সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক গ্রেফতার

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ২৪ ০৯:২৩:২২
সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক গ্রেফতার
সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক। ছবি: সংগৃহীত

সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হককে রাজধানীর ধানমন্ডির নিজ বাসা থেকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) সকাল ৮টার পর তাকে গ্রেফতার করা হয়। ডিবির যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, গ্রেফতারের পর খায়রুল হককে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

খায়রুল হক ২০১০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর দেশের ১৯তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নেন এবং ২০১১ সালের ১৭ মে অবসর গ্রহণ করেন। অবসরের আগে তিনি ত্রয়োদশ সংশোধনী মামলার রায়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করেন, যা দেশের রাজনীতিতে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়। এ রায়ের ফলে রাজনৈতিক অস্থিরতার নতুন অধ্যায় শুরু হয় বলে মনে করেন অনেকেই।

সম্প্রতি জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম এক সংবাদ সম্মেলনে খায়রুল হকের গ্রেফতার ও বিচার দাবি করে। তারা তাকে ‘বিচার বিভাগ ও গণতন্ত্র ধ্বংসের মূল কারিগর’ হিসেবে আখ্যা দেয়। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে আগাম জামিন সংক্রান্ত এখতিয়ার সংকুচিত করা, বিতর্কিত বিচারপতিদের শপথ পড়ানো, খালেদা জিয়াকে ক্যান্টনমেন্টের বাসভবন থেকে উচ্ছেদের মতো সিদ্ধান্তে ভূমিকা রাখাসহ নানা অভিযোগ রয়েছে।

অবসরের পর খায়রুল হক আইন কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তবে গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর তিনি ১৩ আগস্ট পদত্যাগ করেন। এরপর তিনি প্রকাশ্যে আর দেখা যাচ্ছিলেন না।

তার বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে কয়েকটি মামলা দায়ের হয়েছে। গত বছরের ১৮ আগস্ট ঢাকা আইনজীবী সমিতির সদস্য ইমরুল হাসান তার বিরুদ্ধে একটি মামলায় সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায় জালিয়াতির অভিযোগ আনেন।

/আশিক


যে ভোট রাতেই করা যায়, সেটা দিনে টেনে রাখা কেন?- ফারুকী

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৯ ১০:৩৪:০৭
যে ভোট রাতেই করা যায়, সেটা দিনে টেনে রাখা কেন?- ফারুকী
ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ সকাল ৮টায় শুরু হয়েছে এবং বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলবে। দীর্ঘ বিরতির পর আয়োজিত এ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

নির্বাচনের দিন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা ও খ্যাতনামা নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। ভোট শুরুর পরপরই নিজের পেজে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি উল্লেখ করেন, “ডাকসুর মধ্য দিয়ে ইলেকশনের ট্রেনে উঠে গেল বাংলাদেশ। এরপর আসবে জাতীয় নির্বাচনের ট্রেন। সবাইকে নির্বাচন মোবারক।”

ফারুকী আরও লেখেন, “যে ভোট রাতারাতি করে ফেলা যায়, সেটি দিনের বেলায় পর্যন্ত ঠেকিয়ে রাখা হলো কেন? সময়মতো কাজ না করার প্রবণতা আমাদের জাতির বড় দুর্বলতা।”

তার মন্তব্যে ইঙ্গিত করা হয়, নির্বাচনকে সময়োপযোগী ও সুষ্ঠু আয়োজনের প্রতি জাতীয় মানসিকতার অভাব আজও প্রবলভাবে বিদ্যমান।

এদিকে ডাকসু নির্বাচন নিয়ে সমালোচনা করতে গিয়ে সামাজিক মাধ্যমে অনেকেই ইঙ্গিত করেছেন, দেশের ইতিহাসে সংঘটিত বিভিন্ন বিতর্কিত ও অশুভ রাজনৈতিক ঘটনার দায়ে অভিযুক্ত শক্তিগুলো আজ নির্বাচনী সংস্কৃতির স্বচ্ছতায় কথা বলার অবস্থায় নেই। তারা উল্লেখ করেছেন, লাইলাতুল ইলেকশনের জননী, ব্যাংক লুটের দায়ীরা, গুমের মাস্টারমাইন্ডরা, বিডিআর-পিলখানা ও জুলাই হত্যাযজ্ঞের পরিকল্পনাকারীরা এই শক্তিগুলোই বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার সবচেয়ে বড় বাধা ছিল।

তাদের মতে, যারা গণতন্ত্রকে রাতের আঁধারে বন্দি করে রেখেছিল, তারাই এখন নির্বাচনের প্রশ্নে নীরব থেকেছে। ইতিহাসের আলোকে এসব নীরবতা আসলে প্রমাণ করে যে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দুর্দশার পেছনে তাদের ভূমিকা কতটা ভয়াবহ ছিল।

-রফিক


ভারতে ১২০০ টন ইলিশ পাঠাচ্ছে সরকার

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৮ ১৭:৩৬:০৬
ভারতে ১২০০ টন ইলিশ পাঠাচ্ছে সরকার
ছবি: সংগৃহীত

আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে ভারতে ১ হাজার ২০০ মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানির নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। প্রতি কেজি ইলিশের ন্যূনতম রপ্তানি মূল্য ১২.৫ মার্কিন ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে।

সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের রপ্তানি-২ শাখার উপসচিব এস এইচ এম মাগফুরুল হাসান আব্বাসী স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আগ্রহী রপ্তানিকারকদের আগামী ১১ সেপ্টেম্বরের (বিকেল ৫টা) মধ্যে আবেদন করতে হবে। আবেদনের সঙ্গে হালনাগাদ ট্রেড লাইসেন্স, ইআরসি, আয়কর সার্টিফিকেট, ভ্যাট সার্টিফিকেট, বিক্রয় চুক্তিপত্র এবং মৎস্য অধিদপ্তরের লাইসেন্সসহ প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্র জমা দিতে হবে।

রপ্তানি কমার কারণ কী?

গত বছর দুর্গাপূজা উপলক্ষে ৩ হাজার মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন দিয়েছিল অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, যা পরে ২ হাজার ৪২০ টনে নামিয়ে আনা হয়েছিল। এবার সেই পরিমাণ আরও কমে ১ হাজার ২০০ টন করা হলো।

যেসব রপ্তানিকারক এর আগে আবেদন করেছিলেন, তাদেরও নতুনভাবে আবেদন দাখিল করতে হবে বলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।


দুর্গাপূজা নিরাপত্তা নিয়ে কড়া বার্তা: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৮ ১৪:২৪:৩৫
দুর্গাপূজা নিরাপত্তা নিয়ে কড়া বার্তা: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার
ছবি: সংগৃহীত

দুর্গাপূজা উপলক্ষে সন্ধ্যা ৭টার আগেই প্রতিমা বিসর্জন শেষ করতে হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, দুর্গাপূজা ঘিরে কোনো ধরনের নিরাপত্তা হুমকি নেই, তবে নাশকতারোধে সরকার ১৮ দফা নির্দেশনা প্রস্তুত করেছে।

সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, এবার সারা দেশে ৩৩ হাজার মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। এ উপলক্ষে মণ্ডপগুলোতে ২৪ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণ এবং পর্যাপ্ত সংখ্যক আনসার নিয়োগ করা হবে। তিনি বলেন, “পূজার সময় আশপাশের মেলায় মদ ও গাঁজার আসর বসানো যাবে না।”

নিরাপত্তায় ১৮ দফা নির্দেশনা

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রস্তুত করা ১৮ দফা নির্দেশনার কিছু উল্লেখযোগ্য দিক নিচে দেওয়া হলো:

নিরাপত্তা জোরদার: পুলিশ, র‍্যাব, আনসার ও বিজিবির দৃশ্যমান টহল এবং গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হবে।

বিসর্জন ও মণ্ডপ ব্যবস্থাপনা: সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে প্রতিমা বিসর্জন শেষ করতে হবে। বিসর্জনস্থলে পর্যাপ্ত আলো ও অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রের ব্যবস্থা রাখতে হবে এবং ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল স্ট্যান্ডবাই থাকবে।

পর্যবেক্ষণ: প্রতিটি পূজামণ্ডপে সার্বক্ষণিক পাহারা ও সিসি ক্যামেরা স্থাপন করতে হবে। স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও ছাত্র-জনতাকে নিয়ে মনিটরিং কমিটি গঠন করা হবে।

সামাজিক পরিবেশ: সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে এমন কোনো বক্তব্য বা গুজব ছড়ানো যাবে না। পটকা ও আতশবাজি পোড়ানো স্থায়ীভাবে বন্ধ করতে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

নারী নিরাপত্তা: পূজামণ্ডপে আসা নারীদের উত্ত্যক্ত করা ও ইভটিজিং রোধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও বলেন, “সীমান্ত এলাকায় বিজিবিকে পূজামণ্ডপের দায়িত্ব দেওয়া হবে। ঢাকায় লাইন করে প্রতিমা বিসর্জন দিতে হবে এবং এর ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে।”


‘প্রতিযোগিতা বাড়িয়েই উন্নত হবে সেবা’—উপদেষ্টা এস কে বশির

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৮ ১২:৩১:২৬
‘প্রতিযোগিতা বাড়িয়েই উন্নত হবে সেবা’—উপদেষ্টা এস কে বশির
ছবিঃ সংগৃহীত

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের (এইচএসআইএ) বহুল প্রতীক্ষিত তৃতীয় টার্মিনাল চালুর প্রাক্কালে যাত্রীসেবা নিয়ে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন উপদেষ্টা এস কে বশির। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন, নতুন টার্মিনালে যাত্রীসেবা হবে মর্যাদাপূর্ণ ও সম্মানজনক মানের, যা শিগগিরই আন্তর্জাতিক সর্বোচ্চ মানদণ্ডে পৌঁছাতে সক্ষম হবে।

বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে সংবাদ সংস্থার সঙ্গে আলাপকালে তিনি জানান, গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের বিষয়ে সরকার ইতিমধ্যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং তা শিগগিরই ঘোষণা করা হবে। একই সঙ্গে বিমানের পাশাপাশি দ্বিতীয় একটি আন্তর্জাতিক গ্রাউন্ড হ্যান্ডলার নিয়োগের বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হচ্ছে।

উপদেষ্টা বলেন, “আমাদের লক্ষ্য প্রতিযোগিতা তৈরি করে সেবার মান উন্নত করা। সমন্বিতভাবে সবার সামর্থ্য কাজে লাগিয়েই আমরা যাত্রীসেবা বাড়াতে চাই। বিমানের প্রতিযোগিতা ক্ষমতা ক্ষুণ্ন না করে, আমরা নিশ্চিত করতে চাই যাতে যাত্রীসেবা কোনোভাবেই কমে না যায়।”

অন্যদিকে, নতুন টার্মিনালের কার্যক্রম চূড়ান্ত করতে বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (সিএএবি) ও একটি জাপানি কনসোর্টিয়ামের মধ্যে তিন দিনের আলোচনা শুরু হয়েছে। প্রথম দুটি অধিবেশন সিএএবি চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মোস্তফা মাহমুদ সিদ্দিকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হলেও শেষ অধিবেশন পরিচালনা করবেন উপদেষ্টা বশির। আলোচনায় আন্তর্জাতিক অর্থ সংস্থা আইএফসি-সহ সব অংশীজন অংশ নিচ্ছে।

সিএএবি সূত্র জানায়, আগে বিমানের জন্য দুই বছরের একচেটিয়া গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং অধিকারের সিদ্ধান্ত কনসোর্টিয়ামের মধ্যে অস্বস্তি তৈরি করেছিল। তারা আরও বিস্তৃত কার্যকরী ক্ষমতা ও রাজস্ব ভাগাভাগির সুযোগ চাইছে। পিপিপি (পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ) মডেলে বিমান ও টার্মিনালের বেসরকারি অপারেটরের মধ্যে একটি সার্ভিস লেভেল এগ্রিমেন্ট (এসএলএ) সই হবে। যদি বিমান নির্ধারিত মানদণ্ডে ব্যর্থ হয়, তবে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন প্রতিষ্ঠানকে অন্তর্ভুক্ত করার সুযোগ থাকবে।

বাংলাদেশে গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং দীর্ঘদিন ধরেই বিতর্কিত বিষয়। একমাত্র বিমানই বর্তমানে এ দায়িত্ব পালন করে আসছে এবং বছরে প্রায় ১,০০০ থেকে ১,২০০ কোটি টাকা রাজস্ব আয় করছে। তবে যাত্রী ও বিদেশি এয়ারলাইন্সের অভিযোগ রয়েছে—বিলম্ব, দক্ষতার ঘাটতি, এমনকি মাঝে মধ্যে চুরির মতো সমস্যাও ঘটে থাকে। ফলে কয়েকটি বিদেশি এয়ারলাইন্স নিজেদের কর্মী নিয়োগ করেও সেবার মান রক্ষা করে, যদিও বিমানের ফি পরিশোধ করতে হয় তাদের।

বিমান অবশ্য আত্মবিশ্বাসী। প্রতিষ্ঠানটি ২০২৩ সালে ৫৭ হাজারেরও বেশি ফ্লাইট পরিচালনার গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং করেছে। গত এক বছরে ৩,৬০০ নতুন গ্রাউন্ড সাপোর্ট ইকুইপমেন্ট (জিএসই) সংগ্রহে প্রায় এক হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে। নিয়োগ ও প্রশিক্ষণ কর্মসূচি চলছে, আরও সরঞ্জাম আসছে বলেও জানানো হয়। বিমানের দাবি, আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের হাতে গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং দিলে জাতীয় রাজস্ব ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

অন্যদিকে, ২১ হাজার ৩০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই টার্মিনাল প্রকল্পের বড় অংশ অর্থায়ন করেছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)। টার্মিনালটির মাধ্যমে বছরে ২ কোটি ৪০ লাখ যাত্রী ও ১২ লাখ টন কার্গো হ্যান্ডলিং সক্ষমতা তৈরি হবে।

২ লাখ ৩০ হাজার বর্গমিটার আয়তনের এই টার্মিনালে থাকছে ২৬টি বোর্ডিং ব্রিজ, ১১৫টি চেক-ইন কাউন্টার, ৬৬টি প্রস্থানের ইমিগ্রেশন ডেস্ক, ৫৯টি আগমনের ইমিগ্রেশন ডেস্ক ও তিনটি ভিআইপি ইমিগ্রেশন ডেস্ক। সব মিলিয়ে এটি হবে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম আধুনিক বিমানবন্দর টার্মিনাল, যা বাংলাদেশের আকাশপথে নতুন যুগের সূচনা করবে।

-নাজমুল হাসান


জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পথে নতুন রূপরেখা চূড়ান্ত 

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৮ ১০:৫৯:৫১
জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পথে নতুন রূপরেখা চূড়ান্ত 

বাংলাদেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণে এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হয়ে উঠছে জুলাই জাতীয় সনদ। দীর্ঘ আলোচনা-পর্যালোচনা এবং রাজনৈতিক দলগুলোর মতামতের ভিত্তিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন এখন প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে। কমিশনের প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হলো—সনদের যেসব প্রস্তাব সংবিধান সংশোধনের সঙ্গে সম্পর্কিত, সেগুলো বাস্তবায়িত হবে রাষ্ট্রপতির বিশেষ সাংবিধানিক আদেশের মাধ্যমে। অন্যদিকে সংবিধান সংশোধন ছাড়াই যেসব প্রস্তাব কার্যকর করা সম্ভব, সেগুলো বাস্তবায়ন করা হবে সরকারের নির্বাহী আদেশ, রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ বা প্রাসঙ্গিক বিধি প্রণয়নের মাধ্যমে। একই সঙ্গে পুরো সনদকে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যদিও এটি তফসিল আকারে থাকবে নাকি অন্য কোনোভাবে যুক্ত হবে—সে বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি। তবে কমিশন সর্বসম্মতভাবে এ বিষয়ে একমত হয়েছে যে সনদকে সংবিধানের অবিচ্ছেদ্য অংশ করতেই হবে।

গত রোববার বিকেলে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে অনুষ্ঠিত এক দীর্ঘ বৈঠকে বিশেষজ্ঞরা কমিশনের সঙ্গে এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এম এ মতিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক মোহাম্মদ ইকরামুল হক এবং জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শরিফ ভূইয়া ও ইমরান সিদ্দিক। তাঁরা সাংবিধানিক, আইনি ও রাজনৈতিক বাস্তবতা বিশ্লেষণ করে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছান যে বিশেষ সাংবিধানিক আদেশই হচ্ছে সবচেয়ে কার্যকর ও বাস্তবসম্মত উপায়। তাঁদের মতে, এই প্রক্রিয়ায় সংস্কার বাস্তবায়ন করা গেলে তা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই সম্পন্ন করা সম্ভব হবে।

ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বৈঠক শেষে জানান, রাজনৈতিক দলগুলোর প্রত্যেকটি পরামর্শ গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা হয়েছে। কমিশনের লক্ষ্য হলো এমন একটি প্রস্তাব তৈরি করা যা শুধু আইনি ও সাংবিধানিক দিক থেকেই নয়, রাজনৈতিক বাস্তবতার দিক থেকেও গ্রহণযোগ্য হয়। কমিশন চাইছে, জুলাই সনদকে ঘিরে ভবিষ্যৎ রাজনীতিতে কোনো ধরনের বিতর্ক বা অচলাবস্থা তৈরি না হয়ে বরং এটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার স্থিতিশীলতার ভিত্তি হয়ে উঠুক।

তবে বাস্তবায়নের সময়সীমা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতপার্থক্য স্পষ্ট। বিএনপির অবস্থান হলো, সংবিধান সংশোধনমূলক সংস্কার আগামী জাতীয় সংসদ গঠনের দুই বছরের মধ্যে সম্পন্ন করা হোক। বিপরীতে জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) সহ কয়েকটি দল জোর দাবি তুলেছে যে, আগামী নির্বাচনের আগেই সনদের পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে। জামায়াত প্রস্তাব করেছে রাষ্ট্রপতির ঘোষণা বা গণভোটের মাধ্যমে সংস্কার কার্যকর করার, আর এনসিপি বলছে গণপরিষদ গঠনের মাধ্যমে সংস্কার আনতে হবে। আবার অন্তত ১০টি দল পরামর্শ দিয়েছে সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্টের রেফারেন্স নেওয়ার। তবে বিশেষজ্ঞরা এই পদ্ধতিকে কার্যকর নয় বলে মত দিয়েছেন এবং এর নেতিবাচক দিক তুলে ধরেছেন।

জুলাই সনদের খসড়া ইতিমধ্যেই চূড়ান্ত হয়েছে। এতে তিনটি অংশ রাখা হয়েছে—প্রথমত সনদের পটভূমি, দ্বিতীয়ত ৮৪টি সংস্কার প্রস্তাব এবং তৃতীয়ত বাস্তবায়নের জন্য সাত দফা অঙ্গীকারনামা। অঙ্গীকারনামায় উল্লেখ আছে সংবিধানের প্রয়োজনীয় সংশোধন, বিদ্যমান আইনের পরিবর্তন, নতুন আইন প্রণয়ন, প্রাসঙ্গিক বিধি-প্রবিধির সংস্কার, শহীদদের স্বীকৃতি প্রদান, ভুক্তভোগীদের ন্যায়বিচার নিশ্চিতকরণ এবং ২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থানকে রাষ্ট্রীয়ভাবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়।

চূড়ান্ত খসড়ায় কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনা হয়েছে। প্রথমে সনদকে সংবিধানের ওপর প্রাধান্য দেওয়ার প্রস্তাব ছিল, কিন্তু বিএনপির আপত্তির কারণে এটি বাদ দেওয়া হয়েছে। একইভাবে সুপ্রিম কোর্টকে সনদের একমাত্র ব্যাখ্যাকারীর দায়িত্ব দেওয়ার প্রস্তাবও বাতিল করা হয়েছে। আবার আদালতে সনদের বৈধতা প্রশ্নবিদ্ধ না করার ধারাটি পরিবর্তন করে বলা হয়েছে—রাজনৈতিক দলগুলো নিজেরাই এ ধরনের প্রশ্ন তুলবে না এবং বাস্তবায়নের প্রতিটি ধাপে আইনি ও সাংবিধানিক সুরক্ষা নিশ্চিত করবে।

জুলাই সনদকে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাবের মূল দর্শন হলো, জনগণের অভিপ্রায়ই হবে সর্বোচ্চ আইন। রাজনৈতিক দল ও জোটগুলো সম্মিলিতভাবে আলোচনার মাধ্যমে জনগণের অভিপ্রায়ের যে সুস্পষ্ট অভিব্যক্তি তৈরি করেছে, সেটিই জুলাই সনদ। তাই এটি সংবিধানের তফসিল আকারে অথবা অন্য কোনো উপায়ে যুক্ত করা হবে। এভাবে সনদ কেবল একটি রাজনৈতিক সমঝোতার দলিলই হবে না, বরং এটি পাবে সাংবিধানিক ও রাষ্ট্রীয় বৈধতা।

সবশেষে, সনদের অঙ্গীকারনামায় উল্লেখ করা হয়েছে যে দীর্ঘ ১৬ বছরের গণতান্ত্রিক সংগ্রাম এবং বিশেষ করে ২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থানের ঐতিহাসিক তাৎপর্যকে সাংবিধানিকভাবে স্বীকৃতি দেওয়া হবে। শহীদদের মর্যাদা রক্ষা, নিহত ও নিখোঁজদের ন্যায়বিচার, পরিবারগুলোর সহায়তা এবং আহতদের পুনর্বাসন নিশ্চিত করা হবে। এভাবে সনদ শুধু ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক ব্যবস্থার সংস্কারই নয়, বরং অতীত সংগ্রামের ন্যায়বিচার ও স্মৃতিকে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও বহন করছে।


জুলাই যোদ্ধাদের পুনর্বাসন ও মাসিক ভাতা দেওয়া হবে: মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৭ ২০:১২:২১
জুলাই যোদ্ধাদের পুনর্বাসন ও মাসিক ভাতা দেওয়া হবে: মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা
ছবি: সংগৃহীত

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার এবং আহত জুলাই যোদ্ধাদের তাদের নিজ নিজ কর্মে অভিজ্ঞতা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে যথাযথ পুনর্বাসন করা হবে। রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম এক আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় এই তথ্য জানিয়েছেন।

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা বলেন, “মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে জুলাই শহীদ পরিবার এবং আহতদের জন্য মাসিক ভাতা চালু করা হয়েছে। তালিকাভুক্ত প্রত্যেকেই তা প্রতি মাসে যথাসময়ে পেয়ে যাবেন।” তিনি আরও বলেন, “জুলাই স্পিরিটকে সামনে রেখে তাদের ত্যাগের যথাযথ মূল্যায়নে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।”

তিনি জানান, জুলাই যোদ্ধাদের নিজ নিজ কর্মে অভিজ্ঞতা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে পুনর্বাসন করা হবে। এই বিষয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে জুলাই যোদ্ধাদের কল্যাণ ও পুনর্বাসনে জেলা ও উপজেলা কমিটি গঠন করা হয়েছে। আহতদের উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করা হয়েছে এবং ৭৮ জন জুলাই যোদ্ধাকে বিদেশে পাঠানো হয়েছে।

সভায় জানানো হয়, এ পর্যন্ত ১২ হাজার ৪৩ জন জুলাই যোদ্ধাকে ১৪৭ কোটি ৯২ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে।

সূত্র : বাসস


বিবিএসের প্রতিবেদন: ৩৭ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন মূল্যস্ফীতি

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৭ ১৮:৫৫:৩৩
বিবিএসের প্রতিবেদন: ৩৭ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন মূল্যস্ফীতি
ছবি: সংগৃহীত

সদ্য সমাপ্ত আগস্টে দেশের সার্বিক মূল্যস্ফীতি কমে হয়েছে ৮.২৯ শতাংশ, যা গত ৩৭ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। গত জুলাই মাসে এই হার ছিল ৮.৫৫ শতাংশ। ২০২২ সালের জুলাই মাসে মূল্যস্ফীতি ছিল ৭.৪৮ শতাংশ। এরপর আর কখনো এটি ৮ শতাংশের নিচে নামেনি।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) আগস্ট মাসের মূল্যস্ফীতির চিত্র প্রকাশ করেছে। প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, এক মাসের ব্যবধানে মূল্যস্ফীতি কমেছে শূন্য দশমিক ২৭ শতাংশ পয়েন্ট।

খাদ্য ও খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের চিত্র

বিবিএসের হিসাব অনুযায়ী, আগস্টে খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৭.৬০ শতাংশ, যা জুলাইয়ে ছিল ৭.৫৬ শতাংশ। অন্যদিকে, খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি আগস্টে হয়েছে ৮.৯০ শতাংশ, যা জুলাইয়ে ছিল ৯.৩৮ শতাংশ।

গ্রাম ও শহরের তথ্য বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, আগস্টে গ্রামে সাধারণ মূল্যস্ফীতি ছিল ৮.৩৯ শতাংশ, যা জুলাইয়ে ছিল ৮.৫৫ শতাংশ। অন্যদিকে শহরে আগস্টে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৮.২৪ শতাংশ, যা জুলাইয়ে ছিল ৮.৯৫ শতাংশ। অর্থাৎ উভয় ক্ষেত্রেই মূল্যস্ফীতি কমেছে। তবে খাদ্য বহির্ভূত খাতে গ্রামের মানুষ তুলনামূলক বেশি চাপে রয়েছে।

মূল্যস্ফীতির কারণ ও দীর্ঘমেয়াদি প্রবণতা

বিবিএসের বিশ্লেষণে বলা হয়, আগস্ট মাসে খাদ্যপণ্যের দামে স্বস্তি আসার মূল কারণ মৌসুমি সবজির সরবরাহ বৃদ্ধি এবং আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেলের দাম হ্রাস পাওয়া। তবে অখাদ্য খাত—বিশেষ করে বাড়িভাড়া, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা, বিদ্যুৎ ও জ্বালানির খরচ—এখনো ঊর্ধ্বমুখী থাকায় সামগ্রিক চাপ পুরোপুরি কমেনি।

এছাড়া, গত ১২ মাসের (সেপ্টেম্বর ২০২৪ থেকে আগস্ট ২০২৫) গড় হিসাব অনুযায়ী, সাধারণ মূল্যস্ফীতি ৯.৫৮ শতাংশে দাঁড়িয়েছে, যা আগের ১২ মাসে ছিল ৯.৯৫ শতাংশ। এতে বোঝা যায়, দীর্ঘমেয়াদি হিসাবে সামগ্রিকভাবে মূল্যস্ফীতি কিছুটা নিম্নমুখী প্রবণতা দেখাচ্ছে।


আওয়ামী লীগ নেতারা মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়নি: বদরুদ্দীন উমরের বিস্ফোরক মন্তব্য

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৭ ১৭:৫৪:৫৬
আওয়ামী লীগ নেতারা মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়নি: বদরুদ্দীন উমরের বিস্ফোরক মন্তব্য
ছবি: সংগৃহীত

রাজনৈতিক বিশ্লেষক বদরুদ্দীন উমর, যিনি একজন লেখক, গবেষক এবং বামপন্থী রাজনীতিবিদ হিসেবে পরিচিত। তিনি রোববার ৯৪ বছর বয়সে ঢাকার একটি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়ালেখা শেষ করার পর তিনি যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৬৮ সালে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতার চাকরি ছেড়ে রাজনীতিতে সক্রিয় হন। তিনি গভর্নর মোনায়েম খানের স্বৈরাচারী আচরণের প্রতিবাদে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।

গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থায় (বাসস) প্রকাশিত এক দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ এবং তার পরবর্তী ঘটনাবলীর গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো তুলে ধরেছিলেন। সেই আলোচিত সাক্ষাৎকারটি আবার প্রকাশ করা হয়েছে।

মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বদরুদ্দীন উমরের মন্তব্য

সাক্ষাৎকারে বদরুদ্দীন উমর বলেন, "আওয়ামী লীগের কোনো নেতা সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়নি, তারা কলকাতায় আরাম-আয়েশে ছিল।" তিনি স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি এবং প্রকৃত সত্য আড়াল করার চেষ্টার সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, "এই স্বাধীনতা আন্দোলনকে প্রথম থেকেই এমনভাবে বলা হয়েছে যে, শেখ মুজিবই এই যুদ্ধের মহানায়ক। পরে তো শেখ হাসিনা এই স্বাধীনতা যুদ্ধের কথা এমনভাবে বলতেন যেন, এটা তাদের পারিবারিক ব্যাপার।" তিনি মন্তব্য করেন যে, ইতিহাসের এই আবর্জনা পরিষ্কার করার সময় এসেছে।

১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধ কীভাবে শুরু হয়েছিল—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের মার্চের শুরু থেকে ক্ষমতা হস্তান্তরের আলোচনা ভেঙে যাওয়া এবং ২৫শে মার্চ রাতে পাকিস্তানি বাহিনীর নৃশংস হামলার কারণেই স্বাধীনতা যুদ্ধ অপরিহার্য হয়ে পড়ে। তিনি আরও বলেন, "শেখ মুজিব আওয়ামী লীগ নেতা হিসেবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা চেয়েছিলেন—এটা একটা ভুয়া কথা।" উমরের মতে, ১৯৭১ সালে শেখ মুজিব পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় কাঠামোর মধ্যে সর্বোচ্চ স্বায়ত্তশাসন চেয়েছিলেন এবং নিজে প্রধানমন্ত্রী হতে চেয়েছিলেন।

৭ মার্চের ভাষণ ও আত্মসমর্পণ

৭ মার্চের ভাষণে স্বাধীনতা ঘোষণার দাবি প্রসঙ্গে উমর বলেন, "৭ মার্চের যে বক্তৃতা, সাধারণত বলা হলো এটা ছিল স্বাধীনতার ঘোষণা...কিন্তু দেখা যায় এসব কথা একেবারেই ভুয়া ছিল।" তিনি বলেন, শেখ মুজিব তৎকালীন পরিস্থিতির চাপে এই বক্তৃতা দিয়েছিলেন এবং এটি ছিল জনগণের প্রতি একটা বার্তা। তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর দেশে ফিরে শেখ মুজিব বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ সম্পর্কে কিছু জানতে চাইতেন না। তিনি তাজউদ্দিনসহ অন্য নেতাদের কথা শুনতে চাইতেন না, কারণ তার অনুপস্থিতিতে দেশ স্বাধীন হয়ে গিয়েছিল।

শেখ মুজিবের বাড়িতে থেকে যাওয়ার বিষয়ে উমর বলেন, "শেখ মুজিব আত্মসমর্পণের জন্য বাড়িতে বসে রইলেন।" তিনি আরও বলেন, "আওয়ামী লীগের লোকেরা এবং তাদের বুদ্ধিজীবীরা বলে শেখ মুজিবকে পাকিস্তানি বাহিনী গ্রেপ্তার করে নিয়ে গেছে, তিনি আত্মসমর্পণ করেননি। আমি বলেছি, তিনি আত্মসমর্পণ করেছেন।" তার মতে, শেখ মুজিব জানতেনই না যে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে। তিনি পাকিস্তানের জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর লন্ডনে গিয়ে জানতে পারেন যে দেশ স্বাধীন হয়েছে।

মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার পরের বাংলাদেশ

বদরুদ্দীন উমর বলেন, মুক্তিযুদ্ধ সম্পূর্ণভাবে দেশের জনগণের সর্বোচ্চ অবদানে হয়েছিল। তিনি বলেন, "আওয়ামী নেতাকর্মীরা ভারতে পালিয়ে যাওয়ায় এই লড়াইটা সম্পূর্ণ ভারত নিয়ন্ত্রিত হয়ে পড়েছিল।" তিনি মনে করেন, ১৬ ডিসেম্বর যখন আত্মসমর্পণের দলিলে স্বাক্ষর হলো, সেখানে মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি এম এজি ওসমানি ছিলেন না, ছিলেন ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় সামরিক কমান্ডার জগজিৎ সিং অরোরা। এটি ভারতীয় সামরিক বাহিনীর কাছে পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণ ছিল বলে তিনি মন্তব্য করেন।

স্বাধীনতার পর শেখ মুজিবের শাসন সম্পর্কে বদরুদ্দীন উমর বলেন, "স্বাধীনতার পর ভারত সরকার এবং সেনাবাহিনী শেখ মুজিবকে ক্ষমতায় বসিয়ে দিয়েছে। নিজের শক্তির জন্য এখানে বসেননি।" তিনি বলেন, শেখ মুজিব জনগণকে নিয়ে একটি নতুন বাংলাদেশ গড়তে পারতেন, কিন্তু তা না করে শুরু হলো লুটপাটের রাজত্ব। আওয়ামী লীগের লোকেরা লুটপাট শুরু করল।


নির্বাচন ঠেকাতে পারবে না কোনো শক্তি: প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৭ ১৭:৩৪:৫৯
নির্বাচন ঠেকাতে পারবে না কোনো শক্তি: প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব
ছবি: সংগৃহীত

আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধেই ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচন পৃথিবীর কোনো শক্তিই ঠেকাতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম। রবিবার (৭ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

শফিকুল আলম বলেন, “আজকের উপদেষ্টামণ্ডলীর বৈঠক থেকে যেকোনো ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে স্থানীয় প্রশাসনকে আরও সক্রিয়ভাবে কাজ করার কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তা যেন বিঘ্নিত না হয়, সে পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে।”

এ সময় প্রেসসচিব ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন নিয়েও কথা বলেন। তিনি বলেন, ডাকসু নির্বাচন যেন শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে হয়, সেজন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে সর্বাত্মক সহযোগিতা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।

পাঠকের মতামত: