মাইলস্টোন দুর্ঘটনা
মাইলস্টোন দুর্ঘটনায় হতাহতের সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তি, তদন্তের দাবি নানা মহলের

উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ এলাকায় বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় হতাহতের সংখ্যা নিয়ে বিভিন্ন উৎস থেকে ভিন্ন ভিন্ন তথ্য আসায় ব্যাপক বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে। সরকারি একাধিক সংস্থা, গণমাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ নিয়ে তথ্যবিভ্রাট দেখা যাচ্ছে।
প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে বুধবার পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা জানানো হয়েছে ২৯ জন। তবে আইএসপিআর জানায়, এ সংখ্যা ৩১। আর বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে নিহতের সংখ্যা ৩২ জন বলা হয়েছে, যার মধ্যে ছয় জনের পরিচয় এখনো নিশ্চিত নয়।
এ ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকে দাবি করছেন, প্রকৃত নিহতের সংখ্যা আরও বেশি, এমনকি শতাধিক। কেউ কেউ অভিযোগ করছেন, নিহতদের লাশ সরিয়ে ফেলা হয়েছে বা গুম করা হয়েছে—যা নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে নানা পোস্ট ছড়িয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হাসপাতাল ও ক্লিনিক শাখার পরিচালক ডা. আবু হোসেন মো. মঈনুল হোসেনের সই করা পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, বুধবার দুপুর পৌনে ১টা পর্যন্ত অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা গেছেন ২৯ জন। আর জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন ৬৯ জন।
মারা যাওয়া ২৯ জনের মধ্যে জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে ১১ জন, সিএমএইচে ১৫ জন, ঢাকা মেডিক্যালে ১ জন, লুবানা জেনারেল হাসপাতালে ১ জন এবং ইউনাইটেড হাসপাতালে ১ জন ছিলেন।
চিকিৎসাধীনদের মধ্যে ৪৪ জন জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে, ২১ জন সিএমএইচে, বাকিরা বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান মন্তব্য করেছেন, নিহতের প্রকৃত সংখ্যা এর চেয়ে বেশি হতে পারে। তাঁর বক্তব্যের পর সামাজিক মাধ্যমে সরকারের তথ্য নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়।
দুর্ঘটনার দিন সোমবার বিকেলে স্কুলমাঠে উদ্ধার অভিযান চলাকালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কড়া নিরাপত্তা এবং হেলিকপ্টার ওঠানামা দেখেই উৎসুক জনতা ও অভিভাবকদের মধ্যে নানা প্রশ্ন ওঠে। কেউ কেউ অভিযোগ করেন, স্কুলমাঠ থেকে হেলিকপ্টারে লাশ সরিয়ে ফেলা হয়েছে। এমন দাবিকে ঘিরেই কিছু অভিভাবক ও সেনাবাহিনীর সদস্যদের মধ্যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, যা পরে মিটে যায়।
ফেসবুক, এক্স এবং ইউটিউবে অনেকে পোস্টে দাবি করছেন, সরকার হতাহতের প্রকৃত সংখ্যা লুকাতে চাইছে। কেউ কেউ ‘গুম’ এবং ‘লাশ সরিয়ে ফেলা’র মতো গুরুতর অভিযোগ করছেন।
সাইবার বিশেষজ্ঞ মেহরাব হোসেন বলেন, ‘ছবির খণ্ডাংশ, অডিও ক্লিপ ও ভুল তথ্য ব্যবহার করে গুজব ছড়ানো সহজ হয়ে উঠেছে। এসব বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে এবং তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।’
মাইলস্টোন কলেজের শিক্ষিকা বিলকিস আরা আইরিন বলেন, “স্কুলে কোন বাচ্চা ক্লাস করেছে তা খুব সহজেই শনাক্ত করা যায়। তাই সংখ্যাগত বিভ্রান্তির সুযোগ থাকার কথা না।”
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, তথ্যে পার্থক্য থাকলেও সেগুলো সমন্বয় করতে আরও কিছুটা সময় লাগবে।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এক ফেসবুক পোস্টে বলেন, “বাংলাদেশে হতাহতের সংখ্যা গোপন করা সম্ভব নয়। নিখোঁজের তথ্য হাসপাতাল ও পরিবার থেকে সরাসরি আসে, তাই তথ্য গোপনের অভিযোগ ভিত্তিহীন।”
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানায়, অপপ্রচার রোধে সরকার, সেনাবাহিনী, বিদ্যালয় ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ একসঙ্গে কাজ করছে। নিখোঁজ কেউ থাকলে তা বিদ্যালয়ের রেজিস্টার খাতা ও উপস্থিতির তথ্য যাচাই করে নিশ্চিত করা হবে।
স্কুল কর্তৃপক্ষও একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। কমিটির সভাপতি অধ্যক্ষ মো. জিয়াউল আলম এবং সদস্যরা আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে হতাহতদের তালিকা প্রণয়ন করে প্রতিবেদন জমা দেবেন।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা ইউনুস আহমদ দাবি করেছেন, “তদন্ত কমিটিতে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।” তিনি বলেন, দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ ও নিহতদের সঠিক সংখ্যা নির্ধারণ না করলে নাগরিকদের মধ্যে সরকারের ওপর আস্থা দুর্বল হবে।
/আশিক
শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসনামলে অর্থ পাচারের অভিযোগে নতুন করে আলোড়ন
যুক্তরাজ্যভিত্তিক প্রভাবশালী দৈনিক ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস সম্প্রতি প্রকাশিত ডকুমেন্টারি “Bangladesh’s Missing Billions, Stolen in Plain Sight”-এ দাবি করা হয়েছে, ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসনামলে বাংলাদেশ থেকে অবৈধভাবে প্রায় ২৩৪ বিলিয়ন ডলার বিদেশে পাচার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এ ডকুমেন্টারিতে বলা হয়, বাণিজ্যে অতিরিক্ত বা কম ইনভয়েস তৈরি, হুন্ডি-হাওলা প্রক্রিয়া এবং যুক্তরাজ্যে সম্পত্তি ক্রয়সহ বিভিন্ন মাধ্যমে এই বিপুল অর্থ বিদেশে পাচার হয়েছে।
ডকুমেন্টারির শুরুতেই শেখ হাসিনার নাটকীয় ক্ষমতাচ্যুতির প্রসঙ্গ তুলে ধরা হয়। এতে ছাত্রনেত্রী রাফিয়া রেহনুমা হৃদি, রেজওয়ান আহমেদ রিফাদ, এফটির দক্ষিণ এশিয়া ব্যুরো প্রধান জন রিড, কমোডিটি সংবাদদাতা সুসানাহ সাভেজ, স্পটলাইট অন করাপশন–এর ডেপুটি ডিরেক্টর হেলেন টেইলরসহ একাধিক রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী ও বিশেষজ্ঞদের সাক্ষাৎকার অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
