প্রতিদিন কর্মদক্ষতা বাড়ানোর ৭ সহজ টিপস

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ০৪ ১৩:৩৩:২৬
প্রতিদিন কর্মদক্ষতা বাড়ানোর ৭ সহজ টিপস
ছবিঃ সংগৃহীত

প্রতিদিন আরও উৎপাদনশীল হতে চান? তাহলে কিছু সহজ কিন্তু কার্যকর উপায় মেনে চলাই যথেষ্ট। আধুনিক জীবনযাত্রার ব্যস্ততায় কাজের চাপ বেড়ে যাওয়ায় সময় ব্যবস্থাপনা যেমন জরুরি, তেমনি শক্তি ব্যবস্থাপনাও অনস্বীকার্য। সম্প্রতি প্রকাশিত বিভিন্ন মনোবিজ্ঞান ও কর্মদক্ষতা গবেষণায় উঠে এসেছে, কিভাবে দৈনন্দিন জীবনে কিছু সুনির্দিষ্ট অভ্যাস অনুসরণ করলে আপনি আপনার কাজের গতি ও মান দুইই উন্নত করতে পারবেন।

প্রথমত, সময় নয়, আপনার শক্তি নিয়ন্ত্রণ করুন। সকাল, দুপুর ও সন্ধ্যার বিভিন্ন সময়ে আপনার শারীরিক ও মানসিক শক্তি কতটা থাকে তা খেয়াল করুন। উদাহরণস্বরূপ, সকালের সময় বেশিরভাগ মানুষের মস্তিষ্ক সতেজ থাকে, তাই সৃজনশীল কাজ বা জটিল চিন্তা-ভাবনার কাজ সেই সময়ে করা সবচেয়ে উপযোগী। অপরদিকে, দুপুরের পর মানসিক শক্তি কিছুটা কমে যেতে পারে, তখন তুলনামূলক সহজ বা রুটিন কাজ করার পরিকল্পনা করুন।

দ্বিতীয়ত, প্রতিদিনের কাজের তালিকা আগের রাতেই তৈরি করুন। রাতে মাত্র কয়েক মিনিট সময় নিয়ে পরের দিনের অগ্রাধিকার বিষয়গুলো নির্ধারণ করুন। এটি আপনার মনকে প্রস্তুত করে রাখবে এবং সকাল থেকে কাজের গতি বাড়াতে সাহায্য করবে। যেমন একটি গবেষণায় দেখা গেছে, রাতের প্রস্তুতি পরবর্তী দিনের সময় সাশ্রয়ে ব্যাপক ভূমিকা রাখে, যেখানে মাত্র ১০ মিনিটের প্রস্তুতি কয়েক ঘণ্টার মূল্যবান সময় বাঁচায়।

তৃতীয়ত, সকাল বেলা ইমেইল চেক করার অভ্যাস ত্যাগ করুন। গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, সকালবেলা প্রয়োজনীয় ও গুরুত্বপূর্ণ কাজ করার সময়, ইমেইল বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম দেখে সময় নষ্ট করলে কাজের উৎপাদনশীলতা কমে যায়। সত্যিকারের জরুরি মেসেজ যেমন পারিবারিক দুর্ঘটনা, সেগুলো দুপোর পরেও আসতে পারে। তাই দিনের প্রথম কয়েক ঘণ্টা শুধু গুরুত্বপূর্ণ কাজেই মনোযোগ দিন।

চতুর্থত, মোবাইল ফোন বন্ধ করে দূরে রেখে দিন। অনেক সময় মোবাইল ফোন আমাদের মনোযোগ ছিনিয়ে নেয়, যা একাধিক কাজ করার সময় বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে। ফোনের থেকে দূরে থাকলে আপনি পুরোপুরি কাজের প্রতি মনোযোগী হতে পারবেন এবং অর্ধেক কাজের ফাঁকি দেওয়া থেকে বাঁচতে পারবেন।

পঞ্চমত, কাজের পরিবেশ ঠান্ডা রাখুন। গরম পরিবেশে শরীর ও মন দ্রুত ক্লান্ত হয়ে যায় এবং ঘুমিয়ে পড়ার মতো অনুভূতি হতে পারে। শীতল পরিবেশে মস্তিষ্ক সতেজ থাকে এবং মনোযোগ বৃদ্ধি পায়। তাই সম্ভব হলে অফিস বা কর্মক্ষেত্রে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করুন বা শীতল স্থানে কাজ করুন।

ষষ্ঠত, কাজ করার সময় সোজা বসুন বা দাঁড়িয়ে কাজ করুন। বোঁটো বসার ফলে বুক সঙ্কুচিত হয় এবং ফুসফুসে পর্যাপ্ত অক্সিজেন প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়। ঠিক করে বসলে বা দাঁড়িয়ে কাজ করলে শ্বাস-প্রশ্বাস ভালো হয়, ফলে মস্তিষ্কে পর্যাপ্ত অক্সিজেন সরবরাহ হয় এবং মনোযোগ বাড়ে।

সপ্তমত, প্রতিদিন একটি ‘প্রি-গেম রুটিন’ তৈরি করুন। যেমন কেউ সকালে ঠাণ্ডা পানি পান দিয়ে দিন শুরু করেন, কেউ বা ধ্যান অনুশীলন করেন। এই ছোট ছোট রুটিন মস্তিষ্ককে সংকেত দেয় কাজের জন্য প্রস্তুত হতে। এর ফলে অনুপ্রেরণার অভাব থাকা সত্ত্বেও কাজ শুরু করা সহজ হয়।

