বদলে যাচ্ছে অর্থনীতির চিত্র! রিজার্ভে রেকর্ড প্রবাহ

অর্থনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুন ২৯ ১৯:৪৭:২৪
বদলে যাচ্ছে অর্থনীতির চিত্র! রিজার্ভে রেকর্ড প্রবাহ

আন্তর্জাতিক ঋণ ও রেমিট্যান্সের জোয়ারে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে ফিরেছে দৃঢ়তা ও স্থিতিশীলতা। প্রায় দুই বছর পর দেশের রিজার্ভ আবারও ৩১ বিলিয়ন ডলারের ঘর অতিক্রম করেছে।

রোববার (২৯ জুন) বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান জানান, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ), বিশ্বব্যাংক, ওপেক ফান্ডসহ একাধিক উৎস থেকে আসা প্রায় ৩.৫ বিলিয়ন ডলারের ঋণ যুক্ত হওয়ায় দেশের মোট বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩১.৩১ বিলিয়ন ডলারে।

এর আগে সর্বশেষ ২০২৩ সালের জুন মাসে রিজার্ভ ছিল ৩১.২০ বিলিয়ন ডলার। তবে আইএমএফ অনুমোদিত হিসাব পদ্ধতি Balance of Payments and International Investment Position Manual (BPM6) অনুযায়ী বর্তমানে রিজার্ভ ২৬.৩২ বিলিয়ন ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১.৫৭ বিলিয়ন ডলার বেশি।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, গত ১০ মাস ধরে রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি বন্ধ রাখা হয়েছে। একই সঙ্গে প্রবাসী আয়ও বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। বর্তমান ২০২৪-২৫ অর্থবছরে এ পর্যন্ত প্রবাসী আয় এসেছে ৩০.০৫ বিলিয়ন ডলার, যেখানে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে মোট আয় ছিল ২৩.৯১ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ এক বছরে ৬ বিলিয়ন ডলার বেশি এসেছে প্রবাসীদের পাঠানো বৈধ আয় থেকে।

বলা হচ্ছে, আওয়ামী লীগ সরকারের বিদায়ের পর প্রবাসীরা হুন্ডির বদলে বৈধ চ্যানেলে অর্থ পাঠাতে উৎসাহ পাচ্ছেন। এই প্রবণতা বৈদেশিক মুদ্রাবাজারে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।

এদিকে, চলতি অর্থবছরের শুরুতে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থা ও দেশ থেকে বাজেট সহায়তা, ব্যাংক খাত ও রাজস্ব খাত সংস্কারমূলক ঋণ হিসেবে দেশে এসেছে ৫ বিলিয়ন ডলারের বেশি। এতে চাপমুক্ত হয়েছে বৈদেশিক ব্যয় ও আমদানি ব্যালেন্স।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে আরও জানা গেছে, খুব শিগগিরই আইএমএফ থেকে আরও ৯০০ মিলিয়ন ডলারের ঋণ ছাড় হবে। একই সঙ্গে বিশ্বব্যাংক, এশীয় অবকাঠামো বিনিয়োগ ব্যাংক (AIIB), জাপান ও ওপেক ফান্ড থেকে আরও ১.৫ বিলিয়ন ডলারের ঋণ আসার কথা রয়েছে, যা এই জুন মাসেই রিজার্ভের হিসাবভুক্ত হবে। এতে মাসশেষে দেশের মোট রিজার্ভ ৩২ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাতে পারে বলে আশাবাদী বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা।

তবে এই পরিসংখ্যানের বাইরে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো রপ্তানি আয়ের ঊর্ধ্বমুখিতা। দেশের রপ্তানি আয় বেড়েছে প্রায় ৯ শতাংশ, যা রিজার্ভ বৃদ্ধির আরেকটি বড় চালিকা শক্তি। যদিও আমদানি খাতে ৫ শতাংশের মতো বৃদ্ধি দেখা যাচ্ছে, তবুও আয় ও ব্যয়ের এই ভারসাম্যে দেশের বৈদেশিক খাত এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে।

প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালের ৩১ জুলাই, আওয়ামী লীগ সরকারের বিদায়ের ঠিক আগে রিজার্ভ ছিল ২৫.৯২ বিলিয়ন ডলার, যেখানে আইএমএফ মান অনুযায়ী তা ছিল মাত্র ২০.৪৮ বিলিয়ন ডলার। সেই তুলনায় বর্তমান পরিস্থিতি ইতিবাচক এবং অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের বার্তাই বহন করছে।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

প্রেস সচিবের বক্তব্যে বাকস্বাধীনতা, মব কালচার ও সাংবাদিকতার দ্বন্দ্ব: পাঠবিশ্লেষণ

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রেস সচিব শফিকুল আলম সম্প্রতি এক দীর্ঘ বক্তব্যে দেশের সাংবাদিকতা, সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং সরকারের অবস্থান নিয়ে বিস্তারিত... বিস্তারিত