ডকুমেন্টারিতে বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয় যে, লন্ডন বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থের অন্যতম প্রধান গন্তব্যে পরিণত হয়েছে। যুক্তরাজ্যের বিশাল আর্থিক খাত ও আকর্ষণীয় সম্পত্তি বাজার এ পাচারের জন্য সুবিধাজনক পরিবেশ তৈরি করেছে।
এতে বলা হয়, শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে, যার মধ্যে এমপি টিউলিপ সিদ্দিকের নামও রয়েছে, অবকাঠামো প্রকল্প থেকে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে তদন্ত চলছে। এছাড়া সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী এবং এস আলম গ্রুপ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলমকেও বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগে নাম উল্লেখ করা হয়।
জন রিড ডকুমেন্টারিতে জানান, ব্যাংক পরিচালকরা কখনো কখনো অস্ত্রের মুখে শেয়ার হস্তান্তরে বাধ্য হয়েছেন। অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মুশতাক খান বলেন, “এ ধরনের ঘটনা সিনেমার গল্পকেও হার মানায়। আমি ব্যক্তিগতভাবে কয়েকজনকে চিনি যারা ‘হল অব মিররস’ নামে কুখ্যাত একটি কারাগারে বন্দি ছিলেন।”
ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদক সুসানাহ সাভেজ মন্তব্য করেন, “এ ধরনের দুর্নীতি ও রাষ্ট্রীয় লুটপাটকে আমরা দূরের সমস্যা ভাবতে পারি, কিন্তু আসলে এটি একটি বৈশ্বিক সমস্যা এবং যুক্তরাজ্যও এর কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে।”
অর্থ ফেরত আনা যে অত্যন্ত জটিল প্রক্রিয়া, তাও ডকুমেন্টারিতে উঠে এসেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সম্পদ উদ্ধারের টাস্কফোর্সের উপদেষ্টা ইফতি ইসলাম এটিকে ইতিহাসের অন্যতম জটিল প্রক্রিয়া হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
ডকুমেন্টারিতে অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনুস বলেন, “সব টাকা ফেরত আনা সম্ভব নাও হতে পারে, কিন্তু আমরা যা পারি তার প্রমাণ খুঁজে বের করে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার মাধ্যমে ফেরত আনার চেষ্টা করব। এটি সম্ভবত বিশ্বের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় অর্থপাচারের ঘটনা।”
তবে প্রশ্ন থেকে গেছে—যেসব ব্যবসায়ী ও গোষ্ঠী এই অর্থ বিদেশে সরিয়ে নিয়েছে, তারা ভবিষ্যত সরকারেও প্রভাব খাটাতে পারবে কিনা। জন রিড সতর্ক করে বলেন, “বাংলাদেশের বিপ্লব একটি টার্নিং পয়েন্ট হলেও দেশ আবারও একক রাজনৈতিক আধিপত্যের দিকে ফিরতে পারে।”
ডকুমেন্টারির শেষে রাফিয়া রেহনুমা হৃদি বলেন, “আমাদের সবচেয়ে বড় ভয় হলো, আমরা হয়তো আমাদের শহিদদের কাছে দেওয়া প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে পারব না।”
-হাসানুজ্জামান
নেপালের প্রধানমন্ত্রী সুশীলা কার্কিকে অভিনন্দন জানালেন প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস
বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস নেপালের নবনিযুক্ত প্রধানমন্ত্রী সুশীলা কার্কিকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। শনিবার এক শুভেচ্ছা বার্তায় তিনি নেপালের জনগণ ও সরকারের উদ্দেশে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও শুভকামনা জানান।
ড. ইউনূস বার্তায় বলেন,
“বাংলাদেশ সরকার ও জনগণের পক্ষ থেকে এবং ব্যক্তিগতভাবে আমি আপনাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পাওয়ায় আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছি। এই সংকটময় ও চ্যালেঞ্জিং সময়ে আপনার দায়িত্ব গ্রহণ নেপালের জনগণের আপনার প্রতি আস্থার প্রতিফলন।”
তিনি আরও বলেন, নেপাল বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের বন্ধু ও প্রতিবেশী দেশ।
“আপনার দক্ষ নেতৃত্বে নেপাল শান্তি, উন্নয়ন ও স্থিতিশীলতার পথে এগিয়ে যাবে বলে আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি। বাংলাদেশ নেপালের সঙ্গে বিদ্যমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করতে আগ্রহী।”
ড. ইউনূস সাম্প্রতিক রাজনৈতিক সহিংসতায় প্রাণহানির ঘটনায় শোক প্রকাশ করে বলেন,
“নেপালে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ঘটনাবলিতে যারা প্রাণ হারিয়েছেন, তাঁদের প্রতি আমাদের গভীর শোক ও সমবেদনা রইল। আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি।”
বার্তার শেষে প্রধান উপদেষ্টা নেপালের প্রধানমন্ত্রীর সুস্বাস্থ্য ও সফলতা এবং নেপালের জনগণের শান্তি, সমৃদ্ধি ও স্থায়ী উন্নয়ন কামনা করেন।
-সুত্রঃ বি এস এস
বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে কঠিন অঙ্কে ভারত
বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন নিয়ে ভারত এক জটিল পরিস্থিতিতে পড়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বিএনপি ও জামায়াতের সঙ্গে অতীতে ভারতের সম্পর্ক মধুর না থাকলেও এখন ভারতের সামনে রয়েছে এক কঠিন সমীকরণ। অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গেও তাদের সম্পর্ক শীতল, অন্যদিকে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ। এই পরিস্থিতিতে ভারত কাকে সমর্থন দেবে, তা নিয়ে চলছে ব্যাপক আলোচনা।
অতীতের সম্পর্ক ও বর্তমান অবস্থান
গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার চললেও তাদের সঙ্গে ভারতের খুব বেশি আলোচনা হয়নি। বরং, শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠানোর দাবি, বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা এবং বাণিজ্য সংক্রান্ত বিষয়গুলো নিয়ে দুই দেশের মধ্যে শীতল সম্পর্কই সামনে এসেছে। অতীতে বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে তাদের সঙ্গেও ভারতের সম্পর্ক ভালো ছিল না।
তবে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গত ২০ আগস্ট এক বিবৃতিতে বলেছে, তাদের প্রত্যাশা হলো বাংলাদেশে দ্রুত একটি অবাধ, শান্তিপূর্ণ ও ‘ইনক্লুসিভ’ নির্বাচন হোক। ‘ইনক্লুসিভ’ শব্দটি দিয়ে ভারত বুঝিয়ে দিয়েছে যে, তারা চায় আওয়ামী লীগও নির্বাচনে লড়তে পারুক, যদিও বর্তমানে তাদের রাজনৈতিক কার্যক্রমের ওপর নিষেধাজ্ঞা আছে।
কারা ভারতের পছন্দের তালিকায়?
ওপি জিন্দল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শ্রীরাধা দত্ত বলেছেন, আওয়ামী লীগকে বাদ দিয়ে নির্বাচন হলে ভারত বিএনপিকেই ক্ষমতায় দেখতে চাইবে। কারণ, জামায়াত ও এনসিপি-কে নিয়ে ভারত খুব বেশি আত্মবিশ্বাসী নয়। তার মতে, ভারত নিজের স্বার্থেই চাইবে বাংলাদেশে একটি স্থিতিশীল সরকার আসুক।
প্রবীণ সাংবাদিক জয়ন্ত রায়চৌধুরীও মনে করেন, ভারত কোনো অস্থির সরকার দেখতে চাইবে না। তিনি বলেন, ভারত মনে করে ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও তার প্রশাসন ভারতবিরোধী কথা বলেছেন, যার কারণে তাদের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক ভালো নয়।
অবসরপ্রাপ্ত আইএএস কর্মকর্তা জহর সরকার মনে করেন, ভারত সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ থাকবে। তিনি বলেন, বর্তমান দলগুলোর মধ্যে বিএনপি সবচেয়ে পুরোনো দল। তিনি আরও মনে করেন, বিএনপি যদি ক্ষমতায় আসে, তাহলে ভারত-বিরোধী জামায়াতের উত্থান ঠেকানো যাবে। তবে তিনি এটাও বলেছেন যে, বাংলাদেশের মানুষ যাদের ক্ষমতায় আনবে, ভারত তাদের সঙ্গেই কথা বলতে বাধ্য।
জটিলতা ও ভবিষ্যতের ভাবনা
বিশ্লেষকরা বলছেন, জামায়াতের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক কখনোই ভালো ছিল না। এনসিপি একটি নতুন দল, যার সঙ্গে ভারতের কোনো যোগাযোগই তৈরি হয়নি। তবে জামায়াত সমর্থিত ছাত্রশিবির যেভাবে ডাকসু নির্বাচনে জিতেছে, তাতে বোঝা যাচ্ছে তারা এবার ভোটের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত।
জহর সরকার বলেন, শেষের দিকে শেখ হাসিনার স্বৈরাচারী শাসন ও দুর্নীতি জেনেও ভারত তাকে সমর্থন দিয়ে গেছে। এটা ঠিক নীতি নয়। তবে শেখ হাসিনা সবসময় ভারতের পাশে ছিলেন, তাই তাকে ত্যাগ করা ভারতের পক্ষে সম্ভব নয়। সব মিলিয়ে ভারতের সামনে এখন এক জটিল রাজনৈতিক সমীকরণ। এই অঙ্কে জড়িয়ে আছে শেখ হাসিনা, খালেদা জিয়া, জামায়াত, ইউনূস, এনসিপি এবং নিজেদের স্বার্থের বিষয়টি।
সূত্র: ডয়চে ভেলে
জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি নিয়ে সংকট
‘জুলাই জাতীয় সনদ-২০২৫’ চূড়ান্ত করার শেষ পর্যায়ে রয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। ৭ দফার ভিত্তিতে তৈরি চূড়ান্ত খসড়াটি গত বৃহস্পতিবার রাতেই রাজনৈতিক দলগুলোকে দেওয়া হয়েছে। এই সনদে স্বাক্ষর করার জন্য প্রতিটি দলকে দুজন করে নেতার নাম আজ শনিবারের মধ্যে কমিশনকে জানাতে বলা হয়েছে। তবে সনদ ঘোষণা করার চেয়ে এর বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়েই সবচেয়ে বেশি সংকট দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে সংবিধান সম্পর্কিত বিষয়গুলো কীভাবে বাস্তবায়িত হবে, তা নিয়ে দলগুলোর মধ্যে মতবিরোধ ও জটিলতা রয়ে গেছে।
ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, সনদের চূড়ান্ত খসড়ায় সব মতের প্রতিফলন ঘটানো হয়েছে। তবে তিনি স্বীকার করেছেন যে, বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে মতভিন্নতা রয়ে গেছে। এই সংকট নিরসনে কমিশন আগামী রোববার দলগুলোর সঙ্গে আবারও আলোচনা করবে।
ভিন্নমত ও বাস্তবায়নের বিকল্প পদ্ধতি
সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ব্যাপক মতভিন্নতা রয়েছে। বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী এবং জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) তিন ধরনের পদ্ধতির কথা বলছে।
বিএনপি: সংবিধান সম্পর্কিত প্রস্তাবগুলো আগামী জাতীয় সংসদ গঠনের দুই বছরের মধ্যে বাস্তবায়নের পক্ষে বিএনপি। তাদের মতে, সাংবিধানিক আদেশ জারি বা গণভোটের মতো প্রস্তাবগুলো অগ্রহণযোগ্য। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, “এখন সনদ কার্যকর হলে দেশে দুটি সংবিধান চলমান থাকবে, যা আইনগতভাবে টেকসই নয়।”
জামায়াত ও এনসিপি: জামায়াত ইসলামী ও এনসিপিসহ কিছু দল চায় আগামী নির্বাচনের আগেই রাষ্ট্রপতির বিশেষ আদেশ বা গণভোটের মাধ্যমে সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়ন হোক। জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, “সংস্কার আগামী সংসদের হাতে ছেড়ে দিলে গণঅভ্যুত্থানের প্রতি অবিচার করা হবে।” এনসিপি গণপরিষদ গঠনের মাধ্যমে সনদের বাস্তবায়ন চায়।
অন্যান্য দল: বাংলাদেশ এলডিপির চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম বলেন, সংস্কার প্রস্তাবগুলো টেকসই ও আইনসম্মতভাবে বাস্তবায়ন হওয়া উচিত, যা সংসদ বা অধ্যাদেশ দ্বারা করা যেতে পারে। অন্যদিকে, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার যুবায়ের আহমেদ ভূঁইয়া গণভোট বা গণপরিষদ গঠনের মাধ্যমে এই সনদের বাস্তবায়ন চান।
জুলাই সনদের চূড়ান্ত খসড়া
সনদের চূড়ান্ত খসড়ার পটভূমি এবং অঙ্গীকারনামায় বেশকিছু নতুন বিষয় যুক্ত হয়েছে। এতে বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান, সত্তর সালের নির্বাচনসহ বিভিন্ন ঐতিহাসিক ঘটনাপ্রবাহের উল্লেখ রয়েছে। তবে সনদ বাস্তবায়নের আইনি বাধ্যবাধকতার সুপারিশ চূড়ান্ত খসড়ায় নেই।
ঐকমত্য কমিশন জানিয়েছে, বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়ে সনদের বাস্তবায়ন পদ্ধতি নির্ধারণ করে সরকারকে সুপারিশ করা হবে। সরকারই সিদ্ধান্ত নেবে, কোন পদ্ধতিতে সনদ বাস্তবায়ন হবে। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পলিটিক্যাল স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. সাহাবুল হক বলেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন হবে বাংলাদেশের জন্য একটি যুগান্তকারী রাজনৈতিক মাইলফলক, যদি এটিকে রাজনৈতিক দলগুলোর সুবিধাবাদী সমঝোতার বাইরে নিয়ে গিয়ে আইনি ও প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর মধ্যে আবদ্ধ করা যায়।
লন্ডনে মাহফুজ আলমকে লক্ষ্য করে হামলার চেষ্টা
যুক্তরাজ্যের লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনের সহযোগিতায় আয়োজিত একটি সেমিনার থেকে বের হওয়ার সময় তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলমকে লক্ষ্য করে হামলার চেষ্টা চালান আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা–কর্মীরা। এ ঘটনা ঘটে শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টার দিকে, কেন্দ্রীয় লন্ডনের ব্লুমসবারি এলাকায় অবস্থিত সোয়াস ইউনিভার্সিটি অব লন্ডন (দ্য স্কুল অব অরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজ) ক্যাম্পাসের পেছনের সড়কে।
বাংলাদেশ হাইকমিশন ও সোয়াস বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ উদ্যোগে ওই সেমিনারের আয়োজন করা হয়। এতে অংশ নেওয়ার কথা ছিল মাহফুজ আলমেরও। অনুষ্ঠান শেষে হাইকমিশনের একটি কালো বিএমডব্লিউ গাড়ি ক্যাম্পাস থেকে বের হওয়ার সময় আওয়ামী লীগের কর্মীরা সেটির ওপর ডিম নিক্ষেপ করেন। একই সঙ্গে কয়েকজন গাড়ির সামনে শুয়ে পড়ার চেষ্টা করেন। তবে দ্রুত পুলিশ হস্তক্ষেপ করায় তাদের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়।
লন্ডন হাইকমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, হামলাকারীরা মনে করেছিলেন গাড়ির ভেতরে মাহফুজ আলম অবস্থান করছেন। কিন্তু বাস্তবে তিনি নিরাপত্তাজনিত কারণে অন্য একটি গাড়িতে ভিন্ন রাস্তায় করে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা ত্যাগ করেছিলেন।
এ প্রসঙ্গে লন্ডনে নিযুক্ত বাংলাদেশ হাইকমিশনের প্রেস মিনিস্টার আকবর হোসেন গণমাধ্যমকে জানান, “স্থানীয় আওয়ামী লীগ কর্মীরা যে গাড়িটিতে ডিম ছুড়েছে, তারা ভেবেছিলেন সেখানে তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম রয়েছেন। কিন্তু তিনি অন্য গাড়িতে এবং অন্য রুটে ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন।”
ঘটনার পর লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের এক বছর’ শীর্ষক আলোচনা সভায় উপস্থিত হয়ে মাহফুজ আলম বলেন, “আজ আমি আওয়ামী লীগের আক্রমণের একেবারেই কাছাকাছি চলে গিয়েছিলাম।”
-রফিক
এফটির তথ্যচিত্র: শেখ হাসিনার আমলে বাংলাদেশের হারানো বিলিয়ন ডলারের গল্প
লন্ডনভিত্তিক প্রভাবশালী দৈনিক ফিন্যান্সিয়াল টাইমস (এফটি) গত বৃহস্পতিবার প্রকাশ করেছে একটি নতুন তথ্যচিত্র— “বাংলাদেশের হারানো বিলিয়ন: চোখের সামনেই চুরি”। এতে মূলত শেখ হাসিনার শাসনামলে (২০০৯–২০২৩) সংঘটিত দুর্নীতি, বিপুল অর্থ পাচার এবং সেই অর্থ পুনরুদ্ধারের চ্যালেঞ্জকে ঘিরে বিশদ অনুসন্ধান তুলে ধরা হয়েছে। তথ্যচিত্রে রাজনীতিক, আন্দোলনকারী, ব্যবসায়ী ও বিশেষজ্ঞদের সাক্ষাৎকারের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটও আলোচিত হয়েছে।
দুর্নীতির ব্যাপ্তি ও অভিযোগ
এফটির ভাষ্যে, শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসনামলে প্রায় ২৩৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বাংলাদেশ থেকে পাচার হয়েছে—যার পরিমাণ বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ২৮ লাখ ৫৪ হাজার ৮০০ কোটি টাকা। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ অর্থ পাচারের ঘটনা। তথ্যচিত্রে উল্লেখ করা হয়, “বাংলাদেশে দুর্নীতির পরিমাণ বিশ্বের অন্য যেকোনো দেশের তুলনায় নজিরবিহীন”।
বড় প্রকল্পে দুর্নীতি, ব্যাংক খাতে জালিয়াতি, ভুয়া ঋণ এবং হুন্ডি নেটওয়ার্কের মাধ্যমে এই অর্থ বিদেশে পাচার করা হয়েছে। উল্লেখযোগ্যভাবে, যুক্তরাজ্যকে এই পাচারকৃত অর্থের প্রধান গন্তব্য হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
যুক্তরাজ্যের ভূমিকা ও সম্পদ পুনরুদ্ধার
তথ্যচিত্রে বলা হয়, যুক্তরাজ্যের রিয়েল এস্টেট খাত ও আর্থিক বাজার বাংলাদেশি দুর্নীতিবাজদের কাছে সবচেয়ে আকর্ষণীয় ছিল। জাতীয় অপরাধ দমন সংস্থা (NCA) ইতোমধ্যেই যুক্তরাজ্যে অন্তত ৩৫০টি সম্পদ চিহ্নিত ও ফ্রিজ করেছে, যার অধিকাংশের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রভাবশালী রাজনৈতিক পরিবার ও ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর যোগসূত্র রয়েছে।
উদাহরণ হিসেবে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর নাম উঠে এসেছে, যিনি একাই যুক্তরাজ্যে ৩০০টিরও বেশি সম্পত্তির মালিক বলে এফটির তদন্তে দাবি করা হয়।
ছাত্র আন্দোলন ও হাসিনার পতন
তথ্যচিত্রে বলা হয়, ২০২৪ সালের জুলাই–আগস্টে কোটা সংস্কার আন্দোলন শেখ হাসিনা সরকারের পতনের টার্নিং পয়েন্টে পরিণত হয়। পুলিশের গুলি, নিখোঁজ, দমননীতি এবং হাজারো হতাহতের ঘটনায় সরকারের প্রতি জনগণের ক্ষোভ বিস্ফোরিত হয়। আগস্টের ৫ তারিখে যখন পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালাতে অস্বীকৃতি জানায়, তখন হাসিনা দেশত্যাগে বাধ্য হন। জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, আন্দোলনে অন্তত ১,৪০০ জন নিহত হন।
পারিবারিক প্রভাব ও আন্তর্জাতিক বিতর্ক
তথ্যচিত্রে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার পরিবারের সদস্যদের নামও উঠে এসেছে। বিশেষত যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত শেখ রেহানার কন্যা ও লেবার পার্টির সাবেক মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিককে নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে পরোক্ষভাবে দুর্নীতির অর্থে অর্জিত সম্পদ গ্রহণের অভিযোগ ওঠে, যদিও তিনি তা দৃঢ়ভাবে অস্বীকার করেছেন এবং রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র বলে অভিহিত করেছেন।
ব্যাংক খাত দখল ও অর্থ পাচার কৌশল
এফটির অনুসন্ধানে দেখা যায়, আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী অংশ গোয়েন্দা সংস্থা ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স (ডিজিএফআই)-এর সহায়তায় একাধিক ব্যাংক দখল করে নেয়। ব্যাংক পরিচালনা পর্ষদকে বন্দুকের মুখে পদত্যাগে বাধ্য করা হয়, পরে নিজেদের লোক দিয়ে বোর্ড পুনর্গঠন করা হয়। এরপর ভুয়া ঋণ অনুমোদন দিয়ে হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করা হয়।
হুন্ডি বা অবৈধ মানি ট্রান্সফার নেটওয়ার্ক ছিল এ অর্থ পাচারের অন্যতম প্রধান মাধ্যম। আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে ওভার ইনভয়েসিং ও আন্ডার ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমেও বিপুল অর্থ বিদেশে চলে গেছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের ভূমিকা ও সম্পদ পুনরুদ্ধার
শেখ হাসিনার পতনের পর নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেন। তিনি প্রাক্তন আইএমএফ কর্মকর্তা আহসান মন্সুরকে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ও অ্যাসেট রিকভারি টাস্কফোর্সের প্রধান করেন। তাঁদের নেতৃত্বে ইতোমধ্যেই দেউলিয়া ব্যাংকগুলো পুনর্গঠন এবং বিদেশে পাচার হওয়া অর্থের খোঁজে অভিযান শুরু হয়েছে।
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এত বিপুল অর্থ ফেরত আনা একটি “ঐতিহাসিকভাবে জটিল প্রক্রিয়া”। প্রমাণ সংগ্রহ, আন্তর্জাতিক সহযোগিতা এবং আইনি প্রক্রিয়াই নির্ধারণ করবে কতটা অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে।
ফিন্যান্সিয়াল টাইমস-এর এই তথ্যচিত্র বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে শেখ হাসিনা শাসনামলের দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের চিত্রকে নতুনভাবে সামনে এনেছে। এতে যেমন অভ্যন্তরীণ দুর্বলতা ও প্রশাসনিক ব্যর্থতা তুলে ধরা হয়েছে, তেমনি আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে যুক্তরাজ্য ও বৈশ্বিক আর্থিক ব্যবস্থার ভূমিকার দিকেও ইঙ্গিত করা হয়েছে।
বাংলাদেশের জনগণ একটি দীর্ঘ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে যে পরিবর্তন এনেছে, তা এখন পরীক্ষার মুখে—এই হারানো বিলিয়ন ফেরত আনার মাধ্যমে কি সত্যিই দেশ একটি টেকসই ও জবাবদিহিমূলক পথে অগ্রসর হতে পারবে?
১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে জাতীয় নির্বাচন: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানিয়েছেন যে, আসন্ন জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে এবং এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠান কাজ করছে। তার ভাষায়, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে পুরো জাতি প্রস্তুত এবং সরকার আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে জাতীয় নির্বাচন সম্পন্ন করার ব্যাপারে আশাবাদী।
শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) সকালে মাগুরায় ইসলামী রেনেসাঁর কবি ফররুখ আহমদের পৈতৃক বাড়ি পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, বর্ষা শেষ হলেই গ্রাম থেকে শহর—সব জায়গায় নির্বাচনী আবহ তৈরি হবে। দীর্ঘ ১৭ বছর যারা ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন, তারাও এবার নতুন প্রজন্মের সঙ্গে উৎসাহ ও উদ্দীপনার সঙ্গে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে নিজেদের মত প্রকাশ করবেন।
তিনি আরও জানান, জুলাই সনদ বাস্তবায়নকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে নিয়মিত আলোচনা চলছে। সমঝোতার ভিত্তিতে সংস্কার কার্যক্রম এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে, আর এই সংস্কার এখন দৃশ্যমান রূপ পাচ্ছে। এ প্রসঙ্গে তিনি আশ্বস্ত করেন যে, সংস্কারের কাজ অব্যাহত রয়েছে এবং তা দ্রুত অগ্রসর হচ্ছে।
শফিকুল আলম সম্প্রতি অনুষ্ঠিত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচন নিয়েও মন্তব্য করেন। তার মতে, ডাকসু নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন হয়েছে এবং কোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেনি।
সামগ্রিকভাবে প্রেস সচিবের বক্তব্য থেকে প্রতীয়মান হয় যে, ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচন শুধু রাজনৈতিক প্রক্রিয়া নয়, বরং তা জাতির জন্য একটি গণতান্ত্রিক উৎসব হিসেবে অনুষ্ঠিত হবে। একই সঙ্গে সংস্কারের ধারাবাহিকতা ও রাজনৈতিক ঐক্যমতের ভিত্তিতে এই নির্বাচনকে একটি নতুন সূচনার প্রতীক হিসেবে দেখতে চাইছে অন্তর্বর্তী সরকার।
দুর্বল পাঁচ ব্যাংক একীভূতকরণ, উদ্যোক্তাদের সব শেয়ার বাজেয়াপ্ত
বাংলাদেশের ব্যাংক খাতে নজিরবিহীন সংস্কার উদ্যোগ হিসেবে পাঁচটি দুর্বল ইসলামী ব্যাংককে একীভূত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী উদ্যোক্তাদের মালিকানাধীন সব শেয়ার বাজেয়াপ্ত করা হবে এবং এর বিপরীতে কোনো ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না। কারণ এই ব্যাংকগুলোর নিট সম্পদ বর্তমানে ঋণাত্মক অবস্থায় রয়েছে। নতুনভাবে গঠিত ব্যাংক শতভাগ সরকারি মালিকানায় পরিচালিত হবে এবং এর জন্য নতুন পরিচালনা পর্ষদ ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হবে।
একীভূত হওয়ার তালিকায় রয়েছে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (এসআইবিএল), ইউনিয়ন ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক এবং এক্সিম ব্যাংক। এর মধ্যে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক দীর্ঘদিন ধরে এস আলম গ্রুপের মালিকানায় ছিল। তবে বাকি চারটি ব্যাংক ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে যায়। নিয়ন্ত্রণে যাওয়ার পর এসব ব্যাংকে শুরু হয় ব্যাপক অনিয়ম ও লুটপাট, যার বড় অংশ পাচার হয়ে যায় বিদেশে। ফলস্বরূপ ব্যাংকগুলো দুর্বল হয়ে পড়ে এবং গ্রাহকদের আমানত ফেরত দিতে ব্যর্থ হয়।
পরিস্থিতি সামাল দিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক দীর্ঘদিন ধরে নীতি সহায়তা দিয়ে আসছিল এবং ব্যাংকগুলোর জন্য গ্যারান্টি দিয়েছিল। তবুও ব্যাংকগুলো স্বাভাবিক কার্যক্রমে ফিরতে পারেনি। এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ ব্যাংক একীভূতকরণের সিদ্ধান্ত নেয় এবং সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠকে প্রস্তাব অনুমোদন পেয়েছে। এখন এটি ওয়ার্কিং কমিটির আসন্ন বৈঠকে চূড়ান্ত করা হবে এবং পরে বাস্তবায়নের কাজ শুরু হবে।
নতুন ব্যাংকের পরিশোধিত মূলধন নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৫ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকার থেকে আসবে ২০ হাজার কোটি টাকা, আমানত বিমা তহবিল থেকে প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকা এবং প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে আসবে ৩ হাজার কোটি টাকা। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিজস্ব তহবিল থেকে কোনো অর্থ দেওয়া হবে না। নতুন ব্যাংক কার্যক্রম শুরু করার পর কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঋণ সরবরাহ ও নীতি সহায়তা প্রদান করবে।
একীভূত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পাঁচ ব্যাংকের সব সম্পদ ও দায় নতুন ব্যাংকের নামে হস্তান্তর করা হবে। বর্তমানে এই ব্যাংকগুলোর রয়েছে ৭৬০টি শাখা ও ৬৯৮টি উপশাখা। অনেক এলাকায় একাধিক শাখা থাকায় সেগুলোকে পুনর্বিন্যাস করা হবে। সুবিধাজনক শাখা রাখা হবে এবং বাকি শাখাগুলো অন্য এলাকায় স্থানান্তর করা হবে যাতে ব্যাংকটির কার্যক্রম লাভজনক হয়। একইভাবে, কাছাকাছি অবস্থিত শাখাগুলো সমন্বয় করে কার্যকর অবস্থানে আনা হবে।
বর্তমানে পাঁচ ব্যাংকের পাঁচজন সিইও আছেন। তবে নতুন ব্যাংকে থাকবেন একজন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, যিনি নতুনভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত হবেন। বিদ্যমান কোনো এমডি ওই পদে যেতে পারবেন না। তবে নিচের স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছাঁটাই করা হবে না, প্রয়োজনে তাদের পদ বা কর্মস্থলে পরিবর্তন আনা হতে পারে।
উদ্যোক্তাদের সব শেয়ার বাজেয়াপ্ত করা হবে, কারণ ব্যাংকগুলোর নিট সম্পদ ঋণাত্মক এবং শেয়ারের বিপরীতে কোনো সম্পদ অবশিষ্ট নেই। বরং তারা লোকসানে রয়েছে। তাই উদ্যোক্তারা কোনো ক্ষতিপূরণ পাবেন না। তবে সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের আংশিক ক্ষতিপূরণ দেওয়া হতে পারে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক তথ্য সংগ্রহ করছে।
অন্যদিকে, আমানতকারীদের অর্থ ফেরত দেওয়ার বিষয়ে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে সাময়িক মোরাটোরিয়াম আরোপ হতে পারে, যার ফলে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য আমানতকারীরা নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে অর্থ তুলতে পারবেন। তবে এটি সাময়িক ব্যবস্থা। কারণ সরকারি মালিকানায় নতুন ব্যাংক গঠনের পর গ্রাহকদের আস্থা বাড়বে এবং নতুন আমানতের প্রবাহ বৃদ্ধি পাবে। সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে নতুন ব্যাংকে আমানত রাখতে উৎসাহিত করা হবে যাতে দ্রুত তারল্য সংকট কেটে যায়।
প্রাতিষ্ঠানিক আমানতকারীদের ক্ষেত্রেও সমাধান রাখা হয়েছে। যেসব প্রাতিষ্ঠানিক গ্রাহকের বিপুল অঙ্কের অর্থ ফেরত দেওয়া যাচ্ছে না, তাদের নতুন ব্যাংকের শেয়ার প্রদান করা হবে। যেহেতু ব্যাংকটি সরকারি মালিকানায় থাকবে, তাই তারা এ শেয়ার নিতে আগ্রহী হবেন বলে ধারণা করছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
-রাফসান
ফাউন্ডেশনাল ইলেকশন সামনে: জুলাই সনদ বাস্তবায়নে জোর দিলেন ড. ইউনূস
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, নতুন সরকারের দায়িত্ব শুধু নির্বাচন আয়োজন বা বিচারকাজের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়; সমান গুরুত্ব দিতে হবে সংস্কার কার্যক্রম ও জুলাই সনদের বাস্তবায়নকে। তাঁর মতে, অন্তর্বর্তী সরকারের তিনটি প্রধান ম্যান্ডেটের অন্যতম হচ্ছে সংস্কার, যা ভবিষ্যতের জন্য পথনির্দেশক হবে।
বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনের বৈঠকে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বৈঠকে রাজনৈতিক দলগুলোর দেওয়া প্রস্তাবনা এবং কমিশনের সুপারিশ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। বৈঠক শেষে জানানো হয়, কমিশন খুব শিগগির তাদের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন অন্তর্বর্তী সরকারের হাতে জমা দেবে।
ড. ইউনূস বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচন বাংলাদেশের জন্য একটি ফাউন্ডেশনাল ইলেকশন। এটি শুধু সাধারণ ভোট নয়, বরং আগামীর বাংলাদেশ কোন পথে এগোবে তা নির্ধারণের অন্যতম মোড় ঘোরানো ঘটনা। তাই নির্বাচনকে সামনে রেখে মৌলিক সংস্কারগুলো দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে। তিনি স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেন, ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন আয়োজনের বিকল্প কোনো পথ নেই।
জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে বৈঠকে জানানো হয়, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের জন্য ইতিমধ্যেই ছয় সদস্যবিশিষ্ট কমিটি প্রস্তাবনা তৈরি করেছে। এসব প্রস্তাব বৈঠকে উপস্থাপন করা হয়। কমিশন আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আবারও বৈঠকে বসবে, যাতে বিষয়টি সামনে এগিয়ে নেওয়া যায়।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. মো. আইয়ুব মিয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার। এছাড়া অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, আইনবিদ আসিফ নজরুল, পরিবেশবিদ সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমানও বৈঠকে যোগ দেন।
ড. ইউনূসের বক্তব্য ও কমিশনের আলোচনার প্রেক্ষাপটে স্পষ্ট, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন এখন জাতীয় অগ্রাধিকারের তালিকায় শীর্ষে উঠে এসেছে। নির্বাচন, বিচার ও সংস্কার—এই তিন ম্যান্ডেট সমান্তরালভাবে বাস্তবায়ন করতে পারলেই অন্তর্বর্তী সরকারের গ্রহণযোগ্যতা এবং আগামীর বাংলাদেশ নতুন দিগন্তে পৌঁছাবে।
পাঠকের মতামত:
- শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসনামলে অর্থ পাচারের অভিযোগে নতুন করে আলোড়ন
- বাজার ব্যবস্থাপনায় টেকসই সরবরাহই স্থিতিশীলতার মূলমন্ত্র: শেখ বশির উদ্দিন
- নেপালের প্রধানমন্ত্রী সুশীলা কার্কিকে অভিনন্দন জানালেন প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস
- অপারেশন থিয়েটারের আলো: ছায়াহীন বিস্ময়ের বৈজ্ঞানিক রহস্য
- আজকের মুদ্রা বিনিময় হারের বিশ্লেষণ
- বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ংকর পাখি: সাউদার্ন ক্যাসোয়ারির রহস্যময়তা ও আতঙ্ক
- জাকসু নির্বাচনের ফলাফল দেওয়ার সময় জানা গেল
- দিশা পাটানির বাড়িতে গুলিবর্ষণ: আতঙ্কে পরিবার, কঠোর নিরাপত্তায় বাড়ি ঘিরে ফেলল পুলিশ
- ম্যানচেস্টার ডার্বির আগে রুবেন আমোরিমের হুঁশিয়ারি: "আমরা ভিন্ন দল"
- ওল্ড ট্রাফোর্ডে ইতিহাস: ফিল সল্টের ঝড়ো সেঞ্চুরিতে ইংল্যান্ডের রেকর্ড জয়
- কিম জং উনের নতুন সামরিক নীতি: একসাথে পারমাণবিক ও প্রচলিত শক্তি বৃদ্ধির ঘোষণা
- মোদি বনাম ভাগবত: বিজেপি–আরএসএস সম্পর্কে ফাটল
- বোলসোনারোর ২৭ বছরের কারাদণ্ড: ব্রাজিলের রাজনীতিতে নতুন অনিশ্চয়তা
- ভূমি মন্ত্রণালয়ে বড় নিয়োগ!
- জানুন নিয়মিত সাঁতারের ছয় বড় উপকারিতা
- রাশিয়ার উপকূলে শক্তিশালী ভূমিকম্প, সুনামির আশঙ্কা
- ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ-যুবলীগের ঝটিকা মিছিল
- আজ রাতে এশিয়া কাপে বাংলাদেশের ম্যাচ, টিভিতে আরও যা দেখবেন
- ফিলিস্তিনিদের ওপর আগ্রাসন বন্ধে আন্তর্জাতিক চাপ বৃদ্ধির আহ্বান তারেক রহমানের
- নিহত সাংবাদিক শিবলীর পরিবারের পাশে দাঁড়াল ছাত্রশিবির
- আজ ৮ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকবে না যেসব এলাকায়
- সংসদ ভেঙে দিলেন নেপালের নতুন নারী প্রধানমন্ত্রী, নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা
- ৪ দাবিতে যুগপৎ আন্দোলনে নামছে ৮ রাজনৈতিক দল
- বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে কঠিন অঙ্কে ভারত
- জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি নিয়ে সংকট
- জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভোট গণনা নিয়ে অনিশ্চয়তা
- গণপরিষদ বা হ্যাঁ-না ভোটের দাবি এবি পার্টির ফুয়াদের
- বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন নিয়ে ভারতের জটিল সমীকরণ
- ঢাকা ও বিভাগীয় শহরের নামাজের সময় ঘোষণা
- বায়তুল মোকাররমে শুরু হলো মাসব্যাপী ইসলামি বইমেলা
- কুরআন, উপহার ও দিকনির্দেশনা: ভিন্নধর্মী নবীনবরণ বেরোবিতে
- বাংলাদেশে চীনা বিনিয়োগে রেকর্ড প্রবৃদ্ধি
- লন্ডনে মাহফুজ আলমকে লক্ষ্য করে হামলার চেষ্টা
- নেপালে অন্তর্বর্তী সরকার, নেতৃত্বে সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কারকি
- উন্নয়ন, নিরাপত্তা ও ভূরাজনীতি: জাপান–বাংলাদেশ সম্পর্কের ভবিষ্যৎ সমীকরণ
- এফটির তথ্যচিত্র: শেখ হাসিনার আমলে বাংলাদেশের হারানো বিলিয়ন ডলারের গল্প
- ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে জাতীয় নির্বাচন: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব
- হাসিনা, রাজাপাকসে, শর্মা–এর পর কি এবার মোদি? মণিপুরের অস্থিরতায় দিল্লিতে কাঁপন
- ডাকসু নির্বাচন কি জাতীয় রাজনীতির পূর্বাভাস? জানালেন পিনাকী ভট্টাচার্য
- ঢাকার বাজারে নিত্যপণ্যের দাম: কোন পণ্য বেড়েছে, কোথায় মিলছে স্বস্তি
- জাহাঙ্গীরনগরে রাতভর ভোট গণনা, বিক্ষোভ ও বর্জনে উত্তপ্ত ক্যাম্পাস
- নেপালে রক্তক্ষয়ী বিক্ষোভ: নিহত ৩৪, আহত দেড় হাজারের বেশি
- জাকসু ভোট গণনায় ট্র্যাজেডি: দায়িত্ব পালনে এসে সহকারী অধ্যাপকের মৃত্যু
- UNHRC-তে মুখোমুখি ভারত–সুইজারল্যান্ড, পাকিস্তানকে আক্রমণ দিল্লির
- দুর্বল পাঁচ ব্যাংক একীভূতকরণ, উদ্যোক্তাদের সব শেয়ার বাজেয়াপ্ত
- জাকসু নির্বাচনী দায়িত্বে শিক্ষকের মৃত্যু
- লিটনের ব্যাটে স্মার্ট জয়: হংকংকে উড়িয়ে দিল বাংলাদেশ
- ফাউন্ডেশনাল ইলেকশন সামনে: জুলাই সনদ বাস্তবায়নে জোর দিলেন ড. ইউনূস
- ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে ঝড়ের উত্থান: ২৮২ শেয়ার দাম বাড়ল, লেনদেনে রেকর্ড ৭৭৮ কোটি টাকা!
- জুলাই সনদ বাস্তবায়নে রাজনৈতিক দলের অঙ্গীকার জরুরি: বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন
- এফটির তথ্যচিত্র: শেখ হাসিনার আমলে বাংলাদেশের হারানো বিলিয়ন ডলারের গল্প
- উন্নয়ন, নিরাপত্তা ও ভূরাজনীতি: জাপান–বাংলাদেশ সম্পর্কের ভবিষ্যৎ সমীকরণ
- ডাকসু নির্বাচনের ভোট শেষ, ফলাফলের আগে অস্থির ঢাবি—পাল্টাপাল্টি অভিযোগে উত্তপ্ত পরিবেশ
- নেপালে অন্তর্বর্তী সরকার, নেতৃত্বে সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কারকি
- ডিএসইতে আজকের লেনদেন শেষে টপ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- জুলাই সনদ বাস্তবায়নে রাজনৈতিক দলের অঙ্গীকার জরুরি: বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন
- ডাকসু নির্বাচন: ৪৭১ প্রার্থী, ৩৯ হাজার ভোটার, টানটান নিরাপত্তায় উৎসবমুখর ভোটযুদ্ধ
- ফাউন্ডেশনাল ইলেকশন সামনে: জুলাই সনদ বাস্তবায়নে জোর দিলেন ড. ইউনূস
- নেপালে অস্থিরতা: বাংলাদেশি নাগরিকদের ঘরে থাকার নির্দেশ দূতাবাসের
- লিটনের ব্যাটে স্মার্ট জয়: হংকংকে উড়িয়ে দিল বাংলাদেশ
- প্রথমবার আস্থা ভোটে প্রধানমন্ত্রী বিদায়, ইতিহাস গড়ল ফ্রান্স
- শেখ হাসিনার উত্তরাধিকার প্রশ্ন: আওয়ামী লীগের সামনে এক অমীমাংসিত সংকট
- জাকসু নির্বাচন: প্রার্থীদের জন্য আজ বাধ্যতামূলক ডোপ টেস্ট
- উটাহে চার্লি কার্ক হত্যা: রাজনৈতিক সহিংসতার নতুন ধাক্কায় আমেরিকার গণতন্ত্র ও নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা
- নিরাপদ কাতারেও হামলা! দোহায় ইসরাইলি হামলায় তোলপাড় আরব বিশ্ব