংগৃহীত

কানাডায় গাজা সংঘাতের পর ইসলামবিদ্বেষ ও ফিলিস্তিনবিরোধী অপরাধ বেড়েছে অস্বাভাবিক মাত্রায়। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে এই ধরনের অপরাধের হার প্রায় ১৮০০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানায় ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামোফোবিয়া রিসার্চ হাবের একটি গবেষণা। টিআরটি ওয়ার্ল্ডের প্রতিবেদন অনুসারে, গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান শুরু হওয়ার পর থেকে কানাডার বিভিন্ন প্রদেশে ইসলামোফোব্বিয়া এবং ফিলিস্তিনবিরোধী বিদ্বেষমূলক কার্যক্রম ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।

গবেষক নাদিয়া হাসান বলেন, ‘গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে কানাডায় ইসলামবিদ্বেষ, ফিলিস্তিনবিরোধী এবং আরব-বিরোধী বর্ণবাদ জীবনযাত্রার বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রবলভাবে বেড়েছে।’ এই গবেষণায় ১৬টি কানাডীয় সংগঠন, সরকারি রেকর্ড এবং সংবাদ মাধ্যমের তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়েছে। টরন্টো পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ২০ নভেম্বরের মধ্যে ইসলামোফোবিক ও ফিলিস্তিনবিরোধী অপরাধের সংখ্যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৬০০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

ন্যাশনাল কাউন্সিল অব কানাডিয়ান মুসলিমস (এনসিসিএম) জানায়, অক্টোবর মাসেই ইসলামবিদ্বেষ সংক্রান্ত অভিযোগ ১৩০০ শতাংশ বেড়েছে, যা সময়ের সাথে বৃদ্ধি পেয়ে ১৮০০ শতাংশে দাঁড়ায়। মুসলিম লিগ্যাল সাপোর্ট সেন্টার ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ২০২৪ সালের মার্চ পর্যন্ত ৪৭৪টি মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ পেয়েছে, যার মধ্যে ৩৪৫ জন অভিযোগকারী তাদের ফিলিস্তিনপন্থী অবস্থানের কারণে চাকরি হারিয়েছেন বা সাময়িক বরখাস্ত হয়েছেন। লিগ্যাল সেন্টার ফর প্যালেস্টাইন জানায়, এই আট মাসে ফিলিস্তিনবিরোধী বর্ণবাদের অভিযোগ ৬০০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

গবেষক নাদিয়া হাসান বলেন, ‘এই প্রতিবেদন কেবল প্রকৃত পরিস্থিতির একটি অংশ তুলে ধরেছে।’ তিনি জানান, সংগঠনগুলোর সঙ্গে সরাসরি সাক্ষাৎকার এবং সরবরাহকৃত তথ্যের পাশাপাশি সরকার ও গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে গবেষণাটি প্রস্তুত করা হয়েছে।

কানাডায় ইসলামোফোবিয়া মোকাবিলায় নিযুক্ত বিশেষ প্রতিনিধি আমিরা এলঘাওয়াবি বলেন, ‘ফিলিস্তিনিদের মানবাধিকার রক্ষায় কথা বলার কারণে লোকজন চাকরি হারাচ্ছে, ভবিষ্যত ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে—এ পরিস্থিতি এখনই গুরুত্ব দিয়ে মোকাবিলা করতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘৯/১১-পরবর্তী সময়ের পুরনো অপপ্রচার আজ কট্টর ডানপন্থিদের মাধ্যমে পুনরায় মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে, যা মুসলিম, ফিলিস্তিনি ও আরব-কানাডিয়ানদের বিরুদ্ধে ঘৃণার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।’

/আশিক

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