এই সাতটি সহজ কিন্তু কার্যকরী ধাপ মেনে চললে দৈনন্দিন জীবনে আপনার কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি পাবে এবং আপনি আরও উৎপাদনশীল হয়ে উঠবেন। গুরুত্বপূর্ণ হলো একসাথে সব কিছু করার চেষ্টা না করে একটি একটি করে অভ্যাস গড়ে তোলা এবং তা টেকসই করা। এই পথেই রয়েছে স্থায়ী সাফল্যের চাবিকাঠি।


থামবে বয়সের চাকা: বৃদ্ধ কোষকে তারুণ্য দেবে ‘জাদুকরী ফুল’

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৯ ১১:৪৬:২৬
থামবে বয়সের চাকা: বৃদ্ধ কোষকে তারুণ্য দেবে ‘জাদুকরী ফুল’
ছবি : সংগৃহীত

মানুষের চিরকালীন স্বপ্ন বার্ধক্যকে ঠেকিয়ে রাখা বা তারুণ্য ধরে রাখা নিয়ে বিজ্ঞানীদের গবেষণার শেষ নেই। এবার টেক্সাসের একদল গবেষক দাবি করেছেন, তারা বার্ধক্য প্রক্রিয়াকে ধীর করার এবং বয়সের ছাপ মুছে ফেলার এক অভিনব উপায় খুঁজে পেয়েছেন। তাদের উদ্ভাবিত এই পদ্ধতিতে দুর্বল ও বয়স্ক মানবকোষকে পুনরুজ্জীবিত করা সম্ভব হবে, যা চিকিৎসা বিজ্ঞানে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে। গবেষকরা মূলত কোষের শক্তি উৎপাদনকারী অংশ বা ‘পাওয়ার হাউস’ খ্যাত মাইটোকন্ড্রিয়াকে পুনরায় সক্রিয় করার প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছেন। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানবদেহে মাইটোকন্ড্রিয়ার সংখ্যা ও কার্যক্ষমতা কমতে থাকে, যার ফলে হৃদরোগ, স্নায়ুজনিত সমস্যা এবং পেশির দুর্বলতাসহ নানা বার্ধক্যজনিত রোগ দেখা দেয়।

এই সমস্যার সমাধানে বিজ্ঞানীরা মলিবডেনাম ডাইসালফাইড দিয়ে ফুলের মতো আকৃতির এক বিশেষ ধরনের অতিক্ষুদ্র কণা তৈরি করেছেন, যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘ন্যানোফ্লাওয়ার’। স্পঞ্জ জাতীয় ছিদ্রযুক্ত এই কণাগুলো কোষের জন্য ক্ষতিকর অক্সিজেন অণু বা রিয়্যাক্টিভ অক্সিজেন স্পিসিস শুষে নিতে সক্ষম। একই সঙ্গে এটি কোষের নির্দিষ্ট কিছু জিনকে সক্রিয় করে যা নতুন মাইটোকন্ড্রিয়া তৈরিতে সহায়তা করে। গবেষণার অন্যতম গবেষক ও বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার অখিলেশ গাহারওয়ার জানিয়েছেন, তারা সুস্থ কোষগুলোকে এমনভাবে প্রশিক্ষণ দিয়েছেন যাতে সেগুলো দুর্বল বা ক্ষতিগ্রস্ত কোষের সঙ্গে নিজেদের মাইটোকন্ড্রিয়া ভাগ করে নিতে পারে। কোনো ধরনের জেনেটিক পরিবর্তন বা ওষুধের ব্যবহার ছাড়াই এই পদ্ধতিতে বৃদ্ধ কোষকে সজীব করে তোলা সম্ভব।

গবেষণায় দেখা গেছে, সাধারণত স্টেম সেল প্রাকৃতিকভাবেই প্রতিবেশী কোষে মাইটোকন্ড্রিয়া শেয়ার করে, তবে ন্যানোফ্লাওয়ার ব্যবহারের ফলে এই শেয়ারিংয়ের হার প্রায় দ্বিগুণ বেড়ে যায়। এর ফলাফলও বেশ চমকপ্রদ। স্মুথ মাংসপেশির কোষে শক্তি পুনরুদ্ধারের হার তিন থেকে চার গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং কেমোথেরাপিতে ক্ষতিগ্রস্ত হৃদপেশির কোষগুলোর বেঁচে থাকার হারও উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। জেনেটিসিস্ট জন সুকার এই প্রযুক্তিকে অত্যন্ত সম্ভাবনাময় হিসেবে উল্লেখ করে বলেছেন, এটি বার্ধক্যজনিত দুর্বলতা, হৃদরোগ ও পেশির অবক্ষয় রোধে চিকিৎসার ক্ষেত্রে এক নতুন যুগের সূচনা করতে পারে এবং ভবিষ্যতে আরও নতুন আবিষ্কারের পথ দেখাবে।


টাকার চিন্তায় ঘুম নেই জেন-Z প্রজন্মের: গবেষণায় চমকপ্রদ তথ্য

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৮ ২১:২৫:৫৬
টাকার চিন্তায় ঘুম নেই জেন-Z প্রজন্মের: গবেষণায় চমকপ্রদ তথ্য
ছবি : সংগৃহীত

নতুন এক গবেষণায় উঠে এসেছে উদ্বেগজনক তথ্য, যেখানে দেখা গেছে আর্থিক দুশ্চিন্তার কারণে বর্তমান সময়ের জেন-জি প্রজন্মের বড় একটি অংশ রাতের ঘুম হারিয়ে ফেলছে। ফর্চুনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী জেন-জি প্রাপ্তবয়স্কদের প্রতি ৭ জনের মধ্যে ৫ জনই নিয়মিত অর্থনৈতিক চাপের কারণে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন। ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতি, আকাশচুম্বী বাসা ভাড়া এবং চাকরির বাজারের অনিশ্চয়তা—মূলত এই তিনটি বিষয়ই তরুণ প্রজন্মের এই উদ্বেগের প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।

এনডিটিভির তথ্যানুযায়ী, অ্যামেরিস্লিপ পরিচালিত এক জরিপে এক হাজারেরও বেশি মার্কিন নাগরিক অংশগ্রহণ করেন। জরিপের ফলাফলে দেখা যায়, জেন-জি প্রজন্মের ৬৯ শতাংশ তরুণ-তরুণী তাদের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ আর্থিক অবস্থার কথা ভাবতে গিয়েই রাত জেগে কাটাচ্ছেন। এছাড়া ৪৭ শতাংশ তরুণ-তরুণী চাকরির নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন, যা অন্য যেকোনো প্রজন্মের তুলনায় অনেক বেশি। গবেষকরা বলছেন, এই অতিরিক্ত মানসিক চাপ তাদের দৈনন্দিন জীবনযাপন এবং সামগ্রিক সুস্থতার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

আর্থিক চাপে ভেঙে পড়লেও এই প্রজন্মের অনেকেই সমস্যা সমাধানের জন্য সুনির্দিষ্ট আর্থিক পরিকল্পনা করার পরিবর্তে বাস্তবতা এড়িয়ে চলার পথ বেছে নিচ্ছেন। ঘুমানোর আগে দীর্ঘক্ষণ মোবাইলে স্ক্রল করা, সিরিজ দেখে সময় কাটানো বা অনুরূপ অভ্যাসে তারা ভরসা করছেন। তবে গবেষকরা সতর্ক করে বলছেন, এই ধরনের আচরণ বা ‘ডুম স্ক্রলিং’ তাদের দুশ্চিন্তা কমানোর বদলে পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে এবং দীর্ঘমেয়াদে তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের চরম অবনতি ঘটাচ্ছে।


ফ্রিজে রাখলে বিষ হতে পারে যেসব খাবার: সতর্ক থাকুন

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৮ ১১:৫৪:৩০
ফ্রিজে রাখলে বিষ হতে পারে যেসব খাবার: সতর্ক থাকুন
ছবি : সংগৃহীত

আধুনিক জীবনে ফ্রিজ আমাদের রান্নাঘরের অন্যতম ভরসার হাতিয়ার। খাবারকে টাটকা রাখা, পচন রোধ করা এবং সময় বাঁচানোর জন্য এর জুড়ি মেলা ভার। তবে অনেকেই না জেনে হাতের কাছে যা পান, তাই ফ্রিজে রেখে দেন। কিন্তু পুষ্টিবিদরা বলছেন, সব খাবার ফ্রিজের ঠান্ডা পরিবেশে ভালো থাকে না। বরং কিছু খাবার ফ্রিজে রাখলে স্বাদ, গন্ধ ও পুষ্টিগুণ হারায় এবং কখনো কখনো তা স্বাস্থ্যঝুঁকিও তৈরি করতে পারে। তাই কোন খাবারটি ফ্রিজে রাখা যাবে আর কোনটি যাবে না, তা জানা অত্যন্ত জরুরি।

সবজি সংরক্ষণের ক্ষেত্রে অনেকেই ভুল করে আলু ও পেঁয়াজ ফ্রিজে রেখে দেন। কিন্তু ঠান্ডায় আলুর শর্করা চিনিতে পরিণত হয়, যা রান্নার সময় আলুর স্বাদ নষ্ট করে দেয়। তাই আলু সবসময় শুষ্ক ও হালকা ঠান্ডা জায়গায় রাখা উচিত। একইভাবে পেঁয়াজ ফ্রিজে না রেখে বাতাস চলাচলকারী উষ্ণ স্থানে আলাদাভাবে সংরক্ষণ করা শ্রেয়। এমনকি আলু ও পেঁয়াজ কখনোই পাশাপাশি রাখা উচিত নয়। রসুনের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম প্রযোজ্য; ফ্রিজের আর্দ্রতায় রসুনে দ্রুত ছত্রাক জন্মাতে পারে, তাই এটিও শুকনো ও উষ্ণ স্থানে রাখা ভালো। এছাড়া কুমড়া ফ্রিজে রাখলে ঠান্ডায় নরম হয়ে যায়, তাই এটিও শুষ্ক স্থানে রাখা উচিত।

ফলের ক্ষেত্রেও কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন। যেমন, পাকা কলা ফ্রিজে রাখলে দ্রুত খোসা কালচে হয়ে যায়, তাই এটি ঘরের তাপমাত্রায় রাখাই উত্তম। তরমুজ না কাটা পর্যন্ত ফ্রিজে রাখা ঠিক নয়, কারণ ঘরের তাপমাত্রায় এটি অনেক দিন ভালো থাকে। তবে কেটে ফেলার পর অল্প সময়ের জন্য ফ্রিজে রাখা যেতে পারে। টমেটো ফ্রিজে রাখলে এর ভেতরের টেক্সচার বা গঠন নষ্ট হয়ে যায় এবং স্বাদ কমে যায়। তাই টমেটো সবসময় উষ্ণ স্থানে রাখা উচিত। এছাড়া অ্যাভোকাডো পাকা না হওয়া পর্যন্ত এবং খুবানি, কিউই, পিচ বা আমের মতো ফলগুলোর আসল টেক্সচার ধরে রাখতে এগুলোকে ফ্রিজের বাইরে ঘরের তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করা উচিত।

দৈনন্দিন ব্যবহারের আরও কিছু উপাদান যেমন মধু, পাউরুটি, কফি এবং বিভিন্ন ধরনের তেল ফ্রিজে রাখা একদমই উচিত নয়। মধু ফ্রিজে রাখলে এটি স্ফটিক বা দানা বেঁধে শক্ত হয়ে যায়, যা পরে ব্যবহার করা কঠিন হয়। পাউরুটি ফ্রিজে রাখলে দ্রুত শক্ত ও বাসি হয়ে খাওয়ার অনুপযুক্ত হয়ে পড়ে। কফি ফ্রিজে রাখলে এর চমৎকার সুবাস নষ্ট হয়ে যায় এবং অন্য খাবারের গন্ধ শোষণ করে নেয়। অলিভ অয়েল বা অন্যান্য তেল ফ্রিজে রাখলে তা জমে ঘোলাটে হয়ে যায় এবং গুণাগুণ হারায়। এছাড়া পিনাট বাটার বা চিনাবাদাম মাখন ফ্রিজে রাখলে এতটাই শক্ত হয়ে যায় যে তা পাউরুটিতে মাখানো কঠিন হয়ে পড়ে।

সস ও আচারের মতো খাবারগুলোতে সাধারণত ভিনেগার বা প্রিজারভেটিভ থাকে, তাই এগুলো ফ্রিজে রাখার প্রয়োজন হয় না। হট সস বা ঝাল সস এবং আচার ঘরের তাপমাত্রায় দীর্ঘদিন ভালো থাকে, ফ্রিজে রাখলে এগুলোর ঝাঁজ ও স্বাদ কমে যেতে পারে। সয়াসসও ফ্রিজে রাখলে তার নিজস্ব ঘ্রাণ হারায়। তুলসি পাতা ফ্রিজে রাখলে কালো দাগ পড়ে যায় এবং গন্ধ নষ্ট হয়, তাই এটি সামান্য পানিতে ছায়াযুক্ত স্থানে রাখা ভালো। ডিম ফ্রিজে রাখলে অনেক দিন ভালো থাকে ঠিকই, তবে স্বাদ অটুট রাখতে অনেকেই এটি ঘরের তাপমাত্রায় রাখার পরামর্শ দেন। মূলত সব খাবার ফ্রিজে রাখলেই ভালো থাকে না, খাবারের ধরন অনুযায়ী সঠিক সংরক্ষণ পদ্ধতি জানলেই কেবল খাবারের আসল স্বাদ ও পুষ্টি বজায় রাখা সম্ভব।


শীতে দিনে কত লিটার পানি পান করা জরুরি? জেনে নিন

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৮ ১১:৪৭:৫১
শীতে দিনে কত লিটার পানি পান করা জরুরি? জেনে নিন
ছবি : সংগৃহীত

শীতের ঠান্ডা আবহাওয়ায় ঘাম কম হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই মানুষের তৃষ্ণা কমে যায়। এই সুযোগে অজান্তেই অনেকের পানি পানের পরিমাণ কমে আসে। অধিকাংশ মানুষ মনে করেন, শীতে শরীরের পানির চাহিদা কম থাকে। কিন্তু বাস্তবতা ঠিক উল্টো, শীতকালেও শরীরকে সুস্থ ও সচল রাখতে পর্যাপ্ত পানি পান করা গ্রীষ্মকালের মতোই জরুরি। চিকিৎসকরা সতর্ক করে বলছেন, তৃষ্ণা না পাওয়া মানেই শরীরের পানির প্রয়োজন কমে যাওয়া নয়। হজম প্রক্রিয়া সচল রাখা, রক্ত সঞ্চালন, শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ এবং শরীর থেকে বর্জ্য বের করে দেওয়ার মতো অভ্যন্তরীণ কাজগুলোর জন্য পানির কোনো বিকল্প নেই।

শীতকালে পানি কম খাওয়ার ফলে শরীরে নানা ধরনের জটিলতা দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে এই সময়ে মানুষ সাধারণত ভারী ও তেল-মসলাযুক্ত খাবার বেশি গ্রহণ করে, যা হজমের জন্য প্রচুর পানির প্রয়োজন হয়। পর্যাপ্ত পানি না পেলে গ্যাস, অ্যাসিডিটি, অম্বল ও কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যা বেড়ে যায়। এছাড়া শীতের শুষ্ক বাতাসে ত্বক এমনিতেই আর্দ্রতা হারায়। এর মধ্যে পানি কম খেলে ত্বক আরও খসখসে হয়ে পড়ে, ঠোঁট ফেটে যায় এবং চুলের সতেজতা নষ্ট হয়ে যায়। পাশাপাশি পানিশূন্যতার কারণে রক্ত সঞ্চালন ধীর হয়ে যাওয়ায় শরীরে দ্রুত ক্লান্তি ভর করে এবং কাজের প্রতি মনোযোগ কমে আসে। অনেক সময় দীর্ঘমেয়াদি পানিশূন্যতা কিডনির ওপরও চাপ সৃষ্টি করতে পারে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের দিনে কমপক্ষে ২ থেকে ২.৫ লিটার পানি পান করা প্রয়োজন। তবে ব্যক্তির ওজন এবং শারীরিক পরিশ্রমের ওপর ভিত্তি করে এই পরিমাণ কিছুটা কম-বেশি হতে পারে। তৃষ্ণা না পেলেও নিয়ম করে পানি পানের অভ্যাস গড়ে তোলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। শীতের সকালে ঘুম থেকে উঠে এক গ্লাস কুসুম গরম পানি পান করলে তা শরীরের জন্য টনিকের মতো কাজ করে। এছাড়া সারাদিন অল্প অল্প করে পানি পান করা, চা-কফির পাশাপাশি সাধারণ পানি খাওয়া এবং খাদ্যতালিকায় স্যুপ, কমলা বা পেয়ারার মতো রসালো ফল রাখার মাধ্যমে পানির ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব। প্রস্রাবের রং গাঢ় হয়ে যাওয়া শরীরে পানির অভাবের অন্যতম লক্ষণ, তাই শীত বা গ্রীষ্ম সব ঋতুতেই সুস্থতার চাবিকাঠি হলো পর্যাপ্ত পানি পান করা।


জাপানিদের মতো সুন্দর ত্বক চান? ব্যবহার করুন চালের পানি

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৮ ১০:১০:৩৬
জাপানিদের মতো সুন্দর ত্বক চান? ব্যবহার করুন চালের পানি
ছবি : সংগৃহীত

চালের পানি বা ভাতের মাড়কে অনেকেই ফেলনা মনে করেন। কিন্তু প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক অমূল্য উপাদান হিসেবে এটি বিশ্বজুড়ে সমাদৃত। ত্বককে উজ্জ্বল, মসৃণ এবং সতেজ রাখতে এর জুড়ি মেলা ভার। প্রাচীন জাপানে নারীদের রূপচর্চায় এটি প্রথাগতভাবে ব্যবহৃত হতো এবং আজও এশিয়া জুড়ে এর জনপ্রিয়তা তুঙ্গে। মূলত ভাত সেদ্ধ করার পর যে পানিটুকু অবশিষ্ট থাকে, সেটিই সৌন্দর্যের উৎস। এতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যামিনো অ্যাসিড এবং ভিটামিন বি, সি ও ই থাকে। এই উপাদানগুলো নিয়মিত ব্যবহারে ত্বকের টেক্সচার ও স্বাস্থ্যের ওপর আশ্চর্যজনক প্রভাব পড়ে।

রাতে ঘুমানোর আগে চালের পানি মুখে লাগিয়ে রেখে সকালে ধুয়ে ফেললে ত্বকের ইলাস্টিসিটি বা স্থিতিস্থাপকতা বাড়ে। এটি ব্রণ ও পিম্পল শুকাতে সাহায্য করার পাশাপাশি ত্বকের রঙ ও টেক্সচার উন্নত করে। ফলে ত্বক থাকে কোমল ও মসৃণ। এর কার্যকারিতা আরও বাড়াতে চাইলে চালের পানির সঙ্গে অ্যালোভেরা জেল মিশিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে, যা ত্বকে বাড়তি পুষ্টি জোগায়।

যাদের ত্বক তৈলাক্ত, তাদের জন্য চালের পানি আশীর্বাদস্বরূপ। এটি ত্বকের অতিরিক্ত তেল শোষণ করে এবং লোমকূপের মুখ বা রন্ধ্র বন্ধ রাখতে সহায়তা করে, যা ব্রণের ঝুঁকি কমায়। এতে থাকা ভিটামিন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকে প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা এনে দেয়। প্রতিদিন টোনার হিসেবে অথবা ফেস মাস্কের সঙ্গে মিশিয়ে ব্যবহার করলে ত্বক আরও স্বাস্থ্যকর ও তেলমুক্ত থাকে।

অন্যদিকে শুষ্ক ত্বকের ক্ষেত্রেও চালের পানি সমানভাবে কার্যকর। এটি ত্বককে গভীর থেকে ময়েশ্চারাইজ করে এবং প্রয়োজনীয় পুষ্টি জোগায়। ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখার পাশাপাশি এটি চুলকানি ও জ্বালাপোড়া কমাতে সাহায্য করে। গরম বা শীত—যে কোনো আবহাওয়ায় ত্বক শান্ত রাখতে এবং ত্বকের সুরক্ষা স্তর বা ব্যারিয়ার ঠিক রাখতে চালের পানি অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা পালন করে।


পারফিউমের গন্ধ সারাদিন ধরে রাখার জাদুকরী কৌশল

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৭ ২০:৫৬:৪৪
পারফিউমের গন্ধ সারাদিন ধরে রাখার জাদুকরী কৌশল
ছবি : সংগৃহীত

সুগন্ধি বা পারফিউম কেবল শরীরের দুর্গন্ধ ঢাকার জন্য নয়, এটি একজন ব্যক্তির ব্যক্তিত্ব, রুচি এবং উপস্থিতির জানান দেয়। কিন্তু অনেকেই না জেনে ভুলভাবে পারফিউম ব্যবহার করেন, যার ফলে দামি সুগন্ধিও তার আসল রূপ প্রকাশ করতে পারে না এবং দ্রুত মিলিয়ে যায়।

বেশির ভাগ মানুষ পারফিউম স্প্রে করার পর দুই হাতের কব্জি একে অপরের সঙ্গে ঘষে নেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি সুগন্ধি ব্যবহারের সবচেয়ে বড় ভুল। এই ঘর্ষণের ফলে ত্বকে তাপ উৎপন্ন হয় এবং প্রাকৃতিক এনজাইম তৈরি হয়, যা পারফিউমের মূল ঘ্রাণ বদলে দেয়।

তাই কব্জি বা ত্বকে স্প্রে করার পর তা ঘষাঘষি না করে প্রাকৃতিকভাবে শুকাতে দেওয়া উচিত। এতে সুগন্ধির গন্ধ ধীরে ধীরে প্রকাশ পায় এবং এর স্থায়িত্ব বাড়ে।

সুগন্ধি ব্যবহারের ক্ষেত্রে শরীরের সঠিক স্থান নির্বাচন করা অত্যন্ত জরুরি। শরীরের যেসব জায়গায় নাড়ির স্পন্দন বা পালস রেট বেশি, সেখানেই পারফিউম সবচেয়ে ভালো কাজ করে। ঘাড়ের পাশ, কব্জি, কানের পেছন এবং বক্ষবিভাজিকার মতো উষ্ণ স্থানগুলো থেকে সুগন্ধ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।

বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন, শরীর থেকে অন্তত ৫ ইঞ্চি দূর থেকে পালস পয়েন্টগুলোতে দুই-তিনবার স্প্রে করলেই যথেষ্ট। এছাড়া চুলেও সামান্য স্প্রে করে নেওয়া যেতে পারে।

শুষ্ক ত্বকে পারফিউম ব্যবহার করলে গন্ধ খুব দ্রুত হারিয়ে যায়। ত্বক আর্দ্র না থাকলে সুগন্ধি ধরে রাখার মতো কোনো স্তর তৈরি হয় না। তাই পারফিউম ব্যবহারের আগে ত্বকে সামান্য ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নেওয়া ভালো।

বিশেষ করে গোসলের পর যখন ত্বক পরিষ্কার এবং হালকা ভেজা থাকে, তখন পারফিউম ব্যবহার করলে তা দীর্ঘক্ষণ স্থায়ী হয়। তবে মনে রাখা জরুরি, একই সুগন্ধি সবার শরীরে একরকম ঘ্রাণ ছড়ায় না। শরীরের নিজস্ব রাসায়নিক বৈশিষ্ট্যের ওপর ভিত্তি করে পারফিউমের গন্ধ বদলে যেতে পারে।

অনেকের ধারণা, বেশি স্প্রে করলে হয়তো গন্ধ বেশি হবে। এই ধারণাটি ভুল। অতিরিক্ত সুগন্ধি অনেক সময় আশেপাশের মানুষের বিরক্তি ও অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাই পরিমিত ব্যবহারই কাম্য; সাধারণত ২-৩টি স্প্রেই সারাদিনের জন্য যথেষ্ট হতে পারে।


চুল পড়া বন্ধের ৬টি সহজ ও কার্যকরী ঘরোয়া উপায়

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৭ ২০:৫১:০১
চুল পড়া বন্ধের ৬টি সহজ ও কার্যকরী ঘরোয়া উপায়
ছবি : সংগৃহীত

বর্তমান সময়ে চুল পড়া নারী ও পুরুষ উভয়ের জন্যই একটি সাধারণ কিন্তু উদ্বেগজনক সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। মানসিক চাপ, অপুষ্টি, হরমোনের পরিবর্তন কিংবা অতিরিক্ত কেমিক্যালযুক্ত পণ্যের ব্যবহার—নানা কারণে অকালে ঝরে যাচ্ছে চুল।

তবে হতাশ হওয়ার কিছু নেই। হাতের কাছে থাকা কিছু সাধারণ ঘরোয়া উপাদান নিয়মিত ব্যবহার করলে এই সমস্যা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব। এর মধ্যে অন্যতম কার্যকর উপাদান হলো পেঁয়াজের রস।

পেঁয়াজের রসে প্রচুর পরিমাণে সালফার থাকে, যা মাথার ত্বকের রক্ত সঞ্চালন বাড়াতে সাহায্য করে। এটি নতুন চুল গজাতেও বেশ কার্যকর। সপ্তাহে ২-৩ দিন পেঁয়াজের রস মাথায় লাগিয়ে ৩০ মিনিট পর ধুয়ে ফেললে ভালো ফল পাওয়া যায়।

চুলের গভীর থেকে পুষ্টি জোগাতে নারকেল তেলের জুড়ি নেই। এর সঙ্গে লেবুর রস মিশিয়ে ব্যবহার করলে খুশকি দূর হয়। ২ টেবিল চামচ নারকেল তেলের সঙ্গে ১ চা চামচ লেবুর রস মিশিয়ে ম্যাসাজ করলে চুল সতেজ থাকে।

চুল পড়া বন্ধে মেথি বীজের ব্যবহার বহু পুরোনো। এতে থাকা প্রোটিন ও নিকোটিনিক অ্যাসিড চুলকে মজবুত করে। সারা রাত ভিজিয়ে রাখা মেথি সকালে বেটে মাথায় লাগালে চুল পড়া কমে।

মাথার ত্বক ঠান্ডা রাখতে এবং চুল মজবুত করতে অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করা যেতে পারে। এটি সরাসরি স্ক্যাল্পে লাগিয়ে ৩০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলতে হয়।

এছাড়া আমলকীতে থাকা ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট চুল ঘন করতে সহায়তা করে। শুকনো আমলকীর গুঁড়া নারকেল তেলের সঙ্গে মিশিয়ে গরম করে চুলে লাগালে উপকার পাওয়া যায়।

চুলকে ভেতর থেকে পুষ্টি দিতে ডিম ও অলিভ অয়েলের হেয়ার মাস্ক দারুণ কাজ করে। ডিমে থাকা প্রোটিন ও বায়োটিন চুলের স্বাস্থ্য ফেরাতে সাহায্য করে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধু বাহ্যিক যত্নই যথেষ্ট নয়, চুল পড়া কমাতে জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনাও জরুরি। প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি পান করা, প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার খাওয়া এবং অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা পরিহার করতে হবে।

তবে ঘরোয়া টোটকা ব্যবহারের পরও যদি চুল পড়া অস্বাভাবিক হারে বাড়তে থাকে বা মাথায় টাক পড়ে যায়, তবে দেরি না করে চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।


পিরিয়ডের তীব্র ব্যথা: শরীরে বাসা বাঁধছে যে গোপন রোগ

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৭ ১৯:০০:১০
পিরিয়ডের তীব্র ব্যথা: শরীরে বাসা বাঁধছে যে গোপন রোগ
ছবি : সংগৃহীত

ঋতুস্রাবের সময় তলপেটে তীব্র ব্যথা হবে—এমন ধারণা আমাদের সমাজে দীর্ঘকাল ধরে চলে আসছে। ব্যথা কমাতে অনেকেই গরম পানির ব্যাগ বা ব্যথানাশক ওষুধের ওপর নির্ভর করেন। কিন্তু চিকিৎসকরা বলছেন, এই ব্যথা সবসময় স্বাভাবিক নয় এবং একে অবহেলা করা উচিত নয়।

শরীরের সামান্য কিছু পরিবর্তন বড় কোনো রোগের ইঙ্গিত হতে পারে। বিশেষ করে ঋতুস্রাবের সময় অসহ্য যন্ত্রণা ‘এন্ডোমেট্রিওসিস’ নামক একটি জটিল রোগের লক্ষণ হতে পারে। সময়মতো চিকিৎসা না হলে এটি নারীদের বন্ধ্যত্বের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

কুয়ালালামপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালের স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. শরিফা হালিমা জাফর জানিয়েছেন, প্রতি ১০ জন নারীর মধ্যে একজন এই রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। অথচ সচেতনতার অভাবে অনেকেই এটি বুঝতে পারেন না।

সাধারণত জরায়ুর ভেতরে এন্ডোমেট্রিয়াম নামক একটি স্তর থাকে, যা প্রতি মাসে খসে ঋতুস্রাব হিসেবে শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। কিন্তু এন্ডোমেট্রিওসিস হলে এই স্তরটি জরায়ুর বাইরে যেমন ডিম্বাশয়, ফ্যালোপিয়ান টিউব বা পেলভিসে তৈরি হতে পারে।

সমস্যা হলো, জরায়ুর বাইরের এই স্তর থেকেও রক্তপাত হয়, কিন্তু সেই রক্ত শরীর থেকে বের হতে পারে না। ফলে ভেতরেই রক্ত জমাট বেঁধে প্রদাহ ও তীব্র ব্যথার সৃষ্টি করে।

ডা. শরিফা সতর্ক করে বলেন, অনেকেই এই উপসর্গগুলোকে সাধারণ মাসিকের ব্যথা মনে করে ভুল করেন। ফলে রোগ নির্ণয় করতে ৬ থেকে ১০ বছর পর্যন্ত দেরি হয়ে যায়। আর এই দীর্ঘলগ্নের দেরি ডেকে আনতে পারে চিরস্থায়ী বন্ধ্যত্ব বা জটিল স্বাস্থ্যঝুঁকি।

এই রোগের অন্যতম প্রধান লক্ষণ হলো ঋতুস্রাবের সময় অতিরিক্ত রক্তপাত। যদি হঠাৎ করে স্রাব বেড়ে যায় বা ঘন ঘন স্যানিটারি ন্যাপকিন বদলাতে হয়, তবে তা অবশ্যই উদ্বেগের বিষয়।

যৌনমিলনের সময় বা পরে তীব্র ব্যথা হওয়াও এই রোগের একটি বড় উপসর্গ। পেলভিক অঙ্গগুলোতে ক্ষত থাকলে এমনটি হতে পারে, যা অনেক সময় নারীদের যৌনজীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

এছাড়া মলত্যাগের সময় ব্যথা, জ্বালাপোড়া বা রক্তপাত হওয়াকেও অনেকে সাধারণ পেটের সমস্যা বা আইবিএস ভেবে ভুল করেন। কিন্তু কোষ্ঠকাঠিন্য বা মলত্যাগের সমস্যাও এন্ডোমেট্রিওসিসের লক্ষণ হতে পারে।

দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা থেকে শরীরে অকারণে ক্লান্তি ভর করতে পারে। পর্যাপ্ত বিশ্রামের পরও যদি ক্লান্তি না কাটে, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

সবচেয়ে ভয়ের বিষয় হলো, এন্ডোমেট্রিওসিসের কারণে জরায়ু বা ডিম্বাশয়ে আঠালো স্তর তৈরি হয়ে ডিম্বাণু নিষিক্তকরণে বাধা দিতে পারে। তাই পিরিয়ডের ব্যথাকে ‘স্বাভাবিক’ ভেবে অবহেলা না করে দ্রুত বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।


খালি পেটে পাকা কলা খাওয়া: উপকার, ঝুঁকি ও সঠিক নিয়ম

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৭ ১৪:১৭:৪৭
খালি পেটে পাকা কলা খাওয়া: উপকার, ঝুঁকি ও সঠিক নিয়ম
ছবি: সংগৃহীত

সকালে ঘুম থেকে উঠে অনেকেই দ্রুত শক্তি পাওয়ার আশায় খালি পেটে পাকা কলা খান। সহজলভ্য, স্বল্পমূল্য এবং পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ হওয়ায় কলা দীর্ঘদিন ধরেই স্বাস্থ্যকর খাবারের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে। তবে পুষ্টিবিদ ও চিকিৎসকদের মতে, খালি পেটে কলা খাওয়ার বিষয়টি সবার জন্য সমানভাবে উপকারী নয়। কারও জন্য এটি উপকার বয়ে আনলেও, কিছু মানুষের ক্ষেত্রে উল্টো শারীরিক সমস্যা তৈরি করতে পারে।

কেন খালি পেটে কলা খেলে দ্রুত শক্তি পাওয়া যায়

পাকা কলায় প্রাকৃতিক শর্করা যেমন গ্লুকোজ, ফ্রুক্টোজ ও সুক্রোজ থাকে, যা খুব সহজেই হজম হয়ে রক্তে মিশে যায়। সকালে শরীর দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকার ফলে এনার্জি লেভেল কমে যায়। এ অবস্থায় কলা খেলে তাৎক্ষণিক শক্তি পাওয়া সম্ভব হয়। এজন্য অনেক ক্রীড়াবিদ বা নিয়মিত ব্যায়ামকারীরা সকালে বা ওয়ার্কআউটের আগে কলা খেয়ে থাকেন।

হজমে সহায়ক হলেও সবাই সমান উপকার পায় না

কলায় থাকা খাদ্যআঁশ হজম প্রক্রিয়াকে গতিশীল করে এবং অন্ত্রের কার্যক্রম উন্নত করে। নিয়মিত পরিমিত পরিমাণে কলা খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য কমে এবং পেট পরিষ্কার থাকতে সাহায্য করে। তবে খালি পেটে কলা খেলে কিছু মানুষের ক্ষেত্রে উল্টো পেট ফাঁপা, অম্বল বা গ্যাসের সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে যাদের আগে থেকেই অ্যাসিডিটি বা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা আছে, তাদের জন্য এটি অস্বস্তিকর হতে পারে।

রক্তে শর্করার হঠাৎ ওঠানামার ঝুঁকি

খালি পেটে কলা খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বেড়ে যায়। কিছু সময় পর ইনসুলিন নিঃসরণের কারণে সেই মাত্রা আবার দ্রুত নেমে আসতে পারে। এই ওঠানামার ফলে মাথা ঘোরা, দুর্বল লাগা বা অতিরিক্ত ক্ষুধা অনুভূত হতে পারে। ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে এই প্রক্রিয়া আরও ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে, কারণ এতে রক্তে শর্করার নিয়ন্ত্রণ বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

ম্যাগনেসিয়াম ও ক্যালসিয়ামের ভারসাম্য প্রশ্নে

পাকা কলা ম্যাগনেসিয়ামের একটি ভালো উৎস। তবে খালি পেটে নিয়মিত কলা খেলে শরীরে ম্যাগনেসিয়ামের আধিক্য তৈরি হতে পারে, যা ক্যালসিয়ামের ভারসাম্যে প্রভাব ফেলতে পারে। হৃদ্‌যন্ত্রের সমস্যা আছে এমন ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে এটি দীর্ঘমেয়াদে জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে বলে কিছু গবেষণায় ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।

মানসিক স্বাস্থ্যে ইতিবাচক প্রভাব

কলায় থাকা ট্রিপটোফ্যান শরীরে সেরোটোনিন নামের ‘ফিল-গুড হরমোন’ উৎপাদনে সহায়তা করে। ফলে পরিমিত পরিমাণে কলা খেলে মেজাজ ভালো থাকে এবং মানসিক চাপ কিছুটা কমতে পারে। তবে এই উপকার পেতে কলাকে একমাত্র সমাধান হিসেবে দেখা ঠিক নয়।

ওজন বাড়ার আশঙ্কা কতটা

কলায় ক্যালরি তুলনামূলকভাবে বেশি। খালি পেটে শুধু কলা খেলে কিছু সময় পর আবার ক্ষুধা বাড়তে পারে, ফলে অতিরিক্ত খাবার গ্রহণের ঝুঁকি তৈরি হয়। এতে দীর্ঘমেয়াদে ওজন বাড়ার সম্ভাবনা থাকে। তবে কলা যদি প্রোটিন বা স্বাস্থ্যকর ফ্যাটের সঙ্গে খাওয়া হয়, তাহলে শর্করা ধীরে ধীরে হজম হয় এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা সহজ হয়।

কারা বিশেষভাবে সতর্ক থাকবেন

ডায়াবেটিস রোগী, কিডনি সমস্যায় ভুগছেন এমন ব্যক্তি, হৃদ্‌রোগী এবং দীর্ঘদিনের গ্যাস্ট্রিক বা অ্যাসিডিটির সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের খালি পেটে কলা খাওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। একই সঙ্গে খুব বেশি পাকা কলা বা একেবারে কাঁচা কলা এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।

কীভাবে কলা খেলে সবচেয়ে উপকার পাওয়া যাবে

পুষ্টিবিদদের মতে, কলা একা না খেয়ে এর সঙ্গে প্রোটিন ও ফ্যাটযুক্ত খাবার যুক্ত করাই সবচেয়ে নিরাপদ ও কার্যকর উপায়। যেমন দই, বাদাম, চিনাবাদামের মাখন বা ওটসের সঙ্গে কলা খেলে রক্তে শর্করা ধীরে মিশবে এবং শক্তি দীর্ঘস্থায়ী হবে। মাঝামাঝি পাকা কলা নির্বাচন করাও গুরুত্বপূর্ণ

পাঠকের মতামত:

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

রাষ্ট্রের ধারণাটি একসময় কেবল প্রশাসনিক ক্ষমতা, আইনের শাসন এবং নিরাপত্তা প্রদানের সঙ্গে সম্পর্কিত ছিল। কিন্তু আধুনিক বিশ্বে রাষ্ট্রের ভূমিকা এখন... বিস্তারিত