ইরান ইসরাইলের যুদ্ধ
‘এই যুদ্ধ আমেরিকার নয়’—যুক্তরাষ্ট্রকে তেহরানের কড়া হুঁশিয়ারি

ইসরায়েল-ইরান চলমান সংঘাত ক্রমেই ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। এই পটভূমিতে যুক্তরাষ্ট্রকে সরাসরি যুদ্ধ থেকে দূরে থাকার কড়া বার্তা দিয়েছে তেহরান। ইরানের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী সাঈদ খতিবজাদে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে বলেন, “এটা আমেরিকার যুদ্ধ নয়। যদি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এতে জড়ান, তাহলে তিনি এমন এক যুদ্ধে পা রাখবেন, যা তার নয়।”
খতিবজাদে মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি অংশগ্রহণ সংঘাতকে আরও জটিল করে তুলবে এবং এতে করে সহিংসতা দীর্ঘায়িত হবে। তিনি বলেন, ইরান এখনো কূটনীতিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছে। তবে একতরফা বোমাবর্ষণ ও হামলা চলতে থাকলে সেই আলোচনার পথ আর খোলা থাকবে না।
সাম্প্রতিক ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থিত সোরোকা মেডিকেল সেন্টার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যদিও তেহরানের দাবি, তাদের মূল লক্ষ্য ছিল হাসপাতালের পাশেই অবস্থিত একটি সামরিক স্থাপনা। ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের বরাতে জানা গেছে, ওই হামলায় অন্তত ৭১ জন আহত হয়েছেন।
জবাবে ইসরায়েল একাধিক পাল্টা হামলা চালিয়েছে ইরানের বিভিন্ন কৌশলগত স্থাপনায়। এর মধ্যে আরাকের হেভি ওয়াটার রিঅ্যাক্টর ও নাতাঞ্জ পারমাণবিক কেন্দ্রে হামলার কথাও জানিয়েছে তেলআবিব। এই হামলাকে ইরান তাদের সার্বভৌমত্বের সরাসরি লঙ্ঘন এবং যুদ্ধ ঘোষণার সমান বলে মনে করছে।
এই উত্তেজনার মধ্যে হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেবেন—যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি এই সংঘাতে জড়াবে কি না। তবে মার্কিন প্রশাসনের একাংশ সরাসরি জড়িয়ে পড়ার বিষয়ে এখনো দ্বিধান্বিত।
উল্লেখ্য, ১৩ জুন সংঘাত তীব্রতর হয়ে ওঠে, যখন ইসরায়েল নজিরবিহীন এক হামলায় ইরানের কয়েকজন শীর্ষ জেনারেল ও পরমাণু বিজ্ঞানীকে লক্ষ্য করে হামলা চালায়। তেহরান দাবি করে, তখনও তারা কূটনৈতিক প্রক্রিয়ার অংশ ছিল। কিন্তু ওই ঘটনার পর থেকেই শুরু হয় একটানা পাল্টাপাল্টি হামলা।
বর্তমান পরিস্থিতিতে এই সংঘাত শুধু ইরান ও ইসরায়েলকেই নয়, গোটা মধ্যপ্রাচ্যকে এক অনিশ্চিত ও বিস্ফোরণক্ষম অবস্থার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। আন্তর্জাতিক মহল উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যে, যুক্তরাষ্ট্র যদি সরাসরি এই যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে, তাহলে তা শুধু আঞ্চলিকই নয়, বরং বৈশ্বিক নিরাপত্তার জন্যও মারাত্মক হুমকি হয়ে উঠবে।
খতিবজাদে সাক্ষাৎকারে বলেন, ইরানের পাল্টা হামলা জাতিসংঘ সনদের ৫১ অনুচ্ছেদের আলোকে আত্মরক্ষার অধিকার। তেহরান এখনো আলোচনায় বসতে প্রস্তুত, তবে তার আগে ইসরায়েলের আগ্রাসন থামাতে হবে। অন্যথায় যুদ্ধ থামবে না।
এই মুহূর্তে বিশ্বের দৃষ্টি নিবদ্ধ আছে ওয়াশিংটনের সিদ্ধান্তের দিকে। কারণ তৃতীয় পক্ষের সম্পৃক্ততা এই সংঘাতকে যেকোনো সময় আরও ভয়াবহ করে তুলতে পারে।
—আশিক নিউজ ডেস্ক
পাঠকের মতামত:
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- ভবিষ্যতের গণতন্ত্র না পুরাতনের পুনরাবৃত্তি? ইউনুস-তারেক সাক্ষাৎ পর্যালোচনা
- জুলাই চার্টার ও জাতীয় ঐকমত্য: জামায়াতের অনুপস্থিতি কতটা যুক্তিসঙ্গত?
- রিজার্ভের দাপট: বিদ্যুৎ খাতের ১৪ কোম্পানি বিনিয়োগের নতুন ঠিকানা
- বিশ্ববিদ্যালয় সংকট, বাজেট বৈষম্য ও শিক্ষায় ন্যায্যতার দাবি
- ইউনূস-তারেক ঐতিহাসিক ও সফল বৈঠক: সংস্কার, একতা ও ন্যায়বিচার— এই তিন স্তম্ভে গড়ে উঠুক নতুন বাংলাদেশ
- উৎসব: ঈদের পর্দায় অনবদ্য এক উদযাপন
- Clash of Civilizations: মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধের নতুন রূপরেখা
- মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন ভূ-রাজনৈতিক আধিপত্যের নতুন কৌশল: চীন ও রাশিয়া কী করবে?
- লন্ডনে তারেক-ইউনূসের বৈঠকের পরে পর পর ২টি স্ট্যাটাসে কি বললেন পিনাকী?
- ইসরায়েলে ইরানি মিসাইল, নিহত অন্তত ৭
- তুরস্ক, সৌদি, ইরান-পাকিস্তানের হাতে ‘ইসলামিক আর্মি’ গঠন! কি হতে যাচ্ছে?
- ভোক্তার কষ্ট বুঝছে সরকার:বাণিজ্য উপদেষ্টা
- ইসরায়েল নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে রাশিয়ার সতর্কবার্তা
- ২৮ জুন ঢাকায় জনতার ঢল: সোহরাওয়ার্দী উদ্যান হবে মহাসমুদ্র!
- নির্বাচিত নারী, অলঙ্কার নয়: গণতন্ত্রে নারীর শক্তির সন্ধান