প্রথমবারের মতো সিভিল সার্জন সম্মেলন, উদ্বোধনে প্রধান উপদেষ্টা

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ মে ১২ ০৯:৪৪:৩৩
প্রথমবারের মতো সিভিল সার্জন সম্মেলন, উদ্বোধনে প্রধান উপদেষ্টা

সত্য নিউজ:দেশের স্বাস্থ্যখাত পুনর্গঠনের অংশ হিসেবে আজ থেকে শুরু হচ্ছে প্রথমবারের মতো সিভিল সার্জন সম্মেলন। দুই দিনব্যাপী এই সম্মেলনের সূচনা করবেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে রাজধানীর শহীদ আবু সাইদ ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে, যা হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সংলগ্ন।

এই সম্মেলন স্বাস্থ্য প্রশাসনে জেলা পর্যায়ে সুশাসন, দক্ষতা এবং দায়িত্ববোধ জোরদারে একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। প্রতি বছর জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) নিয়ে আয়োজিত সম্মেলনের আদলে এই প্রথমবার ৬৪ জেলার সিভিল সার্জনদের সমন্বয়ে আয়োজিত হচ্ছে সম্মেলনটি।

স্বাস্থ্যখাতের সংস্কারে মাঠপর্যায়ের অভিজ্ঞতা

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আয়োজিত এ সম্মেলনে জেলার স্বাস্থ্যসেবা খাতের বাস্তব সমস্যা, চ্যালেঞ্জ এবং সম্ভাবনা নিয়ে মতবিনিময় হবে। সম্মেলনের আগে সিভিল সার্জনদের নিজ নিজ জেলার স্বাস্থ্যসেবা বিষয়ক প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে বলা হয়েছিল। সেই প্রেক্ষিতে তারা জনবল ঘাটতি, চিকিৎসা অবকাঠামোর দুর্বলতা, বাজেটের স্বচ্ছতা ও বাল্যবিয়ে প্রতিরোধসহ নানাবিধ সমস্যার চিত্র তুলে ধরেছেন।

এছাড়া সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে দুইজন সিভিল সার্জন নিজ জেলার স্বাস্থ্যব্যবস্থার বাস্তব চিত্র এবং প্রয়োজনীয় সুপারিশ তুলে ধরবেন প্রধান উপদেষ্টার সামনে।

নীতিনির্ধারণে অংশগ্রহণমূলক মডেল

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এ সম্মেলনের লক্ষ্য কেবল কেন্দ্র থেকে নির্দেশনা দেওয়া নয়; বরং মাঠপর্যায়ের অভিজ্ঞতাকে রাষ্ট্রীয় নীতিনির্ধারণ প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্ত করা। এই অংশগ্রহণমূলক পদ্ধতি ভবিষ্যতে নীতিগত সিদ্ধান্ত আরও বাস্তবমুখী ও কার্যকর করতে সহায়ক হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

সম্মেলনের বিভিন্ন অধিবেশনে অংশ নেবেন স্বাস্থ্য, পরিবার কল্যাণ, স্থানীয় সরকার, অর্থ মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা, সচিব ও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা। তাঁরা নানান বিষয়ে দিকনির্দেশনা দেবেন—বিশেষ করে স্বাস্থ্য অবকাঠামোর উন্নয়ন, স্বাস্থ্যসেবায় জবাবদিহিতা, টিকা কর্মসূচির কার্যকারিতা, বাল্যবিয়ে রোধে স্বাস্থ্য বিভাগের করণীয়, এবং মাঠপর্যায়ে জনস্বাস্থ্যসেবা জোরদার করতে কৌশলগত পদক্ষেপ।

প্রত্যাশা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

একাধিক সূত্রে জানা গেছে, সম্মেলনে বিভিন্ন জেলার হাসপাতালে শয্যা সংখ্যা বৃদ্ধির প্রস্তাব, উপজেলা পর্যায়ে অ্যাম্বুলেন্স ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নিয়োগের দাবি, গ্রামীণ স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে সেবার মান উন্নয়ন ও তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর ব্যবস্থাপনা চালুর প্রস্তাব উত্থাপিত হবে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় মনে করছে, মাঠপর্যায়ের বাস্তবচিত্র থেকে শিক্ষা নিয়ে একটি আরও মানবিক, কার্যকর ও আধুনিক স্বাস্থ্যখাত গড়ে তোলার দিকনির্দেশনা এ সম্মেলন থেকেই উঠে আসবে।

স্বাস্থ্য প্রশাসনের সংশ্লিষ্টদের মতে, এই সম্মেলন নিয়মিত আয়োজনের প্রক্রিয়ায় গেলে তা শুধু বর্তমান নয়, ভবিষ্যতের জন্যও স্বাস্থ্যখাত সংস্কারে একটি নির্ভরযোগ্য প্ল্যাটফর্মে পরিণত হবে।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